অনাভেদী যৌনক্রিয়া হচ্ছে অন্তর্ভেদী যৌনসঙ্গম এর বিপরীত অর্থাৎ এই ধরনের যৌনক্রিয়াতে কোনো প্রকারের শিশ্ন অনুপ্রবেশ করানো হয়না। এই ধরনের যৌনক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে চুম্বন, মর্দন বা লেহন। অনাভেদী যৌনক্রিয়া শৃঙ্গারের মত হলেও এটি মূলত তা নয়। অনেকে এটাকে মূল যৌনকর্ম বা শুধু ভালোবাসার প্রকাশ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
আধুনিক যুগে এই অনাভেদী যৌনক্রিয়া মূলধারার যৌনতার মধ্যে ঢুকে গিয়েছে এবং এটি এক প্রকারের 'যৌনসঙ্গম' হিসেবেও বিবেচিত।
যদিও অনাভেদী যৌন ক্রিয়ার সংজ্ঞা থেকে এটাই অনুমিত হয় যে এ ধরনের ক্রিয়ায় কোন ধরনের ভেদন সম্পন্ন হয় না তবুও কিছু দ্রব্যের মাধ্যমে ভেদন সম্পন্ন হলে বা মুখমৈথুনকে অনাভেদী যৌনক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ঘর্ষকাম বলতে সাধারণত বোঝানো হয় ব্যক্তির শরীরের যে কোন অংশকে (যেমনঃ নিতম্ব, স্তন, উদর, ঊরু বা হাত এবং যৌন অঙ্গ) অন্য ব্যক্তির যৌন অঙ্গে স্পর্শ করা বা ঘর্ষণ করা; জনবহুল জায়গায় সঙ্গীর অমতে এক্রীয়া যেমন যৌন বিকৃতি হিসেবে বিবেচ্য একইভাবে সঙ্গীর সাথে অন্তরঙ্গ মুহুর্তে এ ক্রীয়া যৌনতার বিশাল রঙ্গমঞ্চের একটি অংশ মাত্র। এক্রীয়াকে "শুষ্ক সঙ্গম" ' বলেও অভিহিত করা হয়। ঘর্ষকাম বহির্যোনাঙ্গে-বহির্যোনাঙ্গে হতে পারে, এধরনের ঘর্ষকামকে জিজি ঘর্ষকামিতা বলা হয়।
কামকেলীর অংশ হিসেবে জুটিদ্বয় নিজেদের মধ্যে ঘর্ষকাম ক্রীয়া করে। ঘর্ষকাম নিরাপদ যৌনতার একটি প্রকারভেদ। প্রায়সই তরুণরা যৌন সংসর্গ সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণার প্রাক দশায় এই ঘর্ষকাম ক্রীয়া সম্পন্ন করে।
পারস্পরিক হস্তমৈথুন এর ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় দেখা যায় দুই বা ততোধিক ব্যক্তি একে অপরের যৌনাঙ্গ কে হাত দ্বারা উত্তেজিত করে। শারীরিকভাবে সক্ষম, যৌনসঙ্গম করতে প্রস্তুত না থাকলে বা ভেদী যৌনসঙ্গম করলেও পারস্পরিক হস্তমৈথুন করা হয়। কামকেলি হিসেবে সম্পূর্ণ যৌনক্রিয়ার একটি অংশ হিসেবেই এ ক্রীয়া সম্পন্ন হয় এবং অনেকের জন্যই এটি একপ্রকার যৌন চাহিদা মাত্র।
পারস্পরিক স্বমেহনের বিভিন্ন প্রকরণের একটি হলো হস্তমৈথুন (ব্যক্তি কর্তৃক পুরুষের শিশ্ন অথবা মুষ্ক থলিতে হাতের মাধ্যমে যৌন উত্তেজনা সৃষ্টি) এবং অঙ্গুলিসঞ্চালন (ব্যক্তি কর্তৃক নারীর যোনি, ভগাঙ্কুর যোনিদ্বারের অন্যান্য অংশে উত্তেজনা তৈরী)। বহির্যোনাঙ্গে উত্তেজনা তৈরী করা যেতে পারে পায়ের মাধ্যমে এবং হস্ত ব্যবহার করে পায়ুতেও উত্তেজনা তৈরী করা যায়।
ঘর্ষকামের মতই পারস্পরিক হস্তমৈথুন নামক যৌনক্রীয়া শিশ্ন-যোনিতে প্রবেশের বিকল্প হিসেবে সম্পন্ন হয়। এ ধরনের যৌন ক্রিয়ায় সতীত্ব বজায় থাকে এবং গর্ভধারণের ঝুঁকি এড়ানো যায়। এর ফলে এক বা একাধিক ব্যক্তি উত্তেজনা লাভ করতে পারে। যদি কোনোরুপ শারীরিক রস বিনিময় না হয়, তবে পারস্পরিক হস্তমৈথুনকে নিরাপদ যৌনতার প্রকারভেদ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং এর ফলে যৌন রোগসমূহের সংক্রমণের সম্ভাবনা বহূগুন হ্রাস পায়।
সঙ্গীর সাথে থাকা অবস্থায় হাত দিয়ে বহির্যোনাঙ্গে ঘর্ষনের মাধ্যমে উত্তেজনায় পৌঁছানো অথবা উত্তেজনাকে বৃদ্ধি করা হয় এই ক্রীয়ায়। এক্ষেত্রে দুজন ব্যক্তিরই লক্ষ্য থাকে, একজন ব্যক্তিতে আনন্দ এবং উদ্দীপনা সৃষ্টি করা এবং তা উপভোগ করা। সাধারণত একজন ব্যক্তি প্যান্ট ছাড়া শুয়ে থাকে এবং তার সঙ্গী তার পাশে বসে থাকে। যিনি বসে থাকেন, তিনি তার হাত এবং আঙ্গুল ব্যবহার করে শিশ্ন অথবা ভগাঙ্কুর এবং অন্যান্য বহির্যোনাঙ্গে ঘর্ষণ করতে থাকেন। . শরীর জুড়ে যে সংবেদ বা উত্তেজনা তৈরি হয়, তা কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। যাইহোক এই কৌশল ব্যবহারের ফলে সংক্রামক রোগ বিশেষত এইচআইভি ছড়ানোর কোনো ঝুঁকি নেই তা বলা যায় না। কারণ এইচআইভি আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির আঙ্গুলে ছোটো ক্ষত থাকলে এবং সে তার নারী সঙ্গীর বহির্যোনাঙ্গকে উত্তেজিত করার সময়ে যোনিরসে এইচআইভি সংক্রমিত হতে পারে। একইভাবে কোনো পুরুষের বীর্য এইচআইভি বহন করলে এবং তা যদি তার সঙ্গীর চামড়ার কোনো ক্ষততে প্রবেশ করে, সঙ্গী এইচআইভি আক্রান্ত হতে পারে
প্রেমিক-প্রেমিকার বা সমকামী যুগলদের পারস্পরিক আবেগীয় চুম্বন (নগ্ন বা বস্ত্র পরিহিত অবস্থায়) কালে যদি শিশ্ন এবং ভগাঙ্কুরের উত্থান ঘটে তবে সেটাকে অনাভেদী যৌনক্রিয়া বলা হবে। নিম্নোক্ত ক্রিয়াসমূহ এইরূপ যৌনকর্মঃ
সমাজসংস্কৃতিতে এই জাতীয় ধারণা আছে যে, যেহেতু অনাভেদী যৌন ক্রিয়ায় সরাসরী বীর্য অথবা যোনিরসের সরাসরী বিনিময় হয় না, এবং কোনোভাবেই শিশ্ন যোনিদ্বার, যোনি অথবা পায়ুতে প্রবেশ করে না, তাই এইধরনের যৌনক্রিয়া বিপদমুক্ত। যদিও অনাভেদী যৌনক্রিয়া আর ভেদী যৌনক্রিয়াকে তুলনা করলে অনাভেদী যৌনক্রিয়ায় ঝুঁকির সম্ভাবনা অনেক কম তবুও কিছু ঝুঁকি আছে যা হতে পারে। কিছু সুনির্দিষ্ট অনাভেদী যৌনক্রিয়ায় গর্ভাধান অথবা যৌন সংক্রমণ রোগ হতে পারে।
শিশ্ন যোনির সন্নিকটে থাকলে পায়ুযৌনক্রিয়া অথবা অন্যান্য যৌন ক্রিয়ার মাধ্যমে (ঊরুকাম অথবা যৌনাঙ্গে যৌনাঙ্গে ঘর্ষণ) গর্ভাধান হতে পারে। কারণ বীর্য যদি যোনির লুব্রিকেটিং তরলের মাধ্যমে যোনির প্রবেশমুখে পৌঁছাতে পারে, তাহলেই গর্ভাধানের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এমনকি যদি আঙ্গুল বা অন্য কোথাও শুক্রাণু লেগে থাকে এবং তা নারীর যোনাঙ্গে ঘর্ষণের মাধ্যমে কোনোভাবে যোনির প্রবেশমুখে পৌঁছায়, তাহলেও গর্ভাধানের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
অনাভেদী যৌন ক্রিয়ার একটি রূপ হলো নন এক্সক্লুসিভ নন পেনিট্রেশন। শিশ্ন দ্বারা যৌন সঙ্গম ব্যতীত ভাইব্রেটর, অঙ্গুলিসঞ্চালন দ্বারাও সঙ্গীর পায়ু, যোনিতে ভেদনক্রিয়ার মাধ্যমে যৌন সংসর্গ করা যায়। এধরনের যৌন ক্রিয়াকে "নন এক্সক্লুসিভ নন পেনিট্রেশন" বলে। এধরনের যৌনক্রিয়াতেও শুক্রানু, যোনি ক্ষরণ, লালারস বিনিময় (যন্ত্র বা অঙ্গুলীর মাধ্যনে সঙ্গীতে ভেদন বা পেনিট্রেট করলে, সে যন্ত্র বা অঙ্গুলিতে লেগে থাকলে) হতে পারে। নন এক্সক্লুসিভ নন পেনিট্রেটিভ যৌন সংসর্গের মত অনাভেদী যৌন ক্রিয়ায় কিছু সাধারণ যৌন সংক্রমক রোগ ছড়াতে পারে। কীভাবে ছড়াতে পারে তার কিছু কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো:
নন এক্সক্লুসিভ নন পেনিট্রেশন যৌন ক্রিয়ায়, পেনিট্রেশন বা ভেদনের জন্য যৌন সংক্রমিত রোগের ছড়ানোর ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। কারণ শরীরের তরল (বীর্য, যোনি ক্ষরণ, লালা) বিনিময়ের সম্ভাবনা থাকে। পূর্বে উল্লেখিত যৌন সংক্রমিত রোগ ছাড়াও নিম্নোক্ত রোগ গুলো নন এক্সক্লুসিভ নন পেনিট্রেশন প্রক্রিয়ায় ছড়াতে পারে:
অনেকেই এইচআইভি/এইডস হওয়ার ভয়ে উদ্বিগ্ন থাকে। সাধারণত একজন মানুষ যদি প্রতিরক্ষাবিহীন যৌন কর্মকান্ডে (পায়ু অথবা যোনীতে যৌনক্রিয়া) জড়িত হয় অথবা সংক্রমিত সিরিজ ব্যবহার করে অথবা এই ভাইরাস তার শরীরে মার্তৃগর্ভ থেকেই স্থানান্তরিত হয়, তবেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। একজন মানুষ কখনোই সাধারণ নৈমিত্তিক সাক্ষাৎ যেমন আলিঙ্গনের মত সাধারণ বিষয়ের জন্য এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়। তবে যদি কোনো ক্ষত অন্য কোনোভাবে এইচআইভি সংক্রমিত রক্ত বা বহির্যোনাঙ্গের ক্ষরণের (বীর্য অথবা যোনি ক্ষরণ) সংস্পর্শে আসে, তবে এইচআইভি বা এইডস হওয়ার সমূহ ঝুঁকি থাকে।
যদি যৌন রোগে সংক্রমণ অথবা গর্ভাধান থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হয়, তবে একমাত্র উপায় হলো সকল প্রকার ব্রহ্মচারিতা। যাইহোক, এই ঝুঁকি হ্রাস করার বিভিন্ন উপায় আছে, একজন মানুষ যে যৌনতায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবে, তাকেই ঠিক করতে হবে, সে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করবে।
কিছু অন্তরক প্রণালী হলো:
যদি কোনো ব্যক্তি অনাভেদী যৌনক্রিয়া থেকেও গর্ভাধান হয়ে যেতে পারে এরূপ ঝুঁকি নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকে, তাহলে জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু হরমোনগত গর্ভনিরোধক আছে; যা ব্যবহার করা যায়। একইসাথে অন্তরক প্রক্রিয়া এবং হরমোন প্রণালী ব্যবহার করলে গর্ভাধান এবং যৌন সংক্রমক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বহুলাংশে হ্রাস পায়।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article অনাভেদী যৌনক্রিয়া, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.