শ্যাম মানেকশ’

ফিল্ড মার্শাল শ্যাম হোরমাসজি ফ্রেমজি জামসেদজি মানেকশ (৩রা এপ্রিল, ১৯১৪ - ২৭শে জুন, ২০০৮) ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান ছিলেন এবং ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত হওয়া প্রথম ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। তার সক্রিয় সামরিক কর্মজীবন চার দশক এবং পাঁচটি যুদ্ধে বিস্তৃত ছিল, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেবা দিয়ে শুরু হয়েছিল।

ফিল্ড মার্শাল

শ্যাম মানেকশ

মিলিটারি ক্রস
শ্যাম মানেকশ’
ফিল্ড মার্শাল শ্যাম মানেকশ
(জেনারেলের চিহ্ন পরিহিত ছবি ১৯৭০ )
ডাকনামশ্যাম বাহাদুর
জন্ম(১৯১৪-০৪-০৩)৩ এপ্রিল ১৯১৪
অমৃতসর, পাঞ্জাব
মৃত্যু২৭ জুন ২০০৮(2008-06-27) (বয়স ৯৪)
ওয়েলিংটন, তামিলনাড়ু
সমাধি
আনুগত্যশ্যাম মানেকশ’ ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
শ্যাম মানেকশ’ ভারত (১৯৪৭ সালের পর)
সেবা/শাখাশ্যাম মানেকশ’ ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী
শ্যাম মানেকশ’ ভারতীয় সেনাবাহিনী
কার্যকাল১৯৩৪–১৯৭৩, ২০০৮ (আমৃত্যু ফিল্ড মার্শাল)
পদমর্যাদাশ্যাম মানেকশ’ ফিল্ড মার্শাল
নেতৃত্বসমূহশ্যাম মানেকশ’ পূর্ব কমান্ড
শ্যাম মানেকশ’ পশ্চিম কমান্ড
শ্যাম মানেকশ’ চতুর্থ কোর
ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজ
পরিচালক, সামরিক অপারেশন
ইনফেন্ট্রি স্কুল,মাহো
শ্যাম মানেকশ’ ষোলতম পাঞ্জাব রেজিমেন্ট
৫ গুর্খা রাইফেলস
৮ গুর্খা রাইফেলস
শ্যাম মানেকশ’ বারোতম ফ্রন্টিয়ার ফোর্স‌ রেজিমেন্ট
শ্যাম মানেকশ’ রয়েল স্কাউটস
যুদ্ধ/সংগ্রামদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৪৭
ভারত-চীন যুদ্ধ
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ১৯৭১
পুরস্কারশ্যাম মানেকশ’ পদ্মবিভূষণ
শ্যাম মানেকশ’ পদ্মভূষণ
শ্যাম মানেকশ’ মিলিটারি ক্রস
স্বাক্ষরশ্যাম মানেকশ’

মানেকশ ১৯৩২ সালে ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমি, দেরাদুনে প্রথম ইনটেক যোগদান করেন। তিনি ৪র্থ ব্যাটালিয়ন, ১৩ তম ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি বীরত্বের জন্য মিলিটারি ক্রস পেয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর, তাকে ৮ গোর্খা রাইফেলসে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৪৭ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ এবং হায়দ্রাবাদ সঙ্কটের সময় মানেকশকে একটি পরিকল্পনার ভূমিকায় সমর্থন দেওয়া হয়েছিল এবং ফলস্বরূপ, তিনি কখনও পদাতিক ব্যাটালিয়নের নেতৃত্ব দেননি। সামরিক অভিযান পরিদপ্তরে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে উন্নীত হন। তিনি ১৯৫২ সালে ১৬৭ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার হয়ে সেনা সদর দফতরে সামরিক প্রশিক্ষণের পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

ইম্পেরিয়াল ডিফেন্স কলেজে উচ্চ কমান্ড কোর্স শেষ করার পর, তিনি ২৬ তম পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডিং জেনারেল অফিসার নিযুক্ত হন। ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৩ সালে, মানেকশকে সেনা কমান্ডার পদে উন্নীত করা হয় এবং ১৯৬৪ সালে ইস্টার্ন কমান্ডে স্থানান্তরিত করে ওয়েস্টার্ন কমান্ডের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি বাংলাদেশ-ভারত যৌথবাহিনীর প্রধান ছিলেন। এ যুদ্ধে যৌথ বাহিনী জয়ী হয়, পাকিস্তান ৯৩ হাজার সৈন্যসহ আত্মসমর্পণ করে। এর মাধ্যমেই পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন দেশের উত্থান ঘটে।

তিনি যথাক্রমে ভারতের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণ এবং পদ্মভূষণে ভূষিত হন।

সেনা জীবন

১৯৩৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখে শ্যাম ভারতীয় সেনা একাডেমীর মৌলিক সামরিক প্রশিক্ষণ শেষ করেন, তার সেনা কমিশন দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট হিসেবে নথিতে লিখা হয়েছিলো ১৯৩৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি। শ্যাম কমিশন পেয়েছিলেন ১২তম ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টের ৪র্থ ব্যাটেলিয়নে, কমিশন পাওয়ার পরেই তিনি তার ইউনিটে যোগ দিতে পারেননি, তাকে একটি ইংরেজ সেনাদলে (রয়্যাল স্কটস) কাজ শিখতে হয়েছিলো।

১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজিত হলে শ্যামের রেজিমেন্ট পাকিস্তান সেনাবাহিনী পেয়ে যায়, শ্যাম তখন ভারতীয় রেজিমেন্ট ৮ম গোর্খা রাইফেলসে যোগ দেবার আদেশ পান। ভারতের স্বাধীনতার আগে ১৯৪৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শ্যাম মেজর হন এবং তিনি সেনাবাহিনী সদর-দপ্তরের সামরিক অভিযান পরিদপ্তরে জেনারেল স্টাফ কর্মকর্তা ১ (জিএসও ১) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালের শেষে শ্যাম ভারপ্রাপ্ত লেঃ কর্নেল হন এবং একটি ব্যাটেলিয়নের (৫ম গোর্খা রাইফেলসের ৩য় ব্যাটেলিয়ন) অধিনায়ক হন, ১৯৫২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তাকে কর্নেল পদবীতে পদোন্নতি দিয়ে ১৬৭ ব্রিগেডের অধিনায়ক করা হয়। খুব শীঘ্রই তিনি ভারপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার হন এবং এমহাউয়ের পদাতিক বিদ্যালয়ের আদেশদানকারী প্রধান কর্মকর্তা হয়ে যান। ১৯৫৭ সালে তিনি ভারপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার থেকে প্রকৃত (স্থায়ী) ব্রিগেডিয়ার হন এবং ব্রিটেনে যান ইম্পেরিয়াল ডিফেন্স কলেজে অধ্যায়ন করতে।

দেশে ফিরে এসে ২০ ডিসেম্বর ১৯৫৭ তারিখে শ্যাম ভারপ্রাপ্ত মেজর-জেনারেল হিসেবে ২৬তম ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) নিযুক্ত হন। তখন সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল কে এস থিমাইয়া। ১৯৫৯ সালের ১ মার্চ শ্যাম স্থায়ী মেজর-জেনারেল হন এবং স্টাফ কলেজ, তামিলনাড়ুতে প্রধান (আদেশদানকারী প্রধান কর্মকর্তা বা কমান্ড্যান্ট) হিসেবে যোগ দেন।

১৯৬২ সালে শ্যাম ভারপ্রাপ্ত লেঃ জেনারেল হয়ে ৪র্থ কোরের কোর-কমান্ডার হন যেটার সদর আসাম প্রদেশের তেজপুরে ছিলো। চীনের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধের পর জেনারেল শ্যাম এই কোরের দায়িত্ব পেয়েছিলেন এবং সৈনিক সংখ্যা একেবারেই কম ছিলো এটা নিয়ে তিনি অনেক কথা বলেছিলেন তৎকালীন সেনাপ্রধানের সাথে। ১৯৬৩ সালের ২০শে জুলাই শ্যাম স্থায়ী লেঃ জেনারেল হন।

১৯৬৯ সালে জেনারেল পরমশিব প্রভাকর কুমারমঙ্গল লেঃ জেনারেল শ্যামের নাম তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলেন যে শ্যাম খুব দক্ষ একজন সেনাপ্রশাসক এবং সৈনিক; দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও তার অবদানের কথা বলা হয় যেখানে শ্যাম আহত হয়েছিলেন; সেনাপ্রধান হবার পূর্বে শ্যাম পশ্চিম সেনা কমান্ডের কমান্ডার ছিলেন। ১৯৬৯ সালের ৮ জুন ইন্দিরা গান্ধী শ্যামকে সেনাপ্রধান ঘোষণা দেন।

তথ্যসূত্র

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ


পূর্বসূরী
পরমশিব প্রভাকর কুমারমঙ্গল
সেনাবাহিনী প্রধান
১৯৬৯–১৯৭৩
উত্তরসূরী
গোপাল গুরুনাথ বেউর

Tags:

শ্যাম মানেকশ’ সেনা জীবনশ্যাম মানেকশ’ তথ্যসূত্রশ্যাম মানেকশ’ গ্রন্থপঞ্জিশ্যাম মানেকশ’ বহিঃসংযোগশ্যাম মানেকশ’ভারতীয় সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ২৭শে জুন৩রা এপ্রিল

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

উপন্যাসবাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চলজনি সিন্সব্যঞ্জনবর্ণবুধ গ্রহদোয়া কুনুতসূরা আর-রাহমানভীমরাও রামজি আম্বেদকরযোহরের নামাজভৌগোলিক আয়তন অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাইতিহাসইশার নামাজণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধানকিরগিজস্তানভারতীয় জনতা পার্টিগাজওয়াতুল হিন্দকামরুল হাসানমানুষভারতের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাজ্বীন জাতিবাংলাদেশের সংবিধানটাইফয়েড জ্বরসৌরজগৎহাদিসইসলামক্লিওপেট্রাবাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২পারমাণবিক ভরের ভিত্তিতে মৌলসমূহের তালিকাপ্রধান পাতাইউসুফন্যাটোহোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দীফেসবুকনরেন্দ্র মোদীমুহম্মদ জাফর ইকবালমাতৃভাষীর সংখ্যা অনুসারে ভাষাসমূহের তালিকাহস্তমৈথুনএইচআইভি/এইডসআরবি বর্ণমালাইসলামে যৌনতাজামালপুর জেলাবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদুরুদবাংলাদেশ পুলিশদ্বিতীয় মুরাদজানাজার নামাজচিকিৎসকবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধআলিগায়ত্রী মন্ত্রকুলম্বের সূত্রভাইরাসসিদরাতুল মুনতাহাবিদ্রোহী (কবিতা)পরীমনিইহুদিখন্দকের যুদ্ধজলাতংকজাতিসংঘকুষ্টিয়া জেলাআসিফ নজরুলভারত বিভাজনফুসফুসতিতুমীরজেলা প্রশাসকরাজশাহীআলবার্ট আইনস্টাইনলিওনেল মেসিশীর্ষে নারী (যৌনাসন)আইসোটোপবৌদ্ধধর্মের ইতিহাসব্রাহ্মী লিপিবাংলাদেশের জেলাসমূহের তালিকাহিন্দুধর্মের ইতিহাসনীল বিদ্রোহঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন🡆 More