মৃত্তিকা আবহবিকার আবহবিকার পরিবেশের একটি উল্লেখযোগ্য প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে মাটি গঠন, ধংস ও পুনঃউৎপাদিত হয়। জৈব পদার্থের উপস্থিতিতে ভূমিক্ষয় আবহবিকার, বিচূর্নিভবন ইত্যাদি প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে পাথর থেকে মাটির উদ্ভব হয়।
এই নিবন্ধের সঙ্গে প্রস্তরচাঁই খণ্ডীকরণ নিবন্ধটি একীভূত করার প্রস্তাব করা হলো। (আলোচনা করুন) প্রস্তাবের তারিখ: ফেব্রুয়ারি ২০২৪। |
যে যান্ত্রিক বা রাসায়নিক পদ্ধতিতে শিলাখণ্ড বিচূর্ণ ও বিয়োজিত হয়ে একই স্থানে পরে থাকে তখন সেই প্রক্রিয়াকে আবহবিকার বলা হয় ।
আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানগুলো যেমন- তাপ, চাপ, বায়ুপ্রবাহ, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদির মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠএর উপরিভাগে এবং কাছাকাছি অংশের শিলা যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় চূর্ণবিচূর্ণ ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় বিয়োজিত হয়ে ক্ষয়প্রাপ্ত অবস্থায় মূল শিলার ওপর অবস্থান করলে তাকে আবহবিকার বা বিচূর্ণীভবন বলা হয়। উদ্ভিদ, প্রাণী বিশেষ করে পশুপাখি ও মানুষ আবহবিকার প্রক্রিয়ায় গুরুত্ববাহী ভূমিকা গ্রহণ করে।
G.K. Gilbert সর্বপ্রথম আবহবিকার বা Weathering শব্দটি ব্যবহার করেন।
ভারতের ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের পাহাড়গুলোতে লম্বাটে ও গোলাকার আকৃতিবিশিষ্ট পাথরের চাঁই দেখা যায়। সূর্যের আলো, জল, বায়ু ইত্যাদি আবহাওয়ার উপাদানগুলো এই পরিবর্তনে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।
আবহবিকার এর মাধ্যমে শিলা চূর্ণবিচূর্ণ হয়। কিন্তু ওই অংশগুলো সেখানথেকে অপসারিত হয় না। বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি যেমন- নদী, হিমবাহ, বায়ু ইত্যাদির প্রভাবে ওই পদার্থগুলো ভূখণ্ড থেকে অপসারিত হয়। এই ধরনের অপসারণ পদ্ধতিকে ক্ষয়ীভবন বলা হয়।
একই স্থানে অবস্থান করে শিলার আবহবিকার ঘটে। মূল শিলার ওপর বিচুর্ণভূত শিলাখন্ড অসংলগ্ন ও পৃথকভাবে পড়ে থাকে। এটি একটি প্রাথমিক বা প্রস্তুতিমূলক প্রক্রিয়া যা ক্ষয়ীভবনকে সহজতর করে। আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান ও জীবজগৎ দ্বারা সংগঠিত হয়। এটি অত্যন্ত ধীরগতিসম্পন্ন প্রক্রিয়া।
একস্থান থেকে অন্যস্থানে আবহবিকারগ্রস্ত পদার্থ অপসারিত হয়ে ক্ষয়ীভবন হয়। এটি আবহবিকারের পূর্বশর্ত নয় বা এই কাজে সাহায্য করে না। মূলত প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এটি অত্যন্ত দ্রুত গতির প্রক্রিয়া।
ক্ষয়ীভবন প্রক্রিয়ার একটি অংশ হল পুঞ্জিত ক্ষয়। বড় পুঞ্জরূপে আবহবিকারপ্রাপ্ত শিলাখন্ড প্রধানত মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ভূমির ঢাল বরাবর তার মূল স্থান থেকে যখন অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হয়, তখন সেই প্রক্রিয়াকে পুঞ্জিত ক্ষয় বলে। আবহবিকারের ফলে প্রথমে শিলাস্তূপ মূল ভূখণ্ড থেকে আলগা হয়ে যায়। পরে তা ক্ষয়ীভবন প্রক্রিয়ায় অন্য জায়গায় সরে যায়। এই ঘটনাকে বলে নগ্নীভবন। এই প্রক্রিয়া ঘটে বলেই শিলা আবার নতুন করে আবহবিকারপ্রাপ্ত হয়।
আবহবিকারকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- ১. যান্ত্রিক, ২. রাসায়নিক, ৩. জৈবিক আবহবিকার।
কোনোরকম রাসায়নিক বিয়োজন ছাড়াই আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান, যথা : উষ্ণতা ও আর্দ্রতার পরিবর্তন, শিলাস্তরে চাপের বৃদ্ধি, উদ্ভিদ ও প্রাণীর জৈবিক কার্যাবলি প্রভৃতির ফলে যে প্রক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠের উপরের শিলাস্তর যান্ত্রিকভাবে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে মূল শিলার ওপর পড়ে থাকে, কিন্তু অন্যত্র অপসারিত হয় না, সেই প্রক্রিয়াটিই হল যান্ত্রিক আবহবিকার ।
যান্ত্রিক আবহবিকার চার প্রকার, ১. শল্কমোচন, ২. ক্ষুদ্রক্ণা বিশরণ, ৩. তুহিন খণ্ডীকরণ, ৪. প্রস্তরচাঁই খণ্ডীকরণ
শিলাস্তুপে বিভিন্ন খনিজ উপাদান থাকে এবং সেগুলি আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের মাধ্যমে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে। এই বিক্রিয়ার ফলে খনিজগুলির আকার, আয়তন, রং এর পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ বায়ুর বিভিন্ন গ্যাস, ভূপৃষ্ঠের জল ও অম্লের উপস্থিতিতে শিলাস্তর রাসায়নিক বিয়োজিত হলে, তাকে রাসায়নিক আবহবিকার বলে।
রাসায়নিক আবহবিকার বিভিন্ন প্রকার হয়:
আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানগুলি ছাড়াও শিলার ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তনের ঘটানোর ক্ষেত্রে অনেকসময় জীবজগৎ অর্থাৎ উদ্ভিদ ও প্রাণী বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে। তাই আর-এক ধরনের আবহবিকার হল জৈব আবহবিকার। আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানের উপস্থিতিতে উদ্ভিদ ও প্রাণীর দ্বারা শিলাস্তরের ভৌত এবং রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে থাকে, সেই ঘটনাকে জৈব আবহবিকার বলে। এটি দুই ভাবে ঘটে, যথা- ১. উদ্ভিদের দ্বারা, ২. প্রাণীর দ্বারা।
যান্ত্রিক ও রাসায়নিক আবহবিকার একসাথে কাজ করলেও এক এক জলবায়ুতে এক এক প্রকার আবহবিকারের প্রাধান্য দেখা যায় এবং সেই মতো তার ফলাফলও ঘটে থাকে। যেমন- মরু জলবায়ু অঞ্চলে ও মেরু জলবায়ু অঞ্চলে দিন ও রাতের উত্তাপের খুব বেশি ফারাকের জন্য যান্ত্রিক আবহবিকার বেশি কার্যকর হয়। অন্যদিকে, আর্দ্রতা ও প্রায় আর্দ্র জলবায়ুতে রাসায়নিক আবহবিকারের বেশি প্রাধান্য হয়। আবহবিকারের ফলাফল হল-
১. মৃত্তিকা সৃষ্টি, ২. রেগোলিথ গঠন, ৩. শিলায় ফাটল ও ভাঙন সৃষ্টি, ৪. নদী, হিমবাহের দ্বারা ধসের সম্ভাবনা ঘটে, ৫. শিলাখন্ড মূল ভূমি থেকে আলগা হয়ে যায়, ৬. শিলাস্তুপে ক্ষয়, ৭. ভূমির উচ্চতা কমে যায়, ৮. শিলার বাইরের ও ভিতরের বৈশিষ্টের পরিবর্তন
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article মৃত্তিকা আবহবিকার, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.