জালালি কবুতর (বৈজ্ঞানিক নাম: Columba livia ), জালালী কৈতর বা গোলা পায়রা কলাম্বিডি গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত কলাম্বা গণের অন্তর্গত অতি পরিচিত একটি পাখি। ইংরেজিতে এই পাখির নাম রক ডাভ বা রক পিজিয়ন । সব ধরনের রেসিং কবুতর, ফ্যান্সি কবুতর ও বুনো কবুতরের পূর্বপুরুষ মনে করা হয় এ প্রজাতিটিকে। কবুতরটির আদি আবাস ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকায় হলেও অস্ট্রেলিয়া, উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার বড় বড় শহর ও গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। হযরত শাহ জালাল এর নামের সাথে মিল রেখে এই কবুতরটির নামকরণ করা হয়েছে।
জালালি কবুতর Columba livia | |
---|---|
পূর্ণবয়স্ক C. l. intermedia, ভারত | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | অ্যানেমেলিয়া |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | Columbiformes |
পরিবার: | Columbidae |
গণ: | Columba |
প্রজাতি: | C. livia |
দ্বিপদী নাম | |
Columba livia Gmelin, 1789 | |
গাঢ় লাল: আনুমানিক আদি আবাস; গোলাপি: অবমুক্তায়ন অঞ্চল |
জালালি কবুতরের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ নীলচে-ধূসর পায়রা (লাতিন: columba = পায়রা, liveus = নীলচে-ধূসর)। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ১ কোটি ৭৪ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস। ব্যাপকভাবে বিস্তৃত বলে আই. ইউ. সি. এন. প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটিকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে। সারা বিশ্বে সম্ভবত ২৬ কোটিরও কম জালালি কবুতর রয়েছে।
জালালী কবুতরকে ইংরেজিতে বলা হয় Rock Pigeon বা Feral Pigeon। এরা মূলত বন্য কবুতর। পৃথিবীর সকল পোষা কবুতর মূলত এই কবুতর থেকে উৎপত্তি হয়েছে।জালালী কবুতর সাধারনত কয়েকটি রঙের হয়,ধূসর ছাই রঙয়ের তবে ডানায় দুটি করে ঘাড় রঙের স্পট (বার থাকে) যাকে ব্লু বার বলে। এছাড়াও লালবার, মিলিবার বা লালবুনো,ব্লাক চেকার বা মাকসি রঙয়েরও হয়ে থাকে। এদের দেহগঠন মাঝারি আকারের চোখ লালচে-কমলা বর্ণের ও মণির রঙ কালো হয়। চোখের আকৃতি ও আইরিশ এবং ঠোটের গঠন ঘুঘু পাখির মত। পায়ের রঙ হয় লালচে গোলাপি।
বাংলাদেশে শত শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে জালালি কবুতর টিকে আছে বাংলাদেশে সিলেটের হযরত শাহ জালাল (র)-এর মাজারে। ধর্মপ্রাণ সিলেটের মানুষের বিশ্বাস- এই কবুতর হারিয়ে যেতে পারে না। তাই প্রায় ৭০০ বছর ধরে কবুতরের এই বিশেষ প্রজাতির ওড়াউড়িতে মুখরিত শাহজালাল (র)-এর মাজার।
হযরত শাহজালালকে (র) নিয়ে দিল্লির নিজামউদ্দীন আউলিয়ার কাছে তার এক শিষ্য কুৎসা রটনা করলে তিনি তাকে দরবার থেকে বিতাড়িত এবং শাহজালাল (র) সালাম পাঠায়, তখন শাহজালাল (র) একটি বাক্সে প্রজ্বালিত অঙ্গারের সঙ্গে কিছু তুলা পাঠান, যা ছিল একটি আধ্যাত্মিক নিদর্শন। এর পর তাদের সাক্ষাৎ হয় এবং শাহজালাল (র) ফিরে আসার সময় ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ নিজামুদ্দীন আউলিয়া তাকে একজোড়া সুরমা রঙের কবুতর উপহার দেন, যা আজকের জালালি কবুতর বা জালালি কইতর নামে পরিচিত।
১৩০৩ সালে (৭০৩ হিজরী) ৩২ বছর বয়সে তিনি সিলেটে আসার পথে দিল্লীর আউলিয়া নিজামুদ্দীনের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন। সাক্ষাতের বিদায়কালে প্রীতির নিদর্শন স্বরূপ নিজামুদ্দীন হজরত শাহ্ জালাল কে এক জোড়া সুরমা রঙের কবুতর উপহার দিয়েছিলেন। এই কবুতর নিয়েই তিনি সিলেটে এসেছিলেন। সেই থেকে সিলেটে এই কবুতরের ব্যাপকতা দেখা যায় এবং হযরত শাহ জালাল এর নামের সাথে মিল রেখে এর নাম হয় “জালালি কবুতর” হযরত শাহ্ জালাল (রহ.) ৩৬০ জন আউলিয়া নিয়ে ১৩০৩ সালে তৎকালীন আসামের অন্তর্ভুক্ত সিলেট (শ্রীহট্ট) জয় করে উড়িয়ে দিয়েছিলেন সেই কবুতরজোড়া ।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article জালালি কবুতর, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.