সিমেন্ট, বালি, খোয়া (ইটের টুকরো), পাথরের টুকরো পানির সঙ্গে মিশিয়ে যে নির্মাণসামগ্রী বা মিশ্রণ (মশলা) তৈরি করা হয়, তাকে ঢেলে চাপ দিয়ে নির্দিষ্ট আকার দেয়া হয়। শুকানোর পর একেই কংক্রিট বলে।
সাধারণ কংক্রিটের চাপ (টান) ও ঘাতসহতা ক্ষমতা কম। তাই মধ্যখানে লোহা বা ইস্পাতের রড রেখে তার চারিদিকে কংক্রিট জমালে তা অত্যন্ত শক্ত এবং চাপ ও ঘাতসহ হয়। এ ধরনের কংক্রিটকে বলে রি-ইনফোর্সড (re-inforced) কংক্রিট অথবা রি-ইনফোর্সড সিমেণ্ট কংক্রিট, সংক্ষেপে আর সি সি (RCC)। কংক্রিট এর মধ্যে বাতাসের পরিমাণ যত কম, অর্থাৎ ঘনত্ব যত বেশি হয় এবং পানি ও সিমেন্টের অনুপাত যত কম হয় কংক্রিট তত বেশি শক্ত হয়। তবে এ অনুপাত ০.২ এর কম হলে সিমেন্টের হাইড্রেশন বিক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পানির স্বল্পতা থাকায় এ কংক্রিটের শক্তিমত্তা কম হয়।
অনেক প্রাচীন সভ্যতায় কংক্রিট ব্যবহার করা হয়েছে। মিসরের পিরামিড নিয়ে এক গবেষণায় বলা হয়, পিরামিড তৈরিতে কংক্রিট এর ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে।রোমক সাম্রাজ্যে চূনা(quicklime) পোজ্জলানা(pozzolana) এবং পামিস(pumice) দিয়ে রোমক কংক্রিট তৈরি করা হত যা দিয়ে অনেক রোমক স্থাপত্যশিল্পে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু বলা হয় রোমকরা কংক্রিট তৈরি করে নি।.
কংক্রিটের প্রধান উপাদান হল সিমেন্ট, পাথর, বালি এবং পানি। বিভিন্ন কাজের ব্যবহার উপযোগী করতে এর সাথে রাসায়নিক মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়।
দৈনন্দিন কাজে সাধারণত পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়। এটি কংক্রিট, মর্টার এবং প্ল্যাস্টারের মৌলিক উপাদান। বাংলাদেশে অর্ডিনারি পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট (CEM I) এবং পোর্টল্যান্ড কমপোসিট সিমেন্ট (CEM II) তৈরী হয়। এর প্রধান উপাদান হল: ক্যালসিয়াম সিলিকেট (C2S, C3S), ট্রাইক্যালসিয়াম অ্যালুমিনেট (C3A) and ক্যালসিয়াম অ্যালুমিনোফেরেট (C4AF) এবং জিপসাম
রাসায়নিক মিশ্রণ সাধারণত পাউডার অথবা তরল অবস্থায় থাকে। চাহিদামত কংক্রিট তৈরি করার জন্য ইহা কংক্রিটের সাথে যোগ করা হয়। সাধারণত সিমেন্টের ওজনের ৫% এর নিচে এর ব্যবহার হয়। মিশ্রণ অনেক রকম হতে পারে, যেমন:
বেশি পরিমাণের কংক্রিট সাধারণত ব্যাচিং প্ল্যান্টে করা হয়ে থাকে। অল্প পরিমাণের কংক্রিট হাতে অথবা সাধারণ মিশ্রণ যন্ত্রে (মিক্সার মেশিনে) তৈরি করা সম্ভব। ব্যাচিং প্ল্যান্টে সাধারণত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কংক্রিট তৈরি করা হয়। এক্ষেত্রে ঘণ্টায় ১০০ ঘনমিটার পর্যন্ত কংক্রিট তৈরি করা যায়।
ব্যবহার এবং কংক্রিটের শক্তিমত্তার উপর নির্ভর করে কংক্রিটের মিক্স ডিজাইন করা হয়। বাংলাদেশে সাধারণত ACI-211 অনুসরণ করে কংক্রিটের মিক্স ডিজাইন করা হয়।
ওয়ার্কিবিলিটি (Workability) হল ফ্রেশ (মাত্র তৈরী করা) কংক্রিটের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্ম, যা দ্বারা পরিমাপ করা হয় এর কর্মযোগ্যতা। সাধারণত slump test এর মাধ্যমে কংক্রিটের ওয়ার্কিবিলিটি মাপা হয়। slump cone এর উচ্চতা ১২ ইঞ্চি, নিচের দিকের ব্যাস ৮ ইঞ্চি এবং উপরের দিকের ব্যাস ৪ ইঞ্চি। এটি কংক্রিট দ্বারা ভর্তি করে কোণটি উঠিয়ে ফেলা হয়, তারপর কংক্রিটের উচ্চতা ১২ ইঞ্চি থেকে কতটুকু কমল সেটি মাপা হয়। এ পরিমাপ সাধারণত ইঞ্চি, সেন্টিমিটার বা মিলিমিটারে প্রকাশ করা হয়। এ পরিমাণটি slump value নামে পরিচিত।
সাধারণত সিলিন্ডার বা ঘনক আকৃতির নমুনা নিয়ে ইউনিভারসাল টেস্টিং মেশিনে কংক্রিটের শক্তিমত্তা বের করা হয়। সিলিন্ডারের উচ্চতা ব্যাসের দ্বিগুন হয়। নমুনা হিসেবে ঘনক ব্যবহার করলে স্ট্রেন্থ একই উপাদানের সিলিন্ড্রিক্যাল নমুনা হতে বেশি দেখায়। এর কারণ হল দৈর্ঘ্য বরাবর দৈর্ঘ্য সংকোচনের কারণে প্রস্থ হ্রাস পায়। প্রস্থ বরাবর ইউসিসি মেশিনের সাথে তুলনামূলক বেশি ঘর্ষণের ফলে ঘনকে শক্তি বেশি দেখায়। বাংলাদেশে সাধারণত ASTM C39 অনুসারে ৪ ইঞ্চি ব্যাস এবং ৮ ইঞ্চি উচ্চতার সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়।
কিউরিং বলতে বোঝায় কংক্রিটকে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখা। কংক্রিটের শক্তিমত্তা নির্ভর করে এর উপাদান সিমেন্টের সাথে পানির হাইড্রেশন বিক্রিয়ার উপর। তাই সাধারণভাবে কিউরিং ভাল হলে কংক্রিটের শক্তি বেশি হয়।
কংক্রিট সাধারণত compressive strength নিতে পারে কিন্তু tensile strength নিতে পারে না। tensile strength নেয়ার জন্য সাধারণত লোহা বা ইস্পাতের রিইনফোর্সমেন্ট রড দেয়া হয়। এ রড এবং কংক্রিট একত্রে সাধারণভাবে আরসিসি (reinforced cement concrete, RCC) নামে পরিচিত। এছাড়া কংক্রিটকে আগের থেকে compressive শক্তি প্রয়োগ করলে এটি কিছুটা Tensile Force নিতে পারে। এ ধরনের কংক্রিট প্রিস্ট্রেসড কংক্রিট নামে পরিচিত। ঢালাইয়ের আগে এবং পরে দুভাবেই প্রিস্ট্রেস দেয়া সম্ভব।
কংক্রিট নির্মাণকাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পাকা বাড়ি, দালান-কোঠা, পুল-কালভার্ট, এমনকী সড়ক নির্মাণে কংক্রিট অপরিহার্য। সম্প্রতি বিভিন্ন ধরনের মূর্তি, ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণেও কংক্রিট ব্যবহৃত হচ্ছে। এসফল্টের রাস্তার চেয়ে কংক্রিটের রাস্তার এককালীন নির্মাণ ব্যয় বেশি হলেও সাধারণত এটি তুলনামুলক বেশি টেকসই হওয়ায় গড়পড়তা খরচ কম। তাছাড়া উচ্চ গতির রাস্তা তৈরির জন্য কংক্রিট ব্যবহার করা হয়। স্টিল কাঠামোর চেয়ে কংক্রিটের কাঠামো তুলনামূলক বেশি অগ্নিসহ। তবে ভূমিকম্পে tensile লোড আসে বলে রিইনফোর্সমেন্ট না থাকলে শুধু কংক্রিট ভেঙে পড়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article কংক্রিট, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.