ভালকা ( অনু. ভালকা তীর্থ ) ভারতের গুজরাটের পশ্চিম উপকূলে বেরাবালে অবস্থিত। এটি সেই স্থান যেখানে কৃষ্ণ অন্তর্ধান লীলা করেছিলেন। কথিত আছে, জরা নামক এক শিকারী কৃষ্ণের পায়ে তীরবিদ্ধ করেছিল। পুরাণে 'কৃষ্ণের শেষ সময়' শ্রী কৃষ্ণ নিজধাম প্রস্থান লীলা হিসাবে চিত্রিত হয়েছে। ভালকা ভগবান শ্রী কৃষ্ণের বিভিন্ন লীলাস্থলীর ( মথুরা, বৃন্দাবন, বরসানা, গোবর্ধন, কুরুক্ষেত্র এবং দ্বারকা ) অন্যতম।
ভালকা তীর্থ | |
---|---|
भालका तीर्थ | |
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
জেলা | গির সোমনাথ |
ঈশ্বর | কৃষ্ণ |
পরিচালনা সংস্থা | শ্রীসোমনাথ ট্রাস্ট |
অবস্থান | |
অবস্থান | বেরাবল |
রাজ্য | গুজরাট |
দেশ | ভারত |
স্থানাঙ্ক | ২০°৫৩′১৬.৯″ উত্তর ৭০°২৪′৫.০″ পূর্ব / ২০.৮৮৮০২৮° উত্তর ৭০.৪০১৩৮৯° পূর্ব |
ওয়েবসাইট | |
somnath.org |
ভালকা ভারতের গুজরাট রাজ্যের বেরাবালে অবস্থিত জ্যোতির্লিঙ্গ সোমনাথ মন্দির থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
প্রভাস পাটন সিন্ধু সভ্যতার সময়, ২০০০-১২০০ খ্রিষ্টপূর্বে দখল করা হয়েছিল বলে এই স্থানটির প্রাচীন ইতিহাস রয়েছে।
মহাভারত অনুসারে, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের ফলে গান্ধারীর শত পুত্রের মৃত্যু হয়। দুর্যোধনের মৃত্যুর আগের রাতে, কৃষ্ণ সমবেদনা জানাতে গান্ধারীর নিকট গমন করেন। গান্ধারীর মনে হয়েছিল, কৃষ্ণ ইচ্ছাকৃতভাবেই যুদ্ধের অবসান ঘটাননি। তাই ক্রোধে-দুঃখে গান্ধারী অভিশাপ দেন, কৃষ্ণ যদু বংশের সকলের সাথে ৩৬ বছর পরে নিধনপ্রাপ্ত হবেন। কৃষ্ণ স্বয়ং এটি ঘটাতে চেয়েছিলেন কারণ তিনি অনুভব করেছিলেন, যাদবরা খুব উদ্ধত ও অহংকারী হয়ে উঠেছে। তাই তিনি " তথাস্তু " (তাই হোক) বলে গান্ধারীর অভিশাপ স্বীকার করলেন।
৩৬ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর, এক তীর্থযাত্রায় যাদবদের মধ্যে অন্তঃকলহ শুরু হয় যার ফলে তারা একে অপরকে হত্যা করে। কৃষ্ণের বড় ভাই বলরাম যোগাবলম্বনে দেহত্যাগ করেন। কৃষ্ণ তখন নিয়ে বনে গিয়ে এক বৃক্ষতলে ধ্যান করতে লাগলেন। মহাভারত এমন একজন শিকারীর গল্পও বর্ণনা করেছে যে কৃষ্ণের পৃথিবী থেকে বিদায়ের জন্য নিমিত্ত হয়ে ওঠে। শিকারী জরা কৃষ্ণের আংশিকভাবে দৃশ্যমান বাম পা কে হরিণ মনে করে তীর নিক্ষেপ করেছিল। জরা তার ভুল বোঝার পর, রক্তক্ষরণের সময়, কৃষ্ণ জরাকে বললেন, "হে জরা, তুমি পূর্বজন্মে বালি ছিলে, ত্রেতাযুগে রামরূপে আমি তোমাকে বধ করেছিলাম। এখন তোমার সুযোগ এসেছে।যেহেতু এই জগতের সমস্ত কার্যাবলী আমার ইচ্ছানুসারে হয়ে থাকে। তাই তোমার চিন্তার কোনো কারণ নেই।" অতঃপর কৃষ্ণ স্বয়ং শারীরিক দেহে তাঁর চিরস্থায়ী আবাস গোলোকে প্রত্যাবর্তন করলেন। এই ঘটনাটি কৃষ্ণের পৃথিবী থেকে প্রস্থানকে চিহ্নিত করে। এই ঘটনার খবর প্রত্যক্ষদর্শীদের দ্বারা হস্তিনাপুর ও দ্বারকায় পৌঁছে যায়। এই ঘটনার স্থান সোমনাথ মন্দিরের কাছে 'ভালকা' বলে ধারণা করা হয়।
পুরাণ সূত্র অনুসারে, কৃষ্ণের অন্তর্ধান দ্বাপর যুগের সমাপ্তি ও কলিযুগের সূচনাকে চিহ্নিত করে। দ্বাপরের সমাপ্তি ও কলিযুগের সূচনা ১৭/১৮ ফেব্রুয়ারি, ৩১০২ খ্রিস্টপূর্বে হয়েছিল।
রামায়ণে অনুসারে, রাম অর্থাৎ কৃষ্ণ তার পূর্বের রাম অবতারে বানররাজ বালীকে বর দিয়েছিলেন বলে অনুমিত হয়। রাম বালীকে ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে তীর নিক্ষেপ করে বধ করেছিলেন। বালি তার ছোট ভাই সুগ্রীবের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন। এভাবে রাম সুগ্রীবের জীবন রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছিলেন। কৃষ্ণ অবতারে শিকারীর তীর নিক্ষেপ ক্রিয়া রামের বর অনুসারে সম্পন্ন হয়েছিল। বিশ্বাস করা হয় যে কৃষ্ণ তার পায়ের ছাপ তীর্থে রেখে গেছেন। যারা সোমনাথ দর্শন করেন তাদের জন্য এটি একটি সাধারণ তীর্থস্থান।
ভালকা তীর্থ সোমনাথ মন্দির থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বর্তমানে সরকার এই মন্দিরটিকেও একটি প্রধান পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে।
সোমনাথ/বেরাভাল শহর/ভালকা রাস্তা ও রেলপথের মাধ্যমে খুব দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত। নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন বেরাবালে অবস্থিত। নিকটতম বিমানবন্দর হলো দিউ ও রাজকোট বিমানবন্দর। আহমেদাবাদ, ভাদোদরা, রাজকোট, দ্বারকা ইত্যাদি থেকে বাস পরিষেবা পাওয়া যায়।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article ভালকা, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.