বালি একটি দানাদার উপাদান যা সূক্ষ্মভাবে বিভক্ত শিলা এবং খনিজ কণার সমন্বয়ে গঠিত। বালির আণবিক সংকেত SiO2। বালির বিভিন্ন গঠন আছে তবে এর শস্য আকার দ্বারা একে সংজ্ঞায়িত করা হয়। বালির দানা নুড়ির চেয়ে ছোট তবে পলির চেয়ে মোটা। বালি ,মাটি বা মাটির মত একটি টেক্সচারাল শ্রেণিকেও উল্লেখ করতে পারে; অর্থাৎ যেসব মাটির ভরের ৮৫% এর বেশি বালি-আকারের কণা তাদের কে বালি হিসেবে বুঝানো হয় ।
বালির গঠন স্থানীয় নুড়ি পাথরের উৎস এবং বিভিন্ন অবস্থার উপরে নির্ভর করে বিভিন্ন রকম হয় কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে যেমনঃঅভ্যন্তরীণ মহাদেশীয় এবং ক্রান্তীয় উপকূল নয় এমন জায়গাগুলোর গঠনে বালির সবচেয়ে সাধারণ উপাদান হ'ল সিলিকা (সিলিকন ডাই অক্সাইড, বা SiO2 ),যা সাধারণত কোয়ার্টজ আকারে থাকে।বালির ২য় সাধারণ উপাদান হল ক্যালসিয়াম কার্বোনেট যেমনঃ আরাগোনাইট যা গত ৫০ কোটি বছর ধরে বিভিন্ন জীবের গঠনে যেমনঃ প্রবাল,শেলফিশ এদের আকারে তৈরি হয়ে এসেছে ।উদাহরণস্বরুপ যে জায়গাগুলোর বাস্ততন্ত্রে প্রবাল্প্রাচীর বেশি প্রভাব রেখেছে যেমনঃ ক্যারিবিয়ান,সেখানকার বালির মূল উপাদান এই ক্যালসিয়াম কার্বোনেট।অল্প কিছু ক্ষেত্রে বালি ক্যালসিয়াম সালফেট দ্বারা গঠিত হয় যেমনঃজিপসাম,সেলেনাইট এবং এগুলো ইউনাইটেড স্টেটসের হোয়াইট স্যান্ডস ন্যাচারাল পার্ক এবং স্ল্ট প্লেইনস ন্যাশনাল ওয়াইল্ডলাইফ রিফিউজ এ পাওয়া যায়।
বালি হ'ল মানব সময়সীমার তুলনায় একটি অ নবায়নযোগ্য সম্পদ , এবং কংক্রিট তৈরির জন্য উপযুক্ত বালির উচ্চ চাহিদা রয়েছে। মরুভূমি বালি, প্রচুর পরিমাণে থাকলেও তা কংক্রিট তৈরিতে উপযুক্ত নয়। প্রতি বছর 50 বিলিয়ন টন সৈকত বালি এবং জীবাশ্ম বালি নির্মাণের কাজে ব্যবহারের জন্য ব্যবহৃত হয়।
বালির সঠিক সংজ্ঞা বিভিন্ন রকম হয়। মাটি কে সাধারণত এর কণার আকারের প্রাধ্যনের উপর ভিত্তি করে নুড়ি,বালি, পলি বা কাদা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। মাটিকে তাদের কণার আকারের উপর ভিত্তি করে বর্ণ্না করার জন্য বিভিন্ন অর্গানাইজেশন বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছে। যেমনঃ এমআইটির দেয়া সংজ্ঞা অনুসারে ০.০৬ মি.মি. থেকে ২ মি.মি. আকারের কণা গুলো কে বালি বলা হয়ে থাকে এবং ২ মি.মি. এর চেয়ে বড় কণা গুলো কে নুড়ি বলা হয় । প্রকৌশল ও ভূতত্ব ব্যবস্থায় ব্যবহৃত যে সায়েন্টিফিক ইউনিফাইড সয়েল ক্লাসিফিকেশন সিস্টেম রয়েছে তা মার্কিন স্ট্যান্ডার্ড সিভস(চালুনি) এর সাথে মিলে যায়, এবং তারা 0.04 থেকে 4.75 মিলিমিটার ব্যা সযুক্ত কণাকে বালি কণা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। অন্য একটি সংজ্ঞা অনুসারে, ভূতাত্ত্বিকদের দ্বারা ব্যবহৃত কণার আকারের ক্ষেত্রে, কণাগুলির ব্যাসের পরিমাণ ০.০৬২৫ মি.মি. থেকে (বা ১/১৬ মি.মি.) থেকে ২মি.মি. এই ব্যাপ্তির মধ্যে থাকা কোন পৃথক কণাকে বালির দানা বলা হয়। বালির দানা নুড়িপাথর (পরবর্তী সিস্টেমে ২ মি.মি. থেকে শুরু করে 64 মি.মি. পর্যন্ত এবং পূর্বের সিস্টেম অনুসারে 4.75 থেকে 75 মি.মি. পর্যন্ত) এবং পলি (০.০৬২৫ মি.মি. এর চেয়ে ছোট কণা থেকে ০.০০৪ মি.মি.)এর মাঝামাঝি । বালি এবং নুড়িগুলির নির্দিষ্ট আকার এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে স্থির ছিল, তবে কণার ব্যাসগুলো ০.০২ মি.মি. এর ছোট হলে, বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে অ্যালবার্ট অটারবার্গের স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে তা বালু হিসাবে বিবেচিত হত। খ্রিস্টপূর্ব ২৪০ অব্দে লেখা আর্কিমিডিসের ' দ্য স্যান্ড রেকোনার বই অনুসারে বালির শস্যগুলো ছিল 0.02 মি.মি.ব্যাস যুক্ত। ১৯৩৮সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের স্পেসিফিকেশনে বলা হয় তা ০.০৫মি.মি. আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ স্টেট হাইওয়ে অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন অফিসারদের দ্বারা ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত একটি ইঞ্জিনিয়ারিং স্ট্যান্ডার্ড ন্যূনতম বালির আকার ০.০৭৪ মি.মি. এ নির্ধারণ করেছে। আঙ্গুলের মাঝে ঘষলে বালি শক্ত অনুভূত হয়। পলি(সিল্ট) তুলনামূলক ময়দার মতো অনুভূত হয়।
আইএসও ১৪৬৮৮, ০.০৬৩২ মি.মি. থেকে ০.২ মি.মি. বালি কে সুক্ষ্ম বালি, ০.২ মি.মি. থেকে ০.৬৩ মি.মি. কে মাঝারি বালি এবং ০.৬৩ মি.মি. থেকে ২ মি.মি. কে মোটা বালি হিসাবে বিভক্ত করেছে ।। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, বালি সাধারণভাবে আকারের উপর ভিত্তি করে পাঁচটি উপভাগে বিভক্ত করা হয়, খুব সূক্ষ্ম বালি (১/১৬ মি.মি. - ১/৮ মি.মি. ব্যাস), মাঝারি বালি(১/৮ মি.মি. - ১/৪ মি.মি.), মোটা বালি (১/২ মি.মি. - ১ মি.মি.), এবং খুব মোটা বালি(1 মি.মি. - ২ মি.মি.)। এই আকারগুলো ক্রাম্বেইন ফাই স্কেলের উপর ভিত্তি করে হিসাব করা হয়, যেখানে আকার Φ = -log2D , কণার আকার D মি.মি.। এই স্কেলে,উপবিভাগগুলোর মধ্যে বিভাজন সহ বালির জন্য Φ এর মান −১ থেকে +৪ পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়।
অভ্যন্তরীণ মহাদেশীয় সেটিংস এবং অ-ক্রান্তীয় উপকূলীয় সেটিংসে বালির সবচেয়ে সাধারণ উপাদান হ'ল সিলিকা (সিলিকন ডাই অক্সাইড, বা সিও 2 ), সাধারণত কোয়ার্টজ আকারে থাকে , যা রাসায়নিক জড়তা এবং যথেষ্ট কঠোরতার কারণে, সবচেয়ে বেশি আবহাওয়া প্রতিরোধী খনিজ।
স্থানীয় শিলার উত্স এবং অবস্থার উপর নির্ভর করে খনিজ বালির গঠন ও পরিবর্তনশীল। ক্রান্তীয় এবং উপ-ক্রান্তীয় উপকূলীয় অঞ্চলের গঠনে পাওয়া উজ্জ্বল সাদা বালুগুলো আসলে ক্ষয়প্রাপ্ত চুনাপাথর এবং এতে অন্যান্য জৈব বা জৈবিকভাবে উদ্ভূত খণ্ডিত উপাদানের পাশাপাশি প্রবাল এবং শেল টুকরা থাকতে পারে, যা বোঝায় ,বালির গঠন জীবন্ত জীবের উপরও নির্ভর করে। নিউ মেক্সিকোতে হোয়াইট স্যান্ডস ন্যাশনাল পার্কের জিপসাম বালির টিলাগুলো উজ্জ্বল, সাদা রঙের জন্য বিখ্যাত। আরকোস হ'ল একটি বালু বা বেলেপাথর যাতে যথেষ্ট পরিমাণে ফেল্ডস্পার থাকে, এটি (সাধারণত কাছাকাছি) গ্রানাইটিক পাথরের ভেঙে যাওয়া(ওয়েদারিং) এবং ক্ষয়প্রাপ্ত অংশের স্থানান্তরের ফলে উদ্ভূত হয় (এরোসন)। কিছু বালিতে ম্যাগনেটাইট, ক্লোরাইট, গ্লুকোনেট বা জিপসাম থাকে । ম্যাগনেটাইট সমৃদ্ধ বালুকণাগুলি গাঢ় থেকে কালো বর্ণের, যেমন আগ্নেয়গিরির বেসাল্টস এবং অবিসিডিয়ান থেকে প্রাপ্ত বালির মতো। ক্লোরাইট - গ্লুকোনাইট সমৃদ্ধ বালি সাধারণত সবুজ রংএর হয়, যেমন ব্যাসাল্টিক লাভা থেকে থেকে প্রাপ্ত বালিতে বেশি পরিমাণে অলিভিন সামগ্রী রয়েছে। অনেক বালুকণা, বিশেষত দক্ষিণ ইউরোপে যেগুলো ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়, সেসব বালির কোয়ার্টজ স্ফটিকগুলির মধ্যে লোহা রয়েছে, যা গভীর হলুদ বর্ণ দেয়। কিছু অঞ্চলে বালুকার মধ্যে কিছু ছোট রত্ন সহ গারনেট( ডালিম দানার মত মণি) এবং অন্যান্য প্রতিরোধী খনিজ রয়েছে।
মূলত জল এবং বায়ু দ্বারা দীর্ঘ সময় ধরে পাথর বা শিলা গুলির ক্ষয় হয় ,ভেংগে যায় অথবা এদের দ্বারা স্থানান্তরিত হয় এবং এদের তলানি ডাউনস্ট্রীমে প্রবাহিত হয়। এই তলানিগুলো বালির সূক্ষ্ম দানাতে পরিণত না হওয়া অবধি ছোট ছোট টুকরো হয়ে যেতে থাকে। এই তলানি কোন ধরনের পাথর থেকে উৎপন্ন এবং সেই পরিবেশের অবস্থার উপরে নির্ভর করে বিভিন্ন বালির বিভিন্ন গঠন হয়ে থাকে। বালি গঠনের সর্বাধিক প্রচলিত শিলা/পাথর হল গ্রানাইট, যেখানে ফেল্ডস্পার খনিজগুলো কোয়ার্টজের চেয়ে দ্রুত দ্রবীভূত হয়, যার ফলে শিলাটি ছোট ছোট টুকরা হয়ে যায়। স্থির পরিবেশের চেয়ে উচ্চ শক্তির পরিবেশে শিলাগুলো আরও দ্রুত বিচ্ছিন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ, গ্রানাইট রকস থেকে উদ্ভূত বালিতে আরও ফেল্ডস্পার খনিজ থাকে ,কারণ এটি দ্রবীভূত হওয়ার সময় পায় না। ওয়েদারিং(জল ,বায়ু,বরফ দ্বারা পাথর ভেংগে যাওয়ার ঘটনা) এ যে বালি সৃস্টি হয় ,তাকে বলে এপিক্লাস্টিক।
নদী থেকে পাওয়া যে বালি ,তা নদী থেকে বা তার বন্যার সমভূমি থেকে সংগ্রহ করা হয় এবং নির্মাণ শিল্পে ব্যবহৃত বেশিরভাগ বালির জন্য হিসাব করা হয়। এ কারণে বহু ছোট ছোট নদী নিঃশেষিত হয়ে পড়েছে, যার ফলে পার্শ্ববর্তী জমির পরিবেশগুলোতে উদ্বেগ ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। এ জাতীয় অঞ্চলে বালু খননের হার, বালুটি যে পরিমাণে তা পূরণ করতে পারে ,সেই পরিমাণকেও ছাড়িয়ে যায়, তাই এটি অনবায়নযোগ্য সম্পদে পরিণত হয়।
বালুর এই স্তূপ শুষ্ক অবস্থা বা বাতাস দ্বারা প্রবাহিত হয়ার ফলে সৃষ্টি হয়।সাহারা মরুভূমি এর ভৌগোলিক অবস্থান এর জন্য অনেক শুষ্ক এবং এর বিশাল বালুস্তূপের জন্য পরিচিত।এটি বিশাল বালিয়াড়ির জন্য পরিচিত তার কারন এখানে খুব অল্প পরিমাণে গাছপালা জন্মায় এবং খুব বেশি পানি থাকেনা ।সময়ের সাথে সাথে বাতাসে সব সুক্ষ কণা যেমনঃমাটি বা মৃত জৈব পদার্থ ভেসে দূরে চলে যায়,শুধুমাত্র বালি এবং বড় পাথরগুলো ছাড়া ।সাহারা মরুভূমির শুধুমাত্র ১৫% বালির স্তূপ বাকি ৭০% পাথর (রক বা পাথর )।বিভিন্ন রকম পরিবেশ সৃষ্টির জন্য এবং বালির গোলাকার ও মসৃণ আকার সৃষ্টির জন্যে এই বাতাস দায়ী।এই বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্যই এই বালি নির্মাণের কাজে ব্যবহার করা হয়না।
সমুদ্রসৈকতের বালিও ক্ষয়ের ফলে গঠিত হয় কাজের । কয়েক হাজার বছর ধরে, সমুদ্র ঢেউ থেকে আসা অবিচ্ছিন্ন গতির প্রভাবে তীরভূমির নিকটে থাকা পাথরগুলি ক্ষয় হয় এবং পলি জমে ।ভেঙে যাওয়া পাথরখন্ড (ওয়েদারিং) এবং নদীতে জমা তলানি ,সমুদ্র সৈকত তৈরির প্রক্রিয়াও ত্বরান্বিত করে, সমুদ্রের প্রাণীগুলো শিলাপাথরগুলোর উপর প্রভাব ফেলে যেমন তাদের শেওলাগুলি খেয়ে ফেলে। সমুদ্র সৈকতে একবার পর্যাপ্ত পরিমাণে বালি জমে গেলে, তখন জমি আরও ক্ষয় যাতে না ঘটে, সেজন্য সৈকত তখন বাধা হিসাবে কাজ করে। এটি কৌণিক এবং বিভিন্ন আকারের হওয়ার জন্য এই বালিটি নির্মাণের কাজের জন্য আদর্শ।
সামুদ্রিক বালু (বা সমুদ্রের বালি) সমুদ্রের মধ্যে স্থানান্তরিত পলি এবংসমুদ্রের শিলাগুলির ক্ষয় থেকে আসে। বালির স্তরটির বেধ পরিবর্তিত হয়, তবে জমির কাছাকাছি বেশি বালি থাকে; এই জাতীয় বালি নির্মাণের কাজের জন্য আদর্শ এবং এটি একটি অত্যন্ত মূল্যবান পণ্য। ইউরোপ সামুদ্রিক বালির মূল খনি, যা বাস্তুতন্ত্র এবং স্থানীয় ফিশারিগুলিকে প্রচুর পরি করে।
পৃথক কনা বা দানার উপরে গবেষণার ফলে এর উৎপত্তি এবং কীভাবে প্রবাহিত হয়, তার উপরে অনেক ঐতিহাসিক তথ্য প্রকাশিত হতে পারে। কোয়ার্টজ বালি যা সম্প্রতি গ্রানাইট বা গিনিস কোয়ার্টজ স্ফটিক থেকে পরিবেষ্টিত হয়েছে তার আকৃতি কৌনিক হবে। এটিকে জিওলজি তে গ্রাস বা বাসাবাড়ি নির্মাণের ব্যবসাতে ধারালো বালি হিসাবে গন্য করা হয় যেখানে কংক্রিটকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, এবং বাগান করার ক্ষেত্রে,এটি সয়েল এ্যামেন্ডমেন্ট হিসাবে কাজ করে মাটির গাঠনিক বৈশিষ্ট্যকে উন্নত করে ,কাদামাটিকে আলগা করে । জল বা বাতাসের দ্বারা দীর্ঘ দূরত্বে পরিবাহিত বালু গোলাকার হবে, সেই সাথে কণার পৃষ্ঠে ক্ষয় হওয়ার নমুনা থাকবে। মরুভূমি বালি সাধারণত গোলাকার হয়।
শখের বশে বালু সংগ্রহকারী ব্যক্তিরা এরিনোফাইল হিসাবে পরিচিত। বালির পরিবেশে যে জীবগুলি জন্মে তারা হ'ল সিমোফাইলস
কেবলমাত্র কয়েকটি বালু নির্মাণ শিল্পের জন্য উপযুক্ত, যেমনঃ কংক্রিট তৈরির জন্য। জনসংখ্যা এবং শহরগুলোর বৃদ্ধি এবং ফলস্বরূপ নির্মাণ কার্যক্রমের কারণে এই বিশেষ ধরনের বালির বিশাল চাহিদা রয়েছে এবং প্রাকৃতিক উত্সগুলোতে এর পরিমাণ কমছে। ২০১২ সালে ফরাসী পরিচালক ডেনিস দেলেস্ট্রাক নির্মাণকাজে বালির অভাবের প্রভাব নিয়ে "স্যান্ড ওয়ার্স " নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন। এটি নির্মাণ কাজের বালির বৈধ এবং অবৈধ ,এই দুই ধরনের ব্যবসায়ের পরিবেশগত এবং অর্থনৈতিক প্রভাবগুলি দেখায়।
বালি পুনরুদ্ধার করতে, হাইড্রলিক ড্রেজিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এটি পানির উপরের কয়েক মিটার বালি পাম্প করে একটি নৌকায় ভরে কাজ করে, যা পরে প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য পুনরায় জমিতে স্থানান্তরিত হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে, নিষ্কাশিত বালির সাথে মিশ্রিত সমস্ত সামুদ্রিক জীব মারা যায় এবং খনির কাজ সমাপ্ত হওয়ার পরে ও বাস্তুতন্ত্রগুলো বছরের পর বছর ধরে ভোগ করতে পারে। এটি কেবল সামুদ্রিক জীবকেই প্রভাবিত করে না, স্থানীয় মৎস্য ব্যবসা কেও প্রভাবিত করে এবং যেসব লোক পানির ধারে কাছে বাস করে তাদের উপরে ও প্রভাব ফেলে। যখন বালি পানি থেকে বের করা হয় তখন তা ভূমিধসের ঝুঁকি বাড়ায়, যার ফলে কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে অথবা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বালুর অনেকগুলি ব্যবহারের জন্য ড্রেজিং করা হয় যা মতস্যখাতে অবনতি, ভূমিধস , বন্যার এবং পরিবেশের জন্য উদ্বেগ সৃষ্টি করে। চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং কম্বোডিয়ার মতো দেশ বালু রফতানি নিষিদ্ধ করে থাকে , এই বিষয়গুলিকে একটি প্রধান কারণ হিসাবে উল্লেখ করে। এটি অনুমান করা হয় যে বালি এবং নুড়ির খাতে বার্ষিক খরচ ৪০ বিলিয়ন টন এবং বালি ৭০ বিলিয়ন ইউএস ডলারের একটি বিশ্বব্যাপী শিল্প।
২০১৭ সালে ৯৯.৫ বিলিয়ন ডলার শিল্পের মধ্যে,বালির জন্য বিশ্বব্যাপী চাহিদা ছিল ৯.৫৫ বিলিয়ন টন।
যদিও বালি সাধারণত বিষাক্ত হয়না তবে বালি ব্যবহারে যেমন স্যান্ডব্লাস্টিংয়ের(শক্তিশালী মেশিন দ্বারা বালি স্প্রে করে কোন সারফেসের ফিনিশিং করা) মত কাজের জন্য সতর্কতা প্রয়োজন। স্যান্ডব্লাস্টিংয়ের জন্য ব্যবহৃত সিলিকা বালির ব্যাগে এখন লেবেল থাকে ,যা ব্যবহারকারীকে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য সুরক্ষা পরিধান করতে সতর্ক করে, যাতে সূক্ষ্ম সিলিকা ধুলা তে শ্বাস প্রশ্বাস নেয়া এড়াতে পারে। সিলিকা বালির জন্য যে সুরক্ষা ডেটা শিটগুলি থাকে তাতে উল্লেখ থাকে যে "সিলিকা স্ফটিকে অতিরিক্ত মাত্রায় শ্বাসগ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর উদ্বেগ"।
উচ্চ ছিদ্রযুক্ত জলের চাপের ক্ষেত্রগুলিতে, বালি এবং লবণের জল কুইকস্যান্ড গঠন করতে পারে, যা একটি কলয়েড হাইড্রোজেল যা তরলের মতো আচরণ করে। কুইকস্যান্ড এর ভিতরে ধরা প্রাণীদের বাঁচার জন্য যথেষ্ট বাধা তৈরি করে, যারা প্রায়শই এক্সপোজার থেকে মারা যায় (নিমজ্জন থেকে নয়) ফলস্বরূপ।
ম্যানুফাকচার স্যান্ড (এম স্যান্ড) সাধারণত সিমেন্ট বা কংক্রিটের নির্মাণ কাজের জন্য কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় রক বা পাথর থেকে তৈরি বালি। এটি নদীতে পাওয়া বালি থেকে পৃথক, আরও কৌণিক এবং এর কিছুটা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে অবকাঠামো নির্মাণ ও নতুন দ্বীপ তৈরিতে বালি ব্যবহারের খুব চাহিদা রয়েছে। তারা তাদের নিজস্ব মজুদ ব্যবহার করে এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে ও বালি আমদানি করে। কৃত্রিম দ্বীপগুলি তৈরির জন্য তিনটি প্রকল্প রয়েছে যেখানে ৮৩৫ মিলিয়ন টনেরও বেশি বালু প্রয়োজন, যার ব্যয় হিসাব করা হয়েছে ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article বালি, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.