কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন

কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন (আরবি: فلسطين Filasṭīn; হিব্রু ভাষায়: פָּלֶשְׂתִּינָה (אי)‎ Pālēśtīnā (EY), এখানে EY দ্বারা ইরেতজ ইজরায়েল (ইসরায়েলের ভূমি) বোঝানো হয়) ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর উসমানীয় সাম্রাজ্যের দক্ষিণ সিরিয়া অংশ থেকে আলাদা করা এবং ব্রিটিশ প্রশাসনের অধীনে পরিচালিত একটি ভৌগোলিক অঞ্চল। ১৯২০ থেকে ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ব্রিটিশ বেসামরিক প্রশাসন ফিলিস্তিন পরিচালনা করে। এসময় অঞ্চলটি প্যালেস্টাইন তথা ফিলিস্তিন বলে পরিচিত ছিল। তবে অন্যান্য নামও প্রচলিত ছিল যার মধ্যে রয়েছে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন, ব্রিটিশ ফিলিস্তিন এবং ব্রিটিশ কর্তৃত্বাধীন ফিলিস্তিন।

কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন

১৯২০–১৯৪৮
ফিলিস্তিনের জাতীয় পতাকা
পতাকা
ফিলিস্তিনের পাবলিক সিল
পাবলিক সিল
কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন
অবস্থাসম্মিলিত জাতিপুঞ্জ দ্বারা কর্তৃত্বপ্রদান
রাজধানীজেরুসালেম
প্রচলিত ভাষাইংরেজি, আরবি, হিব্রু
ধর্ম
ইসলাম, খ্রিষ্ট, দ্রুজ, ইহুদি, বাহাই
হাই কমিশনার 
• ১৯২০–১৯২৫ (প্রথম)
স্যার হার্বা‌র্ট‌ স্যামুয়েল
• ১৯৪৫-১৯৪৮ (শেষ)
স্যার অ্যাালেন জি. কানিংহাম
ঐতিহাসিক যুগযুদ্ধমধ্যবর্তী সময়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
• কর্তৃত্ব প্রদান
২৫ এপ্রিল ১৯২০
• ব্রিটেন সরকারিভাবে নিয়ন্ত্রণ পায়
২৯ সেপ্টেম্বর ১৯২৩
১৪ মে ১৯৪৮
মুদ্রামিশরীয় পাউন্ড (১৯২৭ পর্যন্ত)
ফিলিস্তিনি পাউন্ড (১৯২৭ থেকে)
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন অধিকৃত শত্রু অঞ্চল প্রশাসন
ট্রান্সজর্ডান আমিরাত কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন
ইসরায়েল কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন
অল-প্যালেস্টাইন গভর্নমেন্ট কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন
পশ্চিম তীরে জর্ডানি অধিকার কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন
বর্তমানে যার অংশকর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন ইসরায়েল
কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আরবদের উত্থান এবং জেনারেল এডমন্ড এলেনবির নেতৃত্বধীন অভিযান তুর্কিদেরকে লেভান্ট থেকে তাড়িয়ে দেয়। যুক্তরাজ্য হুসাইন-ম্যাকমাহন চুক্তিতে সম্মত হয় যে আরবরা উসমানীয়দের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলে আরব স্বাধীনতায় তারা সমর্থন দেবে। উভয় পক্ষ এই চুক্তি নিয়ে ভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা পোষণ করত। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স সাইকস-পিকট চুক্তির আওতায় অধিকৃত অঞ্চল নিজেদের মধ্যে বণ্টন করে নেয়ার কথা বলা হয় যা আরবদের চোখে বিশ্বাসঘাতকতা বলে গণ্য হয়। এছাড়াও বেলফোর ঘোষণাতে ফিলিস্তিনি ইহুদিদের জন্য জাতীয় আবাসভূমির কথা উল্লেখ করায় পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়। যুদ্ধ শেষে অধিকৃত শত্রু অঞ্চল প্রশাসন নামক নতুন সামরিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়। সাবেক উসমানীয় সিরিয়ায় এই প্রশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশরা ১৯২২ সালের জুন মাসে লীগ অব নেশনস থেকে ফিলিস্তিনের জন্য কর্তৃত্ব লাভ করে। সাবেক উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধিকৃত অঞ্চলগুলো নিজের পায়ে দাঁড়ানোর আগ পর্যন্ত পরিচালনার জন্য কর্তৃত্বপ্রদান প্রথা চালু করা হয়েছিল। ব্রিটেনকে কর্তৃত্বপ্রদত্ত দুটি অঞ্চল ছিল, একটি জর্ডান নদীর পশ্চিম অংশ যা ফিলিস্তিন বলে পরিচিত ছিল। এই অংশ ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত সরাসরি ব্রিটিশ শাসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। আরেকটি অংশ ছিল পূর্ব তীরের ট্রান্সজর্ডান আমিরাত যা আধাস্বায়ত্তশাসিত হিসেবে পরিচালিত হচ্ছিল। হেজাজের হাশেমি পরিবার ট্রান্সজর্ডানের শাসনভার পায় এবং ১৯৪৬ সালে স্বাধীনতা লাভ করে।

কর্তৃত্বপ্রদানের প্রকৃতি নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া অঞ্চলের নাম নিয়ে আলোচনায় প্রতীয়মান হয়। লীগ অব নেশনসের স্থায়ী কর্তৃত্বপ্রদান কমিশনের নবম অধিবেশন অনুযায়ী:

      "কর্নেল সাইমস ব্যাখ্যা করেছেন যে দেশটি ইউরোপীয়রা ‘প্যালেস্টাইন’ এবং আরবরা ‘ফিলিস্তিন’ বলে উল্লেখ করে। দেশটির জন্য হিব্রু নাম ছিল ‘ইসরায়েলের ভূমি’ এবং ইহুদি আকাঙ্ক্ষাকে পূরণের জন্য সরকার একমত হয়েছে যে সকল সরকারি দলিলে হিব্রু অক্ষরে লেখা “ফিলিস্তিন” এর পরে নামটির (ইহুদি নাম) আদ্যক্ষর থাকবে। পাল্টা দাবি হিসেবে কিছু আরব রাজনীতিবিদ পরামর্শ দিয়েছেন যে দেশটিকে ‘দক্ষিণ সিরিয়া’ বলে ডাকা উচিত যাতে আরেকটি আরব রাষ্ট্রের সাথে এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ফুটে উঠে"।

ব্রিটিশ কর্তৃত্বপ্রাপ্তি সময়কালে এই অঞ্চলে দুইটি প্রধান জাতীয়তাবাদী আন্দোলন সৃষ্টি হয় যার একটি ইহুদিদের মধ্যে এবং আরেকটি আরবদের মধ্যে শুরু হয়েছিল। আরব ও ইহুদিরা একে অন্যের বিপক্ষে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়। ধারাবাহিকতায় ফিলিস্তিনে আরব বিদ্রোহ সংঘটিত হয় এবং ইহুদিরা বিদ্রোহ করে। পরবর্তীতে সংঘটিত ১৯৪৮ আরব-ইসরায়েলি যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৯৪৯ সালে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন ভূখন্ডকে ভাগ করে নতুন গঠিত ইসরায়েল গঠন করা হয়। পশ্চিম তীর জর্ডান কর্তৃক একীভূত হয় এবং গাজা উপত্যকা মিশরীয় সামরিক অধিকারের আওতায় চলে যায়।

চিত্রশালা

আরও দেখুন

  • আর্নে‌স্ট বেভিন
  • ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ কর্তৃত্বাধীন সময়ের পাসপোর্ট
  • ফয়সাল-ওয়াইজমেন চুক্তি (১৯১৯)
  • হার্বা‌র্ট‌ ডোবিগিন
  • ফিলিস্তিনের হাইকমিশনার
  • ইসরায়েলের স্বাধীনতা ঘোষণা
  • ভূগর্ভস্থ বন্দীদের জাদুঘর
  • ফিলিস্তিন কমান্ড
  • ফিলিস্তিন পাউন্ড
  • ফিলিস্তিনের ডাক ইতিহা
  • রুশ কম্পাউন্ড
  • টেগার্টে‌র দেয়াল
  • সার্জেন্টের ঘটনা

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

  • Wright, Quincy, The Palestine Problem, Political Science Quarterly, Vol. 41, No. 3 (September, 1926), pp. 384–412, via JSTOR
  • Hanna, Paul Lamont, "British Policy in Palestine", Washington, D.C., American Council on Public Affairs, (1942)
  • Miller, Rory, ed. Britain, Palestine and Empire: The Mandate Years (2010)
  • Ravndal, Ellen Jenny. "Exit Britain: British Withdrawal From the Palestine Mandate in the Early Cold War, 1947–1948," Diplomacy and Statecraft, (Sept 2010) 21#3 pp 416–433.
  • Roberts, Nicholas E. "Re-Remembering the Mandate: Historiographical Debates and Revisionist History in the Study of British Palestine," History Compass (March 2011) 9#3 pp 215–230.
  • Kamel, Lorenzo. "Whose Land? Land Tenure in Late Nineteenth- and Early Twentieth-Century Palestine", "British Journal of Middle Eastern studies" (April 2014), 41, 2, pp 230–242.

প্রাথমিক উৎস

  • Golani, Motti, ed. The End of the British Mandate for Palestine, 1948: The Diary of Sir Henry Gurney (2009).

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Territories of the British Empire

Tags:

কর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন চিত্রশালাকর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন আরও দেখুনকর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন তথ্যসূত্রকর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন গ্রন্থপঞ্জিকর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন আরও পড়ুনকর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিন বহিঃসংযোগকর্তৃত্বপ্রাপ্ত শক্তির অধীন ফিলিস্তিনআরবি ভাষাউসমানীয় সাম্রাজ্যহিব্রু ভাষা

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

প্রাকৃতিক পরিবেশউসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতানদের তালিকাইসলামের পঞ্চস্তম্ভহস্তমৈথুনজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ)বাংলাদেশের জেলামুসাবিশ্ব দিবস তালিকাসত্যজিৎ রায়ব্যঞ্জনবর্ণবাংলা বাগধারার তালিকাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সেক্টরসমূহরক্তের গ্রুপগুগল ম্যাপসসালাতুত তাসবীহঅনাভেদী যৌনক্রিয়াকেন্দ্রীয় শহীদ মিনারভারত বিভাজনখালেদা জিয়া১৮৫৭ সিপাহি বিদ্রোহবাংলাদেশের পোস্ট কোডের তালিকাঢাকাভিটামিনআলবার্ট আইনস্টাইনফজলুর রহমান খানমালয়েশিয়ালিঙ্গ উত্থান ত্রুটিরাজশাহীজাপানকার্তিক (দেবতা)শীর্ষে নারী (যৌনাসন)বিশেষণঅধিবর্ষফিলিস্তিনের ইতিহাসসূরা আর-রাহমানজয়তুনসৌদি আরবসোনাবিভিন্ন ধর্ম ও বিশ্বাসের তালিকামুঘল সাম্রাজ্যঅস্ট্রেলিয়াওপেকআংকর বাটলুয়ান্ডাব্রহ্মপুত্র নদবাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনীসমূহমাহিয়া মাহিযাকাতজন্ডিসশব্দ (ব্যাকরণ)অর্থনীতিবাংলাদেশের ব্যাংকসমূহের তালিকালালবাগের কেল্লাফরাসি বিপ্লবের কারণরমজানবাংলা একাডেমিমুহাম্মাদরামমোহন রায়ফুসফুসকামরুল হাসানভূমি পরিমাপভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসবাউল সঙ্গীতসোমালিয়াআল-আকসা মসজিদআরবি ভাষাস্মার্ট বাংলাদেশভগবদ্গীতাআমর ইবনে হিশামদিনাজপুর জেলারাজনীতিবিকাশভীমরাও রামজি আম্বেদকরমার্কসবাদহিন্দুধর্মের ইতিহাসবাংলাদেশ নৌবাহিনীলগইন🡆 More