মুয়াম্মর আল-গাদ্দাফি বা মুয়াম্মর আবু মিনিয়ার আল-গাদ্দাফি(আরবি: معمر محمد أبو منيار القذافي /ˈmoʊ.əmɑːr ɡəˈdɑːfi/ ⓘ) (জন্ম:৭ই জু্ন ১৯৪২ - মৃত্যু:২০শে অক্টোবর ২০১১), পরিচিত কর্নেল গাদ্দাফি, ১৯৬৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত লিবিয়ার নেতা।
মুয়াম্মর আল-গাদ্দাফি | |
---|---|
লিবিয়ার ভ্রাতৃপ্রতীম নেতা এবং বিপ্লবের পথপ্রদর্শক | |
কাজের মেয়াদ ১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৬৯ – ২৩শে আগস্ট, ২০১১ | |
রাষ্ট্রপতি | তালিকা দেখুন
|
প্রধানমন্ত্রী | তালিকা দেখুন
|
পূর্বসূরী | পদ প্রতিষ্ঠিত |
উত্তরসূরী | পদ বিলুপ্ত |
লিবিয়ার বিপ্লবী কমান্ড পরিষদের চেয়ারম্যান | |
কাজের মেয়াদ ১লা সেপ্টেম্বর, ১৯৬৯ – ২রা মার্চ, ১৯৭৭ | |
প্রধানমন্ত্রী |
|
পূর্বসূরী | রাজা ইদ্রিস |
উত্তরসূরী | নিজেই (লিবিয়ার জেনারেল পিপলস কংগ্রেসের মহাসচিব হিসেবে) |
জেনারেল পিপলস কংগ্রেসের মহাসচিব | |
কাজের মেয়াদ ২রা মার্চ, ১৯৭৭ – ২রা মার্চ, ১৯৭৯ | |
প্রধানমন্ত্রী | আব্দুল আতি আল-ওবেইদি |
পূর্বসূরী | নিজেই (বিপ্লবী কমান্ড পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে) |
উত্তরসূরী | আব্দুল আতি আল-ওবেইদি |
লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৬ই জানুয়ারি, ১৯৭০ – ১৬ই জুলাই, ১৯৭২ | |
পূর্বসূরী | মাহমুদ সুলায়মান আল-মাগরিবি |
উত্তরসূরী | আব্দেস্সালাম জাল্লৌদ |
আফ্রিকান ইউনিয়নের সভাপতি | |
কাজের মেয়াদ ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ – ৩১শে জানুয়ারি, ২০১০ | |
পূর্বসূরী | জাকায়া কিকেতে |
উত্তরসূরী | বিঙ্গু ওয়া মুথারিকা |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ৭ জুন,১৯৪২ কসর আবু হাদি, ইতালীয় লিবিয়া |
মৃত্যু | ২০ অক্টোবর ২০১১ সির্ত, লিবিয়া | (বয়স ৬৯)
সমাধিস্থল | মরুভূমির অজ্ঞাত স্থানে |
রাজনৈতিক দল | আরব সমাজতান্ত্রিক ইউনিয়ন (১৯৭১–১৯৭৭) স্বতন্ত্র (১৯৭৭–২০১১) |
দাম্পত্য সঙ্গী |
|
সন্তান | পুত্র
কন্যা
|
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | বেনগাজী সামরিক বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমী |
ধর্ম | ইসলাম |
পুরস্কার |
|
স্বাক্ষর | |
সামরিক পরিষেবা | |
আনুগত্য | লিবিয়ান আরব জামাহিরিয়া |
শাখা | লিবিয়ার সেনাবাহিনী (১৯৬১-২০১১) |
কাজের মেয়াদ | ১৯৬১–২০১১ |
পদ | কর্নেল |
কমান্ড | লিবিয়ার সামরিক বাহিনী |
যুদ্ধ |
|
মুয়াম্মর আল-গাদ্দাফি ৭ই জু্ন, ১৯৪২ সালে সির্ত শহরের এক যাযাবর বেদুইন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। অন্যসব লিবিয়ান শিশুর মতো তিনিও শৈশবে ঐতিহ্যগত ধর্মীয় শিক্ষা লাভ করেন। এরপর তিনি ১৯৫৬ সাল থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত ফেজান এর সাবহা প্রিপারেটরি স্কুলে অধ্যয়ন করেন। সেখানে অধ্যয়ন কালে তিনি এবং তার কতিপয় বন্ধু সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে লিবিয়ার শাসন ক্ষমতা দখল করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু তার এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হওয়ার আগেই ১৯৬১ সালে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয়তার অভিযোগে তাকে সাবহা থেকে বহিষ্কার করা হয়।
সাবহা থেকে বহিষ্কৃত হয়ে তিনি বেনগাজীর তত্কালীন ইউনিভার্সিটি অব লিবিয়াতে (পরবর্তীতে যেটা বেনগাজীর আল ক্বারিউনেস এবং ত্রিপলীর আল ফাতাহ এই দুই ইউনিভার্সিটিতে বিভক্ত হয়ে যায়) ভর্তি হন এবং উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। এরপর ১৯৬৩ সালে তিনি বেনগাজীর সামরিক পরিষদে যোগদান করেন। সেখানে তিনি এবং তার অনুগত কতিপয় সামরিক কর্মকর্তা লিবিয়ার পশ্চিমমুখী রাজতন্ত্রকে (সেনুসীয় রাজতন্ত্র) উৎখাত করার জন্য একটি গোপন দল গঠন করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি উচ্চ প্রশিক্ষণের জন্য ব্রিটেনে যান এবং ১৯৬৬ সালে কমিশন প্রাপ্ত অফিসার পদে উন্নীত হয়ে লিবিয়ায় ফিরে আসেন।
১৯৬৯ সালের পহেলা সেপ্টেম্বরে, যখন তৎকালীন রাজা ইদ্রিস আল-সেনুসি তার শারীরিক অসুস্থার জন্য তুরস্কে সফরে গিয়েছিলেন, তখন মাত্র ২৭ বছর বয়সী কর্ণেল মোয়াম্মার আল গাদ্দাফী তার অল্প কয়েকজন সামরিক অফিসারের সহায়তায় রাজধানী ত্রিপলীতে এক প্রতিরোধহীন এবং রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে লিবিয়ার শাসন ক্ষমতা দখল করেন। গাদ্দাফীর এ সকল কাজে তাকে পূর্ণ সহযোগিতা করেছিলেন গাদ্দাফীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিসরের তত্কালীন প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুল নাসের। নাসেরের মৃত্যুদিবস এখনও লিবিয়াতে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়।
এর অল্প পরেই তার এবং তার অল্প বয়সী সামরিক কর্মকর্তাদের সাথে অপেক্ষাকৃত সিনিয়র অফিসারদের এবং কিছু প্রভাবশালী বেসামরিক নাগরিকের সাথে ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ সকল দ্বন্দ্ব নিরসন করে ১৯৭০ সালের জানুয়ারি মাসে গাদ্দাফী একজন সফল শাসক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সাবেক রাজা আমীর ইদ্রীস আল সেনুসীকে তুরস্ক থেকে মিসরে নির্বাসন দেওয়া হয়। তিনি ১৯৮৩ সালে নির্বাসিত অবস্থায় মিসরে মৃত্যুবরণ করেন।
মোয়াম্মার আল গাদ্দাফীর সন্তান-সন্ততি আট জন। এদের মধ্যে সাতজন ছেলে এবং একজন মেয়ে। তার আরেকটি মেয়ে ১৯৮৬ সালে তার বাড়িতে মার্কিন বিমান হামলায় মৃত্যুবরণ করে। গাদ্দাফীর বড় ছেলে মোহাম্মাদ গাদ্দাফী লিবিয়ান অলিম্পিক কমিটি এবং তার দ্বিতীয় ছেলে সাদ গাদ্দাফী লিবিয়ান ফুটবল ফেডারেশন পরিচালনা করছেন। সাদ নিজেও একজন বেশ ভালো ফুটবলার এবং তিনি লিবিয়ার জাতীয় দলে খেলেন। তার তৃতীয় পুত্র সাইফ আল ইসলাম একজন চিত্রশিল্পী এবং একটি চিকিৎসালয় এর পরিচালক। তার একমাত্র কন্যা আয়েশা গাদ্দাফী একজন আইনজীবী এবং তিনি ইরাকের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হুসেইনের পক্ষে আইনি লড়াই করে বেশ আলোচিত হয়েছিলেন। এছাড়া দেশের ভেতরে শিক্ষা-স্বাস্থ্য প্রভৃতি জনকল্যাণমূলক কাজে তিনি আত্মনিবেদিত। তার অপর তিন ছেলে আল মুতাস্সীম, হানওয়ীল এবং খামীস এখনও অখ্যাত। সম্প্রতি ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তার ষষ্ঠ পুত্র হানওয়ীল প্যারিসে পুলিশি ধাওয়ার শিকার হন।
গত এক দশক আগেও মুয়াম্মার আল গাদ্দাফীর সাথে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক ছিল রীতিমত সাপে-নেউলে। কিন্তু সম্প্রতি তার মধ্যে নীতিগত ভাবে বেশ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর তিনিই প্রথম এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান। ২০০২ সালে তিনি ১৯৮৮ সালে স্কটল্যান্ডের লকারবির আকাশে মার্কিন বিমানের উপর বোমা বিস্ফোরণের জন্য প্রকাশ্যে জনগণের কাছে ক্ষমা চান এবং এর জন্য বিপুল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ প্রদান করেন। ২০০৩ সালে মার্কিনীদের হাতে সাদ্দাম হুসেইনের পতনের পর তিনি স্বেচ্ছায় তার সকল গণ বিধ্বংসী অস্ত্র কর্মসূচী বাতিল করার কথা ঘোষণা করেন।
মোয়াম্মার আল গাদ্দাফী রচিত অমর গ্রন্থ হল কিতাবিল আখদার বা দ্যা গ্রীন বুক বা সবুজ গ্রন্থ। এটি ১৯৭৬ সালে প্রকাশিত হয়। তিন খণ্ডে প্রকাশিত এই গ্রন্থে সমাজ এবং রাষ্ট্র সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিল সমস্যা সমাধানে তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত হয়েছে। এটিই মূলত লিবিয়ার সংবিধান।
২০১১ সালে শুরু হওয়া আরব বসন্তের ছোঁয়া লাগে লিবিয়াতেও। গাদ্দাফির কিছু ভুল ও অদূরদর্শিতার কারণে, আরব রাষ্ট্রগুলোর বিশ্বাসঘাতকতায় এবং পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর ষড়যন্ত্রে লিবিয়ায় বিপ্লব রূপ নেয় সহিংস গৃহযুদ্ধে। দীর্ঘ আট মাসের এ গৃহযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে নিজ দেশে শত্রুবেষ্টিত এলাকা থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এসময় ন্যাটোর বিমান হামলা এবং বিদ্রোহীদের আক্রমণের শিকার হন গাদ্দাফি। ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিদ্রোহীদের হাতে ধরা পড়েন। ধরা পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঐদিনই অবর্ণনীয় নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয় তাকে। সির্তে বিশাল এক পাইপের মধ্যে গাদ্দাফি লুকিয়ে ছিলেন বা সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন এবং সেই সময়েই হামলা করা হয়৷ গাদ্দাফির মৃতদেহের বেশ কিছু ছবি দেখানো হয় লিবিয়া টেলিভিশনে৷ এছাড়া মৃতদেহ পাইপের মধ্যে থেকে বের করার সময় অনেকেই ব্যক্তিগত সেল ফোন দিয়ে ছবি তোলে বা ভিডিও করে৷ সেই ভিডিও এবং ছবিগুলোও প্রকাশ করা হয়৷
লিবিয়া টেলিভিশনের পাশাপাশি বিবিসি এবং সিএনএনও এসব ভিডিও ফুটেজ এবং ছবি দেখিয়েছে৷ রক্তাক্ত গাদ্দাফির শরীর৷ বোঝা যাচ্ছে বেশ কয়েকটি গুলি লেগেছে তাঁর শরীরে৷ মাথায় হয়তো একটি গুলি লেগে থাকতে পারে কারণ কপালের বাঁ পাশ এবং গলার কাছ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে রক্ত তা বেশ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছিল৷ মৃত্যুর সময় গাদ্দাফির পরনে ছিল হালকা রঙের পোশাক যার ফলে রক্তের প্রতি ফোঁটা স্পষ্ট চোখে পড়ছে৷ চোখ হালকা খোলা, পুরোপুরি বন্ধ হয়নি৷ নিষ্প্রাণ চোখে তাকিয়ে আছেন মুয়াম্মার গাদ্দাফি৷
সূত্রঃ dw.com
ইংরেজিতে মুয়াম্মার আল গাদ্দাফীর নামের বানান নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে লন্ডন ইভেনিং স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় তার নামের উপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে সম্ভাব্য ৩৭টি বানানের কথা উল্লেখ করা হয়।
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী Idris King of Libya হিসেবে | Chairman of the Revolutionary Command Council of Libya 1969–1977 | উত্তরসূরী Himself as Secretary General of the General People's Congress of Libya |
পূর্বসূরী Mahmud Sulayman al-Maghribi | Prime Minister of Libya 1970–1972 | উত্তরসূরী Abdessalam Jalloud |
পূর্বসূরী Himself Chairman of the Revolutionary Command Council of Libya হিসেবে | Secretary General of the General People's Congress of Libya 1977–1979 | উত্তরসূরী Abdul Ati al-Obeidi |
নতুন দপ্তর | Brotherly Leader and Guide of the Revolution of Libya 1979–2011 | উত্তরসূরী Mustafa Abdul Jalil Chairman of the National Transitional Council of Libya হিসেবে |
কূটনৈতিক পদবী | ||
পূর্বসূরী Jakaya Kikwete | Chairperson of the African Union 2009–2010 | উত্তরসূরী Bingu wa Mutharika |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article মুয়াম্মর গাদ্দাফি, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.