ইসলাম ধর্মে প্রতিপালক অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত একটি ধারণা। ইসলাম ধর্মমতে রব বা প্রতিপালক ও সৃষ্টিকর্তা একজনই। তাকে আরবি ভাষায় একক প্রতিপালক বোঝাতে ব্যবহৃত শব্দ আল্লাহ (আরবি: الله) বলে সম্বোধন করা হয়, যাকে বিশ্বজগতের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ও প্রভু বলে ইসলাম ধর্মানুসারীরা বিশ্বাস করেন। ইসলাম ধর্মে আল্লাহ্ হলেন একটি নৈবর্তিক ধারণা, যা দ্বারা সমগ্র বিশ্ব জগতের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী সৃষ্টিকর্তা এবং প্রভুকে বুঝানো হয়। ইসলামের প্রধান ঐশী ধর্মগ্রন্থ কুরআনে স্রষ্টাকে আল্লাহ্ নামে ডাকা হয়েছে। আল্লাহ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল একক প্রতিপালক (নির্দিষ্টভাবে একক উপাস্য, উপাসনার যোগ্য একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা)। অন্যান্য ইব্রাহিমীয় ধর্মের (ইহুদী ও খ্রিস্টান) মত ইসলামেও একক প্রতিপালক (আল্লাহ্) কে একমাত্র সর্বোচ্চ সত্তা, সর্বোচ্চ ও অসীম ক্ষমতার অধিকারী এবং অসীম পরিমাণ উত্তম গুণে গুণাণ্বিত বিশ্বজগতের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা এবং মানুষের একমাত্র উপাসনাযোগ্য সত্তা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।। আল্লাহ শব্দটি আরবি ভাষায় লিঙ্গ পার্থক্যবিহীন। আরবি ভাষী খ্রিষ্টান ও ইহুদীরাও সুনির্দিষ্ট/একক ঈশ্বর বোঝাতে আল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন, আর ইলাহ্ (আরবি: إله) শব্দটি আরবিতে যেকোন উপাস্য বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
অসংখ্য-অগণিত প্রচলিত বাক্যাংশ ও অভিব্যক্তি দ্বারা আল্লাহ কে ডাকা হয়।
নাম | বাক্যাংশ | উদ্ধৃত বাক্য (কুরআন) |
---|---|---|
তাকবীর | ||
ʾআল্লাহু আকবর | 9:72, 29:45, 40:10 | |
أَللّٰهِ أَكْبَرُ | ||
আল্লাহ সবচেয়ে বড় | ||
তাসবিহ | ||
সুবহানাল্লাহ | 23:91, 28:68, 37:159, 52:43, 59:23 | |
سُبْحَانَ اللّٰهِ | ||
সব গৌরব আল্লাহর | ||
তাহমিদ | ||
আল হামদু লিল্লাহ | 1:2, 6:1, 29:63, 31:25, 34:1, 35:1, 35:34, 39:29, 39:74, 39:75, 40:65 | |
أَلْحَمْدُ لِلّٰهِ | ||
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর | ||
তাহলিল | ||
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ | 37:38, 47:19 | |
لَا إِلَٰهَ إِلّٰا اللّٰهُ | ||
আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই | ||
শাহাদাহ্ | ||
মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ | 48:29 | |
مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللّٰهِ | ||
মুহাম্মদ আল্লাহ্র রাসুল | ||
বিসমিল্লাহ্ | ||
বিসমিল্লাহ্ হির রাহমানির রাহীম | 1:1 | |
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمَٰنِ | ||
পরম করুণাময়, অতি দয়ালু আল্লাহ্র নামে (শুরু করছি) | ||
ইনশাআল্লাহ | ||
ইনশা আল্লাহ | 2:70, 12:99, 18:69, 28:27, 48:27 | |
إِنْ شَاءَ اللّٰهُ | ||
যদি আল্লাহ্ চান | ||
মাশাল্লাহ | ||
মা শা আল্লাহ | 6:128, 7:188, 10:49, 18:39, 87:7 | |
مَا شَاءَ اللّٰهُ | ||
সব আল্লাহ্র ইচ্ছা | ||
আলাই হিস-সালাম | ||
ছালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম | ||
صَلَّىٰ اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ | ||
আল্লাহ্র আশীর্বাদ তার উপর বর্ষিত হোক | ||
রাহীমাহুল্লাহ | ||
রাহীমাহুল্লাহ/রাহীমাকাল্লাহ | ||
رَحِمَهُ اللّٰهُ / رَحِمَكَ اللّٰهُ | ||
আল্লাহ্ তার/তোমার প্রতি রহমত বর্ষণ করুন | ||
ইস্তিগফার | ||
ʾআস্তাগ ফিরুল্লাহ | 12:98, 19:47 | |
أَسْتَغْفِرُ اللّٰهِ | ||
আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা চাচ্ছি | ||
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন | ||
ʾইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন | 2:156, 2:46, 2:156 | |
إِنَّا لِلّٰهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ | ||
নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা তার দিকে প্রত্যাবর্তনকারী | ||
জাঝাকাল্লাহ | ||
'জাঝাকাল্লাহু খাইরান | Riyad as-Salihin 17:32, Tirmidhi 27:141, Bukhari 7:3 | |
جَزَاكَ اللّٰهُ خَيْرًا | ||
আল্লাহ্ আপনাকে উত্তমভাবে পুরস্কৃত করুন | ||
আউ’জুবিল্লাহ | ||
ʾআউ’জু বিল্লা হি মিনাশ শ্বাইতানির রাজিম | Riyad as-Salihin 1:46 | |
أَعُوْذُ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّ يْطٰنِ الرَّجِيْمِ | ||
অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহ্র নিকট সাহায্য চাচ্ছি | ||
ফি সাবিলিল্লাহ | ||
ফী সাবীলিল্লাহ | 2:154, 2:190, 2:195, 2:218, 2:244, 2:246, etc. | |
فِي سَبِيلِ اللّٰهِ | ||
আল্লাহ্র পথে | ||
ইয়ার হামুকাল্লাহ | ||
ইয়ার হামুকাল্লাহ | Bukhari 78:248, Riyad as-Salihin 6:35 | |
يَرْحَمُكَ اللّٰهُ | ||
আল্লাহ্র রহমত আপনার উপর বর্ষিত হোক | ||
আল্লাহ্র নামের সাথে সম্মানসুচক প্রায় বলা বা লেখা হয় | ||
সুবহাহু ওয়া তায়ালা | ||
সুবহাহু ওয়া তায়ালা | 6:100, 10:18, 16:1, 17:43, 30:40, 39:67 | |
سُبْحَانَهُ وَتَعَالَىٰ | ||
তিনি (আল্লাহ্) প্রশংসিত ও মহিমান্বিত হোন | ||
জাল্লা জালালুহু | ||
জাল্লা জালালুহু | ||
جَلَّ جَلَالَهُ | ||
তার গৌরবে গৌরবান্বিত হোন | ||
ʿআজ্জা ওয়াজাল | ||
ʿআজ্জা ওয়াজাল | ||
عَزَّ وَجَلَّ | ||
মহৎ এবং মহমান্বিত |
তাওহীদ বা দৃঢ়ভাবে একত্ববাদে বিশ্বাসই ইসলামের মূল ভিত্তি, যা আল্লাহর একত্ববাদ এবং অতুলনীয়তা (wāḥid) দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করে। ইসলামের মৌলিক ধর্মবিশ্বাস, শাহাদাহ (ইসলামে প্রবেশের জন্য শপথ করে বলা), যার সাথে সম্পর্কিত لا إله إلا الله (lā ʾilāha ʾillallāh), বা, "আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া কোন উপাস্য নেই।" পবিত্র কুরআন অনুসারে আল্লাহ সমগ্র সৃষ্টির অমুখাপেক্ষী।
কুরআনে বলা হয়েছে,
"বলুন, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। এবং তার সমতুল্য কেউই নেই।"
ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে আল্লাহর কোনো গুণাবলীই সৃষ্টজীবের মত নয়। সৃষ্টজীব যেভাবে শোনে, আল্লাহ সেভাবে শোনেন না। সৃষ্টজীব যেভাবে দেখে, আল্লাহ সেভাবে দেখেন না। আল্লাহর গুণাবলীর ধরন মানুষের অজানা। কুরআনে বলা হয়েছে,
"...কোনো কিছুই তার সদৃশ নয়, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্ৰষ্টা।"[কুরআন ৪২:১১]
মুসলিমরা খ্রিস্টান ধর্মের ট্রিনিটি মতবাদকে বহু-ঈশ্বর ধারণার সাথে তুলনা করে। ইসলামে, ঈশ্বর (আল্লাহ্) সবার বোধশক্তির বাইরে এবং কোন ভাবেই তার সৃষ্টির সদৃশ নয়। ইসলাম ধর্মে ঈশ্বরের কোনরূপ প্রতিমূর্তি গড়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
অন্যান্য ইব্রাহীমিয় ধর্মের মতো, আল্লাহ্ কে বিশ্বাস করা হয় নবী-রাসুলদের কাছে প্রেরিত ওহীর মাধ্যমে সৃষ্টির সহিত যোগাযোগ রাখতে।
মুসলিমরা বিশ্বাস করে কুরআন আল্লাহ্র পক্ষ থেকে প্রেরিত কিতাব যা আক্ষরিক অর্থে মুহাম্মদ এর উপর অবতীর্ণ হয়েছে।
হাদীস হচ্ছে মুহাম্মদ এর বক্তব্য ও কর্ম সমূহের লিখিত বিবরণ, হাদীসে কুদসি হচ্ছে হাদিসেরই একটি উপ-শাখা, যা আল্লাহ্র বানী নবীর মুখে উচ্চারিত হিসেবে মুসলিমরা গণ্য করে। আলী ইবনে মুহাম্মদ আল-জুরজানির মতে, কুরআনে হাদীসে কুদসি বলতে বুঝায় যেগুলোর শুরুতে "মুহাম্মদ এর বক্তব্য" থাকবে, এবং শেষে "সরাসরি আল্লাহ্র বানী" থাকবে।
মুসলিমরা বিশ্বাস করে এই মহাবিশ্বের সবকিছু আল্লাহ্র ঐচ্ছিক আদেশের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে, "..."হয়ে যাও," এবং সব হয়ে যায়।" এবং জীবনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ্র উপাসনা করা। তিনি এমন এক স্বত্বা যার কাছে কোন প্রয়োজনে বা চরম দুর্দশায় ডাক দিলে তিনি সাথে সাথে সাড়া দেন। আল্লাহ্ কে ডাকতে পীর,পাদ্রী বা ধর্ম যাজকের মতো কোন মধ্যস্থকারীদের প্রয়োজন নেই ইমাম বুখারী তার সহীহ বুখারীতে একটি হাদীস-এ-কুদসি"তে বর্ণনা করেন যে আল্লাহ্ বলেছেন, "আমি আমার বান্দাদের প্রতি তেমন যেমন তারা আমাকে মনে করে।"
আল্লাহ্র সম্পর্ক তার বান্দাদের প্রতি এরকম যে তিনি চান যে তার দাসরা তার কাছে তওবা করবে। যদি মৃত্যুর পূর্বে তারা তওবা না করে, তবে তার আযাব তাদের বিপদগ্রস্ত করবে। কুরআনে বলা হয়েছে,
"আমার বান্দাদের জানিয়ে দাও যে, আমি নিশ্চয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর আমার আযাবই যন্ত্রণাদায়ক আযাব।"[কুরআন ১৫:৪৯–৫০]
আরও পড়ুন:ইব্রাহিমীয় ধর্ম
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article ইসলাম ধর্মে ঈশ্বর, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.