বিজমার্ক, নর্থ ডাকোটা

বিজমার্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ও বার্লেই কাউন্টির সদর দপ্তর। এটি জনসংখ্যায় নর্থ ডাকোটার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। ২০১৯ সালে এর প্রাক্কলিত জনসংখ্যা ৭৩,৫২৯। ২০১৯ সালে ফোর্বস একে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম দ্রুত বর্ধনশীল ক্ষুদ্র শহর হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

বিজমার্ক, নর্থ ডাকোটা
বিজমার্ক, নর্থ ডাকোটা

১৮৭২ সালে মিসৌরি নদীর পূর্ব তীরে ইউরোপীয়-আমেরিকানরা বিজমার্ক শহর প্রতিষ্ঠা করেন। ডাকোটা ভূখণ্ড ১৮৮৯ সালে ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সময় থেকেই বিজমার্ক নর্থ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের রাজধানী। বিজমার্ক শহর নদীর যে পাড়ে অবস্থিত, তার উল্টো পাড়ে মেন্ডেন শহর অবস্থিত। বিজমার্ক ও মেন্ডেন শহর একত্রে বিজমার্ক-মেন্ডেন মেট্রোপলিটন এলাকা গঠন করে।

মধ্য-বিজমার্ক এলাকায় রাজ্য ক্যাপিটল ভবন অবস্থিত, যেটি শহরের উচ্চতম ভবন। রাজ্য সরকারে শহরের প্রায় ৪,৬০০ বাসিন্দা কাজ করে। এটি মধ্য-দক্ষিণ নর্থ ডাকোটার অর্থনৈতিক কার্যক্রমের কেন্দ্র।

ইতিহাস

হাজার বছর ধরে ডাকোটা ভূখণ্ডে আমেরিকান আদিবাসীরা বসবাস করত। ইউরোপীয়দের আগমনের পূর্বে মেন্ডেনরা বিজমার্ক এলাকায় বসবাস করত। হিদাস্তা ভাষায় বিজমার্ককে বলা হয় "মিরাহাসি আরামাগুস", যার অর্থ লম্বা উইলোর ভূমি। আরিকারা ভাষায় এর নাম ইতুহাতওয়ে।

১৮৭২ সালে ইউরোপীয় আমেরিকানরা "মিসৌরি ক্রসিং" এলাকায় বসতি স্থাপন করেন। বিখ্যাত অভিযাত্রী লুইস ও ক্লার্ক লুইজিয়ানা ক্রয়ের সময় মিসৌরি নদী অতিক্রম করেছিলেন। তাদের সম্মানার্থে জায়গাটির নাম হয় "মিসৌরি ক্রসিং।" উত্তরাঞ্চলের প্রশান্ত মহাসাগরীয় রেলসড়কের প্রধান প্রকৌশলী এডউইন ফেরি জনসনের নামানুসারে শহরটির নাম হয় এডউইনটন। এখানে রেলসড়কের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় বিপুল পরিমাণে অভিবাসী আগমন করতে শুরু করে।

১৮৭৩ সালে জার্মান চ্যান্সেলর অটো ফন বিজমার্কের নামানুসারে শহরটির নাম হয় বিজমার্ক। এটি বিদেশি রাজনীতিকের নামে নামকরণ হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র রাজ্য-রাজধানী। রেলসড়কের কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন, এতে জার্মানি থেকে আগত অভিবাসী শ্রমিকরা যেমন রেলসড়ক নির্মাণকাজে অংশগ্রহণ করবে, তেমনি জার্মান বিনিয়োগ-ও বৃদ্ধি পাবে। নিকটবর্তী সাউথ ডাকোটার ব্ল্যাক পাহাড়ে সোনা আবিষ্কৃত হলে বিজমার্কের দ্রুত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটে। হাজারো খনিশ্রমিক এখানে আগমন করে। স্থানীয় লাকুটা আদিবাসীরা একে পবিত্র ভূমি বিবেচনা করত, যার দরুন খনিশ্রমিকদের আগমনকে তারা স্বাভাবিকভাবে নেয়নি। এর ফলে ইউরোপীয় ও আদিবাসী আমেরিকানদের মধ্যে সংঘাত উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। বিজমার্ক শহর সাউথ ডাকোটার স্বর্ণ পরিবহনের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে। ১৮৮৩ সালে এটি ডাকোটা ভূখণ্ডের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ১৮৮৯ সালে বিজমার্ককে সাউথ ডাকোটার রাজধানী ঘোষণা করা হয়।

ভূগোল

আদমশুমারি ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী বিজমার্ক শহরের আয়তন ৩১.২৩ বর্গমাইল। এর ৩০.৮৫ বর্গমাইল স্থল ও ০.৩৮ বর্গমাইল জল।

এখানকার প্রধান বিক্রয়কেন্দ্র কার্কউড মল শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এছাড়াও শহরের কেন্দ্রে সেন্ট আলেক্সাস মেডিকেল সেন্টার ও স্যানফোর্ড হেলথ নামক দুটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নগরকেন্দ্রের উত্তরেই ২৪১.৭৫ ফুট উঁচু ১৯-তলা ক্যাপিটল ভবন অবস্থিত।

বিজমার্কের ক্যাথেড্রাল এলাকায় এমন অনেক বাড়ি অবস্থিত, যেগুলো ১৮৮০-র দশকে নির্মিত হয়েছিল।

১৯৫৩ সালে সেনাবাহিনীর প্রকৌশলী কর্পস মিসৌরি নদীর বন্যানিয়ন্ত্রণের জন্য এখানে গ্যারিসন বাঁধ নির্মিত হয়।

জলবায়ু

বিজমার্কের জলবায়ু আর্দ্র মহাদেশীয় ধরনের। এখানে চারটি ঋতু দেখা যায়। শীতকাল ঠাণ্ডা ও শুষ্ক, কিন্তু গ্রীষ্মকাল উষ্ণ ও আর্দ্র। গ্রীষ্মকাল ও বসন্তকালে প্রায়ই বজ্রপাত হয়।

জুলাই বিজমার্কের উষ্ণতম মাস। এ সময় গড় তাপমাত্রা থাকে ৭১ ডিগ্রি ফারেনহাইট। জানুয়ারি মাস শীতলতম- এসময় গড় তাপমাত্রা থাকে ১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট। মে থেকে সেপ্টেম্বর মাসে বিজমার্কে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়।

জনমিতি

২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বিজমার্কের জনসংখ্যা ৬১,২৭২। এখানে ১৫,৬২৪টি পরিবার বসবাস করে। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৭৬৬.৮ জন। বাসিন্দাদের ৯২.৪% শ্বেতাঙ্গ, ০.৭% আফ্রিকান আমেরিকান, ৪.৫% আদিবাসী আমেরিকান ও ০.৬% এশীয়। বাসিন্দাদের ১.৩% হিস্পানিক অথবা লাতিনো।

শহরের পরিবারগুলোর গড় আয় ৫১,৪৭৭ ডলার। পুরুষদের গড় আয় ৩৩,৮০৪ ডলার ও নারীদের গড় আয় ২২,৬৪৭ ডলার। ৫.৭% পরিবার ও ৮.৪% বাসিন্দা দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। এদের ৯.৫% এর বয়স ১৮ এর নিচে ও ৭.৪% এর বয়স ৬৫ এর সমান বা বেশি।

তথ্যসূত্র

Tags:

বিজমার্ক, নর্থ ডাকোটা ইতিহাসবিজমার্ক, নর্থ ডাকোটা ভূগোলবিজমার্ক, নর্থ ডাকোটা জনমিতিবিজমার্ক, নর্থ ডাকোটা তথ্যসূত্রবিজমার্ক, নর্থ ডাকোটানর্থ ডাকোটা

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

হরমোনমুসাভাইরাসকলমদ্বিপদ নামকরণজিয়াউর রহমানডিজেল গাছঅন্নপূর্ণা (দেবী)অতিপ্রাকৃত কাহিনীবিভিন্ন ধর্ম ও বিশ্বাসের তালিকারক্তপৃথিবীর বায়ুমণ্ডলসহীহ বুখারীপরীমনিবঙ্গাব্দফ্রান্সের ষোড়শ লুইএ. পি. জে. আবদুল কালামললিকনলোহাআলীস্টার জলসামৌলিক সংখ্যাবাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মরত জেনারেলদের তালিকাতারেক রহমানখাদ্যলিঙ্গ উত্থান ত্রুটিপায়ুসঙ্গমজননীতিসৌরজগৎকুলম্বের সূত্রসুরেন্দ্রনাথ কলেজবাংলাদেশ ব্যাংকগঙ্গা নদী৮৭১বেল (ফল)ব্রিটিশ রাজের ইতিহাসঢাকা বিভাগভেষজ উদ্ভিদআল্লাহর ৯৯টি নামবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীস্নায়ুতন্ত্রযিনাসালেহ আহমদ তাকরীমঅনুসর্গস্কটল্যান্ডসূর্য সেনমোবাইল ফোনআয়িশাইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মাদ বিন বখতিয়ার খলজিপল্লী সঞ্চয় ব্যাংকআদমতুরস্কলালনবাংলাদেশের উপজেলাহামবাংলাদেশের ইতিহাসফরাসি বিপ্লবহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরইক্বামাহ্‌পানিসোডিয়াম ক্লোরাইডহা জং-উদারুল উলুম দেওবন্দ০ (সংখ্যা)২০২০-২৩ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগসিরাজগঞ্জ জেলাঅন্নপূর্ণা পূজাআহল-ই-হাদীসগনোরিয়ালিটন দাসবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ইস্তেখারার নামাজহিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমাবর্ষণসূরা বাকারাব্রিটিশ ভারতনামাজের নিয়মাবলী🡆 More