সুন্নি ইসলাম: ইসলামের একটি সম্প্রদায়

সুন্নি ইসলাম (আরবি: سني) বা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাʿআহ (আরবি: أهل السنة والجماعة) হল ইসলামের বৃহত্তম শাখা। বিশ্বের মুসলমানদের ৮৭–৯০% সুন্নি মতাবলম্বী। এর নামটি আরবি সুন্নাহ শব্দ থেকে এসেছে যা নবী মুহাম্মদের অনুকরণীয় জীবনাচারকে নির্দেশ করে। সুন্নি ও শিয়া মুসলমানদের মধ্যে পার্থক্য মুহম্মদের স্থলাভিষেক সংক্রান্ত মতবিরোধের ফলে উদ্ভূত হয় এবং পরবর্তীকালে বিস্তৃত রাজনৈতিক তাৎপর্য তথা ধর্মতাত্ত্বিক ও আইনশাস্ত্রীয় মাত্রা অর্জন করে। সুন্নি ঐতিহ্য অনুসারে, মুহাম্মদ তার কোনো উত্তরসূরি মনোনীত করে যাননি এবং আবু বকর হলেন জনগণ কর্তৃক নির্বাচিত নবীর স্থলাভিষিক্ত ও প্রথম ন্যায়নিষ্ঠ খলিফা। এটি শিয়া দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে বৈসাদৃশ্য ধারণ করে। শিয়া মুসলমানদের মতে মুহাম্মদ তার চাচাতো ভাই ও জামাতা আলী ইবনে আবী তালিবকে তার স্থলাভিষিক্ত হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।

সুন্নি ইসলাম: জনসংখ্যা, সুন্নি মাযহাব, ইতিহাস
আল্লাহর নামের পাশাপাশি সুন্নি ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব নবী মুহাম্মদ, আবু বকর, উমর, উসমান, আলী, হাসানহোসেনের নাম সংবলিত আরবি চারুলিপি

সুন্নি ইসলামের অনুসারীদের আরবিতে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাʿআহ অর্থাৎ “সুন্নত ও সম্প্রদায়ের লোক” বা সংক্ষেপে আহলুস সুন্নাহ বলে অবিহিত করা হয়। ইংরেজিতে এর মতাদর্শ ও অনুশীলনকে প্রায়শই সুন্নিজম বলা হয় এবং এর অনুসারীদের সুন্নি মুসলিম, সুন্নি বা সুন্নাইট নামে ডাকা হয়। সুন্নি ইসলামকে কখনও কখনও “অর্থডক্স ইসলাম” বলে উল্লেখ করা হয়, যদিও অনেক পণ্ডিত এই অনুবাদকে অনুপযুক্ত মনে করেন।

কুরআন, হাদিস (বিশেষত কুতুব আল-সিত্তাহে সংগৃহীত) এবং ইজমা সুন্নি ইসলামের মধ্যকার সমস্ত ঐতিহ্যবাহী ফিকহশাস্ত্রের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। শরীয়তের বিধানগুলি এই মৌলিক উৎসসমূহের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী হানাফি, মালিকি, শাফিঈহাম্বলি মাযহাব কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত উসুল আল ফিকহ প্রয়োগের মাধ্যমে কিয়াস, ইস্তিহসানের ইস্তিসলাহ ও মাসলাহার সংযোগে উদ্ভূত হয়। আকীদাগত ক্ষেত্রে সুন্নি ঐতিহ্য ঈমানের ছয়টি স্তম্ভকে সমর্থন করে এবং কালামশাস্ত্রের যুক্তিবাদী আশআরিমাতুরিদি চিন্তাধারা এবং আক্ষরিকতাবাদী আসারি চিন্তাধারা ধারণ করে।

জনসংখ্যা

সুন্নি ইসলাম: জনসংখ্যা, সুন্নি মাযহাব, ইতিহাস 
সুন্নী ও শিয়া সম্প্রদায়ের আবাসস্থল দেখানো হয়েছে (গাঢ় অংশ শিয়া)

মুসলিম জনসংখ্যার কত অংশ কোন প্রধান ধারার সাথে যুক্ত আছে তা নির্ণয় করা পরিসংখ্যানবিদদের কাছে বেশ কষ্টকর ছিল। যেমন, শিয়া সুন্নি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য অনেক দেশেই পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই। যখন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না তখন দেশটিকে সুন্নি তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবুও বিভিন্ন সূত্র ব্যবহার করে একজন মোটামুটি এই অনুমানে পৌঁছাতে পারে যে শিয়ারা মোট মুসলিম জনসংখ্যার ১০-১৫%। যদিও আরেকটি গ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখা গেছে শিয়াদের মোট পরিমাণ ৭.৫%। প্রকৃতপক্ষে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার তথ্যমতে শিয়াদের পরিমাণ মোট মুসলিম জনসংখ্যার এক-দশমাংশেরও কম।

সুন্নি মাযহাব

ইসলামী আইনকে শরিয়াহ বলা হয়। আর এই শরিয়াহ তৈরি হয় কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে। সুন্নিদের যারা এই আইনসমূহের ব্যাখ্যা দেন তাদের মধ্যে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য আছে। সুন্নিদের প্রধান চারটি মাযহাব আছে।

পারসিক ইমাম আবু হানিফা (জন্ম ৬৯৯খ্রি. - মৃত্যু ৭৬৭ খ্রি.) হলেন হানাফি মাজহাবের প্রবক্তা। তিনি ইরাকে জন্মগ্রহণ করেন। অন্য মাজহাবগুলোর তুলনায় তার মাজহাবটিতে প্রজ্ঞা ও যুক্তির উপর অনেক বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, আফগানিস্তান, মধ্য এশিয়া; দক্ষিণ রাশিয়া, ককেশাস, বলকান উপদ্বীপের কিছু অংশে, ইরাক, সিরিয়া, মিশর, ইয়েমেন এবং তুরস্কের অধিকাংশ মুসলিম এই মাজহাব অনুসরণ করেন।

মালিক ইবনে আনাস (জন্ম : ৭১১ খ্রিষ্টাব্দ/ ৯৩ হিজরি - মৃত্যু : ৭৯৫ খ্রিষ্টাব্দ/ ১৭৯ হিজরি) তার তত্ত্বগুলো সুসংগঠিত করেন মদিনাতে যেখানে তার সাথে পরিচয় ঘটেছিলো নবি মুহাম্মদের বেঁচে থাকা এক বৃদ্ধ সাহাবির সঙ্গে। সমগ্র আফ্রিকা (মিশর ব্যতীত) ও পূর্ব উপকূল জুড়ে এই মাজহাবের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়।

আল শাফি একজন মধ্যপন্থী হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি প্রথমে ইরাকে ও পরে মিশরে শিক্ষালাভ করেন। ইন্দোনেশিয়া, মিশরের দক্ষিণ ভাগ, মালেয়শিয়া এবং ইয়েমেনে এই মাজহাবের অনুসারীদের দেখা মেলে।

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল(৭৮০-৮৫৫ খ্রি./ ১৬৪-২৪১ হিজরি) আশ-শাফির শিষ্য ছিলেন। তৎকালীন খলিফার সাথে কিছু মতভেদের কারণে তার উপর অনেক নির্যাতন করা হয়। আধুনিক সৌদি আরবের অনেকে এই মতের অনুসারী।

এই মাজহাবগুলোর মধ্যে অল্পবিস্তর পার্থক্য থাকলেও সুন্নিরা সব কয়টি পথকেই সঠিক মনে করেন। এই মাজহাবগুলো ছাড়াও আরো মাজহাব রয়েছে যাদের অনুসারী সংখ্যা খুবই নগণ্য কিংবা এরা কেউ বেঁচে নেই।

শরিয়াহকে ব্যাখ্যা করে বিশেষ আইন প্রণয়নকে ফিকহ বলে। মাজহাব হলো একটা বিশেষ উপায়ে ফিকহকে ব্যাখ্যা করার প্রচেষ্টা। এই ঘরানাগুলো বিশেষ কিছু প্রমাণ (শাফি ও হাম্বলি) কিংবা বিশেষ কিছু সাধারণ নীতিমালা (হানাফী ও মালিকী) এর উপর গুরুত্ব আরোপ করে। যেহেতু এই মাজহাবগুলো শরিয়াহ ব্যাখ্যা করার পদ্ধতিগত ভিন্নতা নির্দেশ করে, তাই প্রতিটি ধারাতেই কিছু না কিছু পার্থক্য আছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সাথে সাথে নতুন ফিকহ আইন তৈরি হয়। যেমন, একসময় তামাক সেবনে অনুৎসাহিত করা হতো এর উৎকট গন্ধের কারণে কিন্তু পরবর্তীকালে গবেষণায় এর খারাপ দিকগুলো উন্মোচিত হওয়ায় এটিকে এখন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলাফল হলো শরিয়া অপরিবর্তিত থাকলেও ফিকহ সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে।

সুন্নীদের মতে মাজহাব ও ধর্মীয় উপদল একই বিষয় নয়। কারণ মাজহাবগুলো পরস্পরকে স্বীকৃতি দেয়। একটি বড় মুসলিম জনগোষ্ঠীতে চারটি মাজহাবের অনুসারী চিন্তাবিদই থাকতে পারে। এটা সম্পূর্ণ লোকজনের ব্যাপার যে তারা কোনটা পছন্দ করবে। অনেক সুন্নি মনে করেন যে, একজন মুসলিমের শুধু একটি মাজহাবই অনুসরণ করা উচিত। যদিও ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে অন্য মাজহাব থেকেও বিধান নেওয়া যেতে পারে। কিছু সুন্নিরা আবার নির্দিষ্ট কোনো মাজহাব অনুসরণ করেন না। যেমন, আহলে হাদীসরা বিশেষ কোনো মাজহাব মেনে চলতে অস্বীকৃতি জানায়।

ইতিহাস

সুন্নি ধর্মতাত্ত্বিক ঐতিহ্য

বিভিন্ন যুগে মুসলিম চিন্তাবিদগণ স্রষ্টার প্রকৃতি, মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা আছে কিনা ইত্যাদি দার্শনিক প্রশ্নের মুখোমুখী হয়েছেন। ধর্মতত্ত্ব ও দর্শনের বিভিন্ন মতানুসারীগণ বিভিন্নভাবে এই প্রশ্নের জবাব দিতে চেষ্টা করেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ধর্মতাত্ত্বিক ব্যাখ্যাগুলো হলো :

  • আশয়ারিয়া, যা কিনা আবুল হাসান আশয়ারি কর্তৃক উপস্থাপিত। এই ব্যাখ্যাগুলো ইমাম গাজ্জালি কর্তৃক বেশ সমাদৃত হয়।
    • এই ধর্মতত্ত্বে মরমী জ্ঞানকে প্রজ্ঞার উপর স্থান দেওয়া হয়। তাদের মতে নৈতিক নিয়মসমূহ মানবিক প্রজ্ঞা থেকে তৈরি করা যায় না, বরং স্রষ্টার নির্দেশ, যেমনটা কুরআনে উল্লেখিত এবং মুহাম্মাদ(সা.) এর জীবনাদর্শ (সুন্নাহ)-ই হলো সকল প্রকার নৈতিকতার উৎস।
    • স্রষ্টার প্রকৃতি সম্পর্কে তারা মুতাজিলাদের অবস্থানকে বর্জন করে (যে তত্ত্বমতে কুরআনে স্রষ্টা সংক্রান্ত সকল ভৌত গুণ রূপক)। আশারিয়া জোর দেয় যে, বরং এই সকল গুণ সঠিক, কারণ কুরআন ভুল হতে পারে না, তবে স্রষ্টার উপর মোটা দাগের নরত্ব আরোপ করে এগুলো উপলব্ধি করা সম্ভব নয়।
    • আশারিয়া মানবীয় স্বাধীন ইচ্ছার বিপরীতে স্রষ্টার সর্বময় ক্ষমতার উপর জোর দেয়। তারা বিশ্বাস করে যে, কুরআন সৃষ্ট নয় এবং তা অনাদিকাল থেকে বিদ্যমান।
  • মাতুরিদিয়া (আবু মনসুর আল মাতুরিদি কর্তৃক উপস্থাপিত) যতদিন পর্যন্ত না মধ্য এশিয়ার তুরস্কের (যারা আগে আশআরি ও আল-শাফির অনুসারী ছিল) গোষ্ঠীগুলো এই ধারণা গ্রহণ করে ততদিন পর্যন্ত এই মতবাদের অনুসারীরা খুবই সংখ্যালঘু ছিল। গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি হলো সেলজুক তুর্ক, যারা তুরস্কে চলে গিয়েছিল, যেখানে কিনা পরবর্তীকালে উসমানীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাদের প্রতিষ্ঠিত আইনি ব্যবস্থা গোটা সাম্রাজ্যে প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল।
    • মাতুরিদিরা দাবি করত যে স্রষ্টার অস্তিত্ব মানবীয় প্রজ্ঞা থেকে ব্যাখ্যা করা সম্ভব।
  • আছারি: আছারিয়াহ হলো একটি ইসলামি জ্ঞানতাত্ত্বিক আন্দোলন। এর উদ্ভব ৮ম শতকের শেষের দিকে। আছারিয়াহ মতবাদের অনুসারীদের 'আছারি' বলা হয়। আকিদার ক্ষেত্রে তারা কালাম তথা দার্শনিক যুক্তিতর্ক পরিহার করেন। আসারিরা 'আসার' তথা নবি মুহাম্মাদ ও তার সাথীদের বর্ণনার ভিত্তিতে তাঁদের বিশ্বাস পোষণ করেন। কুরআন-সুন্নাহর বক্তব্য সরল অর্থ গ্রহণ করেন। আল্লাহর সিফাতসমূহের তুলনামুক্ত স্বীকৃতি দেন। আসারিরা আকিদার ক্ষেত্রে সালাফদের অনুসরণ করেন বলে দাবি করেন। এই আকিদার অনুসারীদের মধ্যে আছেন ইমাম আহমাদ, ইবন খুযাইমা, ইবন আবদুল বারর মালিকি, আবু যাইদ আল-কায়রাওয়ানি, ইবন তাইমিয়া, ইবনুল কায়্যিম, ইবন আবিল ইয আল-হানাফি, ইমাম আয-যাহাবি, ইবন রজব আল-হানবালি, ইবন কাসির প্রমূখ।

হাদিসের প্রতি সুন্নি দৃষ্টিভঙ্গি

যে কুরআন আজ আমরা দেখি সেটা আনুমানিক ৬৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মুহাম্মাদ (সা.)-এর সহচারীদের দ্বারা সংকলিত হয় এবং তা সমগ্র মুসলিমদের দ্বারা স্বীকৃত হয়। তৎকালীন আরবরা দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক কিছুর সম্মুখীন হতো যেগুলো সরাসরি কুরআনে ছিল না। এক্ষেত্রে তারা মুহাম্মাদ (সা.) ও তার সহাচারীদের জীবনাদর্শ অনুসরণ করতো। মুহাম্মাদ (সা.)-এর এই জীবনাদর্শ (বাণী ও কর্ম)-কে হাদিস বলা হয়। মুসলিম চিন্তাবিদরা এইসকল হাদিসের বর্ণনাকারীদের ধারা অনুসরণ করে ও তাদের বিশ্বস্ততা যাচাই করে হাদিসের গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণ করে থাকেন। সুন্নিরা সহীহ বুখারীসহীহ মুসলিম নামে দুটি হাদিসগ্রন্থকে বাকিগুলোর তুলনায় অধিকতর গ্রহণযোগ্য মনে করেন। যদিও ছয়টি হাদিস সংকলন মুসলিমদের কাছে বিশেষ গুরত্ব বহন করে। এগুলো হলো :

এছাড়াও আরো কিছু কম পরিচিত হাদিস সংকলন বিদ্যমান। যেমন :

সুন্নি মুসলিমদের বিশ্বাস

একমাত্র স্রষ্টা ও প্রতিপালক

ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহ্ মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা। একে তাওহিদে রুবুবিয়াহ বা রবের একত্ববাদ বলা হয়। কুরআনে বলা হয়েছে,

"তারা কি স্রষ্টা ছাড়া সৃষ্টি হয়েছে, না তারাই স্রষ্টা? তারা কি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছে? বরং তারা দৃঢ় বিশ্বাস করে না।"[কুরআন ৫২:৩৫–৩৬]

ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহ্ একমাত্র রব। রব (আরবি: ﺭﺏ) বলা হয় তাকে যিনি সৃষ্টি করেন, পরিচালনা করেন এবং মালিকানা যাঁর জন্য। কুরআনে বলা হয়েছে,

"...জেনে রাখুন, সৃষ্টি করা ও হুকুমের মালিক তিনি। বরকতময় আল্লাহ বিশ্বজগতের প্রতিপালক।"[কুরআন ৭:৫৪]

একমাত্র উপাস্য

মুসলিমরা আরও বিশ্বাস করে আল্লাহ্ই একমাত্র ইলাহ্ তথা সত্য উপাস্য। একে তাওহীদে উলুহিয়াহ বা ইলাহের বা উপাস্যের একত্ববাদ বলা হয়। ইলাহ্ (আরবি: ﺍﻻﻟﻪ) অর্থ হলো: সম্মান ও বড়ত্বের কারণে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় যার ইবাদত করা হয়। আর ইবাদত বা উপাসনা সেই সব কাজকে বলা হয়, যা কোনো ইলাহ্-র সন্তুষ্টি লাভের আশায় অথবা তার অসন্তুষ্টির ভয়ে করা হয়। কুরআনে বলা হয়েছে,

" আর তোমাদের ইলাহ এক ইলাহ। তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। তিনি অতি দয়াময়, পরম দয়ালু।"[কুরআন ২:১৬৩]

মক্কার মূর্তিপুজারিরা লাত, মানাত, উজ্জাসহ বিভিন্ন মূর্তির উপাসনা করত। এগুলোর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে,

"এগুলো কেবল কতিপয় নাম, যে নামগুলো তোমরা ও তোমাদের পিতৃপুরুষেরা রেখেছ। এ ব্যাপারে আল্লাহ কোন দলীল-প্রমাণ নাযিল করেননি। তারা তো কেবল অনুমান এবং নিজেরা যা চায়, তার অনুসরণ করে।..."[কুরআন ৫৩:২৩]

নাম ও গুণাবলী

কুরআনে বা হাদীসে আল্লাহর অনেকগুলো সুন্দর নাম ও গুণের উল্লেখ রয়েছে। মুসলিমরা আল্লাহর নাম ও গুণগুলোর কোনোটি অস্বীকার করে না, সৃষ্টবস্তুর সাথে সাদৃশ্য দেয় না, গুণগুলোর ধরন নির্ধারণ করে না। এই সকল নাম ও গুণ একমাত্র আল্লাহকে সাব্যস্ত করাকে তাওহীদে আসমা ওয়া সিফাত বা নাম ও গুণের একত্ববাদ বলা হয়।

ফেরেশতাদের সম্পর্কে

ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে নূর বা আলো দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তারা আল্লাহর নির্দেশ পালনে রত আছেন। কুরআনে বলা হয়েছে,

"তারা অহঙ্কারবশতঃ তাঁর ইবাদত হতে বিমুখ হয় না এবং ক্লান্তিও বোধ করে না। তারা দিন-রাত তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, তারা ক্লান্তও হয় না।"[কুরআন ২১:১৯–২০]

হাদীস অনুসারে জিব্রাইলের দিগন্ত জুড়ানো ছয়শত ডানা রয়েছে। কয়েকজন ফেরেশতার কাজ সম্পর্কে হাদীসে জানা যায়। যেমন- ওহী বহনের দায়িত্বে আছেন জিব্রাইল, শিংগায় ফুঁ দেওয়ার দায়িত্বে আছেন ইস্রাফিল, বৃষ্টি বর্ষণের দায়িত্বে আছেন মিকাইল, জাহান্নামের দায়িত্বে আছেন মালিক, মৃত্যুর দায়িত্বে আছেন মালাকুল মাউত। এছাড়াও মুসলিমরা বিশ্বাস করে প্রত্যেক ব্যক্তির সাথে দুইজন করে ফেরেশতা থাকে। এ ফেরেশতাদ্বয় ব্যক্তির আমলসমূহ লিপিবদ্ধ করেন।

নবী-রসূলদের সম্পর্কে

ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক জাতির জন্য একজন মানুষকে রাসূল (বার্তাবাহক) করে পাঠিয়েছেন যারা তাদেরকে তাওহীদের আহ্বান জানান। আল্লাহ তাদেরকে যে বাণী দিয়ে প্রেরণ করেছেন তারা তার কোনো অংশ গোপন বা পরিবর্তন করেননি। ভিন্ন রাসূলের ক্ষেত্রে বিধিবিধান ও আইন-কানুন ভিন্ন হতে পারে। এক রাসূলের উম্মতের উপর যে ইবাদাত ফরজ করা হয়েছে তা অন্য রাসূলের উম্মতের উপরে ফরজ করা হয়নি। আবার এক রাসূলের উম্মতের উপরে যে বিষয়গুলো হারাম করা হয়েছে তা অন্য রাসূলের উম্মতের জন্য হয়তো হালাল করা হয়েছে। কুরআন ও হাদীসে রাসূলদের মধ্যে কারো কারো নাম জানা যায়। যেমন- মুহাম্মদ, ঈসা, দাউদ, মূসা, ইব্রাহিম, নূহ। তবে সব নবী-রাসূলদের নাম ও তাদের বর্ণনা জানানো হয়নি।

কুরআন অনুসারে সর্বশেষ রাসূল হচ্ছেন মুহাম্মদ। ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী, আল্লাহ তাকে অন্য নবীদের উপর বেশ কিছু বিশেষত্ব দিয়েছেন। তাকে সমস্ত জিন ও মানুষের নবী হিসেবে পাঠিয়েছেন।

আসমানী গ্রন্থ সম্পর্কে

মুসলিমরা বিশ্বাস করে, আসমানী কিতাবসমূহ আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিল হয়েছে। কুরআনে বলা হয়েছে,

"কোনো মানুষের এ মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন, ওহীর মাধ্যম, পর্দার আড়াল অথবা কোন দূত পাঠানো ছাড়া। তারপর আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে তিনি যা চান তাই ওহী প্রেরণ করেন। তিনি তো মহীয়ান, প্রজ্ঞাময়।"[কুরআন ৪২:৫১]

"আর অবশ্যই আল্লাহ মূসার সাথে কথা বলেছেন।"[কুরআন ৪:১৬৪]

তাওরাতের ব্যাপারে কুরআনে বলা হয়েছে,

"আর আমি তার জন্য ফলকসমূহে লিখে দিয়েছি প্রত্যেক বিষয়ের উপদেশ এবং প্রত্যেক বিষয়ের বিস্তারিত ব্যাখ্যা।"[কুরআন ৭:১৮৫]

কিতাবসমূহের মধ্যে কয়েকটির নাম কুরআনে বলা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কুরআন, তওরাত, ইঞ্জিল, যাবুর, সহিফায়ে ইব্রাহিম ও সহিফায়ে মূসা।

মুসলিমদের বিশ্বাস অনুসারে, শেষ আসমানী কিতাব কুরআন পূর্বের কিতাবসমূহের সত্য বিষয়গুলোর সত্যায়ন করে, ঐ কিতাবগুলোতে যেসব বিকৃতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে সেগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে।

তাকদীর সম্পর্কে

এ মহাবিশ্বে যা কিছু ঘটবে আল্লাহ তাআলা তার পূর্বজ্ঞান অনুসারে সেসব কিছু নির্ধারণ করে রেখেছেন এরূপ বিশ্বাসকে তাকদীর বলা হয়। মুসলিমরা বিশ্বাস করে,

  • আল্লাহ তাআলা প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে জানেন এবং তিনি লওহে মাহফুজে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বৎসর পূর্বে সবকিছু লিখে রেখেছেন।
  • কোনো কিছুই আল্লাহর ইচ্ছার বাইরে ঘটে না।
  • সবকিছুর জাত-বৈশিষ্ট্য আল্লাহরই সৃষ্টি।
  • মানুষের ইচ্ছা ও ক্ষমতা আল্লাহর ইচ্ছা ও ক্ষমতার অনুবর্তী।

আখিরাত/পরকাল সম্পর্কে

মুসলিমরা বিশ্বাস করে, পার্থিব জীবন শেষ হয়ে মৃত্যু ও কবর জীবনের মাধ্যমে অন্য জগত শুরু হবে। একসময় কিয়ামত সংঘটিত হবে, তারপর পুনরুত্থান, হাশর ও হিসাব-নিকাশের পর ফলাফল প্রাপ্ত হয়ে জান্নাতীরা জান্নাতে এবং জাহান্নামীরা জাহান্নামে যাবে।

কবর

ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর তাকে তার রব, দীন ও শেষনবী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা বা প্রশ্ন করা হবে। মানুষ তাদের কর্ম অনুসারে কবরে শাস্তি বা শান্তি ভোগ করবে। মৃত ব্যক্তি কবর জীবনের শাস্তি অথবা শান্তি প্রাপ্ত হবে, যদিও তাকে ভূগর্ভস্থ করা না হয়।

কিয়ামতের পূর্বাভাস

ইসলাম অনুসারে কিয়ামত বা মহাপ্রলয়ের পূর্বে এর পূর্বাভাস বা আলামত প্রকাশ পাবে। আলেমগণ এ আলামতগুলোকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন:

  1. ছোট আলামত: ছোট পূর্বাভাসগুলোর মধ্যে রয়েছে - ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, বড় বড় অট্টালিকা নিয়ে রাখালদের গর্ব করা, নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, অধিক হত্যা হওয়া, ব্যভিচার ও অন্যায় কাজ অধিক মাত্রায় হওয়া, নবুয়তের মিথ্যা দাবিদারদের আত্মপ্রকাশ, ইউফ্রেটিস নদী থেকে স্বর্ণের পাহাড় আবিষ্কৃত হওয়া ইত্যাদি।
  1. বড় আলামত: বড় পূর্বাভাস দশটি। যেগুলো এখনো প্রকাশিত হয় নি। ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে কিয়ামতের পূর্বে ইমাম মাহদী ও দাজ্জালের আগমন ঘটবে। ঈসা আ. আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। তিনি খৃষ্টানদের ক্রুশ ভেঙ্গে দিবেন, দাজ্জাল ও শুকর হত্যা করবেন। জিযিয়া করের আইন রহিত করবেন। ইসলামি শরী‘আত অনুসারে বিচার পরিচালনা করবেন। একসময় ইয়াজুজ-মাজুজ বের হবে। তাদের ধ্বংসের জন্য তিনি দুআ করবেন, তারপর তারা মারা যাবে। তিনটি বড় ভূমিকম্প হবে। পূর্বে একটি, পশ্চিমে একটি, জাযিরাতুল আরবে একটি। আকাশ থেকে প্রচণ্ড ধোঁয়া নেমে এসে সকল মানুষকে ঢেকে নিবে। পশ্চিম আকাশে সূর্য উদিত হবে। একটি অদ্ভুত চতুস্পদ জন্তু বের হবে। ইয়ামানের আদন থেকে ভয়ানক আগুন বের হয়ে মানুষদের শামের দিকে নিয়ে আসবে।

কিয়ামত, হাশর, হাউয

ইসলামি আকীদা অনুসারে, ইসরাফীল শিঙ্গায় ফুৎকার দিলে কিয়ামত হবে, অর্থাৎ বিশ্বজগৎ ধ্বংস হবে। প্রথম ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথেই আল্লাহ যা জীবিত রাখবেন তাছাড়া সকল সৃষ্টজীব মারা যাবে। দ্বিতীয় ফুৎকার দেওয়ার সাথে সাথেই পৃথিবী সৃষ্টি থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যত সৃষ্টজীবের আর্বিভাব হয়েছিল, তারা সকলেই জীবিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে।

এরপর তাদের হিসাব-নিকাশের জন্য ময়দানে একত্রিত করা হবে। এই একত্রিত করাকে হাশর বলা হয়। ময়দানে অবস্থানকালে সূর্য তাদের নিকটবর্তী হবে। এ উত্তপ্ত ও কঠিন অবস্থান দীর্ঘ হওয়ায় শরীর থেকে নির্গত ঘামে হাবু-ডুবু খাবে তাদের (ভালো-মন্দ) কর্ম অনুপাতে।

ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী, হাউয নামের একটি সুপ্রশস্ত পানির ধারা আল্লাহ্ নবীকে হাশরের মাঠে দান করেছেন। হাউযের পানি দুধের চেয়ে সাদা, বরফের চেয়ে ঠাণ্ডা, মধুর চেয়ে অধিক মিষ্টি, মিশকের চেয়ে সুগন্ধি। যে ব্যক্তি তা থেকে একবার পানি পান করবে, সে আর কখনও পিপাসার্ত হবে না।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

শাফায়াত

মানুষ বিচার দিবসের ভয়াবহ বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যে তাদের রবের নিকট সুপারিশ পেশ করার চেষ্টা করবে। শেষনবী তাদের জন্য সুপারিশ করবেন। কিয়ামতের দিন পাপীদের ক্ষমা করা ও পুণ্যবানদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করা হবে। নবী-রাসুল, ফেরেশতা ও নেককার ব্যক্তিরা সুপারিশ করার অনুমতি পাবে। কুরআনসিয়াম সুপারিশ করবে বলেও হাদিসে উল্লেখ আছে। যে ব্যক্তিদের প্রতি স্বয়ং আল্লাহ সন্তুষ্ট রয়েছেন, তাদের ছাড়া অন্য কারো জন্য কেউ সুপারিশ করবে না।

মীযান, পুল সিরাত, কানত্বারাহ্

আল্লাহ বিচার দিবসে মীযান স্থাপন করবেন, বান্দাদের আমল মাপার ও তাদের কর্মের প্রতিদান প্রদানের জন্য। এর দুটি পাল্লা ও রশি রয়েছে।

ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী পুল সিরাত হলো জাহান্নামের উপর স্থাপিত পুল, যা অন্ধকারাছন্ন ভয়ের পথ। এর উপর দিয়ে মানুষ জান্নাতের দিকে অতিক্রম করবে। কেউ অতি দ্রুত অতিক্রম করবে আবার কেউ অনেক ধীর গতিতে তাদের কর্ম অনুসারে। পুল সিরাতের দুই ধারে হুকের মত অসংখ্য কাঁটা থাকবে। পুল সিরাত হবে তরবারীর চেয়ে ধারালো, চুলের চেয়ে সূক্ষ্ম ও পিচ্ছিল জাতীয়। অনেকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামের তলদেশে নিক্ষিপ্ত হবে।

মুমিনেরা পুলসিরাত অতিক্রম করে কানত্বারাতে অবস্থান করবে। এখানে জান্নাতে যাওয়ার পূর্বে একে অপরের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করে পরিশুদ্ধ হবে। এরপর জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।

জান্নাত, জাহান্নাম

মুসলিমরা বিশ্বাস করে জান্নাতজাহান্নাম বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে এবং সর্বদা থাকবে। জান্নাতবাসীদের নি‘আমত শেষ হবে না, অনুরূপ জাহান্নামীদের মধ্যে যার ব্যাপারে আল্লাহ চিরস্থায়ী শাস্তির ফায়সালা করেছেন তার শাস্তি কখনও শেষ হবে না।

ইসলাম অনুসারে, জান্নাত হলো অতিথিশালা, যা আল্লাহ মুত্তাকীদের জন্য তৈরি করে রেখেছেন। সেখানে রয়েছে প্রবাহিত নদী, সুউচ্চ কক্ষ, মনোলোভা রমণীগণ। আরো রয়েছে এমন সব সামগ্রী যা কোনো দিন কোনো চক্ষু দেখে নি, কোনো কর্ণ শ্রবণ করে নি, আর কোনো মানুষের অন্তরেও কোনো দিন কল্পনায় আসে নি। জান্নাতে মুমিনদের জন্য সব চাইতে বড় নি‘আমত হলো আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখা। সবচেয়ে উন্নত ও উত্তম জান্নাত হল, জান্নাতুল ফিরদাউস আল-আ‘লা। এর ছাদ হলো আল্লাহর ‘আরশ। জান্নাতের সুগন্ধি চল্লিশ বৎসর দূরত্বের রাস্তা থেকে পাওয়া যাবে। জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে, প্রত্যেক দরজার পার্শ্বের দৈর্ঘ্য ‘মক্কা’ থেকে ‘হাজর’ এর দূরত্বের সমান। জান্নাতে নূন্যতম মর্যাদার অধিকারী যে হবে তার জন্য দুনিয়া ও আরো দশ দুনিয়ার পরিমাণ জায়গা হবে।

আর জাহান্নাম হল শাস্তির ঘর যা আল্লাহ কাফির ও অবাধ্যদের জন্য তৈরি করে রেখেছেন। তার পাহারাদার হবে নিষ্ঠুর ও নির্দয় ফিরিশতারা। কাফিরদের খাদ্য হবে যাক্কুম (কাঁটাযুক্ত) আর পানীয় হবে পুঁজ, দুনিয়ার আগুনের তুলনায় ৭০ গুণ তাপমাত্রার আগুনে তাদের শাস্তি দেয়া হবে। জাহান্নামের সাতটি দরজা হবে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

সুন্নি ইসলাম জনসংখ্যাসুন্নি ইসলাম সুন্নি মাযহাবসুন্নি ইসলাম ইতিহাসসুন্নি ইসলাম সুন্নি ধর্মতাত্ত্বিক ঐতিহ্যসুন্নি ইসলাম হাদিসের প্রতি সুন্নি দৃষ্টিভঙ্গিসুন্নি ইসলাম সুন্নি মুসলিমদের বিশ্বাসসুন্নি ইসলাম আরও দেখুনসুন্নি ইসলাম তথ্যসূত্রসুন্নি ইসলাম বহিঃসংযোগসুন্নি ইসলামআবু বকরআরবি ভাষাআলীইসলামি ধর্মতত্ত্বইসলামি সম্প্রদায় ও শাখাখলিফাগাদীর খুমের ভাষণফিকহমুহম্মদের স্থলাভিষেকমুহাম্মদশিয়া ইসলামসুন্নাহ

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

সংস্কৃত ভাষাপানিপথের প্রথম যুদ্ধবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়সহীহ বুখারীইসলামি সহযোগিতা সংস্থাপানিপথের যুদ্ধকৃষ্ণএইচআইভিবিশ্বের মানচিত্রবাংলা ভাষা আন্দোলনমৌলিক পদার্থসাহারা মরুভূমিমেষ রাশি (জ্যোতিষ শাস্ত্র)বাংলাদেশের উপজেলার তালিকাঅসমাপ্ত আত্মজীবনীচট্টগ্রামমৌলিক পদার্থের তালিকাত্রিপুরাবাংলাদেশী টাকাইসলাম ও হস্তমৈথুনফরিদপুর জেলাএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)আল্লাহমাদারীপুর জেলাজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)ভারতের রাষ্ট্রপতিবাংলাদেশের জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার তালিকাদক্ষিণবঙ্গলোহিত রক্তকণিকাপর্নোগ্রাফিঅপু বিশ্বাসবাংলা ভাষানাহরাওয়ানের যুদ্ধশর্করাদুধবক্সারের যুদ্ধপরীমনিহামজনগণমন-অধিনায়ক জয় হেমিশররাজনীতিপায়ুসঙ্গমমুহাম্মাদের স্ত্রীগণআফগানিস্তানসুফিয়া কামালবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিভাইরাসআইসোটোপবিশ্বায়নভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসইসরায়েলমৌলসমূহের ইলেকট্রন বিন্যাস (উপাত্ত পাতা)বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরদের তালিকাঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকনডমবাংলাদেশের নদীর তালিকাচাঁদবাংলাদেশি কবিদের তালিকাচৈতন্য মহাপ্রভুওয়ালাইকুমুস-সালামসুন্দরবনবাংলাদেশ নৌবাহিনীজয় চৌধুরীবাংলা স্বরবর্ণইউরোপীয় দেশগুলো ও অধীনস্থ ভূভাগের তালিকাভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ইউরোপপর্তুগিজ সাম্রাজ্যবাণাসুরপাগলা মসজিদগুগলইউসুফকম্পিউটার কিবোর্ডপরমাণুশব্দ (ব্যাকরণ)খিলাফতনূর জাহানম্যালেরিয়াফেনী জেলা🡆 More