ডাবলিন: আয়ারল্যান্ডের রাজধানী শহর

ডাবলিন ( /ˈdʌblɪn/ ; Irish , pronounced  বা হল আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। লিফি নদীর মুখে উপসাগরের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। এটি লেইনস্টার প্রদেশের মধ্যে অবস্থিত। এর দক্ষিণে ডাবলিন পর্বতমালা, উইকলো পর্বতমালার একটি অংশ আছে। এর নগর এলাকার জনসংখ্যা ১১৭৩১৭৯ জন। ২০১৬-এর হিসাব অনুযায়ী ১৩৪৭৩৫৯ জন ছিল। ২০১৬ সালের আদমশুমারি অনুসারে ডাবলিন এলাকার জনসংখ্যা ১৯০৪৮০৬ জন। ডাবলিনের উৎপত্তি ঠিক কোথায় এবং কখন হয়েছিল সে বিষয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক বিতর্ক রয়েছে। ৭ম শতাব্দীতে বা তার আগে গেলস এবং দ্বিতীয় ভাইকিং বসতি ছিল ও পরবর্তীতে ডাবলিনের ছোট রাজ্য হিসাবে শহরটি বৃদ্ধি পায়। নর্মান আক্রমণের পরে এটি আয়ারল্যান্ডের প্রধান বসতিতে পরিণত হয়। শহরটি ১৭ শতক থেকে দ্রুত প্রসারিত হয়। ১৮০০ সালে অ্যাক্টস অফ ইউনিয়নের পরে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ছিল। ১৯২২ সালে স্বাধীনতার পর ডাবলিন আইরিশ স্বাধীন দেশের রাজধানী হয়ে ওঠে। পরে এর নামকরণ করা হয় আয়ারল্যান্ড । ডাবলিন সমসাময়িক ও ঐতিহাসিক আইরিশ শিক্ষা, শিল্প-সংস্কৃতি, শাসন ও শিল্পের কেন্দ্র ছিল। ২০১৮-এর হিসাব অনুযায়ী শহরটিকে গ্লোবালাইজেশন এন্ড ওয়ার্ল্ড সিটিস রিসার্চ নেটওয়ার্ক (GAWC) দ্বারা একটি বৈশ্বিক শহর হিসাবে তালিকাভুক্ত করা হয়। আলফা মাইনাস এর র‍্যাঙ্কিং এটিকে বিশ্বের শীর্ষ ত্রিশটি শহরের একটিতে স্থান দেয়।

ডাবলিন
Baile Átha Cliath
রাজধানী শহর
ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা
ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা
ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা
ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা
ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা
ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা
দক্ষিণাবর্তে, উপর থেকে: স্যামুয়েল বেকেট ব্রিজ, ত্রিনিটি কলেজ, কাস্টম হাউজ, ডাবলিন দুর্গ, ও'কনেল ব্রিজ, কনভেনশন সেন্টার
ডাবলিনের পতাকা
পতাকা
ডাবলিনের প্রতীক
প্রতীক
ডাকনাম: উজ্জ্বল শহর
নীতিবাক্য: Obedientia Civium Urbis Felicitas
'নাগরিকদের আনুগত্য একটি সুখী শহর তৈরি করে'।
Alternatively translated as
'An Obedient Citizenry Produces a Happy City'
Dublin আয়ারল্যান্ড-এ অবস্থিত
Dublin
Dublin
Dublin ইউরোপ-এ অবস্থিত
Dublin
Dublin
আয়ারল্যান্ডে অবস্থান##ইউরোপে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ৫৩°২১′০০″ উত্তর ০৬°১৫′৩৭″ পশ্চিম / ৫৩.৩৫০০০° উত্তর ৬.২৬০২৮° পশ্চিম / 53.35000; -6.26028
দেশআয়ারল্যান্ড
প্রদেশLeinster
রিজিয়নEastern and Midland
কাউন্টিডাবলিন
FoundedUnknown
সরকার
 • স্থানীয় কর্তৃপক্ষডাবলিন শহর কর্তৃপক্ষ
 • প্রধান কার্যালয়ডাবলিন সিটি হল
 • লর্ড মেয়রAlison Gilliland (Lab)
 • Dáil constituenciesDublin Central
Dublin Bay North
Dublin North-West
Dublin South-Central
Dublin Bay South
 • European ParliamentDublin constituency
আয়তন
 • রাজধানী শহর১১৭.৮ বর্গকিমি (৪৫.৫ বর্গমাইল)
 • পৌর এলাকা৩১৮ বর্গকিমি (১২৩ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (2016)
 • রাজধানী শহর৫,৫৪,৫৫৪
 • জনঘনত্ব৪,৭০৮/বর্গকিমি (১২,১৯০/বর্গমাইল)
 • পৌর এলাকা১১,৭৩,১৭৯
 • মহানগর (2020)১৪,১৭,৭০০
 • Greater Dublin১৯,০৪,৮০৬
 • Ethnicity
(2011 Census)
Ethnic groups
সময় অঞ্চলGMT (ইউটিসি0)
 • গ্রীষ্মকালীন (দিসস)IST (ইউটিসি+1)
EircodeD01 to D18, D20, D22, D24 & D6W
এলাকা কোড01 (+3531)
GDP€106 billion
GDP per capita€79,000
ওয়েবসাইটwww.dublincity.ie

ব্যুৎপত্তি

ডাবলিন নামটি এসেছে আইরিশ শব্দ ডাবলিন থেকে বা প্রাচীন ধ্রুপদী আইরিশ শব্দ ডাবলাইন্ড বা ডুইব্লাইন্ড। এখানে ডুব শব্দ ([d̪uβ] ,[d̪uw] ,[d̪uː] ), যার অর্থ "কালো, অন্ধকার"। লাইন্ড ([lʲiɲ(d̪ʲ)] ) অর্থ "পুল"। এটি অন্ধকার জোয়ারের পুলকে নির্দেশ করে। এই জোয়ারের পুলটি ডাবলিন ক্যাসেলের পিছনের দুর্গের উদ্যানের জায়গা। যেখানে পডল নদী লিফিতে প্রবেশ করেছে। আধুনিক আইরিশ ভাষায় নাম হচ্ছে ডুইবলিন। ডাবলিন প্রদেশের আইরিশ ছড়াগুলিতে লেইনস্টার আইরিশ ভাষায় ডাবলিন ডুইলিন হিসাবে উচ্চারিত হয়[ˈd̪ˠiːlʲiɲ]। মূল উচ্চারণ অন্যান্য ভাষায় শহরের নামের মধ্যে সংরক্ষিত আছে। যেমন পুরাতন ইংরেজি Difelin , ওল্ড নর্স Dyflin , আধুনিক আইসল্যান্ডীয় Dyflinn এবং আধুনিক ম্যাংক্স ভাষাDivlyn পাশাপাশি ওয়েলশ Dulyn এবং ব্রেটন Dulenn। আয়ারল্যান্ডের অন্যান্য এলাকাগুলিতে ডুইব্লিন নাম আছে। বিভিন্নভাবে ডেভলিন, ডিভলিন এবং ডিফলিন নামে অভিহিত করা হয়। গেলিক লিপি ব্যবহার করে লেখকরা b এর উপর একটি বিন্দু দিয়ে bh লিখেন, যা ডাবলিন বা ডুইবলিন উচ্চারণ করে। আইরিশ ভাষা সম্পর্কে যাদের জ্ঞান নেই তারা ডটটি বাদ দিয়ে নামটিকে ডাবলিন বলে বানান করে। স্কটল্যান্ডের গ্যালিক-ভাষী এলাকায়ও নামের ভিন্নতা পাওয়া যায় (Gàidhealtachd, Irish Gaeltacht এর সাথে পরিচিত)। যেমন আন লিন ধুব বা "কালো পুল", যা লস লাইনি এর অংশ। মনে করা হয় যে, ভাইকিং বন্দোবস্তের পূর্বে ডুইব্লিন নামে পরিচিত একটি খ্রিস্টান ধর্মীয় বন্দোবস্ত ছিল সেখান থেকে ডাইফ্লিন এর নাম এসেছে। ৯ম ও ১০ম শতকের শুরুতে, (আধুনিক শহর যেখানে দাঁড়িয়েছে)_ সেখানে দুটি বসতি ছিল। প্রায় ৮৪১ সালের ভাইকিং বন্দোবস্ত, ডাইফ্লিন এবং একটি গ্যালিক বসতি, এথ ক্লিয়াথ ("বাধাগুলির ফোর্ড")। বর্তমান দিনে চার্চের নীচের রাস্তাটি ফাদার ম্যাথিউ সেতু (ডাবলিন ব্রিজ নামেও পরিচিত)। আধুনিক আইরিশ ভাষায় শহরের সাধারণ নাম বেইলে অথা ক্লিয়াথ যার অর্থ "বাধিত ফোর্ডের শহর"। আথ ক্লিয়াথ ফাদার ম্যাথিউ ব্রিজের কাছে লিফি নদীর সামনের এর চিহ্ন নির্দেশ করে।বেইলে অথা ক্লিয়াথ এখানে একটি প্রাচীন খ্রিস্টান মঠ ছিল। বিশ্বাস করা হয় এটি আঙ্গিয়ার শহর এলাকায় ছিল। বর্তমানে হোয়াইটফ্রিয়ার স্ট্রিট কারমেলাইট চার্চের দখলে। একই নামের চার্চ অন্যান্য শহরে রয়েছে। যেমন স্কটল্যান্ডের পূর্ব আয়রশায়ারে " আথ ক্লিয়াথ, যেটিকে হারলফোর্ড নামে অভিহিত করা হয়।

ইতিহাস

ডাবলিন উপসাগরের অঞ্চলটি প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে মানুষের দ্বারা বসবাস হয়ে আসছে। কনভেনশন সেন্টার কর্তৃক ডাবলিনের নির্মাণের সময় খননকার্য থেকে আবিষ্কৃত মাছের ফসিলগুলো ৬,০০০ বছর আগের পুরানা। আবিস্কৃত ফসিলগুলো প্রমাণ করে মানুষের বাসস্থান অনেক প্রাচীন। ডাবলিন শহর সেন্ট জেমস গেটের কাছে দক্ষিণ ঘাটে যা মেসোলিথিক যুগের মানব বসতিও নির্দেশ করে। প্রায় ১৪০ খ্রিস্টাব্দে টলেমির (গ্রেকো-রোমান জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং মানচিত্রকার ) উদ্ধার হওয়া লেখাগুলো সম্ভবত ডাবলিনের একটি বসতির প্রথম দিককার। তিনি একে এব্লানা পোলিস ( গ্রিক: Ἔβλανα πόλις ) নামে অভিহিত করন )।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ফাদার ম্যাথিউ ব্রিজ, ডাবলিন ব্রিজ নামেও পরিচিত

ডাবলিন ১৯৮৮ সালে তার 'অফিসিয়ালভাবে' সহস্রাব্দ উদযাপন করে। যার অর্থ এই যে, আইরিশ সরকার ৯৮৮ সালকে শহরটি বসতি স্থাপনের বছর হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। এ বসতি থেকে পরে ডাবলিন শহরে পরিণত হয়। এখন মনে করা হয় প্রায় ৮৪১ সালের ভাইকিং বন্দোবস্তের আগে ডুইব্লিন নামে পরিচিত একটি খ্রিস্টান ধর্মপ্রাণ বন্দোবস্ত ছিল। যেখান থেকে ডাইফ্লিন নামটহয়। ৯ম ও ১০ম শতকের শুরুতে দুটি বসতি ছিল, যা থেকে পরে আধুনিক ডাবলিন হয়ে ওঠে। পরবর্তী স্ক্যান্ডিনেভিয়ান বন্দোবস্তটি এখন উডকোয়ে নামে পরিচিত। এ এলাকায় লিফির একটি উপনদী পডল নদীকে কেন্দ্র করে আছে। ডাবলিন পোডলের কাছে প্রসারিত একটি পুল ছিল । এর নিচ দিয়ে জাহাজ চলাচল করত। ১৮ শতকের গোড়ার দিকে শহরটি প্রসারিত হওয়ার সময় এ পুলটি ভরাট হয়ে যায়। ডাবলিন ক্যাসেলের মধ্যে 'চেস্টার বিটি লাইব্রেরির' বিপরীতে ক্যাসেল গার্ডেনের কাছে এখন ডাবলিন চোখে পড়ে। Táin Bó Cuailgne ("কুলির গবাদি পশুর অভিযান") বলতে বোঝায় ডাবলাইন্ড রিসা রাটার অ্যাথ ক্লিয়াথ, যার অর্থ ডাবলিন। একে বলা হয় “এথ ক্লিথ"।

মধ্যযুগ

১০ম শতকে ডাবলিনে ভাইকিং বসতি প্রতিষ্ঠিত হয়। স্থানীয় আইরিশদের দ্বারা বেশ কয়েকটি আক্রমণ সত্ত্বেও ১১৬৯ সালে ওয়েলস থেকে আয়ারল্যান্ডে নরম্যান আক্রমণ শুরু না হওয়া পর্যন্ত এটি মূলত ভাইকিংদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১১৬৬ সালের গোড়ার দিকে মুইর্চার্টাচ ম্যাক লোচলাইনের মৃত্যুর পরে কননাচের রাজা রুইদ্রি উয়া কনচোবায়ের ডাবলিনে চলে যান এবং বিনা বিরোধিতায় আয়ারল্যান্ডের রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন । কিছু ঐতিহাসিকের মতে, শহরের প্রথম দিকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি অংশ দাসদের ব্যবসার জন্য দায়ী ছিল। আয়ারল্যান্ড ও ডাবলিনে দাসপ্রথা ৯ম ও ১০ম শতাব্দীতে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে। যেমন ক্রীতদাস অভিযান ও অপহরণের পর বন্দী ইত্যাদি। গ্যালিক আইরিশ আক্রমণকারীরা পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদের বন্দী করত। তারা যুদ্ধ করে ভাইকিংদের কাছ থেকে রাজত্ব নেয়। আক্রান্তরা ওয়েলস, ইংল্যান্ড, নরম্যান্ডি ও তার বাইরে থেকে এসেছিল। লেইনস্টারের রাজা, ডারমাইট ম্যাক মুর্চাদা, রুইদ্রির নির্বাসনের পর, ডাবলিন জয় করতে পেমব্রোকের আর্ল স্ট্রংবো -এর সাহায্য তালিকাভুক্ত করেন। ম্যাক মুরোর মৃত্যুর পর, স্ট্রংবো শহরের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার পর নিজেকে লেইনস্টারের রাজা ঘোষণা করেন। স্ট্রংবো-এর সফল আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায়, ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় হেনরি ১১৭১ সালে এক বৃহত্তর আক্রমণের মাধ্যমে তার চূড়ান্ত সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করেন এবং নিজেকে আয়ারল্যান্ডের লর্ড বলে ঘোষণা করেন। এই সময়ে, ডাবলিন শহরের কাউন্টি যথাযথভাবে শহরের সংলগ্ন কিছু স্বাধীনতার সাথে প্রতিষ্ঠিত হয়। এ শাসন ১৮৪০ সাল পর্যন্ত চলতে থাকে। ডাবলিন শহর ব্যারোনি থেকে আলাদা হয়ে যায়। ২০০১ সাল থেকে, উভয় ব্যারোনিই ডাবলিনের শহর হিসাবে পুনঃনির্ধারিত হয়।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ডাবলিন ক্যাসেল, ১৩ শতকের টাওয়ারসহ, ১৯২২ সাল পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডে ব্রিটিশ শাসনের সুরক্ষিত আসন ছিল।

ডাবলিন ক্যাসেল, যা আয়ারল্যান্ডের অ্যাংলো-নর্মান শক্তির কেন্দ্রে পরিণত হয়। ১২০৪ সালে ইংল্যান্ডের রাজা জনের আদেশে প্রধান প্রতিরক্ষামূলক কাজ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১২২৯ সালে ডাবলিনের প্রথম লর্ড মেয়র নিয়োগের পর, শহরটি প্রসারিত হয় এবং ১৩ শতকের শেষ নাগাদ এর জনসংখ্যা ছিল ৮০০০ জন। ১৩১৭ সালে স্কটল্যান্ডের রাজা ছিলেন রবার্ট । তিনি শহরটি দখল করার চেষ্টা সত্ত্বেও ডাবলিন বাণিজ্য কেন্দ্র হিসাবে সমৃদ্ধ ছিল। ১৪ শতকে এটি একটি অপেক্ষাকৃত ছোট প্রাচীর ঘেরা মধ্যযুগীয় শহর হয়। ফলে আশেপাশের নেটিভ গোষ্ঠীর কাছ থেকে ক্রমাগত হুমকির মধ্যে থাকে। ১৩৪৮ সালে ব্ল্যাক ডেথ বা মারাত্মক প্লেগ রোগ যা ইউরোপকে ধ্বংস করে। এ রোগ ডাবলিনেও ছড়ে পড়ে। ফলে পরবর্তী দশকে হাজার হাজার মানুষকে মৃতুবরণ করতে হয়। 'ডাবলিন প্যালে' এলাকাটির প্রাণকেন্দ্র। পূর্ব উপকূল বরাবর ইংরেজদের বসতির একটি সংকীর্ণ স্ট্রিপ, যা ইংরেজ বাদশার নিয়ন্ত্রণে ছিল। ১৬ শতকে আয়ারল্যান্ডে টিউডর বিজয় ডাবলিনের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করে। শহরটি আয়ারল্যান্ডে প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসাবে নতুনভাবে প্রাধান্য পায়। যেখানে ইংরেজদের নিয়ন্ত্রণ ও বসতি ব্যাপক হয়ে উঠে। ডাবলিনকে একটি প্রোটেস্ট্যান্ট শহর করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন , ইংল্যান্ডের রানী প্রথম এলিজাবেথ ১৫৯২ সালে ট্রিনিটি কলেজকে একটি সম্পূর্ণ প্রোটেস্ট্যান্ট বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন এবং নির্দেশ দেন যে ক্যাথলিক সেন্ট প্যাট্রিকস ও ক্রাইস্ট চার্চ ক্যাথেড্রালগুলিকে প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চে রূপান্তরিত করা হবে।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ডাবলিন, ১৬১০; জন স্পিড দ্বারা একটি সমসাময়িক মানচিত্র (১৮৯৬ পুনর্মুদ্রণ)

১৬৪৯-৫১ সালে প্লেগ রোগ প্রায় অর্ধেক বাসিন্দাকে নিশ্চিহ্ন করার পূর্বে ১৬৪০ সালে শহরের জনসংখ্যা ছিল ২১০০০১ জন। ইংল্যান্ড এ শহরের সঙ্গে পশম ও মসীনার বাণিজ্য করে। ১৭০০ সালে এর জনসংখ্যা ৫০,০০০ জন হয়।

প্রথম আধুনিক যুগ

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
হেনরিয়েটা স্ট্রিট, ১৭২০-এর দশকে বিকশিত, ডাবলিনের প্রাচীনতম জর্জিয়ান রাস্তা।

১৮শ শতাব্দীতে শহরটির উন্নতি অব্যাহত থাকে। 'জর্জিয়ান ডাবলিন' অল্প সময়ের মধ্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ও ইউরোপের পঞ্চম বৃহত্তম শহর হয়ে ওঠে। জনসংখ্যা ১৩০০০০ জন ছাড়িয়ে যায়। যদিও কিছু মধ্যযুগীয় রাস্তা, লেআউট ( টেম্পল বার, অংগিয়ার স্ট্রিট, ক্যাপেল স্ট্রিট ও থমাস স্ট্রিট এর আশেপাশের এলাকাগুলিসহ) জর্জিয়ান পুনর্গঠনের আন্দোলন দ্বারা কম প্রভাবিত হয়েছিল। ডাবলিনের বেশিরভাগ স্থাপত্য ও লেআউটের তারিখ এই সময়ের থেকে চলে আসছে। ১৮ শতকে অনেক নতুন জেলা ও ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ডাবলিন আরও নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। যেমন মেরিয়ন স্কোয়ার, সংসদ ভবন ও রয়্যাল এক্সচেঞ্জ । ওয়াইড স্ট্রিট কমিশন ১৭৫৭ সালে ডাবলিন কর্পোরেশনের অনুরোধে রাস্তা, সেতু ও ভবনগুলির বিন্যাসে স্থাপত্যের মানগুলি পরিচালনা করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৭৫৯ সালে 'গিনেস ব্রুয়ারি' প্রতিষ্ঠিত হয়। যা বিশ্বের বৃহত্তম মদ কারখানা এবং ডাবলিনের বৃহত্তম নিয়োগকর্তা হয়ে উঠবে।

আধুনিক ও সমসাময়িক যুগ

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ও'কনেল স্ট্রিটের জিপিও ১৯১৬ ইস্টার রাইজিং- এর কেন্দ্রে ছিল।

১৮০০ সালের 'অ্যাক্টস অফ ইউনিয়নের' পর ডাবলিন ১৯ শতকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পতনের শিকার হয়। যার অধীনে সরকারের আসনটি লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার পার্লামেন্টে স্থানান্তর করা হয়। শিল্প বিপ্লবে শহরটি কোন বড় ভূমিকা পালন করেনি। বেশিরভাগ দ্বীপের এটি প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল। সেই সময়ে জ্বালানীর কোন উল্লেখযোগ্য উৎস ছিল না। ডাবলিনে জাহাজ তৈরির কেন্দ্র ছিল না। ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডের শিল্প বিকাশের অন্য প্রধান চালক ছিল আয়ারল্যান্ডে কয়লা। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, কারখানা-ভিত্তিক লিনেন কাপড় উৎপাদন ও জাহাজ নির্মাণের কোম্পানি বেলফাস্ট ডাবলিনে দ্রুত বিকাশ লাভ করে।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
১৯১৬ সালের ইস্টার রাইজিং-এর পরে ডাবলিন শহরের কেন্দ্রে ক্ষয়ক্ষতি বাম দিকে জিপিওর ধ্বংসাবশেষ

১৯১৬ সালে ইস্টার রাইজিং, আইরিশ স্বাধীনতা যুদ্ধ, পরবর্তী আইরিশ গৃহযুদ্ধের ফলে কেন্দ্রীয় ডাবলিনের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ক্ষতি হয়। 'আইরিশ ফ্রি স্টেট সরকার' শহরের কেন্দ্রটি পুনর্নির্মাণ করে। বর্তমানে লেইনস্টার হাউসে নতুন সংসদ “ওরিচটাস” অবস্থিত। ১২ শতকে নরম্যান শাসনের শুরু থেকে শহরটি বিভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক সত্তার রাজধানী হিসাবে কাজ করেছে। আয়ারল্যান্ডের লর্ডশিপ (১১৭১-১৫৪১), আয়ারল্যান্ডের রাজ্য (১৫৪১-১৮০০), আয়ারল্যান্ড (১৮০১-১৯২২) এবং আইরিশ প্রজাতন্ত্র (১৯১৯-১৯২২) গ্রেট ব্রিটেনের যুক্তরাজ্যের অংশ হিসাবে ছিল। ১৯২২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিভক্তির পর, এটি আইরিশ ফ্রি স্টেটের (১৯২২-১৯৩৭) রাজধানী হয়ে ওঠে। এখন এটি আয়ারল্যান্ডের রাজধানী। সেই সময়ের স্মরণীয় স্মারকগুলির মধ্যে একটি হল গার্ডেন অফ রিমেমব্রেন্স । ডাবলিন উত্তর আইরিশ সমস্যাগুলির শিকার ছিল। যদিও এই ৩০ বছরের সংঘাতের সময়, সহিংসতা প্রধানত উত্তর আয়ারল্যান্ডের মধ্যে ঘটেছিল। একটি অনুগত আধাসামরিক গোষ্ঠী, আলস্টার স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী এই সময়ে শহরে বোমা হামলা চালায়। বিশেষ করে ডাবলিন এবং মোনাঘান বোমা বিস্ফোরণ নামে পরিচিত একটি নৃশংস ঘটনা, যাতে প্রধানত মধ্য ডাবলিনে ৩৪ জন মারা যায় । জর্জিয়ান ডাবলিনের বড় অংশগুলি ২০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে এক শব্দে অফিস চলাকালীন বিল্ডিংয়ের অংশ ভেঙে ফেলা হয়েছিল বা উল্লেখযোগ্যভাবে পুনঃবিকাশ করা হয়েছিল। এই বোমের পরে ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকের মন্দাগুলি নির্মাণের গতি কমিয়ে দেয়। ক্রমবর্ধমানভাবে এটি শহরের কেন্দ্রস্থলে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যার বড় পতনের দিকে পরিচালিত করে। ১৯৮৫ সালের মধ্যে শহরের প্রায় ১৫০ একর পরিত্যক্ত জমি ছিল ১০ নিযুত বর্গফুট (৯০০ হাজার বর্গমিটার) অফিস স্পেসের উন্নয়নের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। ১৯৯৭ সাল থেকে, ডাবলিনের ভূমিরূপ পরিবর্তিত হয়েছে। সেল্টিক টাইগার সময়কালে আয়ারল্যান্ডের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে শহরটি বেসরকারী খাত, রাষ্ট্রীয় আবাসন, পরিবহন ও ব্যবসার উন্নয়নের সাথে অগ্রভাগে ছিল। গ্রেট রিসেশনের সময় অর্থনৈতিক পতনের পর, ডাবলিন পুনরায় বাড়তে শুরু করে এবং ২০১৭-এর হিসাব অনুযায়ী পূর্ণ কর্মসংস্থানের কাছাকাছি রয়। তবে শহর ও আশেপাশের উভয় জায়গায় আবাসন সরবরাহের সাথে একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা রয়েছে।

সরকার ব্যবস্থা

স্থানীয় সরকার

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ডাবলিন সিটি কাউন্সিলের সিভিক অফিস

ডাবলিন সিটি কাউন্সিল স্থানীয় নির্বাচনী এলাকা হিসাবে প্রতি পাঁচ বছরে ৬৩ সদস্যের একটি এককক্ষীয় কাউন্সিল নির্বাচিত হয়। এটির সভাপতিত্ব করেন লর্ড মেয়র। তিনি বার্ষিক মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন। তিনি ডাবলিনের ম্যানশন হাউসে থাকেন। কাউন্সিলের সভা ডাবলিন সিটি হলে হয়। এর বেশিরভাগ প্রশাসনিক কার্যক্রম উড কোয়ের সিভিক অফিসে ভিত্তিক হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের দল বা জোটের দল কমিটির সদস্যদের বরাদ্দ করে। নীতি প্রবর্তন করে এবং লর্ড মেয়রের প্রস্তাব দেয়। কাউন্সিল আবাসন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য, নিষ্কাশন এবং পরিকল্পনার মতো ক্ষেত্রে ব্যয় করার জন্য একটি বার্ষিক বাজেট পাস করে। ডাবলিন সিটি ম্যানেজার সিটি কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য দায়ী কিন্তু তার যথেষ্ট নির্বাহী ক্ষমতাও রয়েছে।

জাতীয় সরকার

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
কিল্ডার স্ট্রিটের লেইনস্টার হাউসে ওরিচটাস বাস করে ।

রাজধানী শহর হিসাবে ডাবলিন হল আয়ারল্যান্ডের জাতীয় সংসদের আসন “ওরিচটাস” । এটি আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি, প্রতিনিধিদের হাউস হিসাবে ডেইল ইরিয়ান ও উচ্চকক্ষ হিসাবে সিনাদ ইরিয়ান নিয়ে গঠিত হয়। রাষ্ট্রপতি ফিনিক্স পার্কের আরাস আন রেইনে থাকেন। ওরিচটাসের উভয় ঘরই কিল্ডার স্ট্রিটের প্রাক্তন ডুকাল বাসস্থান লেইনস্টার হাউসে মিলিত হয়। ১৯২২ সালে আইরিশ ফ্রি স্টেট প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি আইরিশ সংসদের আবাসস্থল। আয়ারল্যান্ড রাজ্যের পার্লামেন্টের পুরানো আইরিশ হাউসগুলি ১৮০১ সালে দ্রবীভূত হয়েছিল, যা কলেজ গ্রীনে অবস্থিত।

সরকারি ভবনে তাওইসাচ বিভাগ, কাউন্সিল চেম্বার, অর্থ বিভাগ ও অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস রয়েছে । এটি একটি প্রধান বিল্ডিং নিয়ে গঠিত (১৯১১ সালে সমাপ্ত) দুটি উইংস সহ (১৯২১ সালে সমাপ্ত) হয়। এটি রয়্যাল কলেজ অফ সায়েন্স হিসাবে টমাস ম্যানলি ডিন এবং স্যার অ্যাস্টন ওয়েব দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল। প্রথম ডেইল মূলত ১৯১৯ সালে ম্যানশন হাউসে মিলিত হয়েছিল। আইরিশ ফ্রি স্টেট সরকার কিছু মন্ত্রণালয়ের জন্য একটি অস্থায়ী বাড়ি হিসাবে কাজ করার জন্য ভবনটির দুটি শাখার দায়িত্ব গ্রহণ করে। কেন্দ্রীয় ভবনটি ১৯৮৯ সালে কলেজ অফ টেকনোলজিতে পরিণত হয়। যদিও এটি এবং লেইনস্টার হাউস উভয়ই অস্থায়ী অবস্থানের উদ্দেশ্যে ছিল। তারপর থেকে সেগুলো সংসদের স্থায়ী আবাসে পরিণত হয়।

ডেইল এরিয়ান- এর নির্বাচনের জন্য ডাবলিন সিটি এলাকায় সম্পূর্ণ বা প্রধানত পাঁচটি নির্বাচনী এলাকা রয়েছে: ১) ডাবলিন সেন্ট্রাল (৪ আসন), ২) ডাবলিন বে নর্থ (৫ আসন), ৩) ডাবলিন উত্তর-পশ্চিম (৩ আসন), ৪) ডাবলিন দক্ষিণ-মধ্য ( ৪টি আসন) এবং ৫) ডাবলিন বে সাউথ (৪টি আসন)। মোট বিশটি টিডি নির্বাচিত হয়। ডাবলিন ওয়েস্টের নির্বাচনী এলাকা (৪টি আসন) আংশিকভাবে ডাবলিন সিটিতে, তবে প্রধানত ফিঙ্গাল ।

২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনে ডাবলিন শহর এলাকা ৫ সিন ফেইন, ৩ ফাইন গেইল, ৩ ফিয়ানা ফায়েল, ৩ গ্রিন পার্টি, ৩ জন সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট, ১টি পরিবর্তনের অধিকার, ১ জন সংহতি-লাভের আগে এবং ১ জন শ্রম টিডি নির্বাচিত করেছে।

ভৌগোলিক অবস্থা

শহরের সীমানা

১৮৪২ সাল থেকে, শহরের সীমানা ডাবলিন সিটির ব্যারন প্রথা দ্বারা বেষ্টিত। মূলত এটি ব্যারনের জমিদারি । শহরের সীমানার জন্য ১৯৩০ সালে, ১৯৪১ সালে, ১৯৪২ সালে, ১৯৩৫ সালে ও ১৯৮৫ সালে জমি হস্তান্তর করা হয়েছিল।

ল্যান্ডস্কেপ

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ডাবলিনকে উত্তর দিকে এবং দক্ষিণ দিকে বিভক্ত করার সাথে সাথে আইরিশ সাগরে লিফি নদী প্রবেশ করছে এমন উপগ্রহ চিত্র

ডাবলিন লিফি নদীর মুখে অবস্থিত এবং প্রায় ১১৭.৮ বর্গকিলোমিটার (৪৫.৫ মা) ) ভূমি এলাকা জুড়ে রয়েছে পূর্ব-মধ্য আয়ারল্যান্ড। এটি ডাবলিন পর্বতমালা দ্বারা সীমাবদ্ধ। একটি নিম্ন পর্বত শ্রেণী ও উইকলো পর্বতমালার উপ-শ্রেণী। দক্ষিণ, উত্তর ও পশ্চিমে সমতল কৃষিভূমি দ্বারা বেষ্টিত।

নদ-নদী

লিফি নদী শহরটিকে উত্তর ও দক্ষিণ দিকের মধ্যে দুটি ভাগে বিভক্ত করেছে। লিফি উত্তর-পূর্ব দিকের পথ থেকে প্রধানত পূর্ব দিকে লেইক্সলিপ এর বাঁকে অবস্থিত। এই স্থানটি কৃষি জমি ব্যবহার থেকে নগর উন্নয়নে রূপান্তরকে চিহ্নিত করে। শহরটি এভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যেখানে পডল নদী লিফির সাথে মিলিত হয়েছিল। প্রাথমিক ভাইকিং বসতিও বিশেষত ছোট স্টেইন বা স্টেইন নদী, বৃহত্তর ক্যামাক এবং ব্র্যাডোগ দ্বারা সহায়তা করেছিল।

দুটি গৌণ নদী শহরটিকে আরও বিভক্ত করেছে: টোলকা নদী, যা দক্ষিণ-পূর্বে ডাবলিন উপসাগরে প্রবাহিত। ডোডার নদীটি উত্তর-পূর্ব থেকে লিফের মুখের কাছে প্রবাহিত। লিফের একাধিক উপনদী রয়েছে। শহরের শহরতলির অংশের মধ্যে বেশ কিছু ছোট নদী ও স্রোতও সমুদ্রে প্রবাহিত হয়।

দুটি খাল-একটি দক্ষিণ দিকে গ্র্যান্ড ক্যানেল ও অন্যটি উত্তর-পশ্চিম দিকে রয়্যাল খাল এবং শ্যানন নদী থেকে তাদের পথে ভিতরের শহরটি বেস্টন করে আছে।

সাংস্কৃতিক বিভাজন

উত্তর-দক্ষিণ বিভাগ একবার কিছু পরিমাণে সংস্কৃকিত কাজ চালু করেছিল। সেখানে সাংস্কৃতিক বিভাজক হিসাবে লিফি নদী ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ দিকটি উত্তর দিকের চেয়ে বেশি সমৃদ্ধ এবং ভদ্র হিসাবে দেখা হয়। শহরের পূর্বে উপকূলীয় শহরতলি ও পশ্চিমে আরও নতুন উন্নয়নের কিছু সামাজিক বিভাজনও স্পষ্ট হয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

কিছু পর্যটন ও রিয়েল-এস্টেট বিপণনের প্রসঙ্গে, অভ্যন্তরীণ ডাবলিনকে কখনও কখনও কয়েকটি কোয়ার্টার বা জেলায় ভাগ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, মধ্যযুগীয় কোয়ার্টার ( ডাবলিন ক্যাসেল, ক্রাইস্ট চার্চ, সেন্ট প্যাট্রিক ক্যাথিড্রাল এবং পুরানো শহরের দেয়ালের এলাকায়), জর্জিয়ান কোয়ার্টার (সেন্ট স্টিফেন গ্রিন, ট্রিনিটি কলেজ এবং মেরিয়ন স্কোয়ারের চারপাশের এলাকা সহ), ডকল্যান্ডস কোয়ার্টার ( ডাবলিন ডকল্যান্ডস ও সিলিকন ডকসের আশেপাশে), সাংস্কৃতিক কোয়ার্টার ( টেম্পল বারের চারপাশে), ক্রিয়েটিভ কোয়ার্টার (দক্ষিণ উইলিয়াম স্ট্রিট এবং জর্জ স্ট্রিটের মধ্যে) রয়েছে।

জলবায়ু

Dublin (Merrion Square)
জলবায়ু লেখচিত্র
জাফেমামেজুজুসেডি
 
 
৬২
 
 
 
৪৬
 
 
 
৫২
 
১১
 
 
৫০
 
১২
 
 
৫৮
 
১৫
 
 
৫৯
 
১৮
১২
 
 
৫১
 
২০
১৪
 
 
৬৫
 
২০
১৩
 
 
৫৭
 
১৭
১১
 
 
৭৬
 
১৪
 
 
৬৯
 
১১
 
 
৬৯
 
সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ এবং সর্বোনিম্ন গড়
মিলিমিটারে বৃষ্টিপাতের মোট পরিমাণ
উৎস: Met Éireann

উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের বাকি অংশের মতো ডাবলিনে সামুদ্রিক জলবায়ু রয়েছে যেখানে হালকা-উষ্ণ গ্রীষ্ম, শীতল শীত এবং তাপমাত্রার চরম অভাব রয়েছে। জানুয়ারির গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৮.৮ °সে (৪৮ °ফা), যখন গড় সর্বোচ্চ জুলাই তাপমাত্রা ২০.২ °সে (৬৮ °ফা) । সবচেয়ে রৌদ্রোজ্জ্বল মাস মে ও জুন। সবচেয়ে আর্দ্র মাস অক্টোবর। এ মাসে ৭৬ মিমি (৩ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়। সবচেয়ে শুষ্ক মাস হল ফেব্রুয়ারি ৪৬ মিমি (২ ইঞ্চি)। বছর জুড়ে বৃষ্টিপাত সমানভাবে হয়।

পূর্ব উপকূলে ডাবলিনের আশ্রয়স্থল হিসাবে আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে শুষ্ক স্থান রয়েছে। পশ্চিম উপকূলের প্রায় অর্ধেক বৃষ্টিপাত হয়। শহরের দক্ষিণে রিংসেন্ডে দেশের সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যার গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৬৮৩ মিমি (২৭ ইঞ্চি)। শীতকালে প্রধান বৃষ্টিপাত শহরের কেন্দ্রে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে ৭১৪ মিমি (২৮ ইঞ্চি)। তবে নভেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে তুষারপাত হয়। তুষারপাতের চেয়ে শিলাবৃষ্টি বেশি হয়। শহরটি গ্রীষ্মের সময় দিন দীর্ঘ এবং শীতের দিনগুলি ছোট অনুভব করে। সাধারণত শরত্কালে শক্তিশালী আটলান্টিক বাতাস সবচেয়ে বেশি হয় । এই বাতাসগুলি ডাবলিনকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে এর পূর্বদিকে অবস্থানের কারণে এটি দেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় কম প্রভাবিত হয়। শীতকালে, পূর্বদিকের বাতাস শহরটিকে শীতল করে দেয় এবং তুষারবৃষ্টির প্রবণতা বেশি হয়।

২০ শতকে ধূমপান ও বায়ু-দূষণ শহরের একটি সমস্যা। ফলে ডাবলিন জুড়ে বিটুমিনাস জ্বালানীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কালো ধোঁয়ার ঘনত্ব মোকাবেলায় ১৯৯০ সালে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছিল। এটি বাসিন্দাদের হৃদযন্ত্র ও শ্বাসযন্ত্রের মৃত্যুর সাথে যুক্ত ছিল। নিষেধাজ্ঞার পর থেকে অ-ট্রমা মৃত্যুর হার, শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত মৃত্যুর হার ও কার্ডিওভাসকুলার মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে । তবে বার্ষিক আনুমানিক ৩৫০ জন মারা গেছে।

{{{location}}}-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
{{{location}}}-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

জলবায়ু

Dublin (Merrion Square)
জলবায়ু লেখচিত্র
জাফেমামেজুজুসেডি
 
 
৬২
 
 
 
৪৬
 
 
 
৫২
 
১১
 
 
৫০
 
১২
 
 
৫৮
 
১৫
 
 
৫৯
 
১৮
১২
 
 
৫১
 
২০
১৪
 
 
৬৫
 
২০
১৩
 
 
৫৭
 
১৭
১১
 
 
৭৬
 
১৪
 
 
৬৯
 
১১
 
 
৬৯
 
সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ এবং সর্বোনিম্ন গড়
মিলিমিটারে বৃষ্টিপাতের মোট পরিমাণ
উৎস: Met Éireann

উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের বাকি অংশের মতো ডাবলিনে সামুদ্রিক জলবায়ু রয়েছে যেখানে হালকা-উষ্ণ গ্রীষ্ম, শীতল শীত এবং তাপমাত্রার চরম অভাব রয়েছে। জানুয়ারির গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৮.৮ °সে (৪৮ °ফা), যখন গড় সর্বোচ্চ জুলাই তাপমাত্রা ২০.২ °সে (৬৮ °ফা) । সবচেয়ে রৌদ্রোজ্জ্বল মাস মে ও জুন। সবচেয়ে আর্দ্র মাস অক্টোবর। এ মাসে ৭৬ মিমি (৩ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়। সবচেয়ে শুষ্ক মাস হল ফেব্রুয়ারি ৪৬ মিমি (২ ইঞ্চি)। বছর জুড়ে বৃষ্টিপাত সমানভাবে হয়।

পূর্ব উপকূলে ডাবলিনের আশ্রয়স্থল হিসাবে আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে শুষ্ক স্থান রয়েছে। পশ্চিম উপকূলের প্রায় অর্ধেক বৃষ্টিপাত হয়। শহরের দক্ষিণে রিংসেন্ডে দেশের সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যার গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৬৮৩ মিমি (২৭ ইঞ্চি)। শীতকালে প্রধান বৃষ্টিপাত শহরের কেন্দ্রে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে ৭১৪ মিমি (২৮ ইঞ্চি)। তবে নভেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে তুষারপাত হয়। তুষারপাতের চেয়ে শিলাবৃষ্টি বেশি হয়। শহরটি গ্রীষ্মের সময় দিন দীর্ঘ এবং শীতের দিনগুলি ছোট অনুভব করে। সাধারণত শরত্কালে শক্তিশালী আটলান্টিক বাতাস সবচেয়ে বেশি হয় । এই বাতাসগুলি ডাবলিনকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে এর পূর্বদিকে অবস্থানের কারণে এটি দেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় কম প্রভাবিত হয়। শীতকালে, পূর্বদিকের বাতাস শহরটিকে শীতল করে দেয় এবং তুষারবৃষ্টির প্রবণতা বেশি হয়।

২০ শতকে ধূমপান ও বায়ু-দূষণ শহরের একটি সমস্যা। ফলে ডাবলিন জুড়ে বিটুমিনাস জ্বালানীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কালো ধোঁয়ার ঘনত্ব মোকাবেলায় ১৯৯০ সালে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছিল। এটি বাসিন্দাদের হৃদযন্ত্র ও শ্বাসযন্ত্রের মৃত্যুর সাথে যুক্ত ছিল। নিষেধাজ্ঞার পর থেকে অ-ট্রমা মৃত্যুর হার, শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত মৃত্যুর হার ও কার্ডিওভাসকুলার মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে । তবে বার্ষিক আনুমানিক ৩৫০ জন মারা গেছে।

{{{location}}}-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
{{{location}}}-এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
ডাবলিন বিমানবন্দর (DUB), ১৯৮১-২০১০ স্বাভাবিক, চরম ১৮৮১-বর্তমান -এর আবহাওয়া সংক্রান্ত তথ্য
মাস জানু ফেব্রু মার্চ এপ্রিল মে জুন জুলাই আগস্ট সেপ্টে অক্টো নভে ডিসে বছর
সর্বোচ্চ রেকর্ড °সে (°ফা) ১৭.৫
(৬৩.৫)
১৮.১
(৬৪.৬)
২৩.৪
(৭৪.১)
২২.৭
(৭২.৯)
২৬.৮
(৮০.২)
২৮.৭
(৮৩.৭)
৩১.০
(৮৭.৮)
৩০.৬
(৮৭.১)
২৭.৬
(৮১.৭)
২৪.২
(৭৫.৬)
১৯.৪
(৬৬.৯)
১৭.১
(৬২.৮)
৩১.০
(৮৭.৮)
সর্বোচ্চ গড় °সে (°ফা) ৮.১
(৪৬.৬)
৮.৩
(৪৬.৯)
১০.২
(৫০.৪)
১২.১
(৫৩.৮)
১৪.৮
(৫৮.৬)
১৭.৬
(৬৩.৭)
১৯.৫
(৬৭.১)
১৯.২
(৬৬.৬)
১৭.০
(৬২.৬)
১৩.৬
(৫৬.৫)
১০.৩
(৫০.৫)
৮.৩
(৪৬.৯)
১৩.৩
(৫৫.৯)
দৈনিক গড় °সে (°ফা) ৫.৩
(৪১.৫)
৫.৩
(৪১.৫)
৬.৮
(৪৪.২)
৮.৩
(৪৬.৯)
১০.৯
(৫১.৬)
১৩.৬
(৫৬.৫)
১৫.৬
(৬০.১)
১৫.৩
(৫৯.৫)
১৩.৪
(৫৬.১)
১০.৫
(৫০.৯)
৭.৪
(৪৫.৩)
৫.৬
(৪২.১)
৯.৮
(৪৯.৬)
সর্বনিম্ন গড় °সে (°ফা) ২.৪
(৩৬.৩)
২.৩
(৩৬.১)
৩.৪
(৩৮.১)
৪.৬
(৪০.৩)
৬.৯
(৪৪.৪)
৯.৬
(৪৯.৩)
১১.৭
(৫৩.১)
১১.৫
(৫২.৭)
৯.৮
(৪৯.৬)
৭.৩
(৪৫.১)
৪.৫
(৪০.১)
২.৮
(৩৭.০)
৬.৪
(৪৩.৫)
সর্বনিম্ন রেকর্ড °সে (°ফা) −১৫.৬
(৩.৯)
−১৩.৪
(৭.৯)
−৯.৮
(১৪.৪)
−৭.২
(১৯.০)
−৫.৬
(২১.৯)
−০.৭
(৩০.৭)
১.৮
(৩৫.২)
০.৬
(৩৩.১)
−১.৭
(২৮.৯)
−৫.৬
(২১.৯)
−৯.৩
(১৫.৩)
−১৫.৭
(৩.৭)
−১৫.৭
(৩.৭)
অধঃক্ষেপণের গড় মিমি (ইঞ্চি) ৬২.৬
(২.৪৬)
৪৮.৮
(১.৯২)
৫২.৭
(২.০৭)
৫৪.১
(২.১৩)
৫৯.৫
(২.৩৪)
৬৬.৭
(২.৬৩)
৫৬.২
(২.২১)
৭৩.৩
(২.৮৯)
৫৯.৫
(২.৩৪)
৭৯.০
(৩.১১)
৭২.৯
(২.৮৭)
৭২.৭
(২.৮৬)
৭৫৮.০
(২৯.৮৪)
অধঃক্ষেপণ দিনগুলির গড় (≥ ১.০ mm) ১২ ১০ ১১ ১০ ১১ ১০ ১০ ১১ ১০ ১১ ১১ ১২ ১২৯
তুষারময় দিনগুলির গড় ৪.৬ ৪.২ ২.৮ ১.২ ০.২ ০.০ ০.০ ০.০ ০.০ ০.০ ০.৮ ২.৯ ১৬.৬
আপেক্ষিক আদ্রতার গড় (%) (15:00 UTC) ৮০.৬ ৭৫.৭ ৭১.০ ৬৮.৩ ৬৮.০ ৬৮.৩ ৬৯.০ ৬৯.৩ ৭১.৫ ৭৫.১ ৮০.৩ ৮৩.১ ৭৩.৩
মাসিক সূর্যালোক ঘণ্টার গড় ৫৯.২ ৭৬.১ ১০৯.১ ১৫৭.৪ ১৯৫.২ ১৭৩.৩ ১৬৪.১ ১৬০.১ ১২৯.৮ ১০৩.৯ ৭১.০ ৫২.৮ ১,৪৫২
উৎস: Met Éireann
ডাবলিনের জলবায়ু তথ্য
Month জানু ফেব মার এপ মে জুন জুলা আগ সেপ অক নভ ডিসে Year
সমুদ্রের গড় তাপমাত্রা °C (°F) ৯.৬
(৪৯.৩)
৮.৮
(৪৭.৮)
৮.৪
(৪৭.১)
৯.১
(৪৮.৪)
১০.৪
(৫০.৭)
১২.৩
(৫৪.১)
১৪.১
(৫৭.৪)
১৪.৯
(৫৮.৮)
১৪.৮
(৫৮.৬)
১৪.১
(৫৭.৪)
১৩.১
(৫৫.৬)
১১.৩
(৫২.৩)
১১.৭
(৫৩.১)
দৈনিক তাপমাত্রা ৮.০ ১০.০ ১২.০ ১৪.০ ১৬.০ ১৭.০ ১৬.০ ১৫.০ ১৩.০ ১১.০ ৯.০ ৮.০ 12.4
গড় অতিবেগুনি সূচক
Source: Weather Atlas

লাভজনকস্থান

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
মলি ম্যালোনের মূর্তি

ল্যান্ডমার্ক

শত শত বছর আগের অনেক ল্যান্ডমার্ক ও স্মৃতিস্তম্ভ ডাবলিনে রয়েছে। প্রাচীনতমগুলির মধ্যে একটি হল ডাবলিন ক্যাসেল, যা ১২০৪ সালে ইংল্যান্ডের রাজা জনের নির্দেশে প্রধান প্রতিরক্ষামূলক কাজ হিসাবে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১১৬৯ সালে আয়ারল্যান্ডে নর্মান আক্রমণের পরপরই এটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে একটি শক্তিশালী প্রাচীর দিয়ে একটি দুর্গ তৈরি করা হবে। শহরের প্রতিরক্ষা, ন্যায়বিচারের প্রশাসন ও রাজার ধন রক্ষার জন্য ভাল খাদ ছিল। ১২৩০ সালের মধ্যে মোটামুটিভাবে সম্পূর্ণ দুর্গটি সাধারণ নর্মান উঠানের নকশার ছিল, যার মধ্যে একটি কেন্দ্রীয় চত্বর ছিল। চারদিকে লম্বা প্রতিরক্ষামূলক দেয়াল দ্বারা আবদ্ধ ছিল এবং প্রতিটি কোণে একটি বৃত্তাকার টাওয়ার দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। নরম্যান ডাবলিনের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। দুর্গটি শহরের বাইরের পরিধির এক কোণে তৈরি। প্রতিরক্ষার প্রাকৃতিক উপায় হিসাবে পোডল নদী ব্যবহার করা হতো।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ডাবলিনের স্পায়ার জিম লারকিনের মূর্তির পিছনে উঠে

ডাবলিনের নতুন স্মৃতিস্তম্ভগুলির মধ্যে একটি হল স্পায়ার অফ ডাবলিন। আনুষ্ঠানিকভাবে "আলোর স্মৃতিস্তম্ভ" শিরোনামে ডাকা হয়। এটি ১২১.২-মিটার (৩৯৮ ফু) স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি শঙ্কুযুক্ত স্পায়ার। ও'কনেল স্ট্রিটে অবস্থিত। এখানে হেনরি স্ট্রিট ও নর্থ আর্ল স্ট্রিটের সাথে মিলিত হয়। এটি নেলসনের স্তম্ভ প্রতিস্থাপন করে। ২১ শতকে ডাবলিনের স্থান চিহ্নিত করে। স্পায়ারটি ইয়ান রিচি আর্কিটেক্টস দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল। যিনি একটি "মার্জিত এবং গতিশীল সরলতা সেতুকরণ শিল্প ও প্রযুক্তি" চেয়েছিলেন। শহর জুড়ে রাতের আকাশে আলোকিত করার জন্য স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিটি আলোক সজ্জা এবং শীর্ষটি আলোকিত করা হয়েছে।।

ট্রিনিটি কলেজের ওল্ড লাইব্রেরি, ডাবলিন, যেখানে কেলসের বই রয়েছে। এটি শহরের অন্যতম দর্শনীয় স্থান। দ্য বুক অফ কেলস হল একটি সচিত্র পাণ্ডুলিপি যা প্রায় ৮০০ খ্রিস্টাব্দে আইরিশ সন্ন্যাসীদের দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। দ্য হ্যাপেনি ব্রিজ, লিফি নদীর উপর একটি লোহার ফুটব্রিজ, ডাবলিনের সবচেয়ে আলোকিত দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে একটি এবং এটি ডাবলিনের অন্যতম আইকনিক ল্যান্ডমার্ক হিসাবে বিবেচিত।

অন্যান্য ল্যান্ডমার্ক ও স্মারকগুলির মধ্যে রয়েছে ক্রাইস্ট চার্চ ক্যাথেড্রাল, সেন্ট প্যাট্রিক'স ক্যাথেড্রাল, ম্যানশন হাউস, মলি ম্যালোন মূর্তি, লেইনস্টার হাউসের চারপাশে বিল্ডিংগুলির কমপ্লেক্স, আয়ারল্যান্ডের জাতীয় জাদুঘর, আয়ারল্যান্ডের জাতীয় গ্রন্থাগারের অংশসহ কাস্টম হাউস এবং আরাস । উচতারাইন ও অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে আনা লিভিয়া মনুমেন্ট । পুলবেগ টাওয়ারগুলি ডাবলিনের ল্যান্ডমার্ক বৈশিষ্ট্য যা শহরের চারপাশের বিভিন্ন স্থান থেকে দৃশ্যমান।

পার্ক

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
সেন্ট স্টিফেনস গ্রিন এর বায়বীয় দৃশ্য

শহরের চারপাশে অনেক সবুজ-স্থান রয়েছে। ডাবলিন সিটি কাউন্সিল ১,৫০০ হেক্টর (৩,৭০০ একর) পার্ক পরিচালনা করে। পাবলিক পার্কের মধ্যে রয়েছে ফিনিক্স পার্ক, হারবার্ট পার্ক, সেন্ট স্টিফেনস গ্রিন, সেন্ট অ্যানস পার্ক ও বুল আইল্যান্ড । ফিনিক্স পার্ক প্রায় ৩ কিমি (২ মাইল) শহরের কেন্দ্র থেকে পশ্চিমে, লিফি নদীর উত্তরে অবস্থিত। এর ১৬-কিলোমিটার (১০ মা) পরিধি, প্রাচীর ৭০৭ হেক্টর (১,৭৫০ একর), এটি ইউরোপের বৃহত্তম প্রাচীরযুক্ত নগর উদ্যানগুলির মধ্যে একটি। এতে তৃণভূমির বিশাল এলাকা ও বৃক্ষ-রেখাযুক্ত পথ রয়েছে। ১৭ শতক থেকে বন্য পতিত হরিণের একটি পালের আবাসস্থল রয়েছে। আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রপতির বাসভবন (Áras an Uachtaráin), যা ১৭৫১ সালে নির্মিত হয়েছিল পার্কটিতে অবস্থিত। পার্কটিতে ডাবলিন চিড়িয়াখানা, অ্যাশটাউন ক্যাসেল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সরকারি বাসভবনও রয়েছে। পার্কে মাঝে মাঝে মিউজিক কনসার্টও হয়।

সেন্ট স্টিফেনস গ্রিন ডাবলিনের অন্যতম প্রধান শপিং স্ট্রিট, গ্রাফটন স্ট্রিট । এটির নামে নামকরণ করা একটি শপিং সেন্টারের সংলগ্ন । এর আশেপাশের রাস্তায় বেশ কয়েকটি পাবলিক সংস্থার অফিস রয়েছে।

সেন্ট অ্যান'স পার্ক হল একটি পাবলিক পার্ক। এখানে বিনোদনের সুবিধা, যা রাহেনি ও ক্লোন্টার্ফের মধ্যে ভাগ করা হয়েছে। উভয় শহরতলির উত্তর দিকে পার্ক, ডাবলিনের দ্বিতীয় বৃহত্তম পৌর উদ্যান, একটি প্রাক্তন ২-বর্গকিলোমিটার (০.৮ মা; ৫০০ একর) অংশ এস্টেট গিনেস পরিবারের সদস্যদের দ্বারা একত্রিত হয়েছিল। ১৮৩৫ সালে বেঞ্জামিন লি গিনেস থেকে শুরু হয়েছিল (সবচেয়ে বড় মিউনিসিপ্যাল পার্কটি কাছাকাছি (উত্তর) বুল আইল্যান্ড। এছাড়াও ক্লোন্টার্ফ ও রাহেনির মধ্যে ভাগ করা হয়েছে। এটিতে ৫ কিমি সৈকত।

অর্থনীতি

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
জর্জের কোয়ে প্লাজার আলস্টার ব্যাংক

ডাবলিন অঞ্চল হল আয়ারল্যান্ডের অর্থনৈতিক কেন্দ্র। সেল্টিক টাইগার সময়কালে দেশের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের অগ্রভাগে ছিল। ২০০৯ সালে, ডাবলিন ক্রয় ক্ষমতার দ্বারা বিশ্বের চতুর্থ ধনী শহর এবং নিজস্ব আয়ের দিক থেকে ১০তম ধনী শহর হিসাবে তালিকাভুক্ত হয়। মারসারের ২০১১ সালের বিশ্বব্যাপী জীবনযাত্রার খরচের সমীক্ষা অনুসারে ডাবলিন হল ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১৩তম ব্যয়বহুল শহর (২০১০ সালে ১০ তম থেকে নীচে) এবং বিশ্বের ৫৮তম সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্থান (২০১০ সালে ৪২ তম থেকে নেমে আসে)৷ ২০১৭-এর হিসাব অনুযায়ী , সমস্ত ডাবলিন এলাকায় প্রায় ৮৭৪৪০০ জন লোক নিযুক্ত ছিল। আয়ারল্যান্ডের আর্থিক, আইসিটি এবং পেশাদার সেক্টরে নিযুক্ত প্রায় ৬০% লোক এই এলাকায় অবস্থিত।

ডাবলিনের বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী শিল্প যেমন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, টেক্সটাইল তৈরি, চোলাই মদ ও পাতন ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছে। যদিও ১৭৫৯ সাল থেকে সেন্ট জেমস গেট ব্রুয়ারিতে গিনেস রেকড তৈরি করা হয়। ১৯৯০-এর দশকে অর্থনৈতিক উন্নতিগুলি শহর ও সমস্ত ডাবলিন এলাকায় বেশ কয়েকটি বিশ্বব্যাপী ওষুধ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কোম্পানিকে আকৃষ্ট করেছিল। মাইক্রোসফ্ট, গুগল, অ্যামাজন, ইবে, পেপ্যাল, ইয়াহু!, ফেসবুক, টুইটার, অ্যাকসেঞ্চার, টিকটক এবং ফাইজার- এর ইউরোপীয় সদর দফতর এখনে আছে। অথবা অপারেশনাল ঘাঁটি রয়েছে। যার বেশ কয়েকটি ডিজিটাল হাব এবং সিলিকন ডকসের মতো এন্টারপ্রাইজ এখানে অবস্থিত। এই কোম্পানিগুলির উপস্থিতি শহরের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণকে চালিত করেছে। ডাবলিনকে কখনও কখনও "ইউরোপের টেক ক্যাপিটাল" হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

১৯৮৭ সালে ডাবলিনের আন্তর্জাতিক আর্থিক পরিষেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে আর্থিক পরিষেবাগুলিও শহরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আইএফএসসি প্রোগ্রামের অধীনে ৫০০টির বেশি অপারেশন ট্রেড করার জন্য অনুমোদিত আছে। কেন্দ্রটি বিশ্বের শীর্ষ ৫০টি ব্যাঙ্কের অর্ধেক এবং শীর্ষ ২০টি বীমা সংস্থার অর্ধেকের আয়োজক৷ অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি শহরে প্রধান কার্যালয় স্থাপন করেছে। যেমন সিটিব্যাঙ্ক, আইরিশ স্টক এক্সচেঞ্জ (ISEQ), ইন্টারনেট নিরপেক্ষ এক্সচেঞ্জ (INEX) এবং আইরিশ এন্টারপ্রাইজ এক্সচেঞ্জ (IEX) ডাবলিনে অবস্থিত। ব্রেক্সিটের পরে ইউরোজোনে অ্যাক্সেস বজায় রাখার আশায় আর্থিক পরিষেবা সংস্থাগুলি হোস্ট করার জন্য ডাবলিনকে প্রধান শহরগুলির মধ্যে একটি হিসাবে স্থান দেওয়া হয়েছে৷ সেল্টিক টাইগার ডাবলিন ডকল্যান্ডস ও স্পেন্সার ডক -এ বৃহৎ পুনঃউন্নয়ন প্রকল্পের সাথে নির্মাণে একটি অস্থায়ী বুমের নেতৃত্ব দিয়েছিল। সমাপ্ত প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে কনভেনশন সেন্টার, থ্রি এরিনা এবং বোর্ড গাইস এনার্জি থিয়েটার ।

২০১৮ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ডাবলিন এক দশকের মধ্যে তার সর্বনিম্ন বেকারত্বের হার স্পর্শ করেছে এটি ডাবলিন অর্থনৈতিক মনিটরের রিপোর্ট অনুসারে ৫.৭% এ নেমে এসেছে।

পরিবহন

স্থলপথ

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ডাবলিনকে ঘিরে এম৫০ মোটরওয়ে

আয়ারল্যান্ডের সড়ক নেটওয়ার্ক প্রাথমিকভাবে ডাবলিনকে কেন্দ্র করে তৈরী। এম-৫০ মোটরওয়ে, একটি সেমি- রিং রোড যা শহরের দক্ষিণ, পশ্চিম এবং উত্তরে চলে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় প্রাথমিক রুটগুলিকে দেশের বাকি অংশের সাথে সংযুক্ত করে। ২০০৮ সালে, ওয়েস্ট-লিংক টোল ব্রিজটি ইফ্লো বাধা-মুক্ত টোলিং সিস্টেম দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। ইলেকট্রনিক ট্যাগ ও গাড়ির প্রাক-নিবন্ধনের উপর ভিত্তি করে একটি তিন-স্তরযুক্ত চার্জ সিস্টেমের সাথে যুক্ত।

শহরের প্রস্তাবিত পূর্বাঞ্চলীয় বাইপাসের প্রথম ধাপ হল ডাবলিন পোর্ট টানেল। যা মূলত ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হয়েছিল। টানেলটি ডাবলিন বন্দর ও এম-১ মোটরওয়েকে ডাবলিন বিমানবন্দরের কাছে সংযুক্ত করে। এছাড়াও শহরটি একটি অভ্যন্তরীণ ও বাইরের কক্ষপথ দ্বারা বেষ্টিত। অভ্যন্তরীণ অরবিটাল রুটটি প্রায় জর্জিয়ান শহরের কেন্দ্রস্থলে চলে গেছে। বাইরের অরবিটাল রুটটি মূলত ডাবলিনের দুটি খাল, গ্র্যান্ড ক্যানেল ও রয়্যাল ক্যানেল, সেইসাথে উত্তর ও দক্ষিণ সার্কুলার রোড দ্বারা গঠিত প্রাকৃতিক বৃত্ত বরাবর চলে।

২০১৬ টমটম ট্র্যাফিক ইনডেক্স ডাবলিনকে বিশ্বের ১৫তম এবং ইউরোপের ৭তম সর্বাধিক যানজটপূর্ণ শহর হিসাবে স্থান দিয়েছে।

বাস

ডাবলিন শহর ও শহরতলির প্রায় ২০০টি বাস রুটের একটি নেটওয়ার্ক দ্বারা পরিবেশিত হয়। এর মধ্যে বেশিরভাগই ডাবলিন বাস দ্বারা সরবরাহ করা হয়। ২০১৮ সালে গো এহেড আয়ারল্যান্ডে বদলি করা হয়। বেশ কিছু ছোট কোম্পানিও কাজ করে। ভাড়া সাধারণত দূরত্বের উপর ভিত্তি করে একটি স্টেজ সিস্টেমে গণনা করা হয়। ভাড়ার বিভিন্ন স্তর রয়েছে, যা বেশিরভাগ পরিষেবাতে প্রযোজ্য। ২০১২ সালে ডাবলিন বাস স্টপগুলিতে একটি "রিয়েল টাইম প্যাসেঞ্জার ইনফরমেশন" সিস্টেম চালু করা হয়েছিল। যেখানে সাইন রিলে তার জিপিএস অবস্থানের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী বাসগুলির আগমনের অনুমিত সময় প্রদর্শন করে। ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি ডাবলিনে বাস ও রেল পরিষেবাগুলির একীকরণের জন্য দায়ী। একটি প্রি-পেইড স্মার্ট কার্ড প্রবর্তনের সাথে জড়িত। যাকে লিপ কার্ড বলা হয়, যা ডাবলিনের সমস্ত পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবাগুলিতে ব্যবহার করে থাকে৷

সাইকেল চালানো

২০১১ সালের আদমশুমারিতে দেখায় যে, ডাবলিনের ৫.৯ শতাংশ যাত্রী সাইকেল চালায়। ডাবলিন সিটি কাউন্সিলের ২০১৩ সালের ট্রাফিক প্রবাহ শহরের ভিতরে এবং বাইরের খালগুলি অতিক্রম করার রিপোর্টে দেখা গেছে যে সমস্ত ট্রাফিকের মাত্র ১০% এর কম সাইক্লিস্টদের দ্বারা গঠিত। যা ২০১২ এর তুলনায় ১৪.১% বৃদ্ধি এবং ২০০৬ সালের তুলনায় ৮৭.২% বৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করে। ডাবলিনবাইক ভাড়ার স্কিম, সাইকেল লেনের ব্যবস্থা, সাইকেল চালানোর প্রচারে জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান এবং গতিসীমা ঘন্টায় ৩০ কিমি প্রবর্তনের মতো ব্যবস্থাগুলির জন্য দায়ী।

ডাবলিন সিটি কাউন্সিল ১৯৯০ এর দশকে শহর জুড়ে সাইকেল লেন ও ট্র্যাক স্থাপন শুরু করে। ২০১২-এর হিসাব অনুযায়ী শহরের ২০০ কিলোমিটার (১২০ মা) সাইক্লিস্টদের জন্য নির্দিষ্ট অন-অফ-রোড ট্র্যাক আছে। ২০১১ সালে শহরটি সাইকেল-বান্ধব শহরগুলির কোপেনহেগেনাইজ সূচকে বিশ্বের প্রধান শহরগুলির মধ্যে ৯তম স্থানে ছিল। একই সূচক ২০১৫ সালে ১৫তমতে নেমে আসে। ডাবলিন ২০১৭ সালে শীর্ষ ২০-এর বাইরে ছিল।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ডকল্যান্ডে ডাবলিনবাইক টার্মিনাল

ডাবলিন বাইক হল একটি স্ব-পরিষেবা সাইকেল ভাড়ার স্কিম যা ২০০৯ সাল থেকে ডাবলিনে চালু রয়েছে। জেসিডিকাক্স এবং জাস্ট ইট দ্বারা স্পন্সর করা এই স্কিমটি শহরের কেন্দ্রে ৪৪ টার্মিনালে স্থাপন করা শত শত ইউনিসেক্স সাইকেল নিয়ে গঠিত হয়। ব্যবহারকারীদের অবশ্যই একটি বার্ষিক লং টার্ম হায়ার কার্ডের জন্য সাবস্ক্রিপশন করতে হবে বা তিন দিনের টিকিট কিনতে হবে। ২০১৮-এর হিসাব অনুযায়ী ডাবলিনবাইক এর ৬৬,০০০ এর বেশি দীর্ঘমেয়াদী গ্রাহক ছিল। প্রতি বছর ২ মিলিয়ন এর বেশি ভ্রমণ করে।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
তালাত টার্মিনাসে লুয়াস ট্রাম

হিউস্টন ও কনোলি স্টেশন হল ডাবলিনের দুটি প্রধান রেল টার্মিনাল। ডাবলিন শহরতলির দ্বারা পরিচালিত রেল নেটওয়ার্কে পাঁচটি রেললাইন রয়েছে। যা গ্রেটার ডাবলিন এলাকা ও কাউন্টি লাউথের দ্রোগেদা, ডান্ডালক, কাউন্টি ওয়েক্সফোর্ডের গোরির মতো কমিউটার শহরগুলিতে চলাচল করে। দিনে একবার পোর্টলাওইস পর্যন্ত প্রসারিত হয়। পাঁচটি লাইনের মধ্যে একটি হল বিদ্যুতায়িত ডাবলিন এরিয়া র‌্যাপিড ট্রানজিট (DART) লাইন। যা মূলত ডাবলিনের উপকূল বরাবর চলে। যার মধ্যে ৩১টি স্টেশন রয়েছে। ম্যালাহাইড ও হাউথ থেকে দক্ষিণে কাউন্টি উইকলোতে গ্রেস্টোনস পর্যন্ত চলে। কমিউটার রেল আইরিশ রেল ডিজেল একাধিক ইউনিট ব্যবহার করে অন্য চারটি লাইনে কাজ করে। ২০১৩ সালে, DART ও ডাবলিন শহরতলির লাইনের যাত্রী ছিল যথাক্রমে ১৬ মিলিয়ন ও ১১.৭  মিলিয়ন (সকল আইরিশ রেল যাত্রীর প্রায় ৭৫%)।

ডাবলিনে একবার ট্রামের একটি বিস্তৃত ব্যবস্থা ছিল কিন্তু এটি মূলত ১৯৪৯ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বন্ধ হয়ে যায়। নতুন হালকা রেল ব্যবস্থা প্রায়শই একটি ট্রাম সিস্টেম হিসাবে বর্ণনা করা হয়। লুয়াস, ২০০৪ সালে চালু করা হয়েছিল। এটি ট্রান্সডেভ আয়ারল্যান্ড দ্বারা পরিচালিত হয় ( ট্রান্সপোর্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার আয়ারল্যান্ড থেকে চুক্তির অধীনে)। যা বার্ষিক ৩৪ মিলিয়ন যাত্রী বেশি বহন করে। নেটওয়ার্ক দুটি আন্তঃসংযোগ লাইন নিয়ে গঠিত। রেড লাইন ডকল্যান্ডস ও শহরের কেন্দ্রকে টালাগট এবং স্যাগার্টের দক্ষিণ-পশ্চিম শহরতলির সাথে সংযুক্ত করে। এখানে উত্তরের অভ্যন্তরীণ শহরতলির সাথে গ্রীন লাইন, স্যান্ডিফোর্ড ও ব্রাইডস গ্লেনসহ শহরের দক্ষিণে শহরতলির সাথে প্রধান শহর কেন্দ্রকে সংযুক্ত করে। এই লাইনগুলি একসাথে মোট ৬৭টি স্টেশন ও ৪৪.৫ কিলোমিটার (২৭.৭ মা) নিয়ে গঠিত। এটি গ্রীন লাইনের ৬ কিমি সম্প্রসারণ করে। এটিকে শহরের উত্তরে নিয়ে আসা হয়। জুন ২০১৩ সালে নির্মাণ শুরু হয় ও ৯ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

মেট্রোলিংক নামে একটি মেট্রো পরিষেবার প্রস্তাব করা হয়েছে এবং ডাবলিনের উত্তরপ্রান্ত থেকে ডাবলিন বিমানবন্দর এবং সেন্ট স্টিফেনস গ্রিন হয়ে স্যান্ডিফোর্ড পর্যন্ত চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

রেল ও ফেরি

ডাবলিন কনোলি ডাবলিন বন্দরের সাথে বাসের মাধ্যমে সংযুক্ত রয়েছে। নর্থ ওয়েলস কোস্ট লাইনের চেস্টার, ক্রু ও লন্ডন ইউস্টন পর্যন্ত ট্রেনগুলিকে সংযোগ করার জন্য আইরিশ ফেরি ও স্টেনা লাইন দ্বারা হোলিহেড থেকে ফেরি চালানো হয়। ডাবলিন কনোলি থেকে ডাবলিন পোর্ট পর্যন্ত অ্যামিয়েন্স স্ট্রিট; ডাবলিন থেকে স্টোর স্ট্রিট বা লুয়াস হয়ে বুসারাস হয়ে যেখানে ডাবলিন বাস ফেরি টার্মিনালে পরিষেবা পরিচালনা করে সেখানে পৌঁছানো যায়।

বিমানব্যবস্থা

ডাবলিন বিমানবন্দর

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ডাবলিন বিমানবন্দর

ডাবলিন বিমানবন্দর ( ডিএএ মালিকানাধীন এবং পরিচালিত) ডাবলিন শহরের উত্তরে ফিঙ্গালের প্রশাসনিক কাউন্টির সোর্ডসের কাছে অবস্থিত। আয়ারল্যান্ডের পতাকা বাহক এয়ার লিঙ্গাস ও আঞ্চলিক এয়ারলাইন সিটিজেট- এর সদর দপ্তর এখানে অবস্থিত।কাছাকাছি যাতায়াতের জন্য স্বল্পমূল্যের ক্যারিয়ার রায়নায়ার- এর সদরদপ্তরও এখানে অবস্থিত। বিমানবন্দরটি একটি সংক্ষিপ্ত ও মাঝারি-দূরত্বের নেটওয়ার্ক ও আয়ারল্যান্ডের আঞ্চলিক বিমানবন্দরগুলিতে অভ্যন্তরীণ পরিষেবা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মধ্যপ্রাচ্য, হংকং-এ দীর্ঘ-দূরত্বের পরিষেবা সরবরাহ করে। ডাবলিন বিমানবন্দর হল ইউরোপীয় ইউনিয়নের ১১তম ব্যস্ততম বিমানবন্দর। আয়ারল্যান্ড দ্বীপের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দর।

২০১৪ সালে, ডাবলিন বিমানবন্দর ছিল ইউরোপের ১৮তম ব্যস্ততম বিমানবন্দর। যা ২১মিলিয়ন জনেরও বেশি পরিষেবা প্রদান করে। ২০১৬ সাল নাগাদ এ পরিমাণ বেড়ে ২৭.৯ মিলিয়ন যাত্রী বিমানবন্দরের মধ্য দিয়ে যাতায়াত করেছে। একটি সর্বকালের রেকর্ড স্থাপন করেছে। যা স্বল্প ও দীর্ঘ-দূরত্ব উভয় নেটওয়ার্কে বৃদ্ধির দ্বারা সমর্থিত। ২০১৫-২০১৬ সালে উত্তর আমেরিকায় প্রতি সপ্তাহে ১৫৮টি গ্রীষ্মকালীন ফ্লাইটসহ ট্রান্সঅ্যাটলান্টিক ট্রাফিক বৃদ্ধি করেছে। যা বছরের ব্যবধানে সেই রুটের জন্য এটিকে ষষ্ঠ বৃহত্তম ইউরোপীয় কেন্দ্রে পরিণত করেছে। ট্রান্সঅ্যাটলান্টিক ট্রাফিকও ২০১৬ সালে বিমানবন্দরের জন্য বাজারের দ্রুততম বর্ধনশীল অংশ ছিল। এখানে ২০১৫ থেকে ১৬% বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তর আমেরিকার মধ্যে ভ্রমণকারী যাত্রীদের বার্ষিক সংখ্যা ২.৯ মিলিয়ন-এ নিয়ে এসেছে।

২০১০ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত, ডাবলিন বিমানবন্দর প্রায় ৯.৫ মিলিয়ন যাত্রী বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের সংখ্যা একইভাবে বৃদ্ধির প্রবণতা অনুসরণ করেছে ২০১৩ সালে ১৬৩,৭০৩ থেকে ২০১৫ সালে ১৯১,২৩৩।

অন্যান্য বিমান পরিবহন

ডাবলিন ওয়েস্টন বিমানবন্দর ও অন্যান্য ছোট সুযোগ-সুবিধাগুলি, হেলিকপ্টার অপারেটরদের একটি পরিসর দ্বারাও পরিবেশিত হয়। সামরিক ও কিছু রাষ্ট্রীয় পরিষেবা কাছাকাছি কেসমেন্ট অ্যারোড্রোম ব্যবহার করে।

শিক্ষা

ডাবলিন হল আয়ারল্যান্ডের শিক্ষার সবচেয়ে বড় কেন্দ্র। এখানে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটি ২০১২ সালে ইউরোপীয় বিজ্ঞানের রাজধানী ছিল।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ট্রিনিটি কলেজ
ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ট্রিনিটি কলেজের ওল্ড লাইব্রেরি

ডাবলিন ইউনিভার্সিটি হল আয়ারল্যান্ডের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়। এটি ১৬ শতক থেকে শুরু হয় এবং শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত। এর একমাত্র উপাদান কলেজ, ট্রিনিটি কলেজ (টিসিডি)। রয়্যাল চার্টার দ্বারা ১৫৯২ সালে এলিজাবেথ-১ এর অধীনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি ১৭৯৩ সাল পর্যন্ত রোমান ক্যাথলিকদের জন্য বন্ধ ছিল। ক্যাথলিক শ্রেণিবিন্যাসও ১৯৭০ সাল পর্যন্ত রোমান ক্যাথলিকদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছিল। এটি শহরের কেন্দ্রে, কলেজ গ্রীনে অবস্থিত। এখানে ১৮০০০ জনের বেশি ছাত্র রয়েছে।

ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ আয়ারল্যান্ড (NUI) এর ডাবলিনে আসন রয়েছে। এটি ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন (UCD) এর সংশ্লিষ্ট কন্সটিটুয়েন্ট ইউনিভার্সিটির অবস্থানও এখানে। যেখানে ৩০,০০০ জনের বেশি ছাত্র রয়েছে। এটি ১৮৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত। এটি এখন আয়ারল্যান্ডের বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। ইউসিডির মূল ক্যাম্পাস বেলফিল্ডে, শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ কিমি (৩ মা) দক্ষিণ-পূর্ব শহরতলিতে অবস্থিত।

২০১৯ সালের হিসাবে, ডাবলিনের প্রধান ও আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় প্রযুক্তিগত শিক্ষা ও গবেষণার প্রতিষ্ঠান হলো ডাবলিন ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (ডিআইটি)। যার উৎপত্তি ১৮৮৭ সালে। দুটি প্রধান শহরতলির তৃতীয় স্তরের প্রতিষ্ঠান। এটি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, ট্যালাঘট এবং ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির সাথে একীভূত হয়েছে। Blanchardstown, টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি ডাবলিন গঠন করে। ছাত্র ও জনসংখ্যার দিক থেকে এটি আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রকৌশল, স্থাপত্য, বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য, সাংবাদিকতা, ডিজিটাল মিডিয়া, আতিথেয়তা, ব্যবসা, শিল্প ও নকশা, সঙ্গীত ও মানবিক প্রোগ্রামগুলির অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোর্সের একটি বিস্তৃত পরিসর অফার করে। গ্রেঞ্জগোরম্যানে তিনটি দীর্ঘমেয়াদী ক্যাম্পাস রয়েছে।

ডাবলিন সিটি ইউনিভার্সিটি (ডিসিইউ) পূর্বে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হায়ার এডুকেশন (এনআইএইচই) ডাবলিন- ব্যবসা, প্রকৌশল, বিজ্ঞান, যোগাযোগ কোর্স, ভাষা এবং প্রাথমিক শিক্ষার কোর্স অফার করে। এটিতে প্রায় ১৬,০০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। এর প্রধান ক্যাম্পাস প্রায় শহরের কেন্দ্র থেকে ৭ কিমি (৪ মা) উত্তর শহরতলিতে অবস্থিত। প্রধান গ্লাসনেভিন ক্যাম্পাস ছাড়াও, ড্রামকন্ড্রা ক্যাম্পাসে প্রাক্তন সেন্ট প্যাট্রিক কলেজ অফ এডুকেশন অন্তর্ভুক্ত। ড্রামকোন্দ্রা মেটার দেই ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশনের ছাত্র এবং অল হ্যালোসের ডিসিইউ ক্যাম্পাসে চার্চ অফ আয়ারল্যান্ড কলেজ অফ এডুকেশনের ছাত্রদেরও একত্র করে।

আয়ারল্যান্ডের রয়্যাল কলেজ অফ সার্জনস (RCSI) একটি মেডিকেল স্কুল পরিচালনা করে। যা ২০১৯ সাল থেকে একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এটি NUI-এর একটি স্বীকৃত কলেজ ও শহরের কেন্দ্রে সেন্ট স্টিফেনস গ্রীনে অবস্থিত। এছাড়াও UCD এবং ট্রিনিটি কলেজের মধ্যে বড় মেডিকেল স্কুল রয়েছে। ন্যাশনাল কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ডিজাইন (NCAD) শিল্প, নকশা এবং মিডিয়াতে শিক্ষা ও গবেষণা প্রদান করে। ন্যাশনাল কলেজ অফ আয়ারল্যান্ড (NCI) এছাড়াও ডাবলিনে অবস্থিত। ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট, একটি সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা ইনস্টিটিউট, স্যার জন রজারসনের কোয়ে এবং ডাবলিন ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ডাবলিনে অবস্থিত।

ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ইউরোপিয়ান অ্যাফেয়ার্সও ডাবলিনে। ডাবলিন বিজনেস স্কুল (ডিবিএস) হল আয়ারল্যান্ডের বৃহত্তম বেসরকারি তৃতীয় স্তরের প্রতিষ্ঠান। যার ৯০০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী অংগিয়ার স্ট্রিটে অবস্থিত। গ্রিফিথ কলেজ ডাবলিনের পোর্টোবেলোতে এর প্রধান সুবিধা রয়েছে। দ্য গেইটি স্কুল অফ অ্যাক্টিংসহ আরও ছোট বিশেষায়িত কলেজ রয়েছে। আইরিশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং সেন্টারের ভিত্তি ডাবলিনে রয়েছে। ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন আয়ারল্যান্ডের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও কিছু ক্ষেত্রে কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের মাধ্যমে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পুরস্কার প্রদান করে।

ডাবলিন রয়্যাল আইরিশ একাডেমির আবাসস্থলে অবস্থিত। যার সদস্যপদ আয়ারল্যান্ডের সর্বোচ্চ একাডেমিক সম্মান বলে বিবেচিত হয়।

ডুন লাওহায়ার ইনস্টিটিউট অফ আর্ট, ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি (IADT) ডুন লাওঘাইরে শহরতলির শহরে অবস্থিত। যা শিল্প, নকশা, ব্যবসা, মনোবিজ্ঞান ও মিডিয়া প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সমর্থন করে।

জনসংখ্যা

ডাবলিন সিটি এবং শহরতলির প্রধান অভিবাসী গোষ্ঠী, 2016
জাতীয়তা জনসংখ্যা
পোল্যান্ড ৩৩,৭৫১
যুক্তরাজ্য ১৯,১৯৬
রোমানিয়া ১৬৮০৮
লিথুয়ানিয়া ৯,৮৬৯
ব্রাজিল ৮,৯০৩
ইতালি ৬,৮৩৪
ভারত ৬,৫৪৬
স্পেন ৬,৩৪১
লাটভিয়া ৫,৭৭১
চীন পটভূমি ৫,৭৪৮
ফ্রান্স ৫,৫৭৬
আমেরিকা ৪,০৪২
নাইজেরিয়া ২,৫৬৩
পাকিস্তান ২৫১৫
ফিলিপাইন ২২০৪

ডাবলিন সিটি হল ডাবলিন সিটি কাউন্সিল দ্বারা পরিচালিত এলাকা। তবে "ডাবলিন" শব্দটি সংলগ্ন শহুরে এলাকাকে বোঝাতেও ব্যবহৃত হয় যার মধ্যে ডুন লাওঘাইরে-রাথডাউন, ফিঙ্গাল এবং দক্ষিণ ডাবলিনের সংলগ্ন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এলাকার অংশগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একসাথে, চারটি এলাকা কাউন্টি ডাবলিন গঠন করে। এই অঞ্চলটি কখনও কখনও ডাবলিন অঞ্চল হিসাবে পরিচিত। সিটি কাউন্সিল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত প্রশাসনিক এলাকার জনসংখ্যা ছিল ২০১৬ সালের আদমশুমারিতে ৫৫৪,৫৫৪ জন। শহর এলাকার জনসংখ্যা ছিল ১,১৭৩,১৭৯ জন। কাউন্টি ডাবলিনের জনসংখ্যা ছিল ১২৭৩০৬৯ এবং গ্রেটার ডাবলিন এলাকার ১,৯০৪,৮০৬ জন। এলাকার জনসংখ্যা দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অফিস দ্বারা অনুমান করা হয়েছে যে এটি ২০২০ সালে ২.১- মিলিয়নে পৌঁছাবে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, ডাবলিন এবং আয়ারল্যান্ড উভয় ক্ষেত্রেই ইতালীয়রা ছিল সবচেয়ে বড় অভিবাসী গোষ্ঠী । তারা ক্যাটারিং ও রেস্তোরাঁর ল্যান্ডস্কেপের সমার্থক হয়ে ওঠে। ১৯৯০ এর দশকের শেষের দিক থেকে ডাবলিন একটি উল্লেখযোগ্য স্তরের নেট অভিবাসনের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। যেখানে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড এবং লিথুয়ানিয়া থেকে এসেছে। ব্রাজিল, ভারত, ফিলিপাইন, চীন এবং নাইজেরিয়া সহ ইউরোপের বাইরে থেকেও অভিবাসন রয়েছে। ডাবলিন দেশের অন্য যেকোনো অংশের তুলনায় নতুন আগমনের একটি বৃহত্তর অনুপাতের আবাসস্থল। আয়ারল্যান্ডের এশিয়ান জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ ডাবলিনে বাস করে। ২০০৬ সালে ডাবলিনের জনসংখ্যার ১৫% এর বেশি বিদেশী বংশোদ্ভূত।

রাজধানী অন্যান্য দেশ থেকে নন-ক্যাথলিক অভিবাসীদের বৃহত্তম অনুপাতকে আকর্ষণ করে। আয়ারল্যান্ডে ধর্মনিরপেক্ষতা বৃদ্ধির ফলে ডাবলিনে নিয়মিত ক্যাথলিক গির্জার উপস্থিতি ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি ৯০ শতাংশ থেকে কমে ১৪ শতাংশে নেমে আসে। ২০১১ সালের জরিপ অনুসারে কিছু এলাকায় ২% এরও কম

২০১৬ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ডাবলিনের জনসংখ্যা ছিল ৮৬.২% শ্বেতাঙ্গ (৮৬২৩৮১ জন শ্বেতাঙ্গ আইরিশ [৮৬.২%] সহ, ১৩২৮৪৬ জন। অন্যান্য শ্বেতাঙ্গ [১৩.২%] এবং ৫০৯২ [০.৫%] শ্বেত আইরিশ ভ্রমণকারী ), ২% কৃষ্ণাঙ্গ (২৩, ২৯) ৪.৬% এশিয়ান (৪৬৬২৬)। উপরন্তু, ২.৭% (২৭,৪২১ জন) অন্যান্য জাতিগত বা সাংস্কৃতিক পটভূমি থেকে এসেছে। ৪.৯% (৪৯০৯২ জন) তাদের জাতিগততা প্রকাশ করেনি। ধর্মের পরিপ্রেক্ষিতে, ৬৮.২% ক্যাথলিক, ১২.৭% অন্যান্য বিবৃত ধর্ম, ১৯.১% কোন ধর্ম নেই বা কোন ধর্ম নেই।

জুলাই ২০১৮-এর হিসাব অনুযায়ী, ডাবলিন অঞ্চলের মধ্যে ১৩৬৭টি পরিবার গৃহহীন হয়ে বা অন্যান্য জরুরি আবাসনে বসবাস করত।

সংস্কৃতি

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
আয়ারল্যান্ডের জাতীয় জাদুঘর

শিল্পকলা

ডাবলিনের সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য ইতিহাস রয়েছে। নোবেল বিজয়ী উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস, জর্জ বার্নার্ড শ এবং স্যামুয়েল বেকেট সহ অনেক সাহিত্যিক ব্যক্তিত্ব রয়েছেন। অন্যান্য প্রভাবশালী লেখক ও নাট্যকারদের মধ্যে রয়েছেন অস্কার ওয়াইল্ড, জোনাথন সুইফটড্রাকুলার স্রষ্টা ব্রাম স্টোকারইউলিসিস সহ জেমস জয়েসের উল্লেখযোগ্য কাজের মূল অবস্থানও আছে। যা ডাবলিনে সেট করা হয়েছে এবং এতে অনেক প্রাসঙ্গিক বিবরণ রয়েছে। ডাবলিনার্স হল বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে শহরের ঘটনা। সাধারণ চরিত্র নিয়ে জয়েসের ছোট গল্পের একটি সংকলন রয়েছে। অন্যান্য বিখ্যাত লেখকদের মধ্যে রয়েছে জেএম সিঞ্জ, সেন ও'কেসি, ব্রেন্ডন বেহান, মায়েভ বিঞ্চি, জন ব্যানভিল এবং রডি ডয়েল । আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরি ও সাহিত্য জাদুঘরগুলি ডাবলিনে পাওয়া যায়। যার মধ্যে রয়েছে আয়ারল্যান্ডের ন্যাশনাল প্রিন্ট মিউজিয়াম ও আয়ারল্যান্ডের ন্যাশনাল লাইব্রেরি । জুলাই ২০১০ সালে, ডাবলিনকে ইউনেস্কো সাহিত্যের শহর হিসাবে নামকরণ করা হয়। স্থায়ী শিরোনামের সাথে এডিনবার্গ, মেলবোর্ন এবং আইওয়া সিটিতে যোগদান করে।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
কেলস বই

১৩ এপ্রিল ১৭৪২ সালে, ফিশম্বল স্ট্রিটের নীল'স মিউজিক হলে হ্যান্ডেলের বক্তৃতা মেসিয়াহ প্রথম পরিবেশিত হয়েছিল।

শহরের কেন্দ্রস্থলে বেশ কয়েকটি থিয়েটার রয়েছে। ডাবলিন থিয়েটারের দৃশ্য থেকে বিভিন্ন সুপরিচিত অভিনেতারা আবির্ভূত হয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছেন নোয়েল পারসেল, মাইকেল গ্যাম্বন, ব্রেন্ডন গ্লিসন, স্টিফেন রিয়া, কলিন ফারেল, কলম মেনি ও গ্যাব্রিয়েল বাইর্ন । সেরা পরিচিত থিয়েটারগুলির মধ্যে রয়েছে গেইটি, অ্যাবে, অলিম্পিয়া, গেট ও গ্র্যান্ড ক্যানাল । দ্য গেইটি বাদ্যযন্ত্র ও অপারেটিক প্রযোজনাগুলিতে বিশেষীকরণ করে। বিভিন্ন লাইভ মিউজিক, নাচ ও ফিল্ম পরিবেষণ করার জন্য সন্ধ্যায় থিয়েটার প্রোডাকশন দরজা খুলে দেয়। অ্যাবে ১৯০৪ সালে দেশীয় সাহিত্য প্রতিভা প্রচারের লক্ষ্যে ইয়েটসকে অন্তর্ভুক্ত করে এমন একটি দল দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত লেখকদের জন্য একটি অগ্রগতি প্রদান করে, যেমন সিঞ্জ, ইয়েটস এবং জর্জ বার্নার্ড শ। ১৯২৮ সালে ইউরোপীয় এবং আমেরিকান অ্যাভান্ট গার্ডের কাজগুলিকে প্রচার করার জন্য গেট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গ্র্যান্ড ক্যানাল থিয়েটার হল ২,১১১ জন ধারণক্ষমতার থিয়েটার যা ২০১০ সালে গ্র্যান্ড ক্যানাল ডক এলাকায় খোলা হয়েছিল।

দেশের সাহিত্য ও থিয়েটারের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার পাশাপাশি ডাবলিন আইরিশ শিল্প ও আইরিশ শৈল্পিক দৃশ্যেরও কেন্দ্রবিন্দু। দ্য বুক অফ কেলস, ৮০০ খ্রিস্টাব্দে সেল্টিক সন্ন্যাসীদের দ্বারা উৎপাদিত একটি বিশ্ব-বিখ্যাত পাণ্ডুলিপি ও ইনসুলার শিল্পের একটি উদাহরণ। ট্রিনিটি কলেজে প্রদর্শন করা হয়েছে। চেস্টার বিটি লাইব্রেরিতে আমেরিকান মাইনিং মিলিয়নেয়ার (এবং সম্মানসূচক আইরিশ নাগরিক) স্যার আলফ্রেড চেস্টার বিটি (১৮৭৫-১৯৬৮) দ্বারা একত্রিত পাণ্ডুলিপি। যাতে ক্ষুদ্র চিত্র, প্রিন্ট, অঙ্কন, বিরল বই এবং আলংকারিক শিল্পের সংগ্রহ রয়েছে। সংগ্রহের তারিখ ২৭০০ খৃ পূর্ব । এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং ইউরোপ থেকে আঁকা হয়েছে।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
সিটি হলের মেঝেতে ডাবলিনের কোট অফ আর্মসের মোজাইক

এছাড়াও পাবলিক আর্ট গ্যালারীগুলি শহর জুড়ে পাওয়া যায়। আইরিশ মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্ট, ন্যাশনাল গ্যালারি, হিউ লেন মিউনিসিপ্যাল গ্যালারি, ডগলাস হাইড গ্যালারি, প্রজেক্ট আর্টস সেন্টার হাইবারনিয়ান একাডেমি ও রয়্যালের প্রদর্শনী স্থানসহ বিনামূল্যে পরিদর্শন করা যায়। ডাবলিনের ব্যক্তিগত গ্যালারিগুলির মধ্যে রয়েছে গ্রিন অন রেড গ্যালারি, কারলিন গ্যালারি, কেভিন কাভানাঘ গ্যালারি এবং মাদারস ট্যাঙ্কস্টেশন।

আয়ারল্যান্ডের জাতীয় জাদুঘরের তিনটি শাখা ডাবলিনে অবস্থিত: ১) কিল্ডারে স্ট্রিটে প্রত্নতত্ত্ব, ২) কলিন্স ব্যারাকে আলংকারিক শিল্প ও ইতিহাস এবং ৩) মেরিয়ন স্ট্রিটে প্রাকৃতিক ইতিহাস । ১৭৪৬ সাল থেকে ডাবলিন ন্যাশনাল কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ডিজাইনের আবাসস্থল। ডাবলিন ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইন, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ডাবলিনিয়া হল একটি জীবন্ত ইতিহাস আকর্ষণ; যা শহরের ভাইকিং ও মধ্যযুগীয় ইতিহাস প্রদর্শন করে।

ডাবলিনে দীর্ঘদিন ধরে 'আন্ডারগ্রাউন্ড' শিল্পের দৃশ্য রয়েছে, যেখানে টেম্পল বার ১৯৮০-এর দশকে শিল্পীদের হোস্টিং করে। প্রকল্প আর্টস সেন্টারের মতো স্থানগুলি যৌথ ও নতুন প্রদর্শনীর কেন্দ্র হিসাবে কাজ করে। দ্য গার্ডিয়ান উল্লেখ করেছে যে, ডাবলিনের স্বাধীন ও ভূগর্ভস্থ শিল্পগুলি সি-২০১০ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময় বিকাশ লাভ করেছিল। ডাবলিনে ফেস্টিভাল প্রোডাকশন, লিরিক অপেরা প্রোডাকশন, পাইওনিয়ার্স মিউজিক্যাল অ্যান্ড ড্রামাটিক সোসাইটি, রথমাইনস অ্যান্ড রাথগার মিউজিক্যাল সোসাইটি, গ্লাসনেভিন মিউজিক্যাল সোসাইটি, থার্ড ডে চোরালে, সেকেন্ড এজ থিয়েটার কোম্পানি, আইরিশ ন্যাশনাল অপেরা সহ অনেক নাটকদল, বাদ্যযন্ত্র ও অপারেটিক কোম্পানি রয়েছে। .

ডাবলিন ওয়ার্ল্ড ডিজাইন ক্যাপিটাল ২০১৪ সাল হতে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত হয়েছিল। টয়েসিস এন্ডা কেনি বলেছেন যে, ডাবলিন "২০১৪ সালে ওয়ার্ল্ড ডিজাইন ক্যাপিটাল পরিবেশন করার জন্য একটি আদর্শ প্রার্থী হবে"।

২০২১ সালের অক্টোবরে ডাবলিনকে ইউরোপিয়ান কমিশনের ২০২২ সালের ইউরোপিয়ান ক্যাপিটাল অফ স্মার্ট ট্যুরিজম অ্যাওয়ার্ডের জন্য বার্দো, কোপেনহেগেন, ফ্লোরেন্স, লুব্লজানা, পালমা দে ম্যালোর্কা ও ভ্যালেন্সিয়ার সাথে বাছাই করা হয়েছিল।

বিনোদন

ডাবলিনে একটি প্রাণবন্ত রাতের জীবন রয়েছে। এটি ইউরোপের সবচেয়ে তরুণ শহরগুলির মধ্যে একটি। আনুমানিক ৫০% নাগরিক ২৫ বছরের কম বয়সী এর সাথে জড়িত। সেন্ট স্টিফেন গ্রিন, গ্রাফটন স্ট্রিট, বিশেষ করে হারকোর্ট স্ট্রিট, ক্যামডেন স্ট্রিট, ওয়েক্সফোর্ড স্ট্রিট ও লিসন স্ট্রিটসহ অনেক নাইটক্লাব রয়েছে। শহরের কেন্দ্র জুড়ে অনেকগুলি পাব রয়েছে।

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
মন্দির বার

নাইট লাইফের জন্য সবচেয়ে পরিচিত এলাকা হল টেম্পল বার, লিফে নদীর দক্ষিণে অবস্থিত। এলাকাটি পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যার মধ্যে যুক্তরাজ্য থেকে আসা স্টেগ ও হেন পার্টিও রয়েছে। এটি ডাবলিনের ত্রৈমাসিক সাংস্কৃতিক হিসাবে বিকশিত হয়েছিল। ছোট শিল্প প্রযোজনা, ফটোগ্রাফিক, শিল্পীদের স্টুডিও, রোড পারফর্মার এবং ছোট সঙ্গীত স্থানগুলি এই চেতনাকে ধরে রাখে। লোনলি প্ল্যানেট দ্বারা এটিকে অতিরিক্ত মূল্য, মিথ্যা এবং নোংরা হিসাবে সমালোচিত করা হয়েছে। লিসন স্ট্রিট, হারকোর্ট স্ট্রিট, সাউথ উইলিয়াম স্ট্রিট ও ক্যামডেন/জর্জ স্ট্রিটের আশেপাশের এলাকাগুলি স্থানীয়দের জন্য জনপ্রিয় নাইট লাইফ স্পট।

সঙ্গীত

ডাবলিন জুড়ে রাস্তায় ও ভেন্যুতে লাইভ মিউজিক বাজানো হয়। শহরটি দ্য ডাবলিনার্স, থিন লিজি, দ্য বুমটাউন র্যাটস, ইউ-২, দ্য স্ক্রিপ্ট, সিনাড ও'কনর, বয়জোন, ফন্টেইন্স ডিসি, ওয়েস্টলাইফ,সহ বেশ কিছু সঙ্গীতশিল্পী ও আন্তর্জাতিক দল রয়েছে। ডাবলিনের বেশ কয়েকটি মিড-রেঞ্জ ভেন্যু রয়েছে যেগুলি সপ্তাহজুড়ে লাইভ মিউজিক করে। যার মধ্যে রয়েছে হুইলান্স ও ভিকার স্ট্রিট । ডাবলিন ডকল্যান্ডস -এর থ্রি এরিনা ভেন্যুতে বৈশ্বিক অভিনয়শিল্পীদের পরিদর্শন করা হয়।

কেনাকাটা

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
মুর স্ট্রিট মার্কেট
ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
গ্রাফটন স্ট্রিট

ডাবলিন শহরের কেন্দ্র স্থানীয় এবং পর্যটক উভয়ের জন্যই একটি জনপ্রিয় শপিং এর গন্তব্যস্থল। শহরের অসংখ্য শপিং ডিস্ট্রিক্ট রয়েছে। বিশেষ করে গ্রাফটন স্ট্রিট এবং নিয়ার হেনরি স্ট্রিট। শহরের কেন্দ্রস্থলে বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের অবস্থান রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে Arnotts, Brown Thomas এবং (২০১৫ এর বন্ধ হওয়ার আগে) Clerys ।

যদিও শহরটি কিছু ঐতিহ্যবাহী বাজারের সাইটগুলির ধ্বংসবশেস রয়েছে। মুর স্ট্রিট শহরের প্রাচীনতম ব্যবসায়িক জেলাগুলির মধ্যে একটি। স্থানীয় কৃষকদের বাজার ও অন্যান্য বাজারে কিছু বৃদ্ধিও হয়েছে। ২০০৭ সালে ডাবলিন ফুড কো-অপ লিবার্টিজ এলাকায় একটি গুদামে স্থানান্তরিত হয়। যেখানে বাজার ও সম্প্রদায়ের ইভেন্টগুলির আবাসস্থল। ডাবলিনের শহরতলির বেশ কয়েকটি আধুনিক খুচরা বাজার কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ডনড্রাম টাউন সেন্টার, ব্লানচার্ডটাউন সেন্টার, টালাঘটের স্কয়ার, ক্লোন্ডালকিনের লিফি ভ্যালি শপিং সেন্টার, স্যানট্রিতে ওমনি শপিং সেন্টার, রাথফার্নহ্যামের নাটগ্রোভ শপিং সেন্টার এবং সোর্ডস প্যাভিলিয়ন ।

মিডিয়া

ডাবলিন আয়ারল্যান্ডের মিডিয়া ও যোগাযোগের কেন্দ্রস্থল। সেখানে অনেক সংবাদপত্র, রেডিও স্টেশন, টেলিভিশন স্টেশন এবং টেলিফোন কোম্পানি রয়েছে। RTÉ হল আয়ারল্যান্ডের জাতীয় রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী। এটি ডনিব্রুক- এ অবস্থিত। ফেয়ার সিটি হল RTÉ-এর সোপ অপেরা, যা Carraigstown এর কাল্পনিক ডাবলিন শহরতলিতে অবস্থিত।

ভার্জিন মিডিয়া টেলিভিশন, ইআইআর স্পোর্ট, এমটিভি আয়ারল্যান্ড ও স্কাই নিউজও শহরে অবস্থিত। অ্যান পোস্ট এবং টেলিযোগাযোগ সংস্থাগুলির সদর দফতর যেমন ইআইআর, মোবাইল অপারেটর ভোডাফোন ও থ্রি সবইিএখানে অবস্থিত। ডাবলিন জাতীয় সংবাদপত্র যেমন দ্য আইরিশ টাইমস এবং আইরিশ ইন্ডিপেনডেন্টের; পাশাপাশি স্থানীয় সংবাদপত্র যেমন দ্য ইভেনিং হেরাল্ডের সদর দপ্তর আছে।

আরটিই রেডিওর অফিস হওয়ার পাশাপাশি ডাবলিন জাতীয় রেডিও নেটওয়ার্ক টুডে এফএম, নিউজস্টক ও স্থানীয় স্টেশনগুলিও আছে। শহরে অবস্থিত বাণিজ্যিক রেডিও স্টেশনগুলির মধ্যে রয়েছে-৪এফএম (৯৪.৯ MHz ), ডাবলিনের ৯৮FM (৯৮.১)MHz), রেডিও নোভা ১০০FM (১০০.৩ MHz), Q১০২ (১০২.২MHz), এসপিন ১০৩৮ (১০৩.৮ MHz), FM১০৪ (১০৪.৪ MHz), সানশাইন ১০৬.৮ (১০৬.8৯ MHz)। এছাড়াও ডাবলিন সিটি এফএম (১০৩.২ MHz), ডাবলিন সাউথ এফএম (৯৩.৯ MHz), লাইফি সাউন্ড FM (৯৬. ৪ MHz), নিয়ার FM (৯০.৩ MHz), এবং রেডিও না লাইফ (১০৬.৪ MHz)।

খেলা

জিএএ

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
ক্রোক পার্ক

ক্রোক পার্ক আয়ারল্যান্ডের বৃহত্তম খেলার স্টেডিয়াম। গ্যালিক অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সদর দফতর। এটির ধারণ ক্ষমতা ৮২,৩০০ জন। বার্সেলোনার ন্যু ক্যাম্প ও লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের পরে এটি ইউরোপের তৃতীয় বৃহত্তম স্টেডিয়াম। এটি প্রিমিয়ার গ্যালিক ফুটবল, হার্লিং গেম, ফুটবলের আন্তর্জাতিক নিয়ম এবং কনসার্টসহ অনিয়মিতভাবে অন্যান্য খেলাধুলা ও অ-ক্রীড়া ইভেন্টের আয়োজন করে। মোহাম্মদ আলী ১৯৭২ সালে সেখানে মল্যযুদ্ধ করেছিলেন। ২০০৩ সালে বিশেষ অলিম্পিকের উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল ডাবলিন। এতে কনফারেন্স ও ভোজ সুবিধা ছিল। সেখানে জিএএ যাদুঘর রয়েছে।স্টেডিয়ামের ছাদে হাঁটাসহ স্টেডিয়ামের ট্যুর দেওয়া হয়। ল্যান্সডাউন রোডের পুনর্নির্মাণের সময়, ক্রোক পার্ক আইরিশ রাগবি ইউনিয়ন দল এবং রিপাবলিক অফ আয়ারল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের নিজস্ব খেলা খেলেছিল। সেইসাথে মুনস্টার ও লেইনস্টারের মধ্যে হাইনেকেন কাপ রাগবি ২০০৮-০৯ সেমিফাইনাল আয়োজন করেছিল যা একটি বিশ্ব রেকর্ডে তৈরি করেছিল। ক্লাব রাগবি ম্যাচ ডাবলিন GAA দল তাদের হোম লিগের বেশিরভাগ খেলা পার্নেল পার্কে খেলে।

রাগবি ইউনিয়ন

ডাবলিন: ব্যুৎপত্তি, ইতিহাস, সরকার ব্যবস্থা 
আভিভা স্টেডিয়াম

১৮৭৪ সালে আইআরএফইউ স্টেডিয়াম ল্যান্সডাউন রোডে স্থাপন করা হয়েছিল। এটি ছিল আইরিশ রাগবি ইউনিয়ন দল ও রিপাবলিক অফ আয়ারল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের হোম গেমের স্থান। আইরিশ রাগবি ফুটবল ইউনিয়ন, এফএআই এবং সরকারের মধ্যে একটি যৌথ উদ্যোগে এটিকে একটি নতুন অত্যাধুনিক ৫০,০০০ আসন বিশিষ্ট আভিভা স্টেডিয়ামে পুনঃবিকাশ করা হয়েছে। যা মে ২০১০ সালে খোলা হয়েছিল। আভিভা স্টেডিয়াম ২০১১ সালের উয়েফা ইউরোপা লিগের ফাইনাল আয়োজন করেছিল। রাগবি ইউনিয়ন দল লেইনস্টার রাগবি তাদের প্রতিযোগীতামূলক হোম গেমগুলি আরডিএস এরিনা ও আভিভা স্টেডিয়ামে খেলে। ডনিব্রুক স্টেডিয়ামে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ গেমস হয়। আয়ারল্যান্ড উইমেন, লেইনস্টার স্কুল, যুব অল আয়ারল্যান্ড লিগ ক্লাব ওল্ড ওয়েসলির হোম ক্লাব গেমগুলি কার্যকরী রেঞ্জার্স হিসাবে আমন্ত্রণ করে। কাউন্টি ডাবলিন আয়ারল্যান্ডের ১৩টি সিনিয়র রাগবি ইউনিয়ন ক্লাবের জন্য আবাসস্থল। যার মধ্যে শীর্ষ বিভাগ ১এ -এর ১০টি দলের মধ্যে 5টি রয়েছে।

ফুটবল সমিতি

কাউন্টি ডাবলিনে ছয়টি লীগ অফ আয়ারল্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন ফুটবল (সকার) ক্লাব আছে। বোহেমিয়ানস এফসি, শ্যামরক রোভারস, সেন্ট প্যাট্রিকস অ্যাথলেটিক, ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন, শেলবোর্ন এবং ক্যাবিনটিলি । প্রথম আইরিশ দল হিসাবে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় ( ২০১১-১২ UEFA ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্ব ) গ্রুপ পর্বে পৌঁছায় তারা হল শ্যামরক রোভারস। তারা দক্ষিণ ডাবলিনের টালাগট স্টেডিয়ামে খেলে। বোহেমিয়ান এফসি ১৯০৪ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত দেশের প্রাচীনতম ফুটবল স্টেডিয়াম ডেলিমাউন্ট পার্কে এবং আয়ারল্যান্ড ফুটবল দলের হোম গ্রাউন্ডে খেলে। রিচমন্ড পার্কে সেন্ট প্যাট্রিকের অ্যাথলেটিক খেলা; ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিন ডুন লাওঘাইরে-র্যাথডাউনের ইউসিডি বাউলে; এবং শেলবোর্ন এ টোলকা পার্ক । টোলকা পার্ক, ডালিমাউন্ট পার্ক, উইসিডি বোল এবং মধ্যে টালাগট স্টেডিয়াম, সহ কার্লাইল গ্রাউন্ড মধ্যে ব্রে, এর মধ্যবর্তী রাউন্ডে গোষ্ঠীর সকল ৩ গেম হোস্ট ২০১১ উয়েফা অঞ্চল 'কাপ ।

ক্রিকেট

ডাবলিনের ক্যাসেল এভিনিউ (ক্লোনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব) এবং মালাহাইড ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে দুটি ওডিআই ক্রিকেট মাঠ রয়েছে। ক্যাসেল এভিনিউ ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের অংশ হিসাবে ২১ মে ১৯৯৯ তারিখে প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন করে যেখানে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছিল। কলেজ পার্কের টেস্ট মর্যাদা রয়েছে এবং আয়ারল্যান্ডের প্রথম টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ, ২০০০ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মহিলাদের ম্যাচের আয়োজক হিসাবে খেলেছে। পুরুষদের আইরিশ ক্রিকেট দলও ২০১৮ সালে মালাহাইড ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল।লেইনস্টার লাইটনিংডাবলিনে কলেজ পার্কে তাদের নিজস্ব আন্তঃপ্রাদেশিক ম্যাচ খেলে।

অন্যান্য

ডাবলিন ম্যারাথন অক্টোবরের শেষে ১৯৮০ সাল থেকে চালানো হয়। মহিলাদের মিনি ম্যারাথন জুনের প্রথম সোমবার ১৯৮৩ সাল থেকে চালানো হয়। যা আয়ারল্যান্ডে একটি ব্যাঙ্ক ছুটির দিনে হয়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহিলা ইভেন্ট বলে মনে করা হয়। গ্রেট আয়ারল্যান্ড রান এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে ডাবলিনের ফিনিক্স পার্কে অনুষ্ঠিত হয়।

ডাবলিন এলাকা শেলবোর্ন পার্কে গ্রেহাউন্ড রেসিং ও লিওপার্ডটাউনে ঘোড়দৌড়ের আয়োজন করে। ডাবলিন হর্স শো RDS- এ অনুষ্ঠিত হয়, যেটি ১৯৮২ সালে শো জাম্পিং ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের আয়োজন করেছিল। ন্যাশনাল বক্সিং এরিনা সাউথ সার্কুলার রোডের ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে অবস্থিত। ন্যাশনাল বাস্কেটবল এরিনা টালাঘটে অবস্থিত। এটি আইরিশ বাস্কেটবল দলের মাঠ। বাস্কেটবল লিগ ফাইনালের ভেন্যু, বক্সিং ও কুস্তি ইভেন্টও আয়োজন করে। ব্লানচার্ডটাউনের ন্যাশনাল অ্যাকুয়াটিক সেন্টার হল আয়ারল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ইনডোর ওয়াটার অবসর সুবিধা। এছাড়াও রয়েছে গ্যালিক হ্যান্ডবল, হকি এবং অ্যাথলেটিক্স স্টেডিয়া। বিশেষ করে স্যান্ট্রির মর্টন স্টেডিয়াম, যেখানে ২০০৩ সালে বিশেষ অলিম্পিকের অ্যাথলেটিক্স ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

রন্ধনপ্রণালী

২০১৮ সালের মিশেলিন গাইড অনুসারে ডাবলিনের পাঁচটি রেস্তোরাঁ, ছয়টি মিশেলিন স্টার রয়েছে। যার মধ্যে রেস্তোরাঁ প্যাট্রিক গুইলবাউড রয়েছে। আইরিশ বংশোদ্ভূত কেভিন থর্নটনকে ২০০১ সালে দুটি মিশেলিন স্টার পুরস্কৃত করা হয়েছিল। যদিও তার রেস্তোরাঁ থর্নটন ২০১৬ সালে বন্ধ হয়ে যায়। ডাবলিন ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ১৯৯৯ সালে রন্ধনসম্পর্কীয় দক্ষতায় স্নাতক ডিগ্রি শুরু করে।

ঐতিহাসিকভাবে আইরিশ কফি হাউস ও ক্যাফেগুলি মিডিয়াতে কাজকারীদের সাথে যুক্ত। ২১ শতকের শুরু থেকে শহরে অ্যাপার্টমেন্টের বসবাসের বৃদ্ধির সাথে ডাবলিনের ক্যাফেগুলি একটি অনানুষ্ঠানিক জমায়েতের জায়গা ও একটি অ্যাডহক অফিসের সন্ধানে তরুণ পৃষ্ঠপোষকদের আকৃষ্ট করেছিল। ক্যাফেগুলি শহরে আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং আইরিশ-মালিকানাধীন কফি চেইন যেমন জাভা রিপাবলিক, ইনসমনিয়া ও ও'ব্রায়েন্স স্যান্ডউইচ বারগুলি আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতা করে। ২০০৮ সালে আইরিশ বারিস্তা স্টিফেন মরিসেই বিশ্ব বারিস্তা চ্যাম্পিয়নের খেতাব জিতেছিলেন।

আইরিশ ভাষা

ডাবলিন ঐতিহ্যগতভাবে ইংরেজিআইরিশ দুটি ভাষা নিয়ে একটি শহর। একটি পরিস্থিতি এটির আশেপাশের এলাকা, দ্য প্যালেতেও পাওয়া গেছে। কাউন্টি ডাবলিনের আইরিশ বিস্তৃত কেন্দ্রীয় উপভাষা অঞ্চলের পূর্বতম সম্প্রসারণকে প্রতিনিধিত্ব করে যা লেইনস্টার এবং কননাচটের মধ্যে প্রসারিত। কিন্তু এর নিজস্ব স্থানীয় বৈশিষ্ট্য ছিল। এটি উত্তরে কাউন্টি মেথ ও কাউন্টি লাউথের পূর্ব আলস্টার স্কটস উপভাষা দ্বারাও প্রভাবিত হয়। ১৬ শতকের ইংরেজ প্রশাসক উইলিয়াম জেরার্ড (১৫১৮-১৫৮১) এর ভাষায়: "সমস্ত ইংরেজ আনন্দের সাথে ডাবলিনে আইরিশ ভাষায় কথা বলে"। পুরাতন ইংরেজ ইতিহাসবিদ রিচার্ড স্ট্যানিহার্স্ট (১৫৪৭-১৬১৮) এভাবে লিখেছেন: "যখন তাদের উত্তরপুরুষরা সম্পূর্ণরূপে অতটা সতর্ক হয়ে ওঠেনি, তাদের পূর্বপুরুষরা বিজয়ের ক্ষেত্রে বীরত্বপূর্ণ ছিল, তখন আইরিশ ভাষা ইংরেজি প্যালেতে মুক্ত ছিল: এই ক্যানকারটি এমনভাবে গ্রহণ করেছিল যে তা গভীর শিকড়ে ছিল। পূর্বে যে দেহটি সম্পূর্ণ ও সুস্থ ছিল, তা অল্প অল্প করে ফেস্টেড এবং সম্পূর্ণরূপে পুষ্ট হয়েছে"। উপনিবেশ যুগে ইংরেজ কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছিল যে শহরের আশেপাশে আইরিশ ভাষায় ব্যাপকভাবে কথিত ছিল। ১৬৫৫ সালে ডাবলিনে আইরিশ ভাষায় বক্তৃতা দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকজন স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ১৬৫৬ সালের মার্চ মাসে একজন ধর্মান্তরিত ক্যাথলিক ধর্মযাজক সেমাস করসিকে প্রতি রবিবার ব্রাইডস প্যারিশে আইরিশ ভাষায় প্রচার করার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছিল এবং তাকে দ্রোগেদা ও অ্যাথিতে প্রচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ১৬৫৭ সালে ডাবলিনের ইংরেজ ঔপনিবেশিকরা মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের কাছে একটি পিটিশন পেশ করে অভিযোগ করে যে ডাবলিনে "সাধারণত আইরিশ এবং সাধারণত কথ্য ভাষা আছে"। ১৮ শতকের প্রথম দিকে ডাবলিনে আইরিশ ভাষা ছিল সেন এবং টাডগ অ নিসটিয়ান এর নেতৃত্বে একদল কবি ও লেখকের ভাষা। আইরিশ ভাষায় স্ক্রাইবাল কার্যক্রম ১৮ শতকের মধ্যে ডাবলিনে অব্যাহত ছিল। ১৮৫১ সালের আদমশুমারির সময় কাউন্টি ডাবলিনে স্থানীয় আইরিশ ভাষাভাষী ছিল। যদিও ১৯ শতকে আয়ারল্যান্ড জুড়ে আইরিশ ভাষাভাষীদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল। শতাব্দীর শেষভাগে একটি গ্যালিক পুনরুজ্জীবনে দেখা যায়, যা ডাবলিনে কেন্দ্রীভূত হয় এবং এর সাথে নতুন করে সাহিত্যিক কার্যকলাপ শুরু হয়। এটি শহুরে আইরিশের অবিচলিত পুনর্নবীকরণের আশ্রয়দাতা ছিল। যদিও এর নিজস্ব নতুন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ডাবলিনে এখন হাজার হাজার অভ্যাসগত আইরিশ ভাষী রয়েছে। ২০১৬ সালের আদমশুমারি অনুসারে দৈনিক আলাপকারীর (শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে) সংখ্যা ১৪,৯০৩ জন। তারা একটি শহুরে আইরিশ-ভাষী গোষ্ঠীর অংশ গঠন করে যা সাধারণত মোনোগ্লট ইংরেজি ভাষাভাষীদের তুলনায় ভাল-শিক্ষিত। ডাবলিনে আইরিশ-ভাষী দলটি বেশ কয়েকটি আইরিশ-মাঝারি স্কুল তৈরী করেছে। ডাবলিন অঞ্চলে ১২,৯৫০ জন শিক্ষার্থী ৩৪টি "গাইলসকোইলিনা" (আইরিশ-ভাষা প্রাথমিক বিদ্যালয়) এবং ১০টি গাইলকোলাইসটি (আইরিশ-ভাষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়) আছে। দুটি আইরিশ ভাষার রেডিও স্টেশন, ১) 'রেডিও না লাইফ' ও ২) 'আরটিই রেডিও গাইলটেকটা' আছে। শহরে স্টুডিও রয়েছে। অনলাইন স্টেশন " রেডিও রি রা" শহরের স্টুডিও থেকে সম্প্রচার করে। বেশ কয়েকটি আইরিশ ভাষা সংস্থাও রাজধানীতে অবস্থিত। কনরাধ না গেইলগে ভাষার ক্লাস অফার করা হয়। একটি বইয়ের দোকান আছে। এটি বিভিন্ন দলের লোকদের চাহিদা মিটায়। ডাবলিনের সবচেয়ে কাছের গেলটাচ হল রাথ কেয়ার্ন ও বেইল ঘিবের কাউন্টি মেথ গেল্টাচ যা ৫৫ কিমি (৩৪ মা) দূরে অবস্থিত।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

ডাবলিন সিটি কাউন্সিলের একটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইউনিট রয়েছে, যা ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠান, স্টাফদের প্রশিক্ষণ, আন্তর্জাতিক প্রচার, দৈত্ব অংশীদারিত্ব, ইউরোসিটিসের মতো বহু-শহর সংস্থাগুলির সাথে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ও অন্যান্য কাউন্সিল ইউনিটগুলির পরামর্শ নিয়ে কাজ করে।

অংশীদার শহর

ডাবলিন চারটি স্থান নিয়ে সংযুক্ত

শহর জাতি থেকে
সান জোসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৮৬
লিভারপুল যুক্তরাজ্য ১৯৯৭
বার্সেলোনা স্পেন ১৯৯৮
বেইজিং চীন ২০১১

শহরটির আরও বেশ কয়েকটি শহরের সাথে "বন্ধুত্ব" বা "সহযোগিতা চুক্তি" রয়েছে। রাশিয়ার মস্কো (২০০৯−) এবং সেন্ট পিটার্সবার্গ (২০১০−) এবং মেক্সিকোতে গুয়াদালাজারা (২০১৩−), এবং এর আগে রিও ডি জেনিরোর সাথেও একটি চুক্তির প্রস্তাব করেছে। পূর্ববর্তী চুক্তিতে মেক্সিকো সিটি (২০১৪−২০১৮), জর্জিয়ার তিবিলিসি (২০১৪−২০১৭) এবং চীনের উহান (২০১৬−২০১৯) এর সাথে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আরও দেখুন

  • ডাবলিন ইংরেজি
  • ডাবলিন থেকে মানুষের তালিকা
  • কাউন্টি ডাবলিনের উপবিভাগের তালিকা

তথ্যসূত্র


Tags:

ডাবলিন ব্যুৎপত্তিডাবলিন ইতিহাসডাবলিন সরকার ব্যবস্থাডাবলিন ভৌগোলিক অবস্থাডাবলিন লাভজনকস্থানডাবলিন অর্থনীতিডাবলিন পরিবহনডাবলিন শিক্ষাডাবলিন জনসংখ্যাডাবলিন সংস্কৃতিডাবলিন আইরিশ ভাষাডাবলিন আন্তর্জাতিক সম্পর্কডাবলিন আরও দেখুনডাবলিন তথ্যসূত্রডাবলিনপৌর এলাকাপ্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ডবৈশ্বিক শহরব্রিটিশ সাম্রাজ্যভাইকিংসাহায্য:আধ্বব/ইংরেজি

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাইন্টার মিলানচৈতন্যভাগবতরূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রকৃষ্ণতাজমহলআলাউদ্দিন খিলজিভাইরাসওয়েবসাইটপারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্রসমূহের তালিকাবাংলাদেশ ব্যাংকযশস্বী জয়সওয়ালহনুমান (রামায়ণ)চ্যাটজিপিটিহস্তমৈথুনের ইতিহাসভারতীয় গণ্ডারমনসামঙ্গলজীবনানন্দ দাশসামন্ততন্ত্রমৌসুমীকলকাতাবিশ্ব দিবস তালিকামেঘনা বিভাগঢাকা মেট্রোরেলের স্টেশনের তালিকাজলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবহুমায়ূন আহমেদবটমঙ্গলকাব্যঅরিজিৎ সিংবাংলাদেশের সংবিধানআকিজ গ্রুপভারতের ইতিহাসবাংলা একাডেমিদক্ষিণ এশিয়াভূমি পরিমাপটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাবঙ্গবন্ধু সেতুরাধাডেঙ্গু জ্বরমহাত্মা গান্ধীবাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রমবাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চলঅজিঙ্কা রাহানেব্রিটিশ রাজের ইতিহাসদৈনিক প্রথম আলোজরায়ুঅসহযোগ আন্দোলন (ব্রিটিশ ভারত)সালমান শাহটুইটারআল্লাহব্যঞ্জনবর্ণযতিচিহ্নসুনীল গঙ্গোপাধ্যায়বঙ্গবন্ধু-১কাজী নজরুল ইসলামের রচনাবলিআয়তন অনুযায়ী ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহের তালিকাঅরবরইগোলাপবেল (ফল)সিলেট বিভাগপথের পাঁচালী (চলচ্চিত্র)ফরায়েজি আন্দোলনহামাসজীবমণ্ডলদুর্নীতি দমন কমিশন (বাংলাদেশ)গাঁজা (মাদক)শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নিচট্টগ্রাম জেলাষাট গম্বুজ মসজিদবাংলা লিপিদিল্লিগায়ত্রী মন্ত্রইহুদি গণহত্যাশীর্ষে নারী (যৌনাসন)চর্যাপদবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়রাশিয়াদিনাজপুর জেলা🡆 More