গৌড় অঞ্চল

গৌড় ছিল প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বাংলার একটি অঞ্চল।

অবস্থান ও বিস্তার

কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র (আনুমানিক খ্রীষ্টপূর্ব ৩৫০-২৮৩ অব্দ) গ্রন্থে বঙ্গ, পুণ্ড্রকামরূপের সঙ্গে গৌড় রাজ্যেরও নাম পাওয়া যায়। আরও কয়েকটি প্রাচীন গ্রন্থে এই রাজ্যের উল্লেখ রয়েছে। বরাহমিহিরের লেখা বৃহৎসংহিতা (আনুমানিক খ্রীষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দী) গ্রন্থে ছয়টি পৃথক জনপদের নাম পাওয়া যায়। এই ছয়টি জনপদ ছিল গৌড়ক, পৌণ্ড্র, বঙ্গ, সমতট, বর্ধমানতাম্রলিপ্ত। তার বর্ণনা থেকে মনে হয়, আধুনিক কালের মুর্শিদাবাদবীরভূম জেলা এবং বর্ধমান জেলার পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে প্রাচীন গৌড় অঞ্চল গঠিত ছিল। গৌড় ও বঙ্গ নামদুটি মাঝে মাঝে পাশাপাশি উচ্চারিত হয়েছে।

প্রাচীন বাংলার প্রথম সার্বভৌম রাজা ছিলেন শশাঙ্ক। তার রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ (মুর্শিদাবাদ জেলার সদর বহরমপুর থেকে ৯.৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত)। আনুমানিক ৫৯০ থেকে ৬২৫ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়ে তিনি রাজত্ব করেছিলেন। চীনা পর্যটক হিউয়েন সাং কর্ণসুবর্ণ থেকে উড়িষ্যার উপকূলের একটি অঞ্চলে এসে উপস্থিত হন। সমগ্র অঞ্চলটিই শশাঙ্কের রাজ্যভুক্ত ছিল বলে জানা যায়। কোনো কোনো প্রাচীন নথি থেকে জানা যায়, পুণ্ড্রবর্ধনও গৌড়ের অন্তর্গত ছিল।

গৌড় অঞ্চল 
গৌড়ের ধ্বংসপ্রাপ্ত মুসলমানী স্থাপত্য দাখিল দরওয়াজার লিথোগ্রাফ, ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ্ব।

রাঢ় অঞ্চল গৌড়ের অন্তর্গত ছিল কিনা তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ বিদ্যমান। কৃষ্ণ মিশ্র (একাদশ অথবা দ্বাদশ শতাব্দী) তার প্রবোধচন্দ্রোদয় গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন রাঢ়াপুরী (রাঢ়) ও ভুরিশ্রেষ্ঠিকা (হাওড়া-হুগলি জেলার অন্তর্গত প্রাচীন অঞ্চল, অধুনা ভুরসুট নামে পরিচিত) গৌড়ের অন্তর্গত ছিল। কিন্তু যাদবরাজ প্রথম জয়তুগির মানাগোলি শিলালেখ থেকে জানা যায় লালা (রাঢ়) ও গৌল (গৌড়) ছিল পৃথক দুটি অঞ্চল।

ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতাব্দীর জৈন লেখকদের রচনা থেকে জানা যায়, আধুনিক মালদহ জেলায় অবস্থিত লক্ষ্মণাবতীও গৌড়ের অন্তর্গত ছিল।

পাল সম্রাটগণ বঙ্গপতি ও গৌড়েশ্বর নামে পরিচিত ছিলেন। সেন রাজাদেরও গৌড়েশ্বর বলা হত। তা থেকে অনুমিত হয় গৌড় ও বঙ্গ নামদুটি সমগ্র বাংলারই নাম ছিল।

মুসলমান যুগের আদিপর্বে গৌড় নামটি দ্বারা অধুনা মালদহ জেলার লক্ষ্মণাবতী শহরটিকে বোঝাত।

প্রাচীন নগরী গৌড়

মালদহ জেলায় অবস্থিত প্রাচীন লক্ষ্ণৌতি বা লক্ষ্মণাবতী নগরীর ধ্বংসাবশেষ আধুনিককালে গৌড় নামে পরিচিত। এই শহরটি রাজমহল থেকে ৪০ কিলোমিটার ভাটিতে গঙ্গার পশ্চিম কূলে অবস্থিত।

পাদটীকা

Tags:

বঙ্গ

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

মুহাম্মাদযকৃৎমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রমিজানুর রহমান আজহারী২০২৩বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিসার্বিয়াজন্ডিসব্রাহ্মী লিপিবাংলাদেশের উপজেলার তালিকাতাজমহলশাহরুখ খানঈমানপ্যারাডক্সিক্যাল সাজিদবদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবাদের তালিকাকাজী নজরুল ইসলামপুদিনাবিতর নামাজকোস্টা রিকা জাতীয় ফুটবল দলসেজদার আয়াতপিরামিডবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদবিমালাউইজনি সিন্সদারুল উলুম দেওবন্দতথ্যবাংলাদেশের নদীবন্দরের তালিকাসিদরাতুল মুনতাহারক্তনীলদর্পণএইচআইভি/এইডসযাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রসুকুমার রায়জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনসাঁওতাল বিদ্রোহজগদীশ চন্দ্র বসুভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলসমূহহরপ্পারমজান (মাস)ন্যাটোগোলাপপ্রাকৃতিক পরিবেশবিদায় হজ্জের ভাষণদীপু মনিঅসমাপ্ত আত্মজীবনীজেলেবাংলা ব্যঞ্জনবর্ণআফগানিস্তানঅমর্ত্য সেনপ্রথম ওরহানবৃষ্টিসমকামিতাগৌতম বুদ্ধওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবমাহিয়া মাহিমেটা প্ল্যাটফর্মসখালেদা জিয়াবঙ্গবন্ধু সেতুনাটকতৃণমূল কংগ্রেসরংপুর বিভাগদেশ অনুযায়ী ইসলামমালদ্বীপশর্করাযশোর জেলাআযানঐশ্বর্যা রাইপ্রযুক্তিদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্মপ্রোফেসর শঙ্কুআমাজন অরণ্যসলিমুল্লাহ খানচৈতন্য মহাপ্রভুক্লিওপেট্রাইন্সটাগ্রামবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিপথের পাঁচালী🡆 More