আন্তোনিও ম্যানুয়েল দে অলিভেরা গুতেরেস, জিসিএল, জিসিসি (পর্তুগিজ উচ্চারণ: ; জন্ম: ৩০ এপ্রিল, ১৯৪৯) লিসবনে জন্মগ্রহণকারী প্রখ্যাত পর্তুগীজ রাজনীতিবিদ, পর্তুগালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও কূটনীতিবিদ। তিনি জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব । এরপূর্বে জুন, ২০০৫ থেকে ডিসেম্বর, ২০১৫ পর্যন্ত জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ছিলেন। অক্টোবর, ২০১৬ সালে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ তাকে জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা করে। তিনি বান কি মুনের স্থলাভিষিক্ত হন। ১৯৯৫ থেকে ২০০২ সাল মেয়াদে পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আন্তোনিও গুতেরেস। এছাড়াও সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনালের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
আন্তোনিও গুতেরেস | |
---|---|
জাতিসংঘের ৯ম মহাসচিব মনোনয়নপ্রাপ্ত | |
দায়িত্ব গ্রহণ ১ জানুয়ারি, ২০১৭ | |
যার উত্তরসূরী | বান কি মুন |
১০ম জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার | |
কাজের মেয়াদ ১৫ জুন, ২০০৫ – ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ | |
মহাসচিব | কফি আনান বান কি মুন |
পূর্বসূরী | রাড লাবার্স |
উত্তরসূরী | ফিলিপ্পো গ্রান্ডি |
১১৪তম পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২৮ অক্টোবর, ১৯৯৫ – ৬ এপ্রিল, ২০০২ | |
রাষ্ট্রপতি | মারিও সোয়ারেজ জর্জ স্যাম্পাইয়ো |
পূর্বসূরী | আনিবাল কাভাকো সিলভা |
উত্তরসূরী | হোসে ম্যানুয়েল বারোসো |
সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনালের সভাপতি | |
কাজের মেয়াদ নভেম্বর, ১৯৯৯ – জুন, ২০০৫ | |
পূর্বসূরী | পিয়ের মুরয় |
উত্তরসূরী | জর্জ পাপান্দ্রু |
সমাজতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব | |
কাজের মেয়াদ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯২ – ২০ জানুয়ারি, ২০০২ | |
রাষ্ট্রপতি | অ্যান্টোনিও দে আলমেইদা সান্তোস |
পূর্বসূরী | জর্জ স্যাম্পাইয়ো |
উত্তরসূরী | এডুয়ার্ডো ফেরো রড্রিগুয়েজ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | লিসবন, পর্তুগাল | ৩০ এপ্রিল ১৯৪৯
রাজনৈতিক দল | সোশ্যালিস্ট |
দাম্পত্য সঙ্গী | লুইসা গুইমারায়েজ ই মেলো (১৯৭২-১৯৯৮) ক্যাটারিনা ভাজ পিন্টো (২০০১-বর্তমান) |
সন্তান | পেড্রো মারিয়ানা |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | লিসবন বিশ্ববিদ্যালয় |
ধর্ম | রোমান ক্যাথলিক |
স্বাক্ষর | |
ওয়েবসাইট | Campaign website |
পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে গুতেরেস জন্মগ্রহণ করেন ও সেখানেই তার শৈশবকাল অতিবাহিত হয়। তার বাবা ‘ভার্জিলিও ডায়াস গুতেরেস’ ও মাতা ‘ইল্দা কান্ডিডা দে অলিভেইরা’।
স্বনামধন্য লিসিও দে ক্যামোসে (বর্তমানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়) পড়াশোনা করেন। সেখান থেকে ১৯৬৫ সালে স্নাতকধারী হন। দেশের সেরা ছাত্র হিসেবে প্রিমিও ন্যাশিওনাল দোস লিসেয়াস পদক জয় করেন। এরপর পদার্থবিজ্ঞান ও তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনার জন্য ইনস্টিটুটো সুপেরিয়র টেকনিকোতে অধ্যয়ন করেন। ১৯৭১ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর সিস্টেম তত্ত্ব এবং টেলিযোগাযোগ সংকেত বিষয়ে সহকারী অধ্যাপকরূপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মময় জীবন শুরু করেন। কিন্তু রাজনৈতিক জীবন শুরুর পূর্বে শিক্ষকতা পেশা ত্যাগ করেন।
১৯৭৪ সালে সমাজতান্ত্রিক পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। অল্পকিছুদিন পরই তিনি অধ্যাপনা পেশা পরিত্যাগ করেন। ফলশ্রুতিতে তিনি পূর্ণাঙ্গকালীন রাজনীতিবিদে পরিণত হন। ২৫ এপ্রিল, ১৯৭৪ তারিখে সংঘটিত কার্নেশন বিপ্লবের মাধ্যমে কাইতানো’র একনায়কতন্ত্রের সমাপ্তি ঘটে। এরফলে গুতেরেস সোশ্যালিস্ট পার্টির লিসবন অংশের সাথে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেন। দলীয় নেতৃত্বের অন্যতম হিসেবে গুতেরেস ১৯৭৪ ও ১৯৭৫ সালে শিল্পসচিব, ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত লিসবন ডেপুটি ও পরবর্তীতে কাস্তেলো ব্রাঙ্কো পৌর এলাকা থেকে পর্তুগিজ জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। এসময় অনেকগুলো সংসদীয় কমিশনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে জর্জ স্যাম্পাইয়ো’র স্থলাভিষিক্ত হয়ে সমাজতান্ত্রিক পার্টির দলীয় নেতৃত্বে ছিলেন।
১৯৯২ সালে তিনি সমাজতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব নিযুক্ত হন এবং আনিবাল কাভাকো সিলভা সরকারের প্রতিপক্ষীয় নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। সেপ্টেম্বর, ১৯৯২ সালে সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনালের সহ সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন।
১৯৯৫ সালে কাভাকো সিলভা মন্ত্রিসভার সময়কাল শেষ হবার পর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ নির্বাচনে সোশ্যালিস্ট পার্টি জয়লাভ করে ও তিনি পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী হন। তার পূর্বসূরীর তুলনায় পৃথক থেকে সমাজের সকলস্তরের মানুষের সাথে সংলাপ ও আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সরকার পরিচালনায় অগ্রসর হন। এরফলে তিনি তার সরকারের প্রথম বছরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। পর্তুগালে বাজেট ঘাটতি কমিয়ে অর্থনৈতিক কল্যাণের দিকে ধাবিত হয় ও নতুন শর্তারোপে নগদ অর্থ স্থানান্তরের কার্যক্রম গ্রহণ করে। এছাড়াও, লিসবনে এক্সপো ৯৮-এর আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন হয় যা পর্তুগালকে বিশ্বের কাছে আরও উন্মোচিত করে।
১৯৯৯ সালে তিনি পুনরায় প্রধানমন্ত্রীরূপে নির্বাচিত হন। জানুয়ারি থেকে জুলাই, ২০০০ পর্যন্ত ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিত্ব করেন তিনি। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে তার সরকার তেমন সফলতা পায়নি। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের পাশাপাশি অর্থনৈতিক মন্দা ও হিঞ্জ রাইবেইরো সেঁতু দুর্যোগের ফলে তার কর্তৃত্ব ও জনপ্রিয়তা বহুলাংশে খর্ব হয়।
ডিসেম্বর, ২০০১ সালে স্থানীয় নির্বাচনে সোশ্যালিস্ট পার্টির বিপর্যয়কর ফলাফলের প্রেক্ষিতে গুতেরেস পদত্যাগ করেন। তিনি বলেন যে, ‘আমি রাজনৈতিক দেওলিয়াত্বে নিপতিত দেশকে রক্ষার স্বার্থে পদত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছি।’ রাষ্ট্রপতি জর্জ স্যাম্পাইয়ো সংসদ ভেঙ্গে দেন ও নির্বাচন আহ্বান করেন। তৎকালীন সামাজিক নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী এডুয়ার্ডো ফেরো রড্রিগুয়েজ সোশ্যালিস্ট পার্টির দলীয় নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন। কিন্তু, ২০০২ সালের সাধারণ নির্বাচনে হোসে ম্যানুয়েল ডুরাও বারোসো’র সামাজিক গণতান্ত্রিক পার্টির কাছে পরাজিত হয়। পর্তুগিজ রাজনীতি থেকে গুতেরেস অবসর গ্রহণ করেন। ২০০৫ সাল পর্যন্ত সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনালের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
মে, ২০০৫ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ থেকে তাকে শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার নির্বাচিত করা হয়। হাইকমিশনার হিসেবে তিনি বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃত্ব দেন ও মেয়াদকাল শেষ হওয়া পর্যন্ত বিশ্বের ১২৬ দেশে কর্মরত ১০,০০০ কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করেন। পাশাপাশি ৬০ মিলিয়ন শরণার্থী, প্রত্যাবর্তনকারী, অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত লোক ও রাষ্ট্রবিহীন ব্যক্তিকে সহায়তায় এগিয়ে আসেন। সংগঠনে থাকাকালে সাংগঠনিক মৌলিক পুণঃর্গঠনের জন্য চিহ্নিত হয়ে আছেন। কর্মী ছাটাই ও প্রশাসনিক ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং ইউএনএইচসিআরের জরুরী সাড়া প্রদানের বিস্তৃতি ঘটানো অন্যতম।
ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ সালে এনপিআরের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি মন্তব্য করেন যে, ইরাকি শরণার্থীদের দুর্দশার বিষয়টি ১৯৪৮ সালের পর মধ্যপ্রাচ্যে সর্বাধিক শরণার্থী সঙ্কট ছিল। দূর্বলভাবে শরণার্থী সঙ্কটের বিষয়ে প্রচার করা হলেও মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রেও কম সমস্যার সৃষ্টি করেনি। হাইকমিশনার হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদকালে মূখ্যতঃ তিনি সিরীয় গৃহযুদ্ধের শিকার শরণার্থীদের কাছে আন্তর্জাতিক সাহায্যের বিষয়টি নিশ্চয়তা বিধান করেন। লেবানন ও জর্দানের ন্যায় দেশগুলোয় শরণার্থী সঙ্কট অস্তিত্বের প্রশ্ন ছিল। তাদের বেঁচে থাকার বিষয়ে অতিরিক্ত সাহায্যের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ তারিখে নিজ কার্যালয় ত্যাগ করেন। এরফলে প্রিন্স সদরুদ্দিন আগা খানের পর সংগঠনের ইতিহাসে হাইকমিশনার হিসেবে দ্বিতীয় দীর্ঘতম সময়কাল অতিবাহিত করেন তিনি।
২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ তারিখে পর্তুগালের প্রার্থী হিসেবে জাতিসংঘ মহাসচিব নির্বাচনের জন্য তিনি তার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
১৫-সদস্যবিশিষ্ট নিরাপত্তা কাউন্সিলের আনুষ্ঠানিক ভোটে তাকে জাতিসংঘের পরবর্তী মহাসচিব হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। ৫ অক্টোবর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ঘোষণা করে যে, অনানুষ্ঠানিক গোপন ব্যালটের মাধ্যমে গুতেরেসকে মনোনয়ন করা হয়েছে। তার পক্ষে ১৩টি ও ২টি বিপক্ষে ভোট আসে।
৬ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক অধ্যাদেশের মাধ্যমে গুতেরেসকে মনোনীত করা হয়। তবে, তার মহাসচিবরূপে নিযুক্তির বিষয়টি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অনুমোদিত হতে হবে। আশা করা যাচ্ছে যে, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ তারিখে তিনি নিজ কার্যালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
রোহিঙ্গাদের সর্বশেষ পরিস্থিতি দেখতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম ও আন্তর্জাতিক রেডক্রসের প্রেসিডেন্ট পিটার মরাসহ উচ্চপর্যায়ের পাঁচ ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশ সফর করেন। গুতেরেস, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমসহ বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য নিয়ে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন জাতিসংঘের মহাসচিব। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আন্তোনিও গুতেরেস সরাসরি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনে যান। দিনের দ্বিতীয় ভাগে জাতিসংঘের স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন।
গণতান্ত্রিক ভাবধারার অনুসারী ৫৭টি পৃথক দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীদের নিয়ে গড়া স্বাধীন অলাভজনক সংগঠন হিসেবে গঠিত মাদ্রিদ ক্লাবে ২০০২ সাল থেকে সদস্য তিনি।
নিজ মাতৃভাষা পর্তুগিজের পাশাপাশি ইংরেজি, স্পেনীয় ও ফরাসি ভাষায় তার দখল রয়েছে।
১৯৭২ সালে পোর্তোয় জন্মগ্রহণকারী লুইসা অ্যামেলিয়া গুইমারায়েজ ই মেলো’র সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। তাদের সংসারে পেড্রো গুইমারায়েজ ই মেলো গুতেরেস ও মারিয়ানা গুইমারায়েজ ই মেলো দে অলিভেইরা গুতেরেস নামের দুই সন্তান রয়েছে। ২৮ জানুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে লন্ডনের রয়্যাল ফ্রি হাসপাতালে ক্যান্সারে আক্রান্ত স্ত্রীর দেহাবসান ঘটে।
স্ত্রীর মৃত্যুর পর ২০০১ সালে ক্যাটরিনা মার্কুয়েস দে আলমেইডা ভাজ পিন্টোর সাথে দ্বিতীয়বারের মতো বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। ২০ মে, ১৯৯৮ তারিখে দ্বিতীয় সংসারের সৎপুত্র ফ্রান্সিসকো ভাজ পিন্টো দা কস্তা রামোসের নতুন নামকরণ করেন হোসে কার্লোস দা কস্তা রামোস।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article আন্তোনিও গুতেরেস, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.