শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা ওয়াজেদ (জন্ম: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭) বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদের সরকারদলীয় প্রধান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রী। তিনি মোট ৮ বার সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন।

শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা
২০২৩ সালে শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
৬ই জানুয়ারি ২০০৯
রাষ্ট্রপতিইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ
জিল্লুর রহমান
আবদুল হামিদ
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন
পূর্বসূরীফখরুদ্দীন আহমদ (তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা)
কাজের মেয়াদ
২৩শে জুন ১৯৯৬ – ১৫ই জুলাই ২০০১
রাষ্ট্রপতিআবদুর রহমান বিশ্বাস
শাহাবুদ্দিন আহমেদ
পূর্বসূরীমুহাম্মদ হাবিবুর রহমান (তত্ত্বাবধায়ক)
উত্তরসূরীলতিফুর রহমান (তত্ত্বাবধায়ক)
অতিরিক্ত মন্ত্রণালয়
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
৬ জানুয়ারি ২০০৯
মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও কমিশন
পূর্বসূরীখালেদা জিয়া
বিরোধীদলীয় নেতা
কাজের মেয়াদ
১০ই অক্টোবর ২০০১ – ২৯শে অক্টোবর ২০০৬
প্রধানমন্ত্রীখালেদা জিয়া
পূর্বসূরীখালেদা জিয়া
উত্তরসূরীখালেদা জিয়া
কাজের মেয়াদ
২০শে মার্চ ১৯৯১ – ৩০শে মার্চ ১৯৯৬
প্রধানমন্ত্রীখালেদা জিয়া
পূর্বসূরীএ. এস. এম. আবদুর রব
উত্তরসূরীখালেদা জিয়া
কাজের মেয়াদ
৭ মে ১৯৮৬ – ৩ মার্চ ১৯৮৮
রাষ্ট্রপতিহুসেইন মুহম্মদ এরশাদ
পূর্বসূরীআসাদুজ্জামান খান
উত্তরসূরীএ. এস. এম. আবদুর রব
সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দায়িত্বাধীন
অধিকৃত কার্যালয়
১৭ই মে ১৯৮১
সাধারণ সম্পাদকওবায়দুল কাদের
পূর্বসূরীআসাদুজ্জামান খান (বিতর্কিত)
আব্দুল মালেক উকিল
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1947-09-28) ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ (বয়স ৭৬)
টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ, তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা, পূর্ব বাংলা, পাকিস্তান
(বর্তমানে বাংলাদেশ)
জাতীয়তাবাংলাদেশি
রাজনৈতিক দলআওয়ামী লীগ (১৯৮১–বর্তমান)
অন্যান্য
রাজনৈতিক দল
মহাজোট (২০০৮–বর্তমান)
দাম্পত্য সঙ্গীওয়াজেদ মিয়া
সন্তানসজীব ওয়াজেদ জয়
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল
মাতাশেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব
পিতাশেখ মুজিবুর রহমান
প্রাক্তন শিক্ষার্থী
স্বাক্ষরশেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। তার রাজনৈতিক কর্মজীবন প্রায় চার দশকেরও বেশি সময়ব্যাপী বিস্তৃত। তিনি ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০১৯৯১-১৯৯৫ পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতা এবং ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮১ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৮ সালে জনগণের বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে একটি বিরোধীদলবিহীন নির্বাচনে তিনি তৃতীয়বারের মত প্রধানমন্ত্রী হন। নির্বাচনটি বিরোধীদল কর্তৃক বর্জিত এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দ্বারা সমালোচিত হয়েছিল। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তিনি সহিংসতায় দুষ্ট ও বিরোধীদল কর্তৃক সাজানো নির্বাচন হিসেবে সমালোচিত একটি নির্বাচনে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চম মেয়াদে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হন।

শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত। ফোর্বস সাময়িকীর দৃষ্টিতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকায় ২০২০ সালে তার অবস্থান ছিল ৩৯তম, ২০১৯ সালে তার অবস্থান ছিল ২৯তম, ২০১৮ সালে ২৬তম এবং ২০১৭ সালে ৩০তম। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ফরেইন পলিসি নামক সাময়িকীর করা বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০০ বৈশ্বিক চিন্তাবিদদের তালিকায় শেখ হাসিনা জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি বিশ্ব নারী নেত্রী পরিষদ-এর একজন সদস্য, যা বর্তমান ও প্রাক্তন নারী রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীদের একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক।

প্রারম্ভিক জীবন

শেখ হাসিনা পূর্ব পাকিস্তানের টুঙ্গিপাড়ায় (বর্তমানে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া) ১৯৪৭ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা। তিনি পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। তিনি টুঙ্গিপাড়াতে বাল্যশিক্ষা নেন।

১৯৫৪ সাল থেকে তিনি ঢাকায় পরিবারের সাথে মোগলটুলির রজনী বোস লেনের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। পরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে স্থানান্তরিত হন। ১৯৫৬ সালে তিনি টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে থাকা শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন।

শেখ হাসিনা ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় ১৯৬৭ সালে এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে তার বিয়ে হয় এবং ওয়াজেদ মিয়া ৯ মে, ২০০৯ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের সংসারে সজীব ওয়াজেদ জয় (পুত্র) ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল (কন্যা) নামে দুই সন্তান রয়েছেন।

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী গ্রেপ্তারের সময় তিনি ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর রোডের বাসায় পিতার পাশেই ছিলেন। শেখ মুজিবের গ্রেপ্তারের পর তিনি মায়ের সঙ্গে ভাই-বোনদের নিয়ে বসবাস করতে থাকেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা বাদে পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হয়। বোনদ্বয় সেইসময় পড়াশোনার জন্য পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। এরপর তিনি ভারত, বেলজিয়াম সহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করতে থাকেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব প্রদানের লক্ষ্যে তিনি ১৯৮১তে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে প্রত্যাবর্তন করেন।

রাজনৈতিক জীবন

বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের (সাবেক ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজে) ছাত্রী থাকা অবস্থায় ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে অংশ নেন এবং কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী

আওয়ামী লীগ ১৯৮১ সালে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতে দলের সভাপতি নির্বাচিত করে। ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে অবশেষে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন।

বিরোধীদলীয় নেত্রী, ১৯৮৬-১৯৮৭

পরবর্তীকালে তিনি এবং তার দল এরশাদ বিরোধী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেন ও ১৯৯০ সালে অভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদ সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন।

১৯৯১-এর নির্বাচন

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৮৮ টি সংসদীয় আসন লাভ করে এবং প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্ম প্রকাশ করে । মোট প্রদত্ত ভোটের ৩০.১ % লাভ করে , যা সরকার গঠন কারী দল থেকে মাত্র ০.৭% কম ।

১৯৯১-১৯৯৬

১৯৯১ সালে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের তৎকালীন বৃহত্তম বিরোধীদল হিসেবে প্রকাশ পায়। ১৯৯১ সালের স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম মেয়াদকাল, ১৯৯৬-২০০১

১৯৯৬ সালে তার দল আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বামপন্থী দলগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বাধ্য করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তার দল আন্দোলনে জয়ী হওয়ায় পরবর্তীতে তার দল জাতীয় নির্বাচনেও জয়লাভ করে এবং ঐ বছর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বড় ব্যবধানে হেরে যায়।

বিরোধীদলীয় সময়কাল, ২০০১-২০০৮

বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি (নাজিউর রহমান মঞ্জু) ও ইসলামী ঐক্যজোট এর নির্বাচনী জোটের কাছে ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়। শেখ হাসিনা দলের এই পরাজয়ের জন্য তারই মনোনীত তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদ, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম এ সাঈদকে দায়ী করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

আন্দোলন-সংগ্রাম

আওয়ামী লীগ ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদের ক্ষমতায় আরোহণকে অবৈধ ঘোষণা করে। এবং তার শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে এবং সামরিক শাসকের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে তার দল ১৯৮৬ সালে এই সামরিক শাসকের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।

হত্যাচেষ্টা

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় এক জনসভায় বক্তৃতাদানকালে গ্রেনেড হামলায় তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। উক্ত হামলায় তার ঘনিষ্ঠজন এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ১৯ জন মৃত্যুবরণ করেন ও শতাধিক আহত হন। বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এই হামলাকে বিদেশি ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করা হয়। এই গ্রেনেড হামলার তদন্তকে ভিন্ন খাতে করার জন্য 'জজ মিয়া' নাটক সহ বেশকিছু প্রহসন সৃষ্টি করেছিল তৎকালীন চারদলীয় ঐক্যজোট প্রশাসন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে আসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু, যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (বর্তমানে বাংলাদেশে বিলুপ্ত) নেতা মুফতি হান্নান সহ বেশকিছু তৎকালীন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে তিনি পুনরায় আন্দোলন শুরু করেন কিছু নতুন সমস্যা নিয়ে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ও গ্রেফতার, অক্টোবর ২০০৬-২০০৮

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হন ২০০৭ সালে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সকাল ৭:৩১-এ যৌথবাহিনী শেখ হাসিনাকে তার বাসভবন "সুধা সদন" থেকে গ্রেফতার করে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখানে আদালত তার জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে সাব-জেল হিসেবে ঘোষণা করে সেখানে অন্তরীণ রাখা হয়। গ্রেফতারের পূর্বে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা জিল্লুর রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে যান। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুইটি অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। একটি হল ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে রাজনৈতিক সংঘর্ষের জন্য হত্যা মামলা এবং অন্যটি হল প্রায় তিন কোটি টাকার চাঁদাবাজি মামলা। এর মাঝে একটির বাদী ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে মামলাটি তুলে নেন। জেল থেকে মুক্তিলাভের পরে তিনি চিকিৎসার্থে কয়েক মাস বিদেশে অবস্থান করেন। এরপর দেশে ফিরে দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদকাল, ২০০৯-২০১৪

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আসনে জয়লাভ করে। বিজয়ী দলের সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে তিনি জানুয়ারি ৬, ২০০৯-এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তার দল আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে ২৬০টি আসন লাভ করে। অপরদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি পায় মাত্র ৩২টি আসন।

তৃতীয় মেয়াদকাল (২০১৪-২০১৯)

ইতোপূর্বে সপ্তম, অষ্টম এবং নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ড.ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ক্ষমতা ধরে রাখা এবং রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমনের নামে মামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক এ ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষিত হওয়া প্রভৃতি কারণে সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিলের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে নবম সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাশের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করা হয় এবং দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। ৫ই জানুয়ারি ২০১৪ সালে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনটি নবম জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অধিকাংশ দলই বর্জন করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ ১৭টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এ নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় নির্বাচনটি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ৫ই জানুয়ারি রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাকী ১৪৭টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ১৮ নভেম্বর, ২০১৩ নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠিত হয়।

চতুর্থ মেয়াদকাল (২০১৯-২০২৪)

আওয়ামী লীগ ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৮৮টি সংসদীয় আসনে জয়লাভ করলে শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মত নির্বাচনে জয়ী হন। এটি ছিল একাধারে তৃতীয়বারের জন্য তার মেয়াদকাল। বিরোধীদলীয় প্রধান নেতা কামাল হোসেন নির্বাচনকে "প্রহসনমূলক" বলে ঘোষণা করেন এবং ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন। নির্বাচনের পূর্বে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অন্যান্য অধিকার সংগঠন সরকারকে বিরোধীদলের বিরুদ্ধে আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টির অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। নিউ ইয়র্ক টাইমস সম্পাদকীয় নির্বাচনকে প্রহসনমূলক বলে বর্ণনা করে, সম্পাদকীয়তে বলা হয়, পরিস্থিতি এমন ছিল যে, ভোট কারচুপি ছাড়াই হয়তো হাসিনা জিতে যেতেন, তবে কেন তিনি এমন করলেন?

পঞ্চম মেয়াদকাল (২০২৪-বর্তমান)

সমালোচনা

পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি হল বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সরকারের শাসনামলে সংঘটিত একটি ঘটনা, যাতে সরকার কানাডীয় কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনকে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের চুক্তি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়। অভিযোগটি পরবর্তীকালে ভুল ও ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয় এবং কানাডার আদালত এরপর মামলাটি খারিজ করে দেয়।

অভিযোগের একটি ফলস্বরূপ, বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে ৬ কিমি লম্বা বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর রেলপথ ও মহাসড়ক বিশিষ্ট পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প হতে নিজেদের $১.২ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের অর্থায়ন পরিকল্পনা বাতিল করে। মামলা খারিজ হওয়ার তিন মাস পর শেখ হাসিনা যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে পদ থেকে অপসারণ করেন। ২০১২ সালের ১১ জুলাই, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উচিত বিশ্বব্যাংকের পাঠানো চিঠিটি প্রকাশ করা, যেখানে বিশ্বব্যাংক শেখ হাসিনা এবং অন্য তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ এনেছে। ২০১৬ সালের ১৭ই জানুয়ারি, শেখ হাসিনা দাবি করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্যাংকের একজন এমডি বিশ্বব্যাংককে ঋণ বাতিল করার জন্য উসকানি দিয়েছে।

২০১৭ সালের ২৪শে জানুয়ারি, সংসদে নিজ বক্তব্যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্প থেকে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ সহায়তা তুলে নেওয়ার জন্য মুহাম্মদ ইউনুসকে দায়ী করেন। তার মতে, ইউনুস প্রাক্তন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ স্টেট হিলারি ক্লিনটন-এর সঙ্গে তদবির করেছিলেন বিশ্বব্যাংকে লোন বাতিল করতে প্ররোচিত করার জন্য। ২০১৭ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি কানাডার অন্টারিওতে সুপিরিয়র কোর্টের বিচারপতি ঘুষ-ষড়যন্ত্রের এই কেসটি কোন প্রমাণের অভাবে খারিজ করে দেয়।

২০২১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বাংলাদেশ সরকারের সমসাময়িক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকটবর্তী উচ্চপদস্থ নেতাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যার শিরোনাম ছিলো "ওরা প্রধানমন্ত্রীর লোক"। তবে ২রা ফেব্রুয়ারি আইএসপিআর এর একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদনকে ভ্রান্ত ও ভিত্তিহীন বলে নিন্দা জানানো হয়।

রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) ২০২১ সালের ‘প্রেস ফ্রিডম প্রিডেটর্স’ বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় কঠোর হস্তক্ষেপ করা ৩৭ জন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করে।

সৃষ্টিকর্ম

গ্রন্থ

রাজনীতির বাইরে লেখক হিসেবে শেখ হাসিনার অবদান রয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩০টি গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন।

এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো;

সম্মাননা

যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন ইউনিভার্সিটি, ব্রিজপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়, স্কটল্যান্ডের অ্যাবারটে বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের বিশ্বভারতী এবং ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রাসেলসের বিশ্ববিখ্যাত ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়, রাশিয়ার পিপলস ফ্রেন্ডশিপ বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবার্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। এছাড়া ফ্রান্সের ডাওফি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডিপ্লোমা প্রদান করে।

  1. ইউএন উইমেন থেকে "প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন"
  2. গ্লোবাল পার্টনারশীপ ফোরাম থেকে এজেন্ট অব চেঞ্জ পুরস্কার ৷
  3. ফোর্বস'-এ প্রথম ১০০ সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর নারীর মধ্যে ৫৯ তম স্থান অর্জন৷
  4. ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ সালে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ল ডিগ্রি প্রদান৷
  5. ৪ জুলাই ১৯৯৭ সালে জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ল সম্মাননা৷
  6. অ্যবার্টয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৫ অক্টোবর ১৯৯৭ সালে ডক্টর অব ফিলোসপী সম্মাননা।
  7. ইউনেসকো থেকে ১৯৯৮ সালে ‘‘হুপে-বোয়ানি’’ শান্তি পুরস্কার৷
  8. সর্বভারতীয় শান্তিসংঘ থেকে ১৯৯৮ সালে মাদার তেরেসা পুরস্কার।
  9. মহাত্মা গান্ধী ফাউন্ডেশন কর্তৃক ১৯৯৮ সালে এম কে গান্ধী পুরস্কার গ্রহণ ৷
  10. আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাব কর্তৃক ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে ‘‘Medal of Distinction” পদক ও ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে “Head of State” পদক লাভ।
  11. ২৪ জানুয়ারি ১৯৯৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'ডেসিকোটাম' (ডক্টর অব লিটারেচার, হনোরিস কাউজা) লাভ
  12. ১৯৯৯ সালে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা থেকে চেরেস পদক লাভ।
  13. ২০ অক্টোবর ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডক্টর অফ ল ডিগ্রি লাভ
  14. ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অফ ল ডিগ্রি লাভ
  15. ৫ সেপ্টেম্বর ২০০০ সালে ব্রিজপয়েন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অফ হিউম্যান লেটার লাভ।
  16. ৯ এপ্রিল ২০০০ সালে রানডলপ ম্যাকন উইমেন্স কলেজ কর্তৃক পার্ল এস. বাক পুরস্কার
  17. রোটারি ফাউন্ডেশন কর্তৃক পল হ্যারিস ফেলো
  18. ২০০৯ সালে ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার।
  19. ৩০ ডিসেম্বর, ২০১১ সালে বাংলা ভাষার ধারক ও বাহক হিসেবে বাংলা একাডেমি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভায় সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে।
  20. ১২ জানুয়ারি, ২০১২ সালেদক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি এবং উন্নয়নে অনন্য অবদানের জন্য ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ডক্টর অব লিটারেচার বা ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করে।
  21. নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা প্রসারের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৪ সালে ইউনেস্কো ‘শান্তিবৃক্ষ’ পুরস্কার।
  22. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নেতৃত্বের জন্য ইউএন পরিবেশ পুরস্কার (চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ) লাভ।
  23. ২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা জয়ের জন্য তিনি সাউথ সাউথ পুরস্কার লাভ করেন ৷
  24. ১৬ নভেম্বর ২০১৫ সালে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডক্টর অব দ্য ইউনিভার্সিটি’ ডিগ্রি।
  25. ২৬ মে ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক 'ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট)' ডিগ্রি।
  26. ২৭ এপ্রিল ২০১৮ সালে বাংলাদেশে নারী শিক্ষা ও উদ্যোক্তা তৈরিতে অসামান্য নেতৃত্বদানের জন্য গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ এওয়ার্ড লাভ করেন।
  27. রোহিঙ্গা ইস্যুতে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে দায়িত্বশীল নীতি ও তার মানবিকতার জন্য আইপিএস ইন্টারন্যাশনাল এচিভমেন্ট এওয়ার্ড এবং ২০১৮ স্পেশাল ডিসটিংশন এওয়ার্ড ফর লিডারশিপ গ্রহণ করেন।
  28. বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নিউজ এজেন্সি ‘দি ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস) এবং নিউইয়র্ক, জুরিখ ও হংকং ভিত্তিক তিনটি অলাভজনক ফাউন্ডেশনের নেটওয়ার্ক গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে দুটি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে।
  29. মার্চ ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে ‘লাইফটাইম কন্ট্রিবিউশন ফর উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট এ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করে ইনস্টিটিউট অব সাউফ এশিয়ান উইমেন।
  30. 'ভ্যাকসিন হিরো' –টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সফলতা জন্য পুরস্কার দিয়েছে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন এবং ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)।
  31. ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’-জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে তাকে এই পুরস্কারে প্রদান করেন।

ক্ষমতাধর নারী

বিশ্ব পর্যায়ে

শেখ হাসিনা ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় ৭ম স্থানে ছিলেন। তার পূর্বে এবং পশ্চাতে ছিলেন যথাক্রমে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট অ্যালেন জনসন সার্লেফ এবং আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জোহানা সিগার্ডারডটির । যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিউ ইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর জরিপে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর নারী নেতৃত্বের ১২জনের নাম নির্বাচিত করে।

উল্লেখ্য যে, ২০১০ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর অনলাইন জরিপে তিনি বিশ্বের সেরা দশ ক্ষমতাধর নারীদের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থানে ছিলেন। ঐ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের ঠিক পিছনে ছিলেন এবং ব্যাপক প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তার করেছিলেন। ২০১৫ সালে বিশ্বের ক্ষমতাধর নারীদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫৯তম স্থানে আছেন। ২০১৪ সালে এই তালিকায় শেখ হাসিনার অবস্থান ছিল ৪৭তম।

এশীয় পর্যায়ে

২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবসের শতবর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা সিএনএন ক্ষমতাধর ৮ এশীয় নারীর তালিকা প্রকাশ করেছিল। উক্ত তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে ছিলেন শেখ হাসিনা।

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে

চলচ্চিত্র

  • ২০১৮ সালে পিপলু খানের পরিচালনায় আওয়ামী লীগের সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের সহায়তায় নির্মিত হাসিনা: এ ডটার'স টেল নামক তথ্যচিত্রে শেখ হাসিনার জীবনীর বিভিন্ন দিক সরাসরি তুলে ধরা হয়।
  • ২০২১ সালের আল জাজিরার ওরা প্রধানমন্ত্রীর লোক- প্রামান্যচিত্রে শেখ হাসিনাকে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এর দন্ডপ্রাপ্ত ভাইদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে চিত্রায়িত করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায় জেনারেল আজিজ আহমেদের দন্ডপ্রাপ্ত ভাইদের মধ্যে একজন যিনি হারিস নামে পরিচিত তিনি প্রধানমন্ত্রীর থেকে পৃষ্ঠপোষকতা পাবার কথা বলছেন।

স্থাপনা

বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নাম শেখ হাসিনার নামে নামকরণ করা হয়েছে; যার প্রায় সবই শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
বিচারপতি মো. হাবিবুর রহমান
তত্ত্বাবধায়ক
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
২৩ জুন, ১৯৯৬ - ১৫ জুলাই, ২০০১
উত্তরসূরী
বিচারপতি লতিফুর রহমান
তত্ত্বাবধায়ক
পূর্বসূরী
ফখরুদ্দীন আহমদ
তত্ত্বাবধায়ক
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
৬ জানুয়ারি, ২০০৯ – বর্তমান
নির্ধারিত হয়নি

Tags:

শেখ হাসিনা প্রারম্ভিক জীবনশেখ হাসিনা রাজনৈতিক জীবনশেখ হাসিনা আন্দোলন-সংগ্রামশেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টাশেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ও গ্রেফতার, অক্টোবর ২০০৬-২০০৮শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদকাল, ২০০৯-২০১৪শেখ হাসিনা তৃতীয় মেয়াদকাল (২০১৪-২০১৯)শেখ হাসিনা চতুর্থ মেয়াদকাল (২০১৯-২০২৪)শেখ হাসিনা পঞ্চম মেয়াদকাল (২০২৪-বর্তমান)শেখ হাসিনা সমালোচনাশেখ হাসিনা সৃষ্টিকর্মশেখ হাসিনা সম্মাননাশেখ হাসিনা জনপ্রিয় সংস্কৃতিতেশেখ হাসিনা তথ্যসূত্রশেখ হাসিনা বহিঃসংযোগশেখ হাসিনাএকাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৮প্রধানমন্ত্রীবাংলাদেশবাংলাদেশ আওয়ামী লীগবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসংসদ সদস্য

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

মাযহাবসাদ ইবনে মুয়াজসামন্ত লাল সেনএম. এ. চিদম্বরম স্টেডিয়ামযৌন প্রবেশক্রিয়াসুভাষচন্দ্র বসুএইচআইভি/এইডসমুজিবনগর সরকারইসলামে আদমখালেদা জিয়াবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়আন্দ্রে রাসেলপ্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর২০২৩ নেদারল্যান্ডসে অস্ট্রিয়া পুরুষ ক্রিকেট দল বনাম জার্মানিরয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরআর্জেন্টিনাজাতীয় গণহত্যা স্মরণ দিবসবাংলার নবজাগরণবাংলাদেশের অর্থনীতিরফিক আজাদবাংলাদেশ পুলিশউপনয়নঢাকা জেলাসংবিধানআনন্দবাজার পত্রিকাসূরা মুলকআব্দুল কাদের জিলানীভালোবাসাইব্রাহিম (নবী)গর্ভধারণগায়ত্রী মন্ত্রব্রহ্মপুত্র নদহরে কৃষ্ণ (মন্ত্র)পশ্চিমবঙ্গে ভারতের সাধারণ নির্বাচন, ২০২৪জীবনানন্দ দাশগোত্র (হিন্দুধর্ম)সোনাকুমিল্লাতাশাহহুদউইকিপিডিয়াফিলিস্তিনি সঙ্গীতবাংলাদেশের জাতিগোষ্ঠীআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসাইপ্রাসবাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীআহল-ই-হাদীসপশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন, ২০২১কালো জাদুসিঙ্গাপুরবাটাপলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমগোলাপজাকির নায়েকতারাবীহবেগম রোকেয়াজাতীয় স্বাধীনতা দিবসের তালিকাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান২০২৪ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগযোনি পিচ্ছিলকারকউত্তম কুমারমসজিদে কুবাউমর ইবনুল খাত্তাবমহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রপ্রেমপ্রথম বিশ্বযুদ্ধরমজানডিএনএবাঙালি জাতিকলা (জীববিজ্ঞান)শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডজার্মানি জাতীয় ফুটবল দলরামমোহন রায়বাংলাদেশের কোম্পানির তালিকাবাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্রের তালিকাবসন্তপহেলা বৈশাখপর্যায় সারণি🡆 More