রাষ্ট্রহীনতা

আন্তর্জাতিক আইনে, একজন রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি হচ্ছেন এমন একজন ব্যক্তি যাকে কোনও দেশই তার রাষ্ট্রীয় আইনের অধীনে নাগরিক হিসেবে হিসাবে বিবেচনা করে না। কিছু রাষ্ট্রহীন মানুষ শরণার্থীও। তবে, সব শরণার্থী রাষ্ট্রহীন নয়। আবার অনেক রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি আছে যারা কখনও কোনো আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করেনি। ১২ নভেম্বর, ২০১৮ তারিখে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার বলেন, বিশ্বে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ রাষ্ট্রহীন মানুষ রয়েছে।

রাষ্ট্রহীনতা
মোট জনসংখ্যা
১২ মিলিয়ন (২০১৮, আনু.)
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
এশিয়াপ্রশান্ত১.৫৮২ মিলিয়ন নিবন্ধিত
আফ্রিকা৭১৫,০৮৯ জন নিবন্ধিত
ইউরোপ৫৭০,৫৩৪ জন নিবন্ধিত
মধ্যপ্রাচ্যউত্তর আফ্রিকা৩৭২,৪৬১ জন নিবন্ধিত
উত্তরদক্ষিণ আমেরিকা২,৪৬০ জন নিবন্ধিত

কারণ সমূহ

আইনের অসঙ্গতি

পরস্পরবিরোধী জাতীয়তা আইন রাষ্ট্রহীনতার অন্যতম কারণ। জাতীয়তা সাধারণত নিচের দুটি পদ্ধতির একটির মাধ্যমে অর্জিত হয়, যদিও বর্তমান সময়ে অনেক জাতি উভয় পদ্ধতিই স্বীকৃতি দেয়:

  • জুস সোলি ("ভূমির অধিকার") এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায় যার দ্বারা কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে জন্মের মাধ্যমে জাতীয়তা অর্জন করে। এটি আমেরিকায় খুবই সাধারণ।
  • জুস স্যাঙ্গুইনিস ("রক্তের অধিকার") এমন একটি শাসন ব্যবস্থা যেখানে রক্তের সম্পর্কের মাধ্যমে জাতীয়তা অর্জন করতে হয়, সাধারণত পিতামাতার মাধ্যমে সন্তান জাতীয়তা অর্জন করে। ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা এবং ওশেনিয়ার প্রায় সমস্ত রাজ্য জুস স্যাঙ্গুইনিস নীতির উপর ভিত্তি করে জন্মের সময় নাগরিকত্ব প্রদান করে।

যে ব্যক্তি তার পিতামাতার মাধ্যমে জুস স্যাঙ্গুইনিস পদ্ধতিতে নাগরিকত্ব অর্জন করার যোগ্য নয়, সে জন্মের সময় রাষ্ট্রহীন হতে পারে যদি এমন কোনও রাজ্যে জন্মগ্রহণ করে যেখানে জুস সোলিকেও স্বীকৃতি দেযওয়া হয় না। উদাহরণস্বরূপ, কানাডার বাইরে দুই কানাডিয়ান পিতামাতার কাছে জন্মগ্রহণকারী একটি শিশু রাষ্ট্রহীন হবে যদি তার পিতামাতার জন্মও কানাডার বাইরে কোনো কানাডিয়ান পিতামাতার পরিবারে হয়। সে কানাডার নাগরিক হবে না, কারণ জুস স্যাঙ্গুইনিস কেবল কানাডার প্রথম প্রজন্মের জন্য স্বীকৃত। যদি শিশুটি ভারতে জন্মগ্রহণ করে এবং পিতামাতার কোনও পিতামাতারই ভারতীয় নাগরিকত্ব না থাকে, তবে শিশুটি রাষ্ট্রহীন হতে পারে, যেহেতু ভারত কেবল মাত্র ভারতীয় পিতামাতার কাছে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের নাগরিকত্ব প্রদান করে, তবে সম্ভবত পিতামাতার কাছ থেকে নাগরিকত্বের উত্তরাধিকারী হবে।

লিঙ্গের কারণে

যদিও অনেক রাষ্ট্র শিশু যেখানেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন, পিতামাতার বংশোদ্ভূত হওয়ার কারণে জাতীয়তা অর্জনের অনুমতি দেয়, তব কোথাও কোথাও মহিলা নাগরিকদের সন্তানদের জাতীয়তা প্রদানের অনুমতি দেয় না। ২৭টি দেশের মহিলাদের সন্তানরা জাতীয়তা পায় না। এই দেশগুলোর বেশিরভাগই এশিয়া ও আফ্রিকার। এর ফলে যদি পিতা রাষ্ট্রহীন, অজ্ঞাত বা জাতীয়তা প্রমান করতে অক্ষম হন, তবে সন্তান রাষ্ট্রহীন হতে পারে। ২০১৫ সালের শুরুতে আলজেরিয়া, মরোক্কো এবং সেনেগালসহ কিছু দেশে জাতীয়তা আইনে কিছু সংস্কার হয়েছে যেখানে এই আইনে জাতীয়তার অর্জনের ক্ষেত্রে লিঙ্গ নিরপেক্ষতার পক্ষে পরিবর্তন এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, আলজেরিয়া ২০০৫ সালে আলজেরিয়াতে বা এর বাইরে জন্মগ্রহণকারী আলজেরীয় মা বা বাবার শিশুদেরকে আলজেরিয়ার জাতীয়তা প্রদানের জন্য এর জাতীয়তা আইন সংশোধন করে। এছাড়া, নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণের কনভেনশনে জাতীয়তা প্রদানে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

জন্মের সময় রাষ্ট্রহীনতা রোধ করার জন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ একটি অঞ্চলে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের জাতীয়তা প্রদান করবে, অন্যথায় তারা রাষ্ট্রহীন হবে। রাষ্ট্রহীনতা হ্রাস সংক্রান্ত ১৯৬১ সালের কনভেনশনে এই নিয়ম টি নির্ধারিত হয়েছে; যা বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক মানবাধিকার চুক্তিতেও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আমেরিকান কনভেনশন অন হিউম্যান রাইটস, ইউরোপিয়ান কনভেনশন অন ন্যাশনালিটি এবং আফ্রিকান চার্টার অন দ্য রাইটস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অফ দ্য চাইল্ড; এবং শিশু অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের কনভেনশনে।

বৈষম্য

বেশিরভাগ বড় আকারের রাষ্ট্রহীনতার ঘটনায় দেখা যায় রাষ্ট্রহীনতা হচ্ছে বৈষম্যের ফল। অনেক রাষ্ট্র জাতিসত্তার উপর ভিত্তি করে তাদের নাগরিকদের সংজ্ঞায়িত করে, যার ফলে বড় গোষ্ঠীগুলি বাদ যায়। এটি বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে। জাতিগত বৈষম্য দূরীকরণ সম্পর্কিত জাতিসংঘের কমিটি ১ অক্টোবর, ২০১৪ তারিখে বলেছে, "জাতি, বর্ণ, বংশধর বা জাতীয় বা জাতিগত উৎসের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদান বৈষম্যহীন সমাজগঠন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রত্যেক রাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন"।

রাষ্ট্রীয় উত্তরাধিকার

কিছু ক্ষেত্রে, রাষ্ট্রহীনতা রাষ্ট্রীয় উত্তরাধিকারের একটি পরিণতি। কিছু লোক রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ে যখন তাদের রাষ্ট্রীয় অস্তিত্বহীনতা তৈরি হয়, অথবা যখন তারা যে অঞ্চলে বাস করে তা অন্য রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আসে। সোভিয়েত ইউনিয়ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার সময় যুগোস্লাভিয়া এবং ইথিওপিয়ার ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটেছিল। জাতিসংঘের আইন বিষয়ক দপ্তর অনুসারে, ইউরোপের রাষ্ট্র উত্তরাধিকার সম্পর্কিত রাষ্ট্রহীনতা পরিহার সংক্রান্ত কাউন্সিল কনভেনশনই একমাত্র চুক্তি যার লক্ষ্য এই সমস্যা হ্রাস করা। সাতটি দেশ এতে যোগ দিয়েছে।

প্রশাসনিক বাধা

প্রশাসনিক এবং ব্যবহারিক সমস্যার ফলেও মানুষ রাষ্ট্রহীন হতে পারে, বিশেষ করে যখন তারা এমন একটি গোষ্ঠীর সদস্য হয় যাদের জাতীয়তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কোনো ব্যক্তি নাগরিকত্বের যোগ্য কিন্তু প্রয়োজনীয় পদ্ধতিগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অক্ষম হওয়ার কারণে রাষ্ট্রহীন হতে পারবন। জাতীয়তা প্রমাণকারী নথিপত্রের জন্য তাদের অতিরিক্ত ফি প্রদান করতে হতে পারে বা তাদের কাছে নেই এমন নথি সরবরাহ করতে বলা হতে পারে কিংবা রাষ্ট্র কর্তৃক নাগরিকত্ব প্রমাণে অবাস্তব সময়সীমা দেওয়া হতে পারে যা তাদের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব নয়; অথবা তারা ভৌগোলিক বা স্বাক্ষরতার বাধার সম্মুখীন হতে পারে।

সংঘাতময় অবস্থা বা সংঘাত-পরবর্তী পরিস্থিতিতে, অনেকে সাধারণ প্রশাসনিক পদ্ধতি সম্পন্ন করতেও অসুবিধা হয়। এই ধরনের সমস্যা কোনো শিশুর রাষ্ট্রহীনতা প্রতিরোধের জন্য মৌলিক কাজ জন্ম নিবন্ধনের মতো প্রক্রিয়াগুলি সম্পূর্ণ করার জন্য ব্যক্তির ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। যদিও শুধুমাত্র জন্ম নিবন্ধন একটি শিশুকে নাগরিকত্ব প্রদান করে না, জন্মস্থান এবং পিতামাতার নথিপত্র জাতীয়তা অর্জনের জন্য একজন ব্যক্তি এবং একটি রাষ্ট্রের মধ্যে যোগসূত্র প্রমাণে সহায়ক। জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) ২০১৩ সালে অনুমান করে যে ৫ বছরের কম বয়সী ২৩০ মিলিয়ন শিশু নিবন্ধিত হয়নি।

নাগরিকত্ব বিসর্জন

কিছু বিরল ক্ষেত্রে, ব্যক্তি তার নাগরিকত্ব ত্যাগ করার কারণে রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়তে পারে (যেমন, "বিশ্ব নাগরিক" গ্যারি ডেভিস ১৮৯৬ থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত, আলবার্ট আইনস্টাইন, যিনি ১৮৯৬ সালের জানুয়ারিতে, ১৬ বছর বয়সে, তার বাবার সহায়তায় তার Württemberg -এর নাগরিকত্ব থেকে ত্যাগ করেছিলেন, সেই মর্মে একটি পিটিশনও দাখিল করেছিলেন; ফেব্রুয়ারি ১৯০১ সালে সুইস নাগরিকত্বের জন্য তার আবেদন গৃহীত হয়েছিল)। যারা ভলান্টারিস্ট, অ্যাগোরিস্ট বা অন্য কোন দার্শনিক, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় বিশ্বাসের সদস্য তারা রাষ্ট্রহীনতা চাইতে পারে। অনেক রাষ্ট্র নাগরিকদের তাদের জাতীয়তা ত্যাগ করতে দেয় না যদি না তারা অন্য কোথাও নাগরিকত্ব অর্জন করে। যাইহোক, দূতাবাসের কর্মকর্তারা যে সব দেশের নাগরিকত্ব আইনের সাথে পরিচিত হবেন এমন সম্ভাবনা নেই, তাই এরপরেও এমন পরিস্থিতি হতে পারে যেখানে নাগরিকত্ব ত্যাগ কার্যকর রাষ্ট্রহীনতার দিকে পরিচালিত করতে পারে।

রাষ্ট্রহীন অঞ্চল

শুধুমাত্র একটি রাষ্ট্রেরই নাগরিক থাকতে পারে, সুতরাং, রাষ্ট্র নয় এমন অঞ্চলের লোকজন রাষ্ট্রহীন হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে অধিকৃত অঞ্চলের বাসিন্দারা যাদের অঞ্চলকে কখনই প্রথম স্তরের রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়া হয়নি, বা স্থগিত করা হয়েছে এবং/অথবা মূলত অস্বীকৃত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ফিলিস্তিনি অঞ্চল, পশ্চিম সাহারা এবং উত্তর সাইপ্রাস। যারা একটি অস্বীকৃত দেশের সরকার দ্বারা নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত তারা নিজেদের রাষ্ট্রহীন বলে মনে নাও করতে পারে, কিন্তু তা সত্ত্বেও ব্যাপক অর্থে রাষ্ট্রহীন হিসেব গণ্য করা যেতে পারে বিশেষ করে যদি অন্যান্য দেশ কোনও অস্বীকৃত রাষ্ট্র দ্বারা জারি করা পাসপোর্টকে সম্মান করতে অস্বীকার করে।

যদিও মানব ইতিহাসের পুরোটা জুড়ে কোনো না কোনোভাবে রাষ্ট্রহীনতা ক্রমাগত বিদ্যমান ছিল, কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেবল বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে এর নির্মূল নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিদের মর্যাদা সম্পর্কিত ১৯৫৪ সালে জাতিসংঘ একটি কনভেনশন গ্রহণ করে, যা রাষ্ট্রহীন মানুষের সুরক্ষার জন্য একটি কাঠামো প্রদান করে। সাত বছর পর জাতিসংঘ রাষ্ট্রহীনতা হ্রাস সংক্রান্ত কনভেনশন গ্রহণ করে। এছাড়াও, বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি জাতীয়তার অধিকার নিশ্চিত করেছে এবং রাষ্ট্রহীন ব্যক্তিসহ নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সুরক্ষা প্রদান করে।

১৯৮৯ সালে শিশু অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশনে চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রগুলো প্রতিটি শিশু যাতে জাতীয়তা অর্জন করে তা নিশ্চিত করতে বাধ্য। এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলোকে এই বিধানটি বিশেষ করে বাস্তবায়ন করতে হবে, অন্যথায় শিশুটি রাষ্ট্রহীন হবে।

রাষ্ট্রহীন ব্যক্তির স্থিতি শেষ পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি বা একদল লোকের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির উপর নির্ভর করে। কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্র তার দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করে; অন্যদের ক্ষেত্রে, এর দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা কঠিন। এই ক্ষেত্রে, ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির প্রাথমিক প্রমাণের উপর নির্ভর করতে হতে পারে, যা পরবর্তীতে সম্ভাব্য রাষ্ট্রহীনতার জন্ম দিতে পারে।

রাষ্ট্রহীন জাতি

রাষ্ট্রহীন জাতি হচ্ছে এমন একটি জাতিগোষ্ঠী বা জাতি যার নিজস্ব কোনো রাষ্ট্র নেই। "রাষ্ট্রহীন" শব্দটি বোঝায় যে গোষ্ঠীটির এই জাতীয় রাষ্ট্র (দেশ) "থাকা উচিত"। এই শব্দটি ১৯৮৩ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী জ্যাক লেরুয়েজ তার বই ল'একোসে, ইউনে নেশন সানস এতাত-এ ব্রিটিশ রাষ্ট্রের মধ্যে স্কটল্যান্ডের অদ্ভুত অবস্থান সম্পর্কে তৈরি করেছিলেন। পরে ডেভিড ম্যাকক্রোন, মাইকেল কিটিং এবং টি.এম ডেভাইনের মতো স্কটিশ পণ্ডিতরা এটি গ্রহণ করেন এবং জনপ্রিয় করেন। রাষ্ট্রহীন জাতির একটি উল্লেখযোগ্য সমসাময়িক উদাহরণ হল কুর্দিরা। কুর্দি জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৩০ থেকে ৪৫ মিলিয়নের মধ্যে বলে অনুমান করা হয়, কিন্তু তাদের কোন স্বীকৃত সার্বভৌম রাষ্ট্র নেই।

ইতিহাস

প্রাচীনকাল

ঐতিহাসিকভাবে, রাষ্ট্রহীনতাকে যুক্তিসঙ্গতভাবেই মানব সভ্যতার পূর্বনির্ধারিত অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে, কারণ মানব প্রজাতির বিবর্তন থেকে প্রথম মানব সভ্যতার উত্থান পর্যন্ত এটি সর্বজনীনভাবে বিদ্যমান ছিল। ঐতিহাসিকভাবে রাষ্ট্রের উত্থানের আগে পৃথিবীর প্রতিটি অধ্যুষিত অঞ্চলে মানুষ উপজাতীয় গোষ্ঠী হিসেবে সংগঠিত হয়েছিল। লিখিত আইনের অনুপস্থিতিতে, উপজাতীয় পরিবেশে বসবাসকারী লোকেরা সাধারণত উপজাতীয় রীতিনীতি মেনে চলতো এবং তাদের উপজাতি এবং/অথবা উপজাতীয় নেতাদের প্রতি আনুগত্য থাকবে বলে আশা করা হতো। রাষ্ট্র গঠন করতে শুরু করার পর থেকে, যাদের আরও জটিল রাষ্ট্রব্যবস্থার সাথে কোনও ধরনের আইনি সংযুক্তি ছিল তাদের সাথে যারা তা করেনি তাদের মধ্যে পার্থক্য গড়ে ওঠে। পরবর্তী, প্রায়শই উপজাতিতে বাস করে এবং এমন অঞ্চলে বাস করে যা এখনও আরও শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলিতে সংগঠিত এবং/অথবা জয় করা হয়নি, ব্যাপকভাবে আধুনিক অর্থে রাষ্ট্রহীন হিসাবে বিবেচিত হবে। ঐতিহাসিকভাবে, যারা রাষ্ট্রহীনতার আধুনিক সংজ্ঞা পূরণ করবে এবং যারা পূর্ববর্তী রাষ্ট্রগুলির সমসাময়িক শাসক শ্রেণীগুলি নিছক বর্বর বলে মনে করত তাদের মধ্যে যথেষ্ট পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে।

তথ্যসূত্র

Tags:

রাষ্ট্রহীনতা কারণ সমূহরাষ্ট্রহীনতা ইতিহাসরাষ্ট্রহীনতা তথ্যসূত্ররাষ্ট্রহীনতাশরণার্থী

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

এম এ ওয়াজেদ মিয়াসূরা ফালাকবিশ্বের ইতিহাসনোরা ফাতেহিপদ্মা সেতুস্লোভাক ভাষাসূরা মাউনবঙ্গবন্ধু সেতুমেটা প্ল্যাটফর্মসপানি দূষণআসসালামু আলাইকুমচাঁদআমার সোনার বাংলাআল্লাহর ৯৯টি নামহুমায়ূন আহমেদমৌলিক পদার্থচীনডেঙ্গু জ্বরসুইজারল্যান্ডসাতই মার্চের ভাষণমাইটোসিসবিবাহখ্রিস্টধর্মআশাপূর্ণা দেবীআব্দুল কাদের জিলানীইন্দিরা গান্ধীবেগম রোকেয়াডিএনএইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজিইংরেজি ভাষারফিকুন নবীচ্যাটজিপিটিঅন্নপূর্ণা পূজাউপন্যাসপ্লাস্টিক দূষণসিরাজগঞ্জ জেলাবুর্জ খলিফাশয়তানগণতন্ত্রগ্রীন-টাও থিওরেমমালদ্বীপপশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালদের তালিকাআসমানী কিতাবদক্ষিণ এশিয়াইউটিউবারঅক্সিজেনফিতরাবাংলাদেশের সংবিধানমনোবিজ্ঞানহাদিসকুয়েতগরুরাশিয়ায় ইসলামমহাদেশনেইমারচট্টগ্রামউদ্ভিদকোষদুধসুভাষচন্দ্র বসুচ সু-হিয়াংবাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলআর্জেন্টিনা–ব্রাজিল ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাদোলোর ই গ্লোরিয়াশীতলাভারতের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাইউসুফগাঁজা (মাদক)বাঘবিতর নামাজসাঁওতালসমকামিতাবাংলাদেশের জেলাসমূহের তালিকাব্রিটিশ ভারতনিরাপদ যৌনতাছয় দফা আন্দোলন🡆 More