হাঁপানি একটি শ্বাসকষ্ট সংবলিত রোগ। কার্যত এটি শ্বাসনালির অসুখ। এর ইংরেজি নাম অ্যাজমা যা এসেছে গ্রিক শব্দ Asthma থেকে। বাংলায় হাঁপানি। যার অর্থ হাঁপান বা হাঁ-করে শ্বাস নেয়া। হাঁপানি বলতে আমরা বুঝি শ্বাসপথে বায়ু চলাচলে বাধা সৃষ্টির জন্য শ্বাসকষ্ট।
হাঁপানি / Asthma | |
---|---|
প্রতিশব্দ | অ্যাজমা |
পিক ফ্লো মিটার এক্সপাইরোটারি ফ্লো-এর সর্বোচ্চ মাত্রা নির্ণয় করে, এটির পর্যবেক্ষণ ও নির্ণয় উভয়রই গুরুত্ব আছে। | |
বিশেষত্ব | শ্বসনতন্ত্রবিদ্যা |
লক্ষণ | সাঁসাঁ করে নিঃশ্বাস, কাশি, বুকে টানটানতা, শ্বাসকষ্টের পুনরাবৃত্ত |
স্থিতিকাল | দীর্ঘ মেয়াদী |
কারণ | বংশগত |
ঝুঁকির কারণ | বায়ু দূষণ, অতিসংবেদনশীলকারক |
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি | উপসর্গ উপর ভিত্তি করে, থেরাপি প্রতিক্রিয়া, সিপ্রোমেট্রি |
চিকিৎসা | ট্রিগার পরিহার করে, কর্টিকোস্টেরয়েড, স্যালবুটামল-এর শ্বাসগ্রহণ করা, হোমিওপ্যাথি |
সংঘটনের হার | ৩৫৮ মিলিয়ন (২০১৫) |
মৃতের সংখ্যা | ৩৯৭,১০০ (২০১৫) |
হাঁপানি হল ফুসফুসীয় শ্বাসনালির দীর্ঘ মেয়াদি প্রদাহজনিত রোগ। এর বৈশিষ্ট্য হল রোগটি বিভিন্ন মাত্রায় ও বার বার লক্ষন দেখা দেওয়া এবং পরবর্তীতে চিকিৎসা না করলে খারাপ হতে থাকা, শ্বসনপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হওয়া, এবং সহজেই বা অল্পতেই ব্রঙ্কোস্পাজম বা শ্বাসনালি সরু হয়ে যাওয়ার মত অবস্থায় চলে যাওয়া যার ফলে হাঁপানি বেড়ে যায়। লক্ষনগুলোর মধ্যে আছে শো শো শব্দ হওয়া, কাশি, বুকে চাপ অনুভব করা (বুকের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়া), এবং স্বল্প মাত্রায় শ্বাস নিতে পারা। এগুলো এক দিনে একাধিকবার হতে পারে আবার এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে হতে পারে। ব্যক্তিভেদে হাঁপানির লক্ষনগুলো রাতে বেড়ে যেতে পারে বা ভারি কাজ বা ব্যায়াম বা খেলাধুলা করলেও বেড়ে যেতে পারে।
হাঁপানি জিনগত এবং পরিবেশগত কারনে হয় বলে ধারণা করা হয়। পরিবেশগত কারনগুলোর মধ্যে আছে বায়ু দূষন এবং বাতাসে এ্যালার্জেন বা এ্যালার্জি উদ্রেককারী উপাদানের উপস্থিতি। অন্য কারনগুলো হল এসপিরিনজাতীয় ঔষধ এবং বেটা ব্লক করে এমন এমন ঔষধ সেবন করা। লক্ষনের ধরন দেখে পরিক্ষা করা হয়, তার ভিত্তিতে যে ঔষধ প্রয়োগ করা হয় তা ব্যক্তির উপর কীভাবে কাজ করছে তা দেখা হয় (দীর্ঘ মেয়াদে) এবং ফুসফুসের কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করা হয় স্পাইরোমেট্রি। হাঁপানি কতটুকু জটিল তা বুঝার জন্য লক্ষনগুলো কত দ্রুত দেখা দেয় তা দেখা হয়, সেই সাথে এক সেকেন্ডে প্রশ্বাসের ভলিউম কতটুকু তাও যোগ করা হয় যাকে (FEV1)বলে এবং পিক ফ্লো ব্যবহার করা হয়। এটপিক এবং নন এটপিক হিসেবেও একে ভাগ করা হয় যেখানে এটপিক হল টাইপ ১ ধরনের সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া দেখানো।
এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করাতে পারে এমন কোন ঔষধ তেরী হয়নি, কিন্তু এটিকে সহজেই চিকিৎসা করে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় রাখা যায়। উপসর্গগুলো দেখা দেবার পূর্বেই যে কারনগুলো হাঁপানির উদ্রেক করে যেমন এ্যালার্জেন, শ্বাসতন্ত্রের প্রতি হুমকি এমন পরিবেশ বা উপাদান, সেগুলো বন্ধ করতে পারলে এবং সেই সাথে কর্টিকোস্টেরয়েড গ্রহণ করলে হাঁপানির উপসর্গগুলো বন্ধ করা যায়। শুধুমাত্র কর্টিকোস্টেরয়েড দিয়ে যদি হাঁপানি নিয়ন্ত্রিত না হয়, তাহলেদীর্ঘ-মেয়াদি বেটা এগনিস্ট অথবা এন্টিলিউকোট্রিন এজেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। যখন দ্রুত হাঁপানি বাড়তে থাকে তখন শ্বাসের সাথে গ্রহণ করা যেতে পারে স্বল্প মেয়াদি বেটা-২ এগনিস্ট যেমনসালবিউটেমল এবং কর্টিকোস্টেরয়েড যা দ্রুত রোগীর অবস্থা উন্নতি করে। মারাত্মক উপসর্গের ক্ষেত্রে রোগীকে শিরায় কর্টিকোস্টেরয়েড, ম্যাগনেশিয়াম সালফেট এবং হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।
সারা বিশ্বের প্রায় ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ অ্যাজমা বা হাঁপানীতে আক্রান্ত হন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৫০ হাজার লোক এই রোগে আক্রান্ত হয় এবং মাত্র পাঁচ শাতংশ রোগী চিকিৎসা লাভ করে।
হাঁপানির বৈশিষ্ট্য হল বারবার শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে শো শো শব্দ হওয়া ও কষ্টসহকারে শ্বাস নেয়া, বুকে চাপ ধরা বা বুকের পেশি শক্ত হওয়া, শ্বাস প্রশ্বাসের স্বল্পতা (শ্বাসকষ্ট) এবং কাশি। উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর ফুসফুস থেকে কফ তৈরি হতে পারে কিন্তু তা সহজে বের হতে চায় না। হাঁপানির মাত্রা কমে আরোগ্য লাভের সময় থুতু বেরিয়ে আসতে পারে যা দেখতে সাদা জলের মত হয় যা ইওসিনোফিল (শ্বেত রক্ত কনিকা) কারনে হয়। হাঁপানির উপসর্গ সাধারণত রাতে এবং ভোরের দিকে বেশি হতে দেখা যায়। আর কারো কারো পরিশ্রমসাধ্য কাজ যেমন ব্যায়াম, দৌড় ইত্যাদি করলে হাঁপানি বেড়ে যেতে পারে। আবার ঠান্ডা আবহাওয়াতেও কারো কারো হাঁপানি বেড়ে যায়। কিছু কিছু হাঁপানি রোগী খুব কমই উপসর্গগুলোতে ভোগেন যেখানে অন্যরা ঘন ঘন এবং লাগাতর আক্রান্ত হন।
মানবদেহে হাঁপানি তিনভাবে প্রকাশ হতে পারেঃ
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article হাঁপানি, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.