বংশগতীয় সংকেত

বংশগতীয় সংকেত (ইংরেজিতে Genetic code জেনেটিক কোড) বলতে কোষের বংশগতীয় উপাদান যেমন ডিএনএ ও আরএনএ অণুর ভেতরে নিউক্লিওটাইডের অনুক্রমকে বোঝায়, যা দেহকোষের রাইবোসোম নামক অঙ্গাণুতে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় প্রোটিন সংশ্লেষণের সময় অ্যামিনো অ্যাসিডগুলির ক্রম নির্ধারণ করে। তবে প্রোটিন সরাসরি ডিএনএ থেকে উৎপন্ন হয় না। ডিএনএ কোষকেন্দ্রে বা নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে (কিছু ডিএনএ কোষের মাইটোকন্ড্রিয়া নামের শক্তি উৎপাদন ও সঞ্চয়কারী অঙ্গাণুতেও থাকতে পারে)। প্রথমে ডিএনএ অণু থেকে একটি বাহক আরএনএ অণু সংশ্লেষণ করা হয়। এই বংশগতীয় সংকেতবাহক আরএনএ অণুটি কোষের সাইটোপ্লাজমে (বা অন্যত্র) অবস্থিত রাইবোসোম অঙ্গাণুতে বাহিত হয়, যেখানে প্রোটিন নির্মাণ বা সংশ্লেষণ করা হয়। আরএনএ অণুটিতে চার ধরনের নিউক্লিওটাইড থাকে, অ্যাডেনিন, গুয়ানিন, সাইটোসিন ও ইউরাসিল। আরএনএ অণুর তিনটি পরস্পর-সংলগ্ন নিউক্লিওটাইড একটি সাঙ্কেতিক একক বা কোডন গঠন করে, যা প্রোটিন সংশ্লেষণের পরবর্তী ধাপে কোন্‌ অ্যামিনো অ্যাসিড যোগ করতে হবে, তা নির্ধারণ করে। যেমন GCU কোডনটি অ্যালানিন নামক অ্যামিনো অ্যাসিডের জন্য সংকেত বহন করে। সব মিলিয়ে এরকম ৬৪টি সম্ভাব্য কোডন আছে; এদের মধ্যে তিনটি কোডন কোনও অ্যামিনো অ্যাসিডের সাথে সম্পর্কিত নয়, বরং প্রোটিনের পরিসমাপ্তি নির্দেশ করে। বাকি ৬১টি কোডন প্রোটিন তৈরিতে ব্যবহৃত ২০ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিডের জন্য সংকেত বহন করে। অর্থাৎ একটি অ্যামিনো অ্যাসিড দুই বা তার অধিক কোডন দ্বারা নির্দিষ্ট হতে পারে। বিজ্ঞানীরা একে সংকেত বাহুল্য বা প্রয়োজনাতিরিক্ততা নাম দিয়েছেন।

বংশগতীয় সংকেত
একটি বাহক আরএনএ (এমআরএনএ) অণুর অংশবিশেষে কতগুলি কোডন তথা বংশগতীয় সংকেত-এককের ধারা। প্রতিটি কোডন তিনটি নিউক্লিওটাইড নিয়ে গঠিত এবং সাধারণত একটি কোডন একটি বিশেষ অ্যামিনো অ্যাসিডের সাথে সম্পর্কিত। নিউক্লিওটাইডগুলিকে A, U, G এবং C বর্ণগুলি দিয়ে নির্দেশ করা হয়েছে। উৎস ডিএনএ অণুতে U-এর পরিবর্তে T নিউক্লিওটাইড ছিল। এই বাহক আরএনএ অণুটি একটি রাইবোজোমকে (কোষীয় অঙ্গাণু) কীভাবে একটি প্রোটিন সংশ্লেষণ করতে হবে, সে ব্যাপারে কোডনে ধারণকৃত বংশগতীয় সংকেতের মাধ্যমে নির্দেশনা দেবে।

বংশগতীয় সংকেত সমস্ত জীবের জন্যই প্রায় একই রকম হয়; অর্থাৎ একই কোডনগুলি একই ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিডকে নির্দেশ করে।

মার্কিন প্রাণরসায়নবিদ মার্শাল নিরেনবার্গ, রবার্ট হলি এবং হরগোবিন্দ খোরানা ১৯৬০-এর দশকের শুরুর দিকে বংশগতীয় সংকেত কীভাবে কাজ করে, তা উদ্ঘাটন করেন।

তথ্যসূত্র

Tags:

অ্যামিনো অ্যাসিডআরএনএডিএনএমাইটোকন্ড্রিয়ারাইবোসোমসাইটোপ্লাজম

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

কম্পিউটারকৃষ্ণচন্দ্র রায়মক্কারক্তচ্যাটজিপিটিআহল-ই-হাদীসরাদারফোর্ড পরমাণু মডেলআহসান মঞ্জিলপ্রথম ওরহানবদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবাদের তালিকাতাপমাত্রাসোনালী ব্যাংক পিএলসিপ্রাকৃতিক সম্পদওপেকগৌতম বুদ্ধএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বুর্জ খলিফাপল্লী সঞ্চয় ব্যাংকলোকসভাজাযাকাল্লাহসূরা ইখলাসপাল সাম্রাজ্যবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীপলাশীর যুদ্ধখুলনা বিভাগএশিয়ানিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রপ্রীতি জিনতাউমাইয়া খিলাফতপরীমনিমহাস্থানগড়বাংলাদেশের সংস্কৃতিশুক্রাণুরামমোহন রায়অস্ট্রেলিয়াইহুদিতারাবীহদারাজবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিস্টকহোমবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাসূরা কাফিরুনরক্তশূন্যতাকানাডাফরাসি বিপ্লবের কারণহাবীবুল্লাহ্‌ বাহার কলেজদাজ্জালসংস্কৃত ভাষামৌলসমূহের ইলেকট্রন বিন্যাস (উপাত্ত পাতা)লামিনে ইয়ামালহিন্দুধর্মকুষ্টিয়া জেলাসরকারসিদরাতুল মুনতাহাসিঙ্গাপুরন্যাটোভারতের রাষ্ট্রপতিসৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতাতাজউদ্দীন আহমদদ্বৈত শাসন ব্যবস্থাদৈনিক প্রথম আলোপিংক ফ্লয়েডকিশোরগঞ্জ জেলাযিনাবিপাশা বসুধর্মতুরস্কলিওনেল মেসি২০২৪ কোপা আমেরিকা২০২৩–২৪ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগঅভিষেক শর্মা (পাঞ্জাবের ক্রিকেটার)মালয়েশিয়াকোকা-কোলারক্তের গ্রুপজোট-নিরপেক্ষ আন্দোলননেপোলিয়ন বোনাপার্টফজলুর রহমান খান🡆 More