সফটওয়্যার লাইসেন্স

সফটওয়্যার লাইসেন্স হল একটি বৈধ উপকরণ (সাধারণত এক ধরনের আইনগত চুক্তি যা মুদ্রিত হতেও পারে আবার নাও হতে পারে) যেটি সফটওয়্যারের ব্যবহার অথবা নতুনভাবে বিতরণ কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লেখ-স্বত্ব (কপিরাইট) আইনের অধীনে সকল সফটওয়্যারই কপিরাইট দ্বারা সংরক্ষিত, যার মধ্যে সোর্স কোড এবং অবজেক্ট কোডও পড়ে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমধর্মী শুধুমাত্র পাবলিক ডোমেইনের আওতাভূক্ত সফটওয়্যারসমূহ। কপিরাইট আইনের আওতাধীন একটি সফটওয়্যারের লাইসেন্স, লাইসেন্সধারী ব্যক্তিকে এমন ধরনের অধিকার প্রদান করে যাতে সাধারণ ব্যবহারকারী সফটওয়্যারটির এক বা একাধিক কপি ব্যবহারের অনুমতি পায়, অন্যথায় এর ব্যতিক্রম হলে সফটওয়্যারের মালিকের গঠনকৃত স্বতন্ত্র অধিকারের কপিরাইট আইন ভঙ্গ করা হবে।

সফটওয়্যার লাইসেন্স
সফটওয়্যার লাইসেন্সের কপিরাইট প্রসঙ্গে মার্ক ওয়েববিংক অনুসারে বামদিক হতে ডানদিকে, লাইসেন্সের স্বল্প অধিকার/ব্যবহারকারীর জন্য মালিক কর্তৃক প্রদানকৃত সফটওয়্যার এবং অপরিবর্তিত আরও অধিকার।

সফটওয়্যার লাইসেন্স এবং কপিরাইট আইন

বিতরণকৃত বেশিরভাগ সফটওয়্যারই এর লাইসেন্সের ধরন অনুযায়ী শ্রেণীকরণ করা যায় (নিচের ছকটি দেখুন)।

কপিরাইট আইনের অধীনে দুটি সাধারণ শ্রেণি হল মালিকানা সফটওয়্যার এবং ওপেন সোর্স ও বিনামূল্যের সফটওয়্যার, যাদের প্রত্যেকেই লাইসেন্সধারী ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট অধিকার প্রদান করে। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র ধারণাগত পার্থক্য হল ক্রেতার প্রাপ্ত সফটওয়্যারটির পরিবর্তন এবং পুনরায় ব্যবহারের অধিকার দেয়া: ওপেন সোর্স ও বিনামূল্যের সফটওয়্যার লাইসেন্স ক্রেতাকে সেই উভয় অধিকার প্রদান করে এবং সেই সাথে পরিবর্তনযোগ্য সোর্স কোড সফটওয়্যারটির (ওপেন সোর্স) সাথে সংযুক্ত করে দেয়, অন্যদিকে মালিকানা সফটওয়্যার সাধারণত ঐ ধরনের অধিকার দেয় না এবং সেইজন্য সোর্স কোডকে (ক্লোজড সোর্স) লুকিয়ে রাখে।

কপিরাইটেড সফটওয়্যার ব্যবহারের অধিকার অর্জন এবং বিধিনিষেধ আরোপ ছাড়াও, সফটওয়্যার লাইসেন্সগুলোতে সাধারণত আইনের ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী পক্ষগুলোর মধ্যে দায় এবং দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া আছে। এন্টারপ্রাইজ এবং ব্যবসায়িক সফটওয়্যার প্রায়শই ঐ ধারা গুলোর পাশাপাশি দায়ের সীমাবদ্ধতা, নিশ্চয়তা এবং নিশ্চয়তার দাবিত্যাগ, অন্যের মেধাস্বত্ব অধিকার লঙ্ঘনজনিত ক্ষতিপূরণ অন্তর্ভুক্ত করে চুক্তিবদ্ধ করে থাকে।

কপিরাইট দ্বারা সংরক্ষণের বাইরে লাইসেন্স না করা সফটওয়্যার, হয় পাবলিক ডোমেইন সফটওয়্যার (পিডি) অথবা অ-বিতরণযোগ্য, অ-অনুমতিপ্রাপ্ত লাইসেন্সের আওতাভূক্ত এবং তাদের অভ্যন্তরীণ গোপণ ব্যবসায়িক বাণিজ্য হিসেবে ধরে নেয়া হয়। বিপরীত জনপ্রিয় ধারণা অনুযায়ী, বিতরণকৃত লাইসেন্সহীন সফটওয়্যার (পাবলিক ডোমেইনের আওতাভূক্ত নয়) সম্পূর্ণ কপিরাইট দ্বারা সংরক্ষিত এবং সেইজন্য আইনগতভাবে এটি অব্যবহারযোগ্য যতক্ষণ পর্যন্ত না কপিরাইট চুক্তির ফলে পাবলিক ডোমেইনের অধীনে চলে যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় অ-অনুমোদিত সফটওয়্যার ফাঁস অথবা সফটওয়্যার পরিকল্পনা যেটি গিটহাব জাতীয় পাবলিক সফটওয়্যার ভান্ডারে কোন নির্দিষ্ট লাইসেন্স ছাড়াই রাখা হয়। স্বেচ্ছায় পাবলিক ডোমেইনের আওতায় সফটওয়্যার হস্তান্তর করা, (কপিরাইট চুক্তির আওতায় আসার আগে) কিছু আন্তর্জাতিক ডোমেইন আইনের (যেমন জার্মানির আইনে) ক্ষেত্রে অনিশ্চিতা বহন করে, এছাড়াও লাইসেন্স প্রদানকারী পাবলিক ডোমেইনের মতো অধিকার রয়েছে, উদাহরণস্বরূপ সিসিও(ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্স) অথবা ডব্লিওটিএফপিএল।

সফটওয়্যার লাইসেন্সের কপিরাইট এবং এর অধিকার প্রদান প্রসঙ্গে মার্ক ওয়েববিংক এর মতানুসারে ফ্রিওয়্যার এবং সাবলাইসেন্সিং দ্বারা সম্প্রসারিত করে।
প্রদানকৃত অধিকার পাবলিক ডোমেইন অ-প্রতিরক্ষামূলক FOSS
লাইসেন্স (যেমন বিএসডি লাইসেন্স)
প্রতিরক্ষামূলক এফওএসএস
লাইসেন্স (যেমন জিপিএল)
ফ্রিওয়্যার/শেয়ারওয়্যার/
ফ্রিমিয়াম
মালিকানা লাইসেন্স গোপন বাণিজ্য
কপিরাইট অপরিবর্তিত না হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
সম্পাদনের অধিকার হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ না
প্রদর্শনের অধিকার হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ না
কপি করার অধিকার হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ Often না না
সংশোধনের অধিকার হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ না না না
বিতরণের অধিকার হ্যাঁ হ্যা, একই লাইসেন্সের আওতাভূক্ত হ্যা, একই লাইসেন্সের আওতাভূক্ত Often না না
সাবলাইসেন্স করার অধিকার হ্যাঁ হ্যাঁ না না না না
সফটওয়্যারের উদাহরণ এসকিউলাইট, ইমেজজে অ্যাপাচি ওয়েভসার্ভার, টয়বক্স লিনাক্স কার্ণেল, গিম্প ইরফানভিউ, উইনাম্প উইন্ডোজ, হাফ-লাইফ ২ সার্ভার-সাইড
ওয়ার্ড অব ওয়্যারক্রাফট

মালিকানা বনাম লাইসেন্সেসিং

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কপিরাইট আইনের ১১৭ নং অধ্যায়ে কোন নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মালিককে সফটওয়্যারটির কোন কপি কম্পিউটারে ব্যবহারের স্পষ্ট অধিকার প্রদান করে, এমনকি সফটওয়্যারটি কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য আনুষঙ্গিক কপি তৈরি অথবা উপযোগীকরণের প্রয়োজন হলেও। সেইজন্য কম্পিউটার সফটওয়্যারের মালিক সফটওয়্যারটির কপি বৈধভাবে ব্যবহার করার অধিকার রাখে। অত:পর যদি সফটওয়্যারটির ব্যবহারকারীই বিশেষ কপির মালিক হয়, তাহলে ব্যবহারকারী সফটওয়্যার প্রকাশকের লাইসেন্স ছাড়াই সফটওয়্যারটি বৈধভাবে ব্যবহার করতে পারবে।

যেহেতু অনেক মালিকানা লাইসেন্স কেবলমাত্র সেই অধিকারগুলোর তালিকা প্রদান করে যা ১৭ ইউএসসি (ইউনাইটেড স্ট্রেট কোড),[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১১৭ এর অধীনে রয়েছে এবং এখনো প্রকাশ্যে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে অধিকার ছিনিয়ে নেয়ার ঘোষণা করা হচ্ছে, হয়তো এইসব চুক্তিগুলোর বিবেচনা অভাব রয়েছে। যেভাবে তাদের সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছে সে কারণে মালিকানা সফটওয়্যার লাইসেন্সে প্রায়ই প্রচার করা হয় সফটওয়্যার প্রকাশকদের আরও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রদান করার জন্য আর তা করা সম্ভব সফটওয়্যার প্রকাশকদের প্রত্যেক সফটওয়্যারের কপির জন্য মালিকানা রাখার মাধ্যমে। এরূপ করার ফলে অধ্যায় ১১৭ ব্যবহারকারীদের উপর আরোপিত হয় না এবং সফটওয়্যার প্রকাশক ব্যবহারকারীদের লাইসেন্স চুক্তির সকল ধারাই মেনে নিতে বাধ্য করাতে পারে, যাদের বেশির ভাগই কপিরাইট আইনের চাইতে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণমূলক হতে পারে। সম্পর্কটির আকৃতি নির্ধারিত হয় যদি এটি একটি চুক্তি অথবা ক্রয় হয়, উদাহরণস্বরূপ ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপ বনাম অগাষ্টো অথবা ভারনর বনাম অটোডেস্ক

ডিজিটাল পণ্য যেমন, অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার এবং ভিডিও গেমসের মালিকানা স্টীমের ন্যায় ডিজিটাল পরিবেশকদের ইউলার (এন্ড ইউজার লাইসেন্স অ্যাগ্রিমেন্ট) “লাইসেন্সকৃত, বিক্রয়কৃত নয়” দ্বারা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আহব্বান করা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের “ইউরোপীয় কোর্ট অব জাস্টিস” বলে যে, একজন কপিরাইট ধারণকারী ডিজিটালভাবে বিক্রিত সফটওয়্যারের পুনঃবিক্রয়ে বিরোধিতা করতে পারবে না, সেই সাথে কপিরাইট অবসানের নিয়ম অনুযায়ী প্রথম বিক্রয়ের ফলে যেহেতু মালিকানা স্থানান্তরিত হয়েছে এবং সেইজন্য “লাইসেন্সকৃত, বিক্রয়কৃত নয়” কথাটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ইউসডসফট নামক সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক কোম্পানি সফটওয়্যারের পুনঃবিক্রয় সম্পর্কিত ব্যবসার উদ্ভাবণ করে এবং তাদের আধিকারের জন্য আদালতে লড়াই করে।

মালিকানা সফটওয়্যার লাইসেন্স

মালিকানা সফটওয়্যার লাইসেন্সের নির্দেশক হল সফটওয়্যার প্রকাশক ইউলা(এন্ড ইউজার লাইসেন্স অ্যাগ্রিমেন্ট) এর অধীনে এক বা একাধিক সফটওয়্যারের কপি ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করে, কিন্তু ঐসব কপির মালিকানা সফটওয়্যার প্রকাশকের নিকট থেকে যায়(অতঃপর “মালিকানা” ধারা ব্যবহার করার মাধ্যমে)। মালিকানা সফটওয়্যার লাইসেন্সের এই ধরনের বৈশিষ্ট্যের অর্থ হল সফটওয়্যার সংক্রান্ত কিছু অধিকার সফটওয়্যার প্রকাশক কর্তৃক সংরক্ষিত রয়েছে। সেইজন্য ধারা যুক্ত করা ইউলার জন্য সাধারণ ব্যাপার যেটি সফটওয়্যারটির ব্যবহার নির্ধারণ করে, যেমন কত সংখ্যকবার ইনস্টলেশন করা যাবে অথবা বিতরণ করার ধারা।

এই ধরনের লাইসেন্সিং এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব হল, যদি সফটওয়্যার প্রকাশকদের নিকট সফটওয়্যারটির মালিকানা বিদ্যমান থাকে, তাহলে ব্যবহারকরীকে অবশ্যই সফটওয়্যার লাইসেন্সটি মেনে নিতে হবে। অন্যকথায় লাইসেন্সটি মেনে নেয়া ব্যতীত ব্যবহারকারী হয়তো সফটওয়্যারটি একেবারেই ব্যবহার করতে পারবে না। এই ধরনের মালিকানা সফটওয়্যার লাইসেন্সের উদাহরণ হল মাইক্রোসফট উইন্ডোজের লাইসেন্স। যেহেতু মালিকানা সফটওয়্যার লাইসেন্সের জন্য এটি সাধারণ ব্যাপার, লাইসেন্সটি একটি ব্যাপক সীমাবদ্ধ ক্রিয়াকলাপের তালিকা রাখে, যেমন: রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং, একই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যবহারকারী কর্তৃক সফটওয়্যারটির ব্যবহার, এবং বেঞ্চমার্ক অথবা পারফরম্যান্স পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ।

সবচেয়ে সাধারণ লাইসেন্সিং আদর্শগুলো হল প্রতি একক ব্যবহারকারী অথবা প্রতি ব্যবহারকারী হিসেবে যথাযথ ছাঁড় সীমা, যখন কিছু নির্মাতারা বিদ্যমান লাইসেন্সগুলো জমা করে। ঐ মুক্ত আকারের লাইসেন্স প্রোগ্রামকে সাধারণত ওপেন লাইসেন্স প্রোগ্রাম (ওএপি), ট্র্যানজেকশনাল লাইসেন্স প্রোগ্রাম (টিএলপি), ভলিউম লাইসেন্স প্রোগ্রাম (ভিএলপি) ইত্যাদি কনট্র্যাকটুয়াল লাইসেন্স প্রোগ্রামের (সিএলপি) বিপরীত যেখানে ক্রেতা নির্দিষ্ট সংখ্যক লাইসেন্স নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (প্রায়শই দুই বছর) ক্রয়ের আশ্বাস দিয়ে থাকেন। এছাড়া প্রতি সহগামী/নির্দলীয় ব্যবহারকারী লাইসেন্সিংও দেখা যায়, যেখানে একটি নেটওয়ার্কের আওতাধীন সকল ব্যবহারকারী প্রোগ্রামটিতে প্রবেশের অনুমতি থাকে, কিন্তু তা কেবলমাত্র একই সময়ে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যকভাবে। আরেক ধরনের লাইসেন্সিং আদর্শ হল প্রতি ডঙ্গলে লাইসেন্সিং যেটি ডঙ্গলটির মালিককে প্রোগ্রামটি যে কোন কম্পিউটারে ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। প্রতি সার্ভারে লাইসেন্সিং, সিপিইউ অথবা পয়েন্টস, নির্বিশেষ সংখ্যক ব্যবহারকারী হল ওয়েব সাইট অথবা কোম্পানি লাইসেন্সের জন্য খুবই সাধারণ। কখনো কখনো একজন ব্যবহারকারী চিরস্থায়ী এবং বার্ষিক লাইসেন্সের মধ্যে যে কোনটি গ্রহণ করতে পারে। চিরস্থায়ী লাইসেন্সের জন্য প্রায়শই এক বৎসরের রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন, কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের (চাঁদা) নবীকরণ (renewal) এর আওতায় পড়ে না। বার্ষিক লাইসেন্সের জন্য কোন নবীকরণ (renewal) নেই; লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অবশ্যই নতুন লাইসেন্স ক্রয় করতে হবে। লাইসেন্সিং হোস্ট/ক্লায়েন্ট(অথবা গেস্ট), মেইলবক্স, আইপি এড্রেস, ডোমেইন ইত্যাদি প্রোগ্রামটির ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে করা হতে পারে। অতিরিক্ত ব্যবহারকারী প্রতি এক্সটেনশন প্যাক(৯৯ জন ব্যবহারকারী পর্যন্ত) অন্যনামে লাইসেন্স করতে পারবে, যেটি সাধারণ প্যাকসহ (৫ জন ব্যবহারকারী)। কিছু প্রোগ্রামসমূহ মডুলার, তাই ব্যবহারকারীকে অন্য মডুলস ব্যবহার করার জন্য অবশ্যই সাধারণ পণ্যটি ক্রয় করতে হবে।

সফটওয়্যার লাইসেন্সিং প্রায়ই রক্ষণাবেক্ষণকে অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। এটি সাধারণত এক বছর মেয়াদী, এটি অন্তর্ভুক্ত থাকতেও পারে অথবা ঐচ্ছিকও হতে পারে, কিন্তু সফটওয়্যারের সাথে অবশ্যই ক্রয় করতে হবে। রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তিতে স্বল্প ধরনের হালনাগাদ(ভার্সন ১.১=>১.২), কখনো বড় ধরনের হালনাগাদ (ভার্সন ১.২=>২.০) অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং একে ই.জি. (e.g.) হালনাগাদ বীমা, আপগ্রেড বীমা নামে অবহিত করা হয়। বড় ধরনের হালনাগাদের জন্য ব্যবহারকারীকে অবশ্যই একটি আপগ্রেড ক্রয় করতে হবে, যদি রক্ষণাবেক্ষণে তা অন্তর্ভুক্ত না থাকে। রক্ষণাবেক্ষণ নবীকরণের জন্য কিছু নির্মাতারা প্রতি মাসে ব্যাপকভাবে পুনর্বহাল(পুনঃস্থাপন) খরচ আরোপ করে, যদি বর্তমান রক্ষণাবেক্ষণ মেয়াদ শেষ হয়। রক্ষণাবেক্ষণ স্বাভাবিকভাবে প্রযুক্তিগত সহায়তাকে অন্তর্ভুক্ত করে না। এখানে ই-মেইল এবং টেলিফোন সহায়তার মধ্যে পার্থক্য উদাহরণ হিসেবে দেখানো যায়, এছাড়াও প্রাপ্যতা (উদাহরণস্বরূপ ৫ x৮, সপ্তাহে ৫ দিন, দিনে ৮ ঘণ্টা) এবং প্রতিক্রিয়া সময় (যেমন তিন ঘণ্টায়) ইত্যাদিও ভূমিকা রাখতে পারে। এগুলোকে সাধানণত গোল্ড, সিলভার এবং ব্রোঞ্জ সহায়তা নামে অবহিত করা হয়। সহায়তাও প্রতি ঘটনা হিসেবে মোট ঘটনা মোতাবেক লাইসেন্স করা হয় (যেমন ঘটনার জন্য প্রতি বছরে ৫টি সহায়তা)।

বিভিন্ন নির্মাতারা স্কুল এবং সরকারি সংস্থাদের জন্য বিশেষ শর্ত প্রদান করে থাকে। যেমন অন্য পণ্য থেকে মাইগ্রেসন এমনকি তা অন্য নির্মাতাদের থেকে হলেও।

বিনা মূল্যের এবং ওপেন-সোর্স সফটওয়্যার লাইসেন্স

সফটওয়্যার লাইসেন্স 
মুক্ত সফটওয়্যারের সংজ্ঞানুসারে ফ্রি সফটওয়্যার ফাউন্ডেশনের অধীনে বিভিন্ন লাইসেন্সের ডায়াগ্রাম: বামদিক থেকে ডানদিকে "মুক্ত সফটওয়্যার", ডানদিকে "মালিকানা সফটওয়্যার"। উভয়দিকে এবং লম্বভাবে ফ্রি ডাউনলোড

ওপেন সোর্স ও বিনামূল্যের সফটওয়্যার ডোমেইনে বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে যারা সফটওয়্যার লাইসেন্স সংক্রান্ত নির্দেশিকা এবং সংজ্ঞা প্রদান করে থাকে। ফ্রি সফটওয়্যার ফাউন্ডেশন বিভিন্ন কারণে মুক্ত সফটওয়্যারের সংঞ্জানুযায়ী এবং এফএসএফের(FSF) বিবেচনায় অ-উন্মুক্ত অসংখ্য লাইসেন্সের তালিকা সংরক্ষণ করে থাকে। এফএসএফ(FSF) লাইসেন্স গনু জেনারেল পাবলিক লাইসেন্সের সাথে মুক্ত সফটওয়্যার লাইসেন্সের সাথে অতিরিক্ত বিশিষ্টতামূলক তুলনা করে দেখে এটি এফএসএফ (FSF)এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না অ-সামঞ্জস্যপূর্ণ। ওপেন সোর্স উদ্যোগটি ওপেন সোর্সের সংজ্ঞানুযায়ী প্রত্যয়িত ওপেন-সোর্স লাইসেন্সের তালিকাকে সংজ্ঞায়িত করে। এছাড়াও ডেবিয়ান প্রকল্পটিরও একটি লাইসেন্সের তালিকা রয়েছে যেগুলো তাদের ডেবিয়ান ফ্রি লাইসেন্স সফটওয়্যার নির্দেশিকাকে অনুসরণ করে।

মুক্ত এবং ওপেন-সোর্স লাইসেন্সকে সাধারণত দুইটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়: যাদের লক্ষ্য কীভাবে সফটওয়্যারটি বিতরণ সম্পর্কে ন্যুনতম প্রয়োজনীয়তা করা যায় (অনুমতিসূচক লাইসেন্স), এবং প্রতিরক্ষামূলক বিতরণ ধরনের(কপিলেফট লাইসেন্স)।

কপিলেফট মুক্ত সফটওয়্যার লাইসেন্স এবং প্রথম কপিলেফট লাইসেন্স হিসেবে প্রায়ই গনু জেনারেল পাবলিক লাইসেন্সকে (জিপিএল) ব্যবহার করা হয়। এই লাইসেন্সটির উদ্দেশ্য সকল ব্যবহারকারীর জন্য সীমাহীন ব্যবহারের স্বাধীনতা, পড়া এবং ব্যক্তিগতভাবে সফটওয়্যারটি সংশোধনের সুবিধা প্রদান এবং তা রক্ষা করা, এবং ব্যবহারকারী যদি জিপিএলের ধারা এবং শর্ত দৃঢ় সংকল্পে মেনে থাকে তাহলে সে সফটওয়্যারটি স্বাধীনভাবে যেকোন সংশোধন এবং পুনঃবিতরণ করতে পারবে। উদাহরণস্বরূপ ব্যবহারকারী কর্তৃক কোন সংশোধন এবং পুনঃবিতরণে অবশ্যই সেগুলোর সাথে সোর্স কোড সংযুক্ত করতে হবে, এবং সংশোধিত কাজে অতিরিক্ত কোন সীমাবদ্ধতা প্রয়োগ করা যাবে না যা জিপিএল অনুমোদন দেয় না।

অনুমতিসূচক মুক্ত সফটওয়্যার লাইসেন্সের উদাহরণগুলো হল বিএসডি লাইসেন্স এবং এমআইটি লাইসেন্স, যেটি সফটওয়্যারটি ব্যবহারের অফুরন্ত স্বাধীনতা, পড়া, এবং ব্যক্তিগত সংশোধনের অনুমতি প্রদান করে, এবং পুনঃবণ্টনে খুবই সামান্য বিধি নিষেধ আরোপ করে। এটি ব্যবহারকারীকে এর কোডগুলোকে ক্লোসড-সোর্স সফটওয়্যার অথবা মালিকানা সফটওয়্যার লাইসেন্সের অধীনের সফটওয়্যারের সাথে ব্যবহার করার অনুমতি প্রদান করে।

পাবলিক ডোমেইন সফটওয়্যার এবং পাবলিক ডোমেইনের মতো লাইসেন্স ওপেন সোর্স ও বিনামূল্যের সফটওয়্যার ডোমেইন লাইসেন্সের অধীনে বিবেচনা করা হবে কিনা তা নিয়ে কিছু সময়ের জন্য বিতর্ক হয়। ২০০৪ সালের দিকে আইনজীবী লরেন্স রোসেন “পাবলিক ডোমেইন কেন লাইসেন্স নয়” উক্তি সম্পর্কে যুক্তি তর্ক দেখিয়ে বলেন সফটওয়্যার প্রকৃতপক্ষে পাবলিক ডোমেইনের আওতায় ব্যবহার করা যায় না এবং সেইজন্য একে খুবই অনুমতিসূচক ওপেন সোর্স ও বিনামূল্যের সফটওয়্যার হিসেবে ব্যাখ্যা করা যাবে না,, যেটির বিরোধিতা করেছিলেন ডেনিয়েল জে. বার্নস্টিন এবং অন্যরা। অবশেষে ২০১২ সালে বিতর্কটির অবসান হয় যখন রোজেন সিসিও-কে ওপেন সোর্স লাইসেন্স হিসেবে মেনে নেন, এই মেনে যে তার পূর্ববর্তী বিপরীত বক্তব্য অনুযায়ী নাইন্থ সার্কিটের সাহায্যপ্রাপ্ত সিদ্ধান্তের ফলে কপিরাইট বাতিল করা হতে পারে।

তথ্যসূত্র

Tags:

সফটওয়্যার লাইসেন্স এবং কপিরাইট আইনসফটওয়্যার লাইসেন্স মালিকানা সফটওয়্যার লাইসেন্স বিনা মূল্যের এবং ওপেন-সোর্স সফটওয়্যার লাইসেন্স তথ্যসূত্রসফটওয়্যার লাইসেন্স বহিঃসংযোগসফটওয়্যার লাইসেন্সপাবলিক ডোমেইন

🔥 Trending searches on Wiki বাংলা:

ক্রিকেটকুমিল্লা জেলাভীমরাও রামজি আম্বেদকরফুটিঋতুদেশ অনুযায়ী ইসলামকাবাবাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পবাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনদেব (অভিনেতা)ঢাকাঅযুবাংলাদেশ আওয়ামী লীগউসমানীয় সাম্রাজ্য২০২০-২৩ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগঅন্নপূর্ণা (দেবী)রাষ্ট্রস্বত্ববিলোপ নীতিআওরঙ্গজেবমৌলিক পদার্থের তালিকাযৌন প্রবেশক্রিয়াহেপাটাইটিস বিমুজিবনগর সরকারবাংলা সাহিত্যপর্যায় সারণী (লেখ্যরুপ)জসীম উদ্‌দীনমাইটোকন্ড্রিয়াগীতাঞ্জলিদৈনিক প্রথম আলোইলেকট্রন বিন্যাসবিকাশদশাবতারসংস্কৃত ভাষাইংল্যান্ডতাশাহহুদমৌলসমূহের ইলেকট্রন বিন্যাস (উপাত্ত পাতা)শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়হস্তমৈথুনলিওনেল মেসিখালেদা জিয়াবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান২৮ মার্চআল পাচিনোআনন্দবাজার পত্রিকামনোবিজ্ঞানআদমবিভিন্ন ধর্ম ও বিশ্বাসের তালিকামালদ্বীপঅগ্নিবীণা (কাব্যগ্রন্থ)ভারতের জনপরিসংখ্যানইউটিউবারডিজেল গাছললিকনণত্ব বিধান ও ষত্ব বিধানমহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রমুহাম্মাদের বংশধারাসুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ডিরেক্টরি অব ওপেন অ্যাক্সেস জার্নাল্‌সপরিমাপ যন্ত্রের তালিকাআযানহিন্দুধর্মকুয়েতবাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলজাযাকাল্লাহচৈতন্য মহাপ্রভুকাঠগোলাপনেইমারফিলিস্তিনদিনাজপুর জেলাঅ্যান্টিবায়োটিক তালিকাসালমান শাহবাঘসূরা ফাতিহাআইজাক নিউটনচাকমানোরা ফাতেহিসোমালিয়াবাংলাদেশের একাডেমিক গ্রেডিং পদ্ধতি🡆 More