অমিতাভ বচ্চন (হিন্দি: अमिताभ बच्चन; জন্ম: অমিতাভ শ্রীবাস্তব, ১১ অক্টোবর ১৯৪২) হলেন একজন জনপ্রিয় ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, টেলিভিশন উপস্থাপক ও সাবেক রাজনীতিবিদ। ১৯৭০-এর প্রথম দিকে তিনি বলিউড চলচ্চিত্র জগতে রাগী যুবক হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেন এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন। অমিতাভের পুত্র অভিনেতা অভিষেক বচ্চন, এই জন্য অমিতাভ 'বিগ বি' বা বড় বচ্চন নামেও পরিচিত। বলিউডের শাহেনশাহ ও সহস্রাব্দের সেরা তারকা হিসেবে পরিচিত বচ্চন তার পাঁচ দশকের অধিক সময়ের কর্মজীবনে ২০০টির অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। বচ্চনকে ভারতীয় চলচ্চিত্র তথা বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা ও প্রভাবশালী অভিনেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তার একচ্ছত্র আধিপত্যের জন্য ফরাসি চলচ্চিত্র সমালোচক ও পরিচালক ফ্রঁসোয়া ত্রুফো তাকে একক-ব্যক্তি চলচ্চিত্র শিল্প বলে অভিহিত করেন।
অমিতাভ বচ্চন | |
---|---|
अमिताभ बच्चन | |
জন্ম | অমিতাভ শ্রীবাস্তব ১১ অক্টোবর ১৯৪২ |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
অন্যান্য নাম | অমিত |
মাতৃশিক্ষায়তন | কিরোরি মাল কলেজ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় (বিএস) |
পেশা | অভিনেতা, প্রযোজক, কণ্ঠশিল্পী, টেলিভিশন উপস্থাপক |
কর্মজীবন | ১৯৬৯–বর্তমান |
প্রতিষ্ঠান | অমিতাভ বচ্চন কর্পোরেশন |
দাম্পত্য সঙ্গী | জয়া ভাদুড়ি (১৯৭৩–বর্তমান) |
সন্তান | শ্বেতা বচ্চন নন্দা অভিষেক বচ্চন |
পিতা-মাতা |
|
আত্মীয় | ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন (পুত্রবধূ) |
পরিবার | দেখুন বচ্চন পরিবার |
পুরস্কার | সম্পুর্ণ তালিকা |
সম্মাননা |
|
সংসদ সদস্য, লোকসভা | |
কাজের মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর ১৯৮৪ – জুলাই ১৯৮৭ | |
পূর্বসূরী | জনেশ্বর মিশ্র |
উত্তরসূরী | ভিপি সিং |
সংসদীয় এলাকা | এলাহাবাদ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
রাজনৈতিক দল | ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (১৯৮৪–১৯৮৭) |
স্বাক্ষর | |
বচ্চন তার কর্মজীবনে অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন; তন্মধ্যে রয়েছে ৪টি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ১৫টি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পুরস্কার। ফিল্মফেয়ারে অভিনয়ের জন্য প্রদত্ত পুরস্কারের বিভাগে তিনি সর্বাধিক মনোনয়ন পাওয়ার রেকর্ড করেছেন। অভিনয় ছাড়াও তাকে নেপথ্য গায়ক, চলচ্চিত্র প্রযোজক, টেলিভিশন সঞ্চালক হিসেবেও দেখা গেছে। তিনি গেম শো ফ্র্যাঞ্চাইজ হু ওয়ান্টস টু বি আ মিলিয়নিয়ার-এর ভারতীয় সংস্করণ কৌন বনেগা ক্রোড়পতি অনুষ্ঠানের কয়েকটি মৌসুমের সঞ্চালনা করেন। ১৯৮০-এর দশকে তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত ভারতীয় সংসদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন।
শিল্পকলায় তার অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে ভারত সরকার তাকে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মশ্রী, ২০০১ সালে তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ, এবং ২০১৫ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মবিভূষণে ভূষিত করে। বিশ্ব চলচ্চিত্রে তার অনন্য কর্মজীবনের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৭ সালে ফ্রান্স সরকার তাকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা লেজিওঁ দনরের নাইট উপাধিতে ভূষিত করে।
অমিতাভ বচ্চনের জন্ম উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে। তার পিতা হরিবংশ রাই বচ্চন একজন নামকরা হিন্দি কবি ছিলেন। তার মা তেজি বচ্চন ফৈসলাবাদের (এখন পাকিস্থানে)। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিস্মরণীয় শব্দযূথ ইনকিলাব জিন্দাবাদের অণুপ্রেরণায় বচ্চনের প্রথম নামকরণ হয়েছিল ইনকিলাব। পরে তার নাম বদলে রাখা হয় অমিতাভ অর্থাৎ "যে আলো নির্বাপিত হয় না।" যদিও তাদের পদবী ছিলো শ্রীবাস্তব কিন্তু তার বাবা নিজের লেখা প্রকাশ করার সময় যে ছদ্ম-পদবী বচ্চন ব্যবহার করতেন সেই পদবীটিই তিনি সব জায়গায় ব্যবহার করতে শুরু করেন। এই পদবী নিয়েই অমিতাভ প্রথম ছবির জগতে আত্মপ্রকাশ করেন এবং তার পরিবারের সবাই বাইরের জগতে এই একই পদবী ব্যবহার করেন। হরিবংশ রাই বচ্চনের দুই ছেলের মধ্যে অমিতাভ বড়। তার ছোট ছেলের নাম অজিতাভ রাই। তার মায়ের অভিনয়ে খুব উৎসাহ ছিলো কিন্তু তার সাংসারিক কর্তব্যের জন্যে তিনি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েও ছেড়ে দেন। বচ্চনের পেশা নির্বাচনের ক্ষেত্রে তার প্রভাব অনুভব করা যায় কারণ পুত্রের অভিনয় ক্ষমতার উপর তার দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো। এলাহাবাদের জ্ঞান প্রোবোধিনি এবং বয়েজ হাই স্কুলে (বি এইচ এস)-এ তিনি পড়াশোনা করেছিলেন। পরে নৈনিতালের শেরউড কলেজে কলা বিভাগে পড়াশোনা করেন।এরপরে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত কিরোরিমল কলেজ থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক হন। অভিনেতা হওয়ার উদ্দেশ্যে কুড়ি বছর বয়সে তিনি কলিকাতার (এখন কোলকাতা) ব্ল্যাকার এন্ড কোং নামে জাহাজ কোম্পানির কাজে ইস্তফা দেন।
বচ্চন, ব্যক্তিগত জীবনে অভিনেত্রী ও প্রিয়তমা জয়া ভাদুড়িকে বিয়ে করেন। তাদের দুটি সন্তান, শ্বেতা নন্দা এবং অভিষেক বচ্চন। অভিষেকও পেশায় অভিনেতা এবং তিনি অভিনেত্রী ঐশ্বর্যা রাইকে বিবাহ করেছেন।
১৯৬৯-এ বচ্চন ছবির জগতে আত্মপ্রকাশ করেন সাত হিন্দুস্তানি নামক একটি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে যেখানে সাতটি প্রধান চরিত্রের একটিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন। খোয়াজা আহমেদ আব্বাস নির্দেশিত এই ছবিটিতে অন্যান্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন উৎপল দত্ত, মধু এবং জালাল আগা। যদিও ছবিটি বাণিজ্যিক সাফল্য পায়নি, তবুও বচ্চন এই ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে শ্রেষ্ঠ নতুন অভিনেতা হিসেবে তার প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।
এরপরেই তাকে রাজেশ খান্নার সঙ্গে দেখা যায় আনন্দ (১৯৭১) ছবিতে যা বাণিজ্যিক সাফল্যর সঙ্গে সঙ্গে চলচ্চিত্র সমালোচকদের প্রশংসাও আদায় করেছিল। এই ছবিতে, জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ এক ডাক্তারের ভূমিকায় অভিনয় করে বচ্চন ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ সহ অভিনেতার পুরস্কার পান। পরওয়ানা (১৯৭১) ছবিতে অমিতাভ একজন মোহগ্রস্থ প্রেমিকের ভূমিকায় অভিনয় করেন। ছবিটিতে নবীন নিশ্চল, যোগিতা বালি এবং ওমপ্রকাশও অভিনয় করেছিলেন। এই ছবিটি উল্লেখযোগ্য কারণ এটি সেই হাতে গোনা ছবিগুলির মধ্যে একটি যেখানে বচ্চন খলনায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। এই ছবির পর তার অভিনীত বেশ কতগুলি ছবি বক্স অফিসে বাণিজ্যিক সাফল্যের মুখ দেখেনি। তার মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য রেশমা অর শেরা (১৯৭১)। এই সময়েই তিনি অতিথি শিল্পী হিসেবে গুড্ডি ছবিতে কাজ করেন। এই ছবিতে ধর্মেন্দ্রর বিপরীতে তার ভাবি স্ত্রী জয়া ভাদুড়ি অভিনয় করেছিলেন। তার কর্মজীবনের প্রথম থেকেই গম্ভীর ব্যারিটোন কন্ঠস্বরের জন্য প্রশংসিত বচ্চন, বাবুর্চি ছবির কিছু অংশে ভাষ্যকারের কাজ করেছিলেন। ১৯৭২-এ তিনি এস.রামানাথনের নির্দেশিত একটি রোড অ্যাকশন কমেডি বোম্বে টু গোয়া ছবিতে অভিনয় করেন। এই ছবিতে তাকে অরুণা ইরানি, মেহমুদ, আনোয়ার আলি এবং নাসির হুসেনের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে দেখা গিয়েছিলো।
১৯৭৩-এ বচ্চনের চলচ্চিত্র জীবনে একটা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসে যখন পরিচালক প্রকাশ মেহেরা তার জঞ্জীর (১৯৭৩) ছবির মুখ্য ভূমিকা, ইন্সপেক্টর বিজয় খান্নার চরিত্রে তাকে নির্বাচিত করেন। এই ছবিটি আগের সমস্ত রোম্যান্টিক ছবির থেকে পুরোপুরি অন্য ঘরানার হওয়ায় অমিতাভ "রাগী যুবক" হিসেবে এক নতুন রূপে নিজেকে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পেয়েছিলেন। এর পরের ছবিগুলিতে তার অভিনীত চরিত্রের আঙ্গিক তার এই নতুন পরিচিতিকে আরো দৃঢ় করেছিল। মুখ্য চরিত্র হিসেবে এটাই তার প্রথম ছবি যা তাকে বক্স অফিসে সাফল্য এবং ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে মনোনয়ন এনে দিয়েছিলো। ১৯৭৩ সালে তিনি জয়া ভাদুড়িকে বিয়ে করেন এবং এই সময়ে একসঙ্গে বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন। শুধু জঞ্জীরই নয় অভিমান নামক ছবিটি তাদের বিয়ের এক মাস পরেই মুক্তি পেয়েছিল। এরপর বচ্চন বীরেশ চ্যাটার্জির চিত্রনাট্যে হৃষিকেশ মুখার্জির পরিচালিত সামাজিক ছবি নমক হারাম-এ বিক্রমের চরিত্রে অভিনয় করেন যার মূল বিষয় ছিলো বন্ধুত্ব। রাজেশ খান্না এবং রেখার সঙ্গে তার সহ-অভিনেতার ভূমিকায় অভিনয় প্রশংসিত হয় এবং তিনি এই চরিত্রের জন্যে ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ সহ অভিনেতার পুরস্কারও পান। ১৯৭৪-এ বচ্চনকে বেশ কিছু ছবিতে অতিথি শিল্পী হিসেবে দেখা গিয়েছিলো যেমন কুঁওয়ারা বাপ এবং দোস্ত। বছরের সবচেয়ে সফল ছবি রোটি, কাপড়া অর মকান-এ তাকে সহ অভিনেতার ভূমিকায় দেখা গিয়েছিলো। এই ছবিটির গল্প এবং নির্দেশনা ছিলো মনোজ কুমারের। অত্যাচার, দারিদ্র এবং মানসিক টানাপোড়েনের সঙ্গে সততার লড়াই ছিলো এই ছবির বিষয়বস্তু। মনোজ কুমার, শশী কাপুর এবং জিনাত আমানের বিপরীতে অমিতাভের অভিনয় ছবিকে বাণিজ্যিক সাফল্য এবং সমালোচকদের প্রশংসা এনে দেয়। ৬ই ডিসেম্বর ১৯৭৪-এ মুক্তিপ্রাপ্ত মজবুর ছবিতে অমিতাভ মুখ্য ভূমিকায় করেছিলেন। এটি হলিউডের জর্জ কেনেডি অভিনীত জিগজ্যাগ ছবির পুনর্নির্মিত সংস্করণ। ছবিটি বক্স অফিসে মাঝারিমাপের সাফল্য পায়। ১৯৭৫-এ বিভিন্ন ঘরানার যে ছবিগুলিতে তাকে দেখা গিয়েছিলো, তার মধ্যে অন্যতম ছিল মজার ছবি চুপকে চুপকে, অপরাধমূলক নাটকীয় গল্পের ভিত্তিতে তৈরি ফারার এবং রোম্যান্টিক ছবি মিলি। ১৯৭৫ সালেই তাকে দুটি ছবিতে দেখা গিয়েছিলো যা হিন্দি ছবির ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। যশ চোপড়া পরিচালিত ছবি দিওয়ার-এ তাকে মুখ্য ভূমিকায় দেখা যায়। তার সহ অভিনেতা হিসেবে ছিলেন শশী কপূর, নিরুপা রায় এবং নিতু সিংহ। এই ছবির জন্যে তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার সম্মান পান। ১৯৭৫-এ ছবিটি বক্স অফিসে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায় এবং চতুর্থ স্থান লাভ করে। ইন্ডিয়া টাইমস মুভিস এর তালিকা অনুযায়ী দিওয়ার প্রথম ২৫টি অবিস্মরণীয় বলিউড ছবির মধ্যে একটি। উল্লেখ থাকে যে একই নামে তিনি অপর একটি ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন কয়েক দশক পরে, সেটি হল দিওয়ার(২০০৪)। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এ মুক্তিপ্রাপ্ত শোলে (অর্থাৎ অগ্নিশিখা) ভারতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্র হিসেবে অভিহিত হয়েছিল। মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনা করেও এই ছবির রোজগার হয় প্রায় ২,৩৬,৪৫,০০,০০০ রুপি যা ৬০ মিলিয়ন US$-এর সমতুল্য। এই ছবিতে বচ্চন জয়দেবের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন ছবির জগতের অনেক নামজাদা তারকারা, যেমন ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, সঞ্জীব কুমার, জয়া ভাদুড়ি এবং আমজাদ খান। ১৯৯৯-এ বিবিসি ইন্ডিয়া এই ছবিটিকে "সহস্রাব্দের সেরা ছবি" বলে ঘোষণা দিয়েছিল। ইন্ডিয়াটাইমস মুভিস দিওয়ার ছবির মতো এই ছবিটিকেও প্রথম ২৫টি অবিস্মরণীয় বলিউড ছবির তালিকায় রেখেছে। একই বছরে ৫০ তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের বিচারকরা এই ছবিটিকে "ফিল্মফেয়ার পঞ্চাশ বছরের শ্রেষ্ঠ ছবি" নামক এক বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেন।
বক্স অফিসে শোলের অভাবনীয় সাফল্যর পর বচ্চন মুম্বাই ফিল্ম জগতে তার জায়গা পাকা করে নেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ পর্যন্ত তিনি অজস্র ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার এবং মনোয়ন পেয়েছিলেন।
১৯৭৬-এ পরিচালক যশ চোপড়া তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র কাভি কাভি এর জন্যে আবার তাকে বেছে নেন। এটি একটি আদ্যন্ত প্রেমের গল্প যেখানে বচ্চনকে এক কবি অমিত মালহোত্র, যে একজন সুন্দরী তরুণীর প্রেমে পড়েছে, তার ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল। ছবিতে নায়িকার ভূমিকায় ছিলেন অভিনেত্রী রাখি গুলজার। আবেগপূর্ণ সংলাপ এবং বিষয়বস্তুর নমনীয়তা দিয়ে বিচার করতে গেলে দেখা যাবে যে অমিতাভের অভিনীত অন্যান্য অ্যাকশনধর্মী চরিত্রের থেকে এই চরিত্রটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। এই ছবিতে অভিনয়ের দৌলতে তিনি আরও একবার ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কারের জন্যে মনোনীত হন। বলাই বাহুল্য ছবিটি আর্থিক ভাবেও সাফল্য লাভ করেছিল। ১৯৭৭-এ অমর আকবর অ্যান্থনী ছবিতে তার অভিনয়ের জন্যে ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পান। এই ছবিতে তিনি তৃতীয় নায়ক অ্যান্থনী গনসালেসের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। প্রথম দুজন নায়ক ছিলেন যথাক্রমে বিনোদ খান্না ও ঋষি কাপুর। ১৯৭৮ বোধহয় তার অভিনয় জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় বছর কারণ বছরের চারটি বাণিজ্যিকভাবে সফল ছবিতেই তিনি অভিনয় করেছিলেন। এরপর তিনি আবার দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করা শুরু করেন। কসমে ওয়াদে ছবিতে তার চরিত্রদ্বয়ের নাম ছিলো অমিত এবং শঙ্কর। ডন ছবিতে তার ভূমিকা ছিলো অপরাধজগতের নেতা ডন এবং ঠিক তার মতো দেখতে অন্য এক ব্যক্তি বিজয়ের। তার অভিনয়ের জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পান। সমালোচকরাও তার অভিনয়ের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেন। ত্রিশূল এবং মুকদ্দর কা সিকান্দর ছবি দুটির জন্যও তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার মনোনয়ন এবং প্রশংসা পেয়েছিলেন। কর্মজীবনের এই পর্যায়ে তার অনায়াস সাফল্য দেখে ফরাসি পরিচালক ফ্রাসোয়া ত্রুফো তাকে "ওয়ান ম্যান ইন্ডাস্ট্রি" খেতাব দিয়েছিলেন।
১৯৭৯ সালে মিস্টার নটবরলাল ছবিতে প্রথমবার অমিতাভ নিজের গলায় গান গেয়েছিলেন। এই ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন রেখা। এই ছবিতে তার অভিনয়ের জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পান এবং গানের জন্য ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ পুরুষ নেপথ্য গায়কের পুরস্কারের জন্যও মনোনয়ন লাভ করেছিলেন। ১৯৭৯-এ তিনি আবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার বিভাগে মনোনয়ন পান কালা পাত্থার (১৯৭৯) ছবির জন্যে। রাজ খোসলা পরিচালিত ছবি দোস্তানা এর জন্যও ১৯৮০-তে মনোনয়ন পান। এই ছবিতে তার সঙ্গে ছিলেন শত্রুঘ্ন সিনহা এবং জিনাত আমান। বাণিজ্যিক সাফল্যের দিক দিয়ে ১৯৮০-তে দোস্তানা শীর্ষ স্থান লাভ করেছিল। ১৯৮১-তে তিনি যশ চোপড়ার আবেগধর্মী ছবি সিলসিলা তে অভিনয় করেন। এই ছবিতে তার বিপরীতে ছিলেন তার স্ত্রী জয়া এবং রেখা যাঁকে তার প্রেমিকা হিসেবে সন্দেহ করা হত। এই সময়ের অন্যান্য ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাম বলরাম (১৯৮০), শান (১৯৮০), লাওয়ারিস (১৯৮১) এবং শক্তি (১৯৮২)। শেষ ছবিতে তার সঙ্গে ছিলেন প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা দিলীপ কুমার যাঁকে তার সময়ের শ্রেষ্ঠ অভিনেতা এবং মহাতারকা হিসেবে গণ্য করা হতো।
১৯৮২ সালে কুলি ছবির চিত্রগ্রহণ চলাকালীন একটি মারামারির দৃশ্যে সহ-অভিনেতা পুনিত ইসারের সঙ্গে অভিনয়ের সময় বচ্চন তার অন্ত্রে মারাত্মক আঘাত পান। বচ্চন ছবিটিতে কোনো স্টান্টম্যান ছাড়া নিজেই বিপদজ্জনক দৃশ্যগুলিতে অভিনয় করছিলেন। একটি দৃশ্যে তাকে টেবিলের ওপর পড়ে তারপর মাটিতে পড়ে যেতে হতো। কিন্তু যখন তিনি টেবিলের উপর ঝাঁপালেন তখন টেবিলের কোণ তার শরীরের নিম্নাংশে লেগে তার প্লীহা ফুটো করে দেয় এবং এর ফলে খুব রক্তপাত হয়। তার জরুরি প্লীহা কেটে বাদ দেওয়ার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। অনেক মাস ধরে তিনি হাসপাতালে সাংঘাতিক শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভর্তি ছিলেন। কখনো কখনো মৃত্যুর আশঙ্কাও দেখা দিয়েছিল। জনসাধারণের মধ্যে তার ভক্তকূলের অনেকেই তার প্রাণ বাঁচানোর জন্যে মন্দিরে প্রার্থনা করেন এমনকি নিজের শরীরের অঙ্গও বলি দিতে উদ্যত হয়েছিল। তিনি যখন সুস্থ হয়ে উঠছেন তখনও তাকে শুভেচ্ছা জানাবার জন্যে তার গুণমুগ্ধ ভক্তরা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতো। তা সত্ত্বেও তার সেরে উঠতে বেশ কিছু মাস সময় লেগে যায়। তিনি সেই বছরের শেষের দিকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর আবার কাজ শুরু করেন। এই ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৮৩ সালে। খানিকটা বচ্চনের দুর্ঘটনাজনিত প্রচারের কারণেও ছবিটি বক্স অফিসে বিপুল সাফল্য লাভ করেছিল।
বচ্চনের দুর্ঘটনার কারণে পরিচালক মনমোহন দেসাই তার ছবি কুলি এর শেষাংশটি বদলে দিয়েছিলেন। আগে ঠিক ছিলো বচ্চনের চরিত্রটি ছবির শেষে মারা যাবে কিন্তু চিত্রনাট্য বদল করে তাকে শেষে বাঁচিয়ে দেওয়া হয়। দেসাই বলেন, যে মানুষটি সদা মৃত্যুর বিরুদ্ধে যুদ্ধজয় করেছে তাকে পর্দায় মেরে ফেলা উচিত হবে না। পরে যখন ছবিটি মুক্তি পায় সেই মারামারির দৃশ্যটির (যখন দুর্ঘটনাটি ঘটে) সময় খানিকক্ষণের জন্যে ছবি থামিয়ে দেওয়া হয় এবং পর্দায় এক বিজ্ঞপ্তি দেখা দেয় যে এই সময়ই অভিনেতা আহত হয়েছিলেন। এইভাবেই ছবিটি ভালো রকম প্রচার পেয়ে গিয়েছিল।
পরে জানা যায় তিনি পেশি ভঙ্গুরতাজনিত অসুখে ভুগছেন। এই অসুস্থতার দরুন তিনি শারীরিক এবং মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন এবং ফিল্ম ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এই সময় তিনি খুব হতাশ হয়েছিলেন এবং তার ফিল্মের ভবিষ্যত নিয়েও চিন্তান্বিত হয়ে পড়েন। প্রত্যেক ছবি মুক্তি পাওয়ার আগে তিনি বলতেন,"ইয়ে ফিল্ম ফ্লপ হোগি!"("এই ছবিটা ব্যর্থ হবে")।
১৯৮৪ সালে তাদের অনেকদিনের পারিবারিক বন্ধু রাজীব গান্ধীর সমর্থনে অমিতাভ অভিনয় থেকে সংক্ষিপ্ত বিরতি নিয়ে রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি এলাহাবাদ লোকসভা আসনের জন্য উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ এন বহুগুনা-র বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়ান এবং সাধারণ নির্বাচন-এর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি (মোট ভোটের ৬৮.২% পেয়ে) ভোটপার্থক্যে জয়লাভ করেন । তার রাজনৈতিক কর্মজীবন সংক্ষিপ্ত ছিলো। তিন বছর পরে তিনি পদত্যাগ করেন এবং রাজনীতিকে "নর্দমা" আখ্যা দেন। এই পদত্যাগের পিছনে ছিলো বচ্চন এবং তার ভাইয়ের "বোফর্স কেলেঙ্কারী"-তে জড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত যা একটি খবরের কাগজ জনসমক্ষে তুলে আনে। বচ্চন এই কাগজের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন। কিন্তু শেষে জানা যায় যে বচ্চন নির্দোষ এবং এই কেলেঙ্কারিতে কোনভাবে জড়িত ছিলেন না।
যখন তার প্রতিষ্ঠান ABCL ব্যর্থতার সম্মুখীন হয় তখন তার পুরনো বন্ধু অমর সিংহ তাকে আর্থিক অনিশ্চয়তার সময়ে সাহায্য করেছিলেন। সেই জন্য অমিতাভ অমর সিংহের রাজনৈতিক দল সমাজবাদী পার্টিকে সমর্থন করতে শুরু করেন। জয়া বচ্চন সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিয়ে রাজ্য সভার সদস্য নির্বাচিত হন। বচ্চন সমাজবাদী পার্টির প্রতি নিজের সমর্থন বজায় রাখার জন্য বিজ্ঞাপন এবং রাজনৈতিক প্রচারকার্যে অংশ নিতেন। তার এই কার্যকলাপের জেরে সম্প্রতি তিনি ভারতীয় আদালতের সঙ্গে এক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন কারণ কয়েকটি মিথ্যে দাবি অনুযায়ী তিনি আগে কিছু আইনি কাগজ জমা দিয়েছিলেন যেখানে নিজেকে কৃষক হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন।
অভিনেতা জীবনের শীর্ষে থাকাকালীন স্টারডাস্ট এবং অন্যান্য কিছু ফিল্ম পত্রিকা তার বিরুদ্ধে ১৫ বছরের সাংবাদিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলো। নিজপক্ষ সমর্থনের তাগিদে শোনা যায় বচ্চনও ১৯৮৯-এর শেষ পর্যন্ত সাংবাদিকদের নিজের ছবির সেটে ঢুকতে অনুমতি দিতেন না।
১৯৮৪ সালের ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর 'রক্তের বদলা রক্ত' স্লোগান দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ আছে। যদিও তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। উল্লেখ্য যে,শিখ দেহরক্ষীদের হাতে ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর ভারতে শিখবিরোধী দাঙ্গা হয়েছিল। ২০১৪ সালের অক্টোবরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের একটি আদালত অমিতাভ বচ্চনের বিরুদ্ধে ১৯৮৪ সালের শিখবিরোধী দাঙ্গায় উস্কানি দেবার অভিযোগে সমন জারি করেছিল।
১৯৮৮ সালে শাহেনশাহ ছবিতে নামভূমিকায় অভিনয়ের মাধ্যমে বচ্চন চলচ্চিত্র জগতে প্রত্যাবর্তন করেন। বহুচর্চিত এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে আলোচনার জন্যই বোধহয় ছবিটি বক্স অফিসে সাফল্য লাভ করে। যদিও তার প্রত্যাবর্তনের পর প্রথম ছবিটি সাফল্য লাভ করে, কিন্তু তারকা হিসেবে তার খ্যাতি ক্রমে হ্রাস পেতে শুরু করে। তার ফলস্বরূপ এর পরের সব ছবিই বক্স অফিসে ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়। মনে করা হয়েছিল ১৯৯১ সালের সফল ছবি হাম এই ব্যর্থতার ধারাকে পাল্টে দেবে কিন্তু ক্রমে বোঝা গিয়েছিল যে এই সাফল্য খুবই ক্ষণস্থায়ী কারণ অন্যান্য ছবির ব্যর্থতা অব্যাহত ছিল। তবে এই সময়ের উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে রয়েছে বচ্চনের দ্বিতীয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেওয়া। ১৯৯০-এ অগ্নিপথ ছবিতে এক মাফিয়া ডনের ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি এই সম্মান পান। এই কয়েকটি বছরের পর তিনি বেশ কিছুদিনের জন্য পর্দা থেকে অদৃশ্য হয়ে যান। ১৯৯২ সালে খুদা গাওয়া মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছরের জন্য বচ্চন কাজকর্ম অনেক কমিয়ে দিয়েছিলেন। ১৯৯৪-এ তার পিছিয়ে যাওয়া ছবি ইনসানিয়াত মুক্তি পায় কিন্তু ছবিটি বক্স অফিসে সাফল্যর মুখ দেখেনি।
তার স্বল্পকালীন অবসর জীবনে বচ্চন প্রযোজনার কাজে হাত দেন। তিনি অমিতাভ বচ্চন কর্পোরেশন লিমিটেড (A.B.C.L.) স্থাপন করেন ১৯৯৬-এ এই আশা নিয়ে যে তার প্রতিষ্ঠান, ২০০০ সালের মধ্যে একটি ১০ বিলিয়ন টাকার (আনুমানিক ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রথম সারির বিনোদন কোম্পানি হয়ে উঠবে। ABCL-এর কর্মকৌশল ছিলো ভারতের বিনোদন জগতে নতুন সামগ্রী এবং পরিষেবা নিয়ে আসা। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান কাজ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল মূলধারার বাণিজ্যিক ছবির প্রযোজনা এবং পরিবেশনা, অডিও ক্যাসেট এবং ভিডিও ডিস্ক, টেলিভিশন সফটওয়্যারের প্রযোজনা এবং বিক্রয়কৌশল নির্ধারণ করা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং অনুষ্ঠানের সুষ্ঠ পরিচালনা। ১৯৯৬ থেকে প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করার পরেই তাদের প্রথম ছবি প্রযোজনার কাজ শুরু করে। তেরে মেরে স্বাপ্নে বক্স অফিসে সাফল্য না পেলেও আরশাদ ওয়ার্সি এবং দক্ষিণ ভারতীয় তারকা সিমরানকে অভিনয় জগতে আত্মপ্রকাশ করতে সাহায্য করেছিলো। ABCL আরো কিছু ছবি প্রযোজনা করলেও কোনটিই সাফল্য পায়নি। ১৯৯৭-এ ABCL দ্বারা প্রযোজিত মৃত্যুদাতা ছবির মাধ্যমে বচ্চন, অভিনয়ে প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা করেন। মৃত্যুদাতা বচ্চনের পুরনো একশনধর্মী চরিত্রকে পুনর্নির্মাণ করতে চাইলেও বাণিজ্যিকভাবে তা সফল হয়নি। সমালোচকরাও এই ছবিটিকে পছন্দ করেননি। ABCL ব্যাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিত দ্য ১৯৯৬ মিস ওয়ার্ল্ড বিউটি প্যাজেন্ট-এর প্রধান ব্যয়বহনকারী সংস্থা বা স্পন্সর ছিলো কিন্তু এতেও তাদের প্রচুর লোকসান হয়। এই অনুষ্ঠানের চরম ব্যর্থতা থেকে ABCL-কে ঘিরে জন্ম নেয় অনেক আইনি লড়াই। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরে জানা যায় যে ABCL তার উপরতলার কর্মীদের প্রয়োজনের থেকে অনেক বেশি পারিশ্রমিক দিচ্ছিল। শেষে ১৯৯৭ সালে দেখা যায় আর্থিক অনিয়ম এবং কার্যক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলার কারণে প্রতিষ্ঠানটি ভেঙ্গে পড়েছিল। পরে ইন্ডিয়ান ইন্ডাসট্রিজ বোর্ড এই প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যর্থ বলে ঘোষণা করেছিল। এপ্রিল ১৯৯৯-এ বম্বে উচ্চ আদালত বচ্চনকে, যতদিন না কানাড়া ব্যাঙ্কের আটকে থাকা ঋণ ফেরত দেওয়া সংক্রান্ত মামলার রফা হচ্ছে, ততদিন তার বোম্বেতে অবস্থিত বাংলো "প্রতীক্ষা" এবং আরোও দুটি ফ্ল্যাট বিক্রি না করার নির্দেশ দিয়েছিল। বচ্চন নিজের স্বপক্ষে বলেন যে তার প্রতিষ্ঠানের জন্যে অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তিনি সাহারা ইন্ডিয়া ফিন্যান্সের কাছে তার বাংলো বন্ধক রেখেছেন।
বচ্চন তার অভিনয় জীবনে পুরোপুরি ফিরে আসার জন্যে বড়ে মিয়া ছোটে মিয়ার (১৯৯৮) মতো মাঝারি মাপের ছবির সাহায্য নেন। সূর্যবংশম (১৯৯৯) ছবিতে তার অভিনয়ের জন্যে প্রশংসা পেলেও লাল বাদশাহ (১৯৯৯) এবং হিন্দুস্তান কি কসম (১৯৯৯) বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছিল।
২০০০ সালে বচ্চনকে ব্রিটিশ টেলিভিশন গেম শো হু ওয়ান্টস টু বি আ মিলিয়নেয়ার?-এর ভারতীয় সংস্করণের সঞ্চালক হিসেবে দেখা গিয়েছিল। যার নতুন নাম হয়েছিল কৌন বনেগা ক্রোড়পতি (সংক্ষেপে কেবিসি)। অন্যান্য দেশের মতই (যেখানে এটি গৃহীত হয়েছে) এই অনুষ্ঠানটি তাৎক্ষণিক সাফল্য পেয়েছিল। নভেম্বর ২০০০-এ কানাড়া ব্যাঙ্ক বচ্চনের বিরুদ্ধে আনা মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। নভেম্বর ২০০৫ পর্যন্ত বচ্চনকে কেবিসি-র সঞ্চালকের পদে দেখা যায়। ছোট পর্দায় তার জনপ্রিয়তা ছবির জগতে তার প্রত্যাবর্তন অনেক সহজ করে দিয়েছিল। ২০০৯-এর অস্কারজয়ী ছবি 'স্লামডগ মিলিয়নেয়ার' এর দেখানো গেম শো হু ওয়ান্টস টু বি আ মিলিয়নেয়ার? প্রতিযোগিতায় প্রথম প্রশ্ন "জঞ্জীর ছবির তারকা কে ছিলেন?" -এর সঠিক উত্তর ছিল, "অমিতাভ বচ্চন"। ছবির একটি দৃশ্যে ফিরোজ আব্বাস খান অমিতাভ বচ্চনের ভূমিকায় অভিনয় করেন এবং গেম শোয়ের সঞ্চালকের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিলো অনিল কাপূরকে। অভিতাভ বচ্চন বিগ বস ৩ নামের একটি আপাতবাস্তব টেলিভিশন অনুষ্ঠানের সঞ্চলক হিসেবেও দেখা যায়।
২০০০-এ অমিতাভ বচ্চন যশ চোপড়ার বক্স অফিসে সফল ছবি মোহাব্বতে-তে অভিনয় করেন। ছবিটি পরিচালনা করেন আদিত্য চোপড়া। এই ছবিতে তার ভূমিকা ছিল এক কঠোর বয়োজ্যেষ্ঠ, যাঁর প্রতিদ্বন্দ্ব্বী চরিত্রে ছিলেন শাহরুখ খান। এরপরে একে একে আসে আরো সফল ছবি। এক রিস্তা:দা বন্ড অফ লাভ (২০০১), কভি খুশি কভি গম (২০০১) এবং বাগবান (২০০৩) ছবিতে তাকে দেখা যায় পরিবারের সর্বময় কর্তার ভূমিকায়। এই সময় তার অভিনীত চরিত্রগুলির মধ্যে বৈচিত্র লক্ষনীয়। অক্ষ (২০০১), আঁখে (২০০২), খাকি (২০০৪), দেব (২০০৪), দিওয়ার(২০০৪) এবং ব্ল্যাক (২০০৫) সমালোচকদের দ্বারা উচ্চপ্রশংসা লাভ করে। জনপ্রিয়তার উচ্ছ্বাস লক্ষ করে বচ্চন বেশ কিছু সামগ্রী এবং পরিষেবার প্রচারে নিজেকে নিয়োজিত করেন। এইভাবেই টেলিভিশনের এবং বিলবোর্ডের বিজ্ঞাপনে তিনি পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন। ২০০৫ এবং ২০০৬-এ তিনি তার ছেলে অভিষেকের সঙ্গে সফল ছবি বান্টি অর বাবলি (২০০৫), গডফাদারকে সম্মান জানিয়ে তৈরি হওয়া ভারতীয় ছবি সরকার (২০০৫) এবং কভি অলবিদা না কহেনা (২০০৬)-তে কাজ করেন। প্রত্যেকটি ছবিই বক্স অফিসে সাফল্য পায়। ২০০৬ এবং ২০০৭-এর মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির মধ্যে ছিলো বাবুল (২০০৬), একলব্য এবং নিঃশব্দ (২০০৭) যেগুলি বক্স অফিসে ব্যর্থ হয় কিন্তু প্রত্যেকটি ছবিতে তার অভিনয় ভূয়সী প্রশংসা লাভ করে।[ নাগাথিহালি চন্দ্রশেখর পরিচালিত কানাড়া ছবি আম্রুথাদারি -তে তিনি অতিথি শিল্পী হিসেবে স্বভূমিকায় অভিনয় করেন।
মে ২০০৭-এ তার দুটি ছবি চিনি কম এবং অনেক তারকা সমৃদ্ধ শ্যুটআউট অ্যাট লোখন্ডওয়ালা মুক্তি পায়। শ্যুটআউট অ্যাট লোখন্ডওয়ালা বক্স অফিসে খুব ভালো ফল করে এবং ভারতে ছবিটি হিট বলে ঘোষণা করা হয়। চিনি কম প্রথমে খুব ভালো ফল দেখাতে না পারলেও পরে মাঝারি ধরনের হিট হিসেবে ঘোষিত হয়। আগস্ট ২০০৭-এ সবচেয়ে প্রশংসিত হিট ছবি শোলের পুনর্নির্মাণ হয় রাম গোপাল বর্মা কি আগ নাম নিয়ে। ছবিটি বক্স অফিসে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়। চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞরাও ছবিটির কড়া সমালোচনা করেন। ৯ই সেপ্টেম্বর ২০০৭-এ তার প্রথম ইংরেজি ছবি ঋতুপর্ণ ঘোষের দ্য লাস্ট লিয়ার ২০০৭-এর টরন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রিমিয়ার শো করে। সমালোচকরা তার কাজের প্রশংসা করেন এবং ব্ল্যাক এর পরে তার এই ছবির অভিনয়কেই সেরা বলে দাবি করেন। তার প্রথম আন্তর্জাতিক ছবি মীরা নায়ার পরিচালিত শান্তারাম এ তার একটি সহযোগী চরিত্রে অভিনয় করার কথা আছে। এই ছবির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন হলিউড তারকা জনি ডেপ। ফেব্রুয়ারি ২০০৮-এ চিত্রগ্রহণ শুরু হবার কথা ছিলো কিন্তু লেখকদের ধর্মঘট ছবিটিকে সেপ্টেম্বর ২০০৮ পর্যন্ত পিছিয়ে দেয়। ছবিটির নির্মাণকাজ আপাতত অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত রয়েছে। ভূতনাথ নামে যে ছবিতে তিনি নামভূমিকায় এক অশরীরীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন তা মুক্তি পায় ৯ই মে ২০০৮ এ। সরকার রাজ মুক্তি পায় জুন ২০০৮-এ। ২০০৫-এ তৈরি ছবি সরকার এর পরবর্তী গল্পই এই ছবির বিষয়বস্তু। বক্স অফিসে সরকার রাজ ইতিবাচক ফল করে। তার সাম্প্রতিক ছবি পা ২০০৯ এর শেষের দিকে মুক্তি পায়, যেখানে খুব অপ্রত্যাশিত ভাবেই অভিতাভ কে তার ছেলে অভিষেকের প্রোগেরিয়া রোগে আক্রান্ত ১৩ বছর বয়সী ছেলের ভূমিকায় দেখা যায়। এ ছবিতে অমিতাভ বচ্চনের অভিনয় বিশেষ ভাবে প্রশংসিত হয়।
নভেম্বর ২০০৫ সালে অমিতাভ বচ্চনকে আরো একবার লীলাবতী হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তার ক্ষুদ্রান্ত্রের উপস্থলিপ্রদাহের অস্ত্রপ্রচারের জন্য। এই ঘটনার কিছুদিন আগে থেকেই বচ্চন তার শরীরের নিম্নাংশে ব্যথা অনুভব করছিলেন। তার অসুস্থতার এবং সেরে ওঠার সময়ে তার সমস্ত কাজ কিছুদিনের জন্যে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল যার মধ্যে টেলিভিশনের অনুষ্ঠান কৌন বনেগা ক্রোড়পতি যাতে তিনি সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন সেটিও অন্তর্গত ছিলো। মার্চ ২০০৬-এ অমিতাভ তার কর্মজীবনে প্রত্যাবর্তন করেন।
বচ্চন তার গম্ভীর, ব্যারিটোন কন্ঠস্বরের জন্যে বিখ্যাত। তাকে অজস্র অনুষ্ঠানে সূত্রধর, নেপথ্য গায়ক এবং উপস্থাপকের ভূমিকায় দেখা গেছে। প্রথীতযশা চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিত রায় বচ্চনের কন্ঠস্বর শুনে এতো মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তিনি তার ছবি শতরঞ্জ কে খিলাড়ি-তে তাকে ভাষ্যকারের ভূমিকা দিয়েছিলেন কারণ ছবিতে তার উপযুক্ত কোনো চরিত্র ছিলো না। চলচ্চিত্র জগতে পা ফেলার আগে বচ্চন অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ঘোষকের চাকরির জন্যে আবেদন করেছিলেন, যদিও তা খারিজ হয়ে যায়।
২০০৭ সালে উত্তর প্রদেশের বিধান সভা নির্বাচনের সময় বচ্চন একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে করেন যাতে মুলায়াম সিংহ সরকারের গুণগান করা হয়। তার সমাজবাদী পার্টি নির্বাচনে বিপুলভাবে পরাজিত হয় এবং মায়াবতী ক্ষমতায় আসেন।
২রা জুন ২০০৭-এ ফৈজাবাদ আদালত রায় দেন যে তিনি বেআইনিভাবে কৃষিজমি অধিকার করেছেন যা বিশেষ করে ভূমিহীন দলিত চাষীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন যে তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হবে কারণ তিনি নিজেকে চাষী হিসেবে দাবি করেছিলেন। ১৯শে জুলাই ২০০৭ তারিখে এই বিতর্ক সর্বসমক্ষে আত্মপ্রকাশ করে, তখন বচ্চন তার উত্তর প্রদেশের বরাবাঁকি এবং পুনের জমি ফেরত দিয়েছিলেন। তিনি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী বিলাসরাও দেশমুখকে পত্র মারফত জানান যে পুনেতে বেআইনিভাবে পাওয়া জমি যেন দান করে দেওয়া হয়। যাই হোক লক্ষ্মৌ আদালত জমি দান করা রদ করে দেন এবং আদেশ দেন যেন জমির মালিকানা বজায় থাকে।
১২ই অক্টোবর ২০০৭ তারিখে বচ্চন বরাবাঁকি জেলায় দৌলতপুর গ্রামে তিনি তার জমির উপর সব দাবি ছেড়ে দেন। ১১ই ডিসেম্বর ২০০৭-এ এলাহাবাদ উচ্চ আদালতের লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ রায় দেন যে বরাবাঁকি জেলায় তার নামে বরাদ্দ সরকারি জমি সংক্রান্ত জালিয়াতি মামলায় বচ্চন নির্দোষ। একটি একক লক্ষ্ণৌ বেঞ্চ জানায় যে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি যা থেকে বোঝা যায় যে অভিনেতা "নিজে কোনো ধরনের জালিয়াতি করেছেন বা হিসেবপত্রের খাতায় কোনো কারসাজি করেছেন"।
বরাবাঁকির মামলার রায় ইতিবাচক হওয়ার পর অমিতাভ বচ্চন মহারাষ্ট্র সরকারকে জানিয়ে দেন যে পুনে জেলার মাভাল তহসিলে তার জমি তিনি সমর্পণ করতে চান না।
জানুয়ারি ২০০৮-এ মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার নেতা রাজ ঠাকরে রাজনৈতিক মিছিলে যোগদানকালীন অমিতাভ বচ্চনকে লক্ষ্য করে মন্তব্য করেন যে এই অভিনেতা মহারাষ্ট্রের তুলনায় নিজে যে রাজ্যে জন্মেছেন তার প্রতি "বেশি উৎসাহী"। বচ্চন, মহারাষ্ট্রের বদলে উত্তর প্রদেশের বরাবাঁকিতে নিজের পুত্রবধূ অভিনেত্রী ঐশ্বর্য্যা রাই বচ্চনের নামাঙ্কিত বালিকা বিদ্যালয় উদ্বোধন করায়, তিনি তার আপত্তি প্রকাশ করেন। গণমাধ্যমের বিবৃতি অনুসারে রাজের এই ভর্ত্সনার কারণ আর কিছুই নয় অমিতাভের পুত্র অভিষেক এবং ঐশ্বর্যার বিবাহ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত না হওয়ার হতাশা। যদিও তার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিছিন্ন কাকা বাল এবং সম্পর্কিত ভাই উদ্ধব এই অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত ছিলেন।
তার অভিযোগের জবাবে অমিতাভ বচ্ছনের স্ত্রী সমাজবাদী পার্টির লোকসভা সদস্যা, জয়া বচ্চন জানান যে যদি মহারাস্ট্র নবনির্মাণ সেনা (MNS)-এর নেতা জমির ব্যবস্থা করেন তাহলে বচ্চন পরিবার মুম্বইয়ে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করতে পারেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন,"আমি শুনেছি রাজ ঠাকরে মহারাষ্ট্রে প্রচুর সম্পত্তি এবং মুম্বই-কোহিনূর মিলস্ এর মালিক। তিনি যদি জমি দান করতে ইচ্ছুক হন তাহলে আমরা ঐশ্বর্যার নামে এখানেই একটা স্কুল শুরু করতে পারি।" যাই হোক অমিতাভ এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি।
বাল ঠাকরে এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিবৃতি দেন, "অমিতাভ বচ্চন একজন উদারমনস্ক ব্যক্তি যিনি মহারাষ্ট্রকে অন্তর দিয়ে ভালবাসেন এবং তার প্রমাণ অনেকভাবেই বুঝতে পারা যায়। তিনি অনেকবার বলেছেন মহারাষ্ট্র বিশেষত মুম্বই তাঁকে খ্যাতি এবং ভালবাসা দুইই দিয়েছে। তিনি আরো বলেন যে তাঁর আজ এই জায়গায় পৌছানো একমাত্র মানুষের ভালবাসার জোরে। মুম্বইয়ের মানুষের কাছে তিনি একজন শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাঁর সম্বন্ধে সংকীর্ণতার অভিযোগ আনা নেহাতই বোকামি। অমিতাভ একজন আন্তর্জাতিক মহাতারকা। সমগ্র পৃথিবীর মানুষ তাকে শ্রদ্ধা করেন। সেটা ভুলে গেলে চলবে না। অমিতাভর উচিত এই সব ভিত্তিহীন অভিযোগকে সরাসরি উপেক্ষা করে নিজের অভিনয় মনোনিবেশ করা।
২৩ই মার্চ ২০০৮-এ রাজের মন্তব্যের প্রায় দেড় মাস পর, অমিতাভ একটি স্থানীয় কাগজে একটি স্বাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, "তাৎক্ষণিক অভিযোগ শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক, আমার মনোযোগ আশা করলেও সব ব্যাপারে সব সময় মনোযোগ দিতে পারি না।" পরে ২৮শে মার্চে এক ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম একাডেমির সাংবাদিক সম্মেলনে যখন পরিযায়ী-বিরুদ্ধ বিষয়ে তার মতামত চাওয়া হয়, তখন অমিতাভ বলেন দেশের যে কোনো প্রান্তে বসবাস করতে পারা নাগরিকের মৌলিক অধিকার যাকে সংবিধানও স্বীকৃতি দেয়। তিনি আরো বলেন রাজের মন্তব্য তার উপরে কোনো প্রভাব বিস্তার করেনি।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article অমিতাভ বচ্চন, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.