নবায়নযোগ্য শক্তি বা রিনিউয়েবল এনার্জি হলো এমন শক্তির উৎস যা স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পুনরায় ব্যবহার করা যায় এবং এর ফলে শক্তির উৎসটি নিঃশেষ হয়ে যায় না। বিভিন্ন প্রাকৃতিক উৎস যেমন: ] হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ইত্যাদি নবীনকরনযোগ্য শক্তির উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। সারা পৃথিবীতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। ২০৫০ সাল নাগাদ মানুষের বিদ্যুতের চাহিদার ৮৫ শতাংশ নবীকরনযোগ্য শক্তি বা রিনিউয়েবল এনার্জি থেকে পূরণ করা হবে।
এই নিবন্ধটির তথ্যসূত্র উদ্ধৃতিদানশৈলী ঠিক নেই।(অক্টোবর ২০২০) |
অধিকাংশ দেশ তাদের বিদ্যুৎের চাহিদা মেটাতে নবীনকরনযোগ্য শক্তি ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। নবীকরনযোগ্য শক্তি সমূহ পরিবেশবান্ধব এবং কার্বন নিঃসরণমুক্ত। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং একটি টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থায় পৌঁছানোর জন্য জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাপী পরিবেশবাদী আন্দোলনসমূহ নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে উৎসাহ অব্যহত রেখেছে।
বিশ্বে জীবাশ্ম জ্বালানির অধিকাংশ ব্যয় হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে, মোটরযান চলাচলে এবং বাসা বাড়ির তাপ-উৎপাদনে। এজন্য নবীনকরনযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, টেকসই যানবাহন ব্যবস্থা এবং গ্রিন টেকনোলজি সমৃদ্ধ শক্তি সাশ্রয়ী গৃহস্থালি পণ্য প্রবর্তনে আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন গবেষণা প্রক্রিয়াধীন আছে।
সূর্য আমাদের সৌরজগৎ এর কেন্দ্রীয় নক্ষত্র, যা একটি বিশাল গ্যাসীয় পিন্ড। এর কেন্দ্রে ফিউশন বিক্রিয়ার ফলে বিশাল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয় যা আলোক ও তাপ রূপে পৃথিবীতে পৌঁছায়। প্রধানত দুটি উপায়ে সূর্য থেকে শক্তি সংগ্রহ করা যায়। প্রথমত, সূর্য থেকে আলোক শক্তি সংগ্রহ করে, দ্বিতীয়ত, সূর্য থেকে তাপ শক্তি সংগ্রহ করে। আলোক শক্তি সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করা হয় ফটোইলেক্ট্রিক ইফেক্ট বা আলোকতড়িৎ ক্রিয়া। আলোক সংবেদী অর্ধপরিবাহী দ্বারা তৈরি ফোটোভোল্টাইক সেল (পিভি) ব্যবহার করে তৈরি করা হয় সোলার প্যানেল। এইসব প্যানেলের বিশাল অ্যারে বা শ্রেণি তৈরি করে আলোক শক্তি থেকে ডাইরেক্ট কারেন্ট বা ডিসি বিদ্যুৎ শক্তি সংগ্রহ করা হয়।
তাপ শক্তি সংগ্রহ করার জন্য ব্যবহার করা হয় কনসেন্ট্রেটেড সোলার পাওয়ার বা 'কেন্দ্রীভূত সৌর শক্তি পদ্ধতি'। অনেকগুলো দর্পনের সাহায্যে সূর্যের আলোককে একটি টাওয়ার বা মিনারের অগ্রভাবে প্রতিফলিত করা হয়। সব দর্পনের এই কেন্দ্রীভূত প্রতিফলনের ফলে সৃষ্ট তাপকে কাজে লাগিয়ে বাষ্প তৈরি করা হয় যা থেকে পরে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়। এছাড়াও বাড়ির ছাদে জল গরম করার জন্য ব্যবহার করা যায় সৌর-জল-উত্তাপক বা সোলার ওয়াটার হিটার। শীতপ্রধান দেশে বা কলকারখানার গরম পানির চাহিদা মেটাতে এটি ব্যবহার করা হয়।
প্রতিদিন পৃথিবীতে এক ঘণ্টায় যে পরিমাণ সৌরশক্তি পৌঁছায় তা দিয়ে পুরো পৃথিবীর দুই বছরের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো যাবে।
বায়ু প্রবাহ হয়ে থাকে তাপমাত্রার পার্থক্যের কারণে। এটি মূলত সৌর শক্তিরই আরেক রূপ। বায়ুর গতিতে থাকে গতি শক্তি বা কাইনেটিক এনার্জি। এই গতি শক্তিকে সাধারণত টারবাইনের মাধ্যমে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়। সেই যান্ত্রিক শক্তি থেকে বিদ্যুৎ শক্তি পাওয়া যায়। বায়ুমন্ডলের যতো উপরে যাওয়া যায়, ততোই স্থির বেগের বায়ু প্রবাহ পাওয়া যায়। তাই উঁচু টাওয়ারের মাথায় বায়ুকল বসিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়। বায়ুকলগুলো সাধারণত শ্রেণিবদ্ধভাবে বসানো হয়। যেখানে বায়ুকলগুলো বসানো হবে তার আগে প্রায় দুই-তিন বছরের বায়ু প্রবাহের গতি পর্যালোচনা করে দেখা হয় সেখানে বছর জুড়ে যথেষ্ট বায়ু প্রবাহ আছে কি না। স্থলভূমিতে বায়ুকল বসালে তাকে বলা হয় অন-শোর-উইন্ড বা ভূমিস্থ-বায়ু-শক্তি। আর সমুদ্রে, যেখানে তুলনামূলক বেশি বায়ু প্রবাহ পাওয়া যায়, সেখানে বসালে তাকে বলা হয় 'অফ-শোর-উইন্ড' বা সামুদ্রিক-বায়ু-শক্তি।
বর্তমানে চীন বায়ুশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সবচেয়ে এগিয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ভারতও বায়ুশক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে।
মানুষ অথবা পশু-পাখির বিষ্ঠা এবং পচনশীল আবর্জনা থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করা যায়। যা রান্নার কাজে বা বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে লাগে। কিছু বিষেশ ধরনের শর্করা উৎপাদক শস্য যেমন সয়াবিন, আখ ইত্যাদি গাছ থেকে বায়োফুয়েল তৈরি করা যায় । গাঁজন প্রক্রিয়ায় শর্করা থেকে মেথানল, ইথানল অথবা সরাসরি জ্বালানি হাইড্রকার্বন প্রস্তুত করা যায়। এই ফুয়েল সরাসরি যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও সামুদ্রিক শৈবাল ব্যবহার করে সমুদ্রের পানি, বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও সূর্যালোক থেকে বায়োফুয়েল তৈরির গবষণা চলছে।
গাছপালা যেগুলো বপনের পঁচিশ-ত্রিশ বছরের মধ্যেই পূর্নাঙ্গ বৃক্ষে পরিণত হতে পারে সেগুলো ব্যবহার করেও বিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করা যায়। গাছের কাঠ উচ্চ-কর্মদক্ষতা সম্পন্ন চুল্লিতে পুড়িয়ে তাপ পাওয়া যায়। সেই তাপে পানি বাষ্প করে টাইবাইন চালিয়ে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। একটি ম্যানেজড ফরেস্ট বা পরিকল্পিত বনে এমনভাবে হিসাব করে গাছ কাটা ও লাগানো হয় যাতে করে ঐ বনে মোট গাছের সংখ্যা কখনই না কমে, বরং বাড়ে। এই ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে বলা হয় বায়োম্যাস বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বিভিন্ন ফসলের উচ্ছিষ্টাংশ, খড়, চিটা কাজে লাগিয়েও এই ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা যায়। এটি একটি কার্বন নিউট্রাল প্রক্রিয়া। ঐ গাছগুলো না পোড়ালেও তাতে সঞ্চিত কার্বন কোনো না কোনো ভাবে বায়ুমন্ডলে চলে যেতো।
পৃথিবীর পৃষ্ঠের অধিকাংশ এলাকা জুড়ে রয়েছে সাগর-মহাসাগর। এই বিশাল সমুদ্র অংশ সম্পদ ও শক্তির ভান্ডার। সমুদ্র থেকে বিভিন্ন উপায়ে নবায়নযোগ্য শক্তি সংগ্রহ করা যায়। এর মাঝে প্রচলিত কয়েকটির বর্ণনা হলো-
সমুদ্রের তরঙ্গ বা ঢেউতে রয়েছে গতি শক্তি ও যান্ত্রিক শক্তি। এটাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়। সমুদ্রের ঢেউ এর সাথে ওঠা-নামা করতে পারে এমন ভাসমান বয়ার নড়া-চড়াকে কাজে লাগিয়ে ফ্লুইডকে (বাতাস অথবা পানিকে) প্রেসারাইসড্ করা হয়। সেই ফ্লুইডের চাপে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।
ওশেন থার্মাল এনার্জি কনভার্শন (ওটেক) বা সমুদ্র-তাপ শক্তি থেকে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করা যায়। সমুদ্রের উপরিতলের তাপমাত্রা থাকে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর প্রায় এক কিলোমিটার নিচে গেলেই এই তাপমাত্রা কমে গিয়ে দাঁড়ায় ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি। এই তাপমাত্রার পার্থক্যকে কাজে লাগিয়ে কম স্ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট তরল যেমন অ্যামোনিয়ার প্রসারণ দ্বারা টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।
সমুদ্রের স্রোতের মধ্য অত্যাধিক শক্তি নিহিত আছে। যেখানে নদী সমুদ্রের সাথে মিলিত হয় সেখানে সমুদ্রের মোহনায় বিরাট বাঁধ নির্মাণ হয়। বাঁধে বড় বড় গেট বসানো থাকে। জোয়ারের সময় গেট দিয়ে বাঁধের ভেতরে পানি ঢুকে আবার ভাটার সময় গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে বাঁধের ভেতরে সঞ্চিত পানিতে উচ্চতা বা হেডের সৃষ্টি হয়। এ পানির হেডের সাহায্য টারবাইন ঘুরিয়ে যান্ত্রিক শক্তি সৃষ্টি করার পর বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
সমুদ্র হতে বিদ্যুৎ উতপাদনের পরিমাণ এখন বেশ কম। তবে পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া সমুদ্র শক্তি ব্যবহার করছে।
জিওথার্মাল এনার্জি বা ভূতাপ শক্তি হলো পৃথিবীর অভ্যন্তরের শক্তি। পৃথিবীর কেন্দ্র একটি গলিত ধাতুর পিন্ড যার তাপমাত্রা প্রায় ৬ হাজার ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। সেই তাপমাত্রা পৃথিবী পৃষ্ঠের নীচ পর্যন্ত পরিচলন পদ্ধতিতে চলে আসে। তাছাড়াও পৃথিবীর অভ্যন্তরের তেজস্ক্রিয় পদার্থ যেমন থোরিয়াম, ইউরেনিয়ামের ক্ষয়ের ফলে যে তাপ সৃষ্টি হয় সেটিও ভূ-পৃষ্ঠের নীচ পর্যন্ত পরিচালিত হয়। এই তাপকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়। সাধারণ যেসব জায়গায় টেকটনিক প্লেটের কিনারা আছে বা উষ্ণ প্রস্রবণ আছে সেখানে ভূ-পৃষ্টের প্রায় এক-দুই কিলোমিটার নিচে পাইপ দিয়ে পানি চালনা করে বাষ্প করা হয়। যা থেকে পরবর্তিতে টার্বাইন চালানো করে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। আইসল্যান্ডের বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় চার-ভাগের এক ভাগ আসে ভূতাপ শক্তি থেকে। । কয়েক প্রকারের ভূতাপ শক্তি কেন্দ্র রয়েহে। যেমন-
নবায়নযোগ্য শক্তির সব থেকে পরিচিত মাধ্যমটি হলো জলবিদ্যুৎ। সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় নদীর বুকে বিশাল আকৃতির বাঁধ দিয়ে পানির উচ্চতা বাড়ানো হয়। সেই পানিকে নিয়ন্ত্রিত ভাবে নিচে পড়তে দিয়ে তার ধাক্কায় টার্বাইন ঘুরানো হয়। এভাবে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। পাহাড়ি অঞ্চল ছাড়াও স্রোতস্বিনী নদীতে বাঁধা দিয়ে 'রান-অফ-দা-রিভার হাইড্রো পাওয়ার' তৈরি করা যায়। এছাড়াও মাইক্রো হাইড্রো বা পিকো হাইড্রোর মতো ব্যবস্থাও আছে যেখানে ছোট পাহাড়ি ছড়ার স্রোতে টার্বাইন চালিয়ে স্বল্প মাত্রায় বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।
শহুরে আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ বা 'মিউনিসিপ্যালিটি ওয়েস্ট টু এনার্জি' বর্তমান যুগে দারুণ জনপ্রিয় একটি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন মাধ্যম। প্রতিটি মেগসিটি বা বড় শহরে প্রতিদিন কয়েক লক্ষ টন সলিড-ওয়েস্ট বা আবর্জনা তৈরি হয়। এই আবর্জনাগুলো কাজে লাগানো যায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে। আবর্জনাগুলো থেকে দাহ্য পদার্থ যেমন প্লাস্টিক, কাঠ-খড় ইত্যাদি বাছাই করে আলাদা করা হয়। সেগুলো দক্ষ ফার্নেসে পুড়িয়ে বাষ্প তৈরি করে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। উৎপন্ন গ্যাসকে বিভিন্ন উপায়ে পরিশোধন করে বায়ুমন্ডলে ছেড়ে দেয়া হয়।
শহরের পচনশীল আবর্জনা এবং পয়নিষ্কাশিত আবর্জনা থেকে বায়োগ্যাস তৈরি করে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।
হাইড্রোজেন মৌলটি মহাবিশ্বে পরিমাণ হিসেবে সব থেকে বেশি রয়েছে। মহাবিশ্বে যতো মৌল আছে তার ৭৫ শতাংশ হলো হাইড্রোজেন । হাইড্রোজেনকে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যায়। এই পদ্ধতিকে হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল বলা হয়। এটি একটি ব্যাটারির মতো ডাইরক্ট কারেন্ট তৈরি করে। কিন্তু এই ব্যাটারি চালাতে জ্বালানি হিসেবে ক্যাথোডে দেওয়া হয় বিশুদ্ধ হাইড্রোজেন এবং অ্যানোডে দেওয়া হয় বাতাসের অক্সিজেন। এরা নিজেদের মধ্যে বিক্রিয়া করে পানি এবং তাপ উৎপন্ন করে। সাথে ক্যাথোড থেকে অ্যানোডে ইলেকট্রন প্রবাহ চলে। বড় মাপের ফুয়েল সেল থেকে প্রাপ্ত তাপশক্তিকে কাজে লাগিয়ে একটি ছোটো বাষ্প ইঞ্জিন থেকেও বিদ্যুৎ সহ-উৎপাদন বা কো-জেনারেট করা যায়। এরকম ক্ষেত্রে ফুয়েল সেলের কর্মদক্ষতা প্রায় ৮০-৯০% ।
হাইড্রোজেন সংগ্রহ করার জন্য তিন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়-
মোটোরযানে এবং এমন কোনো স্থাপনায় যেখানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের প্রয়োজন আছে সেখানে ফুয়েল সেল ব্যবহার করা হয়।
এটি গবেষণাধীন একটি নবায়নযোগ্য নিউক্লিয়ার পাওয়ার । হাইড্রোজেন একটি প্রাচুর্যপূর্ণ মৌল, এটিকে ব্যবহার করে ফিউশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে (যা সূর্যের অভ্যন্তরে ঘটে) প্রচুর পরিমাণে শক্তি উৎপাদন করা যায়। প্রথাগত ফিশন নিউক্লিয়ার পাওয়ারকে নবায়নযোগ্য বলা হয় না কারণ তার জ্বালানি ইউরেনিয়াম, প্লুটোনিয়াম, থোরিয়ামের মজুদ সীমিত। এদেরকে বলা হয় বিকল্প শক্তি বা অল্টার্নেটিভ এনার্জি। কিন্তু হাইড্রোজেন ফিউশন নিউক্লিয়ারের জ্বালানি হাইড্রোজেন পানি থেকে সহজেই সংগ্রহ করা যায় এবং মহাবিশ্ব হাইড্রোজেন মৌলের পরিমাণ প্রায় ৭৫%, তাই এটি একটি নবায়নযোগ্য শক্তি।
বিশ্বে সবথেকে বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণকারী দেশগুলোই সবথেকে বেশি নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার করছে। কারণ তাদের নিজ দেশের মানুষের চাপ এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদীদের চাপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জার্মানি, রাশিয়া, ভারত বিশ্বের সব থেকে বেশি নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক স্টেটে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের জন্য রয়েছে আলাদা আইনি বাধ্যবাধকতা এবং ফিড-ইন-ট্যারিফ এর ব্যবস্থা। বিশ্বের সব থেকে বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে চীনে। চীন সব থেকে বড় বায়ু ও সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রও প্রতিষ্ঠা করছে। ১০০ টিরও বেশি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চীনে। ভারতে বর্তমানে পৃথিবীর সব থেকে বড় সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট রয়েছে যা ৬৪৮মেগাওয়াট উতপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন। জার্মানিতে সব থেকে বেশি সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। নর্ডিক দেশসমূহ নবায়নযোগ্য শক্তি বান্ধব আইন প্রণয়নের মাধ্যমে এর প্রসার ঘটাতে সাহায্য করছে।
বিশ্বব্যাপী অধিকাংশ উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশ নবায়নযোগ্য শক্তি বৃদ্ধির জন্য পলিসি গ্রহণ করেছে।
জীবাশ্ম জ্বালানি যেহেতু সীমিত তাই ভবিষ্যতের জ্বালানি ব্যবস্থা নির্ভর করবে নবায়নযোগ্য শক্তির উপরে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির উপরে মানুষ আস্থা রাখতে পারছে না এবং ক্রমান্বয়ে নবায়নযোগ্য শক্তি জনপ্রিয়তা লাভ করছে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশই নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে আগ্রহী হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য শক্তিকে সমালোচনা সহ্য করতে হয়। যেমন নবায়নযোগ্য শক্তির খরচ অনেক বেশি এবং এটি অনেক বেশি প্রকৃতি নির্ভর তথা পরিবর্তনশীল। এছাড়াও কিছু নবায়নযোগ্য শক্তি যেমন সৌর শক্তি, বায়োম্যাস এর জন্য তুলনামূলক অনেক জায়গার প্রয়োজন হয় বলে মনে করেন অনেকে।
যদিও বর্তমানে দেখা যাচ্ছে ক্রমাগত গবেষণা এবং রাষ্ট্রীয় সহযোগিতার ফলে নবায়নযোগ্য সৌর বিদ্যুতের দাম কমে এসেছে এবং তা ইতোমধ্যেই কয়লা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের সমান দামে বিক্রিত হচ্ছে। নবায়নযোগ্য শক্তির পরিবর্তনশীলতার জন্য মানানসই ব্যাটারি ব্যবস্থা দ্রুত উন্নতি হচ্ছে এবং অনেক দেশই স্মার্ট-গ্রিড পদ্ধতি স্থাপন করছে।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article নবায়নযোগ্য শক্তি, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.