হুগলি জেলা বা হুগলী জেলা হলো ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিভাগের অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক জেলা। চুঁচুড়া শহরে এই জেলার সদর দফতর অবস্থিত। হুগলি জেলা চারটি মহকুমায় বিভক্ত: চুঁচুড়া সদর, চন্দননগর, শ্রীরামপুর ও আরামবাগ।
হুগলি জেলা | |
---|---|
পশ্চিমবঙ্গের জেলা | |
পশ্চিমবঙ্গে হুগলির অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
প্রশাসনিক বিভাগ | বর্ধমান |
সদরদপ্তর | হুগলি-চুঁচুড়া |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্র | আরামবাগ (১টি বিধানসভা কেন্দ্র পশ্চিম মেদিনীপুরে), হুগলি, শ্রীরামপুর (২টি বিধানসভা কেন্দ্র হাওড়ায়) |
• বিধানসভা আসন | হরিপাল, তারকেশ্বর, পুরশুড়া, আরামবাগ (ত.জা.), গোঘাট(ত.জা.), খানাকুল, সিঙ্গুর, চন্দননগর, চুচুঁড়া, বলাগড় (ত.জা.), পান্ডুয়া, সপ্তগ্রাম, ধনেখালি (ত.জা.), উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, চাঁপদানি, চণ্ডীতলা, জাঙ্গিপাড়া |
জনসংখ্যা (২০০১) | |
• মোট | ৫০,৪১,৯৭৬ |
জনতাত্ত্বিক | |
• সাক্ষরতা | ৭৫.৫৯ শতাংশ |
• লিঙ্গানুপাত | পুরুষ ৫১.৩৫ শতাংশ, মহিলা ৪৮.৬৫ শতাংশ |
প্রধান মহাসড়ক | এনএইচ ১৯, এনএইচ ১৬, গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড |
গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত | ১,৫০০ মিমি |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
হুগলি জেলার নামকরণ করা হয়েছে এই জেলার অন্যতম প্রধান শহর হুগলির নামানুসারে। "হুগলি" নামটির প্রকৃত উৎস অজ্ঞাত। ইতিহাসবিদ যদুনাথ সরকারের মতে, ষোড়শ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে পর্তুগিজ বণিকেরা সপ্তগ্রাম থেকে সরে এসে অধুনা হুগলি অঞ্চলে তাদের পণ্য মজুত করার জন্য যে গুদাম বা গোলা তৈরি করেছিল, সেই "গোলা" শব্দ থেকেই "হুগলি" নামের উৎপত্তি। পর্তুগিজ ভাষায় "গোলা" শব্দের অর্থ "দুর্গপ্রাকারের বহিরাংশের উর্ধ্বভাগের উদ্গত অংশ"। সেই সূত্রে "হুগলি" নামটির সঙ্গে কোনও দুর্গের সম্পর্ক থাকলেও থাকতে পারে বলে যদুনাথ সরকার মনে করেন। তার মতে, পর্তুগিজদের ভাষায় "ওগোলিম" বা "ওগোলি" কথাটিই বাঙালিদের উচ্চারণে "হুগলি"-তে পরিণত হয়েছিল। শম্ভুচন্দ্র দে অবশ্য এই মত স্বীকার করেননি। তিনি বলেছেন, এই অঞ্চলে হুগলি নদীর তীরে প্রচুর হোগলা গাছ ছিল। হোগলা গাছ থেকেই নদী ও এলাকার নামকরণ হয় "হুগলি" এবং এই হুগলি নামটিই বিকৃত হয়ে "গোলিন" বা "গোলিম" হয়েছিল। প্রমাণস্বরূপ তিনি বলেন, আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরি গ্রন্থে "হুগলি" নামটির সুস্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায় এবং উক্ত গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, সাতগাঁও (সপ্তগ্রাম) ও হুগলি বন্দর দুটির ব্যবধান ছিল মাত্র আধ ক্রোশ এবং দুই বন্দরই ছিল বিদেশিদের প্রভাবাধীন। আইন-ই-আকবরি-র অল্পকাল পরে লেখা পর্তুগিজ লেখক ফারিয়া সোউজারের গ্রন্থে "গোলিন" নামটি পাওয়া যায়। ১৬২০ সালে হিউগেস ও পার্কারের পত্রাবলিতে হুগলিকে "গোল্লিন" নামে অভিহিত করা হয়েছে। আবার ১৬৬০ সালে ওলন্দাজ লেখক মাথুজ ফান দেন ব্রুক এই অঞ্চলটিকে "Oegli" ও "Hoegli" নামে উল্লেখ করেছেন, যা বাংলা "হুগলি" নামটির প্রায় অনুরূপ। এই জন্য শম্ভুচন্দ্র মনে করতেন, "হুগলি" নামটি কোনও বিদেশির দেওয়া নাম নয়। অন্য মতে, পর্তুগিজেরা হুগলি নদীর পশ্চিম তীরে বর্তমান হুগলি সংশোধনাগার ও বাবুগঞ্জের মধ্যবর্তী অঞ্চলে গোলঘাট (পর্তুগিজ উচ্চারণে "গোলগোট", "গোলগোটা", "গোলগোথা" বা "ঘোলঘাট") এলাকায় দুর্গ নির্মাণ করে এবং গোলঘাট দুর্গের নাম থেকেই "হুগলি" নামটির উৎপত্তি। ডি. জি. ক্রফোর্ড এই মত পোষণ করতেন। কিন্তু নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মতে, গোলঘাট দুর্গকে কেন্দ্র করে হুগলি শহরের পত্তন অসম্ভব না হলেও "হুগলি" নামটি গোলঘাটের নাম থেকে উদ্ভূত হওয়া সম্ভবপর নয়।
বর্ধমানের দক্ষিণাংশকে বিচ্ছিন্ন করে ১৭৯৫ সালে ইংরেজরা প্রশাসনিক কারণে হুগলি জেলা তৈরি করে ছিল। হাওড়া তখনও হুগলি জেলার অংশ ছিল। জেলা বলতে কতগুলি থানার সমষ্টি। মহকুমার ধারণা তখনও জন্ম নেয়নি। এই জেলার দক্ষিণাংশ নিয়ে হাওড়া স্বতন্ত্র জেলা হিসাবে দেখা দিয়েছিল ১৮৪৩ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি। ১৮৭২ সালের ১৭ জুন ঘাটাল ও চন্দ্রকোনা থানা মেদিনীপুরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।
প্রাচীনকালে সুহ্ম বা দক্ষিণ রাঢ়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল হুগলি জেলা। নদী, খাল, বিল অধ্যুষিত এই অঞ্চল ছিল কৈবর্ত ও বাগদিদের আবাসস্থল। এদের উল্লেখ রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত, মনুসংহিতা এবং পঞ্চম অশোকস্তম্ভ লিপিতে। মৎস্য শিকারই ছিল এদের প্রধান জীবিকা।
১৪৯৫ সালে বিপ্রদাস পিল্লাই রচিত মনসামঙ্গল কাব্যে হুগলি নামের উল্লেখ দেখা যায়। এর থেকে বোঝা যায় জেলার নামকরণ বিদেশীকৃত নয়। কারণ এই রচনা কালের ২২ বছর পর পর্তুগিজরা বাংলায় প্রবেশ করেছিল। ১৫৯৮ সালে রচিত আবুল ফজলের আইন-ই-আকবরি গ্রন্থেও হুগলি নামের স্পষ্ট উল্লেখ আছে। ত্রিবেনীতে অবস্থিত জাফর খাঁর মসজিদ ও তার মাদ্রাসায় উল্লিখিত প্রতিষ্ঠা তারিখ থেকে অনুমান করা যায় ১২৯৮ সালে জেলার উত্তারংশ মুসলমান শাসনভুক্ত হয়েছিল। ত্রিবেনী ও সাতগাঁ(সংস্কৃতে সপ্তগ্রাম)পরে ছিল স্থানীয় মুসলমান শাসকদের সদর কার্যালয়। সাতগাঁয়ে এই সময় কার একটা টাঁকশাল ছিল। ১৫১৭ সালে পর্তুগিজরা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে বঙ্গদেশে প্রবেশ করে। ১৫৩৬ সালে সুলতান মাহমুদ শাহের দেওয়া সনদের বলে পর্তুগিজরা ব্যবসা শুরু করে সপ্তগ্রামে। ষোড়শ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে পলি জমে সরস্বতী নদীর নাব্যতা নষ্ট হয়ে ভাগীরথীর খাতে এই প্রবাহ পরিবর্তিত হলে পর্তুগিজরা ভাগীরথীর তীরে হুগলি বন্দর গড়ে তোলে। ১৮২৫ সালে ওলন্দাজ ও ১৬৩৮ ইংরেজ এই বন্দরে ব্যবসা শুরু করেছিল। ওলন্দাজরা পরে চুঁচুড়ার দখল পায় নবাবদের আনুকূল্যে। ১৮২৫ সালের ৭ মে চুঁচুড়া ইংরেজদের দখলে আসে। চুঁচুড়ার নিকটবর্তী চন্দননগর ছিল ফরাসিদের দখলে। ১৮১৬ সালের পর থেকে চন্দননগর নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ফরাসিদের হাতে ছিল। ১৯৫০ সালের ২রা মে এই শহর ভারত সরকারের কর্তৃত্বাধীন আসে। আর শ্রীরামপুর নগরী ছিল ১৭৫৫ থেকে ১৮৪৫ পর্যন্ত দিনেমারদের দখলে।
অর্থনীতি ও শিল্পে উন্নত হলেও জেলার ৫০ শতাংশ মানুষ কৃষির উপর নিরভারশীল। সমগ্র আরামবাগ মহকুমা ও জাঙ্গিপাড়া, পাণ্ডুয়া, ধনিয়াখালি এগুলি কৃষিভিত্তিক। এছাড়াও সপ্তগ্রাম বর্তমানে আদিসপ্তগ্রাম, ব্যান্ডেল ও হুগলি ছিল পোর্তুগিজদের উপনিবেশ।
পশ্চিমবঙ্গকে পাঁচটি উপভাষা অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। সমগ্র হুগলি জেলা রাঢ়ী উপভাষা অঞ্চলের মধ্যে অবস্থান করে। বর্ধমান, বীরভূম, হাওড়া, নদিয়া, কলকাতা, মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে রাঢ়ী অঞ্চলের বিস্তার। স্থানভেদে রাঢ়ী উপভাষার রূপভেদ আছে। রাঢ়ীকে মূল দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে – পশ্চিম রাঢ়ী ও পূর্ব রাঢ়ী। হুগলি জেলা পূর্ব রাঢ়ীর অন্তর্গত। পূর্ব রাঢ়ীর উপরেই বাংলা মান্যভাষা প্রতিষ্ঠিত। উপভাষা যেমন জেলা ভেদে ভিন্নতা চোখে পড়ে, তেমনি জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। রাঢ়ীর বিভাষা (Sub-dialect) অঞ্চল হল হুগলি। মৌখিক উপভাষা স্থানভেদে যেমন ভিন্ন হয় তেমনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থানের কারণে আলাদা হতে পারে। হুগলির সীমানায় বর্ধমান, বাঁকুড়া, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগণা, মেদিনীপুর ও হাওড়া জেলা অবস্থান করছে, তাই ওই সমস্ত জেলার ভাষার প্রভাব সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে পড়েছে। আদীবাসী অধুষ্যিত অঞ্চলে সাঁওতাল, কোঁড়া, মুণ্ডারি ভাষা প্রচলিত। শহরাঞ্চলে হিন্দিভাষীর বসবাস দেখা যায়।
গ্রীয়ারসন সাহেব প্রথম বাংলা উপভাষা অঞ্চলকে জরিপ করেন। তিনি সমগ্র বাংলাকে দুটি ভাগে ভাগ করেন। Western ও Estern। প্রথমটির কেন্দ্র কলকাতা, দ্বিতীয়টির ঢাকা। হুগলি নদীর তীরবর্তী হুগলি জেলার ভাষাকেই পশ্চিমা উপভাষার আদর্শ রূপ বলে অভিমত জানিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিম ভাগে বর্ধমান বিভাগের অন্তর্গত একটি বিস্তৃত সমভূমি অঞ্চলের নাম রাঢ়। এর সীমানা পশ্চিমে ছোটনাগপুর মালভূমির প্রান্তভাগ থেকে পূর্বে গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলের পশ্চিম সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই অঞ্চল ঈষৎ ঢেউ খেলানো ও এর ঢাল পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে।
‘রাঢ়’ শব্দটি এসেছে সাঁওতালি ভাষার ‘রাঢ়ো’ শব্দটি থেকে, যার অর্থ ‘পাথুরে জমি’। অন্যমতে, গঙ্গারিডি রাজ্যের নাম থেকে এই শব্দটি উৎপন্ন। সুপ্রাচীনকাল থেকেই এই অঞ্চল বাংলার সাংস্কৃতিক জগতের অন্যতম প্রধান অবদানকারী।
প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যেও রাঢ়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। মহাভারতে সুহ্ম ও তাম্রলিপ্তকে পৃথক করে দেখা হলেও গুপ্ত শাসনে রচিত দণ্ডীর ‘দশকুমারচরিত’-এ বলা হয়েছে ‘সুহ্মেষু দামলিপ্তাহ্বয়স্য নগরস্য’। অর্থাৎ দামলিপ্ত (তাম্রলিপ্ত) সুহ্মেরই একটি নগর ছিল। ধোয়ীর পবনদূত কাব্যে রাঢ় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে – গঙ্গাবীচিপ্লুত পরিসরঃ সৌধমালাবতংসো বাস্যতুচ্চৈ স্তুয়ি রসময়ো বিস্ময়ং সুহ্ম দেশঃ। অর্থাৎ, ‘যে-দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল গঙ্গাপ্রবাহের দ্বারা প্লাবিত হয়, যে দেশ সৌধশ্রেণীর দ্বারা অলংকৃত, সেই রহস্যময় সুহ্মদেশ তোমার মনে বিশেষ বিস্ময় এনে দেবে।’ পরবর্তীকালে রচিত ‘দিগ্বিজয়-প্রকাশ’-এ বলা হয়েছে – গৌড়স্য পশ্চিমে ভাবে বীরদেশস্য পূর্বতঃ। দামোদরোত্তরে ভাগে সুহ্মদেশঃ প্রকীর্তিতঃ। অর্থাৎ, গৌড়ের পশ্চিমে, বীরদেশের (বীরভূম) পূর্বে, দামোদরের উত্তরে অবস্থিত প্রদেশই সুহ্ম নামে খ্যাত।
এই সব বর্ণনার প্রেক্ষিতে বর্তমান হুগলি জেলাকেই প্রাচীন রাঢ়ের কেন্দ্রস্থল বলে অনুমান করা হয় এবং এর সীমানা বীরভূম থেকে মেদিনীপুর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল বলে ধারণা।
হুগলি জেলার ভাষায় ক্রিয়ার সাথে 'উনি'বা 'লুম'প্রত্যয় যুক্ত হতে দেখা যায়। যেমন - খাবুনি,যাবুনি,করবুনি,শোবুনি,খেলুম, গেলুম ইত্যাদি। কখনো ক্রিয়ার সংক্ষিপ্ত রূপের প্রয়োগ ঘটে। যেমন - চললাম> চললুম> চননু,বননু,করনু ইত্যা। কিছু শব্দ প্রয়োগ এখানের আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরেছে। যেমন - বাকুল(বাড়ির অন্দরমহল),মোদ্দার (দরজার চৌকা), লাদ (গরু বা মহিষের বিষ্ঠা),পাট-সারা (কাজ শেষ করা) ইত্যাদি।
হুগলি জেলা নিম্নলিখিত প্রশাসনিক মহকুমাগুলিতে বিভক্ত:
মহকুমা | সদর | আয়তন কিমি২ | জনসংখ্যা (২০১১) | গ্রামীণ জনসংখ্যা % (২০১১) | শহরাঞ্চলীয় জনসংখ্যা % (২০১১) |
---|---|---|---|---|---|
চুঁচুড়া | হুগলি-চুঁচুড়া | ১,১৪৮.১৫ | ১,৬৫৭,৫১৮ | ৬৮.৬৩ | ৩১.৩৭ |
চন্দননগর | চন্দননগর | ৫০৮.০৮ | ১,১২৭,১৭৬ | ৫৮.৫২ | ৪১.৪৮ |
শ্রীরামপুর | শ্রীরামপুর | ৪২২.৪৫ | ১,৪৬৯,৮৪৯ | ২৬.৮৮ | ৭৩.১২ |
আরামবাগ মহকুমা | আরামবাগ | ১,০৫৮.৮৭ | ১,২৬৪,৬০২ | ৯৪.৭৭ | ৫.২৩ |
হুগলি জেলা | চুঁচুড়া | ৩,১৪৯.০০ | ৫,৫১৯,১৪৫ | ৬১.৪৩ | ৩৮.৫৭ |
২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী, হুগলি জেলার মোট জনসংখ্যা ৫,৫১৯,১৪৫, যা ডেনমার্ক রাষ্ট্রের বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় সমান। জনসংখ্যার নিরিখে ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে হুগলি জেলা ষোড়শ স্থানাধিকারী। এই জেলার জনঘনত্ব ১,৭৫৩ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৪,৫৪০ জন/বর্গমাইল).
২০০১-২০১১ দশকে হুগলি জেলার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৯.৪৯ শতাংশ। এই জেলার লিঙ্গানুপাতের হার প্রতি ১০০০ পুরুষে ৯৫৮ জন মহিলা এবং সাক্ষরতার হার ৮২.৫৫ শতাংশ।
এই তালিকাটি সেই সকল বিশিষ্ট ব্যক্তিদের যাঁরা অথবা যাঁদের পূর্বপুরুষ হুগলি জেলার মানুষ:
২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী, হুগলি জেলার সাক্ষরতার হার ৮১.৮০ শতাংশ। চুঁচুড়া মহকুমার সাক্ষরতার হার ৭৯.১৭ শতাংশ, চন্দননগর মহকুমার ৮৩.০১ শতাংশ, শ্রীরামপুর মহকুমার ৮৬.১৩ শতাংশ এবং আরামবাগ মহকুমার সাক্ষরতার হার ৭৯.০৫ শতাংশ।
২০১৩-১৪ সালের হিসেব অনুযায়ী হুগলি জেলার শিক্ষাব্যবস্থার একটি সমন্বিত চিত্র তুলে ধরা হল (সকল তথ্য সংখ্যায়):
মহকুমা | প্রাথমিক বিদ্যালয় | মধ্য বিদ্যালয় | উচ্চ বিদ্যালয় | উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় | সাধারণ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় | প্রযুক্তিগত / পেশাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান | অ-প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
প্রতিষ্ঠান | ছাত্রসংখ্যা | প্রতিষ্ঠান | ছাত্রসংখ্যা | প্রতিষ্ঠান | ছাত্রসংখ্যা | প্রতিষ্ঠান | ছাত্রসংখ্যা | প্রতিষ্ঠান | ছাত্রসংখ্যা | প্রতিষ্ঠান | ছাত্রসংখ্যা | প্রতিষ্ঠান | ছাত্রসংখ্যা | |
চুঁচুড়া | ৮৯৯ | ৮৫,২১৩ | ৪৬ | ৩,৮৮৫ | ৯৮ | ৪৮,৭২২ | ১০৯ | ১২৪,০৬৮ | ৭ | ১৬,৩৪২ | ২৬ | ১০,৫৬৪ | ২,৪১৩ | ৪৫,২৮৯ |
চন্দননগর | ৬০৬ | ৫৩,৩৮২ | ৩২ | ৩,৩১২ | ৪৬ | ২২,০০০ | ৭৭ | ৮৯,১৩২ | ৬ | ২০,৪৫০ | ৬ | ৭৭৮ | ১,২৯৭ | ২৯,১২৭ |
শ্রীরামপুর | ৫৭৭ | ৬৪,২০৭ | ২৫ | ৩,৬১১ | ৬৫ | ৩৭,৯৯৭ | ৯৭ | ১০৮,১৯৯ | ৮ | ১৬,৬৩১ | ৩ | ৭৯৩ | ১,৩৩৭ | ৩৩,০৬০ |
আরামবাগ | ৯৩৫ | ৮০,৭০৫ | ৪৯ | ৫,৪৬২ | ৮৩ | ৪৮,৫১৩ | ৭৬ | ৯১,৯১১ | ৭ | ১৬,৯৫০ | ৩ | ২২৮ | ১,৮৩৮ | ৫৭,৩৮৩ |
হুগলি জেলা | ৩,০১৩ | ২৮৩,৪০৭ | ১৫২ | ১৬,২৭০ | ২৯২ | ১৫৭,২৩২ | ৩৫৯ | ৪১৩,৩১০ | ২৮ | ৭০,৩৭৩ | ৩৮ | ১২,৩৬৩ | ৬,৮৮৫ | ১৬৪,৮৫৯ |
টীকা: জুনিয়র বেসিক স্কুলগুলি প্রাথমিক বিদ্যালয় তালিকার অন্তর্গত; মাদ্রাসাগুলি মধ্য বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয় ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় তালিকার অন্তর্গত; জুনিয়র টেকনিক্যাল স্কুল, জুনিয়র গভর্নমেন্ট পলিটেকনিক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং সেন্টার, নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ইত্যাদি প্রযুক্তিগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালিকার অন্তর্গত; ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ, প্যারা-মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, ম্যানেজমেন্ট কলেজ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও নার্সিং প্রশিক্ষণ কলেজ, আইন কলেজ, আর্ট কলেজ, সংগীত কলেজ ইত্যাদি প্রযুক্তিগত ও পেশাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তালিকার অন্তর্গত। শিশুশিক্ষা কেন্দ্র, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র, রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের কেন্দ্রগুলি, স্বীকৃত সংস্কৃত টোল, দৃষ্টিহীন ও অন্যান্য প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, সংশোধনমূলক বিদ্যালয় ইত্যাদি বিশেষ ও অ-প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলির অন্তর্গত।
নিম্নে হুগলি জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান পরিসংখ্যান দেওয়া গেল।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংখ্যা মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ০৩ মহাবিদ্যালয় ২৭ মুক্ত মহাবিদ্যালয় ০৬ প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩০২৭ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৬৫ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৮০
নিচের সারণিতে (সকল তথ্য সংখ্যায়) ২০১৪ সালের হিসেব অনুযায়ী হুগলি জেলার হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও উপকেন্দ্রগুলিতে প্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা ও রোগীর সংখ্যা দেওয়া হল:
মহকুমা | স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার | অন্যান্য রাজ্য সরকারি বিভাগসমূহ | স্থানীয় সংস্থা | কেন্দ্রীয় সরকারি বিভাগ / পিএসইউ | এনজিও / নেসরকারি নার্সিং হোম | মোট | মোট শয্যাসংখ্যা | মোট চিকিৎসকের সংখ্যা* | অন্তর্বিভাগীয় রোগী | বহির্বিভাগীয় রোগী | |||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
হাসপাতাল | গ্রামীণ হাসপাতাল | ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র | প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র | ||||||||||
চুঁচুড়া | ১ | ২ | ৩ | ২৪ | - | - | - | ৩১ | ৬১ | ১,০৯১ | ১০৮ | ৯৪,২১৩ | ১,৮৩০,৩৫৮ |
চন্দননগর | ১ | ৩ | - | ৮ | - | - | - | ৪১ | ৫৩ | ৮২৮ | ৫৬ | ৭০,৭২৪ | ১,১০৫,০৬০ |
শ্রীরামপুর | ৩ | ২ | ২ | ১২ | - | - | - | ৮০ | ৯৯ | ১,৮৯৪ | ৮৫ | ৬৩,৬১৯ | ১,২৫২,৯৪১ |
আরামবাগ | ১ | ১ | ৫ | ১৬ | - | - | - | ৩৫ | ৫৮ | ৯১৯ | ৫৭ | ৮৩,৪৬৯ | ১,৭৪৩,৭১৯ |
হুগলি জেলা | ৬ | ৮ | ১০ | ৬০ | - | - | - | ১৮৭ | ২৭১ | ৪,৭৩২ | ৩০৬ | ৩১২,০২৫ | ৫,৯৩২,০৭৮ |
.* নার্সিং হোম বাদে
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article হুগলি জেলা, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.