টরন্টো

টরন্টো উত্তর আমেরিকা মহাদেশের রাষ্ট্র কানাডার দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অবস্থিত অন্টারিও প্রদেশের রাজধানী শহর। এটি কানাডার বৃহত্তম মহানগর এলাকা (মোঁরেয়াল ২য় বৃহত্তম) ও গোটা উত্তর আমেরিকার ৪র্থ বৃহত্তম নগরী (মেক্সিকো সিটি, নিউ ইয়র্ক সিটি এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের পরেই)। অর্থনৈতিকভাবে কানাডার সবচেয়ে সমৃদ্ধ প্রদেশ অন্টারিও-র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর বলে এটি দেশটির আর্থিক ও ব্যবসায়িক প্রাণকেন্দ্র। টরন্টো শহরটি অন্টারিও হ্রদের উত্তর-পশ্চিম তীরে অবস্থিত। শহরটি দক্ষিণ-মধ্য অন্টারিও প্রদেশে ও অন্টারিও হ্রদের পশ্চিম তীর ধরে বিস্তৃত গোল্ডেন হর্সশু (অর্থাৎ “সোনালী নাল”) নামক অত্যন্ত নগরায়িত ও শিল্পায়িত একটি অঞ্চলের অংশ। অন্টারিও হ্রদটি কানাডা-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সীমানার একটি অংশ গঠন করেছে। ফলে টরন্টো উত্তর আমেরিকার গ্রেট লেকস তথা বৃহৎ হ্রদগুলির মাধ্যমে প্রধান প্রধান মার্কিন শিল্পকেন্দ্রগুলির সাথে সংযুক্ত। অন্যদিকে সেন্ট লরেন্স নদীর মাধ্যমে এটি আটলান্টিক মহাসাগরগামী জাহাজগুলিকেও স্বাগত জানাতে পারে। এই দুই কারণে টরন্টো একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্র। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে শহরটির ব্যাপক প্রবৃদ্ধি সংঘটিত হয়েছে। তার আগে এটি একটি শান্ত প্রাদেশিক শহর ছিল। ২০শ শতকের শেষে এসে টরন্টো একটি প্রাণবন্ত আন্তর্জাতিক মহানগরীতে পরিণত হয়েছে। ১৯৯৮ সালে পার্শ্ববর্তী ইস্ট ইয়র্ক, এটোবিকোক, নর্থ ইয়র্ক এবং স্কারবোরো “বারো” বা উপশহরগুলিকে টরন্টোর সাথে একীভূত করে সিটি অফ টরন্টো গঠন করা হয়। আদি টরন্টোর আয়তন মাত্র ৯৭ বর্গকিলোমিটার হলেও বর্তমানে টরন্টো শহরের আয়তন ৬৩২ বর্গকিলোমিটার। মহানগর টরন্টো এলাকার আয়তন ৫,৮৬৮ বর্গকিলোমিটার (তুলনামূলকভাবে মোঁরেয়াল মহানগর এলাকার আয়তন প্রায় ৪০০০ বর্গকিলোমিটার)। মূল টরন্টো শহরে প্রায় ২৭ লক্ষ এবং মহানগর এলাকাতে ৬২ লক্ষ লোকের বাস।

টরন্টো
শহর
সিটি অব টরন্টো
টরন্টো
ডাউনটাউন টরন্টো এবং সিএন টাওয়ারের দিগন্ত রূপরেখা
টরন্টো
অন্টারিও লেজিসলেটিভ বিল্ডিং
টরন্টো
টরন্টো সাইন এবং সিটি হল
টরন্টো
হাম্বার বে আর্চ ব্রিজ
টরন্টো
কাসা লোমা
টরন্টো
রয়্যাল অন্টারিও মিউজিয়াম
টরন্টো
স্কারবোরো ব্লাফস
টরন্টোর পতাকা
পতাকা
টরন্টোর প্রতীক
প্রতীক
টরন্টোর অফিসিয়াল লোগো
লোগো
ডাকনাম: T.O., T-Dot, Hogtown, The Queen City, Toronto the Good, The City Within a Park
নীতিবাক্য: Diversity Our Strength
Location of Toronto and its census metropolitan area in the province of Ontario
Location of Toronto and its census metropolitan area in the province of Ontario
টরন্টো কানাডা-এ অবস্থিত
টরন্টো
টরন্টো
কানাডায় টরন্টোর অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ৪৩°৪২′ উত্তর ৭৯°২৪′ পশ্চিম / ৪৩.৭০০° উত্তর ৭৯.৪০০° পশ্চিম / 43.700; -79.400
রাষ্ট্রটরন্টো কানাডা
Provinceটরন্টো Ontario
DistrictsEast York, Etobicoke, North York, Old Toronto, Scarborough, York
EstablishedAugust 27, 1793 (as York)
IncorporatedMarch 6, 1834 (as Toronto)
AmalgamatedJanuary 1, 1998 (from Metropolitan Toronto)
সরকার
 • ধরনMayor-council
 • MayorJohn Tory
 • Deputy MayorNorm Kelly
 • CouncilToronto City Council
 • MPs
List of MPs
 • MPPs
List of MPPs
আয়তন
 • শহর৬৩০ বর্গকিমি (২৪০ বর্গমাইল)
 • পৌর এলাকা১,৭৪৯ বর্গকিমি (৬৭৫ বর্গমাইল)
 • মহানগর৭,১২৫ বর্গকিমি (২,৭৫১ বর্গমাইল)
উচ্চতা৭৬ মিটার (২৪৯ ফুট)
জনসংখ্যা (2011)
 • শহর২৬,১৫,০৬০ (১st)
 • জনঘনত্ব৪,১৪৯/বর্গকিমি (১০,৭৫০/বর্গমাইল)
 • পৌর এলাকা৫১,৩২,৭৯৪ (১st)
 • মহানগর৫৫,৮৩,০৬৪ (১st)
বিশেষণTorontonian
সময় অঞ্চলEST (ইউটিসি-5)
 • গ্রীষ্মকালীন (দিসস)EDT (ইউটিসি-4)
Postal code spanM
এলাকা কোড416, 437, 647
NTS Map030M11
GNBC CodeFEUZB
ওয়েবসাইটwww.toronto.ca

ইউনিভার্সিটি অ্যাভিনিউ টরন্টোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, যার মাথায় সবুজ শ্যামল ও ডিম্বাকৃতির কুইন্স পার্ক অবস্থিত, যার ভেতরে অন্টারিও প্রদেশের আইনসভা বা সংসদ ভবনগুলি দাঁড়িয়ে আছে। শহরকেন্দ্রের উল্লেখযোগ্য ভবনের মধ্যে আছে মেট্রো হল এবং নেথান ফিলিপস স্কোয়ারে অবস্থিত সুদৃশ্য দুইটি বক্রাকৃতির অট্টালিকা নিয়ে গঠিত সিটি হল বা নগর ভবন। আরেকটি আংশিকভাবে সৌরবিদ্যুৎ-চালিত ও চোখে পড়ার মত অট্টালিকাতে অন্টারিও পাওয়ার জেনারেশন নামক শক্তি সরবরাহ সংস্থার সদর দফতর অবস্থিত। নগরকেন্দ্রেই সেন্ট জেমস অ্যাংলিকান ক্যাথিড্রাল এবং সেন্ট মাইকেল রোমান ক্যাথলিক ক্যাথিড্রাল দুইটি ধর্মীয় স্থাপনা উল্লেখ করার মত। শনিবার সকালে সেন্ট লরেন্স বাজারটিতে অনেক জনসমাগম ঘটে। টরন্টোর নগরকেন্দ্রটি বেশ কয়েকটি অট্টালিকার সমাহার নিয়ে গঠিত, তবে এদের সবাইকে ছাড়িয়ে সবার উপরে দাঁড়িয়ে আছে সি এন টাওয়ার নামের সুউচ্চ স্থাপনাটি। ৫৫৩ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট সি এন টাওয়ার বর্তমানে টরন্টো শহরের একটি প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

টরন্টো অন্টারিও ছাড়াও কানাডার গোটা ইংরেজিভাষী সম্প্রদায়ের জন্য সাংস্কৃতিক কেন্দ্রবিন্দু। এখানে তিনটি সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সমগ্র দেশের শিল্পোৎপাদন, আর্থিক ও ব্যাংকিং কেন্দ্র হিসেবে টরন্টো কানাডার অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। বহু গুরুত্বপূর্ণ কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয় এই শহরে অবস্থিত।

এছাড়াও টরন্টো শহর কানাডার টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। শহরটি চলচ্চিত্র নির্মাণ, টেলিভিশনের জন্য অনুষ্ঠান প্রযোজনা এবং সংবাদ সম্প্রচারের জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যম টরন্টো শহরেই কেন্দ্রীভূত হয়েছে। টরন্টোতে উপস্থিত বহু জাদুঘর, নাট্যশালা ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক সেবাগুলি পর্যটকদের কাছে শহরটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। শহরকেন্দ্রের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলির মধ্যে আর্ট গ্যালারি অফ অন্টারিও (অর্থাৎ অন্টারিও শিল্পকলা চিত্রশালা), রয়াল অন্টারিও মিউজিয়াম (রাজকীয় অন্টারিও জাদুঘর), হকি হল অফ ফেম (হকির সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের জন্য সম্মানসূচক স্থাপনা) এবং দ্য বেল লাইটবক্স, যেখানে টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রধান কার্যালয়টি অবস্থিত।

টরন্টো শহরে সবুজ উদ্যানেরও অভাব নেই; কুইন্স পার্ক ছাড়াও এখানে আছে ৪০০ একর আয়তনবিশিষ্ট হাই পার্ক, যার ভেতরে হাঁটার পথ, খেলাধুলার জায়গা এবং একটি চিড়িয়াখানাও আছে।

সি এফ টরন্টো ইটন সেন্টার শহরটির বৃহত্তম বিপণী বিতান বা শপিং মল। ইয়োঙ্গে স্ট্রিট রাস্তাটি মূল কেনাকাটার রাস্তা। কাছেই রয়েছে চায়নাটাউন এবং ঐতিহাসিক কেন্সিংটন মার্কেটের দোকান ও কগিঘরগুলি। এগুলির পশ্চিমে কুইন স্ট্রিট ওয়েস্ট রাস্তাতে হালের রেস্তোরাঁ, কুটিরশিল্পের দোকান ও চিত্রশালার দেখা মিলবে। হ্রদের তীর থেকে ফেরি করে গ্রামীণ প্রকৃতির টরন্টো আইল্যান্ডস নামের দ্বীপগুলিতে ঘুরে আসা যায়, যেখানে প্রমোদভ্রমণ ও সাইকেলচালনা করা সম্ভব। পূর্ব দিকে ডিস্টিলারি ডিসট্রিক্ট নামক ১৯শ শতকীয় শিল্পকারখানা এলাকাটি বর্তমানে শিল্পকলা চিত্রশালা ও কুটিরশিল্পের ছোট ছোট দোকানে পূর্ণ।

টরন্টোর জলবায়ুতে ঋতুগুলি পরিষ্কারভাবে আলাদা, তবে হ্রদের উপস্থিতির কারণে জলবায়ুর চরমভাব খানিকটা প্রশমিত হয়। গ্রীষ্মকালগুলি উষ্ণ ও আর্দ্র; কিন্তু শীতকালে তাপমাত্রা প্রায়ই শূন্যের নিচে নেমে যায়। জুলাই মাসের গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৭ ডিগ্রী এবং জানুয়ারি মাসের গড় তাপমাত্রা সর্বনিম্ন -১ ডিগ্রী সেলসিয়াস হতে পারে।

টরন্টো শহরটি বিশ্বের সবচেয়ে বহুসাংস্কৃতিক ও বহুজাতিক শহরগুলির একটি হিসেবে খ্যাত। কানাডাতে আগত বহু অভিবাসীর গন্তব্যস্থল এই টরন্টো শহর। শহরের প্রায় অর্ধেক লোকই কানাডায় জন্মগ্রহণ করেনি; তাই এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ অভিবাসী অনুপাতবিশিষ্ট শহর। শহরে ২০০-রও বেশি ভিন্ন জাতিগত লোক বাস করে যাদের সিংহভাগ ইংরেজি ভাষায় কথা বললেও মোট ১৬০টিরও বেশি ভাষা টরন্টোতে শুনতে পাওয়া সম্ভব।

টরন্টোর শেয়ার বাজার কানাডার সর্ববৃহৎ এবং বিশ্বের ৭ম বৃহত্তম শেয়ার বাজার। অপরাধের স্বল্প হার, জীবনযাত্রার উচ্চ মান, এবং প্রাকৃতিত পরিবেশের সঠিক দেখাশোনার সুবাদে টরন্টো বিশ্বের সবচেয়ে বাসযোগ্য শহরগুলির একটি। শহরটির প্রতিবেশী শহর মিসিসগাতে টরন্টো-পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি অবস্থিত।

টরন্টো শহর যে এলাকাটিতে অবস্থিত, সেটি ইংরেজরা স্থানীয় আমেরিকান আদিবাসী গোত্র মিসিসগার কাছে থেকে কিনে নেয় এবং এখানে ১৭৯৩ সালে ইয়র্ক নামের একটি শহর প্রতিষ্ঠা করে। ১৮৩৪ সালে এর নাম বদলে টরন্টো রাখা হয়। ১৮৬৭ সালে কানাডা ফেডারেশন বা যুক্তরাষ্ট্র গঠনের সময় টরন্টোকে অন্টারিও প্রদেশের রাজধানীর মর্যাদা দেওয়া হয়।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Tags:

অন্টারিওউত্তর আমেরিকাকানাডানিউ ইয়র্ক সিটিমেক্সিকো সিটিলস অ্যাঞ্জেলেস

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

অসমাপ্ত আত্মজীবনীবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদবিশাহ জাহানজ্ঞানমিয়া খলিফাকালীব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাবাজিগানা ডট কমসময়রেখাপরমাণুরঙের তালিকাইউটিউবারতাকওয়াবাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরদের তালিকাকুরাসাওপিপীলিকা (অনুসন্ধান ইঞ্জিন)ফুটিশাকিব খান অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকাউইকিবইজিমেইলদোয়া কুনুতপ্রথম উসমানবাংলার নবজাগরণআগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাবাংলাদেশ সরকার২০২৩ তুরস্ক–সিরিয়া ভূমিকম্পইউসুফধানছারপোকাওমানলাঙ্গলবন্দ স্নানআলবার্ট আইনস্টাইনইসবগুলবাংলাদেশের উপজেলাজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ম্যানুয়েল ফেরারাসংক্রামক রোগসূরা ফাতিহামুসলিমক্যান্সারমহাবিস্ফোরণ তত্ত্বকুরআনখ্রিস্টধর্মহরমোনমালদ্বীপপর্তুগালমামুনুর রশীদখালিদ বিন ওয়ালিদবেগম রোকেয়াসিংহরক্তশূন্যতাআংকর বাটবাংলা টিভি চ্যানেলের তালিকাবাংলা ভাষা আন্দোলনঅশ্বগন্ধাঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানরাজনীতিবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাবাংলাদেশের নদীর তালিকাআকবরডেঙ্গু জ্বরআরবি ভাষাবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীদের তালিকাআবুল কাশেম ফজলুল হক২৮ মার্চআলহামদুলিল্লাহরক্তের গ্রুপসেহরিনিউটনের গতিসূত্রসমূহমাযহাবকেন্দ্রীয় শহীদ মিনারমাতৃভাষীর সংখ্যা অনুসারে ভাষাসমূহের তালিকাগাঁজা (মাদক)দারাজলিটন দাসষাট গম্বুজ মসজিদবঙ্গভঙ্গ (১৯০৫)ভারত বিভাজন🡆 More