সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ

সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ( তেলুগু: సర్వేపల్లి రాధాకృష్ణ; তামিল: சர்வேபள்ளி ராதாகிருஷ்ணன் ; ৫ সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮– ১৭ এপ্রিল, ১৯৭৫) ছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ও দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯৪৯ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নে ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রদূত ছিলেন। এছাড়াও তার আগে সর্বপল্লী ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ উপাচার্য এবং ১৯৩ থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় উপাচার্য ছিলেন। রাধাকৃষ্ণন তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব দর্শনে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে প্রভাবশালী এবং বিশিষ্ট পণ্ডিতদের একজন হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি ১৯২১ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক এবং নৈতিক বিজ্ঞানের রাজা পঞ্চম জর্জ চেয়ার এবং ১৯৩৬ থেকে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইস্টার্ন রিলিজিয়ন অ্যান্ড এথিক্সের স্প্যাল্ডিং চেয়ারের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পরপর দুই মেয়াদে উপ-রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং পরে এক মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং ভারতের সবচেয়ে সংকটময় সময়ে তিনি (চীন ও পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধকালীন ) প্রধানমন্ত্রীদের দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তার জন্মদিন ৫ সেপ্টেম্বর ভারতে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত।

সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ
సర్వేపల్లి రాధాకృష్ణ
সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ
ভারতের ২য় রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
১৩ মে, ১৯৬২ – ১৩ মে, ১৯৬৭
পূর্বসূরীরাজেন্দ্র প্রসাদ
উত্তরসূরীজাকির হুসেন
ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি
কাজের মেয়াদ
১৯৫২ – ১৯৬২
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম৫ সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮
তিরুতণি,তামিলনাড়ু, দক্ষিণ ভারত
মৃত্যু১৭ এপ্রিল, ১৯৭৫
চেন্নাই, ভারত
রাজনৈতিক দলস্বাধীন
সন্তানপাঁচ জন মেয়ে এবং এক জন ছেলে
পেশারাজনীতিবিদ, দার্শনিক, অধ্যাপক
ধর্মহিন্দুধর্ম
পুরস্কারভারত রত্ন(১৯৫৪)

সাফল্য

সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ 
স্টকহোমে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তোলা রাধাকৃষ্ণনের ছবি, ১৯৪৯।

সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ছিলেন।প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর, ভারতে শিক্ষক দিবসরূপে পালিত হয়।

একজন আদর্শ শিক্ষক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ [৫ সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮ – ১৭ এপ্রিল, ১৯৭৫] আজকের দিনে তামিলনাডুর তিরুট্টানিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি (১৯৫২-১৯৬২) এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি(১৯৬২-৬৭) ছিলেন।

একাধারে রাজনীতিবিদ, দার্শনিক ও অধ্যাপক এই শান্ত মানুষটি ছাত্রজীবনে অতি মেধাবী ছিলেন। জীবনে কোনো পরীক্ষায় দ্বিতীয় হননি। বিভিন্ন বৃত্তির মাধ্যমে তার ছাত্র জীবন এগিয়ে চলে। ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তার বিষয়টি ছিল ‘বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্বকল্পনা’(The Ethics of the Vedanta and its Metaphysical Presuppositions)।

তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা সচ্ছল ছিল না। দূর সম্পর্কের এক দাদার কাছ থেকে দর্শনের বই পান এবং তখনই ঠিক করেন তিনি দর্শন নিয়ে পড়বেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করার জন্য তিনি "বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্বকল্পনা " (The Ethics of the Vedanta and its metaphysical Presuppositions) বিষয়ে একটি গবেষণা মূলক প্রবন্ধ লেখেন। তিনি ভেবেছিলেন তার  গবেষণামূলক প্রবন্ধ দর্শনের অধ্যাপক বাতিল করে দেবেন। কিন্তু অধ্যাপক অ্যালফ্রেড জর্জ হগ তার প্রবন্ধ পড়ে খুবই খুশি হন। এই প্রবন্ধ যখন ছাপানো হয় তখন রাধাকৃষ্ণাণ এর বয়স ২০ বছর।

বিশ্বের দরবারে তিনি অতি জনপ্রিয় দার্শনিক অধ্যাপক হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। ১৯৩১ সালে তাকে British knighthood-এ সম্মানিত করা হয়। ১৯৫৪তে ভারতরত্ন উপাধি পান।

প্রথম জীবনে তিনি মাইসোর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করেন (১৯১৮)। এসময় তিনি বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পত্রিকায় লিখতেন। সে সময়েই তিনি লেখেন তার প্রথম গ্রন্থ ‘The Philosophy of Rabindranath Tagore’। দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘The Reign of Religion in Contemporary Philosophy’প্রকাশিত হয় ১৯২০সালে। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেন। দেশ–বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বারবার অধ্যাপনার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার গুণমুগ্ধ ছাত্র ও বন্ধুরা তাঁর জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন ‘জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস উদ্‌যাপিত হয় তবে আমি বিশেষরূপে অনুগ্রহ লাভ করবো।’

যদুনাথ সিংহের সঙ্গে মোকদ্দমা

১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে অধ্যাপক যদুনাথ সিংহ ভারতের সারস্বত সমাজকে নাড়িয়ে দিয়ে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের বিরুদ্ধে থিসিস চুরির অভিযোগে কলকাতা উচ্চআদালতে মামলা করেন। যদুনাথ সিংহ প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তির জন্য যে গবেষণাপত্রটি ইন্ডিয়ান সাইকলজি অব পারসেপশন প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড জমা দিয়েছিলেন, সেই গবেষণাপত্র থেকে ব্যাপকভাবে টুকে ধরা পড়েছিলেন রাধাকৃষ্ণান।

১৯২৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল রাধাকৃষ্ণানের সাড়া জাগানো বই "ইন্ডিয়ান ফিলজফি"র দ্বিতীয় খণ্ড, যা ছিল ডঃ যদুনাথ সিংহের গবেষণাপত্রটির পুনর্মুদ্রণ। ডঃ সিংহ এই চুরির বিষয়টি জানতে পারেন যখন ১৯২৮ সালে রাধাকৃষ্ণানের দ্য বেদান্ত অ্যাকর্ডিং টু শংকর অ্যান্ড রামানুজ নামে আরো একটি বই প্রকাশিত হয়। এই বইটি ছিল রাধাকৃষ্ণনের ইন্ডিয়ান ফিলজফি দ্বিতীয় খণ্ডের অষ্টম এবং নবম অধ্যায়ের একটি স্বতন্ত্র পুনর্মুদ্রণ। সেই বইটি থেকেই যদুনাথ সিংহ সবিস্ময়ে জানতে পারেন যে তার গবেষণার প্রথম দুটি অধ্যায় থেকে অনেক অনুচ্ছেদ খ্যাতনামা অধ্যাপক রাধাকৃষন চুরি করেন।

ডঃ সিংহ মর্ডান রিভিউ পত্রিকায় রাধাকৃষ্ণনের এই চৌর্যবৃত্তির ইতিবৃত্ত তুলনামূলক ভাবে প্রকাশ করেন। সিংহপুরুষ যদুনাথ সিংহ মরিসন রিভিউ পত্রিকার মাধম্যে ও কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে রাধাকৃষ্ণনের মতো মহান মানুষের প্রকৃত মুখোশ খুলে দেন। কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলাটির রায় না বের করেই মামলার স্থগিতাদেশ দিয়ে দেন। কিন্তু ডঃ সিংহ মানুষদের জানিয়ে দিয়েছিলেন রাধাকৃষ্ণনের চৌর্যবৃত্তির কথা।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

সরকারি দফতর
পূর্বসূরী
রাজেন্দ্র প্রসাদ
ভারতের রাষ্ট্রপতি
১৯৬২–১৯৬৭
উত্তরসূরী
জাকির হুসেইন

Tags:

সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ সাফল্যসর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ যদুনাথ সিংহের সঙ্গে মোকদ্দমাসর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ তথ্যসূত্রসর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ বহিঃসংযোগসর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণঅক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়উপরাষ্ট্রপতি ভবন (ভারত)উপাচার্যকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়চীনজাতীয় শিক্ষা দিবস (ভারত)তামিল ভাষাতুলনামূলক ধর্মতত্ত্বতেলুগু ভাষাপাকিস্তানপ্রধানমন্ত্রীবেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ভারতভারতের উপরাষ্ট্রপতিভারতের রাষ্ট্রপতিরাষ্ট্রপতিসোভিয়েত ইউনিয়ন১৭ই এপ্রিল৫ই সেপ্টেম্বর

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

সাপআবুল কাশেম ফজলুল হকবিশেষ্যছয় দফা আন্দোলনডিএনএবঙ্গাব্দক্লিওপেট্রাউত্তম কুমারের চলচ্চিত্রের তালিকামানিক বন্দ্যোপাধ্যায়সামন্ততন্ত্রব্রিটিশ ভারতবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়বাংলাদেশের জেলাসমূহের তালিকাশ্রাবস্তী দত্ত তিন্নিপাগলা মসজিদসাদ্দাম হুসাইনআতিকুল ইসলাম (মেয়র)প্রাণ-আরএফএল গ্রুপদৈনিক যুগান্তরআল মনসুরঅজিত কুমার পাঁজাকাজী নজরুল ইসলামসংস্কৃত ভাষাফজরের নামাজযোহরের নামাজদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধফরাসি বিপ্লবম্যালেরিয়াগণতন্ত্রজীবনানন্দ দাশশিব নারায়ণ দাসপূরণবাচক সংখ্যা (ভাষাতত্ত্ব)দোয়া কুনুতরাঙ্গামাটি জেলানাহরাওয়ানের যুদ্ধকালিদাসমুহাম্মাদ ফাতিহসম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিকুড়িগ্রাম জেলারাজ্যসভাআর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলমোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনবাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়তাপস রায়ধর্ষণপ্রাকৃতিক দুর্যোগশনি (দেবতা)পৃথিবীর ইতিহাসবিদায় হজ্জের ভাষণলিওনেল মেসিআয়াতুল কুরসিশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়গাঁজা (মাদক)চাকমাখাদ্যসহীহ বুখারীজলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবখুলনা বিভাগকুয়েতঅভিস্রবণবিজয় দিবস (বাংলাদেশ)গোত্র (হিন্দুধর্ম)মলাশয়ের ক্যান্সারআহসান মঞ্জিলচুম্বকগাজীপুর জেলাবিষ্ণুবাংলাদেশের রাজনৈতিক দলসমূহের তালিকাডায়াজিপামআলিসিরাজগঞ্জ জেলাভারতীয় জনতা পার্টিউদ্ভিদকোষবাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের বিচারকবৃন্দনারায়ণগঞ্জ জেলাবিশ্ব বই দিবসইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন🡆 More