সাদ ইবন মুয়াজ (মৃত্যু-৫ম হিজরি) মুহাম্মাদ সাঃ এর একজন অন্যতম সাহাবা ছিলেন। যিনি বদর, উহুদ ও খন্দকের যুদ্ধ অংশগ্রহণ করেছিলেন। হিজরতের পূর্বে মদিনাতে তিনি নিজ গোত্র আওসের নেতা ছিলেন। মদিনাবাসীদেরকে ইসলাম শিক্ষা দেয়ার জন্য মুহাম্মাদ (সাঃ) মুসয়াব ইবনে উমাইরকে পাঠালে তাঁর হাতে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন।
সাদ ইবনে মুয়াজ | |
---|---|
মুহাম্মাদ (সা:) এর সাহাবা | |
জন্ম | ৫৯০ খ্রিস্টাব্দ আশহাল শাখা, আউস গোত্র, মদিনা, সৌদি আরব |
মৃত্যু | ৬২৭ খ্রিস্টাব্দ মদিনাতুল মুনাওয়ারা (বর্তমানে সৌদি আরব) |
মৃত্যুর কারণ | খন্দকের যুদ্ধে আহত হওয়ার কারণে |
শ্রদ্ধাজ্ঞাপন | জান্নাতুল বাকী গোরস্তান, মদিনা |
যার দ্বারা প্রভাবিত | মুহাম্মাদ (সা:) , আবু বকর (রা:) |
পিতামাতা |
|
উল্লেখযোগ্য কাজ | বদর, উহুদ ও খন্দকের যুদ্ধে অংশগ্রহণ |
মুহাম্মাদ (সাঃ) বনু কুরায়যাকে অবরোধ করলে তারা সাদের সিদ্ধান্ত মানতে মত দেয়। তিনি বনু কুরায়রার যুদ্ধ উপযোগী সকল পুরুষকে হত্যা, তাদের নারীদেরকে দাসী এবং তাদের সম্পদ ও ভূমি মুসলিমদের মাঝে বণ্টনের সিদ্ধান্ত দেন। এ ঘটনার অল্প কিছুদিন পরেই তিনি মারা যান। তিনি বনু কুরাইজা গোত্রের শাস্তির সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন ।
সাদ ইবন মুয়াজ এর ডাক নাম ছিলো "আবু আমর", "লকব" এবং উপাধি ছিলো "সায়্যিদুল আউস" অর্থাৎ আউস গোত্রের নেতা। তিনি মদীনার বিখ্যাত আউস গোত্রের আবদুল আশহাল শাখার সন্তান। পিতার নাম মুয়াজ ইবন নুমান, মাতার নাম কাবশা মতান্তরে কুবাইশা বিনতু রাফি। সাদের মা প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবূ সা’ঈদ আল খুদরীর চাচাতো বোন ছিলো। সাদ ইবন মুয়াজের পিতা তাঁদের গোত্রের মধ্যে নেতা পর্যায়ের অবস্থানে ছিলো এবং ইসলাম প্রকাশের পূর্বেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
১ম আকাবার ঘটনার পরেই মুসয়াব ইবন উমাইরের দাওয়াতে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ মতান্তরে সাদ ইবন আবী ওয়াক্কাসের সাথে ভ্রাতৃ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা হয়। (তাবাকা)
বদররের যুদ্ধের পূর্বে হিজরী ২য় সনে রাবীউল আওয়াল মাসে নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) কুরাইশ নেতা উমায়্যা ইবন খালাফের নেতৃত্বাধীন ১০০ লোকের একটি কাফিলার সন্ধানে বের হন। ইতিহাসে এটা বাওয়াত অভিযান নামে খ্যাত। একটি বর্ণনা মতে মুহাম্মাদ (সাঃ) স্বীয় প্রতিনিধি হিসেবে সা’দ ইবন মু’য়াজকে মদীনায় রেখে যান। বদরের যুদ্ধে তিনি অনন্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি কিছু আনসারী সাহাবী সঙ্গে নিয়ে আরীশের দরজা নামক একটি দরজা পাহারার দায়িত্ব পালন করেন। একটি বর্ণনা মতে, এ যুদ্ধে তিনি তাঁর একটি দাসকে সঙ্গে নিয়ে আমর ইবন উবাইদুল্লাহকে হত্যা করেন।
উহুদের যুদ্ধে তিনি মুহাম্মাদ (সা:) এর অবস্থানস্থল পাহারার দায়িত্ব পালন করেন। উহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে ১৫ জন ব্যক্তি মুহাম্মাদ (সাঃ) পাশেই অবস্থান করে ছিলেন তাঁদের মধ্যে সাদ ইবন মুয়াজ একজন। এই উহুদে তাঁর ভাই আমর ইবনে মুয়াজ মৃত্যুবরণ করেন।
খন্দকের যুদ্ধের সময় হিববান ইবন আবদি মান্নাফ তাঁর দিকে লক্ষ্য করে তীর ছুঁড়ে। কোনো কোনো বর্ণনায় হিব্বানের পরিবর্তে আবু উসামা ইবন আসিম অথবা খাফাজা ইবন আসিমের নাম এসেছে। তীরটি তাঁর হাতে লেগে মারাত্মক ক্ষতের সৃষ্টি করে।
খন্দক যুদ্ধে কুরাইশরা পরাজয় বরণ করলে মুহাম্মাদ (সাঃ) ইহুদী গোত্র বনু কুরাইজাকে শাস্তি দানের সিদ্ধান্ত নেন । এবং এই শাস্তির রায়ের ব্যপারে ইহুদিদের আবেদনক্রমে মুহাম্মাদ (সাঃ) তাঁদের মিত্র গোত্রের সন্তান সাদ ইবন মুয়াজকে নির্বাচিত করলেন । এই শাস্তির রায় দিতে মুয়াজ উঠে দিলেন,
আমি আমার রায় ঘোষণা করছিঃ তাদের মধ্যে যারা যুদ্ধ করার উপযুক্ত তাদেরকে হত্যা করা, তাদের নারী ও শিশুদেরকে দাস-দাসীকে পরিণত করা এবং তাদের ধন-সম্পদ বণ্টন করে দেওয়া হোক।
তার এই রায় শুনে মুহাম্মাদ (সাঃ) সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন ।
বনু কুরায়জার ব্যাপারে সা’দের রায় বাস্তবায়িত হওয়ার পর অল্প কিছুদিন তিনি জীবিত ছিলেন। খন্দকের ক্ষত হওয়া অংশ থেকে রক্ত পরা বৃদ্ধি পাওয়ার দরুন ৫ম হিজরিতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৭ বছর। মদীনার জান্নাতুল বাকী গোরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
This article uses material from the Wikipedia বাংলা article সাদ ইবনে মুয়াজ, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.