তাপমাত্রা হল একটি ভৌত রাশি, যা গরম ও ঠান্ডার পরিমাণ প্রকাশ করে। তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয় থার্মোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে।
Temperature | |
---|---|
সাধারণ প্রতীক | T |
এসআই একক | K |
অন্যান্য একক | °C, °F, °R, °Rø, °Ré, °N, °D, °L, °W |
সংকীর্ণ? | Yes |
অন্যান্য রাশি হতে উৎপত্তি | , |
মাত্রা | Θ |
ঐতিহাসিকভাবে সংজ্ঞা নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষালব্ধ ফলাফল ও তাপপরিমাপক পদার্থের সাহায্যে তাপমাত্রায় বিভিন্ন স্কেল নির্মিত হয়েছে।বৈজ্ঞানিক বিষয়ে তাপমাত্রা পরিমাপের সর্বাধিক প্রচলিত স্কেলগুলো হল সেলসিয়াস স্কেল, ফারেনহাইট স্কেল এবং কেলভিন স্কেল।SI পদ্ধতির সাতটি প্রাথমিক বা মৌলিক এককের মধ্যে একটি হল কেলভিন।
তাপগতিগত তাপমাত্রা স্কেলের সর্বনিম্ন বিন্দু হল পরম শূন্য অর্থাৎ 0 কেলভিন বা -273.15°C। তাপগতিবিদ্যার তৃতীয় সূত্র থেকে জানা যায় পরম শূন্য উষ্ণতার কাছাকাছি পৌছালেও পরম শূন্য উষ্ণতায় পৌছানো সম্ভব নয়।বাস্তবে এই উষ্ণতায় বস্তু থেকে তাপশক্তির শোষন অসম্ভব।
পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, ভূ-বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, জীববিদ্যা, বাস্তুবিদ্যা, বস্তু বিজ্ঞান, ধাতুবিদ্যা, প্রযুক্তিবিদ্যা এবং ভূগোল বিষয়ের পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনের সমস্ত দিকেই তাপমাত্রা অতি প্রয়োজনীয়।
তাপমাত্রার সাথে বহু ভৌত প্রক্রিয়া সম্পর্কিত। কয়েকটি নীচে আলোচনা করা হলো।
স্কেল
তাপমাত্রা পরিমাপের স্কেলগুলির সংজ্ঞা নির্ধারণের জন্য দুটি বিষয়ের মান জানা অতি প্রয়োজন। প্রথমত, শূন্য ডিগ্রি হিসেবে বিবেচিত বিন্দু। দ্বিতীয়ত, তাপমাত্রার বর্ধিত এককের বিস্তৃতি। বিশ্বব্যাপী সাধারণ উষ্ণতা পরিমাপের জন্য সেলসিয়াস স্কেলের ব্যবহার হয় সবচেয়ে বেশি।এটি একটি গবেষণামূলক স্কেল।সমুদ্রতলে প্রমাণ বায়ুমন্ডলীয় চাপে সেলসিয়াস স্কেলের 0 দাগ 0°C উষ্ণতায় জলের হিমাঙ্ক এবং 100 দাগকে 100°C উষ্ণতায় জলের স্ফূটনাঙ্ক কেই প্রমাণ হিসেবে ধরা হয়েছে। 100° ব্যবধানের কারণেই সেলসিয়াস স্কেলকে সেন্টিগ্রেড স্কেল বলা হয়েছিল।SI পদ্ধতিতে কেলভিন একক প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দেখা যায় যে সেলসিয়াস স্কেলের এক ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতার পরিবর্তন কেলভিন স্কেলে এক কেলভিন পরিবর্তনের সঙ্গে সমান। কেলভিন ও সেলসিয়াস স্কেলের পাঠের পার্থক্য 273.15।
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য ফারেনহাইট স্কেল ব্যবহৃত হয়।সমুদ্রতলে প্রমাণ বায়ুমন্ডলীয় চাপে বরফের হিমাঙ্ক 32°F এবং জলের স্ফুটনাঙ্ক 212°F।
পরম শূন্য
তাপগতিবিদ্যার তৃতীয় সূত্র থেকে জানা যায় যে পরম শূন্য উষ্ণতায় কোনো পদার্থ থেকে তাপশক্তি শোষণ করা যায় না।অনিশ্চয়তা নীতি অনুসারে এই উষ্ণতায় পদার্থের ম্যাক্রোস্কোপিক তাপশক্তি নেই, কোয়ান্টাম যান্ত্রিক শূন্য বিন্দু শক্তি রয়েছে। বাস্তবে কখনই পরম শূন্য উষ্ণতায় পৌঁছানো সম্ভব নয়, কাছাকাছি পৌঁছানো সম্ভব। পরম শূন্য উষ্ণতা একটি গবেষণামূলক মান।
পরীক্ষাগারে গবেষণায় প্রাপ্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হল 100pK।তত্ত্বগতভাবে, পরম শূন্য উষ্ণতায় একটি বস্তুর মধ্যবর্তী সমস্ত কণার গতি স্তব্ধ হয়ে যায়। স্কেল অনুযায়ী পরম শূন্য উষ্ণতার মানগুলো হলো - কেলভিন স্কেল 0K, সেলসিয়াস স্কেল -273.15°C, ফারেনহাইট স্কেল -459.67°F।
পরম স্কেল
বোল্টজম্যান ধ্রুবককে উল্লেখ করে ম্যাক্সওয়েল-বোল্টজম্যান ধ্রুবক এবং এনট্রপির যে পরিসংখ্যানগত যান্ত্রিক সংজ্ঞা পাওয়া যায় তা গিবসের সংজ্ঞার সঙ্গে মেলে না। অণুগুলির স্বাধীন সঞ্চারনশীলতার শক্তিকে অবজ্ঞা করে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী একটি পরম স্কেলকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কারণ এই স্কেলের তাপীয় বস্তু ও থার্মোমিটার ব্যবহারের তত্ত্বও নির্দিষ্ট।পরম শূন্য ব্যতীত এই স্কেলের কোনো সহায়ক তাপমাত্রা নেই। এটি কেলভিন স্কেল নামেই পরিচিত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ব্যাপকভাবে কেলভিন স্কেল ব্যবহৃত হয়। কেলভিন (এককটি ছোটো হাতের "k" দ্বারা প্রকাশ করা হয়) হল SI পদ্ধতিতে তাপমাত্রা পরিমাপের একক। তাপগতীয় ভারসাম্যের সময় একটি বস্তুর তাপমাত্রা সর্বদা পরম শূন্যের সাপেক্ষে ধনাত্মক হয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কেলভিন স্কেল ছাড়াও, লর্ড কেলভিন দ্বারা আবিষ্কৃত একটি তাপগতীয় তাপমাত্রা পরিমাপক স্কেল রয়েছে। যার শূন্য দাগ রয়েছে পরম শূন্যে কিন্তু সরাসরি বাইরে থেকে দৃশ্যমান বা ম্যাক্রোস্কোপিক এনট্রপি সহ সম্পূর্ণভাবে ম্যাক্রোস্কোপিক তাপগতীয় ধারণার সঙ্গে সম্পর্কিত। যদিও এটি বাইরে থেকে দৃশ্যমান নয় বা মাইক্রোস্কোপিকভাবেও উল্লেখযোগ্য।গিবস ক্যানোনিক্যাল অ্যাসেম্বেলের জন্য এনট্রপির পরিসংখ্যানগত বা স্ট্যাটিস্টিক্যাল যান্ত্রিক সংজ্ঞা, যা অণুমধ্যস্থ সম্ভাব্য শক্তির পাশাপাশি স্বাধীন কণাগুলোর গতিকে বিবেচনা করে। যাতে এটি পরম শূন্যের কাছাকাছি উষ্ণতার পরিমাপ করতে পারে।এই স্কেলে জলের ত্রিবিন্দুর একটি সহায়ক তাপমাত্রা রয়েছে,যার সাংখ্যমান পূর্বোক্ত আন্তর্জাতিক স্বীকৃত কেলভিন স্কেলের সাহায্যেই পরিমাপের দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়।
কেলভিন স্কেল
বহু বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজেই কেলভিন স্কেল ব্যবহৃত হয়।যে পদার্থ বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম এটি সংজ্ঞায়িত করেছিলেন ওনার সম্মানে ওনার নাম অনুসারেই এই স্কেলের নামকরণ হয়েছে।এটি একটি পরম স্কেল। এর শূন্য বিন্দুর উষ্ণতা 0 K, এটি পরম শূন্য উষ্ণতা। 2019 সালের মে মাসে কেলভিনকে কণার গতীয় তত্ত্ব এবং পরিসংখ্যান বা স্ট্যাটিস্টিক্যাল বলবিদ্যার মাধ্যমে সংজ্ঞা নির্ধারিত হয়েছিল। SI পদ্ধতিতে কেলভিনের মাত্রা বোল্টজম্যান ধ্রুবকের সাপেক্ষে সংজ্ঞায়িত করা হয়। যার নির্দিষ্ট মান আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নির্ধারিত হয়েছিল।
পরিসংখ্যানগত যান্ত্রিক বনাম তাপগতীয় তাপমাত্রা স্কেল
২০১৯ সালের মে মাস থেকে কেলভিনের মাত্রা পদার্থের অভ্যন্তরীন ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত। পরিসংখ্যানগত বলবিদ্যার ক্ষেত্রে চিহ্নিতকরণ হয়েছে।এর আগে, 1954 সাল থেকে কেলভিন কে SI পদ্ধতিতে তাপগতীয় তাপমাত্রা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছিল। দ্বিতীয় সহায়ক তাপমাত্রা হিসেবে জলের ত্রিবিন্দুর নির্ভরযোগ্য ও পুনরুৎপাদনযোগ্য তাপমাত্রা ব্যবহার করে, প্রথম সহায়ক বিন্দু হলো 0K বা পরম শূন্যে। ঐতিহাসিকভাবে জলের ত্রিবিন্দুর তাপমাত্রা 273.16K নির্ধারিত হয়েছিল। বর্তমানে এটি একটি পরীক্ষামূলকভাবে পরিমাপিত পরিমাণ। সমুদ্রতলে প্রমাণ বায়ুমন্ডলীয় চাপে জলের হিমাঙ্ক 273.15K (0°C)এর খুব কাছাকাছি।
অনেক ধরনের তাপমাত্রার স্কেল রয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতা ও তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে উপযোগী করে তোলা হয়েছে। তাপমাত্রার অভিজ্ঞতামূলক স্কেলগুলি ঐতিহাসিকভাবে পুরোনো যখন তত্ত্ব নির্ভর স্কেলগুলো উনবিংশ শতকের মধ্যভাগে উদ্ভূত হয়েছিল।
অভিজ্ঞতামূলক স্কেল
অভিজ্ঞতামূলক তাপমাত্রা পরিমাপের স্কেল গুলো পদার্থের ম্যাক্রোস্কোপিক (পদার্থের বাইরে থেকে দৃশ্যমান এমন) ভৌত ধর্মগুলোর পরিমাপের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। উদাহরণ স্বরূপ, পারদস্তম্ভের উচ্চতা যা একটি কাচের প্রাচীর দেওয়া কৈশিক নলের মধ্যে সীমাবদ্ধ, তা মূলত তাপমাত্রা নির্ভর এবং এটি পারদ থার্মোমিটারের মূল নীতি। এই ধরনের স্কেল শুধুমাত্র তাপমাত্রার নির্দিষ্ট পরিসীমার মধ্যে বৈধ। উদাহরণ স্বরূপ, পারদের স্ফূটনাঙ্কের ওপর পারদ থার্মোমিটার ব্যবহার করা যায় না। অধিকাংশ পদার্থই তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রসারিত ড়য়, কিন্তু কিছু পদার্থ, যেমন - জল , একটি নির্দিষ্ট পরিসরে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সংকুচিত হয় তখন তাপীয় বস্তু হিসেবে জলের উপযোগিতাও হ্রাস পায়। একটি পদার্থ যখন তার অবস্থা পরিবর্তনের কাছাকাছি আসে তখন সেটি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে পড়ে। উদাহরণ স্বরূপ, তাপীয় বস্তু যখন তার স্ফূটনাঙ্কের কাছাকাছি আসে তখন তার কার্যকারিতা কমে যায়।
এই সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও সর্বাধিক ব্যবহৃত স্কেলগুলো অভিজ্ঞতামূলক প্রকারের। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, এটি ক্যালোরিমিতির জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল, যার তাপগতিবিদ্যায় অধিক অবদান রয়েছে। তবুও, তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি হিসেবে বিচার করার সময় অভিজ্ঞতামূলক তাপীয় নীতির গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়েছে। অভিজ্ঞতামূলক থার্মোমিটার, তাপীয় বস্তুর সাধারণ ভৌত ধর্মের সরল প্রত্যক্ষ পরিমাপ হিসেবে তাদের যুক্তির বাইরে তাত্ত্বিক ভৌতিক যুক্তি ব্যবহার করে পুনরায় ক্রমাঙ্কিত করা যেতে পারে এবং এটি তাদের ব্যবহারের পরিসর বৃদ্ধি করতে পারে।
তাত্ত্বিক স্কেল
তাত্ত্বিক স্কেলগুলি সরাসরি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত, বিশেষ করে গতীয় তত্ত্ব এবং তাপগতিবিদ্যার তত্ত্ব।এরা কমবেশি আদর্শভাবে ও বাস্তবিকভাবে সম্ভাব্য ভৌত ধর্ম পরিমাপক যন্ত্রপাতি এবং পদার্থের দ্বারা সঠিক পরিমাপ করা যায়। তাত্ত্বিক স্কেলগুলি ব্যবহারিক অভিজ্ঞতামূলক থার্মোমিটারের সঠিক দুরত্বে সঠিক দাগ বসাতে ব্যবহৃত হয়।
মাইক্রোস্কোপের পরিসংখ্যানগত যান্ত্রিক স্কেল
পদার্থবিদ্যায়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্কেলটি হল কেলভিন স্কেল।
পদার্থবিজ্ঞান-সম্পর্কিত বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article তাপমাত্রা, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.