মার্সেল প্রুস্ত্‌

ভ্যালেন্টাইন লুই জর্জেস ইউজিন মার্সেল প্রুস্ত্‌ (/pruːst/; ফরাসি : ; ১০ জুলাই ১৮৭১ – ১৮ নভেম্বর ১৯২২), মার্সেল প্রুস্ত্‌ নামে পরিচিত, একজন ফরাসি ঔপন্যাসিক, সমালোচক ও লেখক ছিলেন যিনি তার সেরা মহাকাব্য À la recherche du temps perdu (ইন সার্চ অব লস্ট টাইম; যার মূল অর্থ অতীতের জিনিসের স্মরণ করা) উপন্যাসের জন্য পরিচিত। ১৯১৩ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে সাত খণ্ডে এটি প্রকাশিত হয়। সমালোচক এবং লেখকদের দ্বারা তিনি ২০ শতকের সবচেয়ে প্রভাবশালী লেখকদের একজন হিসাবে বিবেচিত হন।

মার্সেল প্রুস্ত্‌
মার্সেল প্রুস্ত্‌
১৯০০ সালে প্রুস্ত্‌
জন্ম
ভ্যালেন্টাইন লুই জর্জেস ইউজিন মার্সেল প্রুস্ত্‌

(১৮৭১-০৭-১০)১০ জুলাই ১৮৭১
উতেইল, ফ্রান্স
মৃত্যু১৮ নভেম্বর ১৯২২(1922-11-18) (বয়স ৫১)
প্যারিস, ফ্রান্স
পেশাঔপন্যাসিক, প্রবন্ধকার, সমালোচক
উল্লেখযোগ্য কর্ম
ইন সার্চ অব লস্ট টাইম
পিতা-মাতাআদ্রিয়েন আছি প্রুস্ত্‌
জেনি ক্লেমেন্স ভিল
স্বাক্ষর
মার্সেল প্রুস্ত্‌

পটভূমি

প্রুস্ত্‌ প্যারিসের উতেইলে ১০ই জুলাই ১৮৭১ সালে তার চাচার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন, ফ্রাঙ্কফুর্ট চুক্তির ফলে ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধের সমাপ্তির দুই মাস পরে। তিনি প্যারিস কমিউন ঘিরে যে সহিংসতার সৃষ্টি হয়েছিল সে সময় জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এবং তার শৈশব ফরাসি তৃতীয় প্রজাতন্ত্র একীকরণের সাথে সম্পর্কিত। তার ইন সার্চ অব লস্ট টাইম মহাকাব্যে তিনি বিশাল পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, বিশেষ করে অভিজাতদের পতন এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উত্থান নিয়ে, যা তৃতীয় প্রজাতন্ত্র এবং ফিন দে সিসেল এর সময় ফ্রান্সে ঘটেছে।

প্রুস্ত্‌ এর বাবা, অ্যাড্রিয়েন প্রুস্ত্‌ ছিলেন একজন বিশিষ্ট রোগ বিশেষজ্ঞ এবং মহামারী বিশেষজ্ঞ, যিনি ইউরোপ ও এশিয়াতে কলেরা নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি ওষুধ এবং স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত অনেক নিবন্ধ এবং বই লিখেছেন। প্রুস্ত্‌ এর মা, জেনি ক্লেমেন্স ভিল ছিলেন আল্‌জাস থেকে আগত একটি ধনী ইহুদি পরিবারের মেয়ে। একজন শিক্ষিত ও সুপণ্ডিত মহিলা, তিনি তার চিঠিতে হাস্যরসের একটি উন্নততর জ্ঞান প্রদর্শন করেছিলেন, এবং তার পুত্রের জন রুস্কিন -এর অনুবাদে সহায়তার জন্য তার ইংরেজির জ্ঞান যথেষ্ট ছিল।। প্রুস্ত্‌ তার বাবার ক্যাথলিক বিশ্বাসে বেড়ে উঠেছিলেন। তিনি খ্রিস্ট ধর্মে দীক্ষা নিয়েছিলেন এবং পরে একজন ক্যাথলিক হিসাবে নিশ্চিত হন, কিন্তু তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সে বিশ্বাসের অনুশীলন করেননি। তিনি পরে একজন নাস্তিক হয়ে ওঠেন এবং রহস্যময় কিছু ছিলেন।

নয় বছর বয়সে প্রুস্ত্‌ এর প্রথম গুরুতর হাঁপানি রোগ হয়েছিল, এবং তারপরে তিনি অসুস্থ সন্তান হিসাবে বিবেচিত হন। প্রুস্ত্‌ ইলিয়ার্স গ্রামে লম্বা ছুটি কাটান। উতেইলে তার চাচার বাড়ি পাশাপাশি এই গ্রামটি মিলিত হয়ে কম্ব্রে নামক কাল্পনিক শহরটির মডেল হয়ে উঠে, যেখানে ইন সার্চ অব লস্ট টাইম"-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু দৃশ্য স্থান করে নিয়েছে। (প্রুস্ত্‌ শতবার্ষিক উৎসবে ইলিয়ার্স জায়গাটির নাম ১৯৭১ সালে নতুন করে রাখা হয় ইলিয়ার্স-কম্ব্রে।)

১৯৮২ সালে, এগারো বছর বয়সে, প্রুস্ত্‌ ল্যসি কনডর্সেট এর একজন ছাত্র হয়ে ওঠেন, কিন্তু তার অসুস্থতার কারণে তার শিক্ষা বিঘ্নিত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তিনি সাহিত্যে শ্রেষ্ঠ ছিলেন, তার শেষ বর্ষে তিনি একটি পুরস্কার অর্জন করেন। তার সহপাঠীদের ধন্যবাদ জানান, তিনি কিছু উচ্চ বুর্জোয়াদের সান্নিধ্যে তাদের বৈঠকখানায় প্রবেশ করতে সক্ষম হন এবং যা তাকে "ইন সার্চ অব লস্ট টাইম" -এর জন্য প্রচুর পরিমাণে তথ্যবহুল উপাদান সরবরাহ করে।

মার্সেল প্রুস্ত্‌ 
মার্সেল প্রুস্ত্‌ (বসা), রবার্ট ডি ফিলার্স (বামৈ) এবংলুসিয়েন দাউদেট (ডানে), ১৮৯৪

তার দুর্বল স্বাস্থ্য সত্ত্বেও, প্রুস্ত্‌ অরলিয়ন্সে কলিগনি ব্যারাকগুলিতে অবস্থানরত ফ্রেঞ্চ সেনাবাহিনীতে এক বছর (১৮৮৯ -৯০) চাকরি করেন, এই একটি অভিজ্ঞতা তার উপন্যাসের ৩য় খন্ড দ্য গুয়ের্মান্তেস ওয়ে এ একটি দীর্ঘ পর্ব প্রদান করেছিল। একজন যুবক হিসেবে, প্রুস্ত্‌ ছিলেন একজন সমঝদার ও সামাজিক লতা, লেখক হিসাবে যার আকাঙ্ক্ষা স্ব শৃঙ্খলার অভাবে ব্যাহত হয়েছিল। এই সময়ের থেকে তার খ্যাতি, একজন স্নোব এবং একজন অপেশাদার হিসাবে ১৯১৩ সালে তার মহাকাব্যের প্রথম খন্ড "সোয়ানস ওয়ে লেখার ক্ষেত্রে তার পরবর্তী ভুগানিতে অবদান রেখেছিল। সেই সময়ে তিনি মি স্ট্রাসের স্যালনে যোগ দেন, যিনি হচ্ছেন জর্জেট বিজেস এর বিধবা এবং প্রুস্ত্‌ এর ছোটবেলার বন্ধু জ্যাকুইস বিজেটের মা। of Madeleine Lemaire and of Mme Arman de Caillavet, one of the models for Madame Verdurin, and mother of his friend Gaston Arman de Caillavet, with whose fiancée (Jeanne Pouquet) he was in love. মমে আরমান ডি কিল্লাভেটের মাধ্যমে, তিনি তার প্রেমিক আনাতোল ফ্রঁসের সাথে পরিচিত হন।

প্রুস্ত্‌ তার মায়ের স্নেহের ছিলেন। তার বাবাকে খুশি করার জন্য, যিনি জোর দিয়েছিলেন যে তিনি কর্মজীবনের দিকে এগিয়ে যাবেন, ১৮৯৬ সালের গ্রীষ্মে প্রুস্ত্‌ বিবলিওথেক মাজারাইনে স্বেচ্ছাসেবী পদ লাভ করেছিলেন। যথেষ্ট প্রচেষ্টার পর, তিনি অসুস্থতার ছুটি গ্রহণ করেছিলেন যা বহু বছর ধরে বর্ধিত হয়েছিল যতক্ষণ না তিনি পদত্যাগ করেছিলেন বলে মনে করা হয়। তিনি তার চাকরিতে কখনোই কাজ করেননি এবং তিনি তার পিতামাতার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে সরে যাননি উভয়ের মৃত্যুর পর পর্যন্ত।

তাঁর জীবন ও পারিবারিক বৃত্ত ১৯০০ থেকে ১৯০৫ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছিল। ১৯০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রুস্ত্‌ এর ভাই রবার্ট প্রুস্ত্‌ বিয়ে করেন এবং পারিবারিক বাড়ি ছেড়ে চলে যান। একই বছরের নভেম্বরে তাঁর পিতা মারা যান। অবশেষে, এবং সবচেয়ে মারাত্মকভাবে, প্রুস্ত্‌ এর মা ১৯০৫ সালের সেপ্টেম্বরে মারা যান। তিনি মৃত্যুর সময় তার জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমান উত্তরাধিকার রেখে যান। এই সময় জুড়ে তার স্বাস্থ্যের অবনতি অব্যাহত থাকে।

প্রুস্ত্‌ তার জীবনের শেষ তিন বছর বেশিরভাগই তার শোবার ঘরে সীমাবদ্ধ ছিলেন, দিনে ঘুমাতেন এবং রাতে তার উপন্যাস সম্পূর্ণ করার জন্য কাজ করতেন। ১৯২২ সালে তিনি নিউমোনিয়া ও ফুসফুস ফুলে মারা যান। তাকে প্যারিসের সিমতিয়ের দু পের লাশেজে দাফন করা হয়েছিল।

প্রাথমিক লেখা

টেমপ্লেট:French literature sidebar প্রুস্ত্‌ অল্প বয়সেই লেখালেখি এবং প্রকাশনায় জড়িত ছিলেন। সাহিত্য ম্যাগাজিনের সাথেও তিনি যুক্ত ছিলেন, যখন তিনি স্কুলে পড়তেন, ১৮৯০ থেকে ১৮৯১ সাল পর্যন্ত তিনি "লে মেনসুয়েল" পত্রিকার একটি নিয়মিত সমাজ কলাম প্রকাশ করেছিলেন। ১৮৯২ সালে তিনি "লে ব্যংকেট" নামে একটি সাহিত্যিক পর্যালোচনা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। (ফরাসি শিরোনাম ছিলো প্লাটো'স সিমপোসিয়াম), এবং পরের কয়েক বছর জুড়ে প্রুস্ত্‌ এই জার্নালে এবং মর্যাদাপূর্ণ "লা রেভু ব্ল্যাঞ্চে" তে নিয়মিত ছোট টুকরা প্রকাশ করেছিলেন।

১৮৯৬ সালে লেস প্লাইসিয়র এট লেস জার্স, এই প্রথম দিকের টুকরাগুলির একটি সংকলন প্রকাশিত হয়েছিল। বইটিতে আনাতোল ফ্রঁসের একটি মুখবন্ধ, এবং মমে লেমিরের আঁকা ছবি ছিল, যার স্যালনে প্রুস্ত্‌ ঘন ঘন অতিথি ছিলেন এবং প্রুস্ত্‌ এর মমে ভেরদুরিন চরিত্রটিকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। ১৮৯৪ সালের গ্রীষ্মে এবং ১৯৯৫ সালে তিন সপ্তাহের জন্য তিনি তাকে এবং রেইনাল্ডো হানকে তার চ্যালেউ দে রেভিয়েলনে আমন্ত্রণ জানান। এই বইটি এত সুন্দরভাবে তৈরি হয়েছিল যে এটির এই আকারের বইয়ের স্বাভাবিক মূল্যের দ্বিগুণ মূল্য ছিল।

সেই বছর প্রুস্ত্‌ একটি উপন্যাসে কাজ শুরু করেছিলেন, যা অবশেষে ১৯৫২ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং তার মরণোত্তর সম্পাদক কর্তৃক এটি জিন সান্তেউইল শিরোনামে প্রকাশিত হয়। "ইন সার্চ অব লস্ট টাইম" এর মধ্যে বেশিরভাগ থিমগুলি পরে বিকশিত হয়েছে এই অসম্পূর্ণ কাজটি থেকে তাদের প্রথম সংকলনটি খুঁজে পেয়ে, তার মধ্যে রয়েছে স্মৃতির ধাঁধা" এবং " প্রতিফলনের প্রয়োজনীয়তা"; ইন সার্চ অব লস্ট টাইম এর বিভিন্ন খন্ড "জিন সান্তেউইল" এর প্রথম খসড়াটিতে পড়তে পারা যায়। "জিন সান্তেউইল" -এ পিতামাতার প্রতিকৃতি বেশ প্রখর, প্রুস্ত্‌ এর এই সেরা শিল্পকর্মে "লেস প্লাইসিয়র এট লেস জার্স" এর দুর্বল অভ্যর্থনা এবং খন্ডটির সমাধান নিয়ে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলি অনুসরণ করে, ১৮৯৭ সালে প্রুস্ত্‌ ধীরে ধীরে "জিন সান্টিউইল" পরিত্যাগ করেছিলেন এবং ১৮৯৯ সালের মধ্যে এটির সম্পূর্ণভাবে কাজ বন্ধ করেছিলেন।

১৮৯৫ সাল থেকে শুরু করে প্রুস্ত্‌ কিছু বছর টমাস কার্লাইল, রালফ ওয়াল্ডো এমারসন, এবং জন রুস্কিন এর বই পড়েন। এই পাঠের মাধ্যমে, তিনি শিল্পে তার তত্ত্ব এবং সমাজে শিল্পীর ভূমিকা পরিমার্জন করেন। Also, in Le Temps retrouvé Proust's universal protagonist recalls having translated Ruskin's Sesame and Lilies. শিল্পীর দায়িত্ব প্রকৃতির চেহারার মুখোমুখি হওয়া, তার সারাংশকে নিরসন করা এবং শিল্পকর্মের পুনরাবৃত্তি বা ব্যাখ্যা করা। রুশকিনের শৈল্পিক উৎপাদনের দৃশ্যটি এই রকম ধারণার কেন্দ্রস্থল ছিল এবং রুসকিনের কাজগুলি প্রুস্ত্‌ এর কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে তিনি রুশকিনের বইগুলির কয়েকটি "হৃদয়" দিয়ে জানার চেষ্টা করেন, এগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্য সেভেন ল্যাম্বস অব আর্কিটেকচার, দ্য বাইবেল অব আমিয়েন্স, এবং প্রায়েতেরিতা

রুশকিনের দুটি কাজ ফরাসি ভাষায় অনুবাদ করার জন্য প্রুস্ত্‌ মনস্থ করেছিলেন, কিন্তু ইংরেজিতে অদক্ষতার জন্য তিনি ব্যাহত হন। এটি পূরন করতে তিনি তার অনুবাদকে একটি দলগত ব্যাপারে নিয়ে গেলেন: তার মায়ের দ্বারা স্কেচ করান, খসড়াটি প্রথমে প্রুস্ত্‌ দ্বারা সংশোধন করা হয়, তারপর তার বন্ধুর ইংরেজ কাজিন মারি নর্ডিংঙ্গার দ্বারা এবং কিছু সময় তার প্রেমিক রেয়নাল্ডো হ্যান দ্বারা তারপর প্রুস্ত্‌ নিজে আরো মার্জিত করতেন। একজন সম্পাদক তার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশ্ন করলে, প্রুস্ত্‌ প্রতিক্রিয়া জানান, "আমি ইংরেজি জানি বলে দাবী করি না; আমি রাশকিনকে জানি বলে দাবি করি"। প্রুস্ত্‌ এর কিছু বর্ধিত অংশ নিয়ে "দ্য বাইবেল অফ অ্যামিয়েন্স", ১৯০৪ সালে ফরাসিতে প্রকাশিত হয়। অনুবাদ এবং ভূমিকা উভয়ই ভালভাবে পর্যালোচনা করা হয়; হেনরি বার্গসন প্রুস্ত্‌ এর ভূমিকা "রুশকিনের মনোবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান" বলে অভিহিত করেন এবং অনুবাদটির অনুরূপের প্রশংসা করেন। এটি প্রকাশনার সময়, প্রুস্ত্‌ ইতিমধ্যে রুশকিনের "সিসেমি এন্ড লিলি" অনুবাদ করছিলেন, যা তিনি ১৯০৫ সালের জুন মাসে তার মায়ের মৃত্যুর ঠিক আগে সম্পন্ন করেছিলেন এবং এটি ১৯০৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। সাহিত্যিক ইতিহাসবিদ এবং সমালোচকরা নিশ্চিত করেছেন যে, রুশকিন ছাড়াও, প্রুস্ত্‌ এর প্রধান সাহিত্যিক প্রভাবগুলিতে সেন্ট-সাইমন, মিশেল দ্য মন্‌টেইন, স্টেন্ডহাল, ফ্লাবার্ট, জর্জ ইলিয়ট, ফিওদোর দস্তয়েভ্‌স্কি এবং ল্যেভ তল্‌স্তোয় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

লেখক হিসেবে প্রুস্ত্‌ এর বিকাশের জন্য ১৯০৮ সাল একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর ছিল। বছরের প্রথম ভাগে তিনি অন্যান্য লেখকদের বিভিন্ন জার্নাল অন্য গ্রন্থকার বা শিল্পীর অনুকরণে রচিত সাহিত্য বা শিল্প প্রকাশ করেন। অনুকরনের এই অনুশীলন তিনি তার নিজস্ব শৈলীতে প্রয়োগ করেন। উপরন্তু, বছরের বসন্ত এবং গ্রীষ্মে প্রুস্ত্‌ এর লেখার বিভিন্ন বিভিন্ন অংশে কাজ শুরু হয়েছিল যেটির শিরোনাম হয় কনট্রে সেইনতে-বিউভে। প্রোউস্ট তার বন্ধুকে একটি চিঠিতে তার প্রচেষ্টার বর্ণনা দিয়েছেন: "আমার অগ্রগতি রয়েছে: আভিজাত্যের প্রতি বিশ্লেষনে, একটি পার্সিয়ান উপন্যাসে, সেইন্তে-বিউভে এবং ফ্লাউবার্টেন এর উপর একটি প্রবন্ধে, একজন নারীর প্রবন্ধে, বালকপ্রীতি উপর একটি প্রবন্ধে (প্রকাশ করা সোজা নয়), দাগযুক্ত কাচের জানালার উপর একটি বিশ্লেষনে, সমাধি নিয়ে একটি বিশ্লেষনে, একটি উপন্যাসের বিশ্লেষনে"।

এই অসাধারণ টুকরোগুলো থেকে প্রুস্ত্‌ একটি উপন্যাস লিখতে শুরু করেছিলেন, যা নিয়ে তিনি এই সময়ের মধ্যে ক্রমাগতভাবে কাজ করেছিলেন। কাজটির মোটামুটি রূপরেখা প্রথম-ব্যক্তি বর্ণনাকারীকে কেন্দ্র করে, ঘুমাতে অক্ষম, সকালে তার কাছে আসার জন্য যিনি রাতের বেলা তার মায়ের জন্য সন্তানের মতো অপেক্ষার কথা স্মরণ করেন। উপন্যাসটি সান্তে-বিউভের একটি সমালোচনা পরীক্ষা এবং তার তত্ত্বের খণ্ডন দিয়ে শেষ করা উচিত ছিল যেখানে কিনা জীবনীটিই কোনও শিল্পীর কাজ বোঝার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ছিল।। অসম্পূর্ণ পাণ্ডুলিপি নোটবুকগুলির মধ্যে উপস্থিত রয়েছে অনেকগুলি উপাদান যা "অনুসন্ধান" অংশগুলির সাথে সম্পর্কিত, বিশেষ করে, "কম্ব্রে" এবং "সোয়ান ইন লাভ" খন্ড ১ এর অনুচ্ছেদে এবং খন্ড ৭ এর অনুচ্ছেদের শেষ অংশে। একজন প্রকাশককে খুঁজে বের করার সাথে সাথে তার ধীরে ধীরে উপন্যাসের পরিবর্তিত ধারণার সাথে সমস্যা, প্রুস্ত্‌ কে এমন একটি ভিন্ন প্রকল্পে স্থানান্তর করতে পরিচালিত করেছিল যা একই থিম এবং উপাদানের মধ্যেই ছিল। ১৯১০ সাল নাগাদ তিনি 'এ লা রিচার্চে ডু টেম্পস পারদু' এ কাজ করেন।

ইন সার্চ অব লস্ট টাইম

১৯০৯ সালে প্রুস্ত্‌ ৩৮ বছর বয়সে শুরু করেছিলেন, "এ লা রিচার্চে ডু টেম্পস পারদু" সম্পাদনা, যেটির প্রায় ৩,২০০ পৃষ্ঠা (প্রায় আধুনিক গ্রন্থাগারের অনুবাদে প্রায় ৪,৩০০) এবং দুই হাজারেরও বেশি চরিত্র রয়েছে। গ্রাহাম গ্রিন প্রুস্ত্‌ কে "২০ শতকের সর্বশ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক" বলে অভিহিত করেছেন এবং উইলিয়াম সমারসেট মম্‌ উপন্যাসটিকে "এখনো পর্যন্ত সর্বশ্রেষ্ঠ কাল্পনিক" বলে অভিহিত করেছেন। অঁদ্রে জিদ প্রাথমিকভাবে তার কাজকে নিয়ে বেশি কিছু উল্লেখ করেননি। প্রথম খন্ডটি প্রকাশক গ্যালিমার্ড কর্তৃক গাইডের পরামর্শে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। পরে তিনি প্রুস্ত্‌ কে অস্বীকার করার জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন এবং এটা তার জীবনের সবচেয়ে গুরুতর ভুল বলে উল্লেখ করেন।

শেষের খণ্ডের খসড়া এবং প্রমাণগুলির পুনর্বিবেচনা সম্পূর্ণ করার আগে প্রুস্ত্‌ মারা যান, শেষ তিনটি তার মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয় এবং তার ভাই রবার্ট প্রুস্ত্‌ কর্তৃক সম্পাদিত হয়েছিল।

বইটি সি. কে. স্কট মন্ক্রিফ, ১৯২২ থেকে ১৯৩১ এর মধ্যে "রিমেম্বারেন্স অব থিংস পাস্ট" শীর্ষক ইংরেজি শিরোনামের অধীনে অনুবাদ করেন। স্কট মন্ক্রিফ প্রথম থেকে ছয় খন্ড পর্যন্ত অনুবাদ করেন এবং সপ্তম খন্ডটি অনুবাদ সম্পূর্ণ করার পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। এই শেষ খন্ডটি বিভিন্ন সময়ে অন্যান্য অনুবাদকদের দ্বারা সম্পূর্ণ করা হয়। যখন স্কট মন্ক্রিফের অনুবাদটি পরে সংশোধন করা হয়েছিল (প্রথমে টেরেন্স কিলমার্টিন, তারপরে ডি. জে. এনরাইট দ্বারা) উপন্যাসের শিরোনামটি আরও আক্ষরিক রূপে ইন সার্চ অব লস্ট টাইম শিরোনামে পরিবর্তিত হয়েছিল।

১৯৯৫ সালে পেঙ্গুইন প্রকাশনী সর্বশেষতম, সর্বাধিক সম্পূর্ণ এবং স্বতন্ত্র ফরাসি পাঠ্যের উপর ভিত্তি করে সম্পাদক ক্রিস্টোফার প্রিন্ডারগাস্ট এবং তিনটি দেশের সাত অনুবাদক বইটির একটি নতুন অনুবাদ করেছিলেন। প্রুস্ত্‌ এর সাতটি সহ ছয়টি খন্ড ব্রিটেনে প্রকাশিত হয় ২০০২ সালে অ্যালেন লেন ইম্প্রিন্টের অধীনে।

ব্যক্তিগত জীবন

প্রুস্ত্‌ একজন সমকামী বলে পরিচিত, এবং তার যৌনতা এবং পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্ক প্রায়ই তার জীবনীকারদের দ্বারা আলোচিত হয়। যদিও তার বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক সেলেস্ট অ্যালবার্ট তার স্মৃতিতে প্রুস্ত্‌ এর যৌনতার এই দৃষ্টিভঙ্গিকে অস্বীকার করেছেন, তার এই অস্বীকার প্রুস্ত্‌ এর বন্ধুদের এবং সমসাময়িকদের বিবৃতির বিপরীতে চলছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন তার সহকর্মী লেখক অঁদ্রে জিদ পাশাপাশি তার খানসামা আর্নেস্ট এ. ফর্সগ্রেন।

প্রুস্ত্‌ খোলাখুলিভাবে তার সমকামীতা নিয়ে কিছু বলে যাননি, যদিও তার পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা জানত বা সন্দেহ করতো এটি। ১৮৯৭ সালে, তিনি লেখক জিন লরেইনের সাথে দ্বন্দ্বও করেছিলেন, যিনি জনসাধারণের সামনে লুসিয়ান দাউদেটের সাথে সম্পর্কের প্রকৃতির প্রশ্ন করেছিলেন। প্রুস্ত্‌ এর নিজের জনসাধারণের কাছে অস্বীকার, সুরকার রেয়নাল্ডো হ্যানের সাথে তার ভাবপ্রবণ সম্পর্ক এবং তার সহকর্মী ও ড্রাইভার আলফ্রেড অ্যাগোস্টিনেলির প্রতি তার মোহাচ্ছন্নতা, ভালভাবেই নথিভুক্ত হয়েছে। ১৯১৮ সালের ১১ই জানুয়ারি রাতে, অ্যালবার্ট লে কুজিয়াত পরিচালিত একটি পুরুষের পতিতালয়ে অভিযানে পুলিশের দ্বারা চিহ্নিত ব্যক্তিদের একজন ছিলেন প্রুস্ত্‌। প্রুস্ত্‌ এর বন্ধু, কবি পল মরান্ড, খোলাখুলিভাবে পুরুষ পতিতালয়ে যাওয়া সম্পর্কে প্রুস্ত্‌ এর পিছে লেগেছিলেন। তিনি তার সাময়িক পত্রিকায়, প্রুস্ত্‌ এবং গাইডকে উল্লেখ করে লিখেন “ক্রমাগত শিকার, তাদের সাহিত্য দ্বারা তৃপ্ত নয় … অনন্ত শিকারীরা, অক্লান্ত যৌন দুঃসাহসী। ""

প্রুস্ত্‌ এর যৌনতা সম্পর্কে তাঁর লেখার সঠিক প্রভাব বিতর্কের বিষয়। যাইহোক, "ইন সার্চ অব লস্ট টাইম" সমকামীতার বিষয়ে দৈর্ঘ্য নিয়ে আলোচনা করে এবং বেশ কয়েকটি প্রধান চরিত্র নিয়ে আলোচনা করে, উভয় পুরুষ এবং মহিলা, যারা সমকামী বা উভকামী হয়: ব্যারন ডি চার্লোস, রর্বাট ডি সেইন্ট-লুপ, এবং অ্যালবার্টাইন সিমোনেট। সমকামীতা লেস প্লাইির্সস এট লেস জার্স এবং তার অসম্পূর্ণ উপন্যাস জিন সান্তেউইল এর একটি থিম হিসাবেও প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রুস্ত্‌ তার মায়ের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির অনেক উত্তরাধিকার পেয়েছিলেন, যা ফরাসি তৃতীয় প্রজাতন্ত্র এবং ফরাসি রাজনীতির উদার কেন্দ্রের কাছাকাছি ছিল। ১৮৯২ সালের "লি ব্যংকেট" নিবন্ধে "এল ইর্রিলিজিয়ন ডি'আতাত" শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে, প্রুস্ত্‌ সন্ন্যাসীদের বহিষ্কারের মতো চরম বিরোধী ধর্মীয় পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছিলেন, "কেউ হয়তো অবাক হবেন যে, ধর্মের নেতিবাচকতা তার ভেতর একই ধর্মান্ধতা, অক্ষমা, এবং নিপীড়নের মত অত্যাচারের কারণ হওয়া উচিত।" তিনি যুক্তি দেন যে সমাজতন্ত্র চার্চের চেয়ে সমাজকে বড় হুমকির মুখে ফেলেছে। ১৯০৪ সালে "লা মর্ট ডেস ক্যাথিড্রালস" প্রবন্ধটিতে আবার বিষয়টির প্রতিফলন করে, প্রুস্ত্‌ লিখেছিলেন যে, ফরাসী সংস্কৃতির ভাগ্য নিয়ে তার ভয় হ্রাস পেয়েছিল যখন জার্মান আগ্রাসনের মুখে পাদ্রি-বিদ্বেষী ডেপুটিরাও যখন পাদ্রিদের সাথে জোট করেছিল। প্রুস্ত্‌ সবসময়ে পুরোহিতদের দ্বারা আশ্রিত ধর্মান্ধ ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি সর্বদা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কিন্তু বিশ্বাস করতেন যে সর্বাধিক আলোকিত যাজকরা সর্বাধিক আলোকিত ধর্মনিরপেক্ষতার মতোই প্রগতিশীল হতে পারে, এবং যা উভয়ই "উন্নত উদার প্রজাতন্ত্রের" কারণ হিসেবে পরিবেশিত হতে পারে।

প্রুস্ত্‌ ড্রেফুসার্ডদের মধ্যে প্রথমদিককার একজন ছিলেন, এমনকি এমিল জোলার বিচারে যোগ দিয়েছিলেন এবং গর্বের সাথে ড্রেফুসের নির্দোষতার সমর্থনে আনাতোল ফ্রঁসকে এই আবেদনটি স্বাক্ষর করতে বলেছিলেন বলে গর্বিতভাবে দাবি করেছিলেন। ১৯১৯ সালে, ডানপন্থী অ্যাকশন ফ্রাঙ্কাইজ প্রতিনিধিরা যখন ফরাসি ঔপনিবেশিকতা এবং ক্যাথলিক চার্চকে সভ্য মূল্যবোধের মূর্তির রূপে প্রকাশ করে, তখন ফ্রান্সে খ্রিস্টানদের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার স্বীকার করে একটি উদারপন্থী বহুবচন দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে তাদের জাতীয়তাবাদ ও নৈরাজ্যবাদকে প্রুস্ত্‌ প্রত্যাখ্যান করেছিল। জুলিয়ান বেন্ডা একজন লেখক হিসেবে লা ট্র্যাহিসন ডেস স্লেরস এ প্রুস্ত্‌ কে প্রশংসিত করেছিলেন, যিনি জাতীয়তাবাদ এবং শ্রেণি সাম্প্রদায়িকতার দ্বৈত ফাঁদগুলি এড়িয়ে চলে তার প্রজন্ম থেকে নিজেকে আলাদা করেছিলেন।

চিত্রশালা

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

মার্সেল প্রুস্ত্‌ পটভূমিমার্সেল প্রুস্ত্‌ প্রাথমিক লেখামার্সেল প্রুস্ত্‌ ইন সার্চ অব লস্ট টাইমমার্সেল প্রুস্ত্‌ ব্যক্তিগত জীবনমার্সেল প্রুস্ত্‌ চিত্রশালামার্সেল প্রুস্ত্‌ তথ্যসূত্রমার্সেল প্রুস্ত্‌ বহিঃসংযোগমার্সেল প্রুস্ত্‌উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় ফরাসি শব্দের প্রতিবর্ণীকরণসাহায্য:আধ্বব/ইংরেজি

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকের রেকর্ড তালিকাজিমেইলবাঙালি সংস্কৃতিনারীমতিউর রহমান নিজামীরূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রইসলামফরাসি বিপ্লবদেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীবাউল সঙ্গীতপিনাকী ভট্টাচার্যহোলিকা দহনমারমাশবে কদরআয়িশাবসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রসেনেগালইসরায়েল–হামাস যুদ্ধমূলদ সংখ্যা২৮ মার্চহিন্দুধর্মের ইতিহাসউহুদের যুদ্ধএইডেন মার্করামতামান্না ভাটিয়াজাতিসংঘমাটিস্পেন জাতীয় ফুটবল দলভূগোলমীর মশাররফ হোসেনপুণ্য শুক্রবারব্যাকটেরিয়াধর্মল্যাপটপমুহাম্মাদের সন্তানগণরমজান (মাস)বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, ২০২৩লিওনেল মেসিনাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন, ২০১৯শবনম বুবলিহোমিওপ্যাথিরজঃস্রাবশান্তিনিকেতনইসলামের পঞ্চস্তম্ভক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনজেলা প্রশাসকজীবনানন্দ দাশকলকাতা নাইট রাইডার্সপথের পাঁচালীবিজয় দিবস (বাংলাদেশ)কাজী নজরুল ইসলামআনন্দবাজার পত্রিকাস্বামী বিবেকানন্দনিরাপদ যৌনতাবাংলাদেশের ইতিহাসবাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলবাংলা বাগধারার তালিকাগাণিতিক প্রতীকের তালিকাআমাজন অরণ্যশাকিব খান অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকাছয় দফা আন্দোলনবিকাশমহেন্দ্র সিং ধোনিদেশ অনুযায়ী ইসলামচৈতন্য মহাপ্রভুদিনাজপুর জেলাআতা১৮৫৭ সিপাহি বিদ্রোহসিলেটতাপমাত্রাইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনভূমি পরিমাপমৌলসমূহের ইলেকট্রন বিন্যাস (উপাত্ত পাতা)খালেদা জিয়াভিটামিনসোনালী ব্যাংক পিএলসিমানব শিশ্নের আকারমুহাম্মাদের বংশধারাঅশোক🡆 More