রুশ-ইউক্রেনীয় যুদ্ধ রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি চলমান ও দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত, যা ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শুরু হয়েছিল। যুদ্ধটি ক্রিমিয়ার অবস্থা ও দনবাসের কিছু অংশকে কেন্দ্র করে ঘটে, যা আন্তর্জাতিকভাবে ইউক্রেনের অংশ হিসাবে স্বীকৃত।
রুশ-ইউক্রেনীয় যুদ্ধ | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
মূল যুদ্ধ: সোভিয়েত-পরবর্তী সংঘাত ও ইউক্রেনীয় সংকট | |||||||||
২০২২-এ ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ চলাকালীন সময়ে ৯ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত যুদ্ধাবস্থা ইউক্রেন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত রাশিয়া এবং রাশিয়াপন্থী শক্তি দ্বারা দখল করা
| |||||||||
| |||||||||
বিবাদমান পক্ষ | |||||||||
সমর্থক | | ||||||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||||||
ভ্লাদিমির পুতিন সের্গেই আক্সিয়নভ দোনেস্ক ডেনিস পুশিলিন (২০১৮ সাল হতে) দিমিত্রি ট্রাপেজনিকভ (আগস্ট-সেপ্টেম্বর ২০১৮) আলেক্সান্ডার জাখারচেঙ্কো (২০১৪-২০১৮) আলেক্সান্ডার বরোদাই (মে-আগস্ট ২০১৮) লুহানস্ক লিওনিড পাশেচনিক (২০১৭ হতে) ইগর প্লটনিটস্কি (২০১৪-২০১৭) ভ্যালেরি বলোটভ (মে-আগস্ট ২০১৪) | ভ্লদেমির জেলেনস্কি ইউরি ইলিন মিখাইলো কুতসিন ভিকটর মুঝেনকো রুসলান খমচাক পাভলো লেভিদয়েভ ইহর তেনইউখক মিখাইলো কোভাল ভ্যালেরি হেলেতে স্টিফেন পলটোরাক আন্দ্রে জাগোরোদনিউক আন্দ্রে তারান সেরহি কর্নিচুক | ||||||||
জড়িত ইউনিট | |||||||||
Airborne Troops
রুশ নৌ বাহিনী
জিআরইউ (রুশ ফেডারেশন)
টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত Donetsk People's Republicটেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত Luhansk People's Republic দোনবাসে রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী
লুহানস্ক পিপলস মিলিশিয়া
| Ukraine
Ministry of Internal Affairs (militarized component)
Security Service
Volunteer units
| ||||||||
শক্তি | |||||||||
Russia 40,000–45,000 fighters | Ukraine Armed Forces: 232,000 | ||||||||
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি | |||||||||
5,660 killed 12,500–13,500 wounded | 4,4880 killed 9,500–10,500 wounded 70 missing 2,768 captured 9,268 joined Russian forces after annexation +300 T-64 tanks | ||||||||
3,350 civilians killed; over 7,000 wounded 13,000–13,2000 killed; 29,000–31,000 wounded overall |
ইউরোমাইদান বিক্ষোভ ও ২২শে ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের অপসারণ এবং ইউক্রেনে রাশিয়াপন্থী অস্থিরতার মধ্যে, পরিচয়চিহ্ন ছাড়াই রাশিয়ান সৈন্যরা ক্রিমিয়ার ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের মধ্যে কৌশলগত অবস্থান ও অবকাঠামোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। রাশিয়া ফেডারেশনের ফেডারেশন কাউন্সিলে ২০১৪ সালের ১লা মার্চ সর্বসম্মতভাবে ইউক্রেনে সামরিক শক্তি ব্যবহার করার জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনকে আবেদন করার একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। রেজোলিউশনটি "ক্রিমিয়া প্রত্যাবর্তন"-এ রুশ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার বেশ কয়েক দিন পরে গৃহীত হয়েছিল। ক্রিমিয়ার পার্লামেন্ট দখলের পর রাশিয়া কর্তৃক আয়োজিত ব্যাপকভাবে সমালোচিত স্থানীয় গণভোটের পর রাশিয়া ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করে, যেখানে স্বায়ত্তশাসিত ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্রের জনগণ রুশ ফেডারেশনে যোগদানের পক্ষে ভোট দেয়। এপ্রিল মাসে, ইউক্রেনের দোনবাস এলাকায় রাশিয়াপন্থী গোষ্ঠীসমূহের বিক্ষোভ ইউক্রেন সরকার এবং স্ব-ঘোষিত দোনেস্ক ও লুহানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধে পরিণত হয়। আগস্ট মাসে, রুশ সামরিক যান দোনেৎস্ক ওব্লাস্টের বিভিন্ন স্থানে সীমান্ত অতিক্রম করে। রুশ সামরিক বাহিনীর অনুপ্রবেশকে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে ইউক্রেনীয় বাহিনীর পরাজয়ের কারণ হিসেবে দেখা হয়।
ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্নতাবাদী-নিয়ন্ত্রিত অংশে রাশিয়া থেকে সৈন্য ও সরঞ্জামের নিবিড় চলাচলের কথা জানায়। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ৪০ টি অচিহ্নিত সামরিক যানবাহনের খবর প্রদান করে। অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইন ইউরোপ (ওএসসিই) বিশেষ পর্যবেক্ষণ মিশনে ডিপিআর-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় চিহ্ন ছাড়াই ভারী অস্ত্র ও ট্যাঙ্কের কনভয় পর্যবেক্ষণ করেছে। ওএসসিই মনিটররা আরও বলেছে, যে তারা গোলাবারুদ পরিবহনকারী যানবাহন এবং মানবিক সাহায্যকারী কনভয়ের ছদ্মবেশে সৈন্যদের মৃতদেহ রাশিয়া-ইউক্রেনীয় সীমান্ত অতিক্রম করতে দেখেছে। ওএসসিই ২০১৫ সালের আগস্ট মাসের প্রথম দিকে ২১ টিরও বেশি যানবাহনকে পর্যবেক্ষণ করেছে, যা কর্মে নিহত সৈন্যদের জন্য রুশ সামরিক কোড দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে। দ্য মস্কো টাইমস-এর মতে, রাশিয়া সংঘাতে রুশ সৈন্যদের মৃত্যুর বিষয়ে আলোচনা করার মাধ্যমে মানবাধিকার কর্মীদের ভয় দেখানো ও নীরব করার চেষ্টা করেছে। ওএসসিই বারবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যে তাদের পর্যবেক্ষকদের "সম্মিলিত রুশ-বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী" দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশাধিকার অস্বীকার করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো সংস্থাসমূহ বিপ্লব-পরবর্তী ইউক্রেনে রাশিয়ার ক্রিয়াকলাপের জন্য নিন্দা করেছে, এটিকে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ ও ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত করেছে। অনেক রাষ্ট্র রাশিয়া, রুশ ব্যক্তি বা কোম্পানির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে খবর করেছে, যে রাশিয়া সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি বাশার আল-আসাদকে সমর্থন করার জন্য ইউক্রেন থেকে সিরিয়ায় তার কিছু অভিজাত ইউনিটকে পুনরায় মোতায়েন করেছে। ইউক্রেনে রুশ সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কার্যক্রম পরিচালনার কথা রুশ ফেডারেশনের রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বীকার করেছেন, যদিও তিনি জোরের সঙ্গে বলেছিলেন যে তারা নিয়মিত সৈন্যদের মতো নয়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত, ইউক্রেনের ভূখণ্ডের ৭% দখলের অধীনে রয়েছে।
রুশ বিপ্লবের বহু আগে ইউক্রেনে জারের শাসন চলাকালীন ইউক্রেনীয়দের জাতীয়তাবাদ এবং স্বতন্ত্র পরিচয়ের রাজনীতি রাশিয়ায় নানা সমস্যা তৈরি করে। ১৯০৩ সালে রাশিয়ার সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা মেনশেভিক ও বলশেভিক-এ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ১৯০৫ সালে রাশিয়ায় প্রথম যে বিপ্লব ঘটে, তার ফলে রুশ জার দ্বিতীয় নিকোলাইয়ের পতন ঘটে। এরপর বলশেভিক এবং অক্টোবর বিপ্লবের সমন্বয়ে ১৯১৭ সালে আরেকটি বিপ্লব ঘটে, যার নামও রুশ বিপ্লব ( Russian Revolution)। এই বিপ্লবের মধ্যেই ১০ জুন ১৯১৭ ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের এক বড় অংশ রাশিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীন ইউক্রেন প্রজাতন্ত্রের ঘোষণা দেয়। ২৫ অক্টোবর ১৯১৭ (পুরোনো বর্ষপঞ্জির হিসেবে) আর নতুন গ্রেগোরিয়ান নিয়মে ৭ নভেম্বর ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টি বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়ায় জার শাসনের অবসান হয়। তার নেতৃত্বাধীন সোভিয়েত স্বাধীন ইউক্রেন গঠনের চেষ্টাকে দমন করে ইউক্রেনের বেশির ভাগ ভূখণ্ডই সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। অন্যদিকে পশ্চিম ইউক্রেনের কিছু অংশ পোল্যান্ড, চেকোশ্লোভাকিয়া আর রোমানিয়ার মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়। ৩০ ডিসেম্বর ১৯২২ ইউক্রেন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাত সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। অবশেষে সাত দশকেরও বেশি সময় পর সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার মধ্যে দিয়ে ১৯৯১ সালে জন্ম হয় স্বাধীন ইউক্রেন রাষ্ট্রের। ২৪ আগস্ট ইউক্রে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। - ডিসেম্বর ১৯৯১ অনুষ্ঠিত এক গণভোটে জনগণ স্বাধীনতার পক্ষে রায় দেয়।
এটি একটি হাইব্রিড যুদ্ধ
যুদ্ধের সাথে মানবাধিকার লঙ্ঘনও হয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত, ৩,০০০ এরও বেশি বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের আন্দোলনের অধিকার বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article রুশ-ইউক্রেনীয় যুদ্ধ, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.