রসায়নে নোবেল পুরস্কার

রসায়ন শাস্ত্রের বিভিন্ন শাখায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য রয়েল সুইডিশ একাডেমী অফ সাইন্স বিজ্ঞানীদেরকে প্রতিবছর ‘“রসায়নে নোবেল পুরস্কার”’ (সুইডীয়: Nobelpriset i kemi) প্রদান করে। ১৮৯৫ সালে আলফ্রেড নোবেল এর উইল অনুসারে যে পাঁচ শাখায় নোবেল পুরস্কার দেয়ার কথা তার মধ্যে রসায়ন অন্যতম। বাকি বিষয়গুলো হচ্ছে পদার্থ, সাহিত্য, শান্তি এবং চিকিৎসা। পরবর্তীতে অর্থনীতিকে এই তালিকায় সংযুক্ত করা হয়। এই পুরস্কারের ব্যাপারটি দেখাশোনা করে নোবেল ফাউন্ডেশন । রসায়ন নোবেল কমিটি’র পরামর্শে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমী অফ সাইন্স এই পুরস্কার প্রদান করে। প্রতিবছর নোবেলের মৃত্যু তারিখ ১০ ডিসেম্বর স্টকহোম থেকে রসায়নে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়।

রসায়নে নোবেল পুরস্কার
রসায়নে নোবেল পুরস্কার
বিবরণরসায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান
অবস্থানস্টকহোম, সুইডেন
দেশসুইডেন উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
পুরস্কারদাতারয়েল সুইডিশ একাডেমী অফ সাইন্স
প্রথম পুরস্কৃত১৯০১
ওয়েবসাইটnobelprize.org

১৯০১ সালে নেদারল্যান্ডস এর জ্যাকবস হেনরিকাস ভ্যান্ট হফ কে প্রদান করা হয়। ১৯০১ থেকে ২০২২ পর্যন্ত মোট ১৮৯ জনকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালের রসায়নে নোবেল পুরস্কারটি ক্লিক কেমিস্ট্রি এবং বায়োর্থোগোনাল কেমিস্ট্রির উন্নয়নের জন্য ক্যারোলিন রুথ বার্টোজি, মর্টেন পেটার মেলডল এবং কার্ল ব্যারি শার্পলেসকে দেওয়া হয়।

তথ্য

বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল উইলে তার শেষ ইচ্ছা প্রকাশ করে যান। যারা পদার্থ, রসায়ন, শান্তিচিকিৎসা এবং সাহিত্য তে মানবকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন তাদেরকে তার সম্পত্তির একটা অংশ পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হবে। নোবেল তার জীবদ্দশায় একাধিক উইল করেছেন। শেষ উইলটি লেখা হয় তার মৃত্যুর বছর খানেক পূর্বে এবং এটি ১৮৯৫ সালের ২৭ নভেম্বর প্যারিসের সুইডিশ-নরওয়েজিয়ান ক্লাবে সাক্ষর করেন। উইলের বিভিন্ন অসংগতির কারণে ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ২৬ এপ্রিল ১৮৯৭ সালে নরওয়ের সংসদ স্টরটিং এটা অনুমোদন করে। নোবেল পুরস্কার প্রদান ও নোবেলের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষনের জন্য র‍্যাগনার সলম্যান এবং রুডলফ লিলজেকুইস্ট নোবেল ফাউন্ডেশান গঠন করেন। নোবেল তার উইলে নোবেল পুরস্কার তত্বাবধানের জন্য তিনটি সুইডিশ এবং একটি নরওয়ের প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে যান। পদার্থ, রসায়ন এবং শান্তিতে পুরস্কারের বিষয়টি দেখাশোনা করে রয়েল সুইডিশ একাডেমী অফ সাইন্স। অন্যদিকে চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল ঘোষণা করে ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট এবং সুইডিশ একাডেমীর হাতে আছে সাহিত্যে নোবেল প্রদানের ক্ষমতা। এবং অসলোর নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করে।

পুরস্কার বিতরণী

অক্টোবর মাসে নোবেল পুরস্কারের জন্য নির্ধারিত কমিটি এবং ইনস্টিটিউশন বিজয়ীগণের নাম ঘোষণা করে। অতঃপর ডিসেম্বর মাসের ১০ তারিখে আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুদিনে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কার প্রদান করা হয়। স্টকহোমে সুইডেনের রাজার হাত থেকে নোবেল বিজয়ীগণ পুরস্কার গ্রহণ করেন। পুরস্কারের মধ্যে থাকে একটি সনদ, একটি স্বর্ণপদক এবং অর্থমূল্যের রশিদ। প্রতিবছর একটি বিষয়ে সর্বোচ্চ তিনজনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।

মনোনয়ন এবং নির্বাচন

রসায়নে নোবেল পুরস্কার 
জ্যাকবস হেনরিকাস ভ্যান্ট হফ

(১৮৫২-১৯১১) সর্বপ্রথম রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার আবিষ্কারের বিষয় ছিলো “দ্যা ল’স অফ কেমিক্যাল ডায়নামিকস এন্ড অসমোটিক প্রেশার ইন সল্যুশানস’’।

রসায়নের অন্য পুরস্কার সমূহের তূলনায় নোবেল পুরস্কারের মনোনয়ন এবং নির্বাচন খুবই দীর্ঘমেয়াদী এবং জটিল প্রক্রিয়া। মূলত এই কারণেই নোবেল পুরস্কার রসায়নবিদ বিজ্ঞানীদের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পুরস্কার। নোবেল সুইডিশ একাডেমী অফ সাইন্স পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি নির্বাচন করে। এই কমিটি রসায়নে নোবেল বিজয়ী নির্বাচন করে। প্রাথমিক ভাবে কয়েক হাজার মানুষ প্রার্থী হিসেবে বাছাই করা হয়। বিশেষজ্ঞদের পর্যালোচনা এবং নিরীক্ষার মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত বিজয়ীগণ টিকে থাকেন। এটা খুবই ধীর একটি প্রক্রিয়া।

প্রার্থীদের নাম কখনোই প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয় না। এমনকি প্রার্থীদেরকে জানানো হয় না যে তাদেরকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। নমিনেশান রেকর্ড পঞ্চাশ বছরের জন্য সিল করে রাখা হয়।

কমিটি প্রথমদিকে বাছাই করে দুই শতাধিক নামের তালিকা তৈরী করে। এই তালিকা বিশেষজ্ঞজনের কাছে পাঠানো হয়। তারা পঞ্চাশ জনের মত একটি তালিকা তৈরী করে। কমিটি ইনস্টিটিউশানের কাছে পর্যালোচনা রিপোর্ট প্রেরণ করে।

রসায়নের ক্ষেত্রে আবিষ্কারের ২০ বছর পরে সাধারনত পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় পুরস্কার ঘোষণার আগেই বিজ্ঞানীগণ মারা যান। মৃত ব্যক্তিকে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয় না। আবার অনেক ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের জীবদ্দশায় তাদের আবিষ্কারের গুরুত্ব বোঝা যায় না। সেক্ষেত্রে তাদেরকে নোবেল পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করা হয় না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় রোজালিন ফ্রাংকলিনের নাম।

পুরস্কার

রসায়নে নোবেল পুরস্কার 
নোবেল পুরস্কার পদক।

রসায়ন নোবেল পুরস্কার বিজয়ীগণ অন্য সব বিজয়ীদের মত একটি স্বর্ণপদক, একটি সনদ এবং টাকা লাভ করেন।

নোবেল পুরস্কার পদক

নোবেল পুরস্কার সনদ নোবেল ফাউন্ডেশানের ট্রেডমার্ক। প্রতিটি পদকের সম্মুখভাগে আলফ্রেড নোবেলের প্রতিকৃতি এবং জন্ম-মৃত্যু তারিখ (১৮৩৩-১৮৯৬) খোদাই করা থাকে।

নোবেল পুরস্কার ডিপ্লোমা

নোবেল বিজয়ীগণ সুইডেনের রাজার কাছ থেকে সরাসরি একটি সনদ লাভ করেন। সনদে একটি ছবি এবং লরেটের নাম এবং কেন তিনি এটা পাচ্ছেন তা উল্লেখ করা থাকে।

অর্থ পুরস্কার

যখন নোবেল বিজয়ীগণ পুরস্কার গ্রহণ করেন তখন তাদেরকে কিছু অর্থ প্রদান করা হয়। ২০০৯ সালের তথ্য অনুসারে তখন এই অর্থপুরস্কারের পরিমাণ ছিলো ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা বা ১.৪ মিলিয়ন ইউএস ডলার

নোবেল বিজয়ী

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

    সাধারণ
    নির্দিস্ট

বহিঃসংযোগ

Tags:

রসায়নে নোবেল পুরস্কার তথ্যরসায়নে নোবেল পুরস্কার পুরস্কার বিতরণীরসায়নে নোবেল পুরস্কার মনোনয়ন এবং নির্বাচনরসায়নে নোবেল পুরস্কার পুরস্কাররসায়নে নোবেল পুরস্কার নোবেল বিজয়ীরসায়নে নোবেল পুরস্কার আরও দেখুনরসায়নে নোবেল পুরস্কার তথ্যসূত্ররসায়নে নোবেল পুরস্কার বহিঃসংযোগরসায়নে নোবেল পুরস্কারআলফ্রেড নোবেলনোবেল পুরস্কারনোবেল ফাউন্ডেশনরসায়নসুইডীয় ভাষা

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

এল নিনোশ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়জিয়াউর রহমান২০২৪ কোপা আমেরিকাইংরেজি ভাষামুন্সীগঞ্জ জেলাধর্মফেনী জেলাতরমুজআবুল কাশেম ফজলুল হকপাবনা জেলানামাজের সময়সমূহদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনচিরস্থায়ী বন্দোবস্ততাপমাত্রা২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগসমাজকর্মবাংলাদেশের ইতিহাসসোনাপ্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণর‍‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনগাজীপুর জেলামৌলিক সংখ্যাজীবনানন্দ দাশলক্ষ্মীপুর জেলাইন্সটাগ্রামগাণিতিক প্রতীকের তালিকাওপেকচাকমাবিরাট কোহলিযতিচিহ্নবেনজীর আহমেদবাংলাদেশের উপজেলার তালিকানামাজের নিয়মাবলীমাইটোসিসচৈতন্য মহাপ্রভুশিখধর্মউসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতানদের তালিকাসুলতান সুলাইমানমাওয়ালিসৌদি রিয়ালবাংলাদেশের উপজেলাপশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন, ২০২১বন্ধুত্বকাঠগোলাপব্রিটিশ ভারতহৃৎপিণ্ডএশিয়ানয়নতারা (উদ্ভিদ)বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীজাযাকাল্লাহআনন্দবাজার পত্রিকাইসরায়েলের ইতিহাসহোমিওপ্যাথিইস্তেখারার নামাজমৈমনসিংহ গীতিকাবাগদাদ অবরোধ (১২৫৮)জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়ামৌলিক পদার্থের তালিকাসত্যজিৎ রায়অপরাধমেঘনা বিভাগসাতই মার্চের ভাষণবিজ্ঞানবাংলাদেশ ছাত্রলীগআশারায়ে মুবাশশারাসৌরজগৎতাজমহললিঙ্গ উত্থান ত্রুটিনরেন্দ্র মোদীজবারূপান্তরিত লিঙ্গঢাকা মেট্রোরেলবাংলাদেশের জাতীয় পতাকা🡆 More