হ্যালোইন

হ্যালোইন বা হ্যালোউইন (/ˌhæləˈwiːn, -oʊˈiːn, ˌhɑːl-/; অল হ্যালোজ' ইভ-এর সংক্ষিপ্ত রূপ), এছাড়াও অলহ্যালোইন অল হ্যালোজ' ইভ, বা অল সেইন্টস' ইভ হিসাবে পরিচিত, একটি বার্ষিক উদ্‌যাপন বা ছুটির দিন যা প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে পালিত হয় ৩১ অক্টোবর তারিখে, অল হ্যালোজ' ডে বা সমস্ত হ্যালোজ দিবসে পাশ্চাত্য খ্রিস্টীয় ভোজোৎসবের প্রাক্কালে। লিটার্জিকাল বছরের এই দিনটি নিবেদন করা হয় মৃত, সাধু (হ্যালোজ), শহীদ এবং সমস্ত বিশ্বস্ত বিদেহী বিশ্বাসীদের স্মরণ করে। হ্যালোইন উৎসবের প্রাক্কালে যেই মূল ধারণা বা থিম অনুসরন কর হয় তা হলো হাস্যরস ও উপহাসের সাহায্যে মৃত্যুর ক্ষমতার মুখমুখি হওয়া।

হ্যালোইন
হ্যালোইন
জ্যাক-ও'-ল্যান্টার্ন, মৃত আত্মার প্রতিনিধিত্বকারী হ্যালোইনের প্রতীক
অন্য নামহ্যালো'ইন
অলহ্যালো'ইন
অল হ্যালোজ' ইভ
অল সেইন্টস' ইভ
পালনকারীপাশ্চাত্য খ্রিস্টান এবং অনেক বিশ্বের অ-খ্রিস্টান
তাৎপর্যঅলহ্যালোটাইডের প্রথম দিন
উদযাপনট্রিক-অর-ট্রিটিং, পরিচ্ছদ ভোজসভা, জ্যাক-ও'-ল্যান্টার্ন তৈরি, অগ্ন্যুৎসব প্রজ্বলন, ভবিষ্যৎ কথন, আ্যপ‌্ল ববিং, ভুতুড়ে বাড়িতে ভ্রমণ
পালনগীর্জা সেবা, প্রার্থনা, উপবাস, এবং নিশিপালন
তারিখ৩১ অক্টোবর
সংঘটনবার্ষিক
সম্পর্কিতটোটেনসন‌্টাগ, ব্লু ক্রিসমাস, মৃতের বৃহস্পতিবার, সামহেন, হপ-তু-না, ক্যালান গেয়াফ, অ্যালানটাইড, মৃত দিবস, সংস্কার দিবস, অল সেইন্টস' ডে, দুষ্টুমির রাত (cf. নিশিপালন)

অনেক পণ্ডিতদের মতে, "হ্যালোইন" বা "অল্ হ্যালোজ্ ইভ্" হলো খ্রিস্টধর্মের একটি বার্ষিক উৎসব যা প্রাথমিকভাবে কেলটিক ফসল কাটার উৎসব দ্বারা প্রভাবিত। অন্যান্য পণ্ডিতদের মতে, এই উৎসবটির স্বতন্ত্র উৎপত্তি সামহেন থেকে এবং এর মূলে সরাসরি খ্রিস্টধর্মের প্রভাব বিদ্যমান।

হ্যালোইন উৎসবে পালিত কর্মকাণ্ডের মধ্যে আছে 'ট্রিক-অর-ট্রিট', 'বনফায়ার' বা অগ্ন্যুৎসব, আজব পোষাকের পার্টি, ভৌতিক স্থান ভ্রমণ, ভয়ের চলচ্চিত্র দেখা ইত্যাদি। আইরিশ ও স্কটিশ অভিবাসীরা ১৯শ শতকে এই ঐতিহ্য উত্তর আমেরিকাতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলিও হ্যালোইন উদ্‌যাপন করা শুরু করে। বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের অনেকগুলি দেশে হ্যালোইন পালিত হয়, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, আয়ারল্যান্ড, পুয়ের্তো রিকো, এবং যুক্তরাজ্য। এছাড়া এশিয়ার জাপানে এবং অস্ট্রেলিয়ানিউজিল্যান্ডেও হ্যালোইন পালিত হয়।

ব্যুৎপত্তি

"হ্যালোইন" বা "হ্যালোউইন" শব্দটির উৎপত্তি ১৭৪৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মূলত খ্রিস্টীয় ধর্ম থেকে হয়েছে। "হ্যালোইন" শব্দের অর্থ "শোধিত সন্ধ্যা" বা "পবিত্র সন্ধ্যা"। এই শব্দটি স্কটিশ ভাষার শব্দ "অল হ্যালোজ' ইভ" থেকে এসেছ। স্কটে ব্যবহৃত "ইভ" শব্দটি সংকুচিত বা সংক্ষিপ্ত হয়ে "ইন" হয়ে যায়। এভাবে সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়ে "হ্যালোজ' ইভ" শব্দটি "হ্যালোইন"-এ রূপান্তরিত হয়। যদিও "অল হ্যালোজ" শব্দটি প্রাচীন ইংরেজিতে পাওয়া যায়, তবে শব্দটি ১৫৫৬ সালের পরে আর ব্যবহৃত হয়নি।

ইতিহাস

গ্যেলিক এবং ওয়েলস প্রভাব

হ্যালোইন 
একটি ২০শ শতকের আইরিশ হ্যালো'উইন মুখোশ, মিউজিয়াম অফ কান্ট্রি লাইফ।

এখনকার হ্যালোইন এর রীতিনীতি কেল্টিক ভাষী দেশগুলোর লোকজ রীতিনীতি ও বিশ্বাস দ্বারা প্রভাবিত বলে ধারণা করা হয়; সেসব দেশের কয়েকটি প্যাগান বা পৌত্তলিক ধর্মাবলম্বি আর অন্যান্যগুলো কেলটিক খ্রিস্টধর্ম অবলম্বন করে থাকে। জ্যাক স্যানটিনো, একজন লোকাঁচারবাদি, লিখেছেন "উত্তর আয়ারল্যান্ডে পবিত্রতা ও ধর্ম হলো হ্যালোইনকে বোঝার মৌলিক প্রসঙ্গ, কিন্তু এই উৎসব উৎযাপন নিয়ে আয়ারল্যান্ডের সর্বত্র একটি অস্বস্তিকর সাময়িক যুদ্ধবিরতির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় খ্রিস্টধর্মের রীতিনীতি ও বিশ্বাস এবং পুর্বে আয়ারল্যান্ডে যেসব ধর্ম প্রতিষ্ঠিত ছিলো তাদের মধ্যে"। ইতিহাসবিদ নিকোলাস রজার্স "হ্যালোইন" এর মূল উৎসের অনুসন্ধান করার সময় লক্ষ্য করেন, "কিছু লোকাঁচারবাদি হ্যালোইন এর উৎস খুজে পেয়েছিলেন ফল ও বীজের দেবীকে উত্সর্গীকৃত পোমোনার রোমান ভোজোত্সবে, অথবা মৃতদের উৎসব প্যারেন্টালিয়াতে; এবং এই উৎসবগুলো সাধারনত কেল্টিকদের সামহেন উৎসবের সাথে সম্পৃক্ত"।

হ্যালোইন 
স্ন্যাপ-অ্যাপল নাইট, আয়ারল্যান্ডে হ্যালোইন উৎসব, ড্যানিয়েল ম্যাকলাইস কর্তৃক ১৮৩৩ সালে অঙ্কিত

মৃত এবং আত্মাদের রাত্রি

আইরিশ, যুক্তরাজ্য, ওয়েলশ সম্প্রদায়ের লোকেরা বিশ্বাস করতো যে প্রত্যেক নতুন বছরের আগের রাতে (৩১শে অক্টোবর) সাহেইন, মৃত্যুর দেবতা, আঁধারের রাজ পুত্র, সব মৃত আত্মা ডাক দেয়। এই দিন মহাশূন্য এবং সময়ের সমস্ত আইনকানুন মনে হয় স্থগিত করা হয় এবং জীবিতদের বিশ্ব যোগদান করতে মৃত আত্মাদের অনুমোদন করে। তারা আরও বিশ্বাস করতো যে মৃত্যুর কারণে তারা অমর যুবক হয়ে একটি জমিতে বসবাস করতো এবং আনন্দে ডাকা হতো "Tir nan Oge"। মাঝে মাঝে বিশ্বাস করতো যে স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড অঞ্চলের ছোট পাহাড়ে কখনো কখনো মৃতরা পরীদের সাথে থাকে। একটি লোককাহিনী থেকে বর্ণিত আছে যে সমস্ত মৃত ব্যক্তিরা ৩১শে অক্টোবর রাত্রিতে জীবিতদের বিশ্বে আসে আগামী বছরের নতুন দেহ নেওয়ার জন্য। এজন্য গ্রামবাসীরা এই খারাপ আত্মাদের থেকে বাচাঁর জন্য ব্যবস্থা নেয়। এই প্রথাটি ছিল পবিত্র বেদি আগুন বন্ধ করা এবং নতুন আগুন জ্বালানো হতো (যেটি নতুন বছরের আগমন প্রতীক হিসাবে ছিল) পরবর্তী প্রভাতে। আইরিশ, যুক্তরাজ্যবাসী কেল্টদিগের পরোহিতরা তারা মিলিত হতো একটি অন্ধকার ওক (পবিত্র গাছ হিসেবে বিবেচনা করা হতো) বনের ছোট পাহাড়ে নতুন আগুন জ্বালানোর জন্য এবং বীজ ও প্রাণী উৎসর্গ করতো। আগু্নের চারিদিকে নাচতো এবং গাইতো প্রভাত পর্যন্ত, পথ অনুমোদন করেতো সৌর বছর এবং আঁধার ঋতু্র মধ্যে। যখন প্রভাত হয়, আইরিশ, যুক্তরাজ্যবাসী কেল্টদিগের পরোহিতরা প্রতি পরিবার থেকে জ্বলানো অগ্নির কয়লা পরিধান করতো।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

হ্যালোইন ব্যুৎপত্তিহ্যালোইন ইতিহাসহ্যালোইন মৃত এবং আত্মাদের রাত্রিহ্যালোইন তথ্যসূত্রহ্যালোইন আরো পড়ুনহ্যালোইন বহিঃসংযোগহ্যালোইনChristianityসন্ধ্যাসাধুসাহায্য:আধ্বব/ইংরেজি

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

তরমুজবাংলাদেশের সর্বাধিক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রসমূহের তালিকাবাংলাদেশ সরকারহিসাববিজ্ঞানঈদুল আযহাবুর্জ খলিফাতাপমাত্রাজহির রায়হানমুর্শিদাবাদ জেলাবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীশবনম বুবলিপানিপথের যুদ্ধআহসান মঞ্জিলমাযহাবঅসহযোগ আন্দোলন (ব্রিটিশ ভারত)এশিয়াপথের পাঁচালী (চলচ্চিত্র)শিশ্ন বর্ধনজানাজার নামাজউপন্যাসবাংলাদেশের কোম্পানির তালিকাকুয়েতসমাজবিজ্ঞানসাধু ভাষালগইনহানিফ সংকেতঅর্থ (টাকা)আল্লাহর ৯৯টি নামনারী খৎনারামায়ণদারুল উলুম দেওবন্দবাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসআগলাবি রাজবংশজয়া আহসানপাকিস্তানঅব্যয় পদইতিহাসহীরক রাজার দেশেভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনসূর্যইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিবৌদ্ধধর্মভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০লালবাগের কেল্লাকালেমাবৈষ্ণব পদাবলিভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসরশ্মিকা মন্দানাস্বাস্থ্যের উপর তামাকের প্রভাবঐশ্বর্যা রাইবাংলাদেশ নৌবাহিনীবিশেষ শাখা (বাংলাদেশ পুলিশ)ভারতের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাতাপ সঞ্চালনস্মার্ট বাংলাদেশআগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাহরে কৃষ্ণ (মন্ত্র)কমনওয়েলথ অব নেশনসফরিদপুর জেলারূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগাঁজা (মাদক)আর্কিমিডিসের নীতিওয়েবসাইটজাতিসংঘধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরানিরোভারতে নির্বাচনশনি (দেবতা)বেল (ফল)২০২২ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জিম্বাবুয়ে সফরবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদবি১৮৫৭ সিপাহি বিদ্রোহনারীইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনগাজওয়াতুল হিন্দহাদিসকিশোর কুমার🡆 More