ওহী (বিকল্প বানান, ওহি বা ওয়াহী) (আরবি: وحي, প্রতিবর্ণীকৃত: ওয়াহী উৎসাহ, অনুপ্রেরণা, অদৃশ্য বা গোপন অত্যাদেশ অবতীর্ণ হওয়া}}) শব্দটির আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, এমন সূক্ষ্ম ও গোপন ইশারা, যা ইশারাকারী ও ইশারা গ্রহণকারী ছাড়া তৃতীয় কেউ টের পায় না। এ সম্পর্কের ভিত্তিতে এ শব্দটি ইলকা বা মনের মধ্যে কোনো কথা নিক্ষেপ করা ও ইলহাম বা গোপনে শিক্ষা ও উপদেশ দান করার অর্থে ব্যবহৃত হয়।
ব্যবহারিক ভাবে ওহী দ্বারা ইসলামে আল্লাহ কর্তৃক নবি-রাসূলদের প্রতি প্রেরিত বার্তা বোঝানো হয়।
কুরআন মাজিদে বলা হয়েছে,
"নিশ্চয় আমি তোমার নিকট ওহী পাঠিয়েছি, যেমন ওহী পাঠিয়েছি নুহ ও তার পরবর্তী নবীগণের নিকট এবং আমি ওহী পাঠিয়েছি ইবরাহিম, ইসমাইল, ইসহাক, ইয়াকুব, তার বংশধরগণ, ঈসা, আইয়ুব, ইউনুস, হারুন ও সুলায়মান এর নিকট এবং দাউদকে প্রদান করেছি যাবুর।"[কুরআন ৪:১৬৩]
অন্য আয়াতে বলা হয়,
"কোনো মানুষের এ মর্যাদা নেই যে, আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন, ওহীর মাধ্যম, পর্দার আড়াল অথবা কোনো দূত পাঠানো ছাড়া। তারপর আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে তিনি যা চান তাই ওহী প্রেরণ করেন। তিনি তো মহীয়ান, প্রজ্ঞাময়।"[কুরআন ৪২:৫১]
এই আয়াতে ওহীর তিনটি প্রকারের কথা বর্ণিত হয়েছে।
কুরআনে মৌমাছিকে করা ইলহাম বুঝাতেও ওহী শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে,
"আর তোমার রব মৌমাছিকে ইংগিতে জানিয়েছে যে, ‘তুমি পাহাড়ে ও গাছে এবং তারা যে গৃহ নির্মাণ করে তাতে নিবাস বানাও।’"[কুরআন ১৬:৬৮]
অন্যস্থানে বলা হয়েছে,
"আর আমি মুসার মায়ের প্রতি নির্দেশ পাঠালাম, তুমি তাকে দুধ পান করাও। অতঃপর যখন তুমি তার ব্যাপারে আশঙ্কা করবে, তখন তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ করবে। আর তুমি ভয় করবে না এবং চিন্তা করবে না। নিশ্চয় আমি তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব এবং তাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করব’।"[কুরআন ২৮:৭]
বলা হয়েছে, وأوحينا এর মূল হলো, وحي যার শাব্দিক অর্থ হলো, গোপনে কোনো কিছু জানিয়ে দেয়া। এখানে মুসা-জননীকে আল্লাহ্ তা‘আলা যে কোনো উপায়ে তাঁর কোনো নির্দেশ পৌঁছানোই উদ্দেশ্য। যে অর্থে কুরআনে নবুওয়তের ওহী ব্যবহার হয়েছে সে অর্থের ওহী হওয়া বাধ্যতামূলক নয়।
ওহী সম্পর্কে ইসলামী পণ্ডিত শফি উসমানী মারেফুল কুরআনের ভূমিকায় বলেন,
"আল্লাহ তায়ালা থেকে মানবজাতি তিনটি মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করে - ইন্দ্রিয় (men's sense), বিবেক (the faculty of reason), এবং ওহীর মাধ্যমে। যার শেষটি শুধুমাত্র নবী রাসুল পেয়ে থাকে। হেদায়াত দানের উদ্দেশ্যে আল্লাহ যুগে যুগে নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন, যার প্রথম ছিলেন আদম, আর সর্বশেষ মুহাম্মাদ। আর ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে তার বাণী নবী রাসুলদের কাছে অবতীর্ণ করেন। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী মুহাম্মাদ শেষ রাসুল বিধায় পৃথিবীতে আর কোনো ওহী আসবে না।"
ওহী দু প্রকারের। যথা -
উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন,
হারিস ইবনে হিশাম (রা.) আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)'কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার নিকট ওয়াহী কিরূপে আসে?’ আল্লাহর রাসুল (সা.) বললেন: "কোনো কোনো সময় তা ঘণ্টা বাজার মত আমার নিকট আসে। আর এটি-ই আমার উপর সবচেয়ে বেদনাদায়ক হয় এবং তা শেষ হতেই মালাক (ফেরেশতা) যা বলেন তা আমি মুখস্থ করে নেই, আবার কখনো মালাক মানুষের রূপ ধারণ করে আমার সাথে কথা বলেন। তিনি যা বলেন আমি তা মুখস্থ করে নেই।" আয়িশা (রা.) বলেন, আমি তীব্র শীতের সময় ওয়াহী নাযিলরত অবস্থায় তাঁকে দেখেছি। ওয়াহী শেষ হলেই তাঁর কপাল থেকে ঘাম ঝরে পড়তো। (বুখারী, মুসলিম, আহমাদ)
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article ওহি, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.