ছোলা: উদ্ভিদের প্রজাতি

ছোলা বা চানা( বৈজ্ঞানিক নাম :Cicer arietinum) একটি ডালজাতীয় খাদ্যশস্য। এটি প্রোটিনে সমৃদ্ধ। মধ্যপ্রাচ্য, পশ্চিম এশিয়া এবং ভারতীয় উপমহাদেশে এটি চাষ করা হয়।

ছোলা
Cicer arietinum
ছোলা: উদ্ভিদের প্রজাতি
Left: Bengal variety; right: European variety
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: উদ্ভিদ
বিভাগ: Magnoliophyta
শ্রেণী: Magnoliopsida
বর্গ: Fabales
পরিবার: Fabaceae
উপপরিবার: Faboideae
গণ: Cicer
প্রজাতি: C. arietinum
দ্বিপদী নাম
Cicer arietinum
L.
ছোলা: উদ্ভিদের প্রজাতি
Cicer arietinum noir

ছোলার গাছ ২০ থেকে ৫০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হয় তবে ১ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। ছোলার কাণ্ডের দুইপাশে পালকের মতো পাতা থাকে। একটি বীজপত্রে দুই থেকে তিনটি করে ডালবীজ থাকে। ফুলগুলি সাদা, বা কখনও কখনও লালচে নীল রঙের হয়। ক্রান্তীয় বা উপক্রান্তীয় জলবায়ু ও বাৎসরিক ৪০০ মিলিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টিপাত ছোলাগাছের স্বাভাবিক ফলনের জন্য জরুরি।

বিশ্বব্যাপী ছোলা মূলত দুই ধরনের - দেশী ছোলা এবং কাবুলি ছোলা।

দেশী ছোলা ভারতীয় উপমহাদেশ, ইথিওপিয়া, ইরানমেক্সিকোতে চাষ হয়। এগুলি গাঢ় রঙের ও ত্বক অমসৃণ। দেশী ছোলাতে আঁশের পরিমাণ বেশি।

কাবুলি ছোলা হালকা রঙের, মসৃণ ত্বকবিশিষ্ট। এগুলি আফগানিস্তান, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ ইউরোপ, ও চিলিতে চাষ হয়। বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশেও এর চাষ হয়।

কাবুলি চানার গুঁড়া অর্থাৎ বেসন দিয়ে অনেক ধরনের খাবার তৈরি করা হয়, যেমন পিঁয়াজি, বেগুনী, পাকোড়া, ইত্যাদি।

ছোলার খাদ্য গুণ

স্বাস্থ্যকর খাবার হিসাবে ছোলা বা বুটের বেশ সুনাম। এটা মুখরোচকও বটে। শক্তি দেয়। পেটেও থাকে বেশিক্ষণ। সাধারণত দুই প্রকারের ছোলা পাওয়া যায়— দেশী ছোলা ও কাবুলী ছোলা। দেশী ছোলা আকারে ছোট, একটু কালচে রংয়ের এবং অপেক্ষাকৃত শক্ত। কাবুলী ছোলা একটু বড় আকারের, উজ্জ্বলতর রং এবং দেশী ছোলার চেয়ে নরম। দেশী ছোলা এই উপমহাদেশে পাওয়া যায়। কাবুলী ছোলা জন্মায় আফগানিস্তান, দক্ষিণ ইউরোপ– এসব স্থানে।

ছোলা অত্যন্ত পুষ্টিকর। এটি আমিষের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। ছোলায় আমিষের পরিমাণ মাংস বা মাছের আমিষের পরিমাণের প্রায় সমান। তাই খাদ্য তালিকায় ছোলা থাকলে মাছ-মাংস পরিমাণে কম থাকলেও চলে। আমাদের দেশের মত উন্নয়নশীল দেশে ছোলাকে মাছ বা মাংসের বিকল্প হিসাবেও ভাবা যেতে পারে। ছোলার ডাল, তরকারিতে ছোলা, সেদ্ধ ছোলা ভাজি, ছোলার বেসন, ছোলা ভুনা— নানান উপায়ে ছোলা খাওয়া যায়।

প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় আছে প্রায় ১৭ গ্রাম আমিষ বা প্রোটিন, ৬৪ গ্রাম শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট এবং ৫ গ্রাম ফ্যাট বা তেল। ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইড্রেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। খাওয়ার পর খুব তাড়াতাড়িই হজম হয়ে গ্লুকোজ হয়ে রক্তে চলে যায় না; বেশ সময় নেয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভাল। ছোলার ফ্যাট বা তেলের বেশির ভাগই পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়।

প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ছাড়া ছোলায় আরও আছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ লবণ। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০ মিলিগ্রাম, ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম। এ ছাড়াও আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেশিয়াম। এ সবই শরীরের জন্য কাজে লাগে। ছোলায় খাদ্য-আঁশও আছে বেশ। এ আঁশ কোষ্ঠ কাঠিন্যে উপকারী। খাবারের আঁশ হজম হয় না। একইভাবে খাদ্যনালী অতিক্রম করতে থাকে। তাই মলের পরিমাণ বাড়ে এবং মল নরম থাকে। এতে কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর হয়। মলত্যাগ করা সহজ হয়। নিয়মিত মলত্যাগ হয়ে যায় বলে ক্ষতিকর জীবাণু খাদ্যনালীতে থাকতে পারে না। ফলে খাদ্যনালীর ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা কমে। খাদ্যের আঁশ রক্তের চর্বি কমাতেও সহায়ক। আরও নানান শারীরিক উপকারিতা আছে খাদ্য-আঁশে। দেরীতে হজম হয়, এরূপ একটি খাবার হচ্ছে ছোলা। ছোলা দীর্ঘক্ষণ ধরে শরীরে শক্তি যোগান দিতে সক্ষম। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলা থেকে প্রায় ৩৬০ ক্যালরিরও বেশি শক্তি পাওয়া যায়। ছোলা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

Tags:

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

উত্তম কুমারগোলাপইবনে সিনাবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাতামান্না ভাটিয়াগজনভি রাজবংশবিদ্রোহী (কবিতা)জনগণমন-অধিনায়ক জয় হেদিনাজপুর জেলাকোষ বিভাজনডায়ানা, প্রিন্সেস অব ওয়েলস২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপএইচআইভি/এইডসসালমান শাহশক্তিবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়পারমাণবিক ভরের ভিত্তিতে মৌলসমূহের তালিকাসাহাবিদের তালিকাপাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭০মাইকেল মধুসূদন দত্তবাইতুল হিকমাহইসতিসকার নামাজভালোবাসাআয়তন অনুযায়ী ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহের তালিকাবিশেষণআরসি কোলাবাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমীর জাফর আলী খাননরেন্দ্র মোদীভারতীয় জনতা পার্টিতাপ সঞ্চালনইহুদি ধর্মস্নায়ুযুদ্ধআল্লাহর ৯৯টি নামমিয়া খলিফা২০২২–২৩ নিউজিল্যান্ড পুরুষ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর (এপ্রিল ২০২৩)ইউরোপীয় ইউনিয়নহরপ্পাবাংলাদেশের নদীবন্দরের তালিকাবাংলাদেশের বন্দরের তালিকারংপুরচট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রধর্মীয় জনসংখ্যার তালিকাঅরিজিৎ সিংদিল্লী সালতানাতপদ্মা সেতুমৃণালিনী দেবীজান্নাতুল ফেরদৌস পিয়াগায়ত্রী মন্ত্রউসমানীয় সাম্রাজ্য১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনআমঅস্ট্রেলিয়াবাগদাদ অবরোধ (১২৫৮)আইজাক নিউটনবাঙালি হিন্দুদের পদবিসমূহইবনে বতুতামানুষতাপমাত্রাইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়পর্তুগিজ ভারতবন্ধুত্বচীনবাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকারবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন (১৮৬১–১৯০১)ঊষা (পৌরাণিক চরিত্র)আলিমিঠুন চক্রবর্তীকাতারসালমান বিন আবদুল আজিজবগুড়া জেলা২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপশ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুচেন্নাই সুপার কিংসপলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমদীন-ই-ইলাহি🡆 More