আর্নস্ট হেকেল

আর্নস্ট হেনরিখ ফিলিপ আগস্ট হেকেল (Ernst Heinrich Philipp August Haeckel, জার্মান: ; ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৮৩৪ - ৯ আগস্ট ১৯১৯) একজন জার্মান প্রাণীবিজ্ঞানী, প্রকৃতিবিদ, ইউজেনিস্টিস্ট, দার্শনিক, চিকিৎসক, অধ্যাপক, সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী এবং শিল্পী। তিনি হাজার হাজার নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন, বর্ণনা করেছেন এবং নামকরণ করেছেন, সমস্ত জীবের একটি বংশবৃতান্ত লতিকা অঙ্কণ করেছেন এবং ইকোলজি (বাস্তুতন্ত্র) সহ জীববিজ্ঞান এর অনেক পরিভাষা তৈরি করেছেন। ফাইলাম, ফাইলোজেনি, এবং প্রোটিস্টা পরিভাষাও তাঁরই সৃষ্টি। হেকেল জার্মানিতে চার্লস ডারউইন এর কাজের প্রচার ও জনপ্রিয়করণের কাজ করেছিলেন।

আর্নস্ট হেকেল
আর্নস্ট হেকেল
জন্ম
আর্নস্ট হেনরিখ ফিলিপ আগস্ট হেকেল

(১৮৩৪-০২-১৬)১৬ ফেব্রুয়ারি ১৮৩৪
পটসডাম, প্রুশিয়া কিংডম
মৃত্যু৯ আগস্ট ১৯১৯(1919-08-09) (বয়স ৮৫)
জেনা, ওয়েমার প্রজাতন্ত্র
জাতীয়তাজার্মান
মাতৃশিক্ষায়তন
  • বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়
  • ওয়ার্জবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়
  • জেনা বিশ্ববিদ্যালয়
পুরস্কার
  • লিনিয়ান পদক (১৮৯৪)
  • ডারউইন – ওয়ালেস পদক (রৌপ্য, ১৯০৮)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
প্রতিষ্ঠানসমূহজেনা বিশ্ববিদ্যালয়
Author abbrev. (zoology)হেকেল

হেকেলের প্রকাশিত ১০০ টিরও বেশি শিল্পকর্মের মধ্যে বিশদ বহু বর্ণের প্রাণী ও সমুদ্রের প্রাণীর চিত্র অলংকরণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা তাঁর কুনস্টফর্মেন ডার ন্যাচুরে (" প্রকৃতির আর্ট ফর্ম") তে সংগৃহীত রয়েছে। দার্শনিক হিসাবে আর্নস্ট হেকেল রচনা করেন ডাই ওয়েলথ্র্যাসেল লিখেছিলেন (১৮৯৫-১৮১৮; ইংরাজীতে রিডল অফ দ্য ইউনিভার্স, ১৯০১)। এতে তিনি শিক্ষার বিবর্তনের সমর্থনে "ওয়ার্ল্ড রিডল" (ওয়েলটার্সটেল) শব্দটির উদ্ভাবণ করেন এবং বিজ্ঞান ও শিক্ষার স্বাধীনতা সম্পর্কিত তাঁর অভিমত প্রকাশ করেন।

হেকেল বৈজ্ঞানিক বর্ণবাদ এর প্রচারক ছিলেন এবং সামাজিক ডারউইনবাদ ধারণার অনুসারী ছিলেন।

আর্নস্ট হেকেল
১৮৬০ সালের বড়দিনে (২৬ বছর)

জীবন

আর্নস্ট হেকেল জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৩৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তারিখে পটসডাম এ (তখন প্রুসিয়া রাজ্যর অংশ)। ১৮৫২ সালে হেকেল মার্সবার্গ এর ক্যাথেড্রাল হাই স্কুল ডমজিমনেসিয়াম থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। এরপরে তিনি বার্লিন এবং ওয়ার্জবার্গ এ অ্যালবার্ট ভন কলিকার, ফ্রাঞ্জ লাইডিগ, রুডল্ফ ভার্চো (যিনি পরে তিনি তাঁর সাথে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সহকারী হিসাবে কাজ করেছিলেন) এবং অ্যানাটমিস্ট-ফিজিওলজিস্ট জোহানেস পিটার মুলার (১৮০১-১৮৫৮) এর সাথে চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। হারমান স্টুডনার এর সাথে তিনি একসাথে ওয়ার্জবার্গে উদ্ভিদবিজ্ঞান এ বক্তৃতায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৫৭ সালে তিনি মেডিসিনে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে চিকিৎসা অনুশীলনের লাইসেন্স লাভ করেন। অসুস্থ রুগীদের সংস্পর্শে আসার পর হেকেলের কাছে চিকিৎসকের পেশা অনেক কম সার্থকতা লাভ করে।

আর্নস্ট হেকেল 
পরবর্তী জীবনে

আর্নস্ট হেকেল কার্ল জেজেনবাউর এর অধীনে তিন বছর জেনা বিশ্ববিদ্যালয় এর অধীনে পড়াশোনা করেন এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হওয়ার আগে ১৮৬১ সালে তুলনামূলক অ্যানাটমিতে একটি দায়িত্ব অর্জন করেন। জেনায় তিনি ১৮৬২ থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত ৪৭ বছর অবস্থান করেছিলেন। ১৮৫৯ থেকে ১৮৬৬ এর মধ্যে হেকেল অনেকগুলি ফাইলা যেমন রেডিওলারিয়ান, ছিদ্রাল (স্পঞ্জ) এবং অঙ্গুরীমাল (বিভক্ত কৃমি) এর উপর কাজ করেছিলেন। ভূমধ্যসাগর ভ্রমণের সময় হেকেল প্রায় দেড়শো নতুন প্রজাতির রেডিওলারিয়ানের নামকরণ করেছিলেন।

১৮৬৬ থেকে ১৮৬৭ পর্যন্ত হেকেল ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ এ হারমান ফোল এর সাথে একটি সফর করেছিলেন। ১৮৬৬ সালের ১৭ অক্টোবরে তিনি লন্ডনে পৌঁছেছিলেন। পরের কয়েক দিন তিনি চার্লস লাইল এর সাথে দেখা করেছিলেন এবং তাঁদের বাড়িতে টমাস হাক্সলি এবং তাঁর পরিবারের সাথে দেখা হয়। ২১ অক্টোবর তিনি কেন্টের ডাউন হাউস এ চার্লস ডারউইন এর সাথে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। ১৮৬৭ সালে তিনি অ্যাগনেস হাস্ককে বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের ছেলে ওয়াল্টার ১৮৬৮ সালে তাঁদের কন্যা এলিজাবেথ ১৮৭১ এবং ১৮৭৩ সালে এমা জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৮৬৯ সালে তিনি নরওয়ে, ১৮৭১ সালে ক্রোয়েশিয়া (যেখানে তিনি হাভার দ্বীপে একটি বিহারে থাকতেন) গবেষক হিসাবে ভ্রমণ করেন, এবং ১৮৭৩ সালে মিশর, তুরস্ক, এবং গ্রীস এ গিয়েছিল। ১৯০৭ সালে তিনি জনসাধারণকে বিবর্তন সম্পর্কে শেখানোর জন্য জেনায় একটি যাদুঘর তৈরি করেছিলেন। ১৯০৯ সালে হেকেল শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং ১৯১০ সালে তিনি ইভাঞ্জেলিকাল চার্চ অফ প্রুসিয়া থেকে সরে আসেন।

তাঁর ৮০ তম জন্মদিন উদ্‌যাপন উপলক্ষে জার্মান মনিস্টেনবুন্ডের অনুরোধে জেনার হেইনরিচ স্মিথড সম্পাদিত ওয়াস ওয়্যার আর্নস্ট হেকেল রায়ড্যাঙ্কেন (হোয়াট উই ওয় আর্নস্ট হেকেল) শীর্ষক একটি দ্বি-খণ্ড রচনা উপস্থাপন করা হয়েছিল।

১৯১৫ সালে হেকেলের স্ত্রী অ্যাগনেস মারা যান এবং হাত-পা ভেঙে তাঁরও যথেষ্ট পরিমাণে কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। তিনি ১৯১৮ সালে জেনা তে তার "ভিলা মেডুসা" কার্ল জিস ফাউন্ডেশন এর কাছে বিক্রি করে দেন। এখানে তাঁর গ্রন্থাগারটি সংরক্ষণ রয়েছে। ১৯১৯ সালের ৯ আগস্ট হেকেল মারা যান।

হেকেল জার্মানিতে মনিজম (মতবাদ) এর জন্যও বিখ্যাত ছিলেন।

পাদটীকা

Tags:

ইকোলজিচার্লস ডারউইনজীববিজ্ঞানপ্রজাতিপ্রোটিস্টাসাহায্য:আধ্বব/মানক জার্মান

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরবাঙালি হিন্দু বিবাহগনোরিয়াবিপন্ন প্রজাতিশাকিব খানবঙ্গভঙ্গ আন্দোলনমরিশাসমালয় ভাষাঅক্সিজেনকিশোরগঞ্জ জেলামহেরা জমিদার বাড়িবাংলা ভাষাসহীহ বুখারীকোষ (জীববিজ্ঞান)মাইটোকন্ড্রিয়াফরাসি বিপ্লবের কারণচতুর্থ শিল্প বিপ্লবদারাজমাশাআল্লাহনরসিংদী জেলাফুলপ্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়মারি অঁতোয়ানেততারেক রহমানমীর মশাররফ হোসেনপাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭০সূরা ইখলাসসেন্ট মার্টিন দ্বীপছোলাগীতাঞ্জলিভাষামানব শিশ্নের আকারইসলামে বিবাহভারতের জনপরিসংখ্যানজোয়ার-ভাটারেনেসাঁপ্রবালময়মনসিংহ জেলাটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাপৃথিবীর ইতিহাসআয়নিকরণ শক্তিরামমোহন রায়অর্শরোগবাংলাদেশ বিমান বাহিনীআসমানী কিতাবকার্বনইহুদিআবদুর রব সেরনিয়াবাতহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরমাইটোসিসরাদারফোর্ড পরমাণু মডেলআশাপূর্ণা দেবীআদমভৌগোলিক আয়তন অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাফেরদৌস আহমেদসামরিক বাহিনীআল পাচিনোস্নায়ুকোষবিকাশটেনিস বল২০২২-এ ইউক্রেনে রুশ আক্রমণমহাদেশ অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকানিউটনের গতিসূত্রসমূহরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়মেঘনাদবধ কাব্যমৌর্য সাম্রাজ্যসুকুমার রায়দ্বিপদ নামকরণইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজিমাহদীঢাকা বিভাগরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরচর্যাপদছায়াপথইউসুফবারো ভূঁইয়াস্বরধ্বনিভারতের রাষ্ট্রপতিকোষ নিউক্লিয়াস🡆 More