লিওনার্দো দা ভিঞ্চি: ইতালীয় চিত্রশিল্পী

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি বা লেওনার্দো দা ভিঞ্চি ছিলেন ( ইতালীয়: Leonardo da Vinci: লেওনার্দো দা ভিঞ্চি; তার পূর্ণ নাম হল: Leonardo di ser Piero da Vinci লেওনার্দো দি সের পিয়েরো দা ভিঞ্চি ; ১৫ এপ্রিল, ১৪৫২–২ মে, ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দ.) ইতালীয় রেনেসাঁস পর্বের একজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী। এছাড়া বহুমুখী প্রতিভাধর লিওনার্দোর অন্যান্য পরিচয়ও সুবিদিত; ভাস্কর,স্থপতি, সঙ্গীতজ্ঞ এবং সমরযন্ত্রশিল্পীসহ বিংশ শতাব্দীর বহু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের নেপথ্য জনক। দা ভিঞ্চির জন্ম ফ্লোরেন্সের অদূরবর্তী ভিঞ্চি নগরের এক গ্রামে ১৪৫২ সালের ১৫ এপ্রিল। তাঁর বিখ্যাত শিল্পকর্ম গুলোর মধ্যে মোনালিসা, দ্য লাস্ট সাপার অন্যতম।

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি
লিওনার্দো দা ভিঞ্চি: জীবনী, সালভাতোর মুন্ডি and the last supper, প্রকৌশল এবং উদ্ভাবন
লাল খড়িতে ১৫১২-১৫১৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে আঁকা লিওনার্দোর আত্মপ্রতিকৃতি
জন্ম
লেওনার্দো দি সের পিয়েরো

(১৪৫২-০৪-১৫)১৫ এপ্রিল ১৪৫২
ভিঞ্চি,ইতালি, বর্তমানে ফ্লোরেন্সের প্রদেশ, ইতালি
মৃত্যুমে ২, ১৫১৯(1519-05-02) (বয়স ৬৭)
এম্বোইজ, তুরিন (বর্তমানে আঁদ্র-এ-লোয়ার, ফ্রান্স)
জাতীয়তাইতালীয়
পরিচিতির কারণঅনেক এবং চিত্রকলা ও বিজ্ঞানের বিবিধ ক্ষেত্র
উল্লেখযোগ্য কর্ম
মোনা লিসা, শেষ নৈশভোজ (লিওনার্দো দা ভিঞ্চি), ভিত্রুভিয়ানো মানব,লেডি উইথ অ্যান এরমাইন
আন্দোলনউচ্চ রেনেসাঁস
লিওনার্দো দা ভিঞ্চি: জীবনী, সালভাতোর মুন্ডি and the last supper, প্রকৌশল এবং উদ্ভাবন
লিওনার্দো দা ভিঞ্চির স্বাক্ষর

দা ভিঞ্চির শৈল্পিক মেধার বিকাশ ঘটে খুব অল্প বয়সে। আনুমানিক ১৪৬৯ খ্রিস্টাব্দে রেনেসাঁসের অপর বিশিষ্ট শিল্পী ও ভাস্কর আন্দ্রেয়া ভেরোচ্চোর কাছে ছবি আঁকা ভিঞ্চির শিক্ষানবিশী জীবনের সূচনা হয় এবং এ শিক্ষা গুরুর অধীনেই তিনি ১৪৭৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে, বিশেষত চিত্রাঙ্কনে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেন। এর আগে ১৪৭২ সালেই তিনি চিত্রশিল্পীদের সংঘে যোগ দেন এবং এসময় থেকেই তার চিত্রকর জীবনের সূচনা হয়।

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি: জীবনী, সালভাতোর মুন্ডি and the last supper, প্রকৌশল এবং উদ্ভাবন
লিওনার্দোর আঁকা মোনালিসা

১৪৭৮ সাল থেকে ১৫১৬-১৭ ও ১৫১৯ সাল অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্রসারিত এবং বিভিন্ন পর্বে বিভক্ত, এক দীর্ঘ ও অক্লান্ত কর্ম সাধনার জীবন তাঁর। গির্জা ও রাজপ্রাসাদের দেয়ালে চিত্রাঙ্কন এবং রাজকীয় ব্যক্তিবর্গের ভাস্কর্য নির্মাণের পাশাপাশি বেসামরিক এবং সামরিক প্রকৌশলী হিসাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান জ্ঞানের প্রয়োগ, অঙ্গ ব্যবচ্ছেদবিদ্যা, জীববিদ্যা, গণিত ও পদার্থবিদ্যার মতো বিচিত্র সব বিষয়ের ক্ষেত্রে তিনি গভীর অনুসন্ধিৎসা প্রদর্শন করেন এবং মৌলিক উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দেন।

আনুমানিক ১৪৮২ সালে তিনি মিলান গমন করেন এবং সেখানে অবস্থানকালে তাঁর বিখ্যাত দেয়াল চিত্র দ্য লাস্ট সাপার অঙ্কন করেন। আনুমানিক ১৫০০ সালে তিনি ফ্লোরেন্স ফিরে আসেন এবং সামরিক বিভাগে প্রকৌশলী পদে নিয়োগ লাভ করেন। এই সময়েই তিনি তাঁর বিশ্বখ্যাত চিত্রকর্ম মোনালিসা অঙ্কন করেন। জীবনের শেষকাল তিনি ফ্রান্সে কাটান।

অনেক ঐতিহাসিক ও পণ্ডিত লিওনার্দোকে "ইউনিভার্সাল প্রতিভা" বা "রেনেসাঁ মানব" আখ্যা দিয়েছেন।.

জীবনী

কৈশোর (১৪৫২-১৪৬৬)

দা ভিঞ্চির জন্ম হয়েছিল ১৪৫২ সালের ১৫ এপ্রিল । তোসকানার পাহাড়ি এলাকা ভিঞ্চিতে, আর্নো নদীর ভাটি অঞ্চলে। তিনি ছিলেন ফ্লোরেন্সের এক নোটারি পিয়েরে দা ভিঞ্চির এবং এক গ্রাম্য মহিলা কাতেরিনার অবৈধ সন্তান। তার মা সম্ভবত মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত দাসী ছিলেন। আধুনিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে লিওনার্দোর নামে কোন বংশ পদবী ছিল না। "দা ভিঞ্চি" দিয়ে বোঝায় তিনি এসেছেন ভিঞ্চি নগরী থেকে। তাঁর পুরো নাম “লেওনার্দো দি সের পিয়েরো দা ভিঞ্চি” এর অর্থ হল "পিয়েরোর পুত্র লেওনার্দো, যার জন্ম ভিঞ্চিতে"।

লিওনার্দোর জীবনের প্রথম অংশ বিষয়ে খুবই অল্প জানা গিয়েছে। তার জীবনের প্রথম ৫ বছর কেটেছে আনসিয়ানো-র একটি ছোট্ট গ্রামে। তারপর তিনি চলে যান ফ্রান্সিসকোতে , সেখানে তিনি তার পিতা, ঠাকুরদা, ঠাকুরমা ও কাকার সাথে থাকতেন। তার পিতা অ্যালবিরা নামে এক ষোড়শী তরুণী কে বিয়ে করেছিল। সে লিওনার্দো কে অনেক স্নেহ করত। কিন্তু অল্প বয়সেই সে মৃত্যবরণ করে। এর পরে কৈশোর জীবন বিষয়ে লিওনার্দো দুটি ঘটনার কথা লিপিবব্ধ করে গিয়েছেন। প্রথমটি হল — একবার একটি চিল হঠাৎ করে আকাশ থেকে নেমে তার দোলনার উপর দিয়ে যাবার সময় তার মুখে এর লেজের পালক বুলিয়ে যায়। লোকজন এই ঘটনাকে তার ভবিষ্যৎ জীবনের সফলতার লক্ষণ হিসেবেই ধরে নিয়েছিল। দ্বিতীয় ঘটনা হল — তিনি ছোটবেলায় একবার এক পাহাড়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি একটা গুহা আবিষ্কার করেছিলেন। গুহাটা ছিল অন্ধকার, আর তার মনে হচ্ছিল এর ভিতরে নিশ্চয় কোনো অতিকায় দৈত্য লুকিয়ে আছে। কিন্তু তার অদম্য কৌতূহলের কারণে তিনি এই গুহায় কী আছে, তা খুঁজেও দেখেছিলেন।

ষোড়শ শতাব্দীর জীবনী লেখক ভাসারি রেঁনেসার চিত্রশিল্পীদের জীবনী লিখেছিলেন। লিওনার্দো কে নিয়ে তিনি তাঁর বর্ণনায় বলেছেন-লিওনার্দো-র বাবা কে স্থানীয় একজন লোক বলেছিল তিনি যেন তার ছেলেকে একটি ছবি আঁকতে বলেন। লিওনার্দো এই অনুরোধের প্রেক্ষিতে একটি ছবি এঁকেছিল। ছবিটিতে ছিল একটি সাপ মুখ থেকে আগুন নির্গত করছে। ছবিটি এত সুন্দর হয়েছিল যে পিয়েরো তা স্থানীয় চিত্র ব্যবসায়ীদের কাছে তা বেশ ভাল দামে বিক্রি করেছিলেন। আর যে লোকটি তাকে এ ছবিটি আঁকিয়ে নিতে বলেছিল, তিনি তাকে একটি হৃদয়ের ছবি আঁকা ফলক উপহার দিয়েছিলেন।

শিক্ষা

দা ভিঞ্চি কোনও রকম আনুষ্ঠানিক লেখাপড়া গ্রহণ করেননি। তার লেখাপড়ার সবকিছুই ঘরোয়াভাবে। তার ছিল প্রকৃতির প্রতি ভীষণ টান। এজন্য তিনি বেশিরভাগ সময় বাইরে বাইরে কাটাতে পছন্দ করতেন। ১৪৬৬ সালে লিওনার্দোর বয়স যখন ১৪ তখন তাকে ডেল ভেরোচ্চির কাছে শিক্ষানবিশ হিসেবে পাঠানো হয়, এরপর দ্রুতই তাঁর প্রতিভার প্রকাশ ঘটে। বলা হয়ে থাকে ভিঞ্চির “দা ব্যাপ্টিজম অফ ক্রাইস্ট” এতটাই সুনিপুণ হয় যে তা দেখার পর ভেরোচ্চি জীবনের জন্য আঁকা ছেড়ে দেবার পণ করেন।

ভ্যারিচ্চিও-র কাজে যোগদান (১৪৬৬-১৪৭৬)

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি: জীবনী, সালভাতোর মুন্ডি and the last supper, প্রকৌশল এবং উদ্ভাবন 
ইতালির ফ্লোরেন্সে স্থাপিত লিওনার্দোর একটি মূর্তি

১৪৬৬ সালে লিওনার্দোর বয়স যখন ১৪, তখন তিনি ভ্যারিচ্চিও (Verrocchio)-র কাছে শিক্ষানবীশ হিসেবে যোগ দেন। ভ্যারিচ্চিও-র পুরো নাম “আন্দ্রে দাই সায়ন”, তিনি ছিলেন সে সময়ের একজন সফল চিত্রকর। ভ্যারিচ্চিও-র কর্মস্থলে তৎকালীন গুণী মানুষদের সমাগম হত।আরও নামকরা যেসব শিল্পী ভ্যারিচ্চিও-র তত্ত্বাবধানে কাজ করত বা তার ওয়ার্কশপে যাতায়াত করত, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন গিরল্যান্ডিও (Ghirlandaio), পেরুগন (Perugino), লরেঞ্জো দাই ক্রিডি (Lorenzo di Credi)।

এখানে কাজ করে লিওনার্দো হাতে কলমে প্রচুর কারিগরি জ্ঞানার্জন করেছিলেন। তাঁর সুযোগ হয়েছিল কারুকার্য, রসায়ন, ধাতুবিদ্যা, ধাতু দিয়ে বিভিন্ন জিনিস বানানো, প্রাস্টার কাস্টিং, চামড়া দিয়ে বিভিন্ন জিনিস বানানো, গতিবিদ্যা এবং কাঠের কাজ ইত্যাদি শেখার। তিনি আরও শিখেছিলেন দৃষ্টিনন্দন নকশা করা, ছবি আঁকা, ভাস্কর্য তৈরি এবং মডেলিং। ভ্যারিচ্চিও-র ওয়ার্কশপে বেশিরভাগ কাজ করত তাঁর অধীনস্থ কর্মচারীরা। ভাসারীর বর্ণনানুসারে লিওনার্দো ভ্যারিচ্চিও কে তাঁর “ব্যাপ্টিজম অব ক্রাইস্ট” ছবিটিতে সাহায্য করেছিলেন। ছবিটিতে দেখানো হয়েছে একটি দেবদূত যীশুর লাঠি ধরে আছে। ছবিটি ভ্যারিচ্চিও কে এতটাই অভিভূত করেছিল যে তিনি নাকি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আর কখনো তুলিই ধরবেন না, ছবিও আঁকবেন না। তবে খুব সম্ভবত ভাসারি ঘটনাটি অতিরঞ্জিত করেছিলেন। সূক্ষ্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এ ছবিটির যে সব বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় তা হল- এটি বিশেষ পদ্ধতিতে তৈল রং দিয়ে আঁকা। ভ্যারিচ্চিও বেশ কয়েকটি কাজে লিওনার্দো মডেল হিসেবে ছিলেন। যেমন- “ডেভিড” চরিত্রে “দি বার্জেলো” ( Bargello) নামক ব্রোঞ্জ মূর্তিতে, “আর্চঅ্যাঞ্জেল মাইকেল” হিসেবে “টোবিস এন্ড অ্যাঞ্জেল“(Tobias and the Angel) এ।

১৪৭২ সালে ২০ বছর বয়সে লিওনার্দো “গিল্ড অব সেন্ট লুক” এর পরিচালক হবার য্যোগ্যতা অর্জন করেন। এটি চিকিৎসক এবং চিত্রকরদের একটি সংঘ। কিন্তু তাঁর বাবা তাঁকে নিজেদের ওয়ার্কশপের কাজে লাগিয়ে দেন। ভ্যারিচ্চিওর সাথে চুক্তি অনুসারে তিনি তার সাথেও কাজ চালিয়ে যান। লিওনার্দোর নিজের হাতে তারিখ দেওয়া সবচেয়ে পুরানো ছবি হল আর্নোভ্যালি, তারিখটি হল ৫ আগস্ট ১৪৭৩।

পেশাগত জীবন (১৪৭৬-১৫১৩)

আদালতের নথি থেকে দেখা যায় একবার লিওনার্দো সহ আরও ৩ জন যুবককে সমকামীতার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছিল এবং তারা বেকসুর খালাসও পেয়েছিল। এরপর ১৪৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি কি করেছিলেন, কোথায় ছিলেন তার কিছুই জানা যায়নি। ধারণা করা হয় পরবর্তিতে ১৪৭৮ থেকে ১৪৮১ পর্যন্ত লিওনার্দো তাঁর নিজের ওয়ার্কশপে কাজ করেছেন। তিনি ১৪৭৮ সালে চ্যাপেল অব সেন্ট বার্নার্ড ও “অ্যাডোরেশন অব দি ম্যাগি” এবং ১৪৮১ সালে “মঙ্ক অব সান ডোনাটো এ স্কাপিটো” আঁকার দায়িত্ব পান।

ভাসারির মতে লিওনার্দো সে সময়ের সেরা সংগীতজ্ঞ ছিলেন। ১৪৮২ সালে তিনি ঘোড়ার মাথার আকৃতির একটি বীণা তৈরি করেছিলেন। লরেঞ্জো দ্য মেডিসি (Lorenzo de’ Medici) লিওনার্দো-র হাতে এই বীনা উপহার স্বরূপ মিলানের ডিউক লুদোভিকো এল মোরো (Ludovico il Moro) এর কাছে পাঠিয়েছিলেন শান্তিচুক্তি নিশ্চিত করার জন্য। এ সময় লিওনার্দো ডিউকের কাছে একটি চিঠি লিখেন, যাতে ছিল তার উদ্ভাবিত বিভন্ন চমকপ্রদ যন্ত্রের বর্ণনা। তিনি এ চিঠিতে নিজের চিত্রশিল্পী পরিচয়ের কথাও লিখেছিলেন।

লিওনার্দো ১৪৮২ থেকে ১৪৯৯ সালের মধ্যবর্তী সময়ে মিলানে কাজ করেছেন। এখানে তিনি ভার্জিন অব দ্যা রকস্ এবং দ্যা লাস্ট সাপার ছবি দুটি আঁকার দায়িত্ব পান। ১৪৯৩ থেকে ১৪৯৫ এর মধ্যে তার অধিনস্তদের মাঝে ক্যাটরিনা নামে এক মহিলার নাম পাওয়া যায়। ১৪৯৫ সালে এ মহিলাটি মারা যান। সে সময় তার শেষকৃত্যের খরচ দেখে ধারণা করা হয় তিনি ছিলেন লিওনার্দোর মা।

==চিত্রকলা==rrhrnrm

সালভাতোর মুন্ডি and the last supper

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি: জীবনী, সালভাতোর মুন্ডি and the last supper, প্রকৌশল এবং উদ্ভাবন 

The da Vinci codeটেমপ্লেট:Legend l.ts.p.d.vinci ইতিহাস গড়া এই ছবিটি যিশুখ্রিষ্টের। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, তিনি এক হাত তুলে রয়েছেন (আশীর্বাদ দেওয়ার ভঙ্গি) এবং অন্য হাতে একটি স্ফটিকের গোলক। ‘সালভাতোর মুন্ডি’—শব্দের অর্থ ‘বিশ্বের পরিত্রাতা’।

বিশ্লেষকদের ধারণা, ১৫০৫ সালের কিছু পরে ছবিটি এঁকেছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ভিঞ্চি। অনেক দিন লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকার পর ২০০৫ সালে ছবিটি প্রকাশ্যে এলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। ২০১৩ সালে ছবিটি ১২ কোটি ৭৫ লাখ ডলারে কিনে নেন রুশ সংগ্রাহক এবং ফুটবল ক্লাব এএস মোনাকোর মালিক দিমিত্রি রাইবলোভেলভ।

প্রকৌশল এবং উদ্ভাবন

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি: জীবনী, সালভাতোর মুন্ডি and the last supper, প্রকৌশল এবং উদ্ভাবন 
একটি উড়ন্ত মেশিনের জন্য একটি নকশা, ফ্রান্স, প্যারিস (সি. ১৪৮৮) ইনস্টিটিউট

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি তার জীবদ্দশায় প্রকৌশলী হিসেবেও অনেক খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। লুভোডিকো মুরো নামক এক ব্যক্তিকে তিনি এক চিঠি দিয়ে দাবি করেছিলেন যে তিনি একটি শহরের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার জন্য সয়ংক্রিয় কিছু যন্ত্র আবিষ্কারে সক্ষম হয়েছেন। তারপর যখন তিনি ভেনিসে স্থানান্তরিত হলেন, তখন সেখানে তিনি এক ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিতে চাকরি পান। যেখানে তিনি তার উদ্ভাবনী শক্তির পূর্ন বিকাশ সাধন করেন। শহরকে বহিরাগত আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য একটি স্থানান্তর যোগ্য ব্যারিকেট তৈরিতে সক্ষম হন যার ফলে তিনি অনেক খাতি অর্জন করেন। লিওনার্দো তার পত্রিকায় বিভিন্ন বাস্তব এবং অবাস্তব যন্ত্রের বর্ণনা দিয়েছিলেন। যার মধ্যে রয়েছে নানা রকম বাদ্যযন্ত্র , একটি যান্ত্রিক সৈন্য, হাইড্রোলিক পাম্প, ডানার মর্টার শেল এবং একটি বাষ্প কামান।

তিনি তার জীবনের একটি বড় সময় উড্ডন সক্ষম যন্ত্র তৈরিতে ব্যয় করেন। তিনি তার জীবদ্দশায় উড়তে সক্ষম এরকম যন্ত্র ডিজাইনে ব্যাস্ত ছিলেন। তারই প্রদত্ত ডিজাইনে বর্তমানে আধুনিক বিমান নির্মাণ সক্ষম হয়েছে।

শেষ জীবন,১৫১৩ থেকে ১৫১৯

সেপ্টেম্বর ১৫১৩ থেকে ১৫১৬ পর্যন্ত অধিকাংশ সময় তিনি রোমে দশম পোপ এর অধীনে কাটিয়েছিলেন। অক্টোবর ১৫, ১৫১৫ তে যখন রাজা ফ্রান্সিস ১ম মিলান দখল করলেন তখন লিওনার্দো তার অধীনে কাজ শুরু করেন। তিনি তখন রাজার বাসভবনের পাশেই "ক্লস লুইস" নামক ভবনে বসবাস করতে শুরু করলেন যেখানে তিনি তার জীবনের পরবর্তী ৩ বছর অতিবাহিত করেন।

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি: জীবনী, সালভাতোর মুন্ডি and the last supper, প্রকৌশল এবং উদ্ভাবন 
"ক্লস লুইস" ভবন, ফ্রান্স যেখানে লিওনার্দো ১৫১৯ সালে মারা যান

২রা মে ১৫১৯ এ লিওনার্দো এই "ক্লস লুইস" ভবনে মৃত্যু বরণ করেন।

তথ্যসূত্র

  1. লিওনার্দো ইচ্ছা" লিওনার্দো-ইতিহাস

বহিঃসংযোগ

Tags:

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি জীবনীলিওনার্দো দা ভিঞ্চি সালভাতোর মুন্ডি and the last supperলিওনার্দো দা ভিঞ্চি প্রকৌশল এবং উদ্ভাবনলিওনার্দো দা ভিঞ্চি শেষ জীবন,১৫১৩ থেকে ১৫১৯লিওনার্দো দা ভিঞ্চি তথ্যসূত্রলিওনার্দো দা ভিঞ্চি বহিঃসংযোগলিওনার্দো দা ভিঞ্চিআবিষ্কারইতালিইতালীয় ভাষাএপ্রিল ১৫দ্য লাস্ট সাপারপ্রতিভাফ্লোরেন্সভাস্করমোনালিসারেনেসাঁস্থপতি১৪৫২১৫১৯

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতানদের তালিকারক্তবারমাকিসিফিলিসমহাস্থানগড়শিবজনি সিন্সতাপমাত্রাজীবনানন্দ দাশবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিআডলফ হিটলারবাংলাদেশের নদীর তালিকাযকৃৎনোয়াখালী জেলাজ্যামাইকাদৈনিক প্রথম আলোফজরের নামাজকাশ্মীরহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরবাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ব্রিটিশ রাজের ইতিহাসতেভাগা আন্দোলনরাষ্ট্রবিজ্ঞানইমাম বুখারীভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটোগল্পদেশ অনুযায়ী ইসলামবিদ্রোহী (কবিতা)ইরানকুরআনের সূরাসমূহের তালিকাপূরণবাচক সংখ্যা (ভাষাতত্ত্ব)ভারতের জাতীয় পতাকাহারুনুর রশিদইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিথ্যালাসেমিয়াবাঙালি মুসলিমদের পদবিসমূহমান্নাবাংলাদেশ নৌবাহিনীমীর জাফর আলী খানথাইল্যান্ডবাংলাদেশের সিটি কর্পোরেশনের তালিকাছোটগল্পমহাদেশকানাডাআলেকজান্ডার বোবিদ্যালয়শক্তিউপন্যাসঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানগণিতসাপপ্যারিসনরসিংদী জেলাভারতীয় জনতা পার্টিআইসোটোপফিলিস্তিনপশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন, ২০২১তাপবিষ্ণুদীন-ই-ইলাহিগুজরাত টাইটান্সজাযাকাল্লাহক্রিকেটমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়অরবরইপ্যারাচৌম্বক পদার্থইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সবাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রমভরিরাশিয়ানারীটিকটকদি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশঅসহযোগ আন্দোলন (ব্রিটিশ ভারত)আব্বাসীয় স্থাপত্যসাম্যবাদলাহোর প্রস্তাবআন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসরাজ্যসভা🡆 More