বাংলাদেশের জনসংখ্যা ২০২২ জনশুমারি অনুযায়ী জুন, ২০২২ পর্যন্ত বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬,৫১,৫৮,৬১৬ ( ১৬ কোটি ৫১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন)।এটি বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ। এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১,১১৯ জন, যা সারা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ (কিছু দ্বীপ ও নগর রাষ্ট্র বাদে)। এখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৭% । বাংলাদেশে পুরুষ ও নারীর অনুপাত ১০০.৩:১০০। দেশের অধিকাংশ মানুষ শিশু ও তরুণ বয়সী (০–২৫ বছর বয়সীরা মোট জনসংখ্যার ৬০%, ৬৫ বছরের বেশি বয়সীরা মাত্র ৬%)। এখানকার পুরুষ ও মহিলাদের গড় আয়ু ৭২.৩ বছর। জাতিগতভাবে বাংলাদেশের ৯৮% মানুষ বাঙালি। বাকি ২% মানুষ বিহারী বংশদ্ভুত, অথবা বিভিন্ন উপজাতির সদস্য। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় ১৩টি উপজাতি রয়েছে। এদের মধ্যে চাকমা উপজাতি প্রধান। পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরের উপজাতি গুলোর মধ্যে গারো ও সাঁওতাল উল্লেখযোগ্য। দেশের ৯৮% মানুষের মাতৃভাষা বাংলা, যা বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা। সরকারি কাজ কর্মে ইংরেজিও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে ১৯৮৭ সাল হতে কেবল বৈদেশিক যোগাযোগ ছাড়া অন্যান্য সরকারি কর্মকান্ডে বাংলা ভাষাকে প্রাধান্য দেয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর প্রধান ধর্মবিশ্বাস ইসলাম (৯০.৪%)। এরপরেই রয়েছে হিন্দু ধর্ম(৮.৫%), বৌদ্ধ (০.৬%), খ্রীস্টান (০.৩%) এবং অন্যান্য (০.১%)।মোট জনগোষ্ঠীর ২১.৪% শহরে বাস করে, বাকি ৭৮.৬% গ্রামাঞ্চলের অধিবাসী। সরকারী ও বেসরকারী উন্নয়ন কর্মকান্ডের ফলে দারিদ্র বিমোচন ও জনসাস্থ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের জনসংখ্যার এক বিশাল অংশ দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক দৈনিক মাত্র ১ মার্কিন ডলার আয় করে (২০০৫)। আর্সেনিক জনিত বিষক্রিয়া বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এছাড়া বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। ২০১৭ এর পরে এরোগ আর দেখা য়ায় না বলেই চলে। ২০০৫ সালের হিসাবে বাংলাদেশে স্বাক্ষরতার হার প্রায় ৪১%। ইউনিসেফের ২০০৪ সালের হিসাবে পুরুষদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হার ৫০% এবং নারীদের মধ্যে ৩১%। তবে সরকারের নেয়া নানা কর্মসূচীর ফলে দেশে শিক্ষার হার বাড়ছে। এর মধ্যে ১৯৯৩ সালে শুরু হওয়া শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচী সবচেয়ে বেশি সাফল্য অর্জন করেছে। এছাড়া মেয়েদের শিক্ষার জন্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে বৃত্তি প্রদান কর্মসূচী নারীশিক্ষাকে এগিয়ে নিচ্ছে।
এই নিবন্ধটি মেয়াদোত্তীর্ণ। |
বাংলাদেশের জনমিতি | |
---|---|
জনসংখ্যা | 20৫,৭০০,০০০ (২০১৯ প্রাক্কলন) (৮ম) |
বৃদ্ধিহার | ১.৩৭% (২০১৮ প্রাক্কলন) (১০৫তম) |
জন্মহার | ১৮.৩ জন্ম/১,০০০ জনে (২০১৮ প্রাক্কলন) |
মৃত্যুহার | ৫.০ মৃত্যু/১,০০০ জনে (২০১৮ প্রাক্কলন) |
গড় আয়ু | ৭২.৩ বছর (২০১৮ প্রাক্কলন) |
• পুরুষ | ৭০.৮ বছর (২০১৮ প্রাক্কলন) |
• মহিলা | ৭৩.৮ বছর (২০১৮ প্রাক্কলন) |
গর্ভহার | ২.০৫ শিশুজন্ম/নারী (২০১৮ প্রাক্কলন) (৯৮তম) |
শিশুমৃত্যু হার | ২২ মৃত্যু/১,০০০ জন্মে (২০১৮ প্রাক্কলন) |
বয়স গঠন | |
০-১৪ বছর | ২৭.২৯% (পুরুষ ২২,১৩৫,৩৪৯/মহিলা ২১,৩৭৩,৪৭০) (২০১৮ প্রাক্কলন) |
১৫-৬৪ বছর | ৬৬.৩% (পুরুষ ৫১,৫২২,১২৯/মহিলা ৫৪,১৮৪,৯৬৩) (২০১৮ প্রাক্কলন) |
৬৫ বছর-তদুর্ধ্ব | ৬.৪২% (পুরুষ ৪,৮৪৪,৬১২/মহিলা ৫,৩৯২,৪৭৮) (২০১৮ প্রাক্কলন) |
লিঙ্গানুপাত | |
জন্মকালে | ১.০৪ পুরুষ/মহিলা (২০১৮ প্রাক্কলন) |
অনুর্ধ্ব ১৫ | ১.০৪ পুরুষ/মহিলা (২০১৮ প্রাক্কলন) |
১৫-৬৪ বছর | ০.৯৭ পুরুষ/মহিলা (২০১৮ প্রাক্কলন) |
৬৫-তদুর্ধ্ব | ০.৯০ পুরুষ/মহিলা (২০১৮ প্রাক্কলন) |
জাতীয়তা | |
প্রধান জাতিগোষ্ঠী | ৯৮% বাঙালি, ২% অন্যান্য |
ভাষা | |
সরকারি | বাংলা |
বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম জনবহুল দেশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৯ সালের উপাত্ত অনুযায়ী যা ১৮ কোটি ৫৭ লাখ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো দ্বারা সর্বশেষতম দশকের জনশুমারিটি পরিচালিত হয়েছিলো ২০২২ সালে।
জনগণনার তারিখ | জনগণনায় প্রাপ্ত জনসংখ্যা (মিলিয়ন) | সমন্বিত জনসংখ্যা (মিলিয়ন) |
---|---|---|
১৮০১ | ১৪.৫ | |
১৮৫১ | ২০.৩ | |
১৯০১ | ২৮.৯২৮ | |
১৯১১ | ৩১.৫৫৫ | |
১৯২১ | ৩৩.২৫৫ | |
১৯৩১ | ৩৫.৬০২ | |
১৯৪১ | ৪১.৯৯৭ | |
১৯৫১ | ৪১.৯৩২ | |
১৯৬১ | ৫০.৮৪০ | |
১৯৭৪ | ৭১.৪৭৯ | ৭৬.৩৯৮ |
১৯৮১ | ৮৭.১২০ | ৮৯.৯১২ |
১৯৯১ | ১০৬.৩১৩ | ১১১.৪৫৫ |
২০০১ | ১২৪.৩৫৫ | ১৩০.৫২৩ |
১৫ মার্চ ২০১১ | ১৪২.৩১৯ | ১৫২.৫১৮ |
মোট জনসংখ্যা (মিলিয়ন) | বয়ঃভিত্তিক জনসংখ্যা ০–১৪ (%) | বয়ঃভিত্তিক জনসংখ্যা ১৫–৬৪ (%) | বয়ঃভিত্তিক জনসংখ্যা ৬৫+ (%) | |
---|---|---|---|---|
১৯৫০ | ৩৭.৮৯৫ | ৪১.২ | ৫৪.৮ | ৩.৯ |
১৯৫৫ | ৪৩.৪৪৪ | ৪২.৪ | ৫৪.১ | ৩.৫ |
১৯৬০ | ৫০.১০২ | ৪৩.৬ | ৫৩.১ | ৩.৩ |
১৯৬৫ | ৫৭.৭৯২ | ৪৪.৭ | ৫২.০ | ৩.৩ |
১৯৭০ | ৬৬.৮৮১ | ৪৪.৭ | ৫১.৮ | ৩.৪ |
১৯৭৫ | ৭০.৫৮২ | ৪৫.৮ | ৫০.৭ | ৩.৫ |
১৯৮০ | ৮০.৬২৪ | ৪৫.০ | ৫১.৪ | ৩.৬ |
১৯৮৫ | ৯২.২৮৪ | ৪৩.৯ | ৫২.৫ | ৩.৬ |
১৯৯০ | ১০৫.২৫৬ | ৪২.৫ | ৫৩.৮ | ৩.৭ |
১৯৯৫ | ১১৭.৪৮৭ | ৪০.৩ | ৫৫.৯ | ৩.৮ |
২০০০ | ১২৭.৬৫৮ | ৩৭.০ | ৫৯.২ | ৩.৯ |
২০০৫ | ১৩৯.০৩৬ | ৩৪.৪ | ৬১.৩ | ৪.৩ |
২০১০ | ১৪৭.৫৭৫ | ৩২.০ | ৬৩.২ | ৪.৮ |
২০১৫ | ১৫৬.২৫৬ | ২৯.৩ | ৬৫.৬ | ৫.১ |
২০২০ | ১৬৪.৬৮৯ | ২৬.৮ | ৬৮.০ | ৫.২ |
গত ১৯৬০ এবং ১৯৭০ এর দশকে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অনেক বেশি ছিলো। কিন্তু তার পরবর্তী সময়ে এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস পেতে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা জরিপ ২০২০ অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৮৬,৮৯৩,৮৩০ জন এবং দেশের আয়তন ১,৪৮,১৭০ km2। বড় দেশগুলির মধ্যে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১২৬৫ জন লোক বাস করে।
বাংলাদেশের বৃহত্তম শহর ঢাকাসহ (রাজধানী) দেশের সব বড় বড় মেগাসিটিগুলোতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ বসবাস করলেও এখনও এদেশের বেশিরভাগ মানুষ গ্রামাঞ্চলে বাস করে।
২০১৯ এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাক্ষরতার হার ৭৪.৭০ শতাংশ। তার মধ্যে ৭৬.৬৭ শতাংশ পুরুষ ও ৭১.৯৫ শতাংশ নারী।
বাংলাদেশের মূল শিক্ষা ব্যবস্থাটি তিন স্তরে বিভক্ত:
বাংলাদেশের বিদ্যালয়ের সকল স্তরে শিক্ষার্থীরা ইংরেজি বা বাংলা ভাষায় তাদের শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। বেসরকারী স্কুলগুলিতে ইংলিশ-ভিত্তিক অধ্যয়ন মিডিয়া ব্যবহার করার ঝোঁক রয়েছে যখন সরকারি পৃষ্ঠপোষক স্কুলগুলি বাংলা ব্যবহার করে।
ক্যাডেট কলেজবাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যাডেট কলেজগুলো মূলত বাংলাদেশ মিলিটারি দ্বারা পরিচালিত হয়। সমস্ত ক্যাডেট কলেজগুলিতে শৃঙ্খলা বাধ্যতামূলক। ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ ১৯৫৮ সালে চট্টগ্রাম জেলার ফৌজদারহাট এ প্রতিষ্ঠাকৃত বাংলাদেশের প্রথম ক্যাডেট কলেজ। বর্তমানে বাংলাদেশে ১২ টি ক্যাডেট কলেজ রয়েছে যার মধ্যে তিনটি মেয়েদের জন্য । এছাড়া উচ্চ শিক্ষার জন্য বাংলাদেশে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ৪৪ টি সরকারী, ১০১ টি বেসরকারী এবং ০৩ আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
সময়কাল | সম্ভব আয়ুষ্কাল (বছর) | সময়কাল | সম্ভব আয়ুষ্কাল (বছর) |
---|---|---|---|
১৯৫০–১৯৫৫ | ৪০.৭ | ১৯৮৫–১৯৯০ | ৫৭.০ |
১৯৫৫–১৯৬০ | ৪৪.২ | ১৯৯০–১৯৯৫ | ৬০.০ |
১৯৬০–১৯৬৫ | ৪৭.২ | ১৯৯৫–২০০০ | ৬৩.৭ |
১৯৬৫–১৯৭০ | ৪৯.৩ | ২০০০–২০০৫ | ৬৬.৭ |
১৯৭০–১৯৭৫ | ৪৬.৩ | ২০০৫–২০১০ | ৬৯.১ |
১৯৭৫–১৯৮০ | ৫২.২ | ২০১০–২০১৫ | ৭১.২ |
১৯৮০–৯৮৫ | ৫৪.৩ |
উৎস : জাতিসংঘ বিশ্ব জনসংখ্যা সম্ভাবনা রিপোর্ট
প্রবণতার হার = ২০০১ সাল : ০.১% এর কম (প্রাপ্তবয়স্ক, বিশ্বে ১০২ তম); ২০১৪ সাল : ০.০১%
এইচআইভি/এইডস্ রোগ নিয়ে বেচে থাকা ব্যক্তির সংখ্যা = ২০০৭ সাল : ১২,০০০ (বিশ্বে ৮৫ তম)
এইচআইভি/এইডস্ রোগে মৃত ব্যক্তির সংখ্যা = ২০০৭ সাল : ৫০০ জনের কিছু কম (বিশ্বে ৮৭ তম); ২০১৪ সাল : প্রায় ৭০০ জন
বাংলাদেশের প্রধান ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির জনসংখ্যা প্রবণতা(১৯৫১–২০২২)
ধর্মীয় গোষ্ঠী | জনসংখ্যা % ১৯৫১. | জনসংখ্যা % ১৯৬১ | জনসংখ্যা % ১৯৭৪ | জনসংখ্যা % ১৯৮১ | জনসংখ্যা % ১৯৯১ | জনসংখ্যা % ২০০১ | জনসংখ্যা % ২০১১ | জনসংখ্যা % ২০২২ |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ইসলাম | ৭৮.৯% | ৮০.৪% | ৮৫.৪% | ৮৬.৬% | ৮৮.৩% | ৮৯.৭% | ৯০.৩৯% | ৯১.০৪% |
হিন্দু | ২২% | ১৮.৫% | ১৩.৫% | ১২.১% | ১০.৫% | ৯.২% | ৮.৩% | ৭.৯৫% |
বৌদ্ধ | ০.৭% | ০.৭% | ০.৬% | ০.৬% | ০.৬% | ০.৭% | ০.৬% | ০.৬১% |
খ্রিস্টান | ০.৩% | ০.৩% | ০.২% | ০.৩% | ০.৩% | ০.৩% | ০.৪% | ০.৩০% |
অন্যান্য ধর্ম/নাস্তিক | ০.১% | ০.১% | ০.২% | ০.৩% | ০.৩% | ০.১% | ০.১% | ০.১২% |
ধর্ম | জনসংখ্যা |
---|---|
মুসলিম | ১৩৫,৩৯৪,২১৮ |
হিন্দু | ১২,৭৩০,৬৫১ |
বৌদ্ধ | ৮৯৮,৬৩৫ |
খ্রিস্টান | ৫৯৯,০৯০ |
অন্যান্য/নাস্তিক | ১৪৯,৭৭০ |
২০১১ এর আদমশুমারী অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৪৯,৭৭২,৩৬৪ জন।
বাংলাদেশের বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ নৃ-ভাষাতাত্বিক গোষ্ঠী হচ্ছে বাঙালি (প্রায় ৯৮.৫ %)। মূলত বাঙ্গালি জাতিগোষ্ঠির জন্যই এই দেশটির নামকরণ হয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালিরা বাংলাদেশেই বসবাস করে। বাংলাদেশর পাশাপাশি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশেও বিপুল সংখ্যক বাঙ্গালি জাতিগোষ্ঠি বসবাস করে,তাছাড়া ভারত'র আসাম ও ত্রিপুরা প্রদেশেও বেশকিছু সংখ্যক বাঙ্গালি বসবাস করে।
বাঙ্গালি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ ছাড়াও আরো বেশকিছু ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক গোষ্ঠীর মানুষও বাংলাদেশে বসবাস করে। তাদের মধ্যে গারো, চাকমা, রাখাইন, মারমা, মাইতি, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, সান্থালস, বিহারি, ওরাওস, মুন্ডা এবং রোহিঙ্গা অন্যতম।
পার্সিয়ান এবং ইরানি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ বহুযুগ আগে থেকেই বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলে বসবাস করে আসছে, তারা বিভিন্ন ব্যবসায় কাজে চট্টগ্রামে এসে এখানেই বসতি স্থাপন করে। এরা ছাড়াও বিপুল সংখ্যক পাকিস্তানিও এই অঞ্চলে বসবাস করে, মূলত ১৯৪৮ সালের পাক-ভারত বিভাজনের পর দীর্ঘ ২৩ বছর এই বাংলাদেশের মাটিতে পাকিস্তান আধিপত্যের সময়ই তারা এখানে এসে বসতি স্থাপন করে। কালের প্রবাহে এইসব ইরানি ও পাকিস্তানিরা চট্টগ্রামের সমাজ ব্যবস্থার সাথে মিশে গেছে এবং চাটগাঁইয়া সংস্কৃতি ধারণ করেছে এবং প্রভাবিত করেছে।
বিহারীরা হচ্ছে উর্দুভাষী, অবাঙালি যারা বিহার রাজ্য এবং উত্তর ভারতের অন্যান্য অংশ থেকে ১৯৪৭ সালের ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্তির সময় চলে এসেছিলো তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) - এ । এরা মূলত ঢাকা এবং রংপুর অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন করে। এদের সংখ্যা প্রায় ৩০০,০০০। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের অনেকেই পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো, কারণ তারা সমাজের উচ্চ স্তরের অবস্থান হারাতে চায়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর কয়েক লক্ষ মানুষ পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছিলো এবং যারা রয়ে গিয়েছিলো তাদের শরণার্থী শিবিরে বন্দি করা হয়। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান সরকার কর্তৃক তাদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করায় আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংগঠন তাদের "অবহেলিত ও রাষ্ট্রহীন" বলে অভিহিত করেছে। বাংলাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী হয়েছে, এই শিবিরগুলিতে বিহারীদের দুই প্রজন্মের জন্মও হয়েছে, কিন্তু তারা পাকিস্তান ফিরে যেতে পারেনি। নির্দিষ্ট সংখ্যক বিহারিদের ২০০৮ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এবং ভোটাধিকার দেওয়া হয়েছিলো।
১৯৮১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশে বসবাসরত উপজাতির সংখ্যা প্রায় ৮৯৭,৮২৮ জন। এই উপজাতিগুলি পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহ, সিলেট এবং রাজশাহী’র আশেপাশের অঞ্চলে বসবাস করে। তারা চীন-তিব্বতি বংশোদ্ভুত এবং তাদের সামাজিক, ধর্মীয়, ভাষা এবং বিকাশের রীতিনীতি ও স্তর উল্লেখযোগ্যভাবে পৃথক। তারা তিব্বতি-বর্মণ ভাষাতে কথা বলে এবং বেশিরভাগ বৌদ্ধ বা হিন্দু ধর্মাম্বলি। বাংলাদেশের চারটি বৃহত্তম উপজাতি হলো চাকমা, মারমা, টিপ্পেরাস, তঞ্চঙ্গ্যা এবং ম্রোস।এছাড়া রাজশাহী এবং দিনাজপুরে সাঁওতাল, ময়মনসিংহ এবং সিলেট অঞ্চলে খাসিয়া, গারো এবং খাজোনরা বসবাস করে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে কক্সবাজারের কাছে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদান করা হয়েছে ।
জাতিসংঘরে মতে, বাংলাদেশে ১,৫০০,৯২১ জন আন্তর্জাতিক অভিবাসী রয়েছে ২০১৭ এর হিসাব অনুযায়ী।
বাংলাদেশে আগত অভিবাসীরা সাধারণত সবচেয়ে বেশি যে দেশগুলো থেকে এসেছে সেগুলি হলো :
বাংলাদেশে ২০১৭ সালের আন্তর্জাতিক অভিবাসী | |
---|---|
মিয়ানমার | ২৩৯,৭৪২ |
মালয়েশিয়া | ২০৮,৪০৬ |
চীন | ১৬৬,৬৪৬ |
ইন্দোনেশিয়া | ১৫৬,৫০০ |
লাওস | ৯০,২৫৩ |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ৪৭,১০৩ |
নেপাল | ৩৯,৯৮৮ |
ভারত | ৩৫,২৫০ |
গ্রেট ব্রিটেন | ৩৪,২৬৬ |
বাহরাইন | ৩০,৮৭৭ |
ভিয়েতনাম | ২৮৮,১৭৬ |
কম্বোডিয়া | ২০,১০৯ |
একই সাথে,জাতিসংঘ ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রবাসী হিসাবে বিদেশে যাওয়া লোকের সংখ্যাও গণনা করেছে । ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রবাসী হিসাবে ৪,৪৯৯,৯৯৯ জন ব্যাক্তি বিদেশে গমন করেছে ।
বাংলাদেশী প্রবাসীরা সাধারণত সবচেয়ে বেশি যে দেশগুলিতে বসবাস করছে সেগুলি হলো :
২০১৭ সালের আন্তর্জাতিক বাংলাদেশী প্রবাসী | |
---|---|
সৌদি আরব | ১,৩৭৭,০৭২ |
সংযুক্ত আরব আমিরাত | ১,০৪৪,৫০৫ |
কুয়েত | ৩৮১,৬৬৯ |
মালয়েশিয়া | ৩৬৫,৬০০ |
ওমান | ২৭৬,৫১৮ |
গ্রেট ব্রিটেন | ২২৮,৩৫৩ |
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | ২৭৯,০২১ |
কাতার | ১৮৩,৩৮৬ |
ইতালি | ১০০,৭৪৩ |
সিঙ্গাপুর | ৮৩,২৭৯ |
বাহরাইন | ৮০,৪৫৭ |
কানাডা | ৬৫,৬৮৯ |
অস্ট্রেলিয়া | ৪৮,৮৮৮ |
মালদ্বীপ | ৩৮,৬২০ |
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article বাংলাদেশের জনমিতি, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.