তাতার জাতি

তাতার জাতি হল তুর্কি জাতিগোষ্ঠির অন্তর্ভুক্ত একটি উপজাতি, যারা প্রধানত ইউরোপ ও এশিয়ায় বসবাস করে। প্রাথমিকভাবে তাতার নৃতাত্ত্বিক নামটি খুব সম্ভবত তাতার কনফেডারেশনে উল্লেখ করা হয়েছিল, যেই কনফেডারেশনটি মঙ্গোলীয় সম্রাট চেঙ্গিজ খান বিভিন্ন উপজাতিকে একীভূত করার সময়ে মঙ্গোল সাম্রাজের অন্তর্ভূক্ত করেন। ঐতিহাসিকভাব তাতার শব্দটি উত্তর ও মধ্য এশিয়ার বিস্তীর্ণ ভূমি থেকে উদ্ভূত যেকোন ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য হত, যা তখন টারটারি শব্দে পরিচিত ছিল। তবে সাম্প্রতিককালে এই শব্দটি আরো সংকীর্ণভাবে সম্পর্কিত জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর জন্য ব্যবহৃত হয়, যারা নিজেদের তাতার হিসাবে ব্যক্ত করে বা সাধারণত তাতারি ভাষা হিসাবে উল্লেখ করা হয়–এমন ভাষায় কথা বলে।

তাতার জাতি
tatarlar
татарлар
তাতার জাতি
মোট জনসংখ্যা
আনু. ৭ মিলিয়ন
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
তাতার জাতি রাশিয়া (ক্রিমিয়া বাদে)৫,৩১৯,৮৭৭
তাতার জাতি উজবেকিস্তান৪৭৭,৮৭৫
তাতার জাতি ইউক্রেন (ক্রিমিয়া সহ)৩১৯,৩৭৭
তাতার জাতি কাজাখস্তান২৪০,০০০
তাতার জাতি তুরস্ক১৭৫,৫০০০
তাতার জাতি তুর্কমেনিস্তান৩৬,৩৫৫
তাতার জাতি কিরগিজস্তান4২৮,৩৩৪
তাতার জাতি আজারবাইজান২৫,৯০০
তাতার জাতি রোমানিয়া২০,২৮২
তাতার জাতি মঙ্গোলিয়া১৯,৫৬৭
তাতার জাতি ইসরায়েল১৫,০০০
তাতার জাতি বেলারুশ৭,৩০০
তাতার জাতি ফ্রান্স৭,০০০
তাতার জাতি লিথুয়ানিয়া৬,৮০০-৭,২০০
তাতার জাতি চীন৫,০০০
তাতার জাতি কানাডা৪,৮২৫
(মিশ্রিত পূর্বপুরুষ সহ)
তাতার জাতি এস্তোনিয়া১,৯৮১
তাতার জাতি পোল্যান্ড১,৯১৬
তাতার জাতি বুলগেরিয়া১,৮০৩
তাতার জাতি ফিনল্যান্ড১,০০০
তাতার জাতি জাপান৬০০-২,০০০
তাতার জাতি অস্ট্রেলিয়া৫০০+
তাতার জাতি চেক প্রজাতন্ত্র৩০০+
তাতার জাতি  সুইজারল্যান্ড১৫০
তাতার জাতি ইরান২০,০০০- ৩০,০০০
ভাষা
কিপচাক ভাষাসমূহ
ধর্ম
সুন্নি ইসলাম (সংখ্যাগুরু) ;
ইস্টার্ন অর্থোডক্স (ক্ষুদ্র সংখ্যালঘু)
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী
অন্যান্য তুর্কি জাতি

তাতাররা ১২০০ সালে মঙ্গোলীয় মালভূমিতে বাসকারী পাঁচটি প্রধান উপজাতির মধ্যে অন্যতম ছিল। চেঙ্গিস খান ১২০৬ সালে মঙ্গোল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে তাতার জাতিভুক্ত লোকেদের বশ করতে সক্ষম হয়। তার নেতৃত্বে তার পৌত্র বাতু খান (১২০৭১২৫৫ খ্রিস্টাব্দ) তাতারদের আরো পশ্চিমে রুশ সমভূমির দিকে সরে যেতে বাধ্য করে। মঙ্গোলহাজারাদের মধ্যে এখনো তাতার–অধ্যুষিত অনেক গোত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। রুশ এবং ইউরোপীয়রা বর্তমানও মঙ্গোল ও তাদের শাসনভুক্ত তুর্কীয় জাতিগোষ্ঠী বুঝাতে তাতার শব্দটি ব্যবহার করে। এছাড়া পূর্বে তাতার বলতে ইউক্রেনীয়, তুর্কিবুলগার মুসলিমদের উত্তরসূরীদের বুঝাতে ব্যবহৃত হত।

তাতার জাতি
রুশ অঞ্চলে তাতারদের বসবাস (২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী)।

তাতারদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী হল ভোলগা তাতাররা, যারা এখন ভলগা-উরাল অঞ্চলের (তাতারস্তানবাশকোর্তোস্তান) অধিবাসী। তারা এই কারণে প্রায়শ রুশ ভাষায় "তাতার" নামেও পরিচিত। তারা তাতারস্তানের জনসংখ্যার ৫৮% গঠন করে এবং তাদের ভাষা তাতার ভাষা নামে পরিচিত এবং ২০১০ সালের হিসাব মতে রাশিয়ায় আনুমানিক ৫.৩ মিলিয়ন জাতিগত তাতার ছিল।

কিপচাক ভাষাগুলোতে কথা বলে এমন সব তাতারদের জেনেটিক গবেষণায় দেখা যায় যে, তাতারদের তিনটি প্রধান গোষ্ঠীর (ভোলগা, ক্রিমীয়, সাইবেরীয়) সাধারণ পূর্বপুরুষ নেই এবং তাদের গঠন একে অপরের থেকে স্বাধীনভাবে ঘটেছে। বিশেষ করে ক্রিমীয় তাতারদের সম্পর্কে; এই জাতিগত পার্থক্যের উল্লেখ করে তাদের তাতার বলা উচিত কিনা তাও বিবেচনা করা হয়েছিল। অতএব, তারা সহজভাবে "ক্রিমীয়" (qırımlıla) নামেও পরিচিত। ভলগা তাতারদের একটি সংখ্যালঘু ভোলগা বুলগেরিয়ার বুলগারদের উপর তার ঐতিহ্য দাবি করে নিজেদের পরিচয়ে "বুলগার" (বা বলগার) শব্দটিকে প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করেছে। এই তত্ত্বটিকে তাদের গঠনের জন্য দ্বিতীয় প্রধান তত্ত্ব হিসাবে গণ্য করা হয়; অন্যটি হল কিপচাক-তত্ত্ব।

রাশিয়া এবং রুশ সাম্রাজ্যের জারদের অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের তাতার উৎস ছিল। এমনকি একথাও জানা যায় যে, অনেক রুশ তাতার থেকে আগত, যা বিখ্যাত সেই উক্তিটি দ্বারাও ব্যাখ্যা করা হয় যে, কোনো রুশকে সামান্য স্ক্র্যাচ করুন, আপনি নীচে একজন তাতারিকে আবিষ্কার করতে পারবেন। তবে জেনেটিক্স দেখায় যে, রুশদের বেশিরভাগই উত্তর এবং পূর্ব ইউরোপীয়দের (বিশেষ করে বেলারুশীয়ইউক্রেনীয়) সাথে একটি গুচ্ছ গঠন করে এবং তারা তুলনামূলকভাবে তাতার গোষ্ঠীভুক্ত সদস্যদের থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে।

ব্যুৎপত্তি

তাতার জাতি 
পুরাতন তুর্কি ভাষায় অরখোন শিলালিপি
তাতার জাতি 
সিগেটভার অভিযানে উসমানীয় মিনিয়েচারে (ক্ষুদ্র বাহিনী) উসমানীয় সৈন্য এবং ক্রিমীয় তাতারদের অগ্রগামী হিসেবে দেখানো হয়েছে

তাতাররা ইউরোপের প্রাক্তন খানাত গোল্ডেন হোর্ডের জনসংখ্যার জন্য একটি উল্লেখ্যযোগ্য নাম হয়ে ওঠে। যেমন: সাবেক কাজান, ক্রিমীয়, আস্ট্রাখান, কাসিম ও সাইবেরীয় খানাত। (তাতারের) তার্তার রূপের উৎপত্তি সম্ভবত লাতিন বা ফরাসি, তুর্কিফার্সি ভাষা থেকে পশ্চিম ইউরোপীয় ভাষায় এসেছে এবং শুরু থেকেই অতিরিক্ত (r) পশ্চিমা ধরণগুলোতে উপস্থিত ছিল এবং অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারী অনুসারে, এটি সম্ভবত টার্টারাসের সাথে একটি সংযোগের কারণে হয়েছিল।

ফার্সি শব্দটি ১৩শ শতাব্দীতে চেঙ্গিস খানের সৈন্যদের উল্লেখ করতে গিয়ে প্রথম লিপিবদ্ধ করা হয় এবং এটি অজানা উত্সের ওপর ভিত্তি করে হয়।ওইডি অনুসারে "কথা বলা শেষ" এমন বোঝাতে টাটা ব্যবহৃত হয়। তাতারের আরবি শব্দ হল تتار এবং তাতাররা নিজেরা তাদের নাম লিখতেন تاتار অথবা طاطار

রুশ সাম্রাজ্যের মধ্যে বসবাসকারী সব তুর্কি জনগণের নাম ছিল তাতার (একটি রুশ নাম হিসাবে) এবং এই জনসংখ্যার মধ্যে কিছুসংখ্যাক এখনও তাতারকে স্ব-পদবী হিসাবে ব্যবহার করে। তবে অধিকাংশই তা করে না।

  • কিপচাক গ্রুপ
    • কিপচাক-বুলগার শাখা বা সংকীর্ণ অর্থে "তাতার":
      • ভলগা তাতার
        • আস্ট্রাখান তাতার
      • লিপকা তাতার
    • কিপচাক-কুমান শাখা
      • ক্রিমীয় তাতার
        • রোমান তাতার
      • কারাচায় ও বলকার : পাহাড়ি তাতার
      • কুমিক্স: দাগেস্তানি তাতার
      • ক্রিমীয় কারাইত : ক্রিমীয় কারাইত তাতার / কারাইত তাতার
      • ক্রিমচাক : ক্রিমীয় ক্রিমচাক তাতার / ক্রিমচাক তাতার
    • কিপচাক-নোগাই শাখা:
      • নোগাই : নোগাই তাতার
      • সাইবেরীয় তাতার
  • সাইবেরীয় শাখা:
    • আলতাইয়ান : আলতাই তাতার (টিউবলার বা চেরনেভো তাতারসহ)।
    • চুলিম বা ছুলিম তাতার
    • খাকাস : ইয়েনিসেই তাতার (এছাড়া আবাকান তাতার বা অচিন তাতার), এরা এখনো তাতার উপাধি ব্যবহার করে।
    • শর্স : কুজনেস্ক তাতার।
  • ওগুজ শাখা
    • আজারবাইজানীয়: ককেশাস তাতার (এছাড়াও ট্রান্সককেশিয়া তাতার বা আজারবাইজান তাতার)

শব্দটি মূলত শুধুমাত্র একটি বহিরাগত শব্দ নয়, কারণ গোল্ডেন হোর্ডের পোলোভটসিয়ানরা নিজেদের তাতার বলে ডাকত। এটি সাইবেরিয়ারাশিয়ার সুদূর পূর্বের বেশ কিছু লোকের নামও। যেমন : খাকাস লোক (তাদর, তদর)।

ভাষা

তাতার জাতি 
কিপচাক ভাষাভাষীদের সমসাময়িক অবস্থান: কিপচাক-বলগার  কিপচাক-কুমান  কিপচাক-নোগে ও কিরগিজ-কিপচাক 

১১ শতকের কারাখানি পণ্ডিত মাহমুদ আল-কাশগরি উল্লেখ করেছেন যে, ঐতিহাসিক তাতাররা দ্বিভাষিক ছিল এবং তাদের নিজস্ব ভাষা ছাড়াও অন্যান্য তুর্কি ভাষায় কথা বলত।

আধুনিক তাতার ভাষা বাশকির ভাষার সাথে একত্রে কিপচাক ভাষার মধ্যে কিপচাক-বোলগার (এছাড়াও উরালো-ক্যাস্পিয়ান) গ্রুপ গঠন করে (উত্তর-পশ্চিম তুর্কি নামেও এটি পরিচিত)।

দুইটি তাতার উপভাষা রয়েছে: কেন্দ্রীয় ও পশ্চিমী। পশ্চিমী উপভাষাটি (মিশের) বেশিরভাগই মিশারদের দ্বারা বলা হয় এবং এর কেন্দ্রীয় উপভাষাটি কাজান ও আস্ট্রাখান তাতারদের দ্বারা বলা হয়। উভয় উপভাষার আবার উপভাষা রয়েছে এবং কেন্দ্রীয় তাতার সাহিত্য তাতারদের ভিত্তি সজ্জিত করে।

সাইবেরীয় তাতার ভাষা ভোলগা-উরাল তাতার থেকে স্বাধীন। উপভাষাগুলো স্বতন্ত্র তাতার ভাষা এবং একে অপরের থেকে বেশ দূরবর্তী এবং প্রায়ই পারস্পরিক বোধগম্যতাকে বাধা দেয়। সাইবেরীয় তাতার আধুনিক তাতার ভাষার অংশ এই দাবিটি সাধারণত কাজানের ভাষাবিদদের দ্বারা সমর্থিত হয় এবং এটি সাইবেরীয় তাতারদের দ্বারা নিন্দা করা হয়।

ক্রিমীয় তাতার ভাষা হচ্ছে ক্রিমিয়ার আদিবাসী তাতার জনগণের ভাষা। এর সাধারণ নামের কারণে ক্রিমীয় তাতারকে কখনও কখনও ভুলভাবে রাশিয়ার কাজান তাতারের একটি উপভাষা হিসাবে দেখা হয়। যদিও এ ভাষাগুলো পরস্পরে সম্পর্কিত (যেহেতু উভয়ই তুর্কীয় ভাষা)। ক্রিমীয় তাতার ভাষার নিকটতম কিপচাক ভাষাগুলো (উপরে উল্লিখিত) হল কুমিক এবং কারাচে-বালকার; কাজান তাতার নয়। তবুও একটি মতামত রয়েছে যে, কাজান তাতার ভাষা ক্রিমিয়ান তাতারের মতো একই কিপচাক-কুমান গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত।

গোষ্ঠী ও জাতি

বৃহত্তম তাতার জনসংখ্যা হল ভলগা তাতার। এরা হল ভোলগা-উরাল অঞ্চলের স্থানীয় এবং তাদের পর হল ক্রিমিয়ার ক্রিমীয় তাতাররা, যা ক্রিমীয় তাতার ভাষায় কথা বলে। লিপকা তাতার এবং আস্ট্রাখান তাতারদের একটি করে ছোট দল ইউরোপে বসবাস করে এবং সাইবেরীয় তাতাররা এশিয়ায় বাস করে।

ভলগা তাতার

তাতার জাতি 
জাতীয় জনসংখ্যা শুমারি ২০১০ অনুযায়ী রাশিয়ায় তাতারদের বসতি স্থাপনের ক্ষেত্র।
তাতার জাতি 
ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ভলগা তাতাররা

ভলগা বুলগাররা খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে ভলগা নদীর তীরে বসতি স্থাপন করে। আহমদ বিন ফাদলানের ইসলাম ধর্মপ্রচারের ফলশ্রুতিতে ৯২২ সালে তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। বর্তমানে তারা তাতারস্তান অঞ্চলে বাস করে। ১২২৩-১২৩৬ সালে বাতু খানের আক্রমণের পর গোল্ডেন হোর্ড ভোলগা বুলগেরিয়াকে সংযুক্ত করে। সেই আক্রমণে বেশিরভাগ জনসংখ্যাই বেঁচে গিয়েছিল। ফলে তাদের ও হোর্ডের কিপচাকদের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মাত্রার মিশ্রণ ঘটেছিল। এ গোষ্ঠীটি সামগ্রিকভাবে "তাতার" নামটি গ্রহণ করে (অবশেষে ১৯ শতকের শেষের দিকে এমনটি ছিল ; যদিও কিছু ক্ষেত্রে বুলগার নামটি বজায় ছিল এবং সংখ্যাগরিষ্ঠরা নিজেদের শধুমাত্র মুসলিম হিসাবে চিহ্নিত করেছিল) এবং সেই সাথে কিপচাকদের ভাষাও গ্রহণ করে নেয়। অন্যদিকে আক্রমণকারী হানাদাররা শেষ পর্যন্ত সুন্নি ইসলাম গ্রহণ করে (আনু. ১৪ শতক) এবং ১৫ শতকে গোল্ডেন হোর্ড বিচ্ছিন্ন হওয়ার সাথে সাথে এ অঞ্চলটি কাজান খানাতের অঞ্চলে পরিণত হয়েছিল, যা রুশরা শেষ পর্যন্ত ১৬ শতকে আক্রমণ করে দখল করে নেয়।

কিছু ভলগা তাতার তাতার ভাষার বিভিন্ন উপভাষায় কথা বলে। তদনুসারে, তারা তাতারদের মিশার গ্রুপ ও কাসিম গ্রুপের মতো স্বতন্ত্র গ্রুপও গঠন করে:

  • মিশার তাতার হলো তাতারদের একটি নির্দিষ্ট দল, যারা তাতার ভাষার মিশার নামে একটি উপভাষায় কথা বলে। তারা রাশিয়ার চেলিয়াবিনস্ক, রিয়াজান, তাম্বভ, পেনজা ও নিঝেগোরোদস্কায়া ওব্লাস্ট এবং বাশকোর্তোস্তান ও মর্দোভিয়াতে বাস করে। তারা তাতারস্তানে ভলগা নদীর ডান তীরে বাস করে।
  • পশ্চিমী তাতারদের রাজধানী হলো কাসিম শহরে (কাসিমভ, রুশ: Касимов)। তাই তারা কাসিম গ্রুপ নামে পরিচিত এবং তারা রিয়াজান ওব্লাস্টে কাসিম শহরে প্রায় ১১০০ জন তাতার জনসংখ্যার একটি সমষ্টি নিয়ে বসবাস করে।

খ্রিস্টান ভলগা তাতারদের একটি সংখ্যালঘু কেরাশেন্স নামেও পরিচিত।

ভলগা তাতাররা ১৫ থেকে ১৯শ শতকের মধ্যে তাদের সাহিত্যে পুরনো তাতার ভাষা ব্যবহার করেছিল। এটি আরবি লিপির ইস্ক ইমলা সংস্করণে লেখা হয়েছিল; কিন্তু প্রকৃত বানান আঞ্চলিকভাবে ভিন্ন ছিল। প্রাচীন সাহিত্যের ভাষায় অনেক আরবিফারসি ঋণ শব্দ অন্তর্ভুক্ত ছিল। যাহোক, এর আধুনিক সাহিত্যের ভাষা (যা সাধারণত সিরিলীয় বর্ণমালা ব্যবহার করে লেখা) প্রায়শ আরবিফার্সির পরিবর্তে রুশ এবং অন্যান্য ইউরোপীয় উৎস-উত্পন্ন শব্দ থাকে।

তাতারস্তান অঞ্চলের বাইরে শহুরে তাতাররা সাধারণত তাদের প্রথম ও ব্যবহারিক ভাষা হিসেবে রুশ ভাষায় কথা বলে (মস্কো, সেন্ট-পিটার্সবার্গ, নিঝনি নভগোরড, তাসখন্দ, আলমাতি, উরাল অঞ্চলের শহরসহ পশ্চিম সাইবেরিয়ার মত শহরগুলোতে) এবং বিশ্বব্যাপী তাতার প্রবাসীরা অন্যান্য ভাষা ব্যবহার করে।

১৯১০-এর দশকে ভলগা তাতারদের সংখ্যা ছিল প্রায় অর্ধ মিলিয়ন এবং তারা তাদের ঐতিহাসিক জন্মভূমি তাতারস্তানের কাজান গভর্নরেটে বাস করত। এছাড়া উফায় প্রায় ৪০০,০০০, সামারা ও সিম্বির্স্কে ১০০,০০০ ও ভায়াটকা, সারাতোভ, পেনজায়, নিজনি নোভগোর্ড, পার্ম ও ওরেনবার্গে প্রায় ৩০,০০০ জন ছিল। অতিরিক্ত ১৫,০০০ রিয়াজানে স্থানান্তরিত হয়েছিল বা ১৬শ এবং ১৭ শতকে লিথুয়ানিয়াতে (ভিলনিয়াস, গ্রোডনো এবং পোডোলিয়ায়) বন্দী হিসাবে বসতি স্থাপন করেছিল। এছাড়া ২,০০০ জন সেন্ট পিটার্সবার্গে বসবাস করত।

অধিকাংশ কাজান তাতারই ইসলাম পালন করে এবং কাজান তাতাররা কাজান (স্বাভাবিক) তাতার ভাষায় কথা বলে, যে ভাষায় যথেষ্ট পরিমাণে রুশআরবি কৃতঋণ শব্দ রয়েছে।

১৯১৭ সালের আগে তাদের সমাজে বহুবিবাহ প্রচলিত ছিল। তবে শুধুমাত্র ধনী শ্রেণীর দ্বারা এবং একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রথা হিসেবে প্রচলিত ছিল।

কাজান তাতার জাতিভুক্তদের মধ্যে একটি জাতিগত জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, যা বুলগারদের বংশোদ্ভূত হওয়ার উপর জোর দেয় এবং এটি বুলগারিজম নামে পরিচিত— এর গ্রাফিতি রাজধানী কাজানের বিভিন্ন রাস্তার দেয়ালে "বুলগেরিয়া জীবিত" (বুলগেরিয়া জীওয়া) এর মতো বাক্যাংশসহ প্রদর্শিত হয়।

আস্ট্রাখান তাতার

আস্ট্রাখান তাতাররা হলো (প্রায় ৮০,০০০) তাতারদের একটি দল, যারা আস্ট্রাখান খানাতে বাসকারী তাতার জনসংখ্যার বংশধর এবং এদের বেশিরভাগই বর্তমান আস্ট্রাখান ওব্লাস্টে বাস করে। ২০১০ সালে রাশিয়ার আদমশুমারিতে বেশিরভাগ আস্ট্রাখান তাতার লোক নিজেদের কেবল তাতার হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন এবং কয়েকজন নিজেদেরকে "আস্ট্রাখান তাতার" হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। অনেক ভোলগা তাতার আস্ট্রাখান ওব্লাস্টে বাস করে এবং দুই দলের মধ্যে পার্থক্য এখনো অদৃশ্য রয়ে গেছে।

ক্রিমীয় তাতার

তাতার জাতি 
ক্রিমিয়ার কিরক ইয়েরে কানিকের [রুশ] সমাধি।

ক্রিমীয় তাতাররা ক্রিমিয়ায় তুলনামূলকভাবে একটি সাম্প্রতিক জাতিগত স্তর। গ্রীকভাষী বাইজেন্টাইনদের বাস্তুচ্যুত করে গথিক জনগোষ্ঠীর অবশিষ্টাংশ খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দীতে ক্রিমিয়ায় এসে বসতি স্থাপন করে। ১৩শ–১৭শ শতাব্দীতে ক্রিমীয় তাতাররা একটি স্বতন্ত্র পরিচয় লাভ করে। তারা ১০ম শতাব্দীতে ক্রিমিয়াতে বসতি স্থাপনকারী কুমান ও এর আগে (গ্রীক, সিথীয় ও গোথ) আগমনকারী জনগণের অন্যান্য অবদানসহ অনেক আক্রমণকারী তুর্কি লোকদের তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেয়।

১৩শ শতকের শুরুতে ক্রিমিয়া –যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা ইতিমধ্যেই তুর্কি জনগণের সমন্বয়ে গঠিত ছিল–গোল্ডেন হোর্ডের একটি অংশ হয়ে ওঠে। ১৪শ শতকে ক্রিমীয় তাতারদের বেশিরভাগই ইসলাম গ্রহণ করে এবং তারপরে ক্রিমিয়া পূর্ব ইউরোপের ইসলামী সভ্যতার অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে। সেই সময় গোল্ডেন হোর্ডের ক্রিমীয় উলুসে বিচ্ছিন্নতাবাদের প্রবণতা দেখা দেয়। গোল্ডেন হোর্ডের কাছ থেকে ক্রিমিয়ার প্রকৃত স্বাধীনতার গণনা করা যেতে পারে রাজকুমারী (খানুম) ক্যানিকের শুরু থেকে। তিনি ছিলেন গোল্ডেন হোর্ডের শক্তিশালী খানের কন্যা তোখতামিশ ও নোগাই হোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা এডিজির স্ত্রী রাজকুমারী। তার রাজত্বকালে তিনি ১৪৩৭ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ক্রিমীয় সিংহাসনের সংগ্রামে হ্যাকি গিরেকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন। কনিকের মৃত্যুর পর ক্রিমিয়ার হাকি গিরেকের পরিস্থিতি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তিনি ক্রিমিয়া উপদ্বীপ ছেড়ে লিথুয়ানিয়ায় চলে যেতে বাধ্য হন।

তাতার জাতি 
বাগাসারায়ে খানের প্রাসাদ

১৪৪১ সালে গোল্ডেন হোর্ড গোষ্ঠী শিরিন, বারিন এবং কুমানিক গোষ্ঠী কিপকাকসহ ক্রিমিয়ার বেশ কয়েকটি শক্তিশালী গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের একটি দল ক্রিমিয়ায় শাসন করার জন্য হ্যাকি গিরেকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য লিথুয়ানিয়ার গ্র্যান্ড ডাচিতে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং এর ফলে তিনি গিরে রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা হন, যে রাজ্য ১৭৮৩ সালে রাশিয়া কর্তৃক ক্রিমীয় খানাতের অধিভুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি শাসন করেছিলেন। হ্যাকি গিরে ছিলেন চেঙ্গিস খান ও তার নাতি বাতু খানের গোল্ডেন হোর্ডের একজন জোচিড বংশধর। হ্যাকির পুত্র মেলি আই গিরাইয়ের রাজত্বকালে গ্রেট হোর্ডের সেনাবাহিনী উত্তর থেকে ক্রিমিয়ায় আক্রমণ করে এবং ক্রিমীয় খান সাধারণ যুদ্ধে জয়লাভ করেন। এরপর গ্রেট হোর্ড খানের সেনাবাহিনী তখত-লিয়াতে অতিক্রম করে এবং সেখানে তিনি নিহত হন। হোর্ডের অস্তিত্ব বন্ধ হয়ে যায় এবং ক্রিমীয় খান গ্রেট খান এবং তার রাজ্যের উত্তরাধিকারী হন।

সেই থেকে ১৮ শতকের শুরু পর্যন্ত ক্রিমীয় খানাত পূর্ব ইউরোপের শক্তিশালী শক্তিগুলোর মধ্যে ছিল। খানাত আনুষ্ঠানিকভাবে উসমানীয় সাম্রাজ্যের একটি ভাসাল রাষ্ট্র হিসাবে পরিচালিত হয়েছিল। ১৫৮০ সালের পর এটি মহান স্বায়ত্তশাসন লাভ করে। একটি মুসলিম রাষ্ট্র হওয়ার কারণে ক্রিমীয় খানাত উসমানী খিলাফত থেকে আলাদা হতে পারেনি এবং তাই ক্রিমীয় খানদের উসমানিদের খলিফা বা মুসলিম বিশ্বের সর্বোচ্চ শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, খলিফার অর্থ, পৃথিবীতে খোদার ভাইসরয়। একই সময়ে নোগাই বাহিনী–যাদের তখন নিজস্ব খান ছিল না–তারা ছিল ক্রিমীয় পোলিশ-লিথুয়ানীয় কমনওয়েলথের ভাসাল এবং তারা খানকে বার্ষিক শ্রদ্ধা নিবেদন করত (যথাক্রমে ১৭০০ এবং ১৬৯৯ সাল পর্যন্ত)।

১৭৭১ সালে যখন রাশিয়ার পিটার প্রথম কৃষ্ণ সাগরে প্রবেশ করার জন্য তার সমস্ত সৈন্য (৮০,০০০) নিয়ে একটি অভিযানে বের হয়েছিলেন, তখন তিনি ক্রিমীয় খান দ্বিতীয় ডেভলেট গিরের সেনাবাহিনী দ্বারা বেষ্টিত হন এবং নিজেকে একটি হতাশ পরিস্থিতির মধ্যে খুঁজে পান। কেবলমাত্র উসমানীয় উজির বালতাসি মুহাম্মাদ পাশার বিশ্বাসঘাতকতা পিটারকে ক্রিমীয় তাতারদের ঘের থেকে বেরিয়ে আসতে দেয়। তখন ডেভলেট গির উজিরের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। তার প্রতিক্রিয়া ছিল: "আপনি তাতারদের বিষয়গুলো জানেন। সাব্লাইম পোর্টের সব বিষয় আমার উপর ন্যস্ত করা হয়েছে। এসবের মধ্যে হস্তক্ষেপ করার অধিকার আপনার নেই।"

তখন প্রুথ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং এর ১০ বছর পরে রাশিয়া নিজেকে একটি সাম্রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করে। ১৭৩৬ সালে ক্রিমীয় খান কাপলান ১ম গিরেকে তুর্কি সুলতান তৃতীয় আহমেদ পারস্যে ডেকে পাঠান। রাশিয়া ক্রিমিয়ায় সৈন্যের অভাবের সুযোগ নিতে পারে বুঝতে পেরে কাপলান গির তুর্কি সুলতানকে দুইবার চিন্তা করার জন্য লিখেছিলেন; কিন্তু সুলতান অবিচল ছিলেন। ঠিক যেমনটি কাপলান গিরের প্রত্যাশিত ছিল ১৭৩৬ সালে রাশিয়া বাহিনী মুনিখের নেতৃত্বে ক্রিমিয়া আক্রমণ করে উপদ্বীপটি ধ্বংস করে দেয়, বেসামরিক লোকদের হত্যা করে এবং সমস্ত বড় শহর ধ্বংস করে রাজধানী বাখচিসারায় দখল করে। দখলের পর সমস্ত সংরক্ষণাগার এবং নথিপত্রসহ খানের প্রাসাদ পুড়িয়ে দেয় এবং তারপরে ক্রিমিয়া ছেড়ে যায়। কারণ এটিতে তখন শুরু হওয়া একটি মহামারী ছিল। এক বছর পর একই কাজ করে আরেক রুশ জেনারেল পিটার লেসি । এরপর থেকে তারা ক্রিমীয় খানাত পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়নি এবং এর ধীর পতন শুরু হয়েছিল । ১৭৬৮ থেকে ১৭৭৪ সালের রুশ-তুর্কি যুদ্ধের ফলে রুশদের হাতে উসমনীয়দের পরাজয় ঘটে এবং যুদ্ধের পরে স্বাক্ষরিত কুচুক কায়নারকা (১৭৭৪) চুক্তি মতে ক্রিমিয়া স্বাধীন হয়। এর ফলে ক্রিমীয়দের রক্ষা করার জন্য উসমানীয়রা তাদের রাজনৈতিক অধিকার ত্যাগ করে। ক্রিমিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতার পরে রাশিয়া চুক্তি লঙ্ঘন করে এবং ১৭৮৩ সালে ক্রিমীয় খানাতকে সংযুক্ত করে নেয়

তাতার জাতি 
কারাসুভবাজারে পরিত্যক্ত বাড়ি

রুশ প্রশাসনের নিপীড়নের কারণে ক্রিমিয়ান তাতাররা উসমানি সাম্রাজ্যে অভিবাসন করতে বাধ্য হয়। ১৭৮৩ থেকে ২০ শতকের শুরু পর্যন্ত কমপক্ষে ৮০০ হাজার তাতার ক্রিমিয়া ছেড়ে চলে যায়। ১৯১৭ সালে ক্রিমীয় তাতাররা তাদের রাষ্ট্রীয়তা পুনরুদ্ধার করার প্রয়াসে ক্রিমীয় গণপ্রজাতন্ত্রের ঘোষণা করে। এটি ছিল মুসলিম বিশ্বের প্রথম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। এখানে সকল মানুষ অধিকারের ক্ষেত্রে সমান ছিল। প্রজাতন্ত্রের প্রধান ছিল তরুণ তাতার রাজনীতিবিদ নোমান চেলে বিচিহান। এর কয়েক মাস পর বলশেভিকরা ক্রিমিয়া দখল করে এবং চেলেবিসিহানকে বিনা বিচারে হত্যা করে কৃষ্ণ সাগরে ফেলে দেয়। এরপর ক্রিমিয়ায় সোভিয়েত শক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।

সোভিয়েত সরকার ক্রিমিয়ার চাহিদা না মিটিয়েই সেখান থেকে ইউনিয়নের অন্যান্য অঞ্চলে রুটি রপ্তানি করার কারণে ১৯২১-২২ সালে অন্তত ৭৬,০০০ জন ক্রিমীয় তাতার অনাহারে মারা যায়। এটি এত ছোট একটি জাতির জন্য একটি বড় বিপর্যয়ে পরিণত হয়। ১৯২৮ সালে ক্রিমীয় তাতার বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে দমন নিপীড়নের প্রথম ধারা শুরু হয়। বিশেষ করে সোভিয়েত ক্রিমিয়ার ভেলি ইব্রাইমভের প্রধানকে একটি বানোয়াট মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৩৮ সাল ক্রিমীয় তাতার বুদ্ধিজীবীদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফায় দমন-পীড়ন শুরু হয়। সেই সময়ে অনেক ক্রিমীয় তাতার লেখক, বিজ্ঞানী, কবি, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষক হত্যা করা হয়। তাদের মধ্যে আসান সাবরি আইভাজভ, ইউসিন বোদানিনস্কি, সেইটজেলিল হাত্তাটোভ, ইলিয়াস তারহানসহ আরো অনেকেই আছেন।

১৯৪৪ সালের মে মাসে সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েতেের রাজ্য প্রতিরক্ষা কমিটি ক্রিমিয়া উপদ্বীপ থেকে সমস্ত ক্রিমীয় তাতারদের সম্পূর্ণ নির্বাসনের আদেশ দেওয়া হয়। বিতাড়িতদের গবাদি পশুর ট্রেনে মধ্য এশিয়ায়; প্রাথমিকভাবে উজবেকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নির্বাসনের সময় ও নির্বাসনে থাকার প্রথম বছরগুলোর মধ্যেই ক্রিমীয় তাতারদের ৪৬% মারা গিয়েছিল। ১৯৫৬ সালে ক্রুশ্চেভ স্তালিনের ব্যক্তিত্বের সংস্কৃতিকে সোভিয়েতে উন্মোচিত করেন এবং নির্বাসিত লোকদের তাদের স্বদেশে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেন। ব্যতিক্রম ছিল কেবল ক্রিমীয় তাতাররা। তারপর থেকে ক্রিমীয় তাতারদের একটি শক্তিশালী জাতীয় আন্দোলন শুরু হয়, যা বিদেশ ও সোভিয়েত ভিন্নমতাবলম্বীদের দ্বারা সমর্থিত হয়েছিল। ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সুপ্রিম সোভিয়েতকে তাদের মাতৃভূমি থেকে ক্রিমিয়ান তাতারদের নির্বাসনকে অমানবিক ও আইনহীন বলে নিন্দা জানানো হয়। ক্রিমীয় তাতাররা তাদের স্বদেশে ফিরতে শুরু করে। বর্তমান ক্রিমীয় তাতাররা ক্রিমিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ১২% গঠন করে। এছাড়া তুরস্ক এবং উজবেকিস্তানে তাদের একটি বৃহৎ প্রবাসী দল রয়েছে; তবে তাদের অধিকাংশই (বিশেত তুরস্কে) নিজেদের ক্রিমীয় তাতার বলে মনে করে না। এখনও দোব্রুজায় তাদের একটি প্রবাসী গোষ্ঠী রয়ে গেছে এবং সেখানে বেশিরভাগ তাতাররা ক্রিমীয় তাতার হিসাবে নিজেদের পরিচয় দিতে থাকে।

তাতার জাতি 
একদল ক্রিমীয় তাতার।
তাতার জাতি 
তাত এবং ইয়ালিবয়লু ক্রিমীয় তাতার

বর্তমান ক্রিমীয় তাতাররা তিনটি উপ-জাতিগত গোষ্ঠী নিয়ে গঠিত:

  • তাত; (ককেশাস অঞ্চলে বসবাসকারী তাত জাতির লোকদের সাথে বিভ্রান্ত হবেন না) যারা ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত ক্রিমীয় পর্বতমালায় বসবাস করত।
  • ইয়ালিবয়লু; যারা উপদ্বীপের দক্ষিণ উপকূলে বাস করত
  • নোগায়েরা; যারা ক্রিমিয়ার উত্তরাঞ্চলে বাস করত

রোমানিয়ায় ক্রিমীয় তাতার

কিছু ক্রিমীয় তাতার ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে আজকের রোমানিয়াবুলগেরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বাস করছে। ২০০২ সালের আদমশুমারি মাফিক রোমানিয়ায় মোট ২৪,০০০ লোক নিজেদের জাতিসত্তাকে তাতার হিসাবে ঘোষণা করেছিল এবং তাদের বেশিরভাগই দোব্রুজা অঞ্চলের কনস্টানতা কাউন্টিতে বসবাসকারী ক্রিমীয় তাতার। বেশিরভাগ ক্রিমীয় তাতার – যারা আজকাল রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ায় বসবাস করে রুশ সাম্রাজ্য কর্তৃক ক্রিমিয়ার অন্তর্ভুক্তিকরণ পরে তারা দোব্রুজার উদ্দেশ্যে ক্রিমীয় উপদ্বীপ ছেড়ে চলে যায়।

রোমান তাতাররা প্রায় ১৩ শতক থেকে রোমানিয়ায় উপস্থিত রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তারা প্রথম ১৩ শতকের মাঝামাঝি সময় গোল্ডেন হোর্ডের শক্তির উচ্চতায় দানিউব নদীর মুখে পৌঁছেছিল। ১৪ এবং ১৫ শতকে উসমানি সাম্রাজ্য বুদ্জাকের নোগাইসের সাথে দোব্রুজা জয় করে। ১৫৯৩ থেকে ১৫৯৫ সালের মধ্যে নোগাই ও বুদজাকের তাতাররাও দোব্রুজাতে বসতি স্থাপন করে এবং ১৬ শতকের শেষের দিকে বুদজাক থেকে প্রায় ৩০,০০০ নোগাই তাতার দোব্রুজায় আনা হয়েছিল।

১৭৮৩ সালের ক্রিমিয়ার রুশ অধিগ্রহণের পর ক্রিমীয় তাতাররা দোব্রুজার (আজ রোমানিয়াবুলগেরিয়ার মধ্যে বিভক্ত) উসমানীয় উপকূলীয় প্রদেশে চলে যেতে শুরু করে এবং তাদের বেশিরভাগ দোব্রুজার তুলকা, মেসিদিয়ে, বাবাদাগ, কোস্টেন্স, সিলিস্ট্রে, বেস্টেপে বা ভার্নার আশেপাশের অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে এবং তাদের পরিত্যক্ত জন্মভূমি; যেমন: সিরিন, আকমেসিট, ইয়ালা, ইয়াল্টা, কেফে বা বেবুকাবের মতো গ্রামগুলোর নামকরণ করে। আলবেনীয়দের সাথে এসকল তাতার জেন্ডারমেস হিসাবে কাজ করত। আলবেনীয়রা তখন উসমানীয়দের দ্বারা উচ্চ সম্মানে অধিষ্ঠিত ছিল এবং বিশেষ করের সুবিধা পেয়েছিল। এরপর উসমানীয়রা অতিরিক্তভাবে তাতারদের জন্য একটি নির্দিষ্ট মাত্রার স্বায়ত্তশাসন প্রদান করেছিল, তাদেরকে তাদের নিজস্ব কায়কাম, খান মির্জা দ্বারা শাসনের অনুমতিও দেওয়া হয়। গিরে রাজবংশ (১৪২৭-১৮৭৮) দোব্রুজায় বহুগুণ বেড়ে যায় এবং তাদের সম্মানজনক অবস্থানও বজায় রাখে। কারা হুসেন নামে একজন রোমানীয় তাতার সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদের নির্দেশে জেনিসারি বাহিনী বিলুপ্তের জন্য দায়ী ছিলেন।

লিপকা তাতার

তাতার জাতি 
১৬৫৫-১৬৬০ সালের দ্বিতীয় উত্তর যুদ্ধের সময় ওয়ারশের কাছে তাতারদের সাথে সংঘর্ষে সুইডিশ রাজা চার্লস এক্স গুস্তাভ।

লিপকা তাতার হল তুর্কি-ভাষী তাতারদের একটি দল, যারা মূলত ১৪ শতকের শুরুতে লিথুয়ানিয়ার গ্র্যান্ড ডাচিতে বসতি স্থাপন করেছিল। তাদের প্রথম বসতি স্থাপনকারীরা নিজেদের ধর্ম ওঝাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল এবং অখ্রিস্টান লিথুয়ানীয়দের মধ্যে আশ্রয় প্রার্থনা করেছিল।এরপর ১৪ শতকের শেষের দিকে লিথুয়ানিয়ার গ্র্যান্ড ডিউক ভিটাউটাস দ্য গ্রেট (শাসন কাল: ১৩৯২-১৪৩০) তাতারদের আরেকটি ঢেউ গ্র্যান্ড ডুচিতে আমন্ত্রণ জানান এবং তারা ছিল মুসলিম। এই তাতাররা প্রথমে লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াস, কাউনাস, ত্রাকাই ও হ্রডনার আশেপাশে বসতি স্থাপন করেছিল এবং গ্র্যান্ড ডুচির অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে, যা পরবর্তীতে ১৫৬৯ সালের দিকে পোলিশ-লিথুয়ানীয় কমনওয়েলথের অংশ হয়ে ওঠে। এ অঞ্চলগুলো এখন লিথুয়ানিয়া, বেলারুশপোল্যান্ডের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। লিথুয়ানিয়ায় বসতি স্থাপনের প্রথম থেকেই তারা লিপকা তাতার নামে পরিচিত ছিল।

১৩শ থেকে ১৭ শতক পর্যন্ত তাতারদের বিভিন্ন গোষ্ঠী পোলিশ-লিথুয়ানীয় কমনওয়েলথে বসতি স্থাপন করে অথবা আশ্রয় পেয়েছিল। লিথুয়ানিয়ার গ্র্যান্ড ডিউকস বিশেষ করে তাদের অভিবাসনকে উন্নত করে। কারণ দক্ষ যোদ্ধা হিসেবে তাতারদের খ্যাতি ছিল। এই তাতার বসতি স্থাপনকারীদের সকলকে স্জলাচ্টা (সম্ভ্রান্ত) মর্যাদা দেওয়া হয়; এটি একটি ঐতিহ্য, যা ১৮ শতকের শেষের দিকে কমনওয়েলথের শেষ পর্যন্ত টিকে ছিল। এই ধরনের অভিবাসীগণের মধ্যে লিপকা তাতারদের (১৩শ-১৪শ শতক) পাশাপাশি ক্রিমীয় ও নোগে তাতার (১৫-১৬ শতক) অন্তর্ভুক্ত ছিল, যার সবকটিই পোলিশ সামরিক ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য গোষ্ঠী। এদের সাথে ভলগা তাতারও (১৬-১৭ শতক) অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারা বেশিরভাগই লিথুয়ানিয়ার গ্র্যান্ড ডাচিতে বসতি স্থাপন করেছিল।

তাতার জাতি 
১৬৫৬ সালে ওয়ারশের যুদ্ধে তাতাররা পোলের সাথে সুইডিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল।

১৭ শতকে কমনওয়েলথে বাসকারী তাতারদের সংখ্যা বিভিন্ন অনুমান ৬০ টি গ্রামে মসজিদসহ প্রায় ১৫,০০০ ব্যক্তি বলে উল্লেখ করেছে। অসংখ্য রাজকীয় সুযোগ-সুবিধা, সেই সাথে সম্রাটদের দ্বারা প্রদত্ত অভ্যন্তরীণ স্বায়ত্তশাসন তাতারদের নিজেদের ধর্ম, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংরক্ষণ করার অনুমতি দিয়েছে। এমনকি সে তাতারদের খ্রিস্টানদের সাথে আন্তঃবিবাহ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, যা সেই সময়ে ইউরোপে একটি অস্বাভাবিক প্রথা ছিল। ১৭৯১ সালের মে সংবিধান পোলিশ সেজমে (সংসদ) তাতারদের প্রতিনিধিত্ব করার অনুমতি দেয়।

যদিও ১৮ শতকের মধ্যে তাতাররা স্থানীয় ভাষা গ্রহণ করেছিল; তবে ইসলাম ধর্ম ও অনেক তাতার ঐতিহ্য (যেমন: প্রধান ধর্মীয় উৎসবের সময় তাদের মসজিদে ষাঁড় কুরবানি) টিকে ছিল। এটি একটি স্বতন্ত্র মুসলিম সংস্কৃতির গঠনের দিকে তাদের পরিচালিত করে এবং পরস্পরে ধর্মীয় সহনশীলতার সাথে মিশে গিয়ে একটি অপেক্ষাকৃত উদার সমাজ গঠন করে। উদাহরণস্বরূপ, লিপকা তাতার সমাজের নারীদের ঐতিহ্যগতভাবে পুরুষদের মতো একই অধিকার ও মর্যাদা ছিল এবং তারা নির্বিচ্ছিন্ন স্কুলে যেতে পারত।

তাতার জাতি 
দায়িত্বে থাকা ইম্পেরিয়াল গার্ডের লিথুয়ানীয় তাতার (রিচার্ড নটেল কর্তৃক অঙ্কিত)।

প্রায় ৫,৫০০ তাতার পোল্যান্ডের আন্তঃযুদ্ধ সীমানার মধ্যে বাস করত (১৯২০-১৯৩৯) এবং একটি তাতার অশ্বারোহী ইউনিট দেশের স্বাধীনতার জন্য সর্বদা যুদ্ধ করেছিল। তাতাররা তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষা করেছিল এবং তাতার আর্কাইভস ও ভিলনিয়াসের একটি যাদুঘরসহ বেশ কয়েকটি তাতার সংগঠনকে টিকিয়ে রেখেছিল।

২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় লিপকা তাতাররা গুরুতর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। উপরন্তু ১৯৪৫ সালের পর সীমান্ত পরিবর্তনের পরে তাদের একটি বড় অংশ সোভিয়েত ইউনিয়নে নিজেদের খুঁজে পেয়েছিল। অনুমান করা হয় যে, বর্তমান প্রায় ৩০০০ তাতার পোল্যান্ডে বসবাস করে, যাদের মধ্যে ২০০২ সালের আদমশুমারিতে প্রায় ৫০০ তাতার (পোলিশের বিপরীতে) জাতীয়তা ঘোষণা করেছিল। বর্তমান পোল্যান্ডের উত্তর-পূর্বে দুটি তাতার গ্রাম (বোহোনিকি এবং ক্রুসজিনিয়ানি) রয়েছে। এদের পাশাপাশি ওয়ারশ, গডানস্ক, বিয়ালস্টক এবং গর্জো উইলকোপোলস্কিতেি শহুরে তাতার সম্প্রদায় রয়েছে। পোল্যান্ডে তাতারদের মাঝে মাঝে একটি পোলিশ শেষ নামসহ একটি মুসলিম উপাধি থাকে: Ryzwanowicz। আরো আত্তীকৃত তাতারদের গৃহীত অন্য উপাধিগুলো হল তাতারা বা তাতারানোভিজ বা টেটারসিনিস্কি, যার আক্ষরিক অর্থ "তাতারের পুত্র"।

তাতাররা পোলিশ-লিথুয়ানীয় কমনওয়েলথ সামরিক বাহিনীর পাশাপাশি পোলিশ ও লিথুয়ানীয় রাজনৈতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনে তাদের মতো একটি ক্ষুদ্রকায় সম্প্রদায় তুলনামূলকভাবে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করে। আধুনিক পোল্যান্ডে তাতারদের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে পরিচিত। কারণ হেন্রিক সিয়েনকিউচ (১৮৪৬-১৯১৬)-এর ঐতিহাসিক উপন্যাসগুলোতে তাতারদের লক্ষণীয় ভূমিকার কারণে তা পোল্যান্ডে সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত। বেশ কিছু পোলিশ বুদ্ধিজীবী ব্যক্তিত্ব তাতার ছিলেন। যেমন: বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ জের্জি লোজেক ।

পোলিশ-ভাষী তাতারদের একটি ছোট সম্প্রদায় বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে বসতি স্থাপন করে। তারা একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছে, যা ২০১৭-এর হিসাব অনুযায়ী নিয়মিত ব্যবহৃত হয়।

সাইবেরীয় তাতার

তাতার জাতি 
ওমস্ক ওব্লাস্ট থেকে সাইবেরীয় তাতার লোককাহিনীর একটি দল নাজা।

সাইবেরীয় তাতাররা তিনটি স্বতন্ত্র অঞ্চল দখল করে বসবাস করছে:

  • তোবোলস্ক থেকে তমস্ক পর্যন্ত পশ্চিম থেকে পূর্বে চলমান একটি অঞ্চল
  • আলতাই পর্বতমালা এবং এর স্পার্স
  • দক্ষিণ ইয়েনিসিস্ক

তারা বিভিন্ন উত্তর এশীয় আদিবাসী গোষ্ঠীর সংমিশ্রণে উদ্ভূত হয়েছিল, যা আলতায়ের উত্তরে একটি অঞ্চলে চতুর্থ ও পঞ্চম শতাব্দীর মধ্যে এরা কিছুটা সংস্কৃতিতে পৌঁছোয়; কিন্তু মঙ্গোলদের হাতে পরাধীন ও ক্রীতদাস হয়েছিল। ২০১০ সালের আদমশুমারি রাশিয়ায় ৬,৭৭৯ সাইবেরীয় তাতার রেকর্ড করে। ২০০২ সালের আদমশুমারি অনুসারে সাইবেরিয়ায় ৫০০,০০০ তাতার রয়েছে। তবে তাদের মধ্যে ৪০০,০০০ ভলগা তাতার, যারা উপনিবেশের সময়ে সাইবেরিয়ায় বসতি স্থাপন করেছিল।

তাতার জনসংখ্যা

রাশিয়ার তাতার জনসংখ্যা (১৯২৬-২০২১)
১৯২৬ ১৯৩৯ ১৯৪৯ ১৯৭০ ১৯৭৯ ১৯৮৯ ২০০২ ২০১০ ২০২১
৩,৯২৬,০৫৩ ৩,৬৮২,৯৫৬ ৪,০৭৪,২৫৩ ৪,৫৭৭,০৬১ ৫,০৫৫,৭৫৭ ৫,৫২২,০৯৬ ৫,৫৫৪,৬০১ ৫,৩১০,৬৪৯ ৪,৭১৩,৬৬৯

চিত্রশালা

    পতাকা
    চিত্র
    অঙ্কন
    ভাষা

বহিঃসংযোগ

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

Tags:

তাতার জাতি ব্যুৎপত্তিতাতার জাতি ভাষাতাতার জাতি গোষ্ঠী ও জাতিতাতার জাতি তাতার জনসংখ্যাতাতার জাতি চিত্রশালাতাতার জাতি বহিঃসংযোগতাতার জাতি আরও দেখুনতাতার জাতি তথ্যসূত্রতাতার জাতিউত্তর এশিয়াউপজাতিচেঙ্গিজ খানতাতার কনফেডারেশনতাতার ভাষাতাতারস্তানতুর্কীয় জাতিসমূহভাষামঙ্গোল সাম্রাজ্যমধ্য এশিয়া

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বাংলা ভাষা আন্দোলনপানিপথের যুদ্ধঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরজন্ডিসবাংলাদেশের নদীর তালিকাবাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টপাট্টা ও কবুলিয়াতআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসূর্যগ্রহণবেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরপ্রথম বিশ্বযুদ্ধপ্রাণ-আরএফএল গ্রুপসৈয়দ সায়েদুল হক সুমনসাদ্দাম হুসাইনপ্রথম ওরহানদুর্গাপূজামাইকেল মধুসূদন দত্তবাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চলফুসফুসগায়ত্রী মন্ত্রচেন্নাই সুপার কিংসবাংলাদেশের ইউনিয়নবঙ্গবন্ধু-২২৬ এপ্রিলহীরক রাজার দেশেশক্তিদক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাপাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারফজরের নামাজঈদুল আযহালোকসভাডায়াচৌম্বক পদার্থবাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিবিদ্রোহী (কবিতা)বটউজবেকিস্তাননিউমোনিয়াবাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২পলাশীর যুদ্ধসোমালিয়ামৃণালিনী দেবীআকবরনাদিয়া আহমেদজসীম উদ্‌দীনদিনাজপুর জেলা১৮৫৭ সিপাহি বিদ্রোহমিশরআতাবনলতা সেন (কবিতা)আতিকুল ইসলাম (মেয়র)মৌলিক পদার্থের তালিকাবিরসা দাশগুপ্তহজ্জমূত্রনালীর সংক্রমণযতিচিহ্নবঙ্গবন্ধু-১নগরায়নসত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রঅর্থ (টাকা)ফিলিস্তিনের ইতিহাসবিশেষ শাখা (বাংলাদেশ পুলিশ)আনারসভারত বিভাজনরূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রডায়াজিপামদ্বৈত শাসন ব্যবস্থাসূরা ইয়াসীনমিজানুর রহমান আজহারীকুরআনক্যান্সারবিড়ালজি২০ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিব্যাংকবাংলাদেশের পৌরসভার তালিকানারী খৎনা🡆 More