চোখ উঠা: চোখের ভাইরাসজনিত রোগ

চোখ উঠা (ইংরেজি: Conjunctivitis, কন্‌জাঙ্কটিভাইটিস) হচ্ছে চোখের ভাইরাসজনিত ইনফেকশন। সাধারণভাবে প্রচলিত কথা ‘চোখ ওঠা’ বলতে চোখ লাল হওয়া বুঝানো হয়ে থাকে। কিন্তু চোখ লাল হওয়া একটি উপসর্গ মাত্র। বিভিন্ন কারণে চোখ লাল হতে পারে। যেমন- জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে, এডিনো ভাইরাসজনিত কারণে, হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসজনিত কারণে, স্কেলেরার ইনফেকশনজনিত কারণে, ইউভিয়াল টিস্যু ইনফেকশনজনিত কারণ ইত্যাদি। তবে ভাইরাস কেরাটাইটিস বা হারপেম সিমপেক্স ভাইরাসজনিত ইনফেকশনই মুলত ভাইরাসজনিত ইনফেকশন। এ ধরনের ইনফেকশনে সাধারণত এক চোখ আক্রান্ত হয়ে থাকে। পরবর্তীতে দুচোখেও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চোখে চুলকানির লক্ষণও প্রতিয়মান হয়।

চোখ উঠা
চোখ উঠা: লক্ষণ, সতর্কতা, যেভাবে ছড়ায়
বিশেষত্বচক্ষুচিকিৎসাবিজ্ঞান উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

লক্ষণ

চোখ জ্বলা, চোখের ভেতর অস্বস্তি শুরু হয়, সামান্য ব্যথা হয়। রোদে বা আলোতে তাকাতে কষ্ট হয় ও অতিমাত্রায় পানি পড়ে। চোখ লাল হয়ে ফুলে উঠে। ঘুম থেকে উঠার পর চোখের পাতা দুটি একত্রে লেগে থাকে। চোখ থেকে শ্লেষ্মাজাতীয় পদার্থ বের হতে থাকে ও হলুদ রঙের পুঁজ সৃষ্টি হয়। সাধারণত ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে উপসর্গগুলো কমে আসে। কিন্তু দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। মণি বা কর্নিয়াতে সাদা দাগ পড়ে যায়। খালি চোখে দেখে বোঝা যায় না। এতগুলো উপসর্গ রোগীর ক্ষেত্রে একসাথে দেখা নাও যেতে পারে।

এটি একটি জটিল রোগ। দেরি করে চিকিৎসা করালে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। তবে প্রাথমিক অবস্হায় চিকিৎসা নিলে খুব সহজেই সেরে যায়।

সতর্কতা

যেসব সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা হলো-ধুলাবালি, আগুন-আলো-রোদে কম যাওয়া, ময়লা-আবর্জনাযুক্ত স্যাতসেঁতে জায়গায় না যাওয়া, পুকুর বা নদী-নালায় গোসল না করা, চোখে কালো চশমা ব্যবহার করা, টেলিভিশন না দেখা। সম্ভব হলে ১০ থেকে ১৫ দিন সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেয়া এবং চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া। সংক্রমিত রোগীদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা।

যেভাবে ছড়ায়

চোখে ভাইরাস দিয়ে প্রদাহ হলে চোখের পানিতে ভাইরাস ভেসে বেড়ায়। যখন এই অশ্রু মুছতে যাই, তখনই এটি আমাদের হাতে এসে যায়। এরপর থেকেই সেই হাত দিয়েই আমরা যা কিছুই ছুঁই না কেন, সেখানে ভাইরাস চলে আসে। যেমন কারোর সঙ্গে করমর্দন, টিভি, এয়ারকন্ডিশনার রিমোট, ব্যবহৃত তোয়ালে, বিছানার চাদর, বালিশের কভার, এমনকি মুঠোফোন ইত্যাদিতে চলে আসতে পারে। এ জন্যই আক্রান্ত ব্যক্তিকে এই সময়ে বাসায় থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়। তার ব্যবহৃত জিনিসপত্রও কিছুটা আলাদা রাখা ভালো।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

ভাইরাসজনিত চোখ ওঠার তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। সাধারণত বেশ কয়েক দিন পর এমনিতেই সেরে যায়। আক্রান্ত রোগী থেকে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে যে বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি—

● চোখের পানি বা ময়লা মোছার জন্য আলাদা তোয়ালে বা রুমাল ব্যবহার করা

● পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। অপরিষ্কার রুমাল ব্যবহার করা যাবে না

● এই সময়ে কালো চশমা পরা যেতে পারে, এতে বাইরের ধুলাবালু বা বাহ্যিক আঘাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়

● বাইরের পানি দিয়ে ঝাপটা দেওয়া যাবে না

● চোখের পাতা বেশি ফুলে গেলে বরফ দেওয়া যেতে পারে

● চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ওষুধ খাওয়া উচিত


●চোখে ব্যাথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আই অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে

● হাত না ধুয়ে যখন-তখন চোখ ঘষা বা চুলকানো যাবে না

● চোখ ওঠা শিশুদের আলাদা বিছানায় শোয়াতে হবে।

কুসংস্কার

আক্রান্ত রোগীর চোখের দিকে তাকালেই কনজাংটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হবে; এমন একটি ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত রয়েছে।

অন্যান্য

চোখের কনজাঙ্কটিভাইটিস রোগটি বাংলাদেশে পরিচিত ‘চোখ ওঠা’ নামে। তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এটির আরেক নাম "জয় বাংলা রোগ"। এতে জড়িয়ে আছে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের এক অনন্য যোগসূত্র! ১৯৭১ সালে মহামারী আকারে পশ্চিম বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছিলো এই রোগ। রোগটি পূর্ব বাংলায় চলা মুক্তিযুদ্ধের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসা বাঙালি শরণার্থীদের কারণেই ছড়িয়েছিলো বলে এর নাম দেয়া হয় ‘জয় বাংলা’ রোগ! ‘জয় বাংলা’র প্রকোপ ছিলো এতোটাই, যে সেসময় ৫০ লাখেরও বেশি লোক এই রোগে ভুগেছেন।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

চোখ উঠা লক্ষণচোখ উঠা সতর্কতাচোখ উঠা যেভাবে ছড়ায়চোখ উঠা চিকিৎসা ও প্রতিরোধচোখ উঠা কুসংস্কারচোখ উঠা অন্যান্যচোখ উঠা তথ্যসূত্রচোখ উঠা বহিঃসংযোগচোখ উঠাইংরেজি ভাষাইনফেকশনচোখটিস্যুভাইরাসস্ক্লেরাহার্পিস সিমপ্লেক্স

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

বীর্যবারো ভূঁইয়াগাণিতিক প্রতীকের তালিকানারায়ণগঞ্জক্ষুদিরাম বসুজাপানমারবার্গ ফাইলমালদ্বীপবঙ্গবন্ধু-১চিকিৎসকজীবাশ্ম জ্বালানিফোরাতমার্কসবাদঈসাবাংলাদেশ আওয়ামী লীগসাকিব আল হাসানপুরুষাঙ্গের চুল অপসারণরামসার কনভেনশনজাতীয় স্মৃতিসৌধকেন্দ্রীয় শহীদ মিনারখালিস্তানমরক্কো জাতীয় ফুটবল দলতায়াম্মুমবাংলাদেশের ইউনিয়নমহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুপ্ত সাম্রাজ্যআগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাদক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলাদেব (অভিনেতা)কনডমছোটগল্পবিশ্ব ব্যাংকপর্নোগ্রাফিফরিদপুর জেলাএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)ভারতের রাষ্ট্রপতিআবুল আ'লা মওদুদীউপসর্গ (ব্যাকরণ)২০২৩ ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপবাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের তালিকাঅ্যান্টিবায়োটিক তালিকাঅশ্বগন্ধাহুমায়ূন আহমেদশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়সূর্যপায়ুসঙ্গমবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়উসমানীয় সাম্রাজ্যজাকির নায়েকবাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পবীরাঙ্গনাদর্শনখেজুরমুসলিমগেরিনা ফ্রি ফায়ারব্যাকটেরিয়াফোর্ট উইলিয়াম কলেজমহাদেশ অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাগোত্র (হিন্দুধর্ম)প্রধান পাতাআমাশয়এইচআইভি/এইডসশাকিব খানইস্তেখারার নামাজবাংলাদেশের রাজনৈতিক দলসমূহের তালিকা২০২২ ফিফা বিশ্বকাপভৌগোলিক আয়তন অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভাষাঅন্নপূর্ণা (দেবী)প্রথম উসমানগরুআব্দুল কাদের জিলানীঋগ্বেদছিয়াত্তরের মন্বন্তরমুসা🡆 More