ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের (জন্ম ১ জানুয়ারি ১৯৫২) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী। নোয়াখালী-৫ আসন থেকে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সপ্তম, নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভ করেন। শেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০১১ সালের ডিসেম্বর থেকে তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ২১তম সম্মেলনেও তিনি পুনরায় নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর ২২তম সম্মেলনেও তিনি টানা তৃতীয় বারের মতো নির্বাচিত হন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি তিনি দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ছিলেন।

ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
২৩ অক্টোবর ২০১৬
নেতাশেখ হাসিনা
পূর্বসূরীসৈয়দ আশরাফুল ইসলাম
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
৫ ডিসেম্বর ২০১১
প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনা
পূর্বসূরীসৈয়দ আবুল হোসেন
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২৩ জুন ১৯৯৬ – ১৫ জুলাই ২০০১
পূর্বসূরীসাদেক হোসেন খোকা
উত্তরসূরীফজলুর রহমান পটল
নোয়াখালী-৫ আসনের
সংসদ সদস্য
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
৬ জাুয়ারি ২০০৯
পূর্বসূরীমওদুদ আহমেদ
কাজের মেয়াদ
২৩ জুন ১৯৯৬ – ১৩ জুলাই ২০০১
পূর্বসূরীএ এস এম এনামুল হক
উত্তরসূরীমওদুদ আহমেদ
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1952-01-01) ১ জানুয়ারি ১৯৫২ (বয়স ৭২)
নোয়াখালী, পূর্ব পাকিস্তান
নাগরিকত্বপাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীইসরাতুন্নেছা কাদের
শিক্ষাবিএ (রাষ্ট্রবিজ্ঞান)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নোয়াখালী সরকারি কলেজ
বসুরহাট এ এইচ সি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
পেশারাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, লেখক

প্রারম্ভিক জীবন

ওবায়দুল কাদের ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বড় রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোশাররফ হোসেন এবং মাতা ফজিলাতুন্নেছা। মোশাররফ প্রথমে সরকারি চাকরি করলে পরবর্তীতে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। মোশাররফ কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহপাঠী ছিলেন। কাদের স্থানীয় বসুরহাট এ এইচ সি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন। তার বাবা সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। কাদের নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।


রাজনৈতিক জীবন

ছাত্র রাজনীতি

নোয়াখালী কলেজে অধ্যায়নরত অবস্থায় তিনি ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। তিনি ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলন ও ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) কোম্পানীগঞ্জ থানা শাখার অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর তিনি ৫ বছর কারাবন্দী ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং দুই মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছিলেন।

১৯৯১ - ২০০৮

ওবায়দুল কাদের ১৯৯১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ছয়বার নোয়াখালী-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। প্রতিবারই তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মওদুদ আহমদ। ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। কিন্তু নির্বাচনে তৎকালীন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মওদুদ আহমদের কাছে পরাজিত হন। ১৯৯৬ সালের জুনে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করে প্রথমবারেরমত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে জয়লাভ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে সরকার গঠন করে। এ সময় সপ্তম জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রিসভায় তিনি যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের সাথে ২৩ জুন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২০০১ সালের ১৫ জুলাই এ মন্ত্রিসভা বিলুপ্তির পূর্ব পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। এ সময় মওদুদ আহমদ বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এ নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি দলের প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ সালের ২৬ জুলাই পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬-০৮ বাংলাদেশী রাজনৈতিক সংকটের সময় ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের জরুরি বিধিতে গ্রেফতার করা হয়। ২০০৭ সালের ৯ মার্চ তিনিও গ্রেফতার হন এবং ১৭ মাস ২৬ দিন কারাগারে থাকার পর ২০০৮ সালের ৫ জানুয়ারি জামিনে মুক্তি পান। কারাগারে থাকাকালে কারাজীবনের বর্ণনা দিয়ে “অনুস্মৃতি : যে কথা বলা হয়নি” নাম একটি গ্রন্থ রচনা করেন।

২০০৮ - বর্তমান

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে সরকার গঠন করে এবং তিনি একই আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে নবম সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। নবম সংসদে তিনি তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম ‘সভাপতিমন্ডলীর সদস্য’ নির্বাচিত হন। ২০১১ সালের ৫ ডিসেম্বর তিনি শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়) মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১২ সালের এপ্রিলে তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সহকারী একান্ত সচিবের (এপিএস) অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় সুরঞ্জিত পদত্যাগ করার পর তিনি কিছুকাল রেল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করেন।

২০১৪ সালের দশম এবং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি জয়লাভ করেন এবং শেখ হাসিনার তৃতীয়চতুর্থ মন্ত্রিসভায়ও তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে ২০১৬-২০১৯ মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর ২১তম জাতীয় সম্মেলনেও তিনি দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক পদে পুন:নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর ২২তম সম্মেলনেও তিনি টানা তৃতীয় বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২২তম জতীয় সম্মেলনে টানা তৃতীয়বারের মত সাধারণ সম্পাদক পদে পুনঃনিবার্চিত হন তিনি। যা আওয়ামী লীগের ইতিহাসে প্রথম।

সাংবাদিকতা ও লেখালেখি

ওবায়দুল কাদের রাজনীতি ছাড়াও বেশ কিছুদিন সাংবাদিকতা করেছেন এবং বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকার সহকারী সম্পাদক ছিলেন। তিনি মোট ৯টি গ্রন্থ রচনা করেছেন।

  1. Bangladesh: A Revolution Betrayed
  2. বাংলাদেশের হৃদয় হতে
  3. পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধু
  4. এই বিজয়ের মুকুট কোথায়
  5. তিন সমুদ্রের দেশে
  6. মেঘে মেঘে অনেক বেলা
  7. রচনা সমগ্র
  8. কারাগারে লেখা অনুস্মৃতি: যে কথা বলা হয়নি।
  9. নির্বাচিত কলাম

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

ওবায়দুল কাদের প্রারম্ভিক জীবনওবায়দুল কাদের রাজনৈতিক জীবনওবায়দুল কাদের সাংবাদিকতা ও লেখালেখিওবায়দুল কাদের তথ্যসূত্রওবায়দুল কাদের বহিঃসংযোগওবায়দুল কাদেরদৈনিক বাংলার বাণীনোয়াখালী-৫বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকশেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রিসভাসড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

মাইকেল মধুসূদন দত্তপেশীভাইরাসসুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখরসুনীল গঙ্গোপাধ্যায়৮৭১জনগণমন-অধিনায়ক জয় হেমিয়ানমারঅধিবর্ষস্লোভাক ভাষাইউটিউবদুর্গাপূজাবাংলাদেশ সেনাবাহিনীআফতাব শিবদাসানিরামায়ণব্রহ্মপুত্র নদসূরা কাফিরুনইসলামে বিবাহগ্রিনহাউজ গ্যাসবঙ্গবন্ধু-১জার্মানিহরিপদ কাপালীসিলেটছোলাবেল (ফল)কুলম্বের সূত্রতারাবীহমহাদেশ অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাসূরা লাহাবকলি যুগনেমেসিস (নুরুল মোমেনের নাটক)টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাত্রিপুরাআব্বাসীয় খিলাফতমুজিবনগর সরকারবিকাশবাংলাদেশ আওয়ামী লীগঅ্যালবামরূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রকানাডামেসোপটেমিয়াজাহাঙ্গীরহরপ্পাঅসমাপ্ত আত্মজীবনীখ্রিস্টধর্মগঙ্গা নদীজিৎ অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকাঅগ্নিবীণা (কাব্যগ্রন্থ)সংস্কৃত ভাষাআব্দুল হামিদরামসার কনভেনশনভৌগোলিক আয়তন অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকানেলসন ম্যান্ডেলা০ (সংখ্যা)প্রথম বিশ্বযুদ্ধপাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন, ১৯৭০মহাভারতের চরিত্র তালিকাময়মনসিংহ জেলাডিজিটাল বাংলাদেশঈসাআকবরইমাম বুখারীথানকুনিইসলামের নবি ও রাসুলমহাসাগরখোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর২০২৩ তুরস্ক–সিরিয়া ভূমিকম্পস্বাধীনতাশব্দ (ব্যাকরণ)বাস্তব সত্যবাস্তুতন্ত্রএশিয়াকেন্দ্রীয় শহীদ মিনারভিটামিনআর্জেন্টিনাভারতীয় জনতা পার্টিহজ্জঘূর্ণিঝড়🡆 More