অন্তর্দহন ইঞ্জিন

অন্তর্দহন ইঞ্জিন (ইংরেজি: Internal Combustion engines) হল এমন এক ধরনের ইঞ্জিন যাতে কোন দহন প্রকোষ্ঠে কোন দহনকারকের (সাধারণত বাতাস) উপস্থিতিতে জ্বালানির (সাধারণত জীবাশ্ম জ্বালানি) দহন সংঘটিত হয় । অন্তর্দহন ইঞ্জিনে দহনের মাধ্যমে সৃষ্ট উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপে গ্যাসের প্রসারণের মাধ্যমে ইঞ্জিনের ঘূর্ণনশীল অংশগুলোতে শক্তি সরবরাহ করা হয়, যেমন পিস্টন অথবা টার্বাইনের পাখায় এবং এদের সরণ ঘটিয়ে যান্ত্রিক কাজ উৎপন্ন করা হয়।

অন্তর্দহন ইঞ্জিন
একটি ৪-স্ট্রোক ইঞ্জিনের চক্র

অন্তর্দহন ইঞ্জিন বলতে সাধারণত এমন সব ইঞ্জিনকেই বোঝানো হয় যাদের দহন বিক্রিয়া ঘটে ইঞ্জিনের মধ্যে অবস্থিত একটি আবদ্ধ প্রকোষ্ঠে, যেমন সুপরিচিত চতুর্ঘাত এবং দ্বিঘাত ইঞ্জিনে এবং তাদের বিভিন্ন প্রকারভেদে, ওয়াংকেল ঘূর্ণন ইঞ্জিনে। অন্তর্দহন ইঞ্জিনের দ্বিতীয় একটি শ্রেণীতে নিয়মিত দহন ঘটে: গ্যাস টার্বাইন, জেট ইঞ্জিন এবং বেশিরভাগ রকেট ইঞ্জিন এই ধরনের অন্তর্দহন ইঞ্জিন।

অন্তর্দহন ইঞ্জিন (অথবা আইসি ইঞ্জিন বা আইসিই) বহির্দহন ইঞ্জিন হতে বেশ ভিন্ন, যেমন বাষ্প ইঞ্জিন বা স্টার্লিং ইঞ্জিন, যেখানে কার্যকারী ফ্লুইডে শক্তি সরবরাহ করা হয় যাতে দহনজাত পদার্থসমূহ উপস্থিত বা মিশ্রিত থাকতে পারে বা নাও পারে। কার্যকারী পদার্থ হতে পারে বাতাস, উত্তপ্ত পানি, চাপযুক্ত পানি অথবা তরল সোডিয়াম, যা কোন বয়লারে উত্তপ্ত করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের অন্তর্দহন ইঞ্জিনের পরিকল্পনা করা হয়েছে এবং তৈরিও করা হয়েছে, যাদের প্রত্যেকটিরই কোন সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা আছে। শক্তি সরবরাহকারী জ্বালানির সাহায্যে (সাধারণত পেট্রোল বা ডিজেল, জীবাশ্ম জ্বালানি হতে প্রাপ্ত) অন্তর্দহন ইঞ্জিন চালানো হয় এবং এর ওজন ও সরবরাহকৃত শক্তির অণুপাত চমৎকার। অন্তর্দহন ইঞ্জিনের মৌলিক ব্যবহার হয় বিভিন্ন যানবাহনে এবং গাড়ি, উড়োজাহাজ, যান্ত্রিক নৌকো থেকে শুরু করে জাহাজ - সর্বত্রই অন্তর্দহন ইঞ্জিনের ব্যবহার হয়ে থাকে।

অন্তর্দহন ইঞ্জিন
একটি অন্তর্দহন ইঞ্জিনের ব্যবচ্ছেদ।

প্রয়োগ

অন্তর্দহন ইঞ্জিনের সর্বাধিক ব্যবহার হয় যানবাহনের এবং বহনযোগ্য যন্ত্রপাতির ভ্রাম্যমাণ শক্তি সূত্র হিসেবে। ভ্রাম্যমাণ যন্ত্রপাতিতে অন্তর্দহন ইঞ্জিন ব্যবহৃত করার কারণ হল এর উচ্চ শক্তি-বনাম-ওজন অণুপাতের কারণে। জীবাশ্ম জ্বালানি (মূলত পেট্রোলিয়াম) অন্তর্দহন ইঞ্জিনে শক্তির যোগানদার এবং প্রায় সব ধরনের যানবাহন; যেমন বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল, নৌকো এবং হরেক রকমের এয়ারক্রাফট ও রেলওয়ে ইঞ্জিনে ব্যবহৃত হয়।

যখন নিম্ন শক্তি-বনাম-ওজন অণুপাতের দরকার পরে, অন্তর্দহন ইঞ্জিনের গ্যাস টার্বাইন রূপে ব্যবহৃত হয়। এর ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে জেট এয়ারক্রাফট, হেলিকপ্টার, বৃহদাকৃতির জাহাজ এবং ইলেকট্রিক জেনারেটরে।

প্রকারভেদ

এক সময় ইঞ্জিন শব্দটি (ল্যাটিন থেকে, প্রাচীন ফরাসির মধ্য দিয়ে আগত, "সক্ষমতা") বোঝাত যে কোন ধরনের যন্ত্রপাতিকে—যা আজও বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যেমন সিজ ইঞ্জিনমোটর হল (ল্যাটিন শব্দ মোটর থেকে, "সরিয়ে দেয় এমন") এমন যন্ত্র যা যান্ত্রিক শক্তি তৈরি করে। প্রথাগতভাবে ইলেকট্রিক মোটরকে ইঞ্জিন বলা হয় না, তবে দহনকারক ইঞ্জিনকে প্রায়ই মোটর অভিহিত করা হয়ে থাকে। (ইলেকট্রিক ইঞ্জিন বোঝায় এমন ধরনের ইঞ্জিনকে যা ইলেকট্রিসিটিতে চলে।)

ইঞ্জিনকে বিভিন্ন উপায়ে শ্রেণীবিভক্ত করা সম্ভব: ইঞ্জিনে ব্যবহৃত চক্রের মাধ্যমে, ইঞ্জিনের গঠনের মাধ্যমে, শক্তির উৎসের মাধ্যমে, অথবা ব্যবহৃত শীতলকারক পদ্ধতির ভিত্তিতে।

কার্যপ্রণালীর নীতি

রিসিপ্রোকেটিং বা সরলরেখায় চলমান:

  • দুই স্ট্রোক ইঞ্জিন
  • চার স্ট্রোক ইঞ্জিন
  • ছ্য় স্ট্রোক ইঞ্জিন
  • ডিজেল ইঞ্জিন
  • এটকিনসন চক্র

রোটারি বা ঘূর্ণায়মান:

  • ওয়ানকেল ইঞ্জিন

নিরবচ্ছিন্ন দহন:
ব্রেটন চক্র:

ইতিহাস

ইঞ্জিনের বৈশিষ্ট্য

ইঞ্জিনকে তাদের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ভাগ করা চলে।

চতুর্ঘাত ইঞ্জিনের বৈশিষ্ট্য

কার্যপ্রণালী

অন্তর্দহন ইঞ্জিন 
চতুর্ঘাত চক্র (বা অটো চক্র)
1. গ্রহণ
2. সংকোচন
3. শক্তি
4. নিঃসরণ

নামগুলো দেখেই বুঝতে পারা যাচ্ছে যে চতুর্ঘাত অন্তর্দহন ইঞ্জিনের চারটি মৌলিক ধাপ রয়েছে যা ইঞ্জিনের প্রতি দু'টি ঘূর্ণন পর পর পুনরাবৃত্ত হয়:

  1. গ্রহণ
    • দহনযোগ্য মিশ্রণ দহন প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করে
  2. সংকোচন
    • মিশ্রণটিকে চাপ প্রয়োগে সংকুচিত করা হয়
  3. শক্তি
    • মিশ্রণটিকে পোড়ানো হয়, যার মাধ্যমে উত্তপ্ত মিশ্রণটি প্রসারিত হয়, যা ইঞ্জিনের নড়াচড়া করা অংশগুলোর সরণের মাধ্যমে ইঞ্জিনের কাজ সম্পন্ন হয়।
  4. নিঃসরণ
    • শীতল দহন উৎপাদসমূহ পরিবেশে নিঃসরণ করা হয়

কিছু কিছু ইঞ্জিনে কোন কোন ধাপ একই সাথে সম্পন্ন হয়; জেট ইঞ্জিনে সবগুলো ধাপই একত্রে ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশে সম্পন্ন হয়।

তথ্যসূত্র

উচ্চতর পঠন

বহিঃসংযোগ

Tags:

অন্তর্দহন ইঞ্জিন প্রয়োগঅন্তর্দহন ইঞ্জিন প্রকারভেদঅন্তর্দহন ইঞ্জিন ইতিহাসঅন্তর্দহন ইঞ্জিন ইঞ্জিনের বৈশিষ্ট্যঅন্তর্দহন ইঞ্জিন তথ্যসূত্রঅন্তর্দহন ইঞ্জিন উচ্চতর পঠনঅন্তর্দহন ইঞ্জিন বহিঃসংযোগঅন্তর্দহন ইঞ্জিনইংরেজি ভাষাইঞ্জিনচাপজীবাশ্ম জ্বালানিজ্বালানিতাপমাত্রাবাতাস

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

পাল সাম্রাজ্যলিঙ্গ উত্থান ত্রুটিদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকম্পিউটার কিবোর্ডগোলাপচিয়া বীজবাংলাদেশের ভূগোলবাস্তব সংখ্যাভারতবাঘব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাজ্বীন জাতিদক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলামুসলিমমালয় ভাষাবারো ভূঁইয়াঅগ্নিবীণা (কাব্যগ্রন্থ)জয়তুনমোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীফেসবুকসমকামিতাইসলামে বিবাহউইকিবইজানাজার নামাজআব্দুল কাদের জিলানীখ্রিস্টধর্মবাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তালিকাদারুল উলুম দেওবন্দসূরা ফাতিহাতক্ষকবেলজিয়ামহস্তমৈথুনরাজশাহী বিভাগপাঠশালাবাবরপারমাণবিক ভরের ভিত্তিতে মৌলসমূহের তালিকাডিজিটাল বাংলাদেশছোটগল্পমার্কিন ডলারউদ্ভিদকোষস্বাস্থ্যের উপর তামাকের প্রভাববঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়তাজমহলরোমান সাম্রাজ্যস্টার জলসাঅধিবর্ষটেনিস বলবাংলাদেশ পুলিশদেশ অনুযায়ী ইসলামক্যান্টনীয় উপভাষাউপন্যাসঅ্যান্টিবায়োটিক তালিকাশিল্প বিপ্লবঅপু বিশ্বাসবাংলাদেশের বিভাগসমূহভরিবঙ্গবন্ধু সেতুজীবাশ্ম জ্বালানিলাহোর প্রস্তাবওয়ালাইকুমুস-সালামব্রিটিশ রাজের ইতিহাসবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়অকালবোধনসুনামগঞ্জ জেলাবিধবা বিবাহকলমরাসায়নিক বিক্রিয়ামাইটোসিসসময়রেখাসিন্ধু সভ্যতাবাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরফিফা বিশ্বকাপ ফাইনালের তালিকাগাণিতিক প্রতীকের তালিকামাহদীলিওনেল মেসিউপসর্গ (ব্যাকরণ)ইহুদি ধর্ম🡆 More