ভাগ: গণিতের চারটি মৌলিক ক্রিয়ার একটি

গণিতে ভাগ বা বিভাজন (বা পুনঃপুনঃ বিয়োগ) একটি বীজগাণিতিক ক্রিয়াপদ্ধতি (অপারেশন) যা '÷' অথবা '/' দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ
২০ ÷ ৪ = ৫

ভাগের গাণিতিক প্রকাশ

নির্দিষ্টভাবে বলা যায় যদি ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  দ্বার ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ -কে গুণ করে ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  পাওয়া যায়, অর্থাৎ ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  হয় এবং যদি এই সমীকরণে ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  হয়, তবে ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  কে ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  দ্বারা, ভাগ করলে ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  পাওয়া যাবে। এটিকে নিচের মত করে লেখা যায়:

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  ÷ ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

উদাহরণস্বরূপ,

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 
    যেহেতু, ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

উপরের সমীকরণে ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  কে ভাজ্য, ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  কে ভাজক এবং ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  কে ভাগফল বলা হয়। ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  অথবা ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  ভাগের এই রাশিতে ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  কে লব এবং ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  কে হর বলা হয়।

সাধারণত সবাই প্রাথমিক বিদ্যালয়েই যোগ, বিয়োগ, গুণের মত ভাগের ধারণাও অর্জন করে। দুটি পূর্ণ সংখ্যার একটি অপরটিকে দিয়ে ভাগ করলে তা অনেকসময় নিঃশেষে বিভাজ্য না হয়ে ভাগশেষ নামক অরেকটি সংখ্যা অবশিষ্ট থেকে যায়। ভাগশেষকে পুনরায় ভাজক দ্বারা ভাগ করলে ভাগফলে পূর্ণ সংখ্যার পরিবর্তে দশমিক পাওয়া যায়। তাই দুটি পূর্ণ সংখ্যার ভাগফল অধিকাংশ ক্ষেত্রে পূর্ণ সংখ্যা হয়না। তবে দুটি পূর্ন সংখ্যাের ভাগফল সব সময়ই মূলদ বাস্তব সংখ্যাগুলির মধ্যই অবস্থান করে।

ভাগের চিহ্ন

প্রায়ই বীজগণিত এবং বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাজ্য কে একটি অনুভূমিক রেখার উপরে এবং ভাজকে একই রেখার নিচে লিখে প্রকাশ করা হয় এবং এই প্রকাশকে ভাগ্নাংশ বলা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ a কে b দ্বারা ভাগের ক্ষেত্রে লিখা যায়-

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

এই পদ্ধতি পড়ার সময় বলা হয় a কে b দ্বারা ভাগ অথবা a ভাগ b অথবা b এর a অংশ।œআবার ভাগ প্রকাশের আরেকটি চিহ্ন আছে যেখানে ভাজ্য ও ভাজক কে পরপর লেখে মাঝে একটি '/' চিহ্ন ব্যবহার করা(ইংরেজি উচ্চারণ স্ল্যাশ)। যেমন-

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

টাইপ করতে সুবিধার জন্য ভাগ প্রকাশের এই পদ্ধতি বিভিন্ন কম্পিউটার প্রোগ্রামিং পরিভাষার ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে কিছু কিছু গাণিতিক সফটওয়্যার এই প্রকাশের বিপরীত ক্রম সমর্থন করে। সেক্ষেত্রে আগে ভাজক পরে ভাজ্য লিখে মাঝে ভাগের চিহ্ন হিসাবে '\'(ইংরেজি উচ্চারণ "ব্যাক স্ল্যাশ") ব্যবহার করা হয়। যেমন-

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

এই দুই পদ্ধতির মধ্যবর্তী প্রকাশের আরেকটি উপায়-

    ab

উপরের যেকোন একটি উপায় ভাগ প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় তবে ভগ্নাংশে প্রকাশের ক্ষেত্রে ভাজ্য ও ভাজক উভয়ই পূর্ণ্য সংখ্যা হতে হয়। ভগ্নাংশের দুটি সংখ্যার একটিকে 'লব' এবং অন্যটিকে 'হর' বলা হয়। ভাগ প্রকাশের দ্বিতীয় পদ্ধতি যা পাটিগণিতে সর্বোচ্চ ব্যবহার হয় তা হল '÷'। যেমন-

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে a কে b দ্বারা ভাগের ক্ষেত্রে অনুপাত চিহ্নটি ব্যবহৃত হয়। অর্থ্যাৎ a : b ভাগ প্রকাশের এই প্রকাশকে প্রথম ব্যবহার করেন William Oughtred তার 'ক্লেভিজ ম্যাথমেটিকা' বইয়ে যা ১৬৩১ সালে প্রকাশিত হয় পরবর্তীতে গ্রডফ্রিড উইলিয়াম লেবনিটজ এই পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করে তোলেন

আবার কিছু কিছু ভাষায় a কে b দ্বারা ভাগ প্রকাশের জন্য ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  অথবা ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। ভাগ প্রকাশের এই উপায় সর্বপ্রথম মাইকেল স্টিফ ১৫৪৪ সালে তার এরিথমেটিকা ইন্টিগ্রা নামক বইয়ে প্রথম প্রকাশ করেন।

সরল আকারে লিখার নিয়ম

ভাগকে সরল আকারে প্রকাশের সঠিক উপায়

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 
ভাগকে সরল আকারে প্রকাশের ভুল উপায়- 
    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

ইউক্লিডীয় ভাগ

ইউক্লিডীয় ভাগ হল ভাগের পাটিগাণিতিক একত্রীকরণ যা অনেকটা পূর্ণ সংখ্যার ভাগের মতই। এখানে ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  ভাজ্য এবং ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  ভাজক যারা উভয়ই পূর্ণ সংখ্যা এবং ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  হলে ভাগফলও সব সময় একটি পূর্ণ সংখ্যা। যেমন লেখা যায়–

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  এখানে, ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  ভাগফল যা একটি পূর্ণ সংখ্যা এবং ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  হলো ভাগশেষ এবং ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ , এখানে ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  পূর্ণ সংখ্যা ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ  এর পরমমান। যেমন-
    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

পূর্ণ সংখ্যার ভাগ

পূর্ণ সংখ্যার ভাগের ক্ষেত্রে সব সময় পূর্ণ সংখ্যা পাওয়া যায় না। ভাগফল পূর্ণ সংখ্যা হবে যদি কেবল ভাজ্য ভাজকের পূর্ণ সাংখিক গুণিতক হয়। যেমন: ১২ কে ৩ দ্বারা ভাগ করলে ৪ পাওয়া যায় (অর্থাৎ, ১২ ÷ ৩ = ৪ অথবা +১২/ = ৪) কারণ, ১২ = ৩ × ৪ (যেহেতু, ভাজক = ভাজ্য × ভাগফল + ভগশেষ)। কিন্তু ২৬ কে ১১ দ্বারা ভাগ (+২৬/১১) করলে পূর্ণ সংখ্যা পাওয়া যাবে না, কারণ ২৬; ১১ এর গুণিতক নয়। সেক্ষেত্রে—

  1. ২৬ কে ১১ দ্বারা ভাগ করলে দশমিক সংখ্যা পাওয়া যাবে।
  2. কাছাকাছি একটি দশমিক সংখ্যা ভাগফল হতে পারে +২৬/১১ ≈ ২.৩৬ অথবা +২৬/১১+৩৬/১০০
  3. ২৬ কে ১১ দ্বারা ভাগ করলে অবশ্যই মূলদ সংখ্যা পাওয়া যাবে +২৬/১১। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভগ্নাংশকে সরলীকরণ করা যায় যেমন ৫২ কে ২২ দ্বারা ভাগ করে লেখা যায় +২৬/১১ এটি সাধারণত লব এবং হরকে তাদের গ.সা.গু দ্বারা ভাগ করে সরলীকরণ (+৫২/২২ = +৫২ ÷ ২/২২ ÷ ২ = +২৬/১১) করা হয়েছে।

শূণ্য দ্বারা ভাগ

যেকোনো সংখ্যাকে শূণ্য (০) দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল অসঙ্গায়িত হয় অর্থাৎ, +যেকোনো সংখ্যা (যেমন: –৩, –২, –১, ১, ২, ৩)/ = অসংঙ্গায়িত। কারণ, শূণ্যকে কোনো সংখ্যার গুণিতক রূপে প্রকাশ করা যায় না। যেকোনো সসীম সংখ্যাকে শূণ্য দিয়ে গুণ করলে গুণফল শূণ্য (০) পাওয়া যায়।

জটিল সংখ্যার ভাগ

দুটি জটিল সংখ্যাকে ভাগ করলে সব সময়ই অরেকটি জটিল সংখ্যা পাওয়া যায়। যেমন-

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

এখানে p, q, r, s চারটিই বাস্তব সংখ্যা এবং rs শূণ্য নয়।

জটিল সংখ্যার ভাগফলকে পোলার আকারেও প্রকাশ করা যায়।যেমন-

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

এখানে p, q, r, s বাস্তব সংখ্যা এবং r এর মান শুন্য নয়।

ম্যাট্রিক্সের ভাগ

দুটি ম্যাট্রিক্সের ভাগকে প্রকাশ করা হয়- A / B = AB−1, যেখানে B−1; B ম্যাট্রিক্সের বিপরীত ম্যাট্রিক্স প্রকাশ করে। এটাকে সাধারনত দ্ব্যর্থতা নিরসনের জন্য AB−1 রূপে প্রকাশ করা হয়।

ক্যালকুলাস

    ভাগ: ভাগের গাণিতিক প্রকাশ, ভাগের চিহ্ন, ইউক্লিডীয় ভাগ 

তথ্যসূত্র

বহি:সংযোগ

Tags:

ভাগ ের গাণিতিক প্রকাশভাগ ের চিহ্নভাগ ইউক্লিডীয় ভাগ পূর্ণ সংখ্যার ভাগ শূণ্য দ্বারা ভাগ জটিল সংখ্যার ভাগ ম্যাট্রিক্সের ভাগ ক্যালকুলাসভাগ তথ্যসূত্রভাগ বহি:সংযোগভাগগণিতবিয়োগবীজগণিত

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

মিজানুর রহমান আজহারীজড়তার ভ্রামকবাংলাদেশ ব্যাংকদক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েপূর্ণিমা (অভিনেত্রী)সন্ধিসমকামিতাপানি দূষণযমুনা নদী (বাংলাদেশ)আয়াতুল কুরসিধর্ষণবাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শকময়মনসিংহ জেলামানবজমিন (পত্রিকা)কৃষ্ণচূড়াসালাহুদ্দিন আইয়ুবিভারতের সংবিধানবর্ডার গার্ড বাংলাদেশঅনাভেদী যৌনক্রিয়াবন্ধুত্ববাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীআর্যবাংলাদেশের জনমিতিভারতগুগলরাগ (সংগীত)ত্রিভুজমানব দেহ০ (সংখ্যা)বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ঢাকাবাসকইসলামে বিবাহহানিফ সংকেতলালসালু (উপন্যাস)রাধাবিভিন্ন ধর্ম ও বিশ্বাসের তালিকামহাসাগরঅমর সিং চমকিলাআফগানিস্তানকলকাতা উচ্চ আদালতসাদিকা পারভিন পপিকেরলমাশাআল্লাহজিএসটি ভর্তি পরীক্ষাঅ্যামিনো অ্যাসিডদীপু মনিশেখ হাসিনাবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসূরা ইখলাসবাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাআমার সোনার বাংলাআল্লাহর ৯৯টি নাম২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপন্যাটোছোটগল্পশরচ্চন্দ্র পণ্ডিতজানাজার নামাজদৈনিক ইনকিলাবজব্বারের বলীখেলাকোষ (জীববিজ্ঞান)সেলিম আল দীনদেব (অভিনেতা)গণতন্ত্রসিলেটমুজিবনগর সরকারকালবৈশাখীজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়হস্তমৈথুনের ইতিহাসস্বামী বিবেকানন্দশীর্ষে নারী (যৌনাসন)মিমি চক্রবর্তীজলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব🡆 More