শিশু (ইংরেজি: Child) ভূমিষ্ঠকালীন ব্যক্তির প্রাথমিক রূপ। যে এখনও যৌবনপ্রাপ্ত হয় নাই কিংবা বয়ঃসন্ধিক্ষণে প্রবেশ করেনি সে শিশু হিসেবে সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে চিহ্নিত হয়ে আছে। কখনো কখনো অনাগত সন্তান অর্থাৎ যে সন্তান এখনো ভূমিষ্ঠ হয় নাই বা মায়ের গর্ভে অবস্থান করছে সেও শিশুরূপে পরিগণিত হয়ে থাকে। একজন ব্যক্তি তার পিতা-মাতার কাছে সবসময়ই সন্তান বা শিশু হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকেন। তবে, নির্দিষ্ট সময়, স্থান অথবা ঘটনার প্রেক্ষিতে শিশুসুলভ আচরণ বা ষাট বছরের শিশু শব্দগুচ্ছেরও প্রয়োগ হয়ে থাকে। জীববিজ্ঞানের ভাষায় - মনুষ্য সন্তানের জন্ম এবং বয়ঃসন্ধির মধ্যবর্তী পর্যায়ের রূপ হচ্ছে শিশু। চিকিৎসাশাস্ত্রের সংজ্ঞানুযায়ী মায়ের মাতৃগর্ভে ভ্রুণ আকারে অ-ভূমিষ্ঠ সন্তানই শিশু।
বৈবাহিক জীবনে কোন ব্যক্তির যদি পূর্বের সংসারে সন্তান থাকে তাহলে নুতন সংসারে ভূমিষ্ঠ শিশুটি একে-অপরের সৎভাই বা সৎবোন হিসেবে আখ্যায়িত হয়। বাবা-মা উভয়ের মৃত্যুজনিত কারণে শিশু অনাথ হিসেবে সমাজে বেড়ে উঠে।
শিক্ষার সুযোগ লাভ করা শিশুর অন্যতম মৌলিক অধিকার। অধিকাংশ দেশেই সামাজিক দায়-দায়িত্বের অংশরূপে এবং অভিভাবকের দিকনির্দেশনায় কিংবা রাষ্ট্রের বাধ্যতামূলক শিক্ষানীতির আলোকে শিশুরা বিদ্যালয় গমন করে। এছাড়াও, ক্ষুদে শিশুরা কিন্ডারগার্টেনের প্লে-গ্রুপে আনন্দ ও খেলার ছলে শিক্ষাগ্রহণ করে শৈশবকালীন প্রাথমিক শিক্ষাকে আলোকিত ও আনন্দময় করে তুলে। কিন্তু অনুন্নত দেশ বা পশ্চাদমূখী দেশে মাঝেমাঝে কিংবা প্রায়শঃই মাতা-পিতার সাথে শ্রমকার্যে অংশগ্রহণ করে অর্থ উপার্জনে জড়িয়ে পড়তে হয়। অথবা যুদ্ধে অংশ নিতে হয়।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে চীনা সরকার কিছু দম্পতির উপর এক-সন্তান নীতির প্রচলন ও জোরপূর্বক প্রয়োগ ঘটায়। চীনা কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে পরিবার পরিকল্পনা নীতি নামে এটি জনসমক্ষে প্রচার করে। এ নীতি গ্রহণের ফলে চীনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে এবং ব্যাপক সাফল্য ও সাড়া পড়ে যায়। কিন্তু এ নীতির আওতায় জোরপূর্বক গর্ভপাত ও বন্ধ্যাত্বকরণের ফলে ব্যাপক সমালোচনারও জন্ম দেয় সরকার। অপরিকল্পিতভাবে গর্ভধারণের ফলে শাস্তিস্বরূপ জরিমানাসহ জোরপূর্বক গর্ভপাত ও বন্ধ্যাত্বকরণের পাশাপাশি ১০ বছরের জন্যে কারাগারে প্রেরণের জন্যে আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়াও কোন কারণে শিশু জন্মগ্রহণ করলে তার জীবিতকাল পর্যন্ত প্রতিদিনের জন্যে জরিমানাও ধার্য্য করা হয়।
সরকারীভাবে শহুরে বসবাসরত বিবাহিত দম্পতির জন্য একাধিক শিশু জন্মের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। দম্পতিকে একটিমাত্র শিশু জন্মানোর জন্য আইন প্রণয়ন করা হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ করে জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, গ্রাম্য দম্পতি এর ব্যতিক্রম রয়েছে।
ষোড়শ শতকের শুরুতে ইংল্যান্ডে মানুষের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৩৫ বছর। এর প্রধান কারণ ছিল জন্মগ্রহণকারী দুই-তৃতীয়াংশ শিশু ৪ বছর বয়সের পূর্বে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তো। কিন্তু শিল্প বিপ্লবের সময়কালে অত্যন্ত নাটকীয়ভাবে শিশুদের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছিল।
জনসংখ্যার সাথে জড়িত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ জানান, শিশু মৃত্যুর হার ১৯৯০-এর দশক থেকে বেশ কমতে শুরু করে। শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই ৫ বছরের কমবয়সী শিশু মৃত্যু ৪২% কমে যায়। অন্যদিকে সার্বিয়া এবং মালয়েশিয়ায় এ হার ছিল প্রায় ৭০%।
দারিদ্র-পীড়িত বাংলাদেশে অপুষ্টি স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। অপুষ্টিজনিত কারণে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হিসেবে পরিচিত শিশুরা বিশ্ব ব্যাংকের জরীপে বিশ্বে শীর্ষস্থান দখল করেছে যা মোটেই কাঙ্ক্ষিত নয়। মোট জনগোষ্ঠীর ২৬% অপুষ্টিতে ভুগছে। ৪৬% শিশু মাঝারি থেকে গভীরতর পর্যায়ে ওজনজনিত সমস্যায় ভুগছে। ৫ বছর বয়সের পূর্বেই ৪৩% শিশু মারা যায়। প্রতি পাঁচ শিশুর একজন ভিটামিন এ এবং প্রতি দু'জনের একজন রক্তস্বল্পতাজনিত রোগে ভুগছে।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article শিশু, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.