সুমো

সুমো 相撲 (সুমো) জাপানের জাতীয় খেলা হিসেবে পরিচিত। প্রতিযোগিতামূলক ও পূর্ণাঙ্গরূপে সংস্পর্শযোগ্য খেলা হিসেবে দু'জন প্রতিযোগী একে-অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করে। তন্মধ্যে একজন কুস্তিগির (রিকিশি) জোরপূর্বক অন্য কুস্তিগিরকে বৃত্তাকার চক্র বা দোহাইও'র বাইরে ফেলা কিংবা ভূমি স্পর্শ করার চেষ্টা করে থাকেন।

সুমো (相撲)
সুমো
জানুয়ারি, ২০০৮ সালে ইউকোজুনা এবং কোমুসুবি'র মধ্যকার সুমো খেলার দৃশ্য
লক্ষ্যআঁকড়ে ধরা
কঠোরতাপূর্ণ সংস্পর্শ
উৎপত্তির দেশজাপান জাপান
অলিম্পিক খেলানা
দাপ্তরিক ওয়েবসাইটhttp://www.sumo.or.jp/eng/

উৎপত্তি রহস্য

প্রাক-ইদো শাসনামলে জাপানে সুমো খেলার উৎপত্তি হয়েছে। সনাতন জাপানী খেলাধুলা হিসেবে সুমো খেলা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে উৎপত্তি ঘটেছে। পৃথিবীর একমাত্র দেশ হিসেবে জাপানেই পেশাদারী পর্যায়ে এ খেলা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণতঃ এটি জেন্দাই বুদো নামে পরিচিত যা জাপানের আধুনিক মার্শাল আর্ট নামে বিবেচিত। এই সংজ্ঞাটি ভুল হলেও সুমো প্রাচীন কলাবিদ্যা হিসেবে তার জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রেখেছে স্ব-মহিমায়। তাছাড়া, আধুনিক যুগের প্রচার মাধ্যমেও এটি বহুল প্রচার পেয়েছে।

সুমো 
অক্টোবর, ২০০৭ সালে কিতাজাকুরা হিদেতোশি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হবার পূর্বে লবণ ছিটাচ্ছেন।

অনেক প্রাচীন সংস্কার সুমো খেলায় শিন্তো ধর্মীয় বিশ্বাসে আবদ্ধ। এমনকি আজো এ খেলায় আচার ও উপাদান হিসেবে লবণ ছিটানোর মাধ্যমে পরিশুদ্ধিকরণ অন্যতম। এ সংস্কারটি শিন্তো ধর্মাবলম্বীতে প্রচলিত রয়েছে। অধিকাংশ সুমো কুস্তিগিরকে সমাজে অবস্থানের পাশাপাশি সুমো প্রশিক্ষণের যোগ্যতা অর্জন করতে হয়। জাপানে এটি হেয়া নামে পরিচিত। সেখানে তাদেরকে দৈনিক জীবনধারণের জন্য খাদ্য গ্রহণ থেকে শুরু করে একই ধরনের পোশাক পরিধান করতে হয়। এগুলো সবই অবশ্য পালনীয় নির্দেশমালা ও কঠোর সংস্কার হিসেবে পালিত হয়।

যোগ্যতা অর্জনের জন্য ব্যক্তিকে নমুনা ও প্রাথমিক যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে শক্তিমত্তা যাচাই করতে হয়। প্রচলিত সংস্কার অনুযায়ী বেশ কিছু সুমো খেলা সত্যিকার অর্থেই ধর্মীয় বিধি-বিধানে পরিচালিত যা শিন্তোদের মন্দিরে নাচ প্রদর্শনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কুস্তিগিরকে কামি (শিন্তো স্বর্গীয় আত্মা) নামে অভিহিত করা হয়। কিছু খেলা ভবিষ্যৎ কথন বা ভবিষ্যদ্বাণী হিসেবে বিবেচ্য। যেমনঃ একজন কৃষক এবং জেলের মধ্যেকার খেলায় যদি জেলে জয়ী হয়, তাহলে ঐ বৎসর অনেক মৎস্য আহরণ করা যাবে বলে বিশ্বাস করা হয়। জাপান সাম্রাজ্যের প্রচলিত আইন অনুযায়ী এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার হিসেবে আখ্যায়িত। প্রতিটি রাজ্যের প্রতিনিধিকে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণপূর্বক লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করাকে বাধ্যতামূলক করা হয়। অবশ্য, কুস্তিগিরকে যাতায়াত বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান করা হয়। এ প্রতিযোগিতা সুমাইন নো সেচি বা সুমাই পার্টি নামে পরিচিত।

জয়লাভের নিয়ম

একজন সুমো কুস্তিগিরকে জয়লাভ করতে হলে -

  • প্রথম কুস্তিগির জোরপূর্বকভাবে তার প্রতিপক্ষকে বৃত্তাকার ব্যূহ থেকে বাইরে ফেলে দিতে হবে।
অথবা,
  • প্রথম কুস্তিগির জোরপূর্বকভাবে তার প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে ভূমি স্পর্শ করবে।

খুব কম সময়ই খেলা পরিচালনাকারী হিসেবে রেফারী বা বিচারককে বিজয়ী নির্ধারণে অংশগ্রহণ করেন কুস্তিগিরের সর্বাগ্রে ভূমি স্পর্শ করার বিষয়ে। যদি উভয় কুস্তিগিরই প্রায় একই সময়ে ভূমি স্পর্শ করেন, তাহলে যিনি একটু দেরীতে ভূমি স্পর্শ করেন তিনি পরাজিত হবেন ও জয়লাভের সুযোগ নেই। যদি একই সময়ে উভয়েই ভূমি স্পর্শ করেন, সেক্ষেত্রে যিনি জ্যেষ্ঠ তিনিই বিজয়ী হবেন। এক্ষেত্রে পরাজিত কুস্তিগিরকে শিনি-তাই (মৃত দেহ) নামে ডাকা হয়। এছাড়াও, খুবই স্বল্প ব্যবহারযোগ্য নিয়ম হিসেবে বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়। যেমনঃ একজন কুস্তিগির যদি অবৈধ কৌশল (বা কিনজিত) প্রয়োগ করে তাহলে ঐ কুস্তিগির স্বাভাবিক নিয়মে পরাজিত হবার ফলে প্রতিপক্ষ বিজয়ী হবে। কুস্তিগির যদি লড়াইয়ে আঘাতজনিত কারণে পরে যায় তাহলে সে-ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে হেরে যাবে যা ফুসেনপাই নামে পরিচিত। বিজয়ী ঘোষণার পর গিওজি বা রেফারী বিজয়ের কৌশল নিদর্শনস্বরূপ কিমারিত প্রয়োগ করেন যা মাইকে ঘোষণা করা হয়।

পেশাদারী সংস্থা

সবচেয়ে জনপ্রিয় পেশাদারী খেলা হিসেবে জাপানে বেসবল, ফুটবল এবং সুমো প্রচলিত রয়েছে। তন্মধ্যে, সুমো খেলা জাপানের জাতীয় খেলা হিসেবে স্বীকৃত। পেশাদার সুমো খেলা জাপান সুমো সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত হয়। সংস্থার সদস্যগণ ওয়েকাতা নামধারী হন। সদস্যগণের সকলেই সাবেক কুস্তিগির। তারাই নতুন কুস্তিগিরদেরকে প্রশিক্ষণের জন্য নির্ধারিত প্রশিক্ষক। সংস্থা কর্তৃক এ খেলার যাবতীয় আইন-কানুন সংরক্ষিত ও প্রবর্তিত হয়েছে। লক্ষ্যণীয় যে, মার্শাল আর্টে অংশগ্রহণকারী সকল খেলোয়াড়ই পেশাদার নয়, কিছু খেলোয়াড় সৌখিনভাবেও অংশগ্রহণ করে থাকেন। সকল সুমো কুস্তিগিরকে সুমো প্রশিক্ষণের যোগ্যতা হেয়া অর্জন করে ওয়েকাতাদের মধ্য থেকে একজনের নিয়ন্ত্রণে থেকে স্থায়ীভাবে প্রশিক্ষণ নেয়। বর্তমানে প্রায় ৭০০ কুস্তিগির ৫৪জন প্রশিক্ষকের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

পেশাদারী সুমো

সকল সুমো কুস্তিগির শিকোনা নামে কু্স্তিগিরের নতুন নাম গ্রহণ করেন, যা তাদের প্রকৃত নামের সাথে সম্পৃক্ত নয়। প্রায়শঃই কুস্তিগিরগণ তাদের নাম পছন্দ নিয়ে খুব কমই সুযোগ পেতেন যা তাদের প্রশিক্ষক (স্টেবলমাস্টার) বা সমর্থক বা পরিবারের সদস্যগণ ডাকতেন ও খেলায় অনুপ্রবেশে উদ্বুদ্ধ করতেন। বিদেশে জন্মগ্রহণকারী কুস্তিগিরগণের জন্যেই মূলতঃ এটি প্রযোজ্য ছিল। তবে একজন সুমো কুস্তিগির তার খেলোয়াড়ী জীবনে বেশ কয়েকবার নাম পরিবর্তন করতে পারতেন।

সম্পূর্ণরূপেই সুমো কুস্তি খেলা কঠোরভাবে শৃঙ্খলিত খেলাধুলার শক্ত মানদণ্ডে আবদ্ধ। কুস্তিগিরগণ ইদো শাসনামল থেকে প্রচলিত শত-শত বছরের পুরনো পদ্ধতিতে শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়াবিদ হিসেবে পরিগণিত হন। পুরো বছরব্যাপী ৬টি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ও যথাযথ দক্ষতা প্রদর্শনের মাধ্যমে কুস্তিগিরকে উত্তরণ অথবা অবনমিত করা হয়। খুবই সতর্কতার সাথে ব্যানজুক তালিকা প্রস্তুত করা হয়। প্রতিটি সুমো প্রতিযোগিতা শুরুর দুই সপ্তাহ পূর্বে প্রধান যাজক কর্তৃক তা প্রকাশ করা হয়।

বিভাজন

সুমো খেলায় ৬টি বিভাগ রয়েছে। তন্মধ্যে -

  • মাকুচি: সর্বোচ্চ ৪২ জন কুস্তিগির।
  • জুরিও: নির্ধারিত ২৮ জন কুস্তিগির।
  • মাকুশিতা: নির্ধারিত ১২০ জন কুস্তিগির।
  • সানদানমে: নির্ধারিত ২০০ জন কুস্তিগির।
  • জোনিদান: আনুমানিক ২৩০ জন কুস্তিগির।
  • জোনোকুচি: আনুমানিক ৮০ জন কুস্তিগির।

একজন কুস্তিগিরকে প্রাথমিকভাবে সর্বনিম্ন স্তর জোনোকুচি বিভাগে অংশগ্রহণ করতে হয়। দক্ষতা প্রদর্শনের উপর নির্ভর করে তাকে উপরের বিভাগে উত্তরণ ঘটানো হয়। শীর্ষ দুই বিভাগের কুস্তিগিরগণ সেকিতোরি নামে পরিচিত। সাধারণতঃ নিচের দুই বিভাগে কুস্তিগিরগণ শ্রেণীগত ভাষায় রিকিসি নামে পরিচিত হয়ে থাকেন। শীর্ষস্থানীয় মাকুচি বিভাগে অংশগ্রহণকারীগণ সমর্থকদের কাছ থেকে সর্বাপেক্ষা মনোযোগ আকর্ষণ করেন।

জাপানে প্রতি বৎসরই নিয়মিতভাবে প্রদর্শনীমূলক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। শীর্ষস্থানীয় কুস্তিগিরগণ বিদেশে আনুমানিক প্রতি দু'বছরে একবার এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। কিন্তু এ ধরনের প্রদর্শনী খেলার ফলাফল তাদের স্থান নির্ধারণে কোন প্রভাব বিস্তার করে না। রাঙ্ক ব্যবস্থা শুধুমাত্র গ্র্যান্ড সুমো টুর্নামেন্ট বা হোনবাশো'য় ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপনার উপর নির্ধারিত হয়।

সুমো কুস্তিগির

সুমো 
তরুণ নিম্নস্তরের সুমো কুস্তিগিরগণ প্রাত্যহিকভিত্তিতে পায়ের কারুকাজ করে থাকে।

সুমো কুস্তিগিরকে খুবই শৃঙ্খলিত জীবনযাপন করতে হয়। সুমো সংস্থা কুস্তিগিরদের জন্য কিছু সংক্ষিপ্ত আচরণবিধি নিরূপণ করেছে। খুবই সাংঘাতিক ধরনের গাড়ী দূর্ঘটনার প্রেক্ষাপটে সংস্থাটি কুস্তিগিরদেরকে গাড়ী চালানোয় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ নিয়মের ব্যতয় ঘটলে তাকে জরিমানা এবং/অথবা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এ জরিমানা এবং/অথবা নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র কুস্তিগিরের জন্যই প্রযোজ্য নয়; বরং তার স্টেবলমাস্টার বা প্রশিক্ষকের উপর আরোপিত হয়।

সুমো হিসেবে আবির্ভূত হবার পর তাদের মাথার মধ্যভাগের চুল বড় করে রাখা হয় যা চনমেজ নামে পরিচিত। চুল রাখার ধরনটি ইদো শাসনামলে প্রচলিত সামুরাই চুল রাখার পদ্ধতির অনুরূপ। এছাড়াও তারা প্রাচীন জাপানী পোশাক পরিধানপূর্বক জনসমক্ষে বের হন। এরফলে, স্বাভাবিকভাবেই সুমো কুস্তিগিরগণকে খুব দ্রুত অন্যান্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে চিহ্নিত করা সম্ভবপর। কুস্তিগিরদের প্রকার এবং দক্ষতা প্রদর্শনের উপর তাদের পোশাক নির্ভরশীল। রিকিশিরা শরীরের ঊর্ধ্বাংশে জোনিদান এবং নিম্নাংশে উকাতা নামে পরিচিত বস্ত্র যা পাতলা তুলা দিয়ে প্রস্তুত পোশাক পরিধান করে। শীত-গ্রীষ্ম উভয় ঋতুতেই তা পরিধান করতে হয়। তবে যদি জনসমক্ষে হাজির হতে হয় তাহলে ঐ পোশাকের সাথে অবশ্যই কাঠ দিয়ে বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত জুতা ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়। এরফলে তাদের হাঁটার সময় ক্লিপ-ক্লপ আওয়াজ বেরোয়। এছাড়া অন্যান্য কুস্তিগিররা তাদের অবস্থানের উপর নির্ভর করে মাকুশিতা, জোরি, সিল্কের বস্ত্র, অইচো ব্যবহার করেন।

জীবনধারা

সুমো 
ইউকোজুনা আশাশোরিও আকিনোরি খেলায় অংশগ্রহণের জন্য অপেক্ষা করছেন।

তাদের জন্য নির্ধারিত জীবন পদ্ধতিতেও পার্থক্য রাখা হয়েছে। কনিষ্ঠ হিসেবে রিকিশিদেরকে সকাল ৫টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠতে হয়। কিন্তু সেকিতোরিদের ঘুম ৭টায় ভাঙ্গলেও চলে। এছাড়াও, রিকিশিদেরকে দুপুরের খাবার রান্না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, স্নানের জন্য প্রস্তুতিসহ সেকিতোরিদের জন্য তোয়ালেও নিয়ে আসতে হয় ও ধরে রাখতে হয়। এ ধারাটি প্রশিক্ষণ শেষ হবার পরও প্রযোজ্য। স্বাভাবিক নিয়মে রিকিশিগণকে সকালের নাস্তা গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয় না। তারা বাধ্যতামূলকভাবে বৃহৎ আকারের দুপুরের খাবার গ্রহণের পর নিদ্রাগমন করতে হয়। সচরাচর দুপুরের খাবারে ভাতসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ, মাংস এবং শাকসবজি থাকে। এছাড়াও কোমল পানীয় বিয়ার গ্রহণ করতে হয়। এ ধারায় প্রচলিত হয়ে বিশেষ করে সকালের নাস্তাবিহীন অবস্থায় দুপুরের ভুড়িভোজ এবং ঘুমের প্রেক্ষাপটেই খুব তাড়াতাড়ি তারা বিশাল ওজন ও দেহধারীর অধিকারীত্ব অর্জন করে।

বিকেলে কনিষ্ঠ রিকিশিরা পুনরায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কিংবা অন্য কোন কাজ-কর্মে নিযুক্ত থাকে। পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকতে হয়। পড়াশোনা পদ্ধতি সাধারণ শিক্ষা পদ্ধতির তুলনায় ভিন্নতর হয়ে থাকে। তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচিত জ্যেষ্ঠ সেকিতোরিগণ অবসর সময় কাটানো কিংবা তাদের কর্মপন্থা নিয়ে সমর্থকদের সাথে আলাপ-আলোচনায় ব্যস্ত থাকেন। সন্ধ্যায় সেকিতোরিগণ তাদের ব্যবসায়িক সহযোগীগণের সাথে বাইরে বের হন। কিন্তু কনিষ্ঠরা বাসায় অবস্থান করেন।

সেকিতোরিগণ বসবাসের জন্য নিজস্ব কক্ষে কিংবা বিয়ে করে নিজস্ব গৃহে অবস্থান করতে পারেন। এর বৈপরীত্য চিত্র হিসেবে কনিষ্ঠ রিকিশিরা একত্রিত হয়ে বহু শয্যাবিশিষ্ট শয়ন ঘরে অবস্থান করে। বৈশ্বিকভাবে সুমো কুস্তিগিরগণ মূলতঃ দু'ধারায় বিভক্ত। কনিষ্ঠ রিকিশি - সেবা প্রদানকারী এবং সেকিতোরি - সেবা গ্রহীতা। নতুন নিয়োগকৃত ব্যক্তিগণ স্বাভাবিকভাবেই বিব্রতকর অবস্থায় থেকে জীবনধারণ করেন। তাদেরকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ-কর্মে লিপ্ত রাখা হয়। ফলে এ সময়কালেই সবচেয়ে বেশীসংখ্যক পলায়ণ কিংবা চলে যাবার ঘটনা ঘটে।

সুমোদের জীবনধারা ব্যাপক ও বিপজ্জনকভাবে ব্যাহত হয় মূলতঃ তাদের পরবর্তী জীবনে এবং তা নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। তাদের গড়পড়তা আয়ু হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে। তাদের গড় আয়ু অন্যান্য জাপানী পুরুষদের তুলনায় ১০ বছরের কম হয়ে থাকে। এ সময় তারা প্রায়শঃই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদযন্ত্র আক্রমণজনিত সমস্যায় ভোগে রোগে আক্রান্ত হন। অতিরিক্ত এলকোহল বা মদ্যপানের ফলে তারা যকৃতের সমস্যায় ভোগে। অতিরিক্ত মদ পানের ফলে সন্ধিপ্রদাহজনিত বা গেটে বাত রোগে আক্রান্ত হয়। সাম্প্রতিককালে ওজন বৃদ্ধির বিষয়ে শৈথিল্য আনয়ণের মানদণ্ড প্রণীত হয়েছে যা কুস্তিগিরদের স্বাস্থ্যের উপর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। গড়পড়তা সুমো কুস্তিগিরদের উচ্চতা প্রায় ১৮০ সে.মি. বা ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি।

বেতন কাঠামো

২০০৬ সালের তথ্য অনুসারে শীর্ষ বিভাগীয় পেশাদারী সুমোগণ মাকুচিতে জাপানী মুদ্রা ইয়েনে নিম্নরূপ মাসিক বেতন গ্রহণ করেন।

  • ইয়োকোজুনা: ২,৮২০,০০০ (প্রায় $৩০,৫০০ ডলার)
  • ওজেকি: ২,৩৪৭,০০০ (প্রায় $২৫,০০০ ডলার)
  • স্যানিয়াকু: ১,৬৯৩,০০০ (প্রায় $১৮,০০০ ডলার)
  • মেইগেশিরা: ১,৩০৯,০০০ (প্রায় $১৪,০০০ ডলার)
  • জুরিও: ১,০৩৬,০০০ (প্রায় $১১,০০০ ডলার)

কুস্তিগিরগণ যারা দ্বিতীয় বিভাগের খেলেন, তারা প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে বিবেচিত হন। তাদেরকে বেতনের পরিবর্তে কেবলমাত্র স্বল্প পরিমাণে ভাতা দেয়া হয়।

তথ্যসূত্র

আরও পড়ুন

বহিঃসংযোগ

Tags:

সুমো উৎপত্তি রহস্যসুমো জয়লাভের নিয়মসুমো পেশাদারী সংস্থাসুমো পেশাদারী সুমো কুস্তিগিরসুমো জীবনধারাসুমো বেতন কাঠামোসুমো তথ্যসূত্রসুমো আরও পড়ুনসুমো বহিঃসংযোগসুমো

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

দুরুদকলমবাংলা লিপিতাশাহহুদসূরা বাকারাবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদবিতায়াম্মুমপর্নোগ্রাফিভারতহিমোগ্লোবিনকাবাসভ্যতাপাখিমৌলিক সংখ্যাভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসপরিমাপ যন্ত্রের তালিকাপারাপাঞ্জাব, ভারতবাংলাদেশের জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীআইজাক নিউটনপ্লাস্টিক দূষণইংরেজি ভাষাবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়যৌন প্রবেশক্রিয়াবাংলাদেশের ইতিহাসসালাতুত তাসবীহইহুদি ধর্মআল-আকসা মসজিদথ্যালাসেমিয়া২০২০-২৩ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগপেশীপ্রবালঅ্যান মারিআল্লাহর ৯৯টি নামরামায়ণপানিআকবরপশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালদের তালিকান্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালহা জং-উভারতের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাসমকামিতাদ্বিপদ নামকরণদর্শনপাকিস্তানডিজিটাল বাংলাদেশভূগোলকোষ (জীববিজ্ঞান)জিৎ অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকানোয়াখালী জেলাপৃথিবীর ইতিহাসহুমায়ূন আহমেদচট্টগ্রামছয় দফা আন্দোলনআসসালামু আলাইকুম২০২৩ তুরস্ক–সিরিয়া ভূমিকম্পবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়বগুড়া জেলামহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রকোষ বিভাজনঢাকা মেট্রোরেলমুহাম্মাদের মৃত্যুকুরাসাওএস এম শফিউদ্দিন আহমেদবাংলাদেশের ইউনিয়নজনসংখ্যা অনুযায়ী সার্বভৌম রাষ্ট্র ও নির্ভরশীল অঞ্চলসমূহের তালিকাবাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডভরিইহুদিবীরাঙ্গনাবাংলার ইতিহাসবাঙালি জাতিশিক্ষাশিখধর্মপাঠশালাইউরোপীয় ইউনিয়ন🡆 More