কোণ: দুই সরলরেখার মধ্যবর্তী জ্যামিতিক রাশি

জ্যামিতিতে কোণ বলতে দুইটি রশ্মির মিলনস্থলকে বোঝায় এবং রশ্মি দুইটি একটি শীর্ষবিন্দুতে মিলিত হয়। দুইটি রশ্মির মাধ্যমে যে কোণ উৎপন্ন হয় তা একই সমতলে অবস্থান করে।

কোণ: ইতিহাস এবং উৎপত্তি, কোণের প্রকাশ, কোণের প্রকারভেদ
দুইটি রশ্মি দ্বারা উৎপন্ন একটি কোণ

ইতিহাস এবং উৎপত্তি

ইংরেজি Angle (বাংলা পরিভাষা কোণ) শব্দটি লাতিন শব্দ angulus থেকে এসেছে যার অর্থ ধার।

কোণের প্রকাশ

গাণিতিক বাক্যগুলোতে, কোণের মান প্রকাশ করতে সাধারণত গ্রিক অক্ষরগুলো (α, β, γ, θ, φ, . . . ) ব্যবহার করা হয়। দ্ব্যর্থতা এড়াতে গ্রিক অক্ষর π কে একাজে ব্যবহার করা হয় না। ছোট হাতের রোমান অক্ষরগুলোকেও (a, b, c, . . . ) কোণের মান হিসেবে প্রকাশ করা হয়। বড় হাতের অক্ষরগুলো বহুভুজ এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

জ্যামিতির চিত্র যে তিনটি বিন্দু দিয়ে কোণটি গঠিত হয়েছে সেগুলো দিয়ে কোণটিকে প্রকাশ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, A শীর্ষবিন্দুতে AB এবং AC রশ্মি দ্বারা গঠিত কোণকে ∠BAC বলা হয়। যেখানে কোনো দ্ব্যর্থতার সুযোগ নেই, সেখানে শুধুমাত্র শীর্ষবিন্দুটি দিয়ে কোণটিকে প্রকাশ করা হয় (এক্ষেত্রে কোণ A)।

কোণের প্রকারভেদ

স্বতন্ত্র কোণ

কোণগুলোকে বিশেষ নামে অভিহিত করা হয়।

  • ০° মাপ বিশিষ্ট কোণকে শুন্য কোণ বলা হয়।
  • এক সমকোণ বা ৯০° অপেক্ষা ছোট কোণকে সূক্ষ্মকোণ বলে।
  • একটি বৃত্তের +/ অংশকে অথবা ৯০° কোণকে সমকোণ বলে। দুইটি রশ্মি সমকোণ উৎপন্ন করলে এদেরকে পরস্পরের লম্ব বলে।
  • এক সমকোণ অপেক্ষা বড় কিন্তু এক সরলকোণ অপেক্ষা ছোট (৯০° অপেক্ষা বড় এবং ১৮০° অপেক্ষা ছোট) কোণকে স্থূলকোণ বলে।
  • একটি বৃত্তের +/  অংশকে (১৮০° বা π রেডিয়ান) এক সরলকোণ বলে।
  • এক সরলকোণ অপেক্ষা বড় কিন্তু দুই সরলকোণ অপেক্ষা ছোট (১৮০° অপেক্ষা বড় এবং ৩৬০° অপেক্ষা ছোট) কোণকে প্রবৃদ্ধ কোণ বলে।
  • একটি পূর্ণ ঘূর্ণনের ফলে (৩৬০° বা 2π রেডিয়ান) যে কোণ উৎপন্ন হয় তাকে পূর্ণকোণ বলে।

নিচের ছকে কোনগুলো দেখানো হলো :

সূক্ষ্মকোণ (a), স্থূলকোণ (b), এবং সরলকোণ (c)
প্রবৃদ্ধ কোণ
নাম   শুন্য সূক্ষ্মকোণ সমকোণ স্থূলকোণ সরলকোণ প্রবৃদ্ধ কোণ পূর্ণ ঘূর্ণন
একক ব্যবধি
turn   0 turn (0, +/) turn +/ turn (+/, +/) turn +/ turn (+/, 1) turn 1 turn
রেডিয়ান 0 rad (0, +/π) rad +/π rad (+/π, π) rad π rad (π, 2π) rad 2π rad
ডিগ্রি   (0, 90)° 90° (90, 180)° 180° (180, 360)° 360°
গ্রেডিয়েন্ট   0g (0, 100)g 100g (100, 200)g 200g (200, 400)g 400g

সমতুল্য কোণ জোড়া

  • যেসকল কোণের মান সমান তাদেরকে সর্বসম কোণ বলে। কোণের মান বাহুসমুহের দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে না। যেমন: সকল সমকোণ এর মান সমান।
  • একটি কোণ হতে ৯০°(অথবা π) বিয়োগ বা যোগ করতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত এর মান সূক্ষ্মকোণ হয়। কোনটির মান সূক্ষ্মকোণ হলে সেই সূক্ষ্মকোণকে প্রসঙ্গ কোণ বলে। যেমন: ১৫০° কোণের প্রসঙ্গ কোন ৩০°।

সন্নিহিত কোণ জোড়

কোণ: ইতিহাস এবং উৎপত্তি, কোণের প্রকাশ, কোণের প্রকারভেদ 
কোন A এবং B পরস্পর বিপ্রতীপ কোণ; C ও D পরস্পরের বিপ্রতীপ কোণ। কোণের সমতা বোঝাতে এখানে দাগ দেওয়া হয়েছে ।

যখন দুইটি সরলরেখা একটি বিন্দুতে ছেদ করে তখন চারটি কোণ উৎপন্ন হয়। অবস্থান হিসেবে এগুলোর বিভিন্ন নামকরণ করা হয়।

  • পরস্পর বিপরীত দিকে অবস্থিত কোণগুলোকে বিপ্রতীপ কোণ বলে। বিপ্রতীপ কোণগুলো পরস্পর সমান।
কোণ: ইতিহাস এবং উৎপত্তি, কোণের প্রকাশ, কোণের প্রকারভেদ 
কোণ A এবং B সন্নিহিত কোণ।

দুইটি কোণের যোগফলের ক্ষেত্রে

কোণ: ইতিহাস এবং উৎপত্তি, কোণের প্রকাশ, কোণের প্রকারভেদ 
a এবং b পরস্পর পূরক কোণ। (b হলো a এর পূরক কোণ, এবং a হলো b এর পূরক কোণ).
  • দুইটি কোণের যোগফল ৯০° হলে এরা পরস্পর পূরক কোণ। ইউক্লিডীয় জ্যামিতিতে সমকোণী ত্রিভুজের সূক্ষ্মকোণ দুইটি পরস্পর পূরক। কারণ ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি ১৮০° এবং সমকোণী ত্রিভুজের একটি কোণ ৯০°। কোণ A এবং B পূরক হলে নিম্নোক্ত অভেদসমুহ সঠিক:
    কোণ: ইতিহাস এবং উৎপত্তি, কোণের প্রকাশ, কোণের প্রকারভেদ 


কোণ: ইতিহাস এবং উৎপত্তি, কোণের প্রকাশ, কোণের প্রকারভেদ 
একটি ডান বৃত্তাকার শঙ্কু এবং একটি তির্যক বৃত্তাকার শঙ্কু
কোণ: ইতিহাস এবং উৎপত্তি, কোণের প্রকাশ, কোণের প্রকারভেদ 
একটি ডবল শঙ্কু (অসীমভাবে প্রসারিত দেখানো হয়নি)
কোণ: ইতিহাস এবং উৎপত্তি, কোণের প্রকাশ, কোণের প্রকারভেদ 
একটি শঙ্কুর 3D মডেল

একটি শঙ্কু একটি ত্রিমাত্রিক জ্যামিতিক আকৃতি যা একটি সমতল ভিত্তি (প্রায়শই, যদিও অগত্যা নয়, বৃত্তাকার) থেকে শীর্ষ বা শীর্ষবিন্দু বলে একটি বিন্দুতে মসৃণভাবে টেপার হয়।

একটি শঙ্কু তৈরি হয় রেখা খণ্ডের একটি সেট দ্বারা, অর্ধ-রেখা বা রেখাগুলি একটি সাধারণ বিন্দু, শীর্ষকে, একটি বেসের সমস্ত বিন্দুর সাথে সংযুক্ত করে যা একটি সমতলে থাকে যা শীর্ষস্থান ধারণ করে না। লেখকের উপর নির্ভর করে, ভিত্তিটি একটি বৃত্ত, সমতলে যেকোন এক-মাত্রিক চতুর্মুখী ফর্ম, যেকোন বন্ধ এক-মাত্রিক চিত্র, বা উপরের যেকোনোটি প্লাস সমস্ত আবদ্ধ বিন্দুতে সীমাবদ্ধ হতে পারে। যদি আবদ্ধ বিন্দুগুলি ভিত্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তাহলে শঙ্কু একটি কঠিন বস্তু ; অন্যথায় এটি ত্রিমাত্রিক স্থানের একটি দ্বিমাত্রিক বস্তু। একটি কঠিন বস্তুর ক্ষেত্রে, এই রেখা বা আংশিক রেখা দ্বারা গঠিত সীমানাকে পার্শ্বীয় পৃষ্ঠ বলা হয়; যদি পার্শ্বীয় পৃষ্ঠটি সীমাহীন হয় তবে এটি একটি শঙ্কুযুক্ত পৃষ্ঠ ।

রেখার অংশের ক্ষেত্রে, শঙ্কুটি ভিত্তির বাইরে প্রসারিত হয় না, যখন অর্ধ-রেখার ক্ষেত্রে, এটি অসীমভাবে প্রসারিত হয়। রেখার ক্ষেত্রে, শঙ্কুটি চূড়া থেকে উভয় দিকে অসীমভাবে প্রসারিত হয়, এই ক্ষেত্রে এটিকে কখনও কখনও দ্বিগুণ শঙ্কু বলা হয়। হয় শীর্ষের একপাশে একটি দ্বিগুণ শঙ্কুর অর্ধেকটিকে একটি ন্যাপে বলা হয়।

একটি শঙ্কুর অক্ষ হল সরলরেখা (যদি থাকে), চূড়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া, যার উপরে ভিত্তি (এবং পুরো শঙ্কু) একটি বৃত্তাকার প্রতিসাম্য রয়েছে।

প্রাথমিক জ্যামিতিতে সাধারণ ব্যবহারে, শঙ্কুগুলিকে ডান বৃত্তাকার বলে ধরে নেওয়া হয়, যেখানে বৃত্তাকার মানে হল ভিত্তিটি একটি বৃত্ত এবং ডান মানে হল যে অক্ষটি তার সমতলে সমকোণে বেসের কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে যায়। যদি শঙ্কুটি ডান বৃত্তাকার হয় তবে পার্শ্বীয় পৃষ্ঠের সাথে একটি সমতলের ছেদ একটি শঙ্কু বিভাগ । সাধারণভাবে, যাইহোক, ভিত্তিটি যেকোন আকৃতির হতে পারে এবং শীর্ষস্থানটি যেকোন জায়গায় থাকতে পারে (যদিও এটি সাধারণত ধরে নেওয়া হয় যে বেসটি আবদ্ধ এবং তাই এর সসীম ক্ষেত্রফল রয়েছে এবং শীর্ষটি বেসের সমতলের বাইরে অবস্থিত)। ডানদিকের শঙ্কুর সাথে বৈপরীত্য হল তির্যক শঙ্কু, যেখানে অক্ষ বেসের কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে অ-লম্বভাবে যায়।

বহুভুজ ভিত্তি বিশিষ্ট একটি শঙ্কুকে পিরামিড বলা হয়।

প্রসঙ্গের উপর নির্ভর করে, "শঙ্কু" অর্থ বিশেষভাবে একটি উত্তল শঙ্কু বা একটি প্রজেক্টিভ শঙ্কুও হতে পারে।

শঙ্কুগুলিকে উচ্চ মাত্রায়ও সাধারণীকরণ করা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র

Tags:

কোণ ইতিহাস এবং উৎপত্তিকোণ ের প্রকাশকোণ ের প্রকারভেদকোণ তথ্যসূত্রকোণ

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতানদের তালিকাইরানমোবাইল ফোনচুয়াডাঙ্গা জেলাহারুন-অর-রশিদ (পুলিশ কর্মকর্তা)বীর্যসন্ধিমীর জাফর আলী খানআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসবিশ্ব ব্যাংকহানিফ সংকেতহাদিসইব্রাহিম (নবী)দক্ষিণ কোরিয়ারাজ্যসভামানুষফরাসি বিপ্লবের কারণই-মেইলআয়তন অনুযায়ী ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহের তালিকাবাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবঅক্ষয় তৃতীয়ারানা প্লাজা ধসপথের পাঁচালীমূত্রনালীর সংক্রমণবাংলাদেশ নৌবাহিনীর পদবিফুলপৃথিবীমানব দেহনিউটনের গতিসূত্রসমূহবাংলাদেশের উপজেলার তালিকাশক্তিকাজী নজরুল ইসলামভারত ছাড়ো আন্দোলনবাংলাদেশ নৌবাহিনীসহীহ বুখারীদি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশনাটকচৈতন্য মহাপ্রভুসূর্যগ্রহণবাংলাদেশে পালিত দিবসসমূহকৃত্তিবাস ওঝাবিকাশরামমোহন রায়জনসংখ্যা অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাবাংলা ভাষা আন্দোলনবাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহহারুনুর রশিদদেব (অভিনেতা)আয়িশানূর জাহানথাইল্যান্ডবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়সেলজুক সাম্রাজ্যভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনপুঁজিবাদকুমিল্লা জেলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)লোকসভা কেন্দ্রের তালিকাগাণিতিক প্রতীকের তালিকাতাহসান রহমান খানসজনেপর্যায় সারণিমলাশয়ের ক্যান্সারজিয়াউর রহমানআমলাতন্ত্রপুরুষে পুরুষে যৌনতাবাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিচারকবৃন্দস্ক্যাবিসঅপারেশন সার্চলাইটবাক্যপুলিশসোনাওজোন স্তরকুমিল্লাতাপপ্রবাহসৈয়দ শামসুল হকদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিমিয়োসিসআনন্দবাজার পত্রিকা🡆 More