গনোরিয়া: একটি যৌনবাহিত রোগ

গনোরিয়া(ইংরেজি: Gonorrhea) হচ্ছে একটি যৌনবাহিত রোগ। Neisseria gonorrhoeae (নিশেরিয়া গনোরি) নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া এই রোগের জন্য দায়ী। পুরুষের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া (ডিজইউরিয়া) ও মূত্রনালি দিয়ে পুঁজ বের হয়, টেস্টিকলে ব্যথা প্রভৃতি দেখা যায়। স্ত্রীলোকের ক্ষেত্রে অনেক সময় কোনো লক্ষণ থাকে না আবার কারো ক্ষেত্রে যোনিপথে পুঁজ বের হয় এবং তলপেটে ব্যথা হতে পারে। যদি সময়মত এই রোগের চিকিৎসা না করালে পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই এই রোগ আশেপাশে ছড়িয়ে যেতে পারে এবং পুরুষের এপিডিডাইমিস ও মহিলার তলপেটে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। গনোরিয়া সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমনকি এটি শরীরের অস্থিসন্ধিসমূহ ও হার্টের কপাটিকাকেও আক্রান্ত করতে পারে।

গনোরিয়া
প্রতিশব্দgonococcal infection, gonococcal urethritis, gonorrhoea, the clap
গনোরিয়া: রোগতত্ত্ব, কারণ, প্রতিরোধ
বিশেষত্বচর্মরোগবিদ্যা, বৃক্কশল্যবিদ্যা, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিজ্ঞান উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

২৫ বছরের নিচে যৌনকার্যে সক্রিয় সকল নারীদের প্রতিবছর এই রোগের পরীক্ষা করানো উচিত। সমকামী পুরুষদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

যৌনমিলনের সময় কনডম ব্যবহার করে গনোরিয়া প্রতিরোধ করা যায়।

রোগতত্ত্ব

গনোরিয়া: রোগতত্ত্ব, কারণ, প্রতিরোধ 
Disability-adjusted life year for gonorrhea per 100, 000  inhabitants.
  no data
  <13
  13–26
  26–39
  39–52
  52–65
  65–78
  78–91
  91–104
  104–117
  117–130
  130–143
  >143
গনোরিয়া: রোগতত্ত্ব, কারণ, প্রতিরোধ 
Gonorrhea—Rates: United States, 1941–2007

প্রতিবছর প্রায় ৪৪৮ মিলিয়ন লোক যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়, এর মধ্যে প্রায় ৭৮ থেকে ৮৮ মিলিয়ন গনোরিয়ার রোগী। যুক্তরাজ্যে ২০০৫ সালে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রতি এক লক্ষ পুরুষদের মধ্যে ১৯৬ জন এবং ১৬-১৯ বছর বয়সী প্রতি এক লক্ষ তরুণীর মধ্যে ১৩৩ জন গনোরিয়ায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়।

অল্পবয়স্কা তরুণীদের এই রোগে আক্রান্ত হবার হার সবচেয়ে বেশি। ২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী ৯০০ জন গনোরিয়ার রোগী মৃত্যু বরণ করে যেখানে ১৯৯০ সালে এই সংখ্যা ছিলো ১১০০ জন। এই রোগের সুপ্তিকাল হচ্ছে ২ -১৪ দিন তবে ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যেই লক্ষণসমূহ প্রকাশ পেতে শুরু করে। কোনো পুরুষ একবার গনোরিয়ায় আক্রান্ত হলে পরবর্তীতে তার প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।

কারণ

গনোরিয়া: রোগতত্ত্ব, কারণ, প্রতিরোধ 
Multiple views of a Neisseria gonorrhoeae bacterium, which causes gonorrhea.

Neisseria gonorrhoeae নামক ব্যাক্টেরিয়ার মাধ্যমে গনোরিয়া রোগ হয়।

বিস্তার

যৌনমিলনের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে আরেকজনের দেহে এই রোগের জীবাণু ছড়ায়। এটা যোনিপথ, মুখগহ্বর বা পায়ুপথ যে কোনো পথেই ছড়াতে পারে। গনোরিয়ায় আক্রান্ত মহিলার সাথে একবার যৌনকর্ম করলে পুরুষলোকের এই রোগে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা ২০%, তবে সমকামী পুরুষের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি আরও অনেক বেশি। আক্রান্ত পুরুষের সাথে একবার যৌনমিলনে একজন মহিলার এই রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি প্রায় ৬০-৮০%।

বাচ্চা জন্মদানের সময় গনোরিয়ায় আক্রান্ত মায়ের শরীর থেকে এই রোগের জীবাণু বাচ্চাকে আক্রান্ত করতে পারে।এটি যখন বাচ্চার চোখকে আক্রান্ত করে তখন তাকে অফথালমিয়া নিওন্যাটোরাম বা নিওন্যাটাল কনজাংটিভাইটিস বলে।

গনোরিয়া: রোগতত্ত্ব, কারণ, প্রতিরোধ 
If not treated gonococcal ophthalmia neonatorum will develop in 28% of infants born to women with gonorrhea.

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জীবাণু দ্বারা দূষিত বস্তুর মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। এই বস্তুগুলো হলো গোসলের পানি, কাপড়চোপড়, তোয়ালে প্রভৃতি। তবে এরকম ঘটনা খুবই বিরল।

প্রতিরোধ

প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হচ্ছে কেবল একজন সঙ্গিনীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক রাখা নিশ্চিতভাবে যার গনোরিয়া নেই। বহুগামিতা পরিত্যাগ ও সঠিক পদ্ধতিতে কনডম ব্যবহারের মাধ্যমে এই রোগ সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

চিকিৎসা

গনোরিয়া: রোগতত্ত্ব, কারণ, প্রতিরোধ 
Penicillin entered mass production in 1944 and revolutionized the treatment of several venereal diseases.

এই রোগের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয় যেমন সেফট্রায়াক্সন, এজিথ্রোমাইসিন, ডক্সিসাইক্লিন ইত্যাদি। চিকিৎসার তিন মাস পর পুনঃপরীক্ষার সুপারিশ করা হয়।

গবেষণা

গনোরিয়া রোগের একটি টিকা আবিষ্কার করা হয়েছে যেটি ইঁদুরের শরীরে কার্যকর। আরও গবেষণার মাধ্যমে যতক্ষণ না এটা প্রমাণ হচ্ছে যে এই টিকা মানব শরীরে নিরাপদ ও সমান কার্যকর ততক্ষণ পর্যন্ত এটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে না।

তথ্যসূত্র

টেমপ্লেট:Gram-negative proteobacterial bacterial diseases

Tags:

গনোরিয়া রোগতত্ত্বগনোরিয়া কারণগনোরিয়া প্রতিরোধগনোরিয়া চিকিৎসাগনোরিয়া গবেষণাগনোরিয়া তথ্যসূত্রগনোরিয়া বহিঃসংযোগগনোরিয়াইংরেজি ভাষাপ্রদাহযৌনবাহিত রোগ

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

ওঁ নমঃ শিবায়আডলফ হিটলারশিক্ষকদৈনিক প্রথম আলোজয়নুল আবেদিনবঙ্গবন্ধু-১চট্টগ্রাম বিভাগওয়াহাবি আন্দোলনকরমচাঁদ উত্তমচাঁদ গান্ধীনারীদের জন্য পর্নধরিত্রী দিবসবৌদ্ধধর্মকোষ বিভাজনমোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন২০২২–২৩ নিউজিল্যান্ড পুরুষ ক্রিকেট দলের পাকিস্তান সফর (ডিসেম্বর ২০২২)মুঘল সাম্রাজ্যচাকমাজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)কৃষ্ণফরাসি বিপ্লবকারকবিড়ালবাঙালি জাতিকিরগিজস্তানহিন্দুধর্মইউটিউবরাজ্যসভাইউরোপবায়ুদূষণরামপ্রসাদ সেনজার্মানিআইয়ামুল বিজযাকাতদেব (অভিনেতা)ইসলামে বিবাহছিয়াত্তরের মন্বন্তরইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিচিকিৎসকঅক্ষয় তৃতীয়াবাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকোষ (জীববিজ্ঞান)তরমুজইস্তেখারার নামাজরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়নামাজের সময়সমূহব্রহ্মপুত্র নদশিলাফিলিস্তিনের ইতিহাসঐশ্বর্যা রাইসোনাশব্দ (ব্যাকরণ)চট্টগ্রাম জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থানজান্নাতুল ফেরদৌস পিয়াচাহিদাঈদুল আযহাব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাথ্যালাসেমিয়াবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিঅলিউল হক রুমিফজরের নামাজহৃৎপিণ্ডজিয়াউর রহমানবাংলাদেশের নদীবন্দরের তালিকাকৃত্তিবাসী রামায়ণইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগনীলদর্পণনেপালম্যালেরিয়ামানব শিশ্নের আকারফেনী জেলারঙের তালিকাসহজ পাঠ (বই)শাহরুখ খানবাংলা ভাষাহস্তমৈথুনপ্রাকৃতিক ভূগোল২০২২ ফিফা বিশ্বকাপযোহরের নামাজ🡆 More