দৃশ্য বা অদৃশ্য কোনো ভাবরূপ শিল্পীর চিত্তরসে নবরূপায়িত হয়ে যে স্থিতিশীল রূপপ্রকাশ ঘটে তাকে শিল্পকলা বা সংক্ষেপে শিল্প বলে।
এ কলা মানব ক্রিয়াকলাপের বৈচিত্রপূর্ণ এক দৃশ্য প্রকাশ এবং এ ধরনের কার্যক্রমের ফলে প্রাপ্ত পণ্য বা উৎপাদন।
দৃশ্য বা সার্বিকভাবে বোধ্য শিল্প কলারই অজস্র রূপ।
চিত্রকলা, ভাস্কর্য, ছাপচিত্র, আলোকচিত্র এবং অন্যান্য দৃশ্য মাধ্যম ক্ষেত্রে সৃষ্ট চিত্র বা বস্তু সম্পর্কিত আলোকপাত রয়েছে। সাধারণ দৃশ্যমান জগতে আমরা যে চিরায়ত লীলার অভিজ্ঞতা লাভ করি তাকে প্রকৃতি হিসেবে অভিহিত করা হয়, তা শিল্প নয়। এই প্রকৃতির সৌন্দর্য্য অবলোকন করে মানব মন যখন বিমুগ্ধ, বিস্মিত ও বিমূঢ় হয়ে যায় তখন সে তাকে নিজের মধ্যে আপন করে পেতে চায়। এরই ধারাবাহিকতায় সে চায় এই নৈসর্গিকতাকে একটি স্বাভাবিক রুপ দিতে। আর এর মাধ্যমেই জন্ম হয় শিল্পের। অর্থাৎ :
“ | ” |
এই নিবন্ধটি মূলত দৃশ্যশিল্প,চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য, ছাপচিত্র, আলোকচিত্র এবং অন্যান্য দৃশ্যশিল্পের উপর আলোকপাত করা হয়েছে। স্থাপত্য অনেকসময় দৃশ্যশিল্পের উপর পড়ে অনেকটা সাজানো শিল্পের মতো। সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত যেকোন বিষয়ের উপর দক্ষতাকেই শিল্প বলা হতো। এটি বিজ্ঞান কিংবা ক্রাপ্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলনা। সপ্তদশ শতকের পরেই চারুকলাকে বিভক্ত করা হয়েছে সাধারণ বিষয়সমূহ থেকে, যেখানে সাজানোর বিষয় মূখ্য। রোমান্টিক যুগের পর শিল্পকে দেখা যায় মানব চিন্তায় যা ধর্ম এবং বিজ্ঞান দ্বারা চিহ্নিত করা হয়
এর অপর নাম চারুশিল্প, কারুশিল্প, ললিতকলা, চারুকলা ইত্যাদি। যে শিল্পের এই সৌন্দর্য্য সৃষ্টি করে সে হচ্ছে শিল্পী বা Artist। শিল্পী মাত্রই রূপ-বিলাসী এবং তার সৃষ্ট রূপই হল শিল্প। শিল্পের চরিত্র সত্যকে, অনুভূতিকে ও অন্যান্য গুণকে তুলে ধরা। শিল্পের প্রকৃতি নির্ভর করে কনসেপ্ট ও দর্শণের উপর যা একটি তাত্ত্বিক মাত্রা দেয়।
প্রকৃতপক্ষে প্রথম মানুষ যখন প্রকৃতির অপার রূপ-রস-গন্ধ-শব্দ ও এর সৌন্দর্য্যের স্রোতকে উপলব্ধি করেছিল তখনই সে চেয়েছিল এই অনুভূতিকে বিশ্বসৃষ্টির সামনে দাঁড়িয়ে অন্যের মনে সঞ্চারিত করতে আর তারই সূত্র ধরে প্রেম মোহিত প্রতিটি সৃষ্টির সম্মিলন ঘটাতে; কারণ মানৃষের স্বাভাবিক প্রকৃতির এটিই দাবী। কিন্তু প্রকৃতি মানুষে মানুষে এ ধরনের সম্মিলন ঘটানোর জন্য বিশেষায়িত নয় বরং প্রকৃতি কেবল সবার মনে তার রসবোধের সঞ্চার ঘটাতে পারে, আর তাও একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। এজন্যই এই অনুভূতি সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার নিমিত্তে তাকে সৃষ্টি করতে হয়েছে শিল্পের। মানুষ না থাকলে শিল্পের সৃষ্টির প্রশ্নই উঠত না এবং শিল্পের ইতিহাস ও মানবসন্তানের ইতিহাস একই ধারায় প্রবাহিত। এই শিল্প মানুষে মানুষে কেবল অনুভূতির সঞ্চার ঘটিয়েই ক্ষান্ত থাকলে এই সম্মিলন সম্ভব ছিলনা। তাই শিল্পের মূল উদ্দেশ্য এখানে পরিস্ফূটিত হয়েছে আর তা হল পরিচয়বোধ-সঞ্চার যাকে ইংরেজিতে Transmission of Understanding বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ শিল্পের মাধ্যমে শিল্পীমন ও দ্রষ্টার মনের পরিচয় হয়ে যায় এবং তা হয় অত্যন্ত গভীর। এর ফলে দেখা যায় শিল্পের সৌন্দর্য্য দেখে দ্রষ্টা শিল্পীমনের অতি কাছাকাছি আসে এবং এর ফলে আত্মপরিচিতি আবিষ্কারের পথ খুঁজে পায়।
“ | হে সৌম্য বিষাদ। | ” |
দ্রষ্টা যখন কোন রূপসৌন্দর্য্যকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে গ্রহণ করে তখনই রূপবন্ধ বা Form এর আবির্ভাব ঘটে। একে মানব মনের Answering quality বলা হয়। মূলত শিল্পীর একটি গুণের কারণেই এ ধরনের গুণগত মানের সৃষ্টি হয়। এই গুণটিই হল শিল্পীর মনের বিশেষত্ব এবং নির্বিশেষ মনোভূমি। শিল্পী চান দ্রষ্টা হিসেবে প্রথমে তিনি যে অনুভূতি আপন অন্তরে একান্তভাবে গ্রহণ করেছিলেন তাকে অন্তরের বাইরে স্থিতি বা সত্তা প্রদান করতে। কারণ সেই অনুভূতিগুলো একান্তই তার ব্যক্তিগত নয় বরং এর একটি সর্বজনীনতা আবশ্যক। এখানে ব্যক্তিগত আবেগ অনুভূতির সঞ্চারণই হল বিশেষ আর তাকে ছড়িয়ে দেয়াই হল শিল্পের নির্বিশেষ পরিচয়। একে অন্যভাবেও চিহ্নিত করা যায়; শিল্পের সৃষ্টি তখনই হয় যখন বাস্তব জীবনের কোন একটি উপকরণের অসংখ্য নির্বিশেষ রূপবন্ধের মধ্যে কেবল একটি বিশেষ রূপবন্ধের বিশেষায়িত আলোচনা সম্ভব হয় এবং এই বিশেষের মাধ্যমেই নির্বিশেষের ব্যঞ্জনা লভিত হয়। অর্থাৎ শিল্পে নির্বিশেষ বলতে উপকরণগত সাধারণত্ব বুঝায়না বরং বিশেষের শৈল্পিক স্থিতির একটি সাধারণ ব্যঞ্জনা বুঝায়।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article শিল্পকলা, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.