কম্পিউটার ভাইরাস হল এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা ব্যবহারকারীর অনুমতি বা ধারণা ছাড়াই নিজে নিজেই কপি হতে পারে বা নিজের প্রতিরূপ সৃষ্টি করতে পারে। মেটামর্ফিক ভাইরাসের মত তারা প্রকৃত ভাইরাসটি কপিগুলোকে পরিবর্তিত করতে পারে অথবা কপিগুলো নিজেরাই পরিবর্তিত হতে পারে। একটি ভাইরাস এক কম্পিউটার থেকে অপর কম্পিউটারে যেতে পারে কেবলমাত্র যখন আক্রান্ত কম্পিউটারকে স্বাভাবিক কম্পিউটারটির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। যেমন: কোন ব্যবহারকারী ভাইরাসটিকে একটি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পাঠাতে পারে বা কোন বহনযোগ্য মাধ্যম যথা ফ্লপি ডিস্ক, সিডি, ইউএসবি ড্রাইভ বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। এছাড়াও ভাইরাসসমূহ কোন নেটওয়ার্ক ফাইল সিস্টেম কে আক্রান্ত করতে পারে, যার ফলে অন্যান্য কম্পিউটার যা ঐ সিস্টেমটি ব্যবহার করে সেগুলো আক্রান্ত হতে পারে। ভাইরাসকে কখনো কম্পিউটার ওয়ার্ম ও ট্রোজান হর্সেস এর সাথে মিলিয়ে ফেলা হয়। ট্রোজান হর্স হল একটি ফাইল যা এক্সিকিউটেড হবার আগ পর্যন্ত ক্ষতিহীন থাকে।
বর্তমানে অনেক পার্সোনাল কম্পিউটার (পিসি) ইন্টারনেট ও লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত থাকে যা ক্ষতিকর কোড ছড়াতে সাহায্য করে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব, ই-মেইল ও কম্পিউটার ফাইল শেয়ারিং এর মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমন ঘটতে পারে। কিছু ভাইরাসকে তৈরি করা হয় প্রোগ্রাম ধ্বংস করা, ফাইল মুছে ফেলা বা হার্ড ডিস্ক পূণর্গঠনের মাধ্যমে কম্পিউটার ধ্বংস করার মাধ্যমে। অনেক ভাইরাস কম্পিউটারের সরাসরি কোন ক্ষতি না করলেও নিজেদের অসংখ্য কপি তৈরি করে যা লেখা, ভিডিও বা অডি ও বার্তার মাধ্যমে তাদের উপস্থিতির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
"ক্রিপার সিস্টেম" নামে পরিচিত প্রথম কম্পিউটার ভাইরাসটি ১৯৭১ সালে প্রকাশিত একটি পরীক্ষামূলক স্ব-প্রতিলিপিকারী ভাইরাস ছিল। এটি হার্ড ড্রাইভটি পূরণ করে যতক্ষণ না একটি কম্পিউটার আর কাজ করতে পারে না। এই ভাইরাসটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিবিএন প্রযুক্তি দ্বারা তৈরি করা হয়েছে।
MS-DOS-এর জন্য প্রথম কম্পিউটার ভাইরাস ছিল "Brain" এবং এটি ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এটি ফ্লপি ডিস্কের বুট সেক্টরকে ওভাররাইট করবে এবং কম্পিউটারকে বুট হতে বাধা দেবে। এটি পাকিস্তানের দুই ভাই লিখেছেন এবং মূলত একটি কপি সুরক্ষা হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছিল।
"দ্য মরিস" ছিল প্রথম কম্পিউটার ভাইরাস যা ১৯৮৮ সালে বন্য অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এটি রবার্ট মরিস লিখেছিলেন, কর্নেল ইউনিভার্সিটির একজন স্নাতক ছাত্র যিনি ইন্টারনেটের আকার নির্ধারণ করতে এটি ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। তার পদ্ধতি সেন্ডমেইল এবং অন্যান্য ইউনিক্স অ্যাপ্লিকেশনের পাশাপাশি দুর্বল পাসওয়ার্ডগুলিতে সুরক্ষা ছিদ্র ব্যবহার করেছিল, কিন্তু একটি প্রোগ্রামিং ভুলের কারণে এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং কম্পিউটারের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে। এটি ১৫ ঘন্টার মধ্যে প্রায় ১৫,০০০ কম্পিউটারকে সংক্রামিত করেছিল, যা তখনকার বেশিরভাগ ইন্টারনেট ছিল।
দুটি সাধারণ পদ্ধতিতে এন্টি-ভাইরাস সফটওয়্যারগুলো ভাইরাস শনাক্ত করে থাকে। প্রথম ও সর্বাধিক প্রচলিত পদ্ধতিটি হল ভাইরাস সিগনেচার সংজ্ঞায়িত তালিকা থেকে ভাইরাস শনাক্তকরণ। এই শনাক্তকরণ পদ্ধতির প্রধান সমস্যা হল ব্যবহারকারীরা কেবল সেসব ভাইরাস থেকেই রক্ষা পান যেগুলো পুর্বোক্ত ভাইরাস সংজ্ঞার আপডেটে উল্লিখিত থাকে। দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হল হিউরিস্টিক এলগরিদম যা ভাইরাসের সাধারণ সংজ্ঞা থেকে শনাক্ত করা হয়। এই পদ্ধতিতে এন্টি-ভাইরাস সিগনেচার ফার্ম কর্তৃক সংজ্ঞায়িত ভাইরাস না হয়েও তা শনাক্ত করা যায়।
কোন কম্পিউটার একবার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হবার পর অপারেটিং সিস্টেম পুনরায় ইনস্টল করা ছাড়া তা ব্যবহার করা বিপজ্জনক। তবে ভাইরাস আক্রান্ত কম্পিউটারকে সারিয়ে তোলার জন্য বেশ কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে। এই পদ্ধতিগুলো ভাইরাসের প্রকার ও আক্রান্ত হবার মাত্রার উপর নির্ভর করে।
উইন্ডোজ এক্স পিতে ক্ষতিগ্রস্ত সিস্টেমকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসার পদ্ধতিটি সিস্টেম রিস্টোর নামে পরিচিত, যা রেজিস্ট্রি এবং গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেম ফাইলসমূহকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে। অনেক সময় এর প্রয়োগ ভাইরাস সিস্টেমটিকে হ্যাং করে দেয় এবং পরবর্তীকালে হার্ড রিবুট এটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার আগের অবস্থায় নিয়ে যাবে। অবশ্য কিছু ভাইরাস রিস্টোর সিস্টেমসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ টুল যথা টাস্ক ম্যানেজার এবং কমাণ্ড প্রম্পট বিকল করে দেয়। এগুলো করে এমন একটি ভাইরাসের নাম সায়াডোর। বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এডমিনিস্ট্রেটরের উক্ত টুলগুলো অন্যান্য ব্যবহারকারীদের জন্য অকেজো করে রাখার ক্ষমতা আছে। ভাইরাস রেজিস্ট্রিকে পরিবর্তন করে দেবার মাধ্যমে একই কাজ করে, ফলে যখন একজন প্রশাসক কম্পিউটারটি চালান তখন তিনিসহ অন্যান্য ব্যবহারকারী এই টুলগুলো ব্যবহার করা থেকে বঞ্চিত হন। যখন একটি আক্রান্ত টুল ভাইরাসের মাধ্যমে অকেজো হয়ে যায় তখন তা "Task Manager has been disabled by your administrator." বার্তাটি দেয়।
যদি কোন কম্পিউটারে এমন কোন ভাইরাস থাকে যা এন্টি ভাইরাস সফটওয়্যারের পক্ষে মুছে ফেলা সম্ভব না হয় তবে অপারেটিং সিস্টেমের পুনরায় ইন্সটলেশন জরুরি হতে পারে। এটি সঠিকভাবে করার জন্য হার্ড ড্রাইভ সম্পুর্ণভাবে ডিলিট করতে হবে (পার্টিশন ডিলিট করে ফরম্যাট করতে হবে)।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article কম্পিউটার ভাইরাস, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.