হরিচাঁদ ঠাকুর

হরিচাঁদ ঠাকুর (১১ মার্চ ১৮১২ – ৫ মার্চ ১৮৭৮) মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রবর্তক। তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেদের জন্য এবং সমাজের দলিত মানুষের উন্নয়নে নানান কাজ করেছিলেন। এই লক্ষ্যে হরিতনয় শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর ০৯ অক্টোবর, ১৯৩২ সালে মতুয়া হিন্দুদের জন্য একমাত্র সংগঠন শ্রীশ্রী হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন যা পরর্বতীতে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ মতুয়া মিশন নামে পরিচালিত হয়। যার কেন্দ্রীয় কার্যালয় শ্রীধাম ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে অবস্থিত এবং বর্তমান সভাপতি মহা-মতুয়াচার্য শ্রীপদ্মনাভ ঠাকুর, সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক গুরু (মতুয়া সম্প্রদায়) এবং গদিসমাসীন ঠাকুর পূণ্য লীলাভূমি শ্রীধাম ওড়াকান্দি।

হরিচাঁদ ঠাকুর
হরিচাঁদ ঠাকুর
জন্ম
শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর

(১৮১২-০৩-১১)১১ মার্চ ১৮১২
মৃত্যু৫ মার্চ ১৮৭৮(1878-03-05) (বয়স ৬৫)
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
পরিচিতির কারণধর্ম ও সমাজ সংস্কারক
সন্তানগুরুচাঁদ ঠাকুর
আত্মীয়ড. ভগবতী প্রসন্ন ঠাকুর
ডা শ্রীপতি ঠাকুর
প্রমথ রঞ্জন ঠাকুর (প্রপৌত্র)

নমঃশূদ্র জাতির উৎপত্তি চন্ডাল জাতি থেকে । চন্ডাল একটি বংশ । চন্ডাল বংশ স্থাপন করেন নান্নুক ৮৩১ খ্রিস্টাব্দে । চন্ডাল বংশের শাসনকাল (৮৩১- ১২১৫ )চন্ডাল বংশ রাজশক্তি হারাবার পর বিভিন্ন নিম্নমানের কাজ কর্ম নিযুক্ত করা হয় দীর্ঘদিন বিদ্যা চর্চা না থাকায় তাদের ইতিহাস জানেনা বর্তমানে চান্ডাল রাই নমঃশূদ্র নামে পরিচিত । নমঃশূদ্র জাতির পূর্বপুরুষ গোন্ড জাতির আদিবাসী।

সংক্ষিপ্ত জীবনী

শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই মার্চ (১২১৮ বঙ্গাব্দের ২৯ ফাল্গুন বুধবার,কৃষ্ণা ত্রয়োদশী) অবিভক্ত ভারতবর্ষে তথা বাংলায় গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার অন্তর্গত ওড়াকাঁন্দির পার্শ্ববর্তী সাফলাডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার মাতা-পিতার নাম অন্নপূর্ণা বৈরাগী ও যশোমন্ত বৈরাগী। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সেভাবে হয়নি, কিন্তু প্রেম-ভক্তির কথা সহজ-সরলভাবে প্রচার করতেন। বৈষ্ণব বাড়িতে জন্ম হওয়ার কারণে শাস্ত্র আলোচনার মাধ্যমে হিন্দু ও বৌদ্ধ শাস্ত্রের সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন, বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করার সুযোগে অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান অর্জন করেছিলেন তিনি। তার প্রচলিত সাধন পদ্ধতিকে বলা হতো মতুয়াবাদ। তার দুই ছেলে গুরুচাঁদ ঠাকুর ও উমাচরণ ঠাকুর। শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর তার পিতা শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের মৃত্যুর পর মতুয়া বা সূক্ষ্ম সনাতন ধর্মের উন্নতিসাধন, শিক্ষার প্রসারে ব্রতী হয়েছিলেন। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনী নিয়ে কবি রসরাজ তারক চন্দ্র সরকার শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত নামক গ্রন্থটি রচনা করেন। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর একজন মহাপুরুষ হিসাবে অবতার যা তার অনুসারিরা(ভক্তরা) সকলে বিশ্বাস করেন এবং তাকে বলা হয় পতিতপাবন। তাঁর ভক্তরা তাঁকে শ্রীচৈতন্যদেব এবং গৌতম বুদ্ধের যৌথ অবতার বলে মনে করতো। তাঁর প্রচারিত মতুয়া বা সূক্ষ্ম সনাতন ধর্মে কোনো দেব-দেবীর স্থান নেই।

ভক্ত ও অনুসারীদের উদ্দেশ্যে তিনি সত্য , প্রেম, পবিত্রতা এবং দ্বাদশ আজ্ঞা দিয়ে গেছেন । তৎকালীন সময়ে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের আদর্শ মেনে ছত্রিশটি(36) জাতি একত্রিত হয়েছিল । এই জাতির মধ্যে ( ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র , ব্রাহ্মণ ,মুসলিম, খ্রিস্টান ) প্রত্যেক জাতির দৃষ্টান্তমূলক উপস্থিতি দেখা যায় । বর্তমানে তাঁনার অনুসারীরা মতুয়া সম্প্রদায় নামে পরিচিত । এখানে বলা বাহুল্য যে "সকল নমঃ মতুয়া কিন্তু সকল মতুয়া নমঃ নয়"।

রসরাজ তরক চন্দ্র সরকার শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত গ্রন্থ রচনার মাধ্যমে সকল মতুয়া বা সূক্ষ্ম সনাতন ধর্মের সমস্ত ধরনের দ্বিধা দ্বন্দ্বের সমাধান প্রকাশ করেন এবং দিক নির্দেশনা স্বয়ং কে বিচার করতে বলেছেন । যুগবিচারে প্রাতিষ্ঠানিক বিস্তারে বিভিন্ন আধ্যাত্মিক বিষয় উল্লেখ রাখেন ।

মৃত্যু

হরিচাঁদ ঠাকুর ১২৮৪ বঙ্গাব্দের ২৩ ফাল্গুন ইংরেজি ৫ মার্চ ,১৮৭৮ খৃস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।।।।

ঠাকুরবাড়ি ও মতুয়া ধাম

গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার ওড়াকাঁন্দি-তে হরিচাঁদ ঠাকুরের ঠাকুরবাড়ি অবস্থিত। এটি গোবরা-কাশিয়ানী একক ডিজেল রেললাইনের কাছে ছোট বাহিরবাগ স্টেশন থেকে ৮ কিমি উত্তর-পূর্বে দিকে অবস্থিত। এর পূর্বে রাজপাট ইউনিয়ন অবস্থিত।

প্রতি বছর চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথীতে ঠাকুর বাড়িতে মহাবারুনি পূণ্য স্নান ও মতুয়া মহামেলা অনুষ্ঠিত হয়। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁর ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ি ও মতুয়া ধাম বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। মতুয়া ধাম ঠাকুরনগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ১ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। প্রতিবছর চৈত্র মাসে মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ও তার কনিষ্ঠপুত্র শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের আদর্শে মতুয়া ধামে মতুয়া মহামেলা মহা মেলাবসে।

তথ্যসূত্র

6. https://en.m.wikipedia.org/wiki/Chandelas_of_Jejakabhukti চন্ডাল বংশের বাংলা শাসন কাল

বংশ তালিকা

চন্ডাল বংশ স্থাপন
ক্রমিক নাম মেয়াদ
০১ নান্নুক ৮৩১
০২ বাকপতি
০৩ জয় শক্তি
০৪ হর্স
০৫ যসবর্মন ৯০৩/৯৫০
০৬ ধঙ্গ
০৭ বিদ্যাধর

Tags:

হরিচাঁদ ঠাকুর সংক্ষিপ্ত জীবনীহরিচাঁদ ঠাকুর মৃত্যুহরিচাঁদ ঠাকুর ঠাকুরবাড়ি ও মতুয়া ধামহরিচাঁদ ঠাকুর তথ্যসূত্রহরিচাঁদ ঠাকুর বংশ তালিকাহরিচাঁদ ঠাকুরহিন্দু

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

আল-আকসা মসজিদজয়া আহসানইশার নামাজসাদ্দাম হুসাইনচন্দ্রগ্রহণশশাঙ্কশিশ্ন বর্ধনওয়ালাইকুমুস-সালামজ্যামাইকারঙের তালিকাপাট্টা ও কবুলিয়াতধর্মীয় জনসংখ্যার তালিকাবাংলাদেশের পোস্ট কোডের তালিকাব্রাহ্মসমাজইরানকালেমামাওলানামুজিবনগরইসরায়েলের ইতিহাসব্রহ্মপুত্র নদঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়পর্নোগ্রাফিঅমর্ত্য সেনমুসানওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানীপ্রযুক্তিশ্রাবস্তী দত্ত তিন্নির‍‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসামাজিক লিঙ্গবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়গায়ত্রী মন্ত্রতেভাগা আন্দোলনচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়পর্যায় সারণিব্রিক্‌সবাংলাদেশের বিভাগসমূহজাতিসংঘবাংলাদেশের বিমানবন্দরের তালিকাহার্নিয়াএক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)ঢাকাআবু বকরভারতে নির্বাচনভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধানকলকাতা নাইট রাইডার্সঅরিজিৎ সিংপদ্মা সেতুশিয়া ইসলামভালোবাসাসামাজিক কাঠামোবাংলাদেশের জাতীয় পতাকাপাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারশব্দদূষণনীল বিদ্রোহশিখধর্মপ্রাকৃতিক পরিবেশআমলাতন্ত্রহোমিওপ্যাথিগৌতম বুদ্ধবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানগোপাল ভাঁড়জীবাশ্ম জ্বালানিভাষাব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলরামায়ণহিমালয় পর্বতমালাপশ্চিমবঙ্গের জেলাজাপানজাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কালিদাসচট্টগ্রামবিশ্বায়নখাদ্যবাংলা ভাষাহেপাটাইটিস বিজবা🡆 More