ভারতরত্ন

ভারতরত্ন (হিন্দি: भारत रत्न, হিন্দি উচ্চারণ: ; ভারতের রত্ন) হল ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা। ১৯৫৪ সালের ২ জানুয়ারি এই সম্মান চালু হয়। জাতি, পেশা, পদমর্যাদা বা লিঙ্গ নির্বিশেষে সর্বোচ্চ স্তরের ব্যতিক্রমী সেবা/কার্যের স্বীকৃতি স্বরূপ এই সম্মান প্রদান করা হয়। প্রথম দিকে এই সম্মান কেবলমাত্র শিল্পকলা, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও জনসেবায় বিশেষ কৃতিত্বের অধিকারীদেরই দেওয়া হত। কিন্তু ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারত সরকার এই সম্মান প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মানবিক কৃতিত্বের যে কোনো ক্ষেত্র নামে আরো একটি শর্ত যুক্ত করে। যাকে ভারতরত্ন প্রদান করা হয় তার নাম ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেন। বছরে সর্বোচ্চ তিন জনকে ভারতরত্ন সম্মান প্রদান করা হয়। প্রাপক ভারতের রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর-সংবলিত একটি সনদ (প্রশংসাপত্র) এবং অশ্বত্থ পাতার আকৃতি-বিশিষ্ট একটি পদক পান। এই সম্মানের সঙ্গে কোনো অর্থমূল্য দেওয়া হয় না। ভারতীয় পদমর্যাদা ক্রমে ভারতরত্ন প্রাপকদের স্থান সপ্তম। তবে এই সম্মানের নাম উপাধি হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক নিষেধাজ্ঞা আছে।

ভারতরত্ন
ভারতরত্ন
ধরনজাতীয় বেসামরিক
দেশভারতরত্ন ভারত
ফিতাভারতরত্ন
সম্মুখভাগঅশ্বত্থ (Ficus religiosa) পাতার উপর সূর্যের প্রতীকচিহ্ন এবং দেবনাগরী লিপিতে "ভারতরত্ন" শব্দটি খোদিত
বিপরীত পার্শ্বকেন্দ্রে ভারতের জাতীয় প্রতীক (প্ল্যাটিনামে নির্মিত) এবং ভারতের জাতীয় নীতিবাক্য "সত্যমেব জয়তে" (সত্যেরই জয় সম্ভব) দেবনাগরী লিপিতে খোদিত
প্রতিষ্ঠিত১৯৫৪
অগ্রাধিকার
পরবর্তী (সর্বনিম্ন)পদ্মবিভূষণ

১৯৫৪ সালে রাজনীতিবিদ চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী, দার্শনিক সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন ও বিজ্ঞানী চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন ভারতরত্ন সম্মান পান। তারাই ছিলেন এই সম্মানের প্রথম প্রাপক। তারপর থেকে ৪৫ জন ব্যক্তি এই সম্মান পেয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ জনকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া হয়েছে। প্রথম দিকে মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রদানের ব্যবস্থা না থাকলেও ১৯৫৫ সালের জানুয়ারি মাসে নিয়ম পরিবর্তন করা হয়। ১৯৬৬ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী প্রথম মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মান পান। ২০১৩ সালে ক্রিকেটার শচীন তেন্ডুলকর ৪০ বছর বয়সে ভারতরত্ন সম্মান পান। তিনিই কনিষ্ঠতম ভারতরত্ন প্রাপক। অন্যদিকে ধোন্দো কেশব কার্ভেকে তার ১০০তম জন্মদিনে ভারতরত্ন সম্মান দেওয়া হয়। সাধারণত ভারতীয় নাগরিকদের এই সম্মান দেওয়া হয়ে থাকে। তবে ১৯৮০ সালে বিদেশি-বংশোদ্ভূত ভারতীয় নাগরিক মাদার টেরেসা ভারতরত্ন সম্মান পান। এছাড়া দু-জন বিদেশি নাগরিককেও ভারতরত্ন সম্মান প্রদান করা হয়েছিল। ১৯৮৭ সালে পাকিস্তানি নাগরিক খান আবদুল গফফর খান এবং ১৯৯০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলা ভারতরত্ন সম্মান পান। ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর ভারত সরকার স্বাধীনতা সংগ্রামী মদনমোহন মালব্য (মরণোত্তর) ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে এই সম্মান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।

১৯৭৭ সালের জুলাই মাস থেকে ১৯৮০ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ভারতের প্রথম অকংগ্রেসী কেন্দ্রীয় সরকার অন্যান্য ব্যক্তিগত বেসামরিক সম্মাননার সঙ্গে ভারতরত্ন সম্মানও রদ করেছিল। এরপর ১৯৯২ সালের আগস্ট থেকে ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এই সম্মানের সাংবিধানিক বৈধতা-সংক্রান্ত কয়েকটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয় বার এই সম্মান প্রদান বন্ধ ছিল। ১৯৯২ সালে সরকার সুভাষচন্দ্র বসুকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মান প্রদান করতে চাইলে তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক থাকায়, এই সম্মানের সঙ্গে মরণোত্তর শব্দটি যুক্ত করায় সমালোচিত হয় এবং সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবার এই সম্মান গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। ১৯৯৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি সিদ্ধান্তের পর প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুভাষচন্দ্র বসুর সম্মাননা প্রদান বাতিল করা হয়। এই একবারই সম্মাননা ঘোষণার পর সেটি বাতিল করা হয়েছিল।

এছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তির পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয় সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুইন্দিরা গান্ধী যথাক্রমে ১৯৫৫ এবং ১৯৭১ সালে মনোনীত হওয়ায় সমালোচিত হয়েছেন। কে কামারাজ (১৯৭৬) এবং এম জি রামচন্দ্রনের (১৯৮৮) মরণোত্তর পুরস্কার অর্জন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রচারণার লক্ষ্যে হয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়েছিল। বল্লভভাই পটেল (১৯৯১) ও মদনমোহন মালব্যের (২০১৫) মরণোত্তর পুরস্কার অর্জনও সমালোচিত হয়েছিল।

ইতিহাস

১৯৫৪ সালের ২ জানুয়ারি ভারতের রাষ্ট্রপতির সচিবের কার্যালয় থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে দুটি বেসামরিক সম্মাননা চালু করার কথা ঘোষণা করা হয়। এই সম্মাননা দুটি ছিল সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ভারতরত্ন এবং ত্রিস্তরীয় পদ্মবিভূষণ ("প্রথম বর্গ", "দ্বিতীয় বর্গ" ও "তৃতীয় বর্গ" নামে শ্রেণিবদ্ধ)। উল্লেখ্য, পদ্মবিভূষণ সম্মাননার স্থান ছিল ভারতরত্নের নিচে। ১৯৫৫ সালের ১৫ জানুয়ারি পদ্মবিভূষণ সম্মাননাটিকে পুনরায় তিনটি সম্মাননায় বিভক্ত করা হয়। এগুলি হল: পদ্মবিভূষণ (তিনটি সম্মাননার মধ্যে সর্বোচ্চ), পদ্মভূষণপদ্মশ্রী

ভারতরত্ন সম্মাননার প্রাপককে ভারতীয় হতেই হবে – এমন কোনো নিয়ম নেই। বিদেশি বংশোদ্ভুত ভারতীয় নাগরিক মাদার টেরেসা ১৯৮০ সালে ভারতরত্ন সম্মাননা পেয়েছিলেন। এছাড়া দু-জন বিদেশি নাগরিকও ভারতরত্ন সম্মান পান। পাকিস্তানি নাগরিক খান আবদুল গফফর খান ১৯৮৭ সালে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলা ১৯৯০ সালে ভারতরত্ন পেয়েছিলেন। শচীন তেন্ডুলকর ৪০ বছর বয়সে ভারতরত্ন সম্মান পান; তিনিই এই সম্মাননার কনিষ্ঠতম প্রাপক। ১৯৫৮ সালের ১৮ এপ্রিল ধোন্দো কেশব কার্ভেকে তার ১০০তম জন্মদিনে ভারতরত্ন সম্মাননা দেওয়া হয়েছিল। ২০১৫ সাল পর্যন্ত মোট ৪৫ জনকে ভারতরত্ন সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১২ জন মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মান পেয়েছেন।

ভারতরত্ন সম্মাননা প্রদান ইতিহাসে দু-বার রদ করা হয়েছিল। ১৯৭৭ সালে মোরারজি দেসাই ভারতের চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর প্রথম বার ভারতরত্ন রদ করা হয়েছিল। ১৯৭৭ সালের ১৩ জুলাই তার সরকার সবকটি অসামরিক সম্মাননা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। ১৯৮০ সালের ২৫ জানুয়ারি ইন্দিরা গান্ধী পুনরায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলে এই সম্মাননা আবার চালু হয়। ১৯৯২ সালের মধ্যভাগে দুটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অসামরিক সম্মাননাগুলি আবার রদ হয়েছিল। উক্ত মামলা দুটির একটি কেরল হাইকোর্টে এবং অপরটি মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে দায়ের করা হয়েছিল। এই মামলা দুটিতে সম্মাননাগুলির "সাংবিধানিক যৌক্তিকতা" নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরিসমাপ্তির পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আবার এই সম্মাননাগুলি চালু করা হয়।

নিয়মাবলী

ভারতরত্ন সম্মান প্রদান করা হয় "সর্বোচ্চ স্তরের ব্যতিক্রমী সেবা/কার্যের স্বীকৃতি স্বরূপ।" ১৯৫৪ সালের নিয়ম অনুসারে, শুধুমাত্র শিল্পকলা, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও সমাজ সেবার ক্ষেত্রেই এই সম্মান প্রদান করা হত। ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে নিয়ম পরিবর্তন করে "মানবিক প্রচেষ্টার যে কোনো ক্ষেত্রে" এই সম্মান প্রদানের নিয়ম প্রবর্তিত হয়। ১৯৫৪ সালের নিয়মে মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রদানের ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু ১৯৫৫ সালের জানুয়ারি মাসে সেই নিয়ম পরিবর্তন করে মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রদানের ব্যবস্থা চালু হয়। ১৯৬৬ সালে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীকে প্রথম মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রদান করা হয়।

ভারতরত্ন সম্মান প্রদানের জন্য কোনো আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন পদ্ধতি নেই। তবে কেবল ভারতের প্রধানমন্ত্রীই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাপকের নাম সুপারিশ করতে পারেন। বছরে সর্বাধিক তিন জনের নাম সুপারিশ করা যায়। যদিও ১৯৯৯ সালে চার জনকে এই সম্মান প্রদান করা হয়েছিল। ভারতরত্ন প্রাপক রাষ্ট্রপতির সাক্ষর-সংবলিত একটি "সনদ" (শংসাপত্র) এবং একটি পদক পান। এই সম্মানের সঙ্গে কোনো অর্থমূল্য প্রদান করা হয় না। ভারতের সংবিধানের ১৮ (১) ধারা অনুসারে, যিনি ভারতরত্ন সম্মান পান, তিনি এই সম্মানটিকে উপাধির আকারে তার নামের আগে বা পরে ব্যবহার করতে পারেন না। তবে তিনি যে ভারতরত্ন সম্মান পেয়েছেন, সেটি প্রকাশ করার জন্য "রাষ্ট্রপতি-কর্তৃক ভারতরত্ন সম্মাননা প্রাপ্ত" বা "ভারতরত্ন প্রাপক" জাতীয় শব্দবন্ধ ব্যবহার করতে পারেন। ভারতীয় পদমর্যাদা ক্রমে ভারতরত্ন সম্মাননা প্রাপকের স্থান ৭ম।

ভারত সরকারের নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রকাশনা বিভাগের দ্য গেজেট অব ইন্ডিয়া নামক প্রকাশনায় বিভিন্ন সরকারি ঘোষণা ও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ভারতরত্ন সম্মান প্রদানের ঘোষণাও এই প্রকাশনায় ঘোষণা ও নথিভুক্ত করতে হয়। গেজেটে প্রকাশ না করে এই সম্মাননা প্রদান বৈধ বলে গণ্য হয় না। কোনো প্রাপকের থেকে সম্মাননা বাতিল বা প্রত্যাহার করতে হলেও তা গেজেটে নথিভুক্ত করতে হয়। প্রাপকের সম্মাননা বাতিল বা প্রত্যাহারের অধিকার কেবল রাষ্ট্রপতিরই আছে। যাঁর সম্মাননা বাতিল বা প্রত্যাহৃত হয়, তাকে পদকটি ফেরত দিতে হয় এবং নথি থেকে তার নাম কাটা যায়।

বৈশিষ্ট্য

১৯৫৪ সালে এই সম্মাননার বৈশিষ্ট্য ছিল একটি + ইঞ্চি (৩৫ মিমি) ব্যাস-বিশিষ্ট গোলাকার সোনার পদক। এই পদকের সামনের দিকে কেন্দ্রে সূর্যের একটি প্রতিকৃতি অঙ্কিত থাকত। তার উপরে দেবনাগরী হরফে "ভারতরত্ন" শব্দটি রুপোর গিল্টিতে এবং নিচের দিকে শিরোমাল্য খোদিত থাকত। পিছনের দিকে কেন্দ্রে প্ল্যাটিনামে খচিত ভারতের জাতীয় প্রতীক এবং তার নিচে রুপোর গিল্টিতে ভারতের জাতীয় নীতিবাক্য "সত্যমেব জয়তে" দেবনাগরী লিপিতে খোদিত থাকত।

এক বছর পর পদকের নকশায় পরিবর্তন আনা হয়। এই পরিবর্তিত নকশাতেই বর্তমান পদকটি দেওয়া হয়। বর্তমান পদকটি একটি অশ্বত্থ পাতার আকৃতিবিশিষ্ট। এটির দৈর্ঘ্য +১৬ ইঞ্চি (৫৯ মিমি), প্রস্থ + ইঞ্চি (৪৮ মিমি) এবং স্থূলতা ইঞ্চি (৩.২ মিমি)। পদকটিতে প্ল্যাটিনামের বেড় দেওয়া থাকে। সামনের দিকে প্ল্যাটিনামে নির্মিত সূর্যের প্রতীক চিহ্নটি বর্তমান। এটির ব্যাস ইঞ্চি (১৬ মিমি)। সূর্যের রশ্মিগুলির দৈর্ঘ্য ইঞ্চি (২১ মিমি) থেকে ইঞ্চি (১৩ মিমি) পর্যন্ত (সূর্যের কেন্দ্র থেকে)। সামনের দিকে ১৯৫৪ সালের পদকটির মতোই "ভারতরত্ন" কথাটি খচিত। অন্যদিকে প্রথম পদকটির মতোই ভারতের জাতীয় প্রতীক ও "সত্যমেব জয়তে" কথাটি খোদিত। ২-ইঞ্চি-প্রশস্ত (৫১ মিমি) একটি সাদা রিবনের মাধ্যমে পদকটিকে প্রাপকের গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৫৭ সাল থেকে রুপোর গিল্টির পরিবর্তে পালিশ-করা ব্রোঞ্জ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ, পদ্মশ্রী, এবং পরমবীর চক্র অন্যান্য অসামরিক ও সামরিক পুরষ্কারের পাশাপাশি "ভারতরত্ন" পদক কলকাতার আলিপুর টাঁকশালে তৈরি হয়।

সুবিধা

ভারতরত্ন পুরস্কার পেলে যদিও কোন অর্থ দেওয়া হয় না।তবে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়।যেমনঃ

বিতর্ক

ভারতরত্ন সম্মাননা প্রদানকে কেন্দ্র করে একাধিক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে এবং এই সম্মাননা প্রদানের বিরুদ্ধে একাধিকবার জনস্বার্থ মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

    মৌলানা আবুল কালাম আজাদকে পুরস্কার প্রদান প্রসঙ্গে

স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা ভারতের প্রথম মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মৌলানা আবুল কালাম আজাদকে এই পুরস্কার প্রদানের কথা ঘোষণা করা হলে, তিনি জানিয়ে দেন পুরস্কার নির্বাচক সমিতির কাউকে এই পুরস্কার দেওয়া উচিত নয়। সেই সঙ্গে তিনি পুরস্কার প্রত্যাখ্যানও করেন। পরে ১৯৯২ সালে তাকে মরণোত্তর এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

    সুভাষচন্দ্র বসুকে পুরস্কার প্রদান প্রসঙ্গে
ভারতরত্ন 
১৯৯২ সালে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সুভাষচন্দ্র বসুকে মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রদানের কথা ঘোষণা করা হয়। পরে ১৯৯৭ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সেটি বাতিল ঘোষণা করে।

১৯৯২ সালের ২৩ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি সচিবালয় থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে সুভাষচন্দ্র বসুকে মরণোত্তর ভারতরত্ন সম্মাননা প্রদানের কথা ঘোষণা করা হয়। "মরণোত্তর" সম্মাননা প্রদানের বিষয়টি বিতর্ক সৃষ্টি করে। সম্মাননা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। মামলাকারী সুভাষচন্দ্রের মৃত্যুর উল্লেখ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, সম্মাননার তুলনায় মহত্তর কোনো ব্যক্তিত্বকে এই সম্মান প্রদান হাস্যকর এবং এর ফলে অতীত ও ভবিষ্যতের ভারতরত্ন প্রাপকদের সঙ্গে সুভাষচন্দ্রের অযৌক্তিক তুলনা শুরু হতে পারে। তাছাড়া মামলায় আরও জানানো হয় যে, ভারত সরকার সরকারিভাবে ১৯৪৫ সালের ১৮ অগস্ট সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যুর ঘটনাকে স্বীকার করে নেয়নি। মামলাকারী উক্ত তারিখের পর সুভাষচন্দ্র কোথায় ছিলেন সেই সম্পর্কে ১৯৫৬ সালের শাহনওয়াজ কমিটি ও ১৯৭০ সালে খোসলা কমিটির প্রতিবেদনও জনসমক্ষে আনার দাবি জানান। এছাড়া সুভাষচন্দ্র বসুর আত্মীয়রা এই সম্মান গ্রহণে অসম্মতি জানান।

মামলায় রায়দানের জন্য ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি সুজাতা ভি. মনোহর ও জি. বি. পট্টনায়েককে নিয়ে একটি স্পেশাল ডিভিশন বেঞ্চ গঠন করে। ভারতের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বলেন, সাংবিধানিক নিয়ম অনুসারে, ভারতরত্ন, পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণপদ্মশ্রী সম্মাননা প্রদানের জন্য প্রাপকের নাম দ্য গেজেট অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত হওয়া এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক রক্ষিত প্রাপক রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত হওয়া আবশ্যক। আরও বলা হয় যে, সম্মান প্রদানের বিষয়টি শুধুমাত্র সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণাই করা হয়েছিল। সরকার দ্য গেজেট অফ ইন্ডিয়া-য় প্রাপকের নাম অন্তর্ভুক্ত করেনি। তাছাড়া ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আর. ভেঙ্কটরমন (১৯৮৭-৯২) ও শঙ্কর দয়াল শর্মা (১৯৯২-৯৭) তাদের স্বাক্ষর ও সিলমোহর সহ প্রাপকের নামে কোনো সনদ প্রকাশ করেননি।

১৯৯৭ সালের ৪ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট জানায়, যেহেতু সম্মান দেওয়া হয়নি, সেহেতু এটি বাতিল করা যাবে না। ঘোষণা করা হয়, প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল বলে গণ্য করা হবে। তবে আদালত সুভাষচন্দ্র বসুর মৃত্যু ও "মরণোত্তর" শব্দটির উল্লেখ নিয়ে কোনো রায় দিতে অস্বীকার করে।

    সি এন আর রায় এবং শচীন তেন্ডুলকর (২০১৩)
সি এন আর রায়, ২০০৪ সালে

নভেম্বর ২০১৩ সালে, সি এন আর রায় এবং শচীন তেন্ডুলকরকে ভারতরত্ন পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দেয়ার পর, পুরস্কারের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে একাধিক জনস্বার্থ মামলা (পিআইএল) দায়ের করা হয়। সি এন আর রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা মাললায় উল্লেখ করা হয়, অন্যান্য ভারতীয় বিজ্ঞানীদের যেমন হোমি ভাবা এবং বিক্রম সারাভাইয়ের তার থেকে বেশি অবদান রয়েছে এবং তার ১৪০০টি গবেষণাপত্র প্রকাশের ঘটনাও "শারীরিকভাবে অসম্ভব" ছিল বলে দাবি জানায়। তারা এই মামলার হিসাবে বিষয়টিকে কুম্ভীলকবৃত্তি প্রমাণিত করে বলেন, তাকে পুরস্কার প্রদান করা উচিত নয় বরং নাকচ করাই উচিত। তথ্য অধিকার আইনের আওতায় ভারতের নির্বাচন কমিশনের কাছে দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করা হয় যে তেন্ডুলকরকে ভারতরত্ন পদকে ভূষিত করা মডেল কোড অব কন্ডাক্ট লঙ্ঘন। আবেদনকারী উল্লেখ করেন যে তেন্ডুলকর ছিলেন একজন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য, তাই তাকে ভারতরত্ন পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত দিল্লি, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, এবং মিজোরামের ভোটারদের প্রভাবিত করবে কারণ সে সময়ে এই অঞ্চলগুলোতে নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছিল। তেন্ডুলকর এবং কয়েকজন মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা আরেকটি মাললা হল, একজন ভারতীয় হকি খেলোয়াড় ধ্যান চাঁদের "ষড়যন্ত্র অভিযোগের উপেক্ষা"।"

ভারতের অন্যান্য উচ্চ আদালত সেইসাথে রাও এবং তেন্ডুলকরের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আবেদন খারিজ করে দেয়।

সমালোচনা

বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতরত্ন সম্মাননা প্রদান নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছিল। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ঘন ঘন ভারতরত্ন প্রদান এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যক্তিত্বদের উপেক্ষা করার অভিযোগ একাধিকবার উত্থাপিত হয়েছে। ভারতরত্ন সম্মাননা প্রদানের সুপারিশ প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতিকে করেন। সেই হিসেবে, ১৯৫৫ সালে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু (১৯৪৭-৬৪) ও ১৯৭১ সালে অপর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর (১৯৬৬-৭৭, ১৯৮০-৮৪) বিরুদ্ধে নিজেদের ভারতরত্ন প্রদানের অভিযোগ ওঠে।

১৯৮৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী (১৯৮৪-৮৯) চলচ্চিত্র অভিনেতা তথা তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এম. জি. রামচন্দ্রনকে মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রদান করেন। তার এই সিদ্ধান্ত ১৯৮৯ সালের তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে সমালোচিত হয়েছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামী ভীমরাও রামজি আম্বেডকরবল্লভভাই প্যাটেলের আগে রামচন্দ্রনকে ভারতরত্ন প্রদান করা নিয়েও সমালোচনা হয়। উল্লেখ্য, আম্বেডকর ও প্যাটেলকে যথাক্রমে ১৯৯০ ও ১৯৯১ সালে মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রদান করা হয়।

রবি শংকরের বিরুদ্ধে ভারতরত্নের জন্য তদ্বির করার অভিযোগ ওঠে। ইন্দিরা গান্ধী কর্তৃক কে. কামরাজকে ভারতরত্ন প্রদান ১৯৭৭ সালের তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার একটি প্রয়াস হিসেবে সমালোচিত হয়েছিল। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের বিরুদ্ধে দলিতদের প্রভাবিত করার জন্য আম্বেডকরকে মরণোত্তর ভারতরত্ন প্রদানের অভিযোগ ওঠে।

কয়েকজনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জনের পরে তাদের ভারতরত্ন প্রদান করার জন্য সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ১৯৭৯ সালে মাদার টেরিজা নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জন করলে ১৯৮০ সালে তাকে ভারতরত্ন দেওয়া হয়। আবার ১৯৯২ সালে সত্যজিৎ রায় অস্কার পুরস্কার পাওয়ার পর ভারতরত্ন পান। আবার ১৯৯৮ সালে অমর্ত্য সেন অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর ১৯৯৯ সালে ভারতরত্ন পেয়েছিলেন। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কে. আর. নারায়ানান তদনীন্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর কাছে অমর্ত্য সেনের নাম ভারতরত্ন সম্মানের জন্য সুপারিশ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী তার সুপারিশ মেনে নেন।

জনপ্রিয় দাবি

সাংবিধানিক নিয়ম অনুসারে, ভারতরত্ন প্রদানের সুপারিশ একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই রাষ্ট্রপতির কাছে করতে পারেন। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দলের বিশিষ্ট নেতানেত্রীদের ভারতরত্ন প্রদানের জন্য একাধিক দাবিও অতীতে উত্থাপিত হয়েছিল। ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কাছে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীকে ভারতরত্ন প্রদানের সুপারিশ জানিয়ে চিঠি লেখেন। এর পরেই ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) তাদের নেতা তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুকে ভারতরত্ন প্রদানের সুপারিশ জানায়। জ্যোতি বসু অবশ্য জানিয়েছিলেন, তাকে ভারতরত্ন প্রদান করা হলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করবেন। তেলুগু দেশম পার্টি নেতা এন. চন্দ্রবাবু নাইডু উক্ত দলের নেতা এন. টি. রামা রাও, বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতী তার দলের নেতা কাঁশি রাম ও শিরোমণি অকালি দল প্রকাশ সিং বাদলকে ভারতরত্ন প্রদানের সুপারিশ জানিয়েছিল।

মূল সাংবিধানিক বিধি অনুসারে, ক্রীড়াবিদদের ভারতরত্ন দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে নিয়মে পরিবর্তন এনে "মানবীয় কৃতিত্বের যে কোনো ক্ষেত্র"কে ভারতরত্নের আওতাভুক্ত করা হয়। এরপরই বিভিন্ন ক্রীড়াবিদের নাম ভারতরত্নের জন্য আলোচিত হয়। এঁদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য হলেন ফিল্ড-হকি খেলোয়াড় ধ্যান চাঁদ। তাঁর নাম একাধিকবার মরণোত্তর সম্মানের জন্য বিবেচিত হয়েছিল। ২০১১ সালের ৮২ জন সাংসদ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে ধ্যান চাঁদের নাম ভারতরত্নের জন্য সুপারিশ করেন। ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রকের পক্ষ থেকেও তাঁর নাম সুপারিশ করা হয়। সেই সঙ্গে ২০০৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক বিজয়ী শ্যুটার অভিনব বিন্দ্রা ও শেরপা তেনজিং নোরগের নামও সুপারিশ করা হয়। ২০১৩ সালের মে মাসে ন্যাশানাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকেও বিন্দ্রার নাম সুপারিশ করা হয়েছিল। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আবার ধ্যান চাঁদের নাম সুপারিশ করা হয়। ২০১৩ সালের নভেম্বরে ক্রিকেটার শচীন তেন্ডুলকর প্রথম ক্রীড়াবিদ হিসেবে ভারতরত্ন পান। ধ্যান চাঁদের আগে তেন্ডুলকরকে ভারতরত্ন প্রদান করার জন্য সরকারের বিস্তর সমালোচনা হয়।

প্রাপকদের তালিকা

সূত্র
   # বিদেশি বংশোদ্ভুত নাগরিক প্রাপক
   ভারতরত্ন  বিদেশি নাগরিক প্রাপক
   ভারতরত্ন  মরণোত্তর প্রাপক
ভারতরত্ন প্রাপকদের তালিকা
বছর চিত্র প্রাপক রাজ্য / দেশ প্রধানমন্ত্রী/
ক্ষমতাসীন দল
বিবরণ
১৯৫৪ ভারতরত্ন  সি. রাজাগোপালাচারী তামিলনাড়ু জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী, রাষ্ট্রনেতা, আইনজীবী। রাজাগোপালাচারী ছিলেন ভারতের একমাত্র ভারতীয় এবং শেষ গভর্নর-জেনারেল। তিনি মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির প্রধানমন্ত্রী (১৯৩৭-৩৯) এবং মাদ্রাজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর (১৯৫২-৫৪) দায়িত্ব পালন করেন। স্বতন্ত্র পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দলেরও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি।
ভারতরত্ন  সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন তামিলনাড়ু জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
দার্শনিক রাধাকৃষ্ণন ছিলেন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি (১৯৫২-৬২) এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি (১৯৬২-৬৭)। ১৯৬২ সাল থেকে তার জন্মদিন ৫ সেপ্টেম্বর ভারতে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয়।
ভারতরত্ন  সি. ভি. রমন তামিলনাড়ু জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
রমন আলোর বিচ্ছুরণ ও রমন স্ক্যাটারিং নামে পরিচিত এফেক্ট সংক্রান্ত গবেষণার জন্য বিখ্যাত। তিনি আণবিক পদার্থবিদ্যা ও ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিজম নিয়ে গবেষণা করেছিলেন এবং ১৯৩০ সালে পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পান।
১৯৫৫ ভারতরত্ন  ভগবান দাস উত্তরপ্রদেশ জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী, দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ। ভগবান দাস মহাত্মা গান্ধী কাশী বিদ্যাপীঠ ও কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ভারতরত্ন  এম. বিশ্বেশ্বরায়া কর্ণাটক জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, রাষ্ট্রনেতা ও মহীশূরের দেওয়ান (১৯১২-১৮)। বিশ্বেশ্বরায়া নাইট কম্যান্ডার অফ দি ইন্ডিয়ান এম্পায়ার হয়েছিলেন। তার জন্মদিন ১৫ সেপ্টেম্বর ভারতে ইঞ্জিনিয়ার দিবস হিসেবে পালিত হয়।
ভারতরত্ন  জওহরলাল নেহেরু উত্তরপ্রদেশ জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী ও লেখক। নেহেরু ভারতের দীর্ঘতম মেয়াদের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব (১৯৪৭-৬৪) পালন করেন।
১৯৫৭ ভারতরত্ন  গোবিন্দ বল্লভ পন্থ উত্তরাখণ্ড জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী। গোবিন্দ বল্লভ পন্ত ছিলেন যুক্তপ্রদেশের প্রধানমন্ত্রী (১৯৩৭-৩৯, ১৯৪৬-৫০) এবং উত্তরপ্রদেশের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী (!৯৫০-৫৪)। তিনি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বও (১৯৫৫-৬১) পালন করেন।
১৯৫৮ ভারতরত্ন  ধন্দ কেশব কর্বে মহারাষ্ট্র জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষাবিদ। কার্ভে নারীশিক্ষা ও হিন্দু বিধবা বিবাহ আন্দোলনের জন্য খ্যাত। তিনি উইডো ম্যারেজ অ্যাসোশিয়েশন (১৮৮৩), হিন্দু উইডোজ হোম (১৮৯৬) ও শ্রীমতি নাথিবাই দামোদর থ্যাকারসে মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯১৬) চালু করেন।
১৯৬১ ভারতরত্ন  বিধানচন্দ্র রায় পশ্চিমবঙ্গ জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
চিকিৎসক, রাজনৈতিক নেতা, মানবদরদী, শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী। বিধানচন্দ্র রায়কে "আধুনিক পশ্চিমবঙ্গের রূপকার" বলা হয়। তিনি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী। তার জন্মদিক ১ জুলাই ভারতে জাতীয় চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালিত হয়।
ভারতরত্ন  পুরুষোত্তম দাস ট্যান্ডন উত্তরপ্রদেশ জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী। তাকে "রাজর্ষি" বলা হয়। ট্যান্ডন উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার অধ্যক্ষ (১৯৩৭-৫০) ছিলেন। তিনি হিন্দি ভাষাকে ভারতের সরকারি ভাষা করার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
১৯৬২ ভারতরত্ন  রাজেন্দ্র প্রসাদ বিহার জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী, আইনজীবী, রাষ্ট্রনেতা ও গবেষক। রাজেন্দ্র প্রসাদ অসহযোগ আন্দোলনের সময় মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতির (১৯৫০-৬২) দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৩ ভারতরত্ন  জাকির হুসেইন তেলেঙ্গানা জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী ও শিক্ষাবিদ। হুসেন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (১৯৪৮-৫৬) ও বিহারের রাজ্যপালের (১৯৫৭-৬২) দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি ভারতের দ্বিতীয় উপরাষ্ট্রপতি (১৯৬২-৬৭) এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি (১৯৬৭-৬৯) হন।
ভারতরত্ন  পাণ্ডুরঙ্গ বামন কানে মহারাষ্ট্র জওহরলাল নেহ্‌রু,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
ভারততত্ত্ববিদ ও সংস্কৃত গবেষক। কানে পাঁচ খণ্ডে প্রকাশিত হিস্ট্রি অফ ধর্মশাস্ত্র: এনশিয়েন্ট অ্যান্ড মিডিয়েভ্যাল রিলিজিয়াস অ্যান্ড সিভিল ল অফ ইন্ডিয়া বইটির জন্য খ্যাত। প্রায় ৬,৫০০ পাতার এই বইটির প্রথম খণ্ড ১৯৩০ সালে এবং শেষ খণ্ডটি ১৯৬২ সালে প্রকাশিত হয়।
১৯৬৬ ভারতরত্ন  লাল বাহাদুর শাস্ত্রী# উত্তরপ্রদেশ ইন্দিরা গান্ধী,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
"জয় জওয়ান জয় কিশান" ("সৈনিকের জয়, কৃষকের জয়") শ্লোগানের জনক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী। শাস্ত্রী ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী (১৯৬৪-৬৬) হন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তিনি ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
১৯৭১ ভারতরত্ন  ইন্দিরা গান্ধী উত্তরপ্রদেশ ইন্দিরা গান্ধী,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী (১৯৬৬-৭৭, ১৯৮০-৮৪)। ইন্দিরা গান্ধীকে "ভারতের লৌহমানবী" বলা হয়। ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তার সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে সমর্থন করে। এই যুদ্ধের পর বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠিত হয়।
১৯৭৫ ভারতরত্ন  ভি. ভি. গিরি ওড়িশা ইন্দিরা গান্ধী,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
ট্রেড ইউনিয়ন নেতা। গিরি ভারতের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি (!৯৬৯-৭৪) নির্বাচিত হন।
১৯৭৬ ভারতরত্ন  কে. কামরাজ# তামিলনাড়ু ইন্দিরা গান্ধী,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী ও রাষ্ট্রনেতা। কামরাজ ছিলেন তামিলনাড়ুর তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী (১৯৫৪-৫৭, ১৯৫৭-৬২, ১৯৬২-৬৩)।
১৯৮০ ভারতরত্ন  মাদার টেরেসা + পশ্চিমবঙ্গ
(Born in Skopje,
now North Macedonia)
ইন্দিরা গান্ধী,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী ও মিশনারিজ অফ চ্যারিটির প্রতিষ্ঠাতা। তাকে "ব্লেসেড মাদার টেরেসা অফ ক্যালকাটা" বলা হয়। মানবসেবামূলক কাজের জন্য ১৯৭৯ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। ২০০৩ সালের ১৯ অক্টোবর পোপ দ্বিতীয় জন পল তার বিয়েটিফিকেশন করেন।
১৯৮৩ ভারতরত্ন  বিনোবা ভাবে# মহারাষ্ট্র ইন্দিরা গান্ধী,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজ সংস্কারক ও মহাত্মা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ সহকারী। তিনি ভূদান আন্দোলনের জন্য খ্যাত। বিনোবা ভাবেকে "আচার্য" বলা হয়। তিনি মানবসেবামূলক কাজের জন্য রামন ম্যাগসায়সায় পুরস্কার পেয়েছিলেন (১৯৫৮)।
১৯৮৭ ভারতরত্ন  আবদুল গাফফার খান* পাকিস্তান রাজীব গান্ধী,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী ও পাশতুন নেতা। খান আবদুল গফফর খানকে "সীমান্ত গান্ধী" বলা হয়। তিনি মহাত্মা গান্ধীর অনুগামী ছিলেন। ১৯২০ সালে তিনি খিলাফত আন্দোলনে যোগ দেন এবং ১৯২৯ সালে খুদাই খিদমতগার প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৮৮ ভারতরত্ন  এম. জি. রামচন্দ্রন# তামিলনাড়ু রাজীব গান্ধী,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ। রামচন্দ্রন ছিলেন তামিলনাড়ুর তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী (১৯৭৭-৮০, ১৯৮০-৮৪, ১৯৮৫-৮৭)
১৯৯০ ভারতরত্ন  বি. আর. আম্বেডকর# মধ্যপ্রদেশ বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং, জনতা দল (এনএফ) সমাজ সংস্কারক ও দলিত নেতা। আম্বেডকর ছিলেন ভারতের সংবিধানের প্রধান স্থপতি।
ভারতরত্ন  নেলসন ম্যান্ডেলা* দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং, জনতা দল (এনএফ) দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ-বিরোধী আন্দোলনের নেতা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি (১৯৯৪-৯৯)। ১৯৯৩ সালে তিনি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান।
১৯৯১ ভারতরত্ন  রাজীব গান্ধী# উত্তরপ্রদেশ পি. ভি. নরসিংহ রাও,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
রাজীব গান্ধী ছিলেন ভারতের নবম প্রধানমন্ত্রী (১৯৮৪-৮৯)।
ভারতরত্ন  বল্লভভাই প্যাটেল# গুজরাত পি. ভি. নরসিংহ রাও,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ভারতের প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী (১৯৪৭-৫০)। তাকে "ভারতের লৌহমানব" বলা হয়। প্যাটেলকে "সর্দার" উপাধিতেও ভূষিত করা হয়।
ভারতরত্ন  মোরারজি দেসাই গুজরাত পি. ভি. নরসিংহ রাও,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ভারতের ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী (১৯৭৭-৭৯)। পাকিস্তান সরকার তাকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান নিশান-ই-পাকিস্তান প্রদান করেছিল। তিনিই একমাত্র ভারতীয় যিনি এই সম্মান পান।
১৯৯২ ভারতরত্ন  আবুল কালাম আজাদ# পশ্চিমবঙ্গ পি. ভি. নরসিংহ রাও,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী। বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তারের কাজে তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। তাকে "মৌলানা আজাদ" বলা হত। তার জন্মদিন ১১ নভেম্বর ভারতে জাতীয় শিক্ষা দিবস হিসেবে পালিত হয়।
ভারতরত্ন  জে. আর. ডি. টাটা মহারাষ্ট্র পি. ভি. নরসিংহ রাও,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
শিল্পপতি, মানবদরদী ও বিমান ব্যবসায়ী। টাটা ভারতের প্রথম বিমান পরিষেবা এয়ার ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি বাণিজ্যিক পাইলটের লাইসেন্স পেয়েছিলেন। তিনি টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টার রিসার্চ, টাটা মেমোরিয়াল হসপিটাল, টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজ ও ন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টসের মতো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন।
ভারতরত্ন  সত্যজিৎ রায় পশ্চিমবঙ্গ পি. ভি. নরসিংহ রাও,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
চিত্র পরিচালক। তার প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র পথের পাঁচালী (১৯৫৫)। সত্যজিৎ রায় ভারতীয় চলচ্চিত্রকে বিশ্বে পরিচিত করে তোলার জন্য পরিচিত। ১৯৮৪ সালে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পান।
১৯৯৭ ভারতরত্ন  গুলজারিলাল নন্দা পাঞ্জাব ইন্দ্র কুমার গুজরাল, জনতা দল (ইউএফ) স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ভারতের দুইবারের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী (১৯৬৪ ও ১৯৬৬)। তিনি দুই বার যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারপার্সন হয়েছিলেন।
ভারতরত্ন  অরুণা আসফ আলি# হরিয়ানা ইন্দ্র কুমার গুজরাল, জনতা দল (ইউএফ) স্বাধীনতা সংগ্রামী। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় বোম্বাইতে ভারতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য খ্যাত। ১৯৫৮ সালে তিনি দিল্লির প্রথম মহানাগরিক নির্বাচিত হন।
ভারতরত্ন  এ. পি. জে. আব্দুল কালাম তামিলনাড়ু ইন্দ্র কুমার গুজরাল, জনতা দল (ইউএফ) মহাকাশযান ও প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানী। কালাম ভারতের প্রথম উপগ্রহ উৎক্ষেপন যান এসএলভি তিন নির্মাণের কাজে যুক্ত ছিলেন। তিনি ভারতের সুসংহত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচির স্থপতিও ছিলেন। তিনি ভারতীয় জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সমিতি, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন ল্যাবরেটরিতে কাজ করেন। তাকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বিজ্ঞান-বিষয়ক উপদেষ্টা, প্রতিরক্ষা গবেষণা বিভাগের সচিব ও [[প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা|প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। পরে তিনি ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন (২০০২-২০০৭)।
১৯৯৮ ভারতরত্ন  এম. এস. সুব্বুলক্ষ্মী তামিলনাড়ু ইন্দ্র কুমার গুজরাল, জনতা দল (ইউএফ) কর্ণাটকী কণ্ঠসংগীত শিল্পী। সুব্বুলক্ষ্মীকে "গানের রানি" বলে হয়। তিনিই প্রথম ভারতীয় সংগীতশিল্পী যিনি রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার পেয়েছিলেন।
ভারতরত্ন  চিদম্বরম সুব্রহ্মণ্যম তামিলনাড়ু ইন্দ্র কুমার গুজরাল, জনতা দল (ইউএফ) স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ভারতের প্রাক্তন কৃষিমন্ত্রী (১৯৬৪-৬৬)।সুব্রহ্মণ্যম ভারতের সবুজ বিপ্লবে তার অবদানের জন্য খ্যাত। ১৯৭০-এর দশকে তিনি ম্যানিলার আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থা ও মেক্সিকোতে গম গবেষণা সংস্থাতেও কাজ কাজ করেন।
১৯৯৯ ভারতরত্ন  জয়প্রকাশ নারায়ণ# বিহার অটল বিহারী বাজপেয়ী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) স্বাধীনতা সংগ্রামী, সমাজ সংস্কারক। জয়প্রকাশ নারায়ণকে "লোকনায়ক" বলা হয়। তিনি বিহার আন্দোলনের জন্য খ্যাত। ১৯৭০-এর দশকে এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল "দুর্নীতিগ্রস্ত ও অত্যাচারী কংগ্রেস সরকারকে উৎখাত করার জন্য।"
ভারতরত্ন  অমর্ত্য সেন পশ্চিমবঙ্গ অটল বিহারী বাজপেয়ী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) অর্থনীতিবিদ ও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত (১৯৯৮)। অমর্ত্য সেন সামাজিক নির্বাচন তত্ত্ব, নীতি ও রাজনৈতিক দর্শন, জনকল্যাণ অর্থনীতি, সিদ্ধান্ত তত্ত্ব, উন্নয়নমূলক অর্থনীতি, জনস্বাস্থ্য ও জেন্ডার স্টাডিজ নিয়ে গবেষণা করেছেন।
ভারতরত্ন  গোপীনাথ বরদলৈ# আসাম অটল বিহারী বাজপেয়ী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) স্বাধীনতা সংগ্রামী। বরদোলোই অসমের প্রথম মূখ্যমন্ত্রী (১৯৪৬-৫০) নির্বাচিত হয়েছিলেন। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বল্লভভাই প্যাটেলের সহযোগিতায় তিনি উত্তরপূর্ব ভারতের অসম রাজ্যটিকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করতে সাহায্য করেন। অসমের কিছু অংশ পূর্বতন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়।
ভারতরত্ন  রবি শংকর উত্তরপ্রদেশ অটল বিহারী বাজপেয়ী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) সেতার বাদক। তিনি চারবার গ্র্যামি পুরস্কার পেয়েছিলেন। তাকে "বিশ্বের সর্বাধিক পরিচিত হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতবিদ" মনে করা হয়। ভায়োলিন-বাদক ইহুদি মেনুহিন ও জর্জ হ্যারিসনের সঙ্গে একযোগেও কাজ করেছেন তিনি।
২০০১ ভারতরত্ন  লতা মঙ্গেশকর মধ্যপ্রদেশ অটল বিহারী বাজপেয়ী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) সংগীতশিল্পী। তাকে "ভারতের নাইটিঙ্গল" বলা হয়। নেপথ্য সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর ১৯৪০-এর দশকে সংগীতজীবন শুরু করেন এবং ৩৬টি ভাষায় গান গেয়েছেন। ১৯৮৯ সালে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
ভারতরত্ন  বিসমিল্লাহ্ খান বিহার অটল বিহারী বাজপেয়ী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সানাই বাদক। তিনি প্রায় আট দশক সানাই বাজিয়েছিলেন এবং তাকে এই বাদ্যটিকে ভারতীয় সংগীতের কেন্দ্রে নিয়ে আসার কারিগর মনে করা হয়।
২০০৯ ভারতরত্ন  ভীমসেন জোশী কর্ণাটক মনমোহন সিং,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (ইউপিএ)
হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় কণ্ঠসংগীত শিল্পী। যোশী কিরানা ঘরানার শিল্পী। তিনি খেয়াল সংগীতের একজন বিশিষ্ট শিল্পী।
২০১৪ ভারতরত্ন  চিন্তামণি নাগেশ রামচন্দ্র রাও কর্ণাটক মনমোহন সিং,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (ইউপিএ)
বিজ্ঞানী। সলিড-স্টেট ও মেটিরিয়ালস কেমিস্ট্রি, স্পেক্ট্রোস্কোপি ও মলিকিউলার স্ট্রাকচার নিয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি প্রুড বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি বোম্বাই ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সহ ৬৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্মানিক ডিগ্রিধারী। রাও ১৬০০টি গবেষণা পত্র ও ৪৮টি বই লিখেছেন।
ভারতরত্ন  শচীন তেন্ডুলকর মহারাষ্ট্র মনমোহন সিং,
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (ইউপিএ)
ক্রিকেটার। ১৯৮৯ সাল থেকে দুই দশক ধরে ৬৬৪টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছেন। তার অনেকগুলি রেকর্ড আছে। তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার যিনি একশোটি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি করেছেন। তিনিই প্রথম ব্যাটসম্যান যিনি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার যিই এক দিনের আন্তর্জাতিক ও টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচে ৩০,০০০-এর বেশি রান করেছেন।
২০১৫ ভারতরত্ন  মদনমোহন মালব্য# উত্তরপ্রদেশ নরেন্দ্র মোদী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) গবেষক ও শিক্ষা সংস্কারক। মালব্য অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা (১৯০৬) ও কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও (১৯১৯-১৯৩৮) ছিলেন। এছাড়া তিনি হিন্দি সাপ্তাহিক "অভ্যুদয়" (!৯০৭), ইংরেজি দৈনিক "লিডার অফ এলাহাবাদ" (!৯০৯) ও হিন্দি মাসিক "মর্যাদা" (!৯১০) চালু করেন। ১৯২৪ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত তিনি হিন্দুস্তান টাইমসের চেয়ারম্যান ছিলেন।
ভারতরত্ন  অটলবিহারী বাজপেয়ী মধ্যপ্রদেশ নরেন্দ্র মোদী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) চার দশকের সাংসদ ও ভারতের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী (১৯৯৬, ১৯৯৮, ১৯৯৯-২০০৪)। সম্পাদক, লেখক ও কবি বাজপেয়ীর কয়েকটি গ্রন্থ হল "মেরি সংসদীয় যাত্রা", "মেরি ইক্ক্যাবন কবিতায়েঁ", "লোকসভা মেঁ অটলজি", "মৃত্যু ইয়া হত্যা", "অমর বলিদান", "কইদি কবিরাজ কি কুণ্ডলিয়াঁ" ও "অমর আগ হ্যায়"।
২০১৯ ভারতরত্ন  প্রণব মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ নরেন্দ্র মোদী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) প্রণব মুখোপাধ্যায় ছিলেন একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ। ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। পাঁচ দশক ব্যাপী রাজনৈতিক কর্মজীবনে প্রণব মুখোপাধ্যায় ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন প্রবীণ নেতা। ভারত সরকারের মন্ত্রী হিসেবে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রকের দায়িত্বও গ্রহণ করেছিলেন। রাষ্ট্রপতি রূপে নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ভারতের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
ভারতরত্ন  ভূপেন হাজারিকা# আসাম নরেন্দ্র মোদী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) হাজারিকা (৮ই সেপ্টেম্বর ১৯২৬ - ৫ নভেম্বর ২০১১) ছিলেন একজন ভারতীয় প্লেব্যাক গায়ক, গীতিকার, সঙ্গীতজ্ঞ, কবি এবং আসামের থেকে চলচ্চিত্র নির্মাতা, যিনি সুধাকান্ত নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত। তার গান, লেখা এবং গাওয়া প্রধানত আসামী ভাষায়, তিনি মানবতা এবং সর্বজনীন ভ্রাতৃত্ব প্রতীক এবং অনেক ভাষায় অনুবাদ ও গাওয়া হয়েছে, বিশেষ করে বাংলা এবং হিন্দি
ভারতরত্ন  নানাজী দেশমুখ# মহারাষ্ট্র নরেন্দ্র মোদী, ভারতীয় জনতা পার্টি (এনডিএ) চন্ডিকাদাস অমৃতরাও দেশমুখ যিনি নানাজি দেশমুখ নামেও পরিচিত (১১ অক্টোবর ১৯১৬ – ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১০) ছিলেন ভারতের একজন সমাজকর্মী। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং গ্রামীণ স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে কাজ করেছেন। তিনি ভারতীয় জনসংঘের একজন নেতা এবং রাজ্যসভার সদস্যও ছিলেন।

ব্যাখ্যামূলক টীকা

তথ্যসূত্র

This article uses material from the Wikipedia বাংলা article ভারতরত্ন, which is released under the Creative Commons Attribution-ShareAlike 3.0 license ("CC BY-SA 3.0"); additional terms may apply (view authors). বিষয়বস্তু সিসি বাই-এসএ ৪.০-এর আওতায় প্রকাশিত যদি না অন্য কিছু নির্ধারিত থাকে। Images, videos and audio are available under their respective licenses.
®Wikipedia is a registered trademark of the Wiki Foundation, Inc. Wiki বাংলা (DUHOCTRUNGQUOC.VN) is an independent company and has no affiliation with Wiki Foundation.

Tags:

ভারতরত্ন ইতিহাসভারতরত্ন নিয়মাবলীভারতরত্ন বৈশিষ্ট্যভারতরত্ন সুবিধাভারতরত্ন বিতর্কভারতরত্ন সমালোচনাভারতরত্ন জনপ্রিয় দাবিভারতরত্ন প্রাপকদের তালিকাভারতরত্ন ব্যাখ্যামূলক টীকাভারতরত্ন তথ্যসূত্রভারতরত্ন গ্রন্থতালিকাভারতরত্ন আরও পড়ুনভারতরত্ন বহিঃসংযোগভারতরত্ন

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

যশস্বী জয়সওয়ালরানা প্লাজা ধসভারতের জাতীয় পতাকাব্যাকটেরিয়ারাজ্যসভামেটা প্ল্যাটফর্মসসাইপ্রাসবীর শ্রেষ্ঠ৬৯ (যৌনাসন)লালবাগের কেল্লাবাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কুয়েতসিরাজউদ্দৌলাকল্কিথ্যালাসেমিয়ালোকনাথ ব্রহ্মচারীবাংলাদেশের প্রশাসনিক অঞ্চলঅর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগঢাকা কলেজঅজিঙ্কা রাহানেবিজ্ঞাপনব্যবস্থাপনাআন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসস্বাস্থ্যের উপর তামাকের প্রভাবসালাহুদ্দিন আইয়ুবিবিদ্রোহী (কবিতা)রামকৃষ্ণ পরমহংসবাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিদের তালিকাসূর্যগ্রামীণফোনসূরা ইখলাসজৈন ধর্মবিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিমকালেমাচতুর্থ শিল্প বিপ্লবডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসিচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ইসরায়েলের ইতিহাসজালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমিরশিদ চৌধুরীইব্রাহিম রাইসিদারাজউপসর্গ (ব্যাকরণ)উসমানীয় সাম্রাজ্যঢাকা মেট্রোরেলআলী খামেনেয়ীহাদিসএশিয়াবিজ্ঞানবিটিএসকুষ্টিয়া জেলাযৌনসঙ্গমইউরোপানিচক্রবাংলা সাহিত্যকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাদক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাশারীরিক ব্যায়ামবাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রীব্যাংকভিসাবন্ধুত্বশায়খ আহমাদুল্লাহরাজশাহী বিভাগব্রিটিশ রাজের ইতিহাসবাংলাদেশের জনগণের মৌলিক অধিকারধর্মীয় জনসংখ্যার তালিকা০ (সংখ্যা)ইশার নামাজকৃষ্ণচূড়াসূরা নাসঝড়শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নিআতিফ আসলামবহুব্রীহি সমাসটিকটকপুঁজিবাদ🡆 More