টনি ক্রুস (জার্মান: Toni Kroos, জার্মান উচ্চারণ: ; জন্ম: ৪ জানুয়ারি ১৯৯০) হলেন একজন জার্মান পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে স্পেনের পেশাদার ফুটবল লিগের শীর্ষ স্তর লা লিগার ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। তিনি মূলত কেন্দ্রীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। তিনি তার দৃষ্টি, সৃজনশীলতা, পাস প্রদান করা, ফ্রি-কিক এবং কর্নার নেওয়ার দক্ষতার জন্য খ্যাতি অর্জন করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | টনি ক্রুস | |||||||||||||||||||
জন্ম | ৪ জানুয়ারি ১৯৯০ | |||||||||||||||||||
জন্ম স্থান | গ্রাইফসভাল্ড, জার্মানি | |||||||||||||||||||
উচ্চতা | ১.৮৩ মিটার (৬ ফুট ০ ইঞ্চি) | |||||||||||||||||||
মাঠে অবস্থান | মধ্যমাঠের খেলোয়াড় | |||||||||||||||||||
ক্লাবের তথ্য | ||||||||||||||||||||
বর্তমান দল | রিয়াল মাদ্রিদ | |||||||||||||||||||
জার্সি নম্বর | ৮ | |||||||||||||||||||
যুব পর্যায় | ||||||||||||||||||||
১৯৯৭–২০০২ | গ্রাইফসভাল্ডার | |||||||||||||||||||
২০০২–২০০৬ | হান্সা রস্টক | |||||||||||||||||||
২০০৬–২০০৭ | বায়ার্ন মিউনিখ | |||||||||||||||||||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | ||||||||||||||||||||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) | |||||||||||||||||
২০০৭–২০০৮ | বায়ার্ন মিউনিখ ২ | ১৩ | (৪) | |||||||||||||||||
২০০৭–২০১৪ | বায়ার্ন মিউনিখ | ১৩০ | (১৩) | |||||||||||||||||
২০০৯–২০১০ | → বায়ার লেভারকুজেন (ধার) | ৪৩ | (১০) | |||||||||||||||||
২০১৪– | রিয়াল মাদ্রিদ | ৩০১ | (২২) | |||||||||||||||||
জাতীয় দল‡ | ||||||||||||||||||||
২০০৫–২০০৭ | জার্মানি অনূর্ধ্ব-১৭ | ৩৪ | (১৭) | |||||||||||||||||
২০০৯ | জার্মানি অনূর্ধ্ব-১৯ | ৫ | (৩) | |||||||||||||||||
২০০৮–২০০৯ | জার্মানি অনূর্ধ্ব-২১ | ১০ | (২) | |||||||||||||||||
২০১০– | জার্মানি | ১০৭ | (১৭) | |||||||||||||||||
অর্জন ও সম্মাননা
| ||||||||||||||||||||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১২:০৬, ২৪ মার্চ ২০২৪ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। ‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ১২:০৬, ২৪ মার্চ ২০২৪ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সঠিক। |
১৯৯৭–৯৮ মৌসুমে, জার্মান ফুটবল ক্লাব গ্রাইফসভাল্ডারের যুব পর্যায়ের হয়ে খেলার মাধ্যমে ক্রুস ফুটবল জগতে প্রবেশ করেছেন এবং পরবর্তীকালে হান্সা রস্টক এবং বায়ার্ন মিউনিখের যুব দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি ফুটবল খেলায় বিকশিত হয়েছেন। ২০০৭–০৮ মৌসুমে, জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ ২-এর হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছেন, যেখানে তিনি ২ মৌসুম অতিবাহিত করেছেন; বায়ার্ন মিউনিখ ২-এর হয়ে তিনি ১৩ ম্যাচে ৪টি গোল করেছেন। একই মৌসুমে তিনি বায়ার্ন মিউনিখের মূল দলের হয়ে অভিষেক করেছেন, যেখানে তিনি ৬ মৌসুমে সকল প্রতিযোগিতায় ২০৫ ম্যাচে ২৫টি গোল করার পাশাপাশি ৩টি বুন্দেসলিগা শিরোপা এবং ১টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জয়লাভ করেছেন। মাঝে তিনি ২ মৌসুমের জন্য ধারে বায়ার লেভারকুজেনের হয়ে খেলেছেন। ২০১৪–১৫ মৌসুমে, তিনি প্রায় ২৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে বায়ার্ন মিউনিখ হতে স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে যোগদান করেছেন।
২০০৫ সালে, ক্রুস জার্মানি অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে জার্মানির বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। প্রায় ৫ বছর যাবত জার্মানির বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলার পর, তিনি ২০১০ সালে জার্মানির হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন; জার্মানির জার্সি গায়ে তিনি সর্বমোট ১০৭ ম্যাচে ১৭টি গোল করেছিলেন। তিনি জার্মানির হয়ে সর্বমোট ৩টি ফিফা বিশ্বকাপ (২০১০, ২০১৪ এবং ২০১৮) এবং ৩টি উয়েফা ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে (২০১২, ২০১৬ এবং ২০২০) অংশগ্রহণ করেছিলেন, যার মধ্যে ২০১৪ সালে ইওয়াখিম ল্যোভের অধীনে ফিফা বিশ্বকাপের শিরোপা জয়লাভ করেছিলেন।
ব্যক্তিগতভাবে, ক্রুস বেশ কিছু পুরস্কার জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ২০০৭ ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল ও ব্রোঞ্জ শু, ২০১৪ সালে বর্ষসেরা জার্মান খেলোয়াড়, এবং ২০১৮ সালে বর্ষসেরা জার্মান ফুটবল খেলোয়াড়ের পুরস্কার অন্যতম। দলগতভাবে, ক্রুস এপর্যন্ত ২৩টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন, যার মধ্যে ৯টি বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে, ১৩টি রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে এবং ১টি জার্মানির হয়ে জয়লাভ করেছেন।
টনি ক্রুস ১৯৯০ সালের ৪ঠা জানুয়ারি তারিখে জার্মানির গ্রাইফসভাল্ডের মেকলেনবুর্গ-ভরপোমার্নে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেখানেই তার শৈশব অতিবাহিত করেছেন। তার ছোট ভাই ফেলিক্স ক্রুসও একজন পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তার বাবা রোলান্ড ক্রুস হান্সা রস্টক যুব দলের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। শৈশবে তিনি একজন মধ্যম মানের ছাত্র ছিলেন এবং ফুটবল অনুশীলনের জন্য প্রচুর সময় ব্যয় করতেন, তবে তিনি ক্লাসে ভাল ব্যবহার করতেন এবং স্কুলে তার সমবয়সীরা তাকে বেশ পছন্দ করতো।
ক্রুস জার্মানি অনূর্ধ্ব-১৭, জার্মানি অনূর্ধ্ব-১৯ এবং জার্মানি অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে জার্মানির প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০০৫ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর তারিখে তিনি জার্মানি অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন। ২০০৭ সালে তিনি জার্মানি অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে ২০০৭ উয়েফা ইউরোপীয় অনূর্ধ্ব-১৭ চ্যাম্পিয়নশিপে জার্মানির অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন, যেখানে তিনি ৫ ম্যাচে ১টি গোল করেছিলেন। একই বছরে তিনি ২০০৭ ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছেন, উক্ত প্রতিযোগিতার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তার দল ঘানা অনূর্ধ্ব-১৭ দলকে ২–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করেছিল। উক্ত প্রতিযোগিতায় তিনি ৬ ম্যাচে ৫টি গোল করে প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গোল্ডেন বল জয়লাভ করেছেন। জার্মানির বয়সভিত্তিক দলের হয়ে তিনি ৪৯ ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ২২টি গোল করেছেন। তিনি ২০০৫ সালের ১৩ই সেপ্টেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে কাতার অনূর্ধ্ব-১৭ দলের বিরুদ্ধে জার্মানির বয়সভিত্তিক দলের হয়ে প্রথমবারের মতো গোল করেছেন।
২০১০ সালের ৩রা মার্চ তারিখে, মাত্র ২০ বছর ১ মাস ২৭ দিন বয়সে, ডান পায়ে ফুটবল খেলায় পারদর্শী ক্রুস আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফুটবলে জার্মানির হয়ে অভিষেক করেছেন। উক্ত ম্যাচের ৬৭তম মিনিটে ডান পার্শ্বীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় থমাস মুলারের বদলি খেলোয়াড় হিসেবে তিনি মাঠে প্রবেশ করেন; ম্যাচে তিনি ২৬ নম্বর জার্সি পরিধান করে মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন। ম্যাচটিতে জার্মানি ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। জার্মানির হয়ে অভিষেকের বছরে ক্রুস সর্বমোট ১৩ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন। জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের ১ বছর ৬ মাস ৩ দিন পর, জার্মানির জার্সি গায়ে প্রথম গোলটি করেন; ২০১১ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর তারিখে, পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে জার্মানির প্রথম গোলটি করার মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার প্রথম গোলটি করেন। ২০১৮ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর তারিখে, তিনি পেরুর বিরুদ্ধে এক প্রীতি ম্যাচে জার্মানির হয়ে প্রথমবারের মতো অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন, ম্যাচটি জার্মানি ২–১ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল।
ক্রুস দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য ইওয়াখিম ল্যোভের অধীনে ঘোষিত জার্মানি দলে স্থান পাওয়ার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। ২০১০ সালের ২৩শে জুন তারিখে, তিনি ঘানার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে ফিফা বিশ্বকাপে অভিষেক করেছেন। উক্ত বিশ্বকাপে তিনি জার্মনির হয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার ৪ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন। অতঃপর ক্রুস ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপে জার্মানির হয়ে বিশ্বকাপ জয়লাভ করেছেন, উক্ত বিশ্বকাপে তিনি জার্মানির হয়ে উপলব্ধ প্রতিটি মিনিট খেলার পাশাপাশি ২টি গোল করেছিলেন। ২০১৪ সালের ৮ই জুলাই তারিখে, ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ম্যাচে তিনি ফিফা বিশ্বকাপে তার প্রথম গোলটি করেছেন, একই সাথে উক্ত ম্যাচটি জার্মানির জার্সি গায়ে তার ৫০তম ম্যাচ ছিল। পরবর্তীকালে, তিনি ইওয়াখিম ল্যোভের অধীনে ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপে জার্মানির চূড়ান্ত দলে স্থান পান, যেখানে তার দল গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল। ক্রুস তার খেলোয়াড়ি জীবনে এপর্যন্ত ৩টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছেন, যার মধ্যে তিনি ১৪টি ম্যাচে ৩টি গোল করেছেন।
২০২০ সালের ১৩ই অক্টোবর তারিখে ক্রুস তার খেলোয়াড়ি জীবনে ১০০তম ম্যাচটি খেলেছেন, সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে জার্মানির কোলনে অনুষ্ঠিত উক্ত ম্যাচটি ৩–৩ গোলে ড্র হয়েছিল; ম্যাচটির ৬৫তম মিনিটে তিনি একটি হলুদ কার্ড পেয়েছিলেন।
২০১৫ সালের ১৩ই জুন তারিখে, ক্রুস তার দীর্ঘদিনের বান্ধবী জেসুকা ফারবারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তাদের উভয়ের লিওন (জন্ম: ১৪ আগস্ট ২০১৩) এবং ফিন (জন্ম: ২৬ মার্চ ২০১৯) নামে দুইটি পুত্রসন্তান এবং আমেলি (জন্ম: ২০ জুলাই ২০১৬) নামে একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। মায়োর্কা দ্বীপে তার একটি বাড়ি রয়েছে।
দল | সাল | ম্যাচ | গোল |
---|---|---|---|
জার্মানি | ২০১০ | ১৩ | ০ |
২০১১ | ১১ | ২ | |
২০১২ | ১০ | ২ | |
২০১৩ | ৭ | ১ | |
২০১৪ | ১৬ | ৪ | |
২০১৫ | ৫ | ০ | |
২০১৬ | ১২ | ৩ | |
২০১৭ | ৬ | ০ | |
২০১৮ | ১১ | ২ | |
২০১৯ | ৫ | ৩ | |
২০২০ | ৫ | ০ | |
২০২১ | ৫ | ০ | |
২০২৪ | ১ | ০ | |
সর্বমোট | ১০৭ | ১৭ |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article টনি ক্রুস, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.